কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪৭ পিএম
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৫, ১১:০৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান : প্রধান উপদেষ্টা

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে তৎকালীন মেজর ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সেনাবাহিনীর অবদান বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আজকের এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আপনাদের স্বাগত জানাই। আজকের এই বিশেষ দিনে আমি স্মরণ করছি সব শহীদ, যুদ্ধাহত এবং অন্য সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা শিগগিরই একটি নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি। এই নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশের পথে যাত্রা করব- সেটিই আমাদের স্বপ্ন। এই নির্বাচন যেন সর্বাঙ্গসুন্দর, আনন্দমুখর ও উৎসবমুখর হয়। সেটার জন্য আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করব।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে আসন্ন নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে উঠবে। তিনি একটি নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

ড. ইউনূস বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী সবসময়ই দেশগঠন ও জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলায় জনগণের পাশে থেকে কাজ করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান, চলমান দেশ পুনর্গঠন ও সংস্কার কার্যক্রমেও সশস্ত্র বাহিনী আগের মতোই মানুষের পাশে থেকে আস্থার প্রতিদান দিচ্ছে।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক নেতৃত্বের প্রতি অনুগত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী পেশাগত দক্ষতা ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে তাদের ত্যাগ ও দায়িত্বশীলতার ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে।

সরকার প্রধান বলেন, শান্তিপ্রিয় জাতি হিসেবে আমরা সব বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে মর্যাদাপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করি। তবে যে কোনো আগ্রাসী বাহিনীর আক্রমণ থেকে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সদা প্রস্তুত ও সংকল্পবদ্ধ থাকতে হবে। এ লক্ষ্যে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর আধুনিকায়ন, উন্নত প্রশিক্ষণ এবং বৈশ্বিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাহিনীতে আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজনের কাজ ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে চলছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ফ্যাসিস্ট আমলে সশস্ত্র বাহিনীর দক্ষতা বজায় রাখা ও উন্নয়নকে উপেক্ষা করা হয়েছিল। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সব বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। একই সঙ্গে দেশরক্ষা ও জনকল্যাণমূলক কাজে বিপুলসংখ্যক ছাত্র ও যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করতে বিএনসির কার্যক্রম বহুগুণ বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম ১৯৭১ সালের রণক্ষেত্রে। ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর সেনাবাহিনীর সঙ্গে নৌ ও বিমানবাহিনী সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়েছিল বলে এই দিনটিকে মুক্তিযুদ্ধের এক মাইলফলক হিসেবে গৌরবের সঙ্গে পালন করা হয়। আমরা যদি বিজয় অর্জন না করতাম তবে এই বীর সেনাদের মৃত্যুদণ্ড ছিল অনিবার্য এবং তাদের পরিবারের সকল সদস্যের জীবন হয়ে উঠত অসহনীয়। মুক্তিকামী সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর অকুতভয় বীর সেনানীরা জীবনের পরোয়া না করে, পরিবারের ভবিষ্যতের কথা না ভেবে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তারাই আপামর জনসাধারণকে সাহস জুগিয়েছেন এবং জল, স্থল ও আকাশপথে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলে দেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করেছেন।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, যুদ্ধ বেগবান ও সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে তখন ‘বাংলাদেশ ফোর্সেস’ গঠন করা হয়। যার অধীনে ১১টি সেক্টরে দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে আসা মুক্তিযোদ্ধাদের সামরিক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি গেরিলা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরই চূড়ান্ত রূপ আমরা দেখি ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সম্মিলিত অভিযানে। পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে এই যৌথ অভিযানে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর অবদান ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

তিনি বলেন, গত ৩৭ বছরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সদস্যরা সফলভাবে ৪৩টি দেশে ৬৩টি মিশন সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে তারা বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ১০টি মিশনে দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ নারী শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবেও পরিচিত। বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল ও নির্ভরযোগ্য রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা অর্জন করেছে। এ জন্য তিনি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গৌহাটি টেস্টের আগে ভারত শিবিরে দুঃসংবাদ

শনিবার বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়

এই প্রজন্মে অন্ধ আনুগত্য, ভাই পলিটিক্স চলবে না : শিবির সভাপতি

নাটকীয় জয়ের পরও নিজের ভুলে হতবাক আকবর

স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান : প্রধান উপদেষ্টা

নিউমার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ 

ভূমিকম্পে ছেলের পর এবার চিকিৎসাধীন বাবার মৃত্যু

তারেক রহমানের জন্মদিনে ৫ হাজার মানুষকে উপহার দিলেন যুবদল নেতা

জামায়াতের নাড়িপোতা পাকিস্তানে : মাহমুদ হাসান 

ঐক্যবদ্ধভাবে পরস্পরের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান গণসংহতির

১০

তারেক রহমান : ইতিহাসের অগ্নিপথ পেরিয়ে জাতির প্রত্যাশার শিখরে

১১

ডাকসু নেত্রী রাফিয়ার বাড়িতে আগুন, গ্রেপ্তার ৪ 

১২

শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতি, সহকারী অধ্যাপক হলেন ১৮৭০ কর্মকর্তা

১৩

ডেজার আলোচনা সভা ও স্মরণিকা উন্মোচন

১৪

ভূমিকম্পে মৃত্যু বেড়ে ১০, আহত সাড়ে চারশর বেশি

১৫

তারেক রহমানের জন্মদিনে রক্তস্পন্দনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

১৬

শুক্রবারও কমলো স্বর্ণের দাম

১৭

এনসিপির নির্বাচনী মিডিয়া উপকমিটির প্রধান মাহাবুব আলম 

১৮

ঢাকায় ভূমিকম্পে নিহত রাফির দাফন হবে বগুড়ায় 

১৯

শতাধিক ছিন্নমূল মানুষকে এক বেলা পেট পুরে খাওয়ালেন তরুণরা

২০
X