বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী সেলিমা রহমান বলেছেন, দেশে আজ ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সবচেয়ে বড় ভয়াবহ হচ্ছে দেশের স্বাধীনতা হুমকির মুখে। বাংলাদেশ এক অনিশ্চয়তার দিকে ছুটে চলেছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে ভারতের সঙ্গে অসম চুক্তি-বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ওপর হুমকি শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সেলিমা রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছে। ছাত্র-শ্রমিক, নারী-পুরুষ সেই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। সমস্ত দেশ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, শুধু কিছু রাজাকার ছাড়া। দেশ স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও আমাদের যে চাওয়া ছিল, আমাদের যে পাওয়া ছিল তা আমরা পায়নি। বাংলাদেশের ন্যায়ভিত্তিক শাসনব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার, কথা বলার অধিকার, মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার অধিকার, এই মুহূর্তে ভোট চোর সরকার তা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। সাধারণ মানুষ কথা বলতে পারছে না।
তিনি বলেন, আজ নানা দিক থেকে আওয়াজ উঠছে। কোটা সংস্কারের আন্দোলন হচ্ছে। তাদের কোনো রাজনৈতিক দল আন্দোলন করতে বলেনি। তাদের বিবেক থেকে আন্দোলন করছে। কোটা সংস্কারে শিক্ষার্থীরা বলছে এই সরকারের ওপর তাদের কোনো আস্থা নেই। চারদিক থেকে আওয়াজ উঠেছে। শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। মেধার কোনো দাম নেই। দুর্নীতির মধ্য দিয়ে, লবিংয়ের মধ্য দিয়ে শিক্ষাব্যবস্থার ধ্বংস করে শিক্ষার্থীদের জীবন অনিশ্চিত করে ফেলছে।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের কথা বলে, বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করিয়েছে সরকার। ১/১১ থেকে ষড়যন্ত্র চলছে। তখন বলেছিল মাইনাস টু। কিন্তু না, সেই সময় তারা প্লান করেছে মাইনাস ওয়ানের। খালেদা জিয়া বাইরে থাকলে বাংলাদেশ আজ স্বাধীনতা নিয়ে, গণতন্ত্র নিয়ে মাথা উঁচু করে থাকত।
ঢাকার জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে সেলিমা রহমান আরও বলেন, পত্রিকায় দেখলাম সিটি করপোরেশন কাজ না করে ৭০০ কোটি টাকা লুট করেছে। গতকাল শুক্রবার ঢাকা শহর ডুবে গেল। কেন ডুববে না, আজকে খাল-নদী জলাশয় সবকিছু দখল করে নিয়ে রিসোর্ট, ঘর-বাড়ি নির্মাণ করেছে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি বা তাদের ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালীরা। এমপি হলেই ৫-৬টা বাড়ি করতে হবে, কোটি কোটি টাকা আয় করতে হবে। এই হলো বাংলাদেশের অবস্থা।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের বুকের ওপর পা দিয়ে, শিক্ষর্থীদের রক্তের ওপর দিয়ে তারা ক্ষমতায় থাকতে চায়। উন্নয়নের নামে জনগণের ট্যাক্সের টাকা আপনারা লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে চুক্তির ফলে বাংলাদেশ গোলামি রাজ্যে পরিণত হবে। এই চুক্তি দেশের জনগণ মেনে নেবে না।
বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উপদেষ্টা এম নাজমুল হাসানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিএনপির সহতথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন, বিলকিস ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাঈদুর রহমান, হেলাল উদ্দিন, ইউসুফ আলী প্রমুখ।
আর্কাইভ 
| ২৮ আগস্ট ২০২৫ 
