৪৫ শতাংশ রোগীর যক্ষ্মা রোগ শনাক্ত করা যায় না : নারী মৈত্রী
দেশে ৪৫ শতাংশ রোগীর যক্ষ্মা রোগ শনাক্ত করা যায় না। অথচ যক্ষা রোগের চিকিৎসায় কোনো খরচ নেই। বিনা পয়সায় চিকিৎসা করা যায়। যক্ষ্মামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বেসরকারি সংস্থা নারী মৈত্রী। বিশ্বের ৩০টি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। বাংলাদেশে প্রতি লাখে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা ২২১ জন, যা বিশ্বে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। মৃত্যুর হার প্রতি লাখে ২৪ জন। যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু ঠেকাতে প্রয়োজন জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বাড়ানো। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় রাজধানীর দৈনিক ইত্তেফাক সম্মেলন কক্ষে এক গোলটেবিল বৈঠকে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রায় ২০ জন সাংবাদিক এ বৈঠকে অংশ নেয়। নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেয় ডিজিএইচএসের এনটিপি ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় টিবি বিশেষজ্ঞ ডা. ফারজানা জামান। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সাবেক সমন্বয়ক মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়ে চেয়ারম্যান এবং সহযোগী অধ্যাপক আরিফ-উজ-জামান খান, ব্র্যাকের স্বাস্থ্য কর্মসূচির সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার সাইহা মাজিয়া। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নারী মৈত্রীর প্রজেক্ট কোর্ডিনেটর তৌহিদা সুলতানা। আলোচনা সভার মূল লক্ষ্য হলো যক্ষ্মার (টিবি) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গণমাধ্যমের সম্পৃক্ততা শক্তিশালী করা। পাশাপাশি কমিউনিটি অধিকার ও লিঙ্গ (সিআরজি) সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে গণমাধ্যমের মাধ্যমে সাধারণ মানুষেকের কাছে পৌঁছে দেয়া এবং টিবিসংক্রান্ত মৃত্যু ও সংক্রমণ হ্রাসের সমাধান প্রচারের মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধি নিশ্চিত করা। নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি বলেন, বাংলাদেশে ৮০ শতাংশ যক্ষ্মা টিবির কেস হল পালমোনারি টিবি। বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৩ সাল থেকে ডট কার্যক্রম এর মাধ্যমে যক্ষ্মার জীবানু প্রতিরোধের জন্য সামগ্রিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে এই যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বাংলাদেশ সরকারের সাফল্যমণ্ডিত প্রোগ্রাম হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে। যক্ষ্মা শুধু বড়দের না, বাচ্চাদের মধ্যেও এটি সংক্রমিত হয়। প্রতিবছর আনুমানিক ১০ দশমিক ৬ মিলিয়ন জনসংখ্যা এই যক্ষ্মার জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ৫ দশমিক ৮ মিলিয়ন পুরুষ, ৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন মহিলা এবং ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন শিশু। বড়দের পাশাপশি শিশুদেরও যক্ষ্মার জীবাণু দ্বারা সংক্রমনের হার ক্রমাগত বাড়ছে। এ ছাড়াও তিনি প্রতিটি মানুষের মধ্যে যক্ষ্মা সম্পর্কিত সঠিক তথ্য প্রচারের জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের এগিয়ে আসার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। ডা. ফারজানা জামান বলেন, একজন মানুষের শরীরে চুল ও নখ ছাড়া সব জায়গায় যক্ষ্মার ব্যপ্তি বা রোগ রয়েছে। সুপ্ত যক্ষ্মা রোগী ১০০ জনের মধ্যে দশজন রয়েছে। ২০১২ সালে ২০টি এক্সপার্ট মেশিন ছিল। এখন ৮৩৩টি এক্সপার্ট মেশিন দিয়ে আমরা যক্ষ্মা রোগীকে শনাক্ত করতে পারছি। পলিসির মাধ্যমে আমরা যক্ষ্মা রোগ  নির্মূলে কাজ করছি। সাইহা মার্জিয়া বলেন, শিশুর যক্ষ্মা হলে বাবা-মা বা পরিবারের সদস্যরা মেনে নিতে পারেন না, তার সন্তান যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
৩১ মিনিট আগে

কোটিপতি প্রকৌশলীর স্ত্রী সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নেন মেয়রের অনুদানে!
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের ঐচ্ছিক তহবিল থেকে অনুদানের টাকা নিয়ে সিঙ্গাপুরে স্ত্রীর চিকিৎসা করিয়েছেন সংস্থাটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান। বিতর্কিত এই প্রকৌশলীর ঐচ্ছিক অবসরের ঘটনাটি গতকাল রোববার জানাজানি হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৫ জুলাই সিটি করপোরেশনের তৎকালীন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আশিকুর স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ নির্বাহে অপারগতা প্রকাশ করে সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসের ঐচ্ছিক তহবিল থেকে অনুদান চান। পরে তার স্ত্রীর চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহের জন্য ২ লাখ টাকা অনুদান দেন মেয়র। অনুদানের টাকা পেয়ে আশিকুর ১৭ জুলাই ঢাকা থেকে বিজনেস ফ্লাইটে সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমান। এ সময় স্ত্রীসহ সিঙ্গাপুরে ১৫ দিন কাটান তিনি। সিটি করপোরেশনের এক উপপ্রকৌশলী জানান, একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী স্ত্রীর চিকিৎসার নামে মেয়রের ঐচ্ছিক তহবিল থেকে ২ লাখ টাকা নিয়েছেন। এ টাকা দিয়ে সিঙ্গাপুর যাওয়ার বিমান ভাড়া হওয়ার কথা না। মূলত দুর্নীতির মনমানসিকতা থেকেই তিনি অনুদান নিয়েছেন। দুর্নীতির টাকা দিয়েই তিনি স্ত্রীর চিকিৎসা করিয়েছেন, লোক দেখানোর জন্য শুধু মেয়রের অনুদান নিয়েছেন। সাবেক মেয়র তাপস আনুগত্যের কারণে আশিকুরকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলীর পদ দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন। জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে গত ১৩ আগস্ট ঐচ্ছিক অবসরে যেতে আবেদন করেন আশিকুর। তবে তা অনুমোদন না করে ১৫ আগস্ট তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। গত বৃহস্পতিবার আশিকুরের ঐচ্ছিক অবসরের আবেদন অনুমোদন করে ডিএসসিসি। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার প্রকল্পে দুর্নীতির আশ্রয় নেন প্রকল্প পরিচালক আশিক। প্রকল্প ব্যয় ৮০০ কোটি থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা করেন। আশিকুর বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনে পরিচালক পদে চাকরিকালেও জড়িয়েছেন দুর্নীতিতে। এ ছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পরিচালক পদে থাকার সময়েও দুর্নীতিসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি, চাকরিচ্যুতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি।
০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা সরকারি খরচে
জুলাই থেকে শুরু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একপর্যায়ে এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলনে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। এই আন্দোলনে প্রাণ হারায় কয়েকশ ছাত্র-জনতা। আহত হয়ে ১৮ হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসা নেন দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে। আহতরা এখনো কাতরাচ্ছেন হাসপাতালে। শুধু জাতীয় অর্থোপেডিকস ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) চিকিৎসা নিচ্ছেন শতাধিক মানুষ। তাদের অনেকের উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা লাগছে অনেকের। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সরকার চিকিৎসা ব্যয়ভার বহনের কথা বললেও এর সিংহভাগ রাজধানীকেন্দ্রিক। রাজধানীর বাইরে অনেকে অর্থাভাবে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারছেন না। তাদের একজন বরিশালের তাইজুল ইসলাম সাব্বির। আন্দোলনে চোখে গুলিবিদ্ধ হন বরিশালের চরামদ্দী খান ফজলে রব চৌধুরী সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার এ শিক্ষার্থী। রাজধানীর বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা শেষে অর্থাভাবে তাইজুল গ্রামের বাড়িতে যন্ত্রণা নিয়ে কাতরাচ্ছেন। বাম চোখসহ শরীরে তার ২২টি ছররা গুলি লাগে। একটা গুলি চোখের ভেতরে ঢুকে যায়। দেশে অস্ত্রোপচার করা সম্ভব নয়। বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. নিশাত পারভীন বলেন, তাইজুলের চোখের গুলিটা অনেক ভেতরে ঢুকে গেছে। এখন তাকে রক্ষা করতে হলে দ্রুত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা। জুলাইয়ে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলন ধীরে ধীরে রূপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আন্দোলনে যোগ দেন সাধারণ মানুষও। ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। আন্দোলনে প্রাণহানি ও আহতদের সংখ্যা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। এর সঠিক সংখ্যা নিয়ে তথ্যভান্ডার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। সারা দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের কাছে চাওয়া হয়েছে তথ্য। গত বুধবার পর্যন্ত তথ্যে দেখা গেছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছেন ৬১৮ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মারা যান ৪৪০ জন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ১৭৮ জনের। আর আহত হয়েছেন ১৭ হাজার ৮৬৯ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, আন্দোলনে আহত-নিহতদের তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া আগে থেকেই চলছিল। তবে ৫ আগস্টের পর থেকে এটি আরও জোরালো হয়েছে। এখন কোনো তাড়াহুড়ো না করে সঠিক তথ্য নিরুপণের চেষ্টা করছি আমরা। তবে অনেকে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে চিকিৎসা নেন। নানা জটিলতায় অনেক প্রতিষ্ঠান হতাহতের তথ্য সংরক্ষণ করতে পারেনি। আহতদের চিকিৎসা ব্যয় সরকারিভাবে বহন করা হচ্ছে। তাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে।
০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বন্যার্তদের মাঝে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা বিএনপির
নারী ও শিশুদের প্রাধান্য দিয়ে বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে বিনামূল্যে ওষুধসামগ্রী বিতরণ ও চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে বিএনপি।  বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত চিকিৎসা ক্যাম্প ও ওষুধ বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।  চিকিৎসা ক্যাম্প ও ওষুধ বিতরণ কর্মসূচিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।  বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে এতে প্রায় শতাধিক জাতীয়তাবাদী আদর্শের ডাক্তার ওই ক্যাম্পে সেবা প্রদান করেন।  নোয়াখালী সরকারি কলেজ ও বেগমগঞ্জ সরকারি কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয় এ সকাল ৯টা থেকে চলমান এই মেডিকেল ক্যাম্পে প্রায় একহাজার সাতশ’র মতো মানুষকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। কর্মসূচি বিষয়ে ডা. মো. রফিকুল ইসলাম জানান, বন্যাপরবর্তী বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে। আমরা নারী ও শিশুদের প্রাধান্য দিয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি। এরআগে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার সকালে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার খোজ নিতে যান বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম।  এসময় তিনি আহতদের মাঝে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন ও সকলের উন্নত চিকিৎসার জন্য ও এক শিক্ষার্থীর কৃত্রিম পা সংযোজনের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আশ্বাস দেন।  ডা. রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, যারা দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে এখনও দেশবিরোধী চক্রান্তে যারা লিপ্ত তাদের ব্যাপারে আমাদের সকলের সতর্ক থাকতে হবে। এসময় তিনি ছাত্র জনতার উপর এ ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন।
০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসা সেবা বন্ধ, ভোগা‌ন্তি চরমে
খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চি‌কিৎসা ব‌্যবস্থা ভে‌ঙে প‌ড়ে‌ছে। অজানা এক ভয়ে পা‌লিয়ে বেড়া‌চ্ছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. গৌতম কুমার পাল। এরই মধ্যে পদত্যাগ করেছেন হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. আকতারুজ্জামান। আর ৪১ চি‌কিৎসক‌কেও অবা‌ঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে একরকম বন্ধ হয়ে গেছে খুমেকের চিকিৎসা সেবা। এমন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) খুমেকের ব‌হির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগের অর্ধশত চি‌কিৎসক অনুপ‌স্থিত রয়েছেন। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দূর-দূরান্ত থে‌কে আসা রোগীরা।  সকাল ৯টা থে‌কে বেলা ১১টা ৪০ পর্যন্ত স‌রেজমিনে দেখা যায়, ব‌হির্বিভা‌গে ২০ জন চি‌কিৎসক অনুপস্থিত রয়েছেন । এ ছাড়া আন্তঃবিভা‌গে রে‌জিস্ট্রার, সহকা‌রী রে‌জিস্ট্রার, কনসালট‌্যান্টসহ আরও ২১ চি‌কিৎসকের দেখা নেই। এতে পু‌রো হাসপাতা‌লে চি‌কিৎসাব্যবস্থার বেহালদশা তৈরি হয়েছে। রোগীরা সেবা না পে‌য়ে ফিরে যা‌চ্ছেন।  বা‌গেরহাট থে‌কে চিকিৎসা নিতে আসা কুলসুম বেগম কাল‌বেলা‌কে বলেন, ব্রেস্ট টিউমার নি‌য়ে খুলনা মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতা‌লে চি‌কিৎসা নি‌তে এসেছি। কাউন্টারে টি‌কিট কে‌টে নির্ধারিত কক্ষে এসে দে‌খি ডাক্তার নেই। এখন ফেরত যে‌তে হ‌বে। ক‌বে এ অবস্থা ঠিক হ‌বে জা‌নি না।  প্রায় একই অভিযোগ রুপসা থেকে আসা দে‌লোয়ার হো‌সেন ও তার ছে‌লে ফা‌হিমের।   এসব বিষয়ে খুমেকের প‌রিচালক, উপপ‌রিচালক, সহকারী প‌রিচালক, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) এবং আরএস কেউ কর্মস্থলে না থাকায় কারও বক্তব‌্য নেওয়া সম্ভব হয়‌নি। এ ছাড়া তাদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।  খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ‌্য প‌রিচালক ডা. মনজুরুল মু‌র্শিদ কাল‌বেলা‌কে ব‌লেন, হাসপাতাল সরাস‌রি আমা‌দের অধীনে না। তারপ‌রও আমি ‌বিভাগীয় ক‌মিশনারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি।  এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সব জানানো হয়েছে। সং‌শ্লিষ্ট সূ‌ত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) খুলনা মে‌ডি‌কেল ক‌লে‌জের শিক্ষার্থী‌দের এক‌টি অংশের চাপে হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. আকতারুজ্জামান পদত্যাগ করেন।  মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে মেডিকেল কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থীকে নিয়ে উপস্থিত হন কার্ডিওলোজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মোস্তফা কামাল। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এমন ৪১ জন চিকিৎসক একটি তালিকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এতে আতঙ্কে ভয়ে দুটি কাগজেই স্বাক্ষর করেন ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আক্তারুজ্জামান। এই ৪১ জন চিকিৎসকের মধ্যে পরিচালক, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, আরএস, আরএমও, রেজিস্ট্রারসহ গুরুত্বপূর্ণ সব পোস্টের চিকিৎসক রয়েছেন। উপপরিচালক ডা. আক্তারুজ্জামান বলেন, জীবনে কেউ আমাকে আওয়ামী লীগ ও স্বাচিপ কোনো কিছুর প্রাথমিক সদস্য হয়েছি কোনো দিন দেখাতে পারলে আমি সব শাস্তি মাথা পেতে নেব। আমি কোনো দিন সরকারি চাকরি ছাড়া কোনো দিন কোনো আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছি এমন কোনো রেকর্ড নেই। বরং আমাকে আওয়ামী লীগ সরকার বারবার শাস্তিমূলক বদলি করেছে। নিচের গ্রেডে নামিয়ে দিয়েছে। এতকিছুর পর গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ভাবলাম এবার হাসপাতালের জন্য কিছু করতে সুযোগ পাব; কিন্তু আমাকে জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো হলো। আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম। খুলনা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক ফোরামের সদস্য সচিব ডা. তাহমিদ মাশরুর বলেছেন, স্যার ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে ছিল এমন অভিযোগে তাকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পদত্যাগ করিয়েছেন এমন কোনো বিষয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অবগত নন।
০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

একদিনে ৯৮৫৭ বন্যার্তকে চিকিৎসা দিয়েছে সশস্ত্র বাহিনী
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ৩টি ফিল্ড হাসপাতাল ও ১৯টি মেডিকেল টিম, ১টি সেনা ক্লিনিক বন্যাদুর্গতদের নিরলসভাবে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সমন্বয়ে মেডিকেল টিম, ফিল্ড হাসপাতাল ও সেনা ক্লিনিকের মাধ্যমে ৯ হাজার ৮৫৭ জনকে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) রাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বন্যার কারণে স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনীর মেডিকেল টিমগুলো দুর্গত এলাকায় এ পর্যন্ত ৪২ হাজার ১১৩ জনকে জরুরি চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে।  এ ছাড়া সশস্ত্র বাহিনী বন্যাকবলিত এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এর অংশ হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় সশস্ত্র বাহিনী সর্বমোট ৪৮ জন বন্যাদুর্গত ব্যক্তিকে উদ্ধার, ৫২ হাজার ৫১৫ প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী এবং ৪৫০ জনকে রান্না করা খাবার দিয়েছে। একই সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ২০ হাজার পিস পোশাক ও ৮ কার্টন ওষুধ বিতরণ করেছে। এ সময় সশস্ত্র বাহিনী ১০টি হেলিকপ্টারের মাধ্যমে বন্যাকবলিত এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এ ছাড়াও বন্যাদুর্গত এলাকায় মোবাইল সংযোগ সচল করার লক্ষে সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তায় বেসামরিক মোবাইল কোম্পানিগুলো টাওয়ার মেরামতের কাজ চলমান রেখেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় বন্যাদুর্গত এলাকায় বর্তমানে সেনাবাহিনীর ৩০টি, নৌবাহিনীর ২টি, বিমানবাহিনীর ১টি এবং কোস্টগার্ডের ১টিসহ সর্বমোট ৩৪টি ক্যাম্প মোতায়েন রয়েছে।
০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সিঙ্গাপুর গেলেন মির্জা ফখরুল
স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে গেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে ১১টা ৫৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সে একটি ফ্লাইটে ঢাকা ছেড়েছেন তিনি। বিএনপি মহাসচিবের একান্ত সহকারী ইউনুস আলী বিষয়টি জানান। তিনি বলেন, ‘স্যার হেলথ চেকআপ করাতে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। সিঙ্গাপুরে দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখাবেন। ইতোমধ্যে ডাক্তারদের অ্যাপয়েন্টমেন্টও করা হয়েছে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর তিনি দেশে ফিরবেন।’ ২০১৫ সালে কারাবন্দি অবস্থায় বিএনপি মহাসচিবের ঘাড়ের ইন্টারন্যাল ক্যারোটিড আর্টারিতে ব্লক ধরা পড়লে কারামুক্তির পর সিঙ্গাপুরে গিয়ে চিকিৎসা করার তিনি। এরপর থেকে প্রতি বছরই ফলোআপ চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে যেতে হয়। সর্বশেষ গত ৪ মার্চ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন তিনি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সহধর্মিনী রাহাত আরা বেগম ফলোআপ চিকিৎসায় গত ২৭ আগস্ট সিঙ্গাপুর গেছেন। ওই সময়ে দেশের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা বার্ষিকীর অনুষ্ঠান থাকায় বিএনপি মহাসচিব স্ত্রীর সঙ্গে যেতে পারেননি।
০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন / ‘গুলিবিদ্ধ স্বামীর চিকিৎসা করাব কী করে’
সংসারে স্ত্রীর ভরণপোষণ ও দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে ঢাকায় যান জরিফুল ইসলাম। পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় মুরগির মাংসের ব্যবসা করতেন তিনি। জরিফুল পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার সংসার ভালোই চলছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্মসূচিতে গিয়ে মাংস ব্যবসায়ী জরিফুল ইসলাম (২৮) পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে ব্যথার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। আন্দোলনে গিয়ে জরিফুলের বাম পায়ে পরপর দুটি গুলি লাগে। পরে সেই গুলি বের করা হলেও হাড় ভেঙে যাওয়ায় হাঁটতে পারছেন না তিনি। পঙ্গু হওয়ার উপক্রম। অর্থে অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না তার পরিবার। চিকিৎসার অভাবে বাড়িতে বিছানায় শুয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা করতেও পারছেন না তিনি। জরিফুল ইসলাম পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আয়-রোজগার না থাকায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পূর্ব সারডুবি গ্রামের আব্দুর সাত্তার ছেলে জরিফুল ইসলাম। তিনি ঢাকার সাভারে একটি দোকানে মুরগির মাংস বিক্রি করতেন। জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সাভারে ছাত্রদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন জরিফুল। দিনব্যাপী পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিকেল ৩টার দিকে পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এ সময় জরিফুলের বাম পায়ে একটি গুলি লাগে। অন্য ছাত্ররা তাকে উদ্ধার করার সময় বাম পায়ে আরও একটি গুলি লাগে। পরে ছাত্ররা উদ্ধার করে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত তাকে বিভিন্ন মেডিকেলে নিয়ে গেলেও ছাত্রলীগ ও পুলিশের বাধায় চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি। এ সময় দূরের একটি হাসপাতালে অপারেশন করে পা থেকে তার গুলি বের করা হয়। পরে জানতে পারেন তার পায়ের দুটি হাড় ভেঙে গেছে। এরপর গ্রামের বাড়িতে ফিরে এসে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসা নেন। জরিফুল ইসলামের স্ত্রী রেজিনা বেগম বলেন, স্বামীর রোজগারের টাকায় সংসার চলত। এখন আমার স্বামী পঙ্গু হয়ে বাড়িতেই পড়ে আছেন। ধারদেনা করে সংসার চলছে। স্বামীর চিকিৎসা করাব কী করে? কেউ কি নেই আমাদের পাশে দাঁড়াবেন। সন্তান দুটিকে মানুষ করব কীভাবে? জরিফুল ইসলাম বলেন, সেদিন সাভার এলাকায় ছাত্রদের আন্দোলনে যোগ দিই। ছাত্রদের পানি থেকে শুরু করে সবকিছুই সরবরাহ করি। এ সময় আমার বাম পায়ে পরপর দুটি গুলি লাগে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পঙ্গুত্ববরণ করে বাড়িতেই পড়ে আছি। তিনি বলেন, প্রতিদিন ১ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। এত টাকা আমি কই পাই? আমার চিকিৎসা, সংসারইবা চলবে কী করে? সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য চাই। যারা আমাকে গুলি করেছে তাদেরও বিচার চাই। বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্যানেল চেয়ারম্যান আবেদ আলী বলেন, ঢাকায় আন্দোলনের সময় জরিফুলের পায়ে গুলি লাগে। তিনি অত্যন্ত গরিব। বিত্তবানদের উচিত তার পাশে দাঁড়ানো।
০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

চব্বিশ ঘণ্টায় ৯৮৫৭ বন্যার্তকে চিকিৎসা দিয়েছে সশস্ত্র বাহিনী
সশস্ত্র বাহিনীর তিনটি ফিল্ড হাসপাতাল ও ১৯টি মেডিকেল টিম, একটি সেনা ক্লিনিক বন্যাদুর্গতদের নিরলসভাবে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে ৯ হাজার ৮৫৭ জনকে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বন্যার কারণে তৈরি হওয়া স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনীর মেডিকেল টিমগুলো দুর্গত এলাকায় এ পর্যন্ত ৪২ হাজার ১১৩ জনকে জরুরি চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছে। এ ছাড়া বন্যাকবলিত এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে সশস্ত্র বাহিনী। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা ৪৮ জন বন্যাদুর্গত ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছেন। ৫২ হাজার ৫১৫ প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী এবং ৪৫০ জনকে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ২০ হাজার পিস পোশাক ও ৮ কার্টুন ওষুধ বিতরণ করেছে। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা ১০টি হেলিকপ্টার সর্টির মাধ্যমে বন্যাকবলিত এলাকায় এ উদ্ধার ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এ ছাড়া বন্যাদুর্গত এলাকায় মোবাইল সংযোগ সচল করতে সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তায় বেসামরিক মোবাইল কোম্পানিগুলো টাওয়ার মেরামতের কাজ চলমান রেখেছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুর্গত এলাকায় বর্তমানে সেনাবাহিনীর ৩০টি, নৌবাহিনীর দুটি, বিমানবাহিনীর একটি এবং কোস্টগার্ডের একটিসহ ৩৪টি ক্যাম্প মোতায়েন রয়েছে।
০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

শেবাচিম হাসপাতালে ৬ চিকিৎসক অবাঞ্ছিত, ইন্টার্নশিপ স্থগিত ছয়জনের
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের ছয় চিকিৎসককে হাসপাতাল ও কলেজ ক্যাম্পাসে আজীবনের জন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দুই বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে ছয় শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের ইন্টার্নশিপ। শনিবার (৩১ আগস্ট) সকাল থেকে মেডিকেল কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী এবং চিকিৎসকদের বিক্ষোভের মুখে দুপুরে এ সিদ্ধান্ত নেয় হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এর আগে অভিযুক্ত ১২ চিকিৎসককে অবাঞ্ছিত ও নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। অবাঞ্ছিত ঘোষণা হওয়া চিকিৎসকরা হলেন- শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ ও আওয়ামীপন্থি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) বরিশাল জেলার সভাপতি ডা. এসএম সারওয়ার, সাধারণ সম্পাদক ও শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স ওয়ার্ডের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সুদীপ হালদার, মেডিসিন ইউনিট-৪ এর ইন্টারনাল মেডিকেল অফিসার ও স্বাচিপ শেবামেক শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. এএসএম সায়েম, বহির্বিভাগের অর্থোপেডিক্স আবাসিক সার্জন ও স্বাচিপ শেবামেক শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. মাসরেফুল ইসলাম সৈকত, মেডিকেল অফিসার ডা. শিরিন সাবিহা তন্বী এবং হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা. বাকির হোসেন। এ ছাড়া ইন্টার্নশিপ স্থগিত হওয়া শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা হলেন- ডা. মহসীন বিভা, ডা. আরিফুজ্জামান ইমন, ডা. সাদমান বাকির সাবাব, ডা. প্রীতম দেবনাথ, ডা. অর্ঘ্য বিশ্বাস ও ডা. আসিফুল ইসলাম। এরা সবাই ইন্টার্ন ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন এবং আওয়ামীপন্থি বঙ্গবন্ধু ইন্টার্ন ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে ছিলেন। তথ্য নিশ্চিত করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ছয় চিকিৎসককে হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে আজীবনের জন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি ছয়জন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের ইন্টার্নশিপ দুই বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।’ এর আগে শনিবার সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতাকারী চিকিৎসকদের অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়ে মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থী এবং চিকিৎসকরা। এ সময় তারা হাসপাতাল পরিচালক এবং মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। পরে অভিযুক্তদের অবাঞ্ছিত ঘোষণার দাবি জানিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ এবং হাসপাতাল পরিচালকের কাছে লিখিত আবেদন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দেওয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিয়েছিলেন অবাঞ্ছিত ঘোষণা হওয়া চিকিৎসকরা। তারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের তালিকা করে তৎকালীন সরকারের কাছে প্রেরণ করে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা থেকে বিরত রাখা হয়।
৩১ আগস্ট, ২০২৪
X