আওয়ামী লীগ এখন শূন্য মুড়ির টিন : রিজভী
আওয়ামী লীগ এখন শূন্য মুড়ির টিন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, টিনের বাক্সে যদি মুড়ি না থাকে তাহলে সেই টিন ঝনঝন করে বেশি। তেমনি আওয়ামী লীগ এখন শূন্য মুড়ির টিন। এ কারণে আওয়ামী লীগের নেতারা ঝমঝম করে কথা বলছে।
সোমবার (৬ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে হাবীব উন নবী খান সোহেল মুক্তি পরিষদের উদ্যোগে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সেচ্ছাসেবক বিষয়ক সহ-সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েলসহ সব রাজবন্দির মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেশি কথা বলছেন, মনে হচ্ছে বিএনপির জন্য উনার খুব মায়া কান্না। বিএনপির ভাবনায় উনি ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। মুরগির বাচ্চার জন্য চিল যেমন মায়া কান্না করে ওবায়দুল কাদেরের কান্নাও সে রকম। তিনি (ওবায়দুল কাদের) মাঝে মাঝে আওয়াজ দেন বিএনপি নাকি দুর্বল হয়ে গেছে, বিএনপি ক্লান্ত, হতাশ, বিদেশ চলে যাচ্ছেন। তারা যে ভিতর থেকে ধসে গেছে, ভেঙে গেছে এটা চাপা দেওয়ার জন্যই তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রতিদিনই জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। মানুষ তিন বেলা খেতে পায় না। আজ মায়ের গর্ভ থেকে যে শিশুটা জন্মগ্রহণ করছে তার ঋণ হচ্ছে এক লক্ষ টাকারও বেশি। তারপরও তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ঋণ নিতে চাচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, সরকার আবার একটি ডামি নির্বাচন করতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজন যাতে না দাঁড়ায় সে জন্য কেন্দ্র থেকে নিষেধ করেছে। তারপরও মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়-স্বজনরা দাঁড়িয়েছে এবং তারা বলছে প্রধানমন্ত্রীরও তো ২০/২৫ জন আত্মীয়-স্বজন আছে। তারা যদি দাঁড়াতে পারে, তাহলে আমরা বাদ যাব কেন। এ নির্বাচনে জনগণ তো যাবেই না এবং অন্য কেউও চান্স পাবে না। কারণ অধিকাংশই আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজন এবং ব্যবসায়ীরা নমিনেশন কিনছে। দলের সংকট হলে তারা তো থাকবে না।
তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের আপনার দল যে শূন্য মুড়ির টিন হয়ে গেছে ওইটা আগে পূর্ণ করেন, তারপর বিএনপির কথা বলুন। বিএনপি দুর্বল নাকি হতাশ, এটা তো টের পান প্রতি মুহূর্তে। বিএনপিকে মোকাবিলা করার সাহস আওয়ামী লীগের নাই। এজন্য পুলিশ দিয়ে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় জনগণকে দমন করে জনগণের গলায় রশি দিয়ে আজ কথা বলছেন।
ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভাঙা কলসি বাজে বেশি। আপনাদের আওয়ামী লীগ ভাঙা কলসি। তাই আপনারা বাজছেন বেশি করে। জনগণকে যা দেখিয়েছেন, যা বলেছেন সব মিথ্যা। ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, পদ্মাসেতু দেখান। এইবার বাজেটে লক্ষ কোটি টাকার ঋণ চাচ্ছেন কেন? যৌবনকে আরামে থাকতে দিচ্ছেন না কেনো? জনগণের গলায় পাড়া দিয়ে বিদ্যুতের বিল, গ্যাসের বিল, পানির বিল বাড়াচ্ছেন কেন? আজ দেশে গণতন্ত্রের শাসন নাই বলে, বৈধ সংসদ নাই বলে সরকার জনগণের টুঁটি চেপে ধরে বিদ্যুৎ গ্যাস পানি থেকে বেশি বিল নিচ্ছে, ট্যাক্স নিচ্ছে।
তিনি বলেন, এ সরকার প্রকৃত পক্ষেই ব্যর্থ সরকার। ষড়যন্ত্রকারী সরকার। এ সরকার দেশের মানুষকে স্বস্তি দিতে আসেনি। তারা সাগর-রুনি হত্যার বিচার করতে পারেনি অথচ বিএনপি নেতা যদি কবরেও থাকে তার নামে মামলা দেয়। এ পরিস্থিতি চলতে দেওয়া যায় না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের অসুস্থ নেত্রী গণতন্ত্রের প্রতীক, গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে একেবারে সাজানো মামলায়। এমনকি তার উন্নত চিকিৎসার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিদেশে রাখা হয়েছে। তারপরও তিনি এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়, জনগণকে তার মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেছেন আমার ক্ষমতার দরকার নাই জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরে আসুক।
রিজভী আরও বলেন, যারা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ও অস্ত্র ধরছেন ইতিহাসে পাতায় তাদের নাম মীর জাফর হিসেবে লেখা থাকবে। আর যারা গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করছেন, জেলে যাচ্ছে, নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তাদের সিরাজউদ্দৌলার মতো দেশপ্রেমিক হিসেবে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখা থাকবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম নোমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহঅর্থনৈতিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা সাদরাজ্জামান, বর্তমান সহ-সভাপতি ডা. জাহিদুল কবির জাহিদ প্রমুখ।
০৬ মে, ২০২৪