মা পদক পাচ্ছেন আনোয়ারা
২০২২ সাল থেকে প্রতি বছর বিশ্ব মা দিবসে মা পদক প্রদান করে আসছে দেশের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আলী-রুপা ফাউন্ডেশন। আগামী ১২ মে বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে মা পদক ২০২৪ অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের সিনেমা, নাটক, গান, নৃত্যাঙ্গনসহ দেশের প্রশাসন, শিক্ষা, সাংবাদিকসহ বেশকিছু ক্যাটাগরিতে এবার কৃতী সন্তানদের মায়েদের মা পদক দেওয়া হবে। প্রতিবারই চলচ্চিত্র কিংবা নাটকের এমন একজন অভিনেত্রীকে মা পদক বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এবার চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেত্রী আনোয়ারা বেগমের হাতে এই সম্মাননা তুলে দেওয়া হবে। বিষয়টি জানার পর অভিনেত্রী আনোয়ারা বলনে, এর আগে অভিনয়ের জন্য রাষ্ট্রীয়, জাতীয় স্বীকৃতি পেয়েছি আমি ৯ বার। কিন্তু অসংখ্য মায়ের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য মা পদকে ভূষিত হচ্ছি। এটি সত্যিই আমার কাছে অন্যরকম ভালোলাগার। দর্শক আমাকে ভালোবাসেন; এটাই আমার বড় প্রাপ্তি। এ আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ।
০৫ মে, ২০২৪

দুই কোটি টাকার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার ২
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় র‌্যাব-৭ এর বিশেষ অভিযানে ২ কোটি টাকা মূল্যের ৬৪ হাজার ৭শ পিস ইয়াবাসহ দুই ইয়াবা কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তাদের ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকারও জব্দ করা হয়।  মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে উপজেলার বটতলী রুস্তমহাটের পশ্চিম পাশে সড়কে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলো- পটিয়া উপজেলার শান্তির হাট এলাকার আবদুল মালেকের পুত্র মো. চান মিয়া সওদাগর (৬১) ও একই এলাকার মৃত শফির পুত্র মো. ইসকান্দর হোসেন বাপ্পী (৩৮)। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দিয়ে আনোয়ারা থানায় হস্তান্তর করলে পুলিশ বুধবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠায়।  র‌্যাব-৭ চট্টগ্রামের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গ্রেপ্তাররা ৬৪ হাজার ৭০০ ইয়াবা নিয়ে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে আসার পথে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের বহনকারী একটি প্রাইভেটকার তল্লাশি করে ইয়াবা জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তাররা প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, তারা সুকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ ইয়াবা কক্সবাজার থেকে স্বল্প মূল্যে সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবনকারীদের কাছে অধিক মূল্যে বিক্রি করে আসছে। উদ্ধার মাদকদ্রব্যের আনুমানিক মূল্য ২ কোটি টাকা।
১৭ জানুয়ারি, ২০২৪

চট্টগ্রামে সকালেই কেন্দ্রে ভোটারদের সারি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। রোববার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ করা হবে। এ আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৮৬৪। ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১১৮ টি এবং ভোট কক্ষ রয়েছে ৮৩৩ টি। সকাল থেকেই এসব কেন্দ্রে ভোটারদের সারি দেখা গেছে। সরেজমিনে বৈরাগ গুয়াপঞ্চক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, নির্দিষ্ট সময়ের আগে ভোটাররা কেন্দ্রে এসে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। পুরুষের পাশাপাশি নারী ভোটারের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো। ৮ টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার সজিব কুমার রুদ্র জানান, এ কেন্দ্রে বুথ রয়েছে ৫ টি, পুরুষ ভোটার ২৭০০ এবং মহিলা ভোটার ২৫৩০। সকাল ৮ টা ১০ মিনিট পর্যন্ত ১০ ভোট পড়েছে। চট্টগ্রাম-১৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন সাতজন। তাদের মধ্যে দলীয় প্রার্থী হলেন আওয়ামী লীগের বর্তমান ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ (নৌকা) জাতীয় পার্টির আবদুর রব চৌধুরী টিপু (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির মকবুল আহমদ চৌধুরী সাদাদ (সোনালী আঁশ), ইসলামী ফ্রন্টের মাস্টার আবুল হোসেন (মোমবাতি), ইসলামিক ফ্রন্টের স. ম হামেদ হোসাইন (চেয়ার), সুপ্রিম পার্টির (একতারা) ও ইসলামী আন্দোলনের মওলানা আবদুর রশিদ (বটগাছ)। তবে এ আসনে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। ভোটার মো. ইলিয়াস বলেন, ব্যবসায়ীক কাজ থাকায় সকাল সকাল ভোট দিতে এসেছি। ভোট দিতে পেরে ভালো লাগছে।
০৭ জানুয়ারি, ২০২৪

ঈগল প্রতীকে লড়বেন তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা ইসলাম রানী
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ (সদর-সিটি করপোরেশন) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের আনোয়ারা ইসলাম রানী। নির্বাচনে তিনি ঈগল প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। এই প্রতীকেই নির্বাচনে লড়বেন তিনি। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান এ প্রতীক বরাদ্দ প্রদান করেন। একজন তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি হিসেবে রংপুরের ন্যায় অধিকার ট্রান্সজেন্ডার উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি আনোয়ারা ইসলাম রানী। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এ জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করছেন। করোনাকাল ছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময় সংগঠনের পক্ষে বিভিন্ন সামাজিক কাজে অংশ নিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন। আনোয়ারা ইসলাম রানী বলেন, সারা দেশের উন্নয়নের সঙ্গে রংপুর অনেক পিছিয়ে। এছাড়া বিভিন্ন দুর্যোগের সময় এই এলাকার প্রতিনিধিরা জনগণের পাশে থাকেন না। সব মিলিয়ে রংপুর সদর-৩ আসনটি বরাবরই পিছিয়ে। রংপুরকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এবং পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। জনগণ পাশে থেকে সমর্থন এবং ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করলে এলাকার উন্নয়নের জন্য আন্দোলন করবেন বলেও জানান তিনি। নির্বাচনে গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে প্রতিপক্ষ ভাবেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির প্রার্থী গোলাম মোহাম্মদ কাদের একজন সম্মানিত ব্যক্তি। উনাকে শ্রদ্ধা করি। তবে নির্বাচনী মাঠে উনাকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করি না।
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

আনোয়ারা উপজেলা আ.লীগের বর্ধিত সভা
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি উপলক্ষে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা সদরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এমএ মান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য দেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য এসএম আলমগীর চৌধুরী, সহসভাপতি জাফর উদ্দিন চৌধুরী, হরিপদ চক্রবর্তী, যুগ্ম সম্পাদক চেয়ারম্যান নোয়াব আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাব উদ্দিনসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা।
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৩

জন্মদিন / আনোয়ারা সৈয়দ হকের ‘তৃষিতা’জীবনতৃষ্ণার মূল্যবান আকর
আনোয়ারা সৈয়দ হকের ‘তৃষিতা’ আখ্যানের কেন্দ্রীয় চরিত্র আবেগে উদ্বেলিত তুলি (রাহিজা)। আবহমানকাল ধরে আদিগন্ত সমতলচরাচরব্যাপী সোনালি গোধূলি-ক্যানভাসকে কালো কালিতে চোব্রানো তুলির আঁচড়ে ঢেকে দিয়ে, সেই আন্ধারের পটে আনোয়ারা জ্বালিয়ে দিয়েছেন সোনালি পিদিম শিখা। মাটির সোঁদা গন্ধে সুরভিত উঠোন, বাড়ি, বাঁশবাগান, নারিকেলগাছের ছড়ানো আবছায়া পেরিয়ে কেবলই পিদিম শিখাকে নিশানা করে লক্ষ্যে পৌঁছানোর মানসব্রত ধারণ করেন তুলি। এই তুলি-চরিত্রটির বরাতে উপন্যাসিক আনোয়ারা সৈয়দ হক একঝলক অলীক পিদিম শিখা এঁকে দেখিয়েছেন আমাদের হাজার-হাজার বছরের সুগন্ধভরা ভাত ও জাউয়ের ঐতিহ্যের ইন্দ্রজালিক দৃশ্যকল্প। ২. যদিচ তার কাহিনিটি নিরাভরণ, চপলচরণ দুপায়ে চলার মাধুর্যনির্ভর নাগরিক চিত্রনাট্য। তুলি মেডিকেল কলেজের ছাত্রী। তার জীবনে প্রেম এসেছে। মুশতাক। একজন লেখক। সে তুলিকে ভালোবাসে। তুলিও ভালোবাসে মুশতাককে। তুলি ভাবে : ‘এসব কোনো দিনও সত্যি হবে না। এ কেবল মেয়েমানুষ হয়ে জীবন উপভোগ করবার কল্পনা—যে জীবন বর্ণময়, গন্ধময়, রোমাঞ্চকর এবং যে জীবন উপভোগ করার সাহস বোধকরি কোনো দিন হবে না।’ তুলির এই হৃদয়বৃত্তি শতদল পাপড়ি মেলতে চায়। তুলি ভাবে তার মুশতাক আছে। কিন্তু সুদর্শন পাঞ্জাবি যুবক ফাররুখ তুলির রবীন্দ্রসংগীত শুনে অনুষ্ঠান শেষে তার সঙ্গ খুঁজে-পেতে দেখা করে। এই একতরফা দেখা করার বিরাম নেই। এদিকে মুশতাক যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে। ঝোঁক চাপলে তুলি নিজেকে ঠিক রাখতে পারে না। তুলিকে পরামর্শ দিয়েছে মুশতাক—নিজেকে স্থির রাখতে পারাটাই নাকি বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু সমগ্র উপন্যাসে তুলি এই বুদ্ধির কাজটুকু করতে ব্যর্থ হয়েছে। এটা কি নারী-চরিত্রের সাধারণ বৈশিষ্ট্য? কুমকুম, লিলি, হাসিনাসহ সহপাঠিনীদের সঙ্গে যে শিক্ষাজীবন চলমান ছিল, তুলির সম্মুখে তার নিরুপদ্রব প্রেমপ্রবাহ দ্বিধাবিভক্ত করে দেয় মিলি চৌধুরীর উপস্থিতি, যে মিলি চৌধুরী মুশতাকের পূর্বপরিচিতা কিংবা প্রেমিকা। এসব টানাপোড়েন এক নাটকীয় অস্থিরতার জন্ম দেয় তুলির জীবনে। কিন্তু একসময় স্থিরতা ফিরে-পাওয়া তুলি নিজেই ফিরে আসে মুশতাকের বাড়িতে। এখানেই কাহিনি চরম পরিণতি পায়। চরম নাটকীয়তার মুখে মুশতাক তুলিকে কক্ষে বন্ধ করে পাশাপাশি বসে। তুলির কোনো ভয় নেই। মুশতাকেরও কোনো আগ্রাসী ঔদ্ধত্য নেই। আছে দুজনের চরম বিরক্তিকর মুহূর্তের মাঝেও অটুট অবিনাশী প্রেম। তারা কথা বলে—পাশাপাশি শুয়ে। তুলি প্রস্তাব দেয় সাত দিনের মধ্যেই বিয়ের আয়োজনের। তাদের কথন-উপকথনের মধ্য দিয়ে মুশতাক তার দার্শনিক ভাষ্য প্রকাশ করে। আর এভাবেই কাহিনির সমাপ্তি ঘটে। ‘তৃষিতা’ উপন্যাসের এ ভাষ্য চরিত্রদের স্বকীয় অভিজ্ঞতালব্ধ এক মূল্যবান সংযোজন : মুশতাক ধীরগলায় বলল, ‘তুমি আমাকে ছেড়ে যাবার পর থেকে অনেক ভেবেছি। রাতদিন ভেবেছি। ভেবেছি মৃত্যু কী? মৃত্যু হচ্ছে এই মহাজীবনেরই একটা ট্রানজিশনাল পিরিয়ড। এক থেকে অন্য এক রূপান্তর। সেই হিসেবে সত্যিকারের মৃত্যু কখনোই নেই। আর ভালোবাসা কী? ভালোবাসা বলে কিছু নেই। স্থায়ী কিছু নেই। ভালোবাসা হচ্ছে, এই তুমি যেমন এখন আমার চোখের সামনে। এই বর্তমান। বর্তমানের এই মুহূর্তে। মুহূর্তের এই অনুভব। এই আকুলতা। এই দেহ ও মনকে এই মুহূর্তে ছুঁয়ে যাবার বাসনা এবং এ এমন একটা জিনিস, যা আজ থেকে কাল, কাল থেকে পরশু রং পাল্টাচ্ছে। মিলির জন্য আমার যে ভালোবাসা, তা বর্তমানে এক রূপান্তরিত শিলা। তার অবয়ব আছে কিন্তু আবেগ নেই। তা অনুভবহীন, শীতল। হয়তো সেই অর্থে আমি তোমাকেও একদিন ভালোবাসব না। আমি কাউকেই আর একদিনও ভালোবাসব না তুলি। সেদিন আর কোনো বিচ্ছেদ আমাকে বিচলিত করবে না। কোনো আক্ষেপও আমাকে আচ্ছন্ন করবে না অপরাধবোধে।’ জীবনের অগ্রগামী যাত্রাপথের শেষ নিঃশ্বাস মৃত্যু। তারপর কী? তারপর মহাজীবন। মহাজীবনের প্রবেশপথই মৃত্যু। ট্রানজিশনাল পিরিয়ড। শেষ বলে কিছু নেই। রূপান্তর ঘটে কেবল। জীবনের এ রূপান্তর অনিবার্য এসব দর্শনকথনের ভেতর লুকিয়ে আছে জীবনের প্রাণশক্তিও। শক্তির ক্ষয় নেই, লয় নেই। একপর্যায় থেকে আরেক পর্যায়ে তার রূপান্তর ঘটে। এ প্রক্রিয়ায় জীবনের নির্যাস অর্থাৎ ‘সময়’-এর যথাযথ ব্যবহার করে কর্মের মাধ্যমে অনন্ত সময় বেঁচেও থাকতে পারে মানুষ। তাই তো শব্দশৃঙ্খলে বেঁধে মুশতাক বলতে পারে, ‘সত্যিকারের মৃত্যু কখনোই নেই।’ ৩. সুখে-দুখে উপভোগ্য জীবনের আরেকটা অনিবার্য সত্য ‘আবেগ’। এটা সহজাত। ভালোবাসা, স্নেহ-মমতা, সুখ-আনন্দ, রাগ-ক্রোধ, ঈর্ষা-হিংসা ঘৃণা এসব আবেগের উদাহরণ। ভালোবাসাও এক পজিটিভ ইমোশন, ইতিবাচক আবেগ। এটাও একধরনের শক্তি, মনের শক্তি। মনের এ তীব্র টান, মনের আকুলতা-ব্যাকুলতা লুকিয়ে থাকে অন্তর্গত শক্তি বা তাড়না, ‘ইনার ফোর্সে’র মধ্যে। এ ভালোবাসা নিয়ে মুশতাক বলছে, ‘ভালোবাসা বলে কিছু নেই। স্থায়ী কিছু নেই।’ কী ভয়াবহ কথা! এমন কথা পড়তে গিয়ে চমকে উঠবেন পাঠক। মূলত দুজন মানব-মানবী দীর্ঘদিন একসঙ্গে থাকার কারণে একটি অদৃশ্য মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে যান। এই বাঁধনে শক্ত গিঁট এঁটে দেয় এন্ডোরফিনস নামক রাসায়নিক উপাদান এবং অক্সিটোসিন নামক হরমোন। এন্ডোরফিনস দুজনার মধ্যে শান্ত-সৌম্য নিরাপত্তার অনুভূতি জাগায়, বিশ্বাস জাগায়, উন্মাতাল ঢেউ জাগায় না। এ মায়ার বাঁধন ও নিরাপত্তা বোধের অসাধারণ স্কেচও আমরা দেখেছি তুলি আর মুশতাকের সম্পর্কে। প্রধানত উত্তাল অনুভূতি তৈরি হয় কমবয়সী প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে। ‘পি পদার্থের’, উপস্থিতিই এখানে মুখ্য। কম বয়সের প্রেম দ্রুত মিলিয়ে গেলেও নিঃশেষ হয়ে যায় না। এদের প্রেম পাত্র থেকে পাত্রে সঞ্চারিত হয়। নতুন মুখ, নতুন চোখ, নতুন হাসি তুমুল উদ্দীপনায় আবার মস্তিষ্ককে উদ্দীপ্ত করে, নতুন করেই সমান মাত্রায় ‘পি পদার্থ’র নিঃসরণ বাড়িয়ে তুলতে পারে। নতুন প্রেমের জোয়ার পূর্ণোদ্যমে আবার চলে আসে এভাবেই। আর এন্ডোরফিনসের কারণে ভালোবাসায় স্থিতি আসে বিধায় প্রেমিক-প্রেমিকা বা স্বামী-স্ত্রী নিজেদের অনেক ভুলত্রুটি সয়ে নিতে পারে। হুট করে এদের ভালোবাসা চলে যায় না, রং বদলায় না। এখানে ‘বিশ্বাস’ বড় শক্তিরূপে হাজির হয়। জনম জনম একে অন্যকে ভালোবাসব, ‘বর্তমান’-এর এ বিশ্বাসই বর্তমানকে রাঙিয়ে দেয়। ভবিষ্যতে তা স্থায়ী না হলেও বর্তমান হয় উপভোগ্য, আনন্দময়। বিজ্ঞানের এসব সত্যকথনও আমরা দেখতে পাই মুশতাকের দর্শনতত্ত্বে। তাই জীবনের শিকড় উপড়ে মুশতাক বলতে পারে, ‘ভালোবাসা বলে কিছু নেই। স্থায়ী কিছু নেই।’ এখানে আমরা দেখেছি মুশতাকের অসাধারণ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা। আর আবেগের টানে চলতে গিয়ে বুদ্ধির ধার কমে গেছে তুলির, তাও দেখেছি সমগ্র উপন্যাসে। ‘তৃষিতা’ উপন্যাসের গভীরতলে মনস্তাত্ত্বিক এক চেতনা-প্রবাহও রয়েছে নিয়তই বর্তমান, যা উপন্যাসটিকে অনন্য মর্যাদার আসনে তুলে ধরে রাখতে পেরেছে বলে বিশ্বাস।
০৩ নভেম্বর, ২০২৩

আনোয়ারা উদ্যান ফিরে পেতে দাবির সঙ্গে মন্ত্রী-মেয়রের একাত্মতা
রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র ফার্মগেট সংলগ্ন আনোয়ারা উদ্যান। গণপূর্ত অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়ে ২০১৮ সাল থেকে এটিকে মেট্রোরেলের প্রকল্প অফিস ও নির্মাণ উপকরণ রাখার কাজে ব্যবহার করে আসছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। কথা ছিল নির্মাণকাজ শেষে পার্কটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার। কিন্তু তা না করে উল্টো সেখানে মেট্রোরেলের স্টেশন প্লাজা নির্মাণের পরিকল্পনা করছে তারা। যেখানে বিপণিবিতান, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, কফিশপ, বিনোদনকেন্দ্রের মতো বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। শহীদ আনোয়ারা উদ্যানে মার্কেট নয় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী ও আশপাশের স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার (১৫ অক্টোবর) ঢাকার ফার্মগেটের পুনর্নিমিত ফুটওভার ব্রিজের উদ্বোধনের আগে মানববন্ধন করেন তারা। তাদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। মন্ত্রী জানিয়েছেন, শহীদ আনোয়ারা উদ্যানের জায়গায় কোনো সুপার মার্কেট হতে দেওয়া হবে না। মানববন্ধনে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী দাবি জানিয়ে বলেন, একটি মহল মাঠ বন্ধ করে মার্কেট বানানোর যে চক্রান্ত করছে তা অতিসত্বর বন্ধ করতে হবে। মেট্রোরেলের কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে তাই কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবার জন্য খেলার মাঠ হিসেবে সংস্কার করে উন্মুক্ত করে দিতে হবে। ফুট ওভারব্রিজ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, শুনলাম আনোয়ারা উদ্যানে যারা মেট্রোরেল তৈরি করছেন তারা নাকি এখানে বড় একটা মার্কেট করবে। যারা মাঠ নষ্ট করে মার্কেট করতে চান আমি তাদের বলছি, আমি জনগণকে নিয়ে তা প্রতিহত করব। এটি আগে সিটি করপোরেশনের জায়গা ছিল। আমাদের জায়গা আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হউক তাহলে আমরা এখানে সুন্দর, আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠ গড়ে তুলব। আর তা না করে কেউ যদি এখানে মার্কেট বানাতে চায় তাহলে আমিও আপনাদের সঙ্গে প্রতিবাদে যোগ দিব। আমরাও মার্কেট নয়- মাঠ চাই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এটি অনেক আগে থেকেই খেলার মাঠ। এটি পাকিস্তান আমলে ছিল ফর্টিকালচার গার্ডেন হিসেবে। সামনে বিস্তীর্ণ ফুলের বাগানও ছিল। ৬ দফার আন্দোলনে এখানে মনু শাহাদাত হয়েছিলেন। পাকিস্তান সরকার আন্দোলন যখন কন্ট্রোল করতে পারছিল না তখন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিয়েছিল। তখন তারা বেপরোয়া হয়ে গেছিল। ’৬৯-এর আন্দোলনের সময় শহীদ আনোয়ারা তার ছেলেকে দুগ্ধ পান করাচ্ছিলেন। কিন্তু তাদের গুলিতে এখানে শহীদ হন। তখন আমরা আনোয়ারা বাগান বলে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর থেকেই এটি আনোয়ারা মাঠ নামে পরিচিতি পায়। তিনি বলেন, ফার্মগেটে যথেষ্ট সুপার মার্কেট আছে। এখানে অনেক মার্কেট হয়েছে। মার্কেটের জন্য আরও বহু জায়গা রয়েছে। এখানে মেট্রোরেল এসেছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এসেছে। কাজেই এখানে আমরা আর ইমারত না করি, এখানে একটা বাগান থাকবে। আমাদের এই আনোয়ারা বেগমের নামেই বাগানটি হবে। এটা আমরাও চাই।
১৫ অক্টোবর, ২০২৩

আনোয়ারা উপকূলে লাগানো হচ্ছে ৪৫ হাজার গাছ
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় উপকূল রক্ষায় বিভিন্ন প্রজাতির ৪৫ হাজার গাছ লাগাচ্ছে উপকূলীয় বন বিভাগ। গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় রায়পুর ইউনয়নের ফুলতলী এলাকায় সাপমারা খালের বেড়িবাঁধে একটি বটগাছের চারা লাগিয়ে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইশতিয়াক ইমন। উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রাম সদর রেঞ্জের আয়োজনে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ, ইউপি সদস্য হাফেজ মোহাম্মদ ইসহাকসহ বন বিভাগের কর্মকর্তারা। বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, পরিবেশ ও জলবায়ু রক্ষায় বন বিভাগ আনোয়ারা উপকূলে ৪৫ হাজার গাছের চারা রোপণ করবে। এসব গাছের মধ্যে রয়েছে ঝাউ, আকাশমণি, সজিনা, খেয়াবাবলা, আমলকী, হরীতকী, নিম, কতবেল, বট, বরই, কড়ই ও কাঠবাদাম। চারা লাগানোর পর পরিচর্যারও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উদ্বোধনের পর আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এসব চারা রোপণ করা হবে।
২৭ জুলাই, ২০২৩
X