যুক্তরাজ্যে অবৈধ বাংলাদেশিদের জন্য দুঃসংবাদ
‘রাজনৈতিক আশ্রয়’ চেয়ে অনেকেই যুক্তরাজ্যে আবেদন করেছিল। এদের মধ্যে যাদের আবেদন ব্যর্থ হয়েছে সেসব বাংলাদেশিকে ‘ফাস্ট-ট্রাক’(দ্রুত) পদ্ধতিতে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে দেশটি।  গত এক বছরে শুধু স্থায়ীভাবে থাকার প্রয়াসে প্রায় ১১ হাজার বাংলাদেশি ‘রাজনৈতিক আশ্রয়ে’র আবেদন জমা দিয়েছে। দেশটির গণমাধ্যম টেলিগ্রাফে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানা গেছে।  প্রতিবদনে বলা হয়েছে, আশ্রয়ের আবেদন খারিজের পাশাপাশি যারা বিদেশি অপরাধী ও যাদের ভিসার বৈধ মেয়াদ অতিবাহিত হয়ে গেছে তাদেরকেও ফেরত পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো সহজ করতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি নতুন চুক্তি করেছে যুক্তরাজ্য। লন্ডনে দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তিটি হয়। যুক্তরাজ্যের অবৈধ অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল টমলিনসন বলেছেন, লন্ডনে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্রবিষয়ক যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ প্রথম যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে চুক্তির ব্যাপারে দুই দেশ সম্মত হয়। ওয়ার্কিং গ্রুপে উভয় দেশ অংশীদারত্ব জোরদারে অঙ্গীকার করে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিষয়ে সহযোগিতা জোরালো করতে প্রতিশ্রুতি দেয়। ওয়ার্কিং গ্রুপ বিদ্যমান ভিসা রুটগুলোর মাধ্যমে বৈধ অভিবাসনের সুবিধা অব্যাহত রাখা, অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলা, তথ্য ভাগাভাগি জোরদার করা, গুরুতর সংগঠিত অপরাধ মোকাবিলায় নিজ নিজ পন্থা সম্পর্কে পরস্পরের সঙ্গে বোঝাপড়া বাড়ানোর ব্যাপারেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়।
১৭ মে, ২০২৪

টেকনাফে আশ্রয় নিলেন বিজিপির আরও পাঁচ সদস্য
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের জেরে রাখাইন রাজ্যের মংডু থেকে নাফ নদ অতিক্রম করে কক্সবাজারের টেকনাফে আশ্রয় নিয়েছেন দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির আরও পাঁচ সদস্য। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় তারা টেকনাফের সাবরাং উপকূলে পৌঁছালে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সদস্যরা তাদের আটক করেন। এ সময় তারা আশ্রয় চান। তাদের নিরস্ত্র করে হেফাজতে নেন বিজিবি সদস্যরা। বিজিপির পাঁচ সদস্য আশ্রয় নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী। তিনি বলেন, সবাইকে বিজিবির হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের নাম-ঠিকানাসহ পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে। এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়কের ফোনে যোগাযোগ করা হয়; কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
১০ মে, ২০২৪

ঝড়ের কবলে হাজারো চড়ুই পাখি, আশ্রয় দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান
ঝোড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে মাটিতে ছটফট করছিল হাজারো চড়ুই পাখি। পরে এসব চড়ুই পাখি উদ্ধার করে নিজ কার্যালয়ে নিয়ে আশ্রয় দিয়ে রক্ষা করেন কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইনের সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরীফ কামাল। রোববার (৫ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার সদর ইউনিয়ন ভবনে এমন চিত্র দেখা যায়। জানা গেছে, কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়ে কয়েক হাজার পাখি পরিষদের সামনের কাঁঠাল গাছে আশ্রয় নেয়। রোববার সন্ধ্যায় হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় শুরু হলে প্রচণ্ড বাতাসের কারণে ইউনিয়ন পরিষদের সামনের কাঁঠাল গাছে থাকা হাজারও চড়ুই পাখি মাটিতে পড়তে থাকে। পরে ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শরীফ কামাল গাছ থেকে পড়ে যাওয়া পাখির জন্য নিচে পাটের ছালার চট বিছিয়ে দেন। নিচে পড়ে যাওয়া পাখিগুলো বালতিতে করে ইউনিয়ন পরিষদের নিজ কক্ষে নিয়ে আসেন। পরে সুস্থ হলে পাখিগুলো ছেড়ে দেন তিনি। মিঠামইন সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরীফ কামাল কালবেলাকে বলেন, ঝড়ের সময় গাছ থেকে চড়ুই পাখিগুলো পড়তে থাকে। এগুলো দেখে অনেক কষ্ট লাগে। তাই গাছের নিচে পাটের ছালার চট বিছিয়ে দেই। যে পাখিগুলো গাছ থেকে পড়ে গেছে তা তুলে এনে পরিষদের আমার বসার কক্ষে আশ্রয় দিয়েছি। কম করে হলেও পাখির সংখ্যা হাজারের মতো হবে। ঝড় কমলে আস্তে আস্তে সে পাখিগুলো ওড়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
০৬ মে, ২০২৪

আশ্রয় নিল বিজিপির আরও ৮৮ সদস্য
কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের শাহপরীর দ্বীপ দিয়ে অস্ত্রসহ মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) অন্তত ৮৮ সদস্যের বাংলাদেশে পালিয়ে আসার খবর পাওয়া গেছে। পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্যদের কোস্টগার্ডের সদস্যরা হেফাজতে নিয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। গতকাল রোববার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোস্টগার্ড চট্টগ্রাম পূর্ব জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তাহসিন রহমান। তিনি বলেন, অনুপ্রবেশকারী ৮৮ বিজিপিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করা হবে। তবে বিষয়টি নিয়ে বিজিবির কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি। তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনুবিভাগের মহাপরিচালক মিয়া মো. মাঈনুল কবির বলেন, ‘শনিবারের মতো রোববার মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্যরা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তবে কতজন সেটা এখনো জানা যায়নি। তাদেরও বিজিবির হেফাজতে রাখা হবে।’ স্থায়ীরা জানান, কাঠের ট্রলারে করে আসা মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যদের কোস্টগার্ড সদস্যের হেফাজতে নেওয়ার পর টেকনাফের কেরুনতলীর কোস্টগার্ড স্টেশনের কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। সেখানে অন্তত ৮৮ জন বিজিপি সদস্য রয়েছে। কোস্টগার্ড স্টেশন কার্যালয়ের পাশে কয়েকটি বাসও অপেক্ষমাণ রয়েছে। এর আগে শনিবার মিয়ানমার বিজিপির কিছু সংখ্যক সদস্য পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে সংখ্যাটা ৫০ জনের কম বলে জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনুবিভাগের মহাপরিচালক মিয়া মো. মাঈনুল কবির। টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে রোববারও মিয়ানমারের বিজিপির ৮০ থেকে ৯০ জন সদস্য পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে এটা শুনেছি। তবে বিষয়টি কোস্টগার্ড ও বিজিবি দেখছে।’ এর আগে দুই দফায় পালিয়ে আসা বিজিপি ও সেনাবাহিনীর ৬১৮ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ২৮৮ জন মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ও সেনাসদস্যকে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ। এর আগে আশ্রয় নেওয়া ৩৩০ জন বিজিপি, সেনা ও কাস্টমস কর্মকর্তাকে ১৫ ফেব্রুয়ারি স্বদেশে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ।
০৬ মে, ২০২৪

ইউরোপে রাজনৈতিক আশ্রয় আর সহজে মিলবে না
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রস্তাবিত অভিবাসন আইন নিয়ে চার বছর ধরে চলছিল আলোচনা-পর্যালোচনা। শেষে এ আইন নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে ২৭ দেশের এ জোট। এতে মূলত অনিয়মিত, অবৈধ অভিবাসন ঠেকানো এবং মানব পাচার রোধে কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ইউরোপে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রত্যাশীরা আগের মতো সুযোগ পাবেন না। সেইসঙ্গে বন্ধ হচ্ছে প্রতারণার মাধ্যমে আশ্রয় নেওয়ার সুযোগও। এর ফলে বাংলাদেশের মতো দেশের নাগরিকদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের বেশিরভাগ আবেদন নাকচ হয়ে যেতে পারে। এ ধরনের আবেদন আর আগের মতো অনির্দিষ্টকাল ঝুলে থাকবে না, সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ১২ সপ্তাহের মধ্যেই। ইইউর নতুন আইনে সম্প্রতি রাজনৈতিক আশ্রয় ও প্রয়োজনীয় অভিবাসন নীতির সংস্কার প্রস্তাবের অনুমোদন করা হয়েছে। এটি ২০২৬ সাল থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে। যেখানে আছে ১০টি ধারা। ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিউনিসিয়া, মরক্কো ও বাংলাদেশের মতো দেশের রাজনৈতিক আশ্রয়প্রত্যাশীদের বেশিরভাগ আবেদন নাকচ হয়ে যাবে, যাদের দ্রুত বন্দি ক্যাম্পে পাঠানো হবে। এসব বন্দি ক্যাম্প করা হবে সীমান্ত, স্থলবন্দর ও বিমানবন্দর এলাকায়। সেখান থেকে নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা হবে। এসব বন্দিশিবির নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকারকর্মীরা। তারা বলছেন, এসব বন্দিশিবিরে পদ্ধতিগত বন্দিত্ব ও মানবাধিকারের অবমূল্যায়নের আশঙ্কা রয়েছে। ইউরোপীয় নেতাদের ভাষ্য, নতুন নিয়মে যেমন অবৈধ অভিবাসন কমবে, তেমনি সুগম হবে দক্ষ শ্রমিকের পথও। বাংলাদেশের মতো দেশের নাগরিকদের জন্য, বিশেষ করে দক্ষ এবং মেধাবীদের জন্য দারুণ সুযোগ তৈরি হবে। এখন অভিবাসনের জন্য তারা বৈধ উপায়ে আবেদন করতে পারবেন। পাশাপাশি ভালো পেশা, উন্নত জীবনমানও নিশ্চিত হবে। একই সঙ্গে সরকারের মানব পাচার রোধের যে চেষ্টা রয়েছে, সেটিও এগিয়ে নেওয়া সহজ হবে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলা এ চুক্তিকে ঐতিহাসিক বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, অবশেষে ইউরোপে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রত্যাশী ও অভিবাসী ব্যবস্থাপনায় আইনি কাঠামো দাঁড় হচ্ছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লায়েন বলেছেন, এ চুক্তি আশ্রয়ের আবেদন প্রক্রিয়াকরণে দক্ষতা বাড়াবে। ইইউর নতুন চুক্তি অনুযায়ী, ইউরোপের প্রতিটি দেশের সীমান্তে বসছে কড়া নিরাপত্তা। আগে শুধু ইতালি, গ্রিসের মতো উপকূলীয় দেশগুলোতে অভিবাসী ঢল সামলাতে হতো। এখন দায়িত্ব ভাগ করে নেবে ইইউর সদস্য দেশগুলো। এ ছাড়া রাজনৈতিক আশ্রয়ের অনুরোধ সীমান্তের বাইরে যাচাই করা হবে। তা গ্রহণ না হলে আবেদনকারীকে ফিরতে হবে নিজ দেশে। প্রতিটি দেশের সীমান্তে থাকছে আশ্রয়কেন্দ্রও। কোনো সদস্যদেশ আশ্রয়প্রার্থীদের নিতে রাজি না হলে, অর্থ বা অন্যান্য সম্পদ দিয়ে সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে। নতুন ব্যবস্থাপনায় অভিবাসী অবৈধভাবে ইউরোপে প্রবেশ করলে সাত দিনের মধ্যে তার চেহারা ও হাতের বায়োমেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্টসহ পরিচয়, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা পরীক্ষা করা হবে। কর্মকর্তারা বলছেন, সর্বোচ্চ ১২ সপ্তাহের মধ্যেই সিদ্ধান্ত হবে কে থাকবেন আর কাকে ফিরতে হবে। প্রত্যেক রাজনৈতিক আশ্রয়প্রত্যাশীকেই দেওয়া হবে আইনজীবী। প্রতারণা করে আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ আর থাকছে না। অবশ্য দেশে ফিরলে সত্যি জীবনের হুমকি আছে, তেমন আবেদনকারীরা থাকার সুযোগ পাবেন। তবে আগের মতো যে কেউ চাইলেই রাজনৈতিক আশ্রয় পাবে না। শিশুরা বিশেষ সুবিধা পাবে। তাদের অধিকার স্বাধীন পর্যবেক্ষণ সংস্থা পর্যবেক্ষণ করবে। এদিকে নতুন আইনের কড়া সমালোচনা করেছে ইউরোপের কট্টর দক্ষিণ ও বামপন্থিরা। সেই তালিকায় আছে হাঙ্গেরি ও পোলান্ডের সরকার। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান বলেছেন, এ চুক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য শেষ পেরেক। এখন আর কোনো সীমান্ত নিরাপদ থাকবে না। হাঙ্গেরি কখনো গণ-অভিবাসনের উন্মাদনা মানবে না। সূত্র: ডয়চে ভেলে, ইউরোপাইইউনিউজ
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় দিয়ে কিডনি কেটে বিক্রি করেন মিল্টন সমাদ্দার?
মানবতার সেবক হিসেবে পরিচিত মিল্টন সমাদ্দার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার সেবামূলক কর্মকাণ্ডের রয়েছে ব্যাপক প্রচারণা। যেখানে দেখা যায়, অসহায়-দুস্থ মানুষের সেবায় তিনি গড়ে তুলেছেন ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের একটি বৃদ্ধাশ্রম। রাস্তা থেকে অসুস্থ ও ভবঘুরেদের কুড়িয়ে ওই বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় দিয়েছেন। আর জনসেবামূলক এসব কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন সরকারি-বেসরকারি নানা পুরস্কারও।  তবে মানবিকতার আড়ালে প্রকৃতপক্ষে মিল্টন সমাদ্দার একজন ভয়ংকর প্রতারক। তিনি যতটুকু করেন, প্রচার করছেন তার চেয়েও কয়েক গুণ। কিন্তু যে কারও গা শিউরে উঠবে বীভৎস একটি তথ্যে। অসহায় মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার নামে তাদের কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে বিক্রি করেন তিনি!  অনুসন্ধান করতে গিয়ে এমন বেশ কয়েকটি পৈশাচিক ঘটনার প্রমাণ দৈনিক কালবেলার হাতে এসেছে।    অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকার দক্ষিণ পাইকপাড়ায় মিল্টন সমাদ্দারের বৃদ্ধাশ্রমের কাছেই বায়তুল সালাম জামে মসজিদ। বৃদ্ধাশ্রমে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের একসময় এই মসজিদেই বিনামূল্যে গোসল করানো হতো। তার মানবিক কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে মসজিদ কর্তৃপক্ষ তাকে এই সুবিধা দিয়েছিল। তবে গোসল করানোর সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতিটি মরদেহের বিভিন্ন স্থানে কাটাছেঁড়ার দাগ শনাক্ত করেন। এ বিষয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে প্রশ্ন করে মসজিদ কর্তৃপক্ষ। এরপর তিনি ওই মসজিদে মরদেহ পাঠানো বন্ধ করে দেন। মিল্টন সমাদ্দারকে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন স্থানীয় একটি মাদ্রাসার পরিচালক তোফাজ্জল হোসেন। তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘মিল্টন এক সময় বাসা ভাড়া শোধ করতে পারতেন না। এখন তিনি এগুলো করে কোটি কোটি টাকার মালিক। দামি গাড়িতে চড়েন। আড়ালে মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চুরি করেন। আমাদের বায়তুল সালাম মসজিদে ওর মরদেহ ফ্রি গোসল করিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিছু মরদেহ গোসল করানোর পর দেখা যায়, সবগুলোর শরীরে কাটা দাগ। এ বিষয়ে মিল্টনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি মরদেহ পাঠানো বন্ধ করে দেন।’ তিনি বলেন, ‘রাস্তা থেকে মানুষ তুলে আনার পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। যাদের কিডনিসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ভালো থাকে, তাদের যথাযথ চিকিৎসা করানো হয়। তাদের জন্য ভালো খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করেন। এরপর সুস্থ হলে তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নেওয়া হয়। সুস্থ মানুষ কিন্তু কিছুদিন পরে দেখি মারা যান।’ তোফাজ্জল হোসেন আরও বলেন, ‘বারেক চাচা মরদেহ গোসল করাতেন। চাচা বলেছেন, তিনি একবার ওর আশ্রমে গিয়ে এক ব্যক্তিকে সুস্থ সবল দেখে এসেছেন। এর দু-তিন দিন পরই মসজিদে গোসল করানোর জন্য ওই ব্যক্তির মরদেহ আসে। ওই লাশের শরীরেও পেটের দিক দিয়ে কাটা দেখা যায়। এরপর বারেক চাচাও মরদেহ গোসল করাতে অস্বীকৃতি জানান।’ অনেক খোঁজাখুঁজির পর দক্ষিণ পীরেরবাগ আমতলা বাজারে গিয়ে সন্ধান মেলে সেই বারেক চাচার। মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাকে ফোন করা হলে তিনি নিচে নামছেন জানিয়ে বাসার নিচে অপেক্ষা করতে বলেন। কিন্তু এরপরই ফোন বন্ধ করে দেন। কয়েক ঘণ্টা পর ইন্টারকমে ফোন করে একজন লোক মারা গেছেন বলা হলে তিনি নিচে নামেন। তবে আশ্রম থেকে আসা মরদেহ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলতে রাজি হননি। বারেক নামের এই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি আগে তার মরদেহ গোসল করাতাম। এখন করাই না।’ এর কারণ জানতে চাইলে কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি বয়স্ক মানুষ। তার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিন ধরে কোনো যোগাযোগ নেই।’ ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’-এ কাজ করেছেন— নাম প্রকাশ না করার শর্তে এমন একজন বলেন, ‘কোনো রোগী অসুস্থ হলে সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয় না। এখানে রেখেই চিকিৎসা করা হয়। কারণ, তিনি চান না কেউ পুরোপুরি সুস্থ হোক। এটা তার ব্যবসা।’ ওই ব্যক্তির কথার মিল পাওয়া যায় মৃতদের ডেথ সার্টিফিকেটেও। যতজনকে দাফন করা হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারের প্যাডে। একটি আশ্রমে এত মানুষের মৃত্যুর বিষয়টি অবহিত করে মন্তব্য চাওয়া হলে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ ই মাহাবুব কালবেলাকে বলেন, ‘এত মানুষ মারা যাওয়া অস্বাভাবিক। তার মানে ওনার এখানে প্রোপার চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। তা ছাড়া উনি কতজনকে হাসপাতালে রেফার করেছেন, সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে। ওনার এখানে তো সবাই মারা যেতে পারে না। কেউ বেশি অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে পাঠাতে হবে, চিকিৎসা করাতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আশ্রম হসপিটালাইজড হলে সেখানে স্পেশালাইজড চিকিৎসক কে আছেন, সেটা দেখতে হবে। থাকলেও তিনি নিয়মিত যান কি না, সেটাও দেখতে হবে। প্রোপার চিকিৎসা হলে এত মানুষ মারা যাওয়ার কথা নয়।’ চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার নিয়ে নানা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল কালবেলাকে বলেন, ‘সারা দেশে এমন ৬৯ হাজার সংগঠনের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সবকিছু জানা আসলে সম্ভব হয় না। তবে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে আমরা খতিয়ে দেখব।’ এদিকে সার্বিক বিষয়ে জানার জন্য গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারকে ফোন করা হলে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনো সদুত্তর দেননি। কালবেলাকে তিনি বলেন, ‘আমি চিনি না। আপনি সাংবাদিক কি না, সেটা আমি কীভাবে বুঝব?’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেন। আমার কোনো সমস্যা নাই, সারা দেশের মানুষ জানুক। তবে সেটা প্রোপার ইনভেস্টিগেশন করে করেন।’
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

বাংলাদেশে আশ্রয় নিল মিয়ানমার বিজিপির আরও ১৩ সদস্য
কক্সবাজারের টেকনাফে আশ্রয় নিয়েছে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও ১৩ সদস্য। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভোরে টেকনাফের নাফ নদী দিয়ে তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বিজিবির সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, নতুন করে বিজিপির আরও এই ১৩ সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। পরে বিজিপি সদস্যদেরকে বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়ন-১১ এর কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানে মিয়ানমারের সর্বমোট ২৭৪ জন আশ্রয় নিয়েছে। তিনি বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়ন ১১ বিজিবির অধীনে থাকা ২৭৪ জনের মধ্যে বিজিপি সদস্য ছাড়াও সেনা সদস্যও রয়েছে। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ৪৬ জন পালিয়ে এসেছে। মঙ্গলবারে  প্রবেশ করেছিল ১৮ জন। তার আগের দিন সোমবার দুপুরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশফাড়ি সীমান্ত দিয়ে দুই সেনা সদস্য পালিয়ে আসে। তিনি আরও বলেন, এর আগে রোববার টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে আসে বিজিপির আরও ১৪ জন সদস্য। তারও আগে ওখানে মিয়ানমারের ১৮০ জন আশ্রয়রত ছিল। যাদের মধ্যে গত ৩০ মার্চ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তিনজন সদস্য নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এর আগে ১১ মার্চ আশ্রয় নেন আরও ১৭৭ জন বিজিপি ও সেনা সদস্য। গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে কয়েক দফায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন আরও ৩৩০ জন। যাদের গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩৩০ জনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।
১৯ এপ্রিল, ২০২৪

বাংলাদেশে আশ্রয় নিল আরও ৪৬ বিজিপি সদস্য
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতির জের ধরে বাংলাদেশে নতুন করে আশ্রয় নিয়েছেন আরও ৪৬ জন সেনা ও মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্য। তবে সেনা সদস্যরা কোন বাহিনীর কত জন তা এখনই বলা যাচ্ছে না। বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাত ১টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৪৪নং পিলার সাপমরা ঝিরি ও আশারতলী সীমান্ত দিয়ে তারা পালিয়ে আসেন। তাদের নিরস্ত্র করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হেফাজতে রয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) শরিফুল ইসলাম বলেন, মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), সেনাবাহিনী ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাসহ মিয়ানমারের মোট ২৬০ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। বিজিবি সূত্র জানা যায়, পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া সীমান্তরক্ষীর (বিজিপি) সদস্যদের ১১ বিজিবির ব্যাটালিয়ন–সংলগ্ন বিজিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। তাদের পরিচয় শনাক্তের পাশাপাশি তথ্যভাণ্ডার তৈরির কাজ চলছে। তারা কে বিজিবির তত্ত্বাবধানে আছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পাশাপাশি তাদের আঙুলের চাপসহ ডেটাবেজ তৈরির কাজ করা হবে। পরে তাদের ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু হবে। সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, টানা আড়াই-তিন মাস ধরে মিয়ানমারের রেখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। তুমুল যুদ্ধে ইতোমধ্যে মংডু টাউনশিপের উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব পাশের রাচিডং টাউনশিপসহ ১২ থেকে ১৫টি থানা ও পুলিশ ক্যাম্প দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে বিজিবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ প্রতিবেদক বলেন, কোনো প্রকার জটিলতা সৃষ্টি না হলে চলতি এপ্রিলেই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা জান্তা সদস্যদের তাদের দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হতে পারে।  নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার জানিয়েছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কয়েক দিন ধরে গোলাগুলি চলছে। আরাকান আর্মির যোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াইয়ে টিকতে না পেরে সীমান্ত অতিক্রম করে গতকাল রাতেও ৪৬ জন মিয়ানমারের জান্তা সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি জানান, বর্তমানে সীমান্তে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে দেখা গেছে। পাশাপাশি তিনিও তার পরিষদের মেম্বার ও গ্রাম পুলিশদের সীমান্ত পয়েন্টে সতর্ক থাকতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তের ওপারে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সংঘর্ষ শুরু হয়। এর জের ধরে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসে বিজিপির সদস্যসহ ৩৩০ জন। যার মধ্যে ৩০২ জন বিজিপি সদস্য, চারজন বিজিপি পরিবারের সদস্য, দুজন সেনাসদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য ও চারজন বেসামরিক নাগরিক। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সেনাসহ ৩৩০ জনকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত পাঠানো হয়।
১৭ এপ্রিল, ২০২৪

বাংলাদেশে আশ্রয় নিল আরও ৫ বিজিপি সদস্য
একদিন না পেরোতেই জীবন বাঁচাতে আবারও বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও ৫ সদস্য। কক্সবাজার টেকনাফের খারাংখালী সীমান্ত দিয়ে তারা প্রবেশ করে। রোববার (১৪ এপ্রিল) রাত ১১টার পরে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং খারাংখালী এবং ঝিমংখালী সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্যরা বাংলাদেশে ঢুকে আশ্রয় নিয়েছে। এর আগে রোববার সকালে খারাংখালী সীমান্ত দিয়ে অস্ত্রসহ মিয়ানমার বর্ডারগার্ড পুলিশের ৯ জন সদস্য আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এ নিয়ে একদিনে মোট ১৪ জন বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। নতুন করে আরও কয়েক মিয়ানমারের বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে জানিয়ে টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভাষা সমস্যাসহ নানা কারণে আমরা সম্পূর্ণ পরিচয় নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে যেটুকু তথ্য সংগ্রহ করেছি তাতে সবাই মিয়ানমারের বর্ডার পুলিশের সঙ্গে যুক্ত বলে জেনেছি। বিজিপির সদস্যরা আমাদের হেফাজতে রয়েছে। এর আগে গত মার্চে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে এসেছিলেন ১৭৭ জন মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্য। এরপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর আরও ৩ জন সদস্য তুমব্রু সীমান্তের কোণারপাড়া দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তাদেরকেও নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি ব্যাটালিয়নে নিয়ে যাওয়া হয়। এ নিয়ে সর্বমোট ১৯৪ জন বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
১৫ এপ্রিল, ২০২৪

আবারও বাংলাদেশে আশ্রয় নিল মিয়ানমারের ৯ বিজিপি সদস্য
মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের জেরে কক্সবাজার টেকনাফের কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) নয় সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র জমা নিয়ে হেফাজতে নিয়েছে বিজিবি। রবিবার (১৪ এপ্রিল) টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ কালবেলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  তিনি বলেন, কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে তারা পালিয়ে এসেছে। তবে কতজন সদস্য পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছেন তার সংখ্যা এখনই সঠিক বলা যাচ্ছে না। সবাইকে একত্রে করে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যদের সংখ্যা জানানো হবে। তবে ‍বিজিবির এক কর্মকর্তা বলেছেন, টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ঝিমংখালী ও খারাংখালী সীমান্ত দিয়ে বিজিপির নয় সদস্য পালিয়ে এসেছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত অবস্থায় রয়েছে। অস্ত্র জমা নিয়ে তাদের প্রথমে হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আহতদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালের দিকে নিয়ে গেছে বিজিবি। এদিকে ঈদের দিন থেকে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ‌্যে জান্তা সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির চলমান তুমুল চলমান যুদ্ধে একের পর এক মর্টার শেল ও গোলার বিকট শব্দে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের আতঙ্ক কাটছে না।  টেকনাফের হ্নীলার স্থানীয় বাসিন্দা মো. জুলফিকার আলি বলেন, ঈদের পর শুরু হওয়া ওপারের গোলার শব্দ এখনো এপারে পাওয়া যাচ্ছে। যুদ্ধে টিকতে না পেরে প্রাণে বাঁচতে দেশটির বিজিপির ৯ সদস্য সীমান্ত দিয়ে এপারে ঢুকে পড়েছে। বিজিবি তদের হেফাজতে নিয়েছে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী বলেন, বিজিপি সদস্যদের নিরস্ত্র করে বিজিবি হেফাজতে নিয়েছে। সীমান্তে আমরা সবাই মিলে কাজ করছি। পাশাপাশি সীমান্তে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহলের পাশাপাশি সর্তক অবস্থানে আছেন। এর আগে গত ১১ মার্চ নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে এসেছিলেন ১৭৯ জন মিয়ানমার বর্ডার পুলিশ (বিজিপি) সদস্য। তারা নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি ব্যাটালিয়নের হেফাজতে রয়েছেন। তাদের মিয়ানমারের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।  এরও আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তের ওপারে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সংঘর্ষ শুরু হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসে বিজিপির সদস্যসহ ৩৩০ জন। এরমধ্যে ৩০২ জন বিজিপি সদস্য, চারজন বিজিপি পরিবারের সদস্য, দুজন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য ও চারজন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত পাঠানো হয়।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪
X