দেশে একযোগে কর্মবিরতিতে ইন্টার্ন চিকিৎসক
৩০ হাজার টাকা ভাতা ও কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন দাবিতে সারা দেশে একযোগে সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করছে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ (ইচিপ)। গতকাল রোববার সকালে থেকে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলোতে এই কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎসকরা। এর আগে শনিবার আলাদা বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়। জানা গেছে, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। পরিষদের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা ৩০ হাজার টাকা এবং কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে সারা দেশের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা যৌক্তিক দাবি উত্থাপন করে আন্দোলনে সম্মিলিত হয়েছেন। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এমন পারিশ্রমিকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে গিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সিদ্ধান্তে ২৪ ও ২৫ মার্চ দুই দিনের কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মসূচির সঙ্গে একাত্ম হয়ে দাবি আদায়ে সচেষ্ট থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
২৫ মার্চ, ২০২৪

খুলনায় ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত
খুলনায় তিন দাবিতে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। দাবি আদায়ে অনড় অবস্থানে রয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। আন্দোলনকারীরা মেডিকেল কলেজের গেটে অবস্থান নিয়ে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য কলেজ প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানান। এর আগে খুলনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। তারা বলছেন, দাবি মানা না হলে কোনো অবস্থাতে তারা আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াবেন না। ক্লাস বর্জন ও অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। আন্দোলনরতদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে,  দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মধ্যে একটি মডেল ফার্মেসি স্থাপন করা এবং নিরাপত্তাহীনতায় থাকা শিক্ষার্থী-ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা। শিক্ষার্থীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত চলমান আন্দোলন থেকে কোনোভাবেই সরে আসবে না তারা। এ ছাড়া আন্দোলনকারীরা আজ থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একমাত্র জরুরি চিকিৎসা সেবা ছাড়া অন্য কোনো স্বাস্থ্যসেবা প্রদান না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।  অপরদিকে ফার্মেসি বন্ধ রেখে ওষুধ ব্যবসায়ীরাও আন্দোলনে নেমেছেন। মহানগরীর পাশাপাশি জেলা পর্যায়ের ফার্মেসিও বন্ধ রাখছেন। এমন পরিস্থিতিতে খুলনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও ওষুধ ব্যবসায়ীদের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। খুলনা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) আজ রাতে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে জরুরি সভা করবে বলে জানা গেছে। তা ছাড়া ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকেও উত্তেজনা প্রশমনে চেষ্টা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেও কোনো ফল আসেনি। এখন ক্ষমতাসীন রাজনীতিকদের হস্তক্ষেপের পাশাপাশি বিএমএর নেতাদের উদ্যোগ নিতে হবে। এ ব্যাপারে খুলনা বিএমএর সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম জানিয়েছেন, আজ রাতে এক জরুরি সভার আয়োজন করা হয়েছে। বিএমএ নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রতিনিধি এবং কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিও থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা জানিয়েছেন, আমরা একটি উদ্যোগ নিচ্ছি। আশা করি সন্তোষজনক সমাধান হবে। এ ব্যাপারে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. সাইফুল ইসলাম অন্তর গতকাল রাতে জানান, যারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে তাদের আইনের আওতায় এনে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। অন্যথায় আন্দোলন ধর্মঘট চলবে। তা ছাড়া শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেও কর্মসূচি আসছে। এদিন রাতে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে সভা করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অপরদিকে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির পক্ষ থেকে গতকাল রাতে সভা করে জানানো হয়েছে, সব ওষুধের দোকান বন্ধ রাখা হবে। সোমবার থেকে শুধু হাসপাতালের সামনের দোকানগুলো বন্ধ রাখা হলেও বুধবার থেকে জেলার সব দোকান বন্ধ রয়েছে। উল্লেখ্য, ওষুধ কেনার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও হাসপাতালের সামনের ওষুধ ব্যবসায়ীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরবর্তীতে পরস্পরকে অভিযুক্ত করে উভয় পক্ষই আন্দোলনে নামেন।
১৬ আগস্ট, ২০২৩
X