গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ধানের ফসল কর্তন উৎসব
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ এর ফসল কর্তন উৎসব ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় সদর উপজেলার হরিদাসপুর ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ে ফসল কর্তন উৎসব ও মাঠ দিবসের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপপরিচালক সঞ্জয় কুমার কুন্ডু। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৃজন চন্দ্র দাসের সঞ্চালনায় সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার, কৃষক সায়াদ উদ্দিন প্রমুখ। আড়পাড়া গ্রামের কৃষক সায়দ উদ্দিনের জমিতে উৎপাদিত বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ কেটে ফসল কর্তন উৎসব ও মাঠ দিবস উদযাপন করা হয়। প্রধান অতিথি সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, জিংক ও পুষ্টি সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ প্রতি হেক্টরে আড়পাড়া গ্রামের জমিতে ৭.৮১ টন ফলন দিয়েছে। গোপালগঞ্জের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এস এম আশিক ইকবাল বলেন, মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে সুষম মাত্রায় সার ব্যবহার করলে সার কম প্রয়োজন হয় এবং ফসলের উৎপাদনও ভলো হয়। অন্যদিকে মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করে আন্দাজ করেবেশি মাত্রায় রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে ফসলের উৎপাদন যেমন ব্যাহত হয় তেমনই ধীরে ধীরে মাটির উর্বরতা কমে গিয়ে উৎপাদন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। এত কৃষকের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। তাই জমির মাটি পরীক্ষা করে সুষম মাত্রায় সার ব্যবহারের আবশ্যকতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে কৃষকদের এ ধরনের সহায়তা বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। প্রদর্শনীর কৃষক মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আমি পূর্বে অতিরিক্ত সার ব্যবহার করে যে ফলন পেয়েছি এবং এবার মৃত্তিকা বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের পরামর্শে তাদের দেওয়া কম পরিমাণের সার ব্যবহার করে বেশি ফলন পেয়েছি। মাঠ দিবসে অংশে নেওয়া আরেক কৃষক গোলাম কিবরিয়া বলেন, তিনি অতিরিক্ত মাত্রায় সার ব্যবহার করে তার ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে, অনেক জায়গায় তার জমির ধান পুড়ে গেছে আবার অনেক জায়গায় ধান চিটা হয়ে গেছে। মৃত্তিকা বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে অল্প সার প্রয়োগে প্রদর্শনী কৃষকের ধান অনেক ভালো হয়েছে। সার কম ব্যবহার করায় তার খরচও অনেক কমে গেছে।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

ঘিওরে ৩ শতাধিক লাউগাছ কর্তন
মানিকগঞ্জের ঘিওরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে লাল খান (৬৫) নামের এক কৃষকের ৩ শতাধিক লাউগাছ কর্তনের অভিযোগ উঠেছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগী কৃষকের পরিবার। গতকাল শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে উপজেলার বড় পয়লা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী কৃষক মো. লাল খান একই এলাকার মৃত মঙ্গল খানের ছেলে। সরেজমিন দেখা গেছে, মাত্র লাউগুলো বেড়ে উঠছিল। এর মধ্যেই গাছের গোড়া কেটে ফেলায় বিবর্ণ হয়ে গেছে ক্ষেত। কালচে হয়ে গেছে পাতাগুলো। লাউগুলো নিচে পড়ে আছে। এ সময় তার পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়ে। তারা এর সুষ্ঠু বিচার চান। এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। ভুক্তভোগী কৃষক লাল খান জানায়, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তারই আপন বড় ভাই আওয়াল খানের ২০ শতাংশ জমি চাষাবাদ করে আসছেন। এ বছর তিনি জমিতে তিন শতাধিক লাউগাছ বপন করেন। প্রতিটি লাউগাছে ব্যাপক ফলন হয়েছে। গত কয়েক দিন আগে তিনি প্রায় ১০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। পুরো মৌসুমে প্রায় ৩ লাখ টাকার লাউ বিক্রি করা যেত। হঠাৎ জমির মালিক তাকে জমিটি ছেড়ে দিতে বলেন। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে একাধিক গ্রাম্য সালিশি বৈঠক বসে। বিয়ষটি সুরাহা না হওয়ায় শুক্রবার ভোরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই জমির মালিক আওয়াল খান ৩ শতাধিক লাউসহ সব গাছ কেটে ফেলেন। এতে কৃষক লাল খানের প্রায় ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। এক পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক কোনো উপায় না পেয়ে ৯৯৯ লাইনে ফোন করলে ঘিওর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এদিকে অভিযুক্ত আওয়াল খানের ছেলে রিয়ান ঘটনার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, আমাদের পারিবারিক বিষয় আমরা নিজেরাই সমাধান করে নেব। ঘিওর থানার ওসি আমিনুর রহমান জানান, তারা ৯৯৯ লাইনে ফোন করেছে। পরে আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১১ নভেম্বর, ২০২৩

বকেয়া বিদ্যুৎ বিল…হার্ডলাইনে এনএসসি / অনুদান থেকে পাওনা কর্তন
জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত ৫১ জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ৩ কোটি ১২ লাখ ৮৪ হাজার ৬১৬ টাকা। চলতি বছর পর্যন্ত বকেয়ার পরিমাণ ছাড়িয়ে যাবে সাড়ে ৩ কোটি টাকা। বকেয়া আদায়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) ফেডারেশনগুলোকে তাগাদা দিলেও তাতে সাড়া নেই বললেই চলে। বিকল্প পন্থা হিসেবে বার্ষিক অনুদান থেকে বিদ্যুৎ বিল কেটে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনএসসি। নতুন এ সিদ্ধান্তের কারণে কমছে ফেডারেশনগুলোর সরকারি অনুদানের পরিমাণ। ক্রীড়া স্থাপনা ও ফেডারেশন অফিসগুলোতে ব্যবহৃত বিদ্যুতের বিল এনএসসি পরিশোধ করলেও নানা কারণে তা আদায় করা যাচ্ছে না। ফলে এ খাতে ব্যয় বাড়ছেই নিয়মিত। লাগাম টানতেই বাধ্য হয়ে বার্ষিক অনুদান থেকে বিদ্যুৎ বিল কর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনএসসি। কর্তনের এ সিদ্ধান্তের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ফেডারেশরগুলোকে দেওয়া সরকারি অনুদানের ওপর। ‘কয়েকটি ফেডারেশন বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করছে, বাকিরা করছে না। এ সমস্যার সমাধান প্রয়োজন। এ কারণে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোর পরিচালন ব্যয় বাবদ বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে বিদ্যুৎ বিলের টাকা কেটে রাখা হবে’—বলছিলেন এনএসসির পরিচালক (অর্থ) মো. সাইদুর রশীদ। এনএসসিতে রক্ষিত নথিপত্র ঘেঁটে জানা গেল, সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ছিল বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের। ২০২২ সাল পর্যন্ত অঙ্কটা দাঁড়ায় ৬৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮৭ টাকা। একই সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাছে ৩৯ লাখ ১৮ হাজার ৫৫৭ টাকা, ভলিবল ফেডারেশন ও ভবিবল স্টেডিয়াম মিলে বকেয়া দাঁড়ায় ২৯ লাখ ৮১ হাজার ৭১৯ টাকা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নিয়ন্ত্রণাধীন মহানগরী লিগ কমিটির কাছে বকেয়া আছে ২৮ লাখ ৯ হাজার ৫৯২ টাকা। বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের কাছে বাকি ১৪ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৯ টাকা। বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসপিএ) বকেয়া ১২ লাখ ৪ হাজার ২২১ টাকা। এদিকে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ের এনএসসির হার্ডলাইনে যাওয়ার সিদ্ধান্তে আপত্তি জানাচ্ছেন বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, সরকার বার্ষিক অনুদান হিসেবে যে অর্থ প্রদান করে, তা আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এখান থেকে বিদ্যুৎ বিল কেটে নেওয়া হলে বরাদ্দ আরও কমবে। যদি এমনটি করতেই হয়, তবে বার্ষিক অনুদান বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন জাতীয় ফেডারেশন ফোরামের সভাপতি আসাদুজ্জামান কোহিনূর। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৬ জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশনের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল বাফুফের জন্য। সর্বনিম্ন ৯৪ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল ফেন্সিং ফেডারেশনের জন্য। শীর্ষ ফেডারেশনগুলোর জন্য বাজেটে মোট বরাদ্দ ছিল ৪ কোটি ৪৯ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। ২২ জাতীয় ক্রীড়া অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল বিএসপিএ, বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিএসজেএ) ও জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরামের জন্য। সর্বনিম্ন ৩১ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল বাংলাদেশ মার্শাল আর্ট কনফেডারেশনে। ২০২২-২৩ বাজেটে ২২ অ্যাসোসিয়েশনের জন্য মোট বরাদ্দ ছিল ৩১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। বেশিরভাগ ফেডারেশন নিয়মিত বিল পরিশোধ না করলেও কিছু ফেডারেশন আছে ব্যতিক্রম, যার অন্যতম বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশন। তীরন্দাজি খেলা পরিচালনা করা এ ফেডারেশনের মতো অন্যরা আন্তরিক হলে কর্তনের পথে হাঁটতে হতো না এনএসসিকে। ফেডারেশনগুলোর ব্যবহার করা বিদ্যুৎ বিল নিয়ে সবচেয়ে বড় জটিলতার জায়গা হচ্ছে অডিট আপত্তি। এ কারণে প্রতি অর্থবছরেই সরকারের একাধিক দপ্তরে জবাবদিহি করতে হয় এনএসসি কর্মকর্তাদের। চলতি বছরে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের সভায় তোপের মুখে পড়তে হয়েছে এনএসসি প্রতিনিধিকে। এ ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে একটি সমাধানে মরিয়া এনএসসি।
১১ আগস্ট, ২০২৩
X