এক হাজার সফল সার্জারি সম্পন্ন করেছে ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল
ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের ওটি-র উদ্বোধন হয় গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারিতে। এই স্বল্পসময়ে সফলতার সাথে ১ হাজার অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে হাসপাতালটিতে। ফিরে এসেছে ১ হাজার পরিবারের ম্লান হয়ে যাওয়া মুখের হাসি। দ্রুততম সময়ে এই ১ হাজার অপারেশনের মাইলফলক অর্জন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারে আয়োজন করা হয় এক সংবাদ সম্মেলন। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাব সাকিফ শামীম।  ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাকিফ শামীম বলেন, ক্যান্সার চিকিৎসায় বাংলাদেশের প্রতিবন্ধকতা এবং তা কাটিয়ে উঠতে কী ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। জনাব সাকিফ শামীম ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারকে ঘিরে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার একাংশ তুলে ধরেন। গত ৩ বছরে হাসপাতালটির অগ্রযাত্রায় সকলের নিরলস পরিশ্রমের প্রশংসা করেন।  তিনি আরও বলেন, দেশের প্রত্যেকটি মানুষের আস্থার জায়গায় হাসপাতালটির স্থান পক্ত করতে আরও অনেকদূর পথচলা বাকি। এই পথচলায় সবার সঙ্গ কামনা করে হাসপাতালটির সার্বিক উন্নয়নে সবাইকে একযোগে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য স্টাফরা।
১৭ ঘণ্টা আগে

উদ্ভাবন  / নিজের চিকিৎসায় ক্যান্সার জয়
মস্তিষ্কের ক্যান্সারে আক্রান্ত অস্ট্রেলিয়ার এক চিকিৎসক নতুন পদ্ধতিতে নিজের চিকিৎসা করছেন। এ ক্ষেত্রে তিনি ভালো ফলও পেয়েছেন। রিচার্ড স্কোলিয়ার নামের ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, নিজের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিয়ে এক বছরের বেশি সময় ধরে তিনি ক্যান্সারমুক্ত আছেন। খবর বিবিসির। স্কোলিয়ার যে ধরনের জটিল ক্যান্সারে আক্রান্ত, তাতে রোগীরা এক বছরের কম সময়ে মারা যান। ক্যান্সার নিয়ে তারই গবেষণার ভিত্তিতে উদ্ভাবন করা একটি পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে স্কোলিয়ারের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে। অধ্যাপক স্কোলিয়ার গ্লায়োব্লাস্টোমার নামে এক ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, আবারও এমআরআই পরীক্ষায় দেখা গেছে নতুন করে টিউমারটি ফিরে আসেনি। তিনি বলেছেন, আমি অত্যন্ত খুশি। স্কোলিয়ার একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রোগতত্ত্ববিদ। ক্যান্সারের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে চলতি বছর স্কোলিয়ার এবং তার সহকর্মী ও বন্ধু জর্জিনা লংকে অস্ট্রেলিয়ান অব দ্য ইয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। তারা দুজনই অস্ট্রেলিয়ার মেলানোমা ইনস্টিটিউটের সহ-পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। এক দশক ধরে ইমিউনোথেরাপি নিয়ে গবেষণা করছেন তারা। এ পদ্ধতিতে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা (ইমিউন সিস্টেম) ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষকে আক্রমণ করা হয়। বিশ্বজুড়ে ক্যান্সারের শেষ ধাপে থাকা রোগীদের মধ্যে এ পদ্ধতি ব্যবহার করে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাওয়া গেছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের অর্ধেক এখন নিরাময় পাচ্ছেন। আগে এ হার ১০ শতাংশের কম ছিল। স্কোলিয়ারের মস্তিষ্কের ক্যান্সার সারাতে এ পদ্ধতিই ব্যবহার করেছেন অধ্যাপক লংসহ চিকিৎসকদের একটি দল। অধ্যাপক স্কোলিয়ার হলেন মস্তিষ্কের ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রথম রোগী, যার চিকিৎসায় এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, কয়েকটি ওষুধের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে ইমিউনোথেরাপি দেওয়া হলে তা অপেক্ষাকৃত ভালো কাজ করে। টিউমার অপসারণের জন্য কোনো অস্ত্রোপচারের আগে এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হয়। গত বছর স্কোলিয়ারকে অস্ত্রোপচারের আগে এ থেরাপি দেওয়া হয়। স্কোলিয়ারের চিকিৎসায় সাফল্যে আশার সঞ্চার হচ্ছে। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় তিন লাখ মানুষ মস্তিষ্কের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এ পদ্ধতি চিকিৎসায় নতুন দ্বার উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
১৫ মে, ২০২৪

ক্যান্সার শুধু চিকিৎসার নয় রোগ নির্ণয় ও সুরক্ষার বিষয়
ক্যান্সার শুধু চিকিৎসকদের বিষয় নয়, এটি ভুক্তভোগী, তাদের পরিবারের সদস্য, বন্ধু, স্বজন সবার বিষয়। ক্যান্সার শুধু চিকিৎসার বিষয় নয়, রোগ নির্ণয় ও রোগ থেকে সুরক্ষার বিষয়। যাদের ক্যান্সার নিরাময় পর্যায় পেরিয়ে গেছে, কিংবা ক্যান্সারজনিত কষ্টের তীব্রতা বেঁচে থাকাকেও অসহনীয় করে ফেলেছে, তাদের জন্য প্রশমন সেবা নিয়েও ভাবতে হবে। গতকাল কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টারের আয়োজনে ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন ও তৃতীয় সমাজভিত্তিক ক্যান্সার সম্মেলনে অতিথিরা এসব কথা বলেন। আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এনজিওবিষয়ক ব্যুরো সাইদুর রহমান, সাবেক সিনিয়র সচিব আব্দুস সামাদ, সাবেক স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল ইসলাম খান, বারডেমের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম নুরুন্নবী, প্রজনন ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. হালিদা হানুম আখতার, বিএসএমএমইউ উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, চিকিৎসা শিক্ষা সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক আমিরুল মোর্শেদ খসরু প্রমুখ।
১১ মে, ২০২৪

‘ওরাল ক্যান্সার সম্পর্কে নাগরিকদের সচেতন হতে হবে’
ওরাল ক্যান্সার সম্পর্কে নাগরিকদের সচেতন হতে হবে বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রিমি)। শুক্রবার (৩ মে) গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় শান্তি ক্যান্সার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এবং প্রতিমন্ত্রীর সহযোগিতায় আয়োজিত ওরাল ক্যান্সারবিষয়ক সচেতনতামূলক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওরাল ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই ক্যান্সার অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বাংলাদেশে মূলত লিভার, স্তন, কোলন ও ওরাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে অধিকাংশ ওরাল ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীরা জানেন না কীভাবে এই ক্যান্সার সংক্রমিত হয়। তিনি বলেন, পান, জর্দা, গুল ইত্যাদির মাধ্যমে ওরাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এসব দ্রব্য সেবন থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানান প্রতিমন্ত্রী। ওরাল ক্যান্সার প্রতিরোধে রাতে ঘুমানোর পূর্বে উত্তম রূপে দাঁত ব্রাশ করার পরামর্শ দেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ক্যান্সারের চিকিৎসা একটি ব্যয়বহুল চিকিৎসা। শুধু সরকারি অনুদানের মাধ্যমে দেশের সকল ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর পাশে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। তিনি এ লক্ষ্যে দেশের বিত্তশালী মানুষদের মানবিক হয়ে ক্যান্সার রোগীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি  বলেন, মে মাস ওরাল ক্যান্সার প্রতিরোধের মাস। শান্তি ফাউন্ডেশনে ওরাল ক্যান্সার পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে দেশের খ্যাতনামা ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ এবং শান্তি ক্যান্সার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর পারভীন শাহিদা আখতার উপস্থিত ছিলেন। 
০৩ মে, ২০২৪

কিডনির ক্যান্সার
কিডনি ক্যান্সারকে রেনাল ক্যান্সারও বলে। উপসর্গের মধ্যে রয়েছে মূত্রে রক্তের উপস্থিতি, তলপেটে পিণ্ড, পিঠের ব্যথা বা ব্যাক পেইন। সঙ্গে জ্বর, ওজন কমে যাওয়া এবং দুর্বলতাও থাকবে। এ জটিলতার মধ্যে ক্যান্সার ফুসফুস বা মস্তিষ্কেও ছড়িয়ে যেতে পারে। রেনাল সেল ক্যান্সার, ট্রানজিশনাল সেল ক্যান্সার (টিসিসি) এবং উইলমস টিউমার হচ্ছে বৃক্কের ক্যান্সারের প্রচলিত তিনটি ধরন। এর মধ্যে রেনাল সেল ক্যান্সারের হার প্রায় ৮০ ভাগ। রোগ নির্ণয়ের জন্য মূত্র পরীক্ষা এবং মেডিকেল ইমেজিং করা হয়। উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট টিস্যুর বায়োপসিও করা হয়। কোনো লক্ষণ প্রকাশ না পাওয়ায় শুরুতে রোগী টের পান না। শুরুতে শনাক্ত করে চিকিৎসা নিলে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়। বড়দের ক্ষেত্রে বেশি হয় রেনাল সেল কার্সিনোমা (আরসিসি) ও ট্যানজিশনাল সেল কার্সিনোমা (টিসিসি) এবং শিশুদের ক্ষেত্রে উইল্মস টিউমার। ধাপ ক্যান্সার ধরা পড়ার পরই প্রথম কাজ হলো কোন ধাপে আছে তা জানা। কত দূর ছড়িয়েছে সেটাও জানতে হয়। হাড়ের স্ক্যান এবং পিইটি সিটি স্ক্যান করতে হতে পারে। প্রথম স্তরে টিউমার ছোট হয়, যা কিডনিতেই থাকে। দ্বিতীয় স্তরেও কিছুটা বড় হয়ে কিডনিতে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিডনির আবরণ বা ক্যাপসুল পর্যন্ত যায়। চতুর্থ ধাপে ক্যান্সার কিডনির বাইরে অন্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। কারণ এর কিছু কারণ বের করা গেছে। যেমন— ভন হিপপেল লিনডিও রোগ হলে, দীর্ঘদিন কিডনির ডায়ালাইসিস করলে, কিডনি সংযোজনের পর ইমিউনো সাপ্রেসিভ ওষুধ গ্রহণ করলে, ধূমপান, স্থূলতা, পারিবারিক ইতিহাস, ওষুধের ত্রুটিপূর্ণ সেবন, উচ্চ রক্তচাপ, মাত্রাতিরিক্ত রেডিয়েশনের সংস্পর্শ, মূত্রের সঙ্গে রক্ত বের হয়ে রেনাল কোলিক হলে, হেমাচুরিয়া, লুম্বার ব্যথা, অ্যাবডোমেনাল টিউমার থাকলে, প্রিন্টিং, ড্রাই ক্লিনিং বা পেট্রো কেমিক্যাল প্রসেসিং কাজে জড়িত অর্থাৎ কর্মক্ষেত্রে রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শ থাকলে। উপসর্গ পরবর্তী ধাপের কিছু লক্ষণ হলো— n প্রস্রাবে রক্ত যায়, যা গোলাপি বা লাল রঙের হতে পারে। n ওজন কমে যায়। n পাঁজরের নিচে ও পিঠের দিকে ব্যথা। n পেটে চাকা বা পিণ্ডের মতো হবে। n অবসন্ন ভাব থেকে জ্বর আসবে। n হাড়ের ব্যথা, হাড়ের ভঙ্গুরতা, কাশি থাকবে। পরীক্ষা প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসকরা রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষার পাশাপাশি আলট্রাসাউন্ড, সিটি স্ক্যান পরীক্ষার মাধ্যমে কিডনি ক্যান্সার নির্ণয় করেন। পরের ধাপে কিডনির বায়োপসি, এমআরআই করতে হয়। চিকিৎসা এ রোগ থেকে সেরে ওঠাটা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। প্রথম দিকে শনাক্ত করে চিকিৎসা নিলে রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়। বেশিরভাগ কিডনি ক্যান্সারের চিকিৎসা অস্ত্রোপচার। এজন্য আক্রান্ত কিডনি ফেলে দেওয়া (নেফ্রেকটোমি), রেডিক্যাল নেফ্রেকটোমি এবং নেফরন স্পিয়ারিং নেফ্রেকটোমি করা হয়। এখন সব ধরনের নেফ্রেকটোমিই ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে করা যায়। আবার কিডনিকে বাঁচিয়ে রেখে কিডনি থেকে টিউমার অপারেশন পদ্ধতিতে শুধু টিউমারটি বের করে আনা হয়। বিশেষ করে যাদের একটি মাত্র কিডনি থাকে অথবা কিডনি ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে তাদের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি নেওয়া হয়। অপারেশনের ঝুঁকিপূর্ণ রোগীর ক্ষেত্রে বিশেষ যন্ত্র কিডনির প্রধান রক্তসঞ্চালন ধমনিতে প্রবেশ করিয়ে রক্ত চলাচল বন্ধ করে টিউমার অ্যাম্বোলাইজেশন পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয়। আবার ক্যান্সার কোষকে অতিরিক্ত ঠান্ডায় জমাট বাঁধানোর মাধ্যমে ক্রায়োবলেশন পদ্ধতির মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়। দূরবর্তী টিউমারের সংখ্যা, অবস্থান ও স্বাভাবিক শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে শরীরের অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে যাওয়া বা বিস্তৃত কিডনি ক্যান্সারের চিকিৎসা করা হয়। আবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে ইমিউনো থেরাপিও ব্যবহার করা হয়। তবে পুরোনো ও জটিল কিডনি ক্যান্সার চিকিৎসায় রেডিওথেরাপি বা কেমোথেরাপি তেমন কার্যকর নয়। সচেতনতা কিডনি ক্যান্সার বিষয়ে সচেতন হওয়া দরকার। প্রস্রাবে রক্ত দেখামাত্রই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। তবে চাকা চাকা জমাট রক্ত বা লম্বা কেঁচোর মতো জমাট রক্ত প্রস্রাবের সঙ্গে নির্গত হলে তা কিডনি ক্যান্সারের উপস্থিতি নির্দেশ করতে পারে। এজন্য ধূমপান বর্জন, ফলমূল বা শাকসবজি গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম, ওজন নিয়ন্ত্রণ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, বিষাক্ত পরিবেশের সংস্পর্শে না যাওয়া এসব মেনে চলতে হবে।
০২ এপ্রিল, ২০২৪

গলার ক্যান্সার
মাথা ও মুখগহ্বর হতে শুরু করে গলার নিচ পর্যন্ত কোনো ক্যান্সার হলে তা হেড-নেক ক্যান্সার হিসেবে পরিচিত। গলার ভেতরে ক্ষত, ঘা বা টিউমার হলে সমস্যা শুরু হয়। প্রকারভেদ গলার যে স্থান আক্রান্ত তার ওপর নির্ভর করে গলার ক্যান্সারের বিভিন্ন নামকরণ করা হয়। বেশিরভাগ গলার ক্যান্সার একই ধরনের কোষের সঙ্গে জড়িত। বিভিন্ন প্রকার— l ন্যাসোফ্যারিঞ্জিয়াল ক্যান্সার l ওরোফ্যারিঞ্জিয়াল ক্যান্সার l ল্যারিঙ্গো বা হাইপোফ্যারিঞ্জিয়াল ক্যান্সার l গ্লোটিক ক্যান্সার l সুপ্রাগ্লোটিক ক্যান্সার l সাবগ্লোটিক ক্যান্সার কারণ l গলার কোষগুলোর জিনগত পরিবর্তনে তা অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি বা টিউমারজনিত কারণ l জেনেটিক মিউটেশনজনিত কারণ ও পারিবারিক ইতিহাস l তামাক, পান-সুপারি, জর্দার ব্যবহার l অ্যালকোহল সেবন l হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণ জিইআরডি l অতিরিক্ত মসলা ও ঝালযুক্ত খাবার গ্রহণ l প্যাকেটজাত খাবার, লবণাক্ত খাবার গ্রহণ l কাঠ ও রঙের কাজের সঙ্গে জড়িত পেশাজীবীরা l পুষ্টিজনিত সমস্যা l পরিবেশগত কারণ l ৫৫ বছরের অধিক বয়সী ব্যক্তি এবং পুরুষরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। লক্ষণ প্রথম পর্যায় : অবিরাম গলাব্যথা, খুসখুসে কাশি, খাবার গ্রহণ বা তরল গিলতে অসুবিধা, মাঝেমধ্যে গলা ভাঙা। দ্বিতীয় পর্যায় : ক্রমবর্ধমান গলাব্যথা, কোনো কিছু গিলতে খুবই অসুবিধা, কণ্ঠের কর্কশতা কিংবা কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন, কাশি, বমি ও বমিভাব। তৃতীয় পর্যায় : মারাত্মক গলাব্যথা, গিলতে মারাত্মকভাবে অসুবিধা, কণ্ঠ দিয়ে কথা বের না হওয়া, কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন, শারীরিক ওজন কমতে থাকা, কাশির সঙ্গে রক্ত আসা। চতুর্থ পর্যায় : গলায় দীর্ঘস্থায়ী এবং গুরুত্বর ব্যথা শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা, বমি ও কাশির সঙ্গে রক্ত, গলায় ফোলা বা পিণ্ড, গলায় ক্ষত বা ঘা দূরবর্তী স্থানে ছড়িয়ে পড়ে, শরীরে ওজন অস্বাভাবিকভাবে কমতে থাকা, দুর্বল হয়ে পড়া, স্বাস্থ্যের সামগ্রিক অবনতি। রোগ নির্ণয় রোগটি যথাযথভাবে নির্ণয়ের জন্য বায়োপসি, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, এন্ডোস্কোপি, বেরিয়াম সোসালো, পিইটি স্ক্যান, এফএনএ পরীক্ষাগুলো করা হয়। চিকিৎসা ক্যান্সার চিকিৎসায় অস্ত্রোপচার, রেডিওথেরাপি, কোমোথেরাপি, টার্গেটেড থেরাপি ও ইমিওনোথেরাপির প্রয়োজন হয়। প্রতিরোধ l সুষম খাদ্যগ্রহণ, প্রচুর ফলমূল, শাকসবজি ও গোটা শস্য খেতে হবে l ধূমপান, তামাক, পান-সুপারি, জর্দা পরিপূর্ণভাবে ত্যাগ করতে হবে l অ্যালকোহল, বোতল ও প্যাকেটজাত পানীয় গ্রহণে বিরত থাকতে হবে l এইচপিভি হতে রক্ষা পেতে টিকা গ্রহণ করতে হবে l নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে l নিয়মিত শরীরচর্চা ও হাঁটতে হবে l ঝাল, লবণাক্ত ও মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। লেখক: কনসালট্যান্ট, রেনেসাঁ হোমিও মেডিকেয়ার, ঢাকা।
২৭ মার্চ, ২০২৪

তামাক কোম্পানিকে সহযোগিতা বন্ধসহ ক্যান্সার সোসাইটির ছয় নীতি গ্রহণ 
তামাক কোম্পানিকে কোনো প্রকার সহযোগিতা না করাসহ ছয় নীতি গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি। ২৩ মার্চ (শনিবার) রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা জানানো হয়। বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট ও ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট সম্মিলিত এ আয়োজন করে। এ সময় তামাকের কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে সার্বিক জনস্বাস্থ্য রক্ষায় আন্তর্জাতিক চুক্তি এফসিটিসির আটিক্যাল-৫.৩ কে সমর্থন জানিয়ে ‘কোড অব কনডাক্ট’ স্বাক্ষর করে ক্যান্সার সোসাইটি। সম্মিলিত আয়োজনে বক্তারা বলেন, জনস্বাস্থ্যবিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি এফসিটিসির অনুচ্ছেদ ৫.৩ অনুযায়ী তামাক কোম্পানির স্বার্থ থেকে জনস্বাস্থ্যবিষয়ক নীতি ও পদক্ষেপসমূহরে সুরক্ষায় দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান গাইডলাইন প্রণয়নে নৈতির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি প্রণয়নে কোম্পানিগুলোর হস্তক্ষেপ চিহ্নিত করে তা থেকে উত্তরণে পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করা এখন সময়ের দাবি। তারা বলেন, বাংলাদেশ সরকার তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকার দেশে আইন ও সহায়ক নীতি প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করলেও কাঙ্ক্ষিত ফল অর্জন সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলস্বরূপ জনগণের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেলেও এর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ক্যান্সার ও অন্যান্য অসংক্রামক রোগীর সংখ্যা। বক্তারা বলেন, গবেষণায় ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ সিগারেট, জর্দা, গুলসহ সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার। ধোঁয়াবিহীন এবং ধোঁয়াযুক্ত উভয় তামাকজাত দ্রব্যই ক্যান্সারের জন্য দায়ী। তামাক নিয়ন্ত্রণে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অনৈতিক প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি নতুন পলিসি তৈরির ক্ষেত্রেও কোম্পানিগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। ফলে তামাকের ব্যবহার কাঙ্ক্ষিত হারে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুকের নেতৃত্বে সংস্থাটি কোড অব কনডাক্ট গ্রহণ করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আসলাম হোসেন, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের সচিবালয়ের পক্ষে সৈয়দা অনন্যা রহমান, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পক্ষে সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব, নেটওয়ার্ক কর্মকর্তা আজিম খান ও সহকারি প্রকল্প কর্মকর্তা নাজমুন নাহার। বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির ছয় নীতির মধ্যে রয়েছে:  ১. নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী-কর্মকর্তাদের এফসিটিসির আর্টিকেল ৫.৩ সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান, সচেতনতা বৃদ্ধি। ২. প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তামাক কোম্পানি বা কোম্পানি সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা গ্রহণ, প্রদান ও অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকবে। ৩. নিজের প্রতিষ্ঠানে তামাক কোম্পানির সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির নামে প্রচার অনুমতি প্রদান না করা। ৪. সকল বিভাগ ও কার্যালয় সম্পূর্ণ তামাকমুক্ত পরিবেশ বজায় থাকবে। ৫. অন্যান্য সংস্থাসমূহকে এফসিটিসির আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করবে। ৬. তামাক কোম্পানির স্বার্থে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সুবিধা পেয়েছেন, এমন কোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হবে না।  
২৩ মার্চ, ২০২৪

স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে
স্তন ক্যান্সার হলো স্তনে উদ্ভূত রোগ, যেখানে স্তনের কোষগুলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পায়। স্তন ক্যান্সার স্তনের যে কোনো জায়গায় হতে পারে। এটি সাধারণত দুধের নালিগুলোর অভ্যন্তরীণ আস্তরণে বা দুধ গঠনকারী লোবিউলগুলোতে শুরু হয়। সেখান থেকে এটি স্তন বা শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। স্তন ক্যান্সার প্রথমে একই পাশের বগলের গ্রন্থিগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে এবং সেখানে পিণ্ড তৈরি করে যাকে লিম্ফ নোড বলা হয়। অবহেলা করলে স্তন ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়তে পারে হাড়, ফুসফুস, যকৃৎ ও মস্তিষ্কে। স্তন ক্যান্সারকে প্রারম্ভিক স্তন ক্যান্সার, উন্নত স্তন ক্যান্সার এবং মেটাস্ট্যাটিক স্তন ক্যান্সার হিসেবে বিভক্ত করা হয়। স্তন ক্যান্সার নারীদের পাশাপাশি পুরুষদের মধ্যেও ঘটে তবে খুব কম। স্তন ক্যান্সারের কারণ যেসব কারণে স্তন ক্যান্সার হতে পারে সেগুলো হলো—স্থূলতা, ঋতুস্রাবের প্রথম দিকে, দেরিতে মেনোপজ, দেরি অর্থাৎ ৩০ বছরের বেশি বয়সে প্রথম গর্ভাবস্থা, শূন্যতা (সন্তানহীন), সন্তান জন্মদানের জন্য হরমোনাল চিকিৎসা, মেনোপজের জন্য হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি, লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা বা থাইমোমার জন্য আগে বিকিরণ থেরাপি, স্তন, ওভারিয়ান ক্যান্সারের পারিবারিক ইতিহাস, বুকের দুধ খাওয়ানোর অনুপস্থিতি, জিনগত মিউটেশন চলমান পরিবারের সঙ্গে উপস্থাপনা, প্লাস্টিক এবং সৌন্দর্য পণ্যে বিপিএ এবং অন্যান্য রাসায়নিক। স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ের প্রারম্ভিক বয়স বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জেনেটিক মিউটেশনের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই রোগীদের ৪০ বছরের আগে স্তন ক্যান্সার ধরা পড়ে, তাদের দ্বিপক্ষীয় স্তন ক্যান্সার কিংবা পরিবারে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত পুরুষ রোগী থাকতে পারে। প্রাথমিক স্তরে স্তন ক্যান্সার শনাক্তকরণ স্তন ক্যান্সার হলে স্তনে ব্যথাহীন পিণ্ড, যা স্তনের যে কোনো জায়গায় হতে পারে। এটি স্তন ক্যান্সারের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ। এ ছাড়া রোগীদের রক্তাক্ত বা স্পষ্ট স্তনের স্রাব হিসেবে দেখা দিতে পারে। কখনো কখনো এটি স্তনের স্কেলিং এবং চুলকানি হিসেবেও দেখা দিতে পারে। কদাচিৎ লাল স্ফীত স্তন স্তনে পিণ্ডসহ বা ছাড়া দেখা যায়। রোগীর একই পাশের অ্যাক্সিলাতেও পিণ্ড থাকতে পারে। স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে আগে থেকেই স্তন ক্যান্সার শনাক্ত করা যেতে পারে। ৪০ বছর বয়স থেকে বার্ষিক ম্যামোগ্রাফির মাধ্যমে স্তন ক্যান্সারের জন্য স্ক্রিনিং করার পরামর্শ দেওয়া হয়। স্তন-ওভারিয়ান ক্যান্সারের উল্লেখযোগ্য পারিবারিক ইতিহাসসহ নারীদের শুরুর দিকে স্ক্রিনিং করা প্রয়োজন। প্রারম্ভিক রোগ নির্ণয় বেঁচে থাকার চাবিকাঠি। স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে স্তন ক্যান্সারে মৃত্যুহার ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত কমতে দেখা গেছে। মাসিকভিত্তিতে স্তন পরীক্ষা, স্তন ক্যান্সারের সমস্ত উপস্থাপিত বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সচেতনতা তৃণমূল স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বা সাধারণ চিকিৎসক দ্বারা সব নারীকে শেখানো উচিত। স্তন ক্যান্সার নির্ণয় করা হয় ক্লিনিক্যাল স্তন পরীক্ষা, ম্যামোসোনোগ্রাফি এবং সোনোগাইডেড বায়োপসি দ্বারা। ইস্ট্রোজেন রিসেপ্টর, প্রোজেস্টেরন রিসেপ্টর, এইচইআর২ রিসেপ্টরগুলোর জন্য বায়োপসি পরীক্ষা করা হয়। এই রিসেপ্টরগুলোর স্তন ক্যান্সারের আরও চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রভাব রয়েছে। পজিট্রন এমিশন টমোগ্রাফি স্ক্যান (পিইটি স্ক্যান) বা হাড়ের স্ক্যানসহ বুক, পেট, পেলভিসের সিটি স্ক্যানের মাধ্যমে স্তন ক্যান্সারের বিস্তার অর্থাৎ মেটাস্ট্যাসিস নির্ণয় করা যেতে পারে। চিকিৎসা অধিকাংশ ক্যান্সারের মতো স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসায় প্রয়োজন হয় ট্রাইমোডালিটি ট্রিটমেন্ট যার মধ্যে আছে অস্ত্রোপচার, টার্গেটেড থেরাপি এবং রেডিয়েশন থেরাপিসহ বা ছাড়া কেমোথেরাপি। রিসেপ্টরের অবস্থার ওপর ভিত্তি করে অধিকাংশ রোগীর দীর্ঘমেয়াদি হরমোনাল থেরাপির প্রয়োজন হতে পারে। প্রতিরোধ স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে জ্ঞান বিশ্লেষণ করে আমরা জানতে পারি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে এটি হয়ে থাকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে আমরা এটিকে এড়াতে পারি কারণ এটি বাড়ছে মহানগরগুলোতে এবং প্রধানত জীবনধারার পরিবর্তনের কারণে। অনেক নারীই দেরিতে বিয়ে করেন এবং দেরিতে সন্তান ধারণ করতে পছন্দ করেন এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ বুকের দুধ খাওয়ানো এড়িয়ে যেতে পছন্দ করেন। আবার অনেকে মেনোপজ এবং সন্তান ধারণের জন্য হরমোন প্রতিস্থাপন করেন। এ বিষয়গুলো নারীদের হরমোনের পরিবেশে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটায়, যা ক্যান্সারের বিকাশের দিকে পরিচালিত করে। এই অভ্যাসের পরিবর্তন রোগটির বিস্তার কমাতে সাহায্য করতে পারে। স্থূলতা বৃদ্ধি, মিষ্টি খাবার এবং জাঙ্ক ফুড খাওয়া, অ্যালকোহল গ্রহণ এবং ধূমপান এই ক্ষতিকারক অভ্যাসগুলো হরমোনের ভারসাম্যহীনতার দিকে পরিচালিত করে। তাই কিছু পরিমাণে পরিবেশগত এবং জীবনধারা পরিবর্তন স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। ধারণা এবং বাস্তবতা ১. স্তন ক্যান্সার শুধু নারীদের হয় না, পুরুষদেরও হতে পারে। ২. প্রাথমিক স্তরে শনাক্ত করা গেলে স্তন ক্যান্সার সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। ৩. প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে স্তন সংরক্ষণ অস্ত্রোপচার সম্ভব। সব রোগীর স্তন অপসারণের প্রয়োজন হয় না। ৪. স্তন সংরক্ষণের পর স্তনে ক্যান্সার থেকে যায় না। স্তন সংরক্ষণ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সমস্ত টিউমার অপসারণ করা হয়। ৫. সম্পূর্ণ স্তন অপসারণের পর রোগীর নিজের টিস্যু থেকে স্তন পুনর্গঠন করা সম্ভব এবং স্তন পুনর্গঠনের সেরা সময় হলো টিউমার অপসারণের সময়। ৬. স্তন ক্যান্সার নিরাময়ে শুধু অস্ত্রোপচারই যথেষ্ট নয়। রোগ নিরাময়ের সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজন সব চিকিৎসা পদ্ধতি যেমন—অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি। লেখক: কনসালট্যান্ট, সার্জিক্যাল অনকোলজিস্ট, ওকার্ড হাসপাতাল, মুম্বাই সেন্ট্রাল, ভারত। মেডিএইডার, ৫৬ লেক সার্কাস, পান্থপথ, ঢাকা ০১৭১৪১১৯৯৯৬।
১১ মার্চ, ২০২৪

বিনামূল্যে ক্যানসার ও এনসিডির স্ক্রিনিং করাবে গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যানসার হাসপাতাল নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এগুলোর মধ্যে প্রতীকী শোভাযাত্রা, স্তন ও জরায়ুমুখের ক্যানসার সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ ইত্যাদি। এ ছাড়াও দিনব্যাপী হাসপাতালের ৬ষ্ঠ তলায় বিনামূল্যে ক্যানসার (স্তন, জরায়ুমুখ ও মুখগহ্বরের) ও এনসিডি (ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ) স্ক্রিনিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার (৮ মার্চ) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। শনিবার (৯ মার্চ) সকাল সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ধানমন্ডির ৬ নম্বর রোডের গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের সামনে দিনব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করা হবে। এ সময় হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক ও প্রিভেন্টিভ অনকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিনের তত্ত্বাবধানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি টিম প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন। শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেবেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা, ট্রাস্টি ও নারী অধিকার নেত্রী শিরীন হক ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকবৃন্দ।
০৮ মার্চ, ২০২৪

সফলতার সঙ্গে অস্ত্রোপচার বিভাগ চালুর এক বছর পূর্ণ করল ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল
সফলতার সঙ্গে অস্ত্রোপচার বিভাগ চালুর এক বছর পূর্ণ করল ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার। এ উপলক্ষে বিশেষ এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারেই দোয়া ও কেক কাটার মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকিফ শামীম। গত ১ বছরের (ফেব্রুয়ারি ২০২৩-ফেব্রুয়ারি ২০২৪) হাসপাতালের মেডিকেল রেকর্ডের তথ্য বিশ্লেষণ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এক প্রতিবেদনে জানানো হয় মিনিমাম সার্জিক্যাল সাইট ইনফেকশন নিয়ে প্রথমবারের মতো তারা ৮৩৩টি সফল অস্ত্রোপচারে সম্পন্ন করেছে যেটি অন্যান্য উন্নত দেশ ইন্ডিয়া, ইউকে, ইউএসের তুলনায় অনেক কম বলে বিবেচনা করা যায়। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন জার্নালের বরাত দিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, উন্নত এসব দেশগুলোতে সার্জিক্যাল সাইট ইনফেকশনের মাত্রা যথাক্রমে শতকরা (৮.২, ১-৫, ০.৫-৩) এর মতো। যেখানে ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতালের সার্জিক্যাল সাইট ইনফেকশন এর মাত্রা ১.২৫ এর মতো। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গত ১ বছরে অস্ত্রোপচার বিভাগ সম্পর্কিত নানা তথ্য তুলে ধরেন হাসপাতালের চিফ ক্লিনিক্যাল কোঅর্ডিনেটর অ্যান্ড সিনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেসথেশিওলজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আলীম। তিনি জানান ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের ওটি বিভাগ চালুর পর থেকে এই এক বছরে এখন পর্যন্ত অপারেশন টেবিলে কোনো রোগীর মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটেনি। যেটি নিঃসন্দেহে বড় একটি অর্জন। অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয় এখানে সর্বস্তরের প্রশিক্ষণ এবং গুণমান সূচক বেশ গুরুত্বসহকারে দেখা হয়। কেন ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল অন্যদের থেকে অনন্য সে সম্পর্কেও তথ্য তুলে ধরা হয়, জানানো হয় এই হাসপাতালের অভিজ্ঞ সার্জারি চিকিৎসক ও দক্ষ অ্যানেসথেশিয়া চিকিৎসকের একটি দল রয়েছে, যারা অস্ত্রোপচারের পূর্বে শতভাগ নির্ভুলভাবে একজন রোগীর অ্যানেসথেশিয়া বিষয়টি মূল্যায়ন করে থাকেন। এ ছাড়া চিকিৎসক থেকে শুরু করে নার্স টেকনিশিয়ান সকলেই অভিজ্ঞ, এই হাসপাতালের অস্ত্রোপচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা নিজ নিজ কাজ করছেন ডব্লিউ এএইচও এবং জেসিআই-এর সকল চেকলিস্ট অনুসরণ করে। এ ছাড়া ল্যাবএইড ক্যানসারের রয়েছে হাইব্রিড গ্রিন মডিউলার ওটি এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সব যন্ত্রপাতি।  এই এক বছরে শুধু ক্যানসার নয়, অনেক ধরনের সার্জারি করা হয়েছে ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল অ্যান্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে সার্জারিগুলো হয়েছে তা হলো গাইনি অনকোলজি, অনকো প্লাস্টিক ব্রেস্ট সার্জারি, ইএনটি, জেনারেল সার্জারি, হেপাটোবিলিয়ারি, কোলোরেক্টাল সার্জারিসহ আরও অন্যান্য সার্জারি। বিশেষায়িত এই ক্যানসার হাসপাতালের অস্ত্রোপচার বিভাগের সাফল্যগাথা প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকিফ শামীম।  এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের গাইনি অনকোলজী, অনকোপ্লাস্টিক ব্রেস্ট সার্জারি,ইনটি, হেপাটোবিলিয়ারি বিভাগসহ প্রায় সকল বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X