গাবতলী পশুর হাটের ইজারা পাচ্ছেন না ডিপজল
রাজধানীর গাবতলী পশুর হাটের ইজারা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা মেসার্স এইচ এন ব্রিকসকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত ২৫ মার্চ এক রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ নির্দেশনা দেন। তবে নির্দেশনার এক সপ্তাহ পার হলেও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এর আগে গত ১৮ এপ্রিল কালবেলায় ‘ইজারার টাকা না দিয়ে পশুর হাটের দখল নিলেন ডিপজল’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশ হয়। দরপত্রের সব টাকা পরিশোধ না করেই জোর করে পেশিশক্তি দেখিয়ে হাট দখলে নেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয় ওই প্রতিবেদনে। নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দরপত্রের পুরো অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে সর্বোচ্চ দরদাতা দরপত্র পাবেন না। সেক্ষেত্রে জমা দেওয়া অর্থ বাজেয়াপ্ত হয়ে তা সিটি করপোরেশনের রাজস্ব আয় হিসেবে গণ্য হবে এবং ইজারা পাবেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা। সে কারণে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতার পক্ষে মেসার্স এইচ এন ব্রিকসের ম্যানেজার আবুল হাসেম আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেন। রিটে বিবাদী করা হয় ডিএনসিসি মেয়র, সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা এবং সর্বোচ্চ দরদাতা মনোয়ার হোসেনকে। ওই রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতাকে হাট বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। জানতে চাইলে রিটকারীর আইনজীবী মুহিবুল হাকিম কালবেলাকে বলেন, ডিপজল সাহেব অর্থ জমা করতে না পারায় আমরা নিয়ম অনুযায়ী সিটি করপোরেশনকে একাধিকবার চিঠি দিয়েছি। আমাদের দরপত্রের টাকা জমা দেওয়ার সুযোগ দিতে আবেদন করেছি। কিন্তু তারা আমাদের সহযোগিতা না করায় আদালতে রিট করেছি। আদালত আমাদের পক্ষে আদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা টাকা জমা দিয়ে ব্যাংক ড্রাফট করে সিটি করপোরেশনে অর্ডার পৌঁছে দিয়েছি। তবে সিটি করপোরেশন এখনো কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এটি আদালত অবমাননা। তবে এখনো আদালতের কোনো চিঠি পাননি বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল আলম।
০৩ মে, ২০২৪

ঈদের পর গাবতলী যাবে ‘কারওয়ান বাজার’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আঞ্চলিক কার্যালয়ের স্থানান্তরের মাধ্যমে গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে কারওয়ান বাজার সরানোর প্রক্রিয়া। ঈদের পরে প্রথম ধাপে পাইকারি ও খুচরা আড়ত নেওয়া হবে গাবতলীতে। ডিএনসিসির কর্মকর্তারা বলছেন, কাঁচাবাজারটি পুরোপুরি স্থানান্তর হলে কারওরান বাজারে বিজনেস হাব তৈরি করা হবে। তবে এখনই আড়তদাররা বাজারটি ছাড়তে চাইছেন না। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, বাজার স্থানান্তরের ফলে তারা পুঁজির ঝুঁকিতে পড়বেন। রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি আড়ত ও খুচরা বাজারের হাট কারওয়ান বাজার। নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুই মেলে এখানে। আড়তদার, পাইকার, ক্রেতা-বিক্রেতা ও শ্রমিকদের ব্যস্ত সূচিতে দিন-রাত সরগরম থাকে বাজার। বাজার ঘিরে ব্যবসায় জড়িত ১০ হাজারের মতো মানুষ। প্রতিরাতে পাইকারি দামে বিক্রি হয় আনুমানিক ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার পণ্য। বর্তমানে কারওয়ান বাজারে আছে ৯টি মার্কেট। সিটি করপোরেশন ১ ও ২ নম্বর মার্কেট, কিচেন মার্কেট, আড়ত ভবন, কারওয়ান বাজার কাঁচামাল আড়ত ব্যবসায়ী সমিতি মার্কেট, কারওয়ান বাজার ক্ষুদ্র কাঁচামাল আড়ত ব্যবসায়ী সমিতি মার্কেট, কারওয়ান বাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি মার্কেট, আম্বর শাহ ব্যবসায়ী সমিতি মার্কেট এবং কারওয়ান বাজার মৎস্য আড়ত ব্যবসায়ী সমিতি মার্কেট। এসব মার্কেটে দোকান রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার। এ ছাড়া আছে ১৭৬টি কাঁচামালের আড়ত। কারওয়ান বাজার ক্ষুদ্র কাঁচামাল আড়ত ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, গাবতলীতে যেখানে আড়ত স্থানান্তরের কথা বলা হচ্ছে, সেখানে আমরা যাব না। কারণ, সেখানে আড়ত ব্যবসা করার উপযোগী অবকাঠামো তৈরি হয়নি। কারওয়ান বাজার খুচরা আড়ত মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, সিটি করপোরেশনের অফিসের ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। তারা সেটি ভেঙে ফেলতে চায়। সেখানকার আড়তদাররা গাবতলী যেতে পারেন। অন্যরা কেন যাবে? ডিএনসিসি অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বির আহমেদ বলেন, কারওয়ান বাজার সরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যেই আমরা মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ সংলগ্ন কমিউনিটি সেন্টারে অফিস সরিয়ে নিয়েছি। ঈদের পর স্থায়ী ১৮০টি এবং ১৭৬টি অস্থায়ী দোকান স্থানান্তর শুরু হবে। প্রসঙ্গত, ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট ভবন ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন ২০০৪ সালে প্রথম বাজারটি স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছিল। ২০০৬ সালে ‘ঢাকা শহরের তিনটি পাইকারি কাঁচাবাজার নির্মাণ প্রকল্প’ পাস হয় একনেকে। ২০৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১০ সালের জুনের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সময়মতো কাজ হয়নি। তিন দফায় প্রায় দেড়শ কোটি টাকা বেড়ে ব্যয় দাঁড়ায় ৩৫০ কোটিতে। ২০১৭ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও বাজার স্থানান্তর করতে পারেনি সিটি করপোরেশন।
২৯ মার্চ, ২০২৪
X