চাকরির নামে ঘুষ গ্রহণকারী সেই দুই পুলিশ বরখাস্ত
মাদারীপুরে পুলিশে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে তানজিলা আক্তার ও শহিদুল ইসলাম নামে সেই দুই পুলিশ কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শনিবার (১১ মে) পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ও জেলা পুলিশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানা গেছে। মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মনিরুজ্জামান ফকির কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর এলাকার রবিদাসের ছেলে রতন দাসের কাছ থেকে পুলিশে নিয়োগ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ গ্রহণ করে তানজিলা আক্তার ও শহিদুল ইসলাম নামে দুই কনস্টেবল। এ ঘটনায় শুক্রবার (১০ মে) ও শনিবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। জানা গেছে, রতন দাস একটি দোকানে কাজ করতেন। সেখানেই পুলিশ সদস্য তানজিলা আক্তারের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে পুলিশ নিয়োগের সময় তানজিলা আক্তার পুলিশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রতনের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নেয়। বিশ্বাস অর্জনের জন্য তানজিলা আক্তার নিজের স্বাক্ষর যুক্ত কমিউনিটি ব্যাংকের একটি চেকও প্রদান করে। এদিকে পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষার রেজাল্ট দিলে চাকরি না হওয়ায় দিশাহারা হয়ে পড়েন ভুক্তভোগী রতন দাস। উপায় না পেয়ে অভিযোগ করেন পুলিশ সুপার বরাবর।  চাকরিপ্রত্যাশী রতন দাস বলেন, আমাকে পুলিশে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ১৪ লাখ টাকা নিয়েছে তানজিলা আক্তার নামে এক পুলিশ। কিন্তু সে চাকরি দিতে পারেনি। তিনি বলেন, আমার দেওয়া সেই টাকা দিয়ে তানজিলার স্বামী ফরিদপুরের ভাঙ্গাতে ব্যবসা শুরু করছে। টাকা ফেরত চাইলে সে বিভিন্ন রকমের তালবাহানা শুরু করে। বিভিন্ন অজুহাতে সে আমার টাকা ফেরত দিচ্ছে না। এ ঘুষ নেওয়ার সঙ্গে শহিদুল নামে এক পুলিশও জড়িত। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান ফকির বলেন, সংবাদ প্রকাশের পর সিনিয়র স্যারদের নির্দেশে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। টাকা লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশ সদস্য তানজিলা আক্তার একটি দোকানে এক হাজার টাকার কয়েকটি বান্ডিল গুনে নিচ্ছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, দোকানটি মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে। সেই দোকানেই টাকা লেনদেন হয়েছে। গত বছরের ১ মার্চ রতন দাসের কাছ থেকে পুলিশ কনস্টেবল তানজিলা আক্তার ও শহিদুল টাকা গ্রহণ করেন।
১১ মে, ২০২৪

চাকরির নামে দুই পুলিশের ঘুষ গ্রহণের ভিডিও ভাইরাল
মাদারীপুরে পুলিশে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পুলিশের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।  টাকা লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।  ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ সদস্য তানজিলা আক্তার একটি দোকানে এক হাজার টাকার কয়েকটি বান্ডিল গুনে নিচ্ছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, দোকানটি মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে। সেই দোকানেই টাকা লেনদেন হয়েছে। গত বছরের ১ মার্চ টাকা গ্রহণ করা হয়। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর এলাকার রবিদাসের ছেলে রতন দাস একটি দোকানে কাজ করতেন। সেখানেই পরিচয় হয় পুলিশ সদস্য তানজিলা আক্তারের সঙ্গে। পরে পুলিশ নিয়োগের সময় তানজিলা আক্তার পুলিশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রতনের কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নেয়। বিশ্বাস অর্জনের জন্য তানজিলা কমিউনিটি ব্যাংকের একটি চেকও প্রদান করে। তানজিলা আক্তারের নামে কমিউনিটি ব্যাংকের চেকে তানজিলার স্বাক্ষর ও তারিখ রয়েছে। এদিকে পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার পর রেজাল্ট দিলে চাকরি না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েন ভুক্তভোগী রতন দাস। উপায় না পেয়ে অভিযোগ করেন পুলিশ সুপার বরাবর। চাকরিপ্রত্যাশী রতন দাস বলেন, আমাকে পুলিশে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ১৪ লাখ টাকা নিয়েছে তানজিলা আক্তার নামে এক পুলিশ সদস্য। কিন্তু সে চাকরি দিতে পারেনি। সেই টাকা দিয়ে তানজিলার স্বামী ফরিদপুরে ব্যবসা শুরু করছে। টাকা ফেরত চাইলে সে বিভিন্ন রকমের টালবাহানা করছে। আমার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার সময় একটি চেকও দিয়েছিল। এরপরও বিভিন্ন অজুহাতে সে আমার টাকা ফেরত দিচ্ছে না। এই ঘুষ নেওয়ার সঙ্গে শহিদুল নামে এক পুলিশও জড়িত। রতন দাসের বাবা রবিদাস বলেন, আমি ধার-দেনা করে ছেলের চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিলাম তানজিলার কাছে। সে চাকরি দিতে পারেনি। এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। তাই এসপি অফিসে অভিযোগ দিয়েছি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত তানজিলা আক্তার বলেন, যা বলার এসপি স্যারকেই বলেছি।  অপর অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম নিজের দায় অস্বীকার করে জানান, তিনি কোনো টাকা নেননি। মাদারীপুর পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, চাকরির প্রলোভনে দুই পুলিশ সদস্যের ঘুষ নেওয়ার একটি অভিযোগ এসেছে। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তাই অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১০ মে, ২০২৪

বাকিতে ঘুষ নেওয়া পুলিশের সেই তিন কর্মকর্তা ক্লোজড
‘পুলিশের তিন কর্মকর্তা ঘুঘ নেন বাকিতে’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পর ঢাকা মহানগর পুলিশের শাহ আলী থানার ওই অভিযুক্ত তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে ক্লোজ করা হয়েছে। তারা হলেন শাহ আলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এমাদুল, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কামরুজ্জামান এবং সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) বদরুজ্জামান। শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। গত ৬ মে ‘পুলিশের তিন কর্মকর্তা ঘুঘ নেন বাকিতে’ শিরোনামে কালবেলায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে দেখা যায়, মিরপুরে একটি জুতার দোকানের কর্মচারী মো. ফরিদকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে তার পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন শাহ আলী থানার এসআই মো. এমাদুল। তার স্ত্রীকে জানান, এই টাকা না দিলে ফরিদকে মাদক মামলায় আসামি করা হবে। পরে ৩০ হাজার টাকায় বিষয়টির সুরাহা হয়। এমাদুলের কথামতো রাতেই নগদ ২৫ হাজার টাকা দিয়ে স্বামীকে ছাড়িয়ে নেন তার স্ত্রী। বাকি ৫ হাজার টাকা দুদিন পর দেওয়া হয় এমাদুলকে। ফরিদের মতো আরও অনেককে ধরে এনে টাকা আদায় করেছে তারা। শুধু বাকিতেই আটক করা মানুষকে ছাড়েন না এমাদুল। রাস্তাঘাট থেকে ধরে নিয়ে হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে পকেটে থাকা সব টাকা বের করেও নেন তিনি। তাতেও কম পড়লে সেই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের ফোন করে ডেকে এনে আদায় করেন আরও টাকা। তার এসব অপকর্মের সঙ্গী একই থানার এএসআই কামরুজ্জামান এবং এএসআই বদরুজ্জামান।
০৮ মে, ২০২৪

বাকিতে ঘুষ নেওয়া সেই তিন পুলিশ কর্মকর্তা ক্লোজড
‘পুলিশের তিন কর্মকর্তা ঘুষ নেন বাকিতে’ এই শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয় দৈনিক কালবেলায়। এ ঘটনার পরে ঢাকা মহানগর পুলিশের শাহআলী থানার ওই অভিযুক্ত তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে ক্লোজড করা হয়েছে।  তারা হলেন- শাহ আলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এমাদুল, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কামরুজ্জামান এবং সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) বদরুজ্জামান।  শাহআলী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মওদুদ হাওলাদার কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, তিন পুলিশ অফিসারকেই ক্লোজড করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। মিরপুরে একটি জুতার দোকানের কর্মচারী মো. ফরিদকে মাঝ রাস্তায় পথ আটকিয়ে তুলে নিয়ে যায় শাহ আলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এমাদুল। ফরিদকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর তার স্ত্রীকে ফোন করেন এসআই এমাদুল। দাবি করেন ৫০ হাজার টাকা। জানান এই টাকা না দিলে তার স্বামীকে মাদক মামলায় আসামি করা হবে। পরে স্বামীকে বাঁচাতে ৩০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন ফরিদের স্ত্রী।  এমদাদুলের কথামতো রাতেই নগদ ২৫ হাজার টাকা দিয়ে স্বামীকে ছাড়িয়ে নেন তার স্ত্রী। আর ৫ হাজার টাকা বাকি রাখেন তিনি। সেই বাকির ৫ হাজার টাকা দুদিন পরে দিয়ে দেন এসআই এমাদুলকে। ভুক্তভোগী মো. ফরিদ কালবেলাকে বলেন, আমি শাহ আলী মার্কেটের একটি জুতার দোকানে কাজ করি। গত ১৪ রোজায় আমি রাতে দোকান থেকে হেঁটে বাসায় আসিতেছিলাম। তখন সেখান থেকে এসআই এমাদুল  আমারকে ধরে নিয়ে শাহ আলী থানার টিনশেডে নিয়ে যাইয়া, আমারে আটকাইয়া ফালাইছে। আটকাইয়া আমার কয় ফ্যামিলিরে ফোন দে। তারপর আমি আমার ওয়াইফ-রে ফোন দিছি। এরপর এসআই এমাদুল আমার স্ত্রীকে বলে ওনাকে ছাড়াতে হলে ৫০ হাজার টাকা লাগবে। ওনার কাছে মদের বোতল পাইছি। আসলে তারা আমার কাছে কিছুই পায় নাই। আমি পান ছাড়া জীবনে আর কিছুই খাই নাই।  তিনি আরও বলেন, এসআই এমাদুল তখন হাতে লাঠি নিয়ে বলে তোকে হিরোইন মামলা দেব, মারব বিভিন্ন রকমের ভয় দেখায়। তখন আমার স্ত্রী ভয়ে বলে ঠিক আছে ২০ হাজার টাকা দেব। কিন্তু উনি তাতে রাজি হয় না, অনেক মারধোর করছে আমাকে। পরে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে ছাড়ছে। সেই রাতে দিছি ২৫ হাজার। আর বাকি ছিল ৫ হাজার। সেই বাকির ৫ হাজার ২ দিন পরে নিয়েছে।  স্বামীকে বাঁচাতে মাঝরাতে কোলের শিশুকে নিয়ে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব ছিল না ফরিদের স্ত্রীর। তাই বাধ্য হয়ে নিজের কানের দুল বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করেছিলেন তিনি।  ভুক্তভোগী ফরিদের স্ত্রী কুলসুম বেগম কালবেলাকে বলেন, সেই রাতে এমাদুল স্যার আমার জামাইকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর প্রথমে আমাকে কয় ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। আমি কই স্যার গরিব মানুষ এত টাকা কই পামু। তখন কয় টাকা না দিলে হিরোইন মামলা দিয়ে লাইফ শেষ করে দিমু। এটা শুনে তো আমি ভয় পাইয়া যাই। পরে আমি হাতে পায়ে ধরে সেই রাতে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে জামাইরে ছাড়াইয়া আনছি। বাকি ৫ হাজার টাকা পরে দিছি।  শুধু এই স্বামী-স্ত্রীর গল্পই নয়। আরও এক ব্যক্তিকে মামলার ভয় দেখিয়ে তার স্ত্রীর কাছে থেকে দফায় দফায় টাকা নিয়েছেন এসআই এমাদুল।  মোছা. তাসলিমা নামের ভুক্তভোগী ওই নারী কালবেলার কাছে অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী মুরগির গাড়িতে ডিউটি করে। যেহেতু গাড়িতে থাকে তাই হালকা পাতলা নেশা করেই। কিন্তু আমার স্বামীর কারণে এসআই এমাদুল বারবার আমার বাসায় গিয়ে টাকা নিয়ে আসে। এ পর্যন্ত দফায় দফায় কমপক্ষে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছে। একদিন আমার ঘরে গিয়ে বলে তল্লাশি করবে। তল্লাশি করে কিছুই পায় নাই। তখন আমার ড্রয়ারে কিস্তির বইয়ের মধ্যে টাকা ছিল সেই টাকাগুলোও নিয়ে গেছে। আমি এত করে বলছি এগুলো কিস্তির টাকা নিয়েন না। তবুও উনি থাবা দিয়ে টাকা নিয়ে পকেটে ঢুকাইয়া ফেলছে। শুধু বাকিতেই আটকে নেই এসআই এমাদুল। রাস্তাঘাট থেকে ধরে নিয়ে হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে পকেটে থাকা সমস্ত টাকা বের করে নেন তিনি। তাতেও কম পড়লে সেই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের ফোন করে ডেকে নিয়ে আদায় করেন আরও টাকা। তার এসব অপকর্মের সঙ্গী একই থানার এএসআই কামরুজ্জামান এবং এএসআই বদরুজ্জামান।  একই ঘটনা ঘটিয়েছেন গত বছরের ১৬ অক্টোবর রাতেও। রিজন নামের এক ছেলেকে গুদারা ঘাটের ৮নং রোডের একটি চায়ের দোকান থেকে তুলে নিয়ে যান এসআই এমাদুল। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন এএসআই কামরুজ্জামান এবং এএসআই বদরুজ্জামান। আটকের খবর পেয়ে ভাইকে বাঁচাতে থানায় যান রিজনের ভাই সোহাগ। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন বন্ধু আল আমিন। সেখানে যাওয়ার পরই এসআই এমাদুল ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সোহাগ ও আল আমিনের হাতে হ্যান্ডকাপ লাগায় এএসআই কামরুজ্জামান। পরে সোহাগের পকেটে থাকা ৮ হাজার টাকা এবং আলামিনের পকেটে থাকা ৫ হাজার টাকা বের করে নিয়ে নিজের পকেটে রেখে দেন এই পুলিশ সদস্যরা।  তবুও মেলেনি রক্ষা। তাদের হাজতে ঢুকিয়ে রেখে বিকাশে আরও ১০ হাজার টাকা আদায় করেন এই তিন পুলিশ কর্মকর্তা। সেই তিনজনকে থানায় আটক রাখার ভিডিও এবং টাকা লেনদেনের অডিও পৌঁছেছে কালবেলার হাতে।  সেই রাতের পুলিশের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারে কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সোহাগ। কিন্তু অভিযোগ করার পরই তাকে নানা রকমের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এই পুলিশ সদস্যরা।  ভুক্তোভুগি সোহাগ কালবেলাকে বলেন, তিন পুলিশের নামে অভিযোগ করার পর থেকেই অনেক চাপে আছি। নানা রকমের হুমকি দিচ্ছে তারা। এসব অভিযোগের বিষয়ে শাহআলী থানায় গিয়ে পাওয়া যায়নি অভিযুক্ত ৩ পুলিশের কাউকেই। পরে যোগাযোগ করা হয় তাদের মুঠোফোনে। প্রত্যেকের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তা রিসিভ করেননি কেউই। এরপর তাদের মুঠোফোনে ও হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠালেও কোনো উত্তর মেলেনি। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অল্প সংখ্যক এমন কিছু পুলিশ সদস্যের কারণে পুরো বাহিনীর সুনাম নষ্ট হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক কালবেলা বলেন, শাহ আলী থানা এলাকার ৩ পুলিশ সদস্য ওইখানের মানুষের মনে যে আতঙ্ক তৈরি করেছে। পুলিশের এই দুয়েকজন কর্মকর্তার অপেশাদার আচরণের কারণে মানুষের মনে কিন্তু অনেক অবিশ্বাস তৈরি হয়। প্রশ্ন হলো এই তিন পুলিশ যা করছেন তা কি তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখেন না। যদি দেখেও না দেখার মতো থাকেন এটাও অপরাধ। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া খুবই জরুরি। এতে জনগণ ও পুলিশের মধ্যে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ্য ও বিশ্বাসের সম্পর্ক তৈরি হবে।  পুলিশ সদস্যের এমন বেপরোয়া কাজের প্রমাণ মিললে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
০৭ মে, ২০২৪

রাজধানীর শাহ আলী থানা / পুলিশের তিন কর্মকর্তা ঘুষ নেন বাকিতে!
রাতে কাজ শেষ করে বাসায় ফিরছিলেন জুতার দোকানের কর্মচারী মো. ফরিদ। মাঝ রাস্তা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় শাহ আলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এমাদুল। এরপর ফরিদের স্ত্রীকে ফোন করেন এসআই এমাদুল। দাবি করেন ৫০ হাজার টাকা। বলেন, এই টাকা না দিলে তার স্বামীকে মাদক মামলায় আসামি করা হবে। পরে স্বামীকে বাঁচাতে ৩০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন ফরিদের স্ত্রী। এমাদুলের কথামতো রাতেই ২৫ হাজার টাকা দিয়ে স্বামীকে ছাড়িয়ে নেন তার স্ত্রী। আর ৫ হাজার টাকা বাকি রাখেন তিনি। বাকির ৫ হাজার টাকা ২ দিন পরে দেন এসআই এমাদুলকে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাহ আলী থানা এলাকার সাধারণ মানুষকে রাস্তাঘাট থেকে ধরে নিয়ে হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে পকেটে থাকা সব টাকা বের করে নেন এসআই এমাদুল। তাতেও কম পড়লে সেই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের ফোন করে ডেকে নিয়ে আদায় করেন আরও টাকা। তাৎক্ষণিক দাবিকৃত অর্থ দিতে না পারলে বাকিতে রেখে পরে সেই টাকা আদায় করা হয়। তার এসব অপকর্মের সঙ্গী একই থানার এএসআই কামরুজ্জামান এবং এএসআই বদরুজ্জামান। ভুক্তভোগী মো. ফরিদ কালবেলাকে বলেন, ‘আমি শাহ আলী মার্কেটের একটি জুতার দোকানে কাজ করি। গত ১৪ রোজার দিনে আমি রাতে দোকান থেকে হাইটা আসিতেছিলাম। তখন সেখান থেকে এসআই এমাদুল আমাকে ধরে নিয়ে শাহ আলী থানার টিনশেডে নিয়ে যাইয়া আমারে আটকাইয়া ফালায়। এরপর আমারে কয় ফ্যামিলিরে ফোন দে। তারপর আমি আমার ওয়াইফরে ফোন দিছি। এরপর এসআই এমাদুল আমার স্ত্রীকে বলে ওনাকে ছাড়াতে হলে ৫০ হাজার টাকা লাগবে। ওনার কাছে মদের বোতল পাইছি। আসলে আমার কাছে কিছুই পায় নাই। আমি পান ছাড়া জীবনে কিছুই খাই নাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘এসআই এমাদুল তখন হাতে লাঠি নিয়ে বলে তোকে হিরোইন মামলা দেব, মারব বলে বিভিন্নভাবে ভয় দেখায়। তখন আমার স্ত্রী ভয়ে বলে ঠিক আছে ২০ হাজার টাকা দেব; কিন্তু উনি তাতে রাজি হয় না। অনেক মারধর করছে আমারে। পরে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে ছাড়ছে।’ স্বামীকে বাঁচাতে মাঝরাতে কোলের শিশুকে নিয়ে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব ছিল না ফরিদের স্ত্রীর। তাই বাধ্য হয়ে নিজের কানের দুল বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করেন তিনি। ফরিদের স্ত্রী কুলসুম বেগম বলেন, ‘সেই রাতে এমাদুল স্যার আমার জামাইরে ধরে নিয়ে যায়। এরপর প্রথমে আমারে কয় ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। আমি কই স্যার গরিব মানুষ এত টাকা কই পামু। তখন কয় টাকা না দিলে হিরোইন মামলা দিয়ে লাইফ শেষ করে দিমু। এটা শুনে তো আমি ভয় পাইয়া যাই। পরে আমি হাতে-পায়ে ধরে রাতেই ২৫ হাজার টাকা দিয়ে জামাইরে ছাড়াইয়া আনছি। বাকি ৫ হাজার টাকা পরে দিছি।’ তাসলিমা নামের এক নারী কালবেলাকে বলেন, ‘আমার স্বামী মুরগির গাড়িতে ডিউটি করে। যেহেতু গাড়িতে থাকে তাই হালকা পাতলা নেশা করেই। সে জন্য এসআই এমাদুল বার বার আমার বাসায় গিয়ে টাকা নিয়ে আসে। এ পর্যন্ত দফায় দফায় অন্তত ৭০ হাজার টাকা নিয়েছে। একদিন আমার ঘরে গিয়ে বলে তল্লাশি করবে। তল্লাশি করে কিছুই পায় নাই। তখন আমার ড্রয়ারে কিস্তির বইয়ের মধ্যে টাকা ছিল, সেই টাকাগুলোও নিয়ে যায়।’ গত বছরের ১৬ অক্টোবর রাতে রিজন নামের এক ছেলেকে গুদারা ঘাটের ৮ নম্বর রোডের একটি চায়ের দোকান থেকে তুলে নিয়ে যান এসআই এমাদুল। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন এএসআই কামরুজ্জামান এবং এএসআই বদরুজ্জামান। আটকের খবর পেয়ে ভাইকে বাঁচাতে থানায় যান রিজনের ভাই সোহাগ। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বন্ধু আলামিন। তাদের কাছে এসআই এমাদুল ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সোহাগ ও আলামিনের হাতে হ্যান্ডকাফ লাগায় এএসআই কামরুজ্জামান। পরে সোহাগের পকেটে থাকা ৮ হাজার টাকা এবং আলামিনের পকেটে থাকা ৫ হাজার টাকা বের করেন এই পুলিশ সদস্যরা। তবুও মেলেনি রক্ষা। তাদের হাজতে ঢুকিয়ে রেখে বিকাশে আরও ১০ হাজার টাকা আদায় করেন এই তিন পুলিশ কর্মকর্তা। সেই তিনজনকে থানায় আটক রাখার ভিডিও এবং টাকা লেনদেনের অডিও রয়েছে কালবেলার হাতে। সেই রাতের পুলিশের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী সোহাগ; কিন্তু অভিযোগ করার পরই তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন এই পুলিশ সদস্যরা। সোহাগ কালবেলাকে বলেন, তিন পুলিশের নামে অভিযোগ করার পর থেকেই অনেক চাপে আছি। নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে তারা। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে শাহ আলী থানায় গিয়েও পাওয়া যায়নি অভিযুক্ত ৩ পুলিশের কাউকেই। পরে তাদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি। এরপর তাদের মোবাইল ফোনে ও হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠালেও কোনো উত্তর মেলেনি। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অল্পসংখ্যক এমন কিছু পুলিশ সদস্যের কারণে পুরো বাহিনীর সুনাম নষ্ট হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক কালবেলাকে বলেন, শাহ আলী থানা এলাকার ৩ পুলিশ সদস্য সেখানকার মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করেছে। পুলিশের এই দু-একজন কর্মকর্তার অপেশাদার আচরণের কারণে মানুষের মনে অনেক অবিশ্বাস তৈরি হয়। প্রশ্ন হলো এই তিন পুলিশ যা করছেন, তা কি তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখেন না। যদি দেখেও না দেখার মতো থাকেন, তাহলে এটাও অপরাধ। জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) মো. ফারুক হোসেন কালবেলাকে বলেন, এ ধরনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে আমাদের ডিএমপি হেডকোয়ার্টারে একটি শাখা রয়েছে। কোনো পুলিশ সদস্য যদি এ ধরনের বিচ্যুতিমূলক কাজ করে থাকে, তাহলে অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাটি অনুসন্ধান বা তদন্তের জন্য একজন কর্মকর্তাকে নিয়োগ করা হয়। তদন্তে যদি সত্যতা প্রমাণ হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অপরাধ বিবেচনায় চাকরিচ্যুতও হতে পারে। আমরা বলতে চাই, একজন ব্যক্তি পুলিশের অপরাধের দায় শুধুই তার। ডিপার্টমেন্ট তার অপরাধের দায়ভার বহন করবে না।
০৬ মে, ২০২৪

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ
পিরোজপুরের নেছারাবাদ মৈশানী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পর্শিয়া রানী হালদারের বিরুদ্ধে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া তিনটি পদে নিয়োগে ১০টি আবেদন পড়লেও অজ্ঞাত কারণে বন্ধ রেখেছেন নিয়োগ। এ নিয়ে বারবার বিজ্ঞপ্তি দিয়েও নিয়োগ বন্ধ করে দেওয়ায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক দুই সভাপতি ও স্থানীয়রা ক্ষোভ জানিয়েছেন। স্থানীয় শিমুল গাজী অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক পর্শিয়া রানী হালদার বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক পদে আমার কাছ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা নিয়েছেন। ওই পদে আমার স্ত্রী প্রার্থী ছিল। বিদ্যালয়ের ডোনেশনের কথা বলে তিনি ওই টাকা নিয়েছেন। এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছে না, নিয়োগও দিচ্ছে না। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও সমুদয়কাঠি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এম কে সবুর তালুকদার বলেন, বিদ্যালয়ে আমি এক সময় সভাপতি ছিলেন। আমি থাকাকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, অফিস সহায়ক এবং নিরাপত্তাকর্মী পদে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পর্শিয়া রানী। নিয়োগে বেশ কয়েকটি আবেদন জমা পড়ে। তিনি ওই পদের বিপরীতে মোটা অঙ্কের টাকার প্রার্থী না পেয়ে আমার সঙ্গে কোনো আলাপ আলোচনা না করেই নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি ও সমুদয়কাঠি ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমাউন কবির বেপারি বলেন, বর্তমান কমিটির মেয়াদ প্রায় শেষ। আমি নিজে উপস্থিত থেকে নতুন কমিটি করে দিয়েছি। কমিটি গঠনের দিন প্রধান শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়ায় নতুন কমিটি পাস হয়নি। তবে তিনি বিদ্যালয়ের তিনটি পদের নিয়োগের জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলেন। তিনি আমার কাছে কিছু না বলেই সেই নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছেন। সেখানে কিছুটা তার স্বেচ্ছাচারিতা রয়েছে। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির আরেক সাবেক সভাপতি আব্দুল হালিম গাজী অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়ে কয়েক বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পর্শিয়া রানী হালদার। তিনি বিদ্যালয়ের একটি নিয়োগ নিয়ে যা ইচ্ছা তাই করে বেড়াচ্ছেন। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্য ক্ষোভ বিরাজ করছে। তিনি বিদ্যালয়ের তিনটি পদে নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নানা অনিয়ম শুরু করেছিলেন। এ নিয়ে তার সঙ্গে মতানৈক্য দেখা দেয়। পরে ইচ্ছে করে বিদ্যালয় থেকে সরে যাই আমি। পরে বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্যদের অনুরোধে আমি পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি।  তিনি বলেন, পর্শিয়া রানী আমাকে কমিটির সভাপতি মানতে না পেরে তিনি কমিটির কাগজ ফরোয়ার্ড করেননি। তিনি বিদ্যালয়ের ওই তিনটি অফিস সহায়ক পদে স্থানীয় শিমুল গাজীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়েছেন। বাকি দুটি পদে ঘুষ না পেয়ে নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে রেখেছেন। আমি সভাপতি হলে স্বচ্ছভাবে নিয়োগ দিব তাই তিনি আমাকে মেনে নিতে পারছেন না। অভিযোগ অস্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পর্শিয়া রানী হালদার কালবেলাকে বলেন, বিদ্যালয়ের তিনটি পদে নিয়োগের জন্য ১০টি আবেদন জমা পড়েছে। প্রার্থীরা বর্তমান সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান হুমাউন কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আমার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। এ ছাড়া স্থানীয় জনগণ নিয়োগের ব্যাপারে ইতিবাচক কোনো মতামত দিচ্ছে না। তাই নিয়োগ দিতে পারছি না। নেছারাবাদ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম কালবেলাকে বলেন, নিয়োগসংক্রান্ত লেনদেনের ব্যাপারে আমাকে কিছু জানায়নি। কোনো অভিযোগও আমি পাইনি। তবে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিটিংয়ের দিন অসুস্থ হয়ে পড়ায় অফিসিয়াল কোনো ডকুমেন্টসে এখন পর্যন্ত স্বাক্ষর করা হয়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে।
০১ মে, ২০২৪

বনের জায়গায় পাকা ঘর, কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য
কক্সবাজারের পেকুয়ার বারবাকিয়া, টইটং ও শিলখালীর পাহাড়ি অঞ্চলের বন বিভাগের সংরক্ষিত জায়গায় গত দুই বছরে গড়ে উঠেছে প্রায় দেড় শতাধিক পাকা স্থাপনা। স্থানীয়দের ভাষ্য- প্রতিটি স্থাপনা গড়ে তুলতে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক। এতে বন বিভাগের জায়গা বেদখল করে কোটি টাকার উপরে হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। তথ্যসূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের শুরুর দিকে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নেন হাবিবুল হক। তখন থেকে বর্তমান সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন পেকুয়ার তিন পাহাড়ি অঞ্চলে বন বিভাগের প্রায় ১০০ হেক্টর জায়গার দখল বিক্রি করেছেন এ রেঞ্জ কর্মকর্তা। বেদখল হওয়া এসব জায়গায় গড়ে উঠেছে প্রায় দেড়শর উপরে ব্যক্তি মালিকানাধীন পাকা ঘরবাড়ি। অনুসন্ধানে জানা যায়, বারবাকিয়া ও শিলখালীর পাহাড়ি জায়গায় পাকা ঘরবাড়ি নির্মাণের জন্য রেঞ্জ কর্মকর্তার পক্ষে আর্থিক লেনদেন করেন পাহাড়িয়াখালী এলাকার বাসিন্দা জালাল আহমদ। তিনি বন বিভাগের হেডম্যান পরিচয় দিয়ে আরও নানাবিধ অপকর্ম করে থাকেন বলে জানা যায়। এ ছাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তার ডান হাত হিসেবেও বেশ পরিচিত তিনি। অন্যদিকে টইটং এলাকায় রেঞ্জ কর্মকর্তার নির্দেশে টাকা তোলেন হাছানের জুম এলাকার মৃত আবদুল কাদেরের ছেলে অলি আহমদ। টইটংয়ে বন বিভাগের জায়গায় পাকা ঘরবাড়ি নির্মাণ, পাহাড়কাটা, অবৈধ বালু উত্তোলনসহ নানা অপকর্ম করার আগে তার সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে অলিখিত চুক্তি করতে হয়। সকল অপকর্ম সম্পাদনের জন্য টাকা তুলে তিনি দিয়ে আসেন রেঞ্জ কর্মকর্তার হাতে। স্থানীয়দের দাবি অলি আহমদের কাছে জিম্মি পাহাড়ে বসবাসরত সাধারণ মানুষ। টইটং, শিলখালী ও বারবাকিয়া পাহাড়ি এলাকা ঘুরে জানা যায়, গর্জনিয়া পাড়ায়  জামাল হোসেন, জুমপাড়ায় যুবদল নেতা আকতার হোসেন, সোলতান আহমদের ছেলে মৌলভী আলী হোসেন, নুরুল আজিম, ফজুরমুরা এলাকায় মৃত মাহমুদুল হকের ছেলে মো. বাচ্চু, ফজুর মুরা এলাকার ছবির আহমদের ছেলে মো. আলম, কেরনছড়ি এলাকায় মালদ্বীপ প্রবাসী নাসির উদ্দিন, কাতার প্রবাসী আহমদ শফি, চেপ্টামোরা এলাকায় লাইলা বেগম, আবদুল মাজেদ, মধুখালী এলাকায় ঠান্ডা মিয়ার ছেলে আবদু রহিম, ফুরুক আহমদের ছেলে লেদু মিয়া, চৌকিদার পাড়ায় সৌদি প্রবাসি আবুল কাশেম, মৌলভী পাড়ায় সালাহ উদ্দিন, আহমদ ছফার ছেলে শাকের, দরগাহ মোড়া এলাকায় আবদুল হাকিমের ছেলে শাহনেওয়াজ, আবদুল্লাহ পাড়ার জাফর সওদাগর, হাছানেরজুম এলাকায় আবদুল হাকিম, ছনখোলারজুম ছালাম মার্কেটের পাশে মনোয়ারা বেগম, রমিজ পাড়ায় নুরুল হকের ছেলে আববাস উদ্দিন, নতুন পাড়ায় বাদশা মিয়া, খুইন্যাভিটায় মৌলভী হোসাইনের ছেলে শাহাব উদ্দিন, খলিফা মুরায় নুরুল আবছারের ছেলে শাহাবুদ্দিন, জারুলবনিয়া ঢালার মুখ এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী আবদুল্লাহ, মাঝেরঘোনায় মৌলভী নুরুল কবির, ফরিদুল আলমের ছেলে খোকন মিস্ত্রি, সৌদি প্রবাসী বদিউল আলম, সবুজ পাড়ায় ইদ্রিসের ছেলে গরু ব্যবসায়ী মনু মিয়া, মুহাম্মদ হোসেনের ছেলে রমিজ আহমদ, মৃত রহমত আলীর ছেলে আলমগীর, মৃত নুর আহমদের ছেলে জামাল হোসেন, তারাবনিয়া পাড়ার শাহ আলম, হোসাইনাবাদ এলাকায় সৌদি প্রবাসী আবদুল খালেকের ছেলে শওকত, ফাইন্যারচড়া এলাকায় আকতার হোসেনের ছেলে কফিল উদ্দিন, বারবাকিয়া ভারুয়াখালী এলাকায় আবদুল হাকিমের ছেলে হেলাল উদ্দিন, মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে আবুল কাশেম, ওমান প্রবাসী ফয়জুল করিম, সৌদি প্রবাসী নুরুল ইসলামের ছেলে কায়সার উদ্দিনসহ আরও অনেকে স্থায়ী পাকা ঘরিবাড়ি নির্মাণ করেছেন। এসব পাকা ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে এদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়েছেন রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক। এদিকে রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক তিন ইউনিয়নে রাম রাজত্ব কায়েম করলেও বন মামলার ভয়ে কেউ টুঁ শব্দ করার সাহস পায় না। এলাকার সাধারণ মানুষ তার কাছে এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছে। হাবিবুল হক পাহাড়ি জনপদে যেন এক অঘোষিত রাজা এমনটা জানিয়েছেন পাহাড়ে বসবাসরত সাধারণ জনগণ। অভিযোগ অস্বীকার করে অলি আহমদ জানান, আমি এসবে জড়িত নই। কারও কাছ থেকে কোনো সময় টাকা নেওয়া হয়নি। রেঞ্জ কর্মকর্তা টাকা নেয় কি না আমার জানা নেই। হেডম্যান পরিচয়দানকারী জালাল আহমদ এর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ হয়নি। এ বিষয়ে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হাবিবুল হক জানায়, রিজার্ভ জায়গায় যে সমস্ত বাড়িঘর তৈরি করছে আমরা অভিযান চালিয়ে এসব গুঁড়িয়ে দিয়েছি এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছি। কারও কাছ থেকে টাকা নেয়নি। এগুলো মিথ্যা কথা, অপপ্রচার।  চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, যারা বাড়িঘর করেছে তাদের তালিকাটা দিন। বিষয়টি আমি খোঁজখবর নিচ্ছি। প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

সরকারি মাংস কিনতে দিতে হয় ঘুষ
রমজান মাসজুড়ে রাজধানীতে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম, মাংস বিক্রি করছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। তবে অল্প সময়ে পণ্য শেষ হয়ে যাওয়াসহ এ পরিষেবায় শুরু থেকেই নানা অভিযোগ। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় রমজানের শেষ সময়ে এসে দেখা গেছে একজন ক্রেতা ১ কেজির বেশি মাংস নিতে চাইলে কেজিপ্রতি দিতে হচ্ছে বাড়তি ৫০ টাকা। শনিবার (৬ এপ্রিল) আজিমপুর মাতৃসদন সংলগ্ন বিশতলা সরকারি কোয়ার্টারের সামনে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রসহ অন্তত ৩টি স্থান ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। সরেজমিনে আজিমপুরের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সকাল ৯টার মধ্যে পণ্য নিয়ে ফ্রিজারভ্যান পৌঁছার কথা থাকলেও সেটি আসে সকাল সাড়ে ১০টার পর। গাড়ি দেখেই অপেক্ষমাণ ক্রেতারাদের মধ্যে তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। যা সামাল দিতেই পার হয় আরও কিছু সময়। এরপর বেলা ১১টা থেকে বিক্রি শুরু হয়। একপর্যায়ে বিক্রি কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ঘোষণা দেন, গরুর মাংস ৬০ প্যাকেট আছে যা মহিলা ও পুরুষ মিলিয়ে পাবেন। বেলা ১১টা ২৩ মিনিটে আবারও বলা হয়, একজন ক্রেতা যে কোনো ধরনের মাংস ১ কেজির বেশি পাবেন না। তবে কেউ ১ কেজির বেশি নিতে চাইলে কেজি প্রতি দিতে হবে ৫০ টাকা বেশি। তবে দুধ-ডিম পাওয়া যাবে চাহিদামতো। সিয়াম নামে একজনকে দেখা যায় পণ্যর ভাউচার লিখতে। ক্রেতা সেজে লাইনে দাঁড়িয়ে এ প্রতিবেদক গরুর মাংস কিনতে যান তার কাছে। দীর্ঘ চেষ্টার পর সামনে আসতেই সিয়াম বলেন, লাইন আরও পেছনে নিতে হবে। না নেওয়া পর্যন্ত বিক্রি বন্ধ। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরম লাগে এজন্য তিন ফুট দূরে দাঁড়াতে হবে।  প্রতিবেদক ১ কেজি গরুর মাংস এবং ১ কেজি বয়লারের মাংস নিতে চাইলে সিয়াম বলেন, যে কোনো মাংস ১ কেজি নেওয়া যাবে। যদি গরু মাংস ২ কেজি নিতে চাই তাহলে ১০০ টাকা বেশি দিতে হবে। মুরগির মাংসের ক্ষেত্রেও একই শর্ত। গরু ও মুরগি সমানভাবে সর্বনিম্ন ১ কেজি পরিমাণও না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে সিয়াম বলেন, চাহিদা অনেক বেশি। বহু মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। সবাইকে দিতে হলে গরুর কিংবা মুরগির মাংসের যে কোনো ১টা নিতে হবে।  বাড়তি টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিরক্তের সুরে তিনি বলেন- এত কথা বলার সময় নেই। পরেরজনকে নিতে দিন। বাড়তি টাকা ভাউচারে যুক্ত না করার বিষয়েও কোনো উত্তর দেননি তিনি। এ সময় অনেকেই দেখা যায় বাড়তি কেজি প্রতি ৫০ টাকা দিয়ে একাধিক মাংসের প্যাকেট সংগ্রহ করতে। পুরান ঢাকা থেকে আসা আজিজুল হক নামে এক ক্রেতা কালবেলাকে বলেন, সকাল ৯টায় এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। তাও ১৩ জনের পেছনে পড়তে হয়েছে। আজ অফিস না থাকায় এসেছি। যে পরিমাণ কষ্ট করতে হয়েছে, জানলে আসতাম না। তাও যদি মাংস পেতাম। শর্ত দিয়েছে গরু নিলে মুরগি দিবে না। অন্যদিকে ৫০ টাকা বেশি দিলে নেওয়া যাবে। এটা অরাজকতা ছাড়া কিছু না বলে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলতে দেখা যায় তাকে। লালবাগ থেকে এসেছেন আসা রাণী শীল। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, এসেছিলাম খাসির মাংস আর দুধ-ডিম নিতে। ১০টায় এসে পেছনে পড়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত খাসির মাংস পাইনি। মুরগি আর ডিম-দুধ নিয়েছি। পণ্য বিক্রিতে বাড়তি টাকা নেওয়ার প্রসঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. নাজমুল হাসান কালবেলাকে বলেন, বাড়তি টাকা নেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কোনো সিদ্ধান্ত নেই। কোনো সুযোগও নেই। এরকম হওয়ার কোনো কথা না, বিষয়টি আমরা দেখছি।  তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে গরুর মাংস নিলে মুরগির মাংস নেওয়া যাবে না এমন কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। বাড়তি টাকা নেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। বিষয়টি নিয়ে আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি যদি আমরা আরও আগে কিংবা তৎক্ষণাৎ জানতাম তখনি ব্যবস্থা নিতাম। ১০ মার্চ সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম, মাংস ও মাছ বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আবদুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত রমজান মাসে রাজধানীর ৩০টি স্থানে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম, মাংস বিক্রি করছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। আর মাছ বিক্রি চলে ১৫ রমজান পর্যন্ত। ১ম রমজান থেকে শুরু হওয়া দুধ, ডিম, মাংস বিক্রি চলবে ২৮ রমজান পর্যন্ত। গেল ১০ মার্চ রোববার সুলভ মূল্যে রাজধানীর খামারবাড়িতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে দুধ, ডিম, মাংস ও মাছ বিক্রি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আবদুর রহমান। এই কর্মসূচির আওতায় তরল দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা, ডিম প্রতিটি ৯ দশমিক ১৭ টাকা (১ ডজন ১১০ টাকা), গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯০০ টাকা এবং চামড়া ছাড়ানো ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। রাজধানীর ৩০টি স্থানের মধ্যে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র ২৫টি এবং স্থায়ী বাজার ৫টি। ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রগুলো হলো নতুন বাজার (বাড্ডা), কড়াইল বস্তি (বনানী), খামারবাড়ি (ফার্মগেট), আজিমপুর মাতৃসদন (আজিমপুর), গাবতলী, দিয়াবাড়ী (উত্তরা), জাপান গার্ডেন সিটি (মোহাম্মদপুর), ষাটফুট রোড (মিরপুর), খিলগাঁও (রেলক্রসিংয়ের দক্ষিণে), সচিবালয়ের পাশে (আবদুল গনি রোড), সেগুনবাগিচা (কাঁচাবাজার), আরামবাগ (মতিঝিল), রামপুরা, কালশী (মিরপুর), যাত্রাবাড়ী (মানিকনগর গলির মুখে), নয়া বাজার (পুরান ঢাকা), বসিলা (মোহাম্মদপুর), হাজারীবাগ (সেকশন), লুকাস (নাখালপাড়া), কামরাঙ্গীর চর, মিরপুর ১০, কল্যাণপুর (ঝিলপাড়া), তেজগাঁও, পুরান ঢাকা (বঙ্গবাজার) ও কাকরাইল।  আর স্থায়ী বাজার হলো মিরপুর শাহ আলী বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, নতুন বাজার (১০০ ফুট), কমলাপুর ও কাজী আলাউদ্দিন রোড (আনন্দবাজার)।
০৬ এপ্রিল, ২০২৪

ভূমি অফিসের সহকারী গুনে গুনে নিলেন ঘুষ
দপ্তরে সেবা নিতে আসা এক ব্যক্তির কাছ থেকে ঘুষের ৫ হাজার টাকা গুনে নিচ্ছেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী আবদুল কাদির মিয়া। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর থেকে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বেরিয়ে এসেছে নানা সময়ে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে তার ঘুষ নেওয়ার কাহিনি। ভিডিওতে দেখা যায়, আবদুল কাদির মিয়া নিজ দপ্তরে বসে প্রকাশ্যে সেবা নিতে আসা এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা গুনে নিচ্ছেন। এ সময় সেবাগ্রহীতা বলছেন, ‘সব খারিজ সমান নয়। গরিব মানুষ। কাজটা করে দিয়ে দেন।’ উত্তরে আব্দুল কাদির বলছেন, ‘কথা ছিল ৬ হাজার টাকা দেবেন। কম দিতে পারবেন না। প্রয়োজনে পরে হলেও দিতে হবে। একটা কাজ করে কিছু টাকা পাওয়া না গেলে চলে না।’ এরপর টাকাগুলো গুনে পকেটে ভরেন আব্দুল কাদির। চলে যাওয়ার সময় সেবাগ্রহীতা আবারও বলেন, ‘আপনি আরও এক হাজার টাকার আবদার করেছেন। একটা বিহিত (ব্যবস্থা) হবে। আপনি কাজটা করে রাখুন।’ ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এলাকাবাসী। ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন তারা। বলছেন, ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না ভূমি কর্মকর্তা মীর আবুল হাতিম ও অফিস সহকারী আব্দুল কাদির। স্থানীয় বাসিন্দা ভুক্তভোগী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘যে জায়গা খারিজ করতে ৩ হাজার টাকা লাগে। সেখানে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়। শুধু তাই নয়, টাকা নিয়েও কাজ করে দিতেও হয়রানি করে। মাসের পর মাস ঘুরতে হয়। ভূমি কর্মকর্তা ও অফিস সহকারী দুজনে মিলে লুটেপুটে খাচ্ছে।’ ফুল মিয়া নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘আমি আমার একটা জমি খারিজ করতে আসছিলাম। ২৪ শতাংশ জমির জন্য ২৩ হাজার টাকা চেয়েছে। পরে খারিজ না করে চলে যাই। ভূমি কর্মকর্তা ও অফিস সহকারী দুজনের একই সমস্যা। অফিসেও তাদের সময় মতো পাওয়া যায় না।’ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘জমির খারিজ কিংবা খসড়ার জন্য এলে আগেই বলে একশ-দুইশ টাকা দাও। টাকা দিলে পরে কথা বলে। ১৪৪ ধারার মামলার রিপোর্টের জন্য এলে টাকা ছাড়া রিপোর্ট করে না। অফিস প্রধান ও অফিস সহকারী টাকা ছাড়া কিছু বোঝেন না। কয়েকদিন আগেও আড়াই হাজার টাকার কাজ ৬ হাজার টাকা দিয়ে করিয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তাদের হাতে মাইজখাপন ইউনিয়নের মানুষ জিম্মি হয়ে আছে।’ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অফিস সহকারী আব্দুল কাদির বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমাকে শোকজ করেছে। আমি এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলতে পারব না।’ ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মীর আবুল হাতিম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আর অফিস সহকারী আব্দুল কাদিরের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।’ কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘ঘুষ নেওয়ার ভিডিও প্রকাশের পর অভিযুক্ত আব্দুল কাদিরের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ব্যাখা পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
৩০ মার্চ, ২০২৪

ইউনিয়ন ভূমি অফিস দুর্নীতির আখড়া, ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল
দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ও অফিস সহকারী। সেই কারণে প্রতিনিয়ত ভূমি অফিসে হয়রানির শিকার হতে হয় সেবা গ্রহীতাদের। সরকারি ফি ছাড়া অতিরিক্ত টাকা না দিলে কাজ তো দূরের কথা সেবা নিতে আসা লোকজনের সঙ্গে কোনো কথায় বলেন না তারা। এবার সেই ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। যেখানে গুনে গুনে ঘুষ নিতে দেখা গিয়েছে ভূমি অফিসের সহকারী আব্দুল কাদির মিয়াকে। ঘটনাটি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মাইজখাপন ইউনিয়ন ভূমি অফিসে। পদে পদে ঘুষ-দুর্নীতির কারণে এখানে অনিয়মই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি ভূমি অফিসের অফিস সহকারী আব্দুল কাদির মিয়া নিজ দপ্তরে বসে সেবাগ্রহীতাদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ (ঘুষ) গ্রহণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।  ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি তার দপ্তরে বসে প্রকাশ্যে সেবা নিতে আসা ভোলা মিয়ার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা গুনে নিচ্ছেন। ভোলা মিয়া বলছেন সব খারিজ সমান নয়। গরিব মানুষ কাজটা করে দিয়ে দেন। প্রতি উত্তরে আব্দুল কাদির বলেন কথা ছিল ৬ হাজার টাকা দিবেন। কম দিতে পারবেন না। প্রয়োজনে পরে হলেও দিতে হবে। একটা কাজ করে কিছু টাকা পাওয়া না গেলে চলে না। এরপর টাকাগুলো গুনে পকেটে ভরেন আব্দুল কাদির। চলে যাওয়ার সময় ভোলা মিয়া আবারও বলেন আপনি আরও এক হাজার টাকার আবদার করেছেন একটা বিহিত (ব্যবস্থা) হবে। আপনি কাজটা করে রাখুন। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এলাকাবাসী। ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন তারা। বলছেন ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না ভূমি কর্মকর্তা মীর আবুল হাতিম ও অফিস সহকারী আব্দুল কাদির। স্থানীয় বাসিন্দা ভুক্তভোগী নুরুল ইসলাম জানান, যে জায়গা খারিজ করতে তিন হাজার টাকা লাগে সেখানে দশ থেকে পনের হাজার টাকা দিতে হয়। শুধু তাই নয় টাকা নিয়েও কাজ করে দিতেও হয়রানি করে। মাসের পর মাস ঘুরতে হয়। ভূমি কর্মকর্তা ও অফিস সহকারী দুজনে মিলে লুটেপুটে খাচ্ছে। ফুল মিয়া বলেন, আমি আমার একটা জমি খারিজ করতে আসছিলাম। ২৪ শতাংশ জমির জন্য ২৩ হাজার টাকা চেয়েছে। পরে খারিজ না করে চলে যায়। ভূমি কর্মকর্তা ও অফিস সহকারী দুইজনের একই সমস্যা। এ ছাড়াও অফিসে তাদের ঠিক সময় মতো পাওয়া যায়। মো. নজরুল ইসলাম বলেন, জমির খারিজ কিংবা খসড়া’র জন্য আসলে আগেই বলে একশ-দুইশ টাকা দাও। টাকা দিলে পরে কথা বলে। ১৪৪ ধারা মামলার রিপোর্টের জন্য আসলে টাকা ছাড়া রিপোর্ট করে না। অফিস প্রধান ও অফিস সহকারী টাকা ছাড়া বিকল্প কিছু বুঝে না। কয়েক দিন আগেও আড়াই হাজার টাকার কাজ ৬ হাজার টাকা দিয়ে করিয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নাই। তাদের হাতে মাইজখাপন ইউনিয়নের মানুষ জিম্মি হয়ে আছে। সরেজমিনে জানা যায়, আব্দুল কাদিরের শুধু গ্রামে নয় ঢাকাতেও বাড়ি রয়েছে। গ্রামের এই সুসজ্জিত বাড়িটিতে নিরাপত্তারও কোনো কমতি রাখেননি। ১৯৯৭ সালে পল্লী বিদ্যুতের চাকরি ছেড়ে ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক চাকরিতে যোগদান করেন আব্দুল কাদির। এরপর থেকে ফুলে ফেঁপে বাড়তে থাকে অর্থ সম্পদ। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অফিস সহকারী আব্দুল কাদির বলেন, ইতোমধ্যে আমাকে শোকজ করেছে। আমি এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলতে পারব না। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মীর আবুল হাতিম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা আর অফিস সহকারী আব্দুল কাদিরের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিবুল ইসলাম বলেন, ঘুষ নেওয়ার ভিডিও প্রকাশের পর অভিযুক্ত আব্দুল কাদিরের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ব্যাখা পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২৮ মার্চ, ২০২৪
X