পঞ্চগড়ে বন্ধ চিনিকল চালুর ঘোষণা দিলেন নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে পঞ্চগড়-১ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নাঈমুজ্জামান ভুইয়া মুক্তা আনুষ্ঠানিকভাবে আঞ্চলিক ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে পঞ্চগড় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেডিয়ামে আয়োজিত বিশাল সমাবেশে তিনি এ ইশতেহার ঘোষণা করেন। তিনি ইশতেহারে পঞ্চগড়ে মেডিকেল কলেজ, কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, বন্ধ চিনিকল চালু ও চা চাষিদের সমস্যা সমাধানের ঘোষণা দেন। আওয়ামী লীগের ইশতেহারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রেখে দিনবদলের হাতিয়ার হিসেবে শিক্ষা, কৃষি ও কৃষিপণ্যের বহুমুখীকরণ, গ্রামকেন্দ্রিক অংশগ্রহণমূলক উন্নয়ন, আমার গ্রাম, আমার শহর, তারুণ্যের শক্তি, পঞ্চগড়ের সমৃদ্ধি এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের মাধ্যমে চেকসই উন্নয়ন এই পাঁচটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে আঞ্চলিক ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি। এ পাঁচটি লক্ষ্যের ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, জ্ঞান, দক্ষতা, প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান এবং ব্যক্তির শক্তি বিকাশ উপযোগী শিক্ষা, মেডিকেল কলেজ স্থাপন, কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, ক্রীড়া শিক্ষা, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ল্যাব স্থাপন, একটি হাই-টেক পার্ক, আইটি ভিলেজ স্থাপন, পঞ্চগড়কে বহুমাত্রিক পর্যটন হাব হিসেবে গড়ে তোলা, পরিকল্পিত এবং কার্যকর যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা, ডিজিটাল পঞ্চগড় থেকে স্মার্ট পঞ্চগড়ের পথে যাত্রা, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ, আগামীর পঞ্চগড়কে তারুণ নির্ভর করে গড়ে তোলা, অন্তর্ভুক্তিমূলক মানবিক পঞ্চগড় বিনির্মাণ, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে উদার ও অসাম্প্রদায়িক প্রজন্ম গড়ে তোলার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা এবং ৭২ এর সংবিধানের চার মূলনীতি অনুযায়ী দেশ ও পঞ্চগড় গড়ার ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, সন্তানের ভবিষ্যৎ, সমৃদ্ধি, নিরাপত্তা, উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে এ ইশতেহার বাস্তবায়ন করতে চাইলে ৭ জানুয়ারি নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহবান জানান। সাদ্দাম হোসেন বলেন, নৌকায় ভোট দিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন, তাই সকলের জীবনমান উন্নয়ন হয়েছে। চিকিৎসা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। আজকে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দারিদ্যের হার কমেছে। নৌকা মার্কার সরকার জনগণের কাজ করে। নৌকা মার্কার সরকার সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন ভাতা ও সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি ভূমিহীন-গৃহহীনদের জন্য বিনামূল্যে দুই কাঠা জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের এই বাংলায় একটি মানুষও যাতে গৃহহীন না থাকে, কেউ যেন খাদ্যের জন্য কষ্ট না পায় সেজন্য নৌকা মার্কার সরকার তথা আওয়ামী লীগ সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মার্কা, উন্নয়নের মার্কা, বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করার একমাত্র মার্কা নৌকা মার্কা। নৌকার কোনো বিকল্প নেই। সবাইকে আওয়ামী লীগ তথা প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত প্রার্থী নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া (মুক্তা)’র নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বিপুল ভোটে বিজয় করার আহবান জানান। নৌকাকে বিজয় করে দেশ ও মানুষের স্বপ্ন-আশা-আকাঙ্খা পূরণে ছাত্রলীগের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে আত্মনিয়োগ করতে নির্দেশ দেন তিনি। অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবু তোয়বুর রহমান, মনিরা পারভীন, শিবেন শর্মা, যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট মির্জা সারোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা হারুন অর রশিদ সেলিম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, পৌর মেয়র জাকিয়া খাতুন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সায়খুল ইসলাম, জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক অ্যাডভোকেট আবু বকর ছিদ্দিক, আহসানুল হক লিটন, অ্যাডভোকেট এমএন হুদা। পরে গো ভোট কনর্সাটে দেশ সেরা শিল্পীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৩

আখ মাড়াই শুরু করল দর্শনার কেরু অ্যান্ড কোম্পানির চিনিকল
চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু অ্যান্ড কোম্পানির চি‌নিকলে চলতি মৌসুমে আখ মাড়াই শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার (১৫ ডি‌সেম্বর) বি‌কেল সা‌ড়ে ৩টায় মাড়াই মৌসুমের উ‌দ্বোধন উপল‌ক্ষে চি‌নিক‌লের কেইন কে‌রিয়া‌র প্রাঙ্গ‌ণে আ‌লোচনা ও দোয়া মাহ‌ফিল হয়। পরে কেইন কে‌রিয়া‌রে আখ নি‌ক্ষেপের মাধ্য‌মে চল‌তি মৌসু‌ম শুরু করা হয়। বাংলা‌দেশ চি‌নি ও খাদ্য শিল্প ক‌রপোরেশনের সচিব চৌধুরী রুহুল আ‌মিন কায়সা‌রের সভাপ‌তি‌ত্বে অনু‌ষ্ঠিত দর্শনা চি‌নিক‌লের মাড়াই মৌসুম উ‌দ্বোধ‌ন অনুষ্ঠা‌নে প্রধান অ‌তি‌থি বাংলা‌দেশ চি‌নি ও খাদ্য শিল্প ক‌রপোরেশনের চেয়রম্যান শেখ শো‌য়েবুল আলম। বি‌শেষ অ‌তি‌থি ছি‌লেন বাংলা‌দেশ চি‌নি ও খাদ্য শিল্প ক‌রপোরেশনের প‌রিচালক (উৎপাদন ও প্র‌কৌশল) মো. আতাউর রহমান, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কি‌সিঞ্জার চাকমা, চুয়াডাঙ্গা পু‌লিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান, জেলা প‌রিষ‌দের চেয়ারম্যান মাহাফুজুর রহমানঞ্জু। বক্তব্য দেন চি‌নিক‌লের শ্র‌মিক ইউ‌নিয়‌নের সভাপ‌তি ফি‌রোজ আহা‌ম্মেদ সবুজ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান আখচা‌ষি কল্যাণ স‌মি‌তির সভাপ‌তি আব্দুল বা‌রী বিশ্বাস। চলতি মৌসুমে ৫৫ মাড়াই দিবসে ৬৫ হাজার টন আখ মাড়াই করে ৪ হাজার টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। এ মৌসুমে চিনিকল জোনে আখ রয়েছে ৩ হাজার ৮০২ একর জমিতে। এর মধ্যে চিনিকলের নিজস্ব ১ হাজার ১৫৩ একর জমিতে আখ রয়েছে। প্রধান অ‌তি‌থির বক্ত‌ব্যে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান শেখ শোয়েবুল আলম বলেন, সব ঠিকঠাক চললে চলতি মৌসুমে চিনিতে মোটা অংকের লোকসান কমিয়ে আনতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি। চিনিকলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোশারফ হোসেন বলেন, চিনিকল এলাকায় আখের চাষ কম হয়েছে। এ জন্য এ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেকে নেমে আসছে। তাই এবার তিন হাজার ৮১০ টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উদ্বোধনের সময় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাংলাদেশ চিনিকল শ্রমিক ও কর্মচারী ফেডারেশনের নেতারা, আখচাষি ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন। চাষিদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ মৌসুমে আখের মূল্য বাড়িয়েছে সরকার। এবার প্রতিমণ আখের মূল্য ২২০ টাকা করা হয়েছে। তবে চাষিরা বলছেন, চিনির মূল্য অনুযায়ী আশানুরূপ হারে আখের মূল্য বাড়েনি। আখের মূল্য আরও বাড়ানোর দাবি চাষিদের। বাংলাদেশ চিনিকল আখচাষি ফেডারেশনের সহসভাপতি মো. ওমর আলী বলেন, চিনিকল কর্তৃপক্ষের কাছে আখচাষিদের এবারের দাবি আখের মূল্য সরাসরি নগদ টাকায় পরিশোধ করা। মোবাইল ব্যাংকিং শিওর ক্যাশ বা বিকাশে চাষিরা টাকা নেবে না। ঋণের সার, বীজ, কীটনাশক সঠিক সময়ে দিতে হবে এবং চাষিদের কোটায় পাওনা চিনি উত্তোলনের সময় বাড়াতে হবে।
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৩

৬১ কোটি লোকসানের বোঝা নিয়ে চালু হচ্ছে কেরু চিনিকল
৬১ কোটি ৫ লাখ টাকা লোকসানের বোঝা নিয়ে ২০২৩-২৪ আখ মাড়াই মওসুম শুরু করতে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় চিনিকল চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি। মাড়াই মওসুম সফল করতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ।  ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের সবচেয়ে বড় চিনিকল দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি। চিনি উৎপাদন কারখানা, ডিস্টিলারি, জৈব সার কারখানা ও ওষুধ কারাখানার সমন্বয়ে গঠিত বৃহৎ এ শিল্প কমপ্লেক্সে চিনি কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহতভাবে লোকসান গুনে আসছিল। সরকারিভাবে চিনির মূল্য বৃদ্ধির কারণে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে চিনিকারখানাটি। এ ছাড়াও প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে মিলস হাউসে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজন করে চিনিকলটি আধুনিকায়নের কাজ চলছে। এতে আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়বে। তবে এলাকায় আখ চাষ ক্রমাগত কমতে থাকায় সংকটে পড়েছে দেশের ঐতিহ্যবাহী এই চিনিকলটি। শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে চিনিকলের কেইন কেরিয়ারে আখ নিক্ষেপের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এবারের মাড়াই মওসুম উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান শেখ শোয়েবুল আলম। সবকিছু ঠিকঠাক চললে চিনিতে মোটা অঙ্কের লোকসান কমিয়ে আনতে পারবে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি এমনটিই আশা করছে কর্তৃপক্ষ।  ৬৫ হাজার টন আখ মাড়াই করে ৪ হাজার টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবারের মাড়াই মওসুমে। মোট ৫৫ মাড়াই দিবসের লক্ষ্যমাত্রায় চিনি আহরনের গড় হার ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। এ উপলক্ষে কেরু চিনিকলে আনুষ্ঠানিকতার সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন। এদিন বিকাল চারটার সময় মিলের ক্যান কেরিয়ার প্রাঙ্গণে সংক্ষিপ্ত সভা ও দোয়া মাহফিল শেষে ক্যান কেরিয়ারে আখের আঁটি নিক্ষেপের মাধ্যমে চলতি ২০২৩-২৪ মাড়াই মওসুমের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান শেখ শোয়েবুল আলম এনডিসি। এ সময় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কেরু চিনিকলের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাংলাদেশ চিনিকল শ্রমিক ও কর্মচারী ফেডারেশনের নেতারাসহ আখচাষি ও সুধিজন উপস্থিত ছিলেন। চিনিকলের শ্রমিকরা জানান, এ বছর মিলস হাউসের ফিটিংয়ের কাজ ভালো হয়েছে। মিল ভালোই চলবে। ফলে বেশি চিনি উৎপাদন সম্ভব হবে।  কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ‘মাড়াই মওসুম শুরু করতে চিনিকলের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে চিনিকল এলাকায় আখের চাষ কম হয়েছে। এ জন্য এবছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেকে নেমে এসেছে। তবে এ মওসুমে লোকসান কমিয়ে আনতে সবাই মিলে কাজ করছে।’ এ মওসুমে ৫৩ মাড়াই দিবসে  প্রতিদিন গড়ে ১১শ ৫০ টন আখ মাড়াই করবে চিনিকলটি। ৬১ হাজার ৫০০ হাজার  টন আখ মাড়াই করে শতকরা ৬ দশমিক ২ ভাগ চিনি আহরণের মাধ্যমে ৩ হাজার ৮শ ১০ টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।  গত বছর ২০২২-২৩ মাড়াই মওসুমে ৪২ মাড়াই দিবসে প্রায় ২৩ হাজার টন চিনি উৎপাদন করেছিল চিনিকলটি। সে সময় আখের অভাবে র্নিধারিত দিনের আগেই বন্ধ হয়ে যায় চিনিকল। এ বছর কেরু চিনিকল জোনে দণ্ডায়মান আখ রয়েছে ৩ হাজার ৮০২ একর জমিতে। এর মধ্যে চিনিকলের নিজস্ব জমিতে আখ রয়েছে ১ হাজার ১৫৩ একর জমিতে।  চাষিদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ মওসুমে আখের মূল্য বাড়িয়েছে সরকার। এবার প্রতি মণ (৪০ কেজি) আখের মূল্য ২২০ টাকা টাকা করা হয়েছে। তবে চিনির শূল্য বাড়লেও আশানুরূপ হারে আখের মূল্য বাড়েনি। আখের মূল্য আরও বাড়ানোর দাবি চাষিদের।  বাংলাদেশ চিনিকল আখচাষি ফেডারেশনের সহসভাপতি মো. ওমর আলী বলেন, চিনিকল কর্তৃপক্ষের কাছে আখচাষিদের এবার দাবি, চাষিদের মাঝে আখ বিক্রির পুজির পরিমাণ বাড়াতে। আখের মূল্য সরাসরি নগদে পরিশোধ করতে। শিওর ক্যাশ বা বিকাশে চাষিরা টাকা নেবে না। ঋণের সার, বীজ, কীটনাশক সঠিক সময়ে দিতে হবে এবং চাষিদের কোটায় পাওনা চিনি উত্তোলনের সময় বাড়াতে হবে।’  ১৮০৫ সালে মি. জন ম্যাকসওয়েল নামক এক ইংরেজ তার ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় ভারতের কানপুরে জাগমু নামকস্থানে তখনকার একমাত্র ফরেন লিকার কারখানাটি চালু করেছিলেন। অতঃপর বিভিন্ন সময়ে এর নাম, স্থান, মালিকানা, উৎপাদন ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত হতে থাকে। ১৮৪৭ সালে মি. রবার্ট রাসেল কেরু অংশীদারত্বের ভিত্তিতে ওই প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হন এবং কালক্রমে তা ক্রয় করে নেন। উত্তর ভারতের ‘রোজা’-তে অবস্থানকালীন ১৮৫৭ সনে সিপাহী বিপ্লবের সময় কারখানাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অতঃপর তা পুনঃনির্মাণপূর্বক জয়েন্ট স্কট কোম্পানি গঠন করে ‘কেরু অ্যান্ড কোম্পানি লি. হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির নতুন নামকরণ করা হয়। ‘রোজা’-তে ব্যবসা উন্নতি লাভ করলে আসানসোল ও কাটনিতে এর শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৩৮ সনে প্রাথমিকভাবে দৈনিক ১০০০ টন আখ মাড়াই ও ১৮ হাজার লিটার স্পিরিট তৈরির লক্ষ্যে আরও একটি শাখা তদানীন্তন নদীয়া জেলার অন্তর্গত এ দর্শনায় স্থাপন করা হয়। ১৯৬৮ সনে ইংরেজরা এ দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (পাকিস্তান) লি. এর স্থলে ব্যবস্থাপনা দায়িত্ব ইপিআইডিসির ওপর ন্যস্ত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ করা হয়। তখন থেকে অদ্যাবধি এটি কেরু অ্যান্ড কোম্পানি (বাংলাদেশ) লি. নামে শিল্প মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রনাধীন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছে। গেল ২০২২-২৩ অর্থবছরে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব খাতে জমা দিয়েছে ১৪৫ কোটি টাকা। যা প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩
X