হত্যাচেষ্টা মামলায় সেই ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে স্বর্ণ কারিগরকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ছাত্রলীগ নেতা শুভ্রদেব সিংকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৫ মে) ভোরে মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুভ্রদেব সিং বোয়ালমারী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ঋষিপাড়ার বাসিন্দা। তিনি বোয়ালমারী উপজেলার ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।   জানা গেছে, পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আঁধারকোঠা গ্রামের বাসিন্দা স্বর্ণ কারিগর হৃদয় কর্মকারকে ৪ মে শুভ্রদেব সিং এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে পালিয়ে যান। স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহত হৃদয়কে উদ্ধার করে তাকে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হৃদয়ের বাম হাতের দুটি রগ কেটে যায়। এ ঘটনায় হৃদয় কর্মকারের মা বেদেনা কর্মকার বাদী হয়ে শুভ্রদেব সিংকে একমাত্র আসামি করে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। বোয়ালমারী থানার ওসি শহিদুল ইসলাম কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শুভ্রদেব সিং নানা অপকর্মে জড়িত। একাধিক অভিযোগ তার নামে। তাকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালের ২৬ মার্চ ছাত্রলীগের সাবেক এ নেতা কোমড়ে পিস্তল রেখে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে জনমনে ভয়ভীতি ছড়ানোর অপরাধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হন। পরবর্তীতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক এ সাংগঠনিক সম্পাদক শুভ্রদেব সিংকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
২৩ ঘণ্টা আগে

নির্বাচনী পথসভায় হামলার ঘটনায় তিন ছাত্রলীগ নেতা আটক
ঝালকাঠিতে নির্বাচনী পথসভায় হামলার ঘটনায় তিন ছাত্রলীগ নেতা আটক করেছে পুলিশ। সদর উপজেলার দোয়াত-কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতান হোসেন খান ও তার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বুধবার (১৫ মে) সকালে পুলিশ তাদের আটক করে ঝালকাঠি সদর থানায় নিয়ে আসে। আটককৃতরা হলেন জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আলফি শাহরুন শুভ, ইশতিয়াক আহমেদ ও তুহিন হাওলাদার। বিষয়টি নিশ্চিত করে ঝালকাঠি সদর থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। এর আগে মঙ্গলবার (১৪ মে) রাতে কীর্তিপাশা মোড়ে ঝালকাঠি সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী সুলতান হোসেন খানের পথসভায় হামলা চালানো হয়। এতে আহত হয়েছেন সুলতানসহ ১৫ জন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আরিফ খানের সমর্থকরা এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সুলতান হোসেনের সমর্থকরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কীর্তিপাশা মোড়ে সুলতান হোসেনের একটি নির্বাচনী পথসভা চলছিল। রাত ৮টার দিকে হঠাৎ সেখানে কে বা কারা হামলা চালায়। প্রথমে মারধর করা হয় সুলতানকে, এরপর চেয়ার ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ১৪ জনকে আহত করে তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশি পাহারায় সুলতানকে প্রথমে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়, সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সদর হাসপাতালের চিকিৎসক নাইম জানান, সুলতান হোসেন কাঁধ ও মাথায় আঘাত পেয়েছেন। হামলায় আহত অন্যরা হলেন ইত্তেফাকের জেলা প্রতিনিধি শফিউল ইসলাম সৈকত, ডিবিসি নিউজের অলোক সাহা, আমাদের বার্তার প্রতিনিধি কামরুজ্জামান সুইট, জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এস এম রুহুল আমিন রেজভী, সুলতান হোসেন খানের সমর্থক কে এস জাহিদ, মনির খান, রুবেল হোসেন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মিলু। তারা ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
১৫ মে, ২০২৪

ভাগ্য পরিবর্তন করতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন ছাত্রলীগ নেতা
ভাগ্য বদলের আশায় ৩ মাস আগে দুবাই পাড়ি জমিয়েছিলেন মো. রাকিব উদ্দিন (২১) নামে এক ছাত্রলীগ নেতা। কয়েক দিন আগেই কোম্পানির চাকরিতে যোগদান করেছিলেন তিন। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে লিফট দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। বুক ভরা আশা নিয়ে বিদেশ পাড়ি দেওয়া রাকিব বাড়ি ফিরেছেন কফিনবন্দি হয়ে। শুক্রবার (১০ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাতিয়ার নিজ বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়। মো. রাকিব উদ্দিন হাতিয়া উপজেলার চরকিং ইউনিয়নের দক্ষিণ চরইশ্বর রায় হোতারাগো বাড়ি মো. জামাল উদ্দিনের ছেলে। জানা যায়, চার ভাই এক বোনের মধ্যে রাকিব উদ্দিন চতুর্থ। দ্বীপ সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ৩ মাস আগে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় দুবাই পাড়ি জমান। সেখানে একটি কোম্পানিতে চাকরি নেন তিনি। গত ১৮ এপ্রিল কর্মক্ষেত্রে লিফট দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন রাকিব। ৯ দিন আইসিইউতে থাকার পর ২৬ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন তিনি। শুক্রবার (১০ মে) সন্ধ্যায় রাকিবের লাশ নিজ বাড়িতে আসলে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জানাজা শেষে ওমর মুন্সী মসজিদের পাশের পারিবারিক কবরস্থানে দাদার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। রাকিবের বড় ভাই ইরাক উদ্দিন বলেন, আমার ভাই কাজে গিয়ে লিফট দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়। তারপর তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। ৯ দিন পর তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে। আমাদের সংসার এলোমেলো হয়ে গেল। রাকিবের বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, আমার বড় ছেলে প্রতিবন্ধী। রাকিব পড়াশোনা রেখে পরিবারের স্বপ্ন পূরণ করতে প্রবাসে পাড়ি দিয়েছিল। কিন্তু তিন মাসের মাথায় আজ সে কফিনবন্দি হয়ে ফিরেছে। তার মা রেজিয়া বেগম বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। হাতিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদ উদ্দিন বলেন, রাকিব খুব শান্ত স্বভাবের ছিল। তার মৃত্যুতে আমরা সবাই শোকাহত। হাতিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহবুব মোর্শেদ লিটন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, হাতিয়ার অনেকেই বিভিন্ন দেশে রয়েছেন। যারা ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য বিদেশ গমন করেছেন। রাকিব উদ্দিন ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য দুবাই গিয়ে তিন মাসের মধ্যে কফিনবন্দি হয়ে ফিরলেন। সংসারের হাল ধরতে তিনি বিদেশ পাড়ি দিয়েছিলেন।
১১ মে, ২০২৪

৯০০০ টাকার খাম ৩ লাখে বিক্রি করলেন ছাত্রলীগ নেতা
অভিযোগ যেন পিছু ছাড়ছেই না চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। বারবার আসামির কাঠগড়ায় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এবার তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভয় ও হুমকি দিয়ে ৩ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, এবার কলেজে ভর্তি হয়েছে মোট ৩ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী। যাদের কাছ থেকে খাম বিক্রি বাবদ আদায় করা হয়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। যার প্রকৃত মূল্য ৯ হাজার ৬০০ টাকা।  তবে সভাপতি ও সম্পাদকের এমন চাঁদাবাজির ঘটনায় জড়িত হতে চান না বাকি ছাত্রলীগের পদধারী কেউই। তাই এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে তারা। কিন্তু প্রতিবাদ জানিয়ে উল্টো হামলার শিকার হতে হয়েছে তাদের। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি দুই ছাত্রলীগের কর্মী। শুধু এ দুজনই নয়, চাঁদাবাজির প্রতিবাদ জানানোর ঘটনায় ঘটেছে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া।  বৃহস্পতিবার (৯ মে) পর্যন্ত অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।  তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুভাস মল্লিক সবুজ। তিনি অভিযোগ করে বলেন, তাদের পদ থেকে সরাতেই এমন মিথ্যা কথা ছড়ানো হচ্ছে।  জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম কলেজ প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে সভাপতি-সম্পাদকের সঙ্গে আরেকটি গ্রুপের। এই ঘটনায় ১০ জন আহত হন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি হন দুজন। তাদের অবস্থা গুরুতর।  আহতরা হলেন, ইংরেজি ১ম বর্ষের জাবের বিন জাফর, ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ইমতিয়াজ হোসেন সাবের, ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগের সহসম্পাদক রিয়াজ উদ্দীন, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র আবদুল মাজেদ ফয়সাল, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের উপবিজ্ঞান প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ও ডিগ্রি ১ম বর্ষের ছাত্র মাহিবি তাজোয়ার, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের উপপাঠাগারবিষয়ক সম্পাদক ও ডিগ্রি ৩য় বর্ষের ছাত্র এরফান আলম ও আমিন ফয়সাল বিদ্যুৎ।  সভাপতি-সম্পাদক গ্রুপের আহত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন, ইংরেজি ডিপার্টমেন্টের সাধারণ সম্পাদক জনি, ইসতিয়াক হোসেন ও মো. মিজান।  সংঘর্ষের কারণ সম্পর্কে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অর্নব দেব বলেন, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিকভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাত করে আসছে। বর্তমানে অনার্সে ভর্তি চলছে। প্রত্যেকটি শিক্ষার্থী থেকে একটি খাম বিক্রি বাবদ ১০০ টাকা করে নিচ্ছে। এছাড়া রেজিস্ট্রেশন কার্ড, এডমিট কার্ড নিতে হলে প্রত্যেকটি থেকে ১০০ টাকা করে নিচ্ছেন সভাপতি-সম্পাদক। অথচ শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যেন কোনো চাঁদাবাজি না করা হয়। এই সব নিয়ে কয়েকদিন ধরেই আমরা প্রতিবাদ করে আসছি। আজকেও (বৃহস্পতিবার) একজন সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক ১০০ টাকা নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে আমরা প্রতিবাদ করায় তারা আমাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।  অর্নব দেব আরও বলেন, শুধু আজ নয়, বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে এমন চাঁদাবাজি তারা দীর্ঘদিন ধরেই করছেন। এমন ঘটনার প্রতিবাদে চকবাজার থানা ও কোর্টে আমরা মামলাও করেছি। আজ যখন সাধারণ শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তোলা হয় তখনই আমরা প্রতিবাদ করি।  বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজির পাশাপাশি নিয়োগ বাণিজ্য, টেম্পোস্টেশন ও টং দোকান থেকেও প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণে চাঁদাবাজি করত বলে অভিযোগ চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম মনিরের।  তিনি বলেন, এসব চাঁদাবাজি করে কলেজ সভাপতি মাহাদুল করিম সাড়ে ৩ কোটি টাকায় একটি বিশাল বাড়ি বানিয়েছেন। তাদের দুই জন এতটাই বেপরোয়া যে, তাদের কাছে সবাই অসহায়। তারা একটি কলেজে কীভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সামান্য ৩ টাকা দামের খাম ১০০ টাকা আদায় করছে! তবে আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। এই কারণে আমাদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। আমরা চাই এই ধরনের মানুষ যেন ক্যাম্পাসে আর না আসে। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে। আমরা চাঁদাবাজি চাই না।  ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কাছে জোর করে খাম বিক্রি করে গেল ৭ দিনে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক আবদুল্লাহ আল সাইমন।  তিনি বলেন, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক সিন্ডিকেট করে ভর্তি কার্যক্রমের ফাইল বিক্রি করছে। একটি খামের জন্য ১০০ টাকা চাওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ জানালে ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র ইমতিয়াজ হোসেন সাবেরের ওপর গেল কয়েকদিন আগে হামলা করে সভাপতি-সম্পাদকের অনুসারীরা। এ সময় তার চোখের ওপরের অংশ জখম হয়। আমরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সে সুস্থ হয়ে আজ ক্যাম্পাসে আসে। আজও তার ওপর হামলা করা হয়। আজ তার কানই ফাটিয়ে দেওয়া হয়। পরে এ নিয়ে আমাদের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়।  তিনি অভিযোগ করে বলেন, এই খাম বিক্রি বিষয়টি সভাপতি ও সম্পাদকের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করেন হাবিব উল্ল্যাহ রিয়াদ ও মমিনুল ইসলাম নামে দুই ছাত্রলীগ নেতা। প্রত্যেকটি ছাত্রকে তারা ভয়ভীতি ও হামলা-মারধরের হুমকি দিয়েই এই টাকা আদায় করছে। আমিসহ আমাদের কিছু ছাত্রলীগ সহকর্মী এই চাঁদাবাজির প্রতিবাদ জানাই এবং তাদের সঙ্গ ছেড়ে দিই।  তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ। তিনি বলেন, গেল এক মাস ধরে আমাকে ও সভাপতিকে কলেজে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কলেজে সভাপতি মাহমুদুল করিমের পোস্টার, ব্যানার ছিল। কিন্তু সেই পোস্টার, ব্যানার খুলে ফেলা হয়েছে। কলেজের পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য, টেম্পু স্টেশন ও টং দোকানসহ কোনো জায়গা থেকেই আমরা চাঁদাবাজি করি না। এটা একটা মিথ্যা অভিযোগ। এমন মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাদের হেয় করতে চাচ্ছে তারা। আজ বিনা-উষ্কানিতেই তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।  এদিকে এই ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিমকে কয়েকবার ফোন করলেও ফোনটি রিসিভ হয়নি।  তবে বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন চকবাজার থাকার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) তৌহিদ কবির। তিনি বলেন, পূর্বের কিছু ঘটনার জের ধরেই চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম ও সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজের অনুসারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের আরেকটি গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই অভিযোগ করেননি।
০৯ মে, ২০২৪

ধর্ষণ ও ভ্রূণ হত্যা মামলায় সেই ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান বিজয়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধর্ষণ ও ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে বিজয়সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ঢাকার সাদিয়া খান আদরী ওরফে সিমরান সাদিয়া (২৩) নামে এক অভিনয়শিল্পী। মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরে মামলা দায়েরের পর রাতে শহরের পুলিশ কোয়ার্টার এলাকার ডানহাম গলির একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্ত ইকবাল হাসান বিজয় চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি। চরচান্দিয়া ইউনিয়নের মনোহর আলী মিয়া বাড়ির আবদুল্লাহ আল মামুন ওরফে বাবুলের ছেলে। তিনি ফেনীর পূবালী সংসদ নামে একটি নাট্য সংগঠনের হয়ে মঞ্চে অভিনয় করেন। ভুক্তভোগী তরুণীর বাড়ি খুলনার খালিশপুরে হলেও তিনি বর্তমানে ঢাকার আফতাব নগরে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করছেন। তিনি একজন টিকটকার ও মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেন। এ বিষয়ে গত ২৯ এপ্রিল দৈনিক কালবেলায় ‘ দুই তরুণীকে নিয়ে পালালেন ছাত্রলীগ নেতা' ও গত ৩ মে ‘স্ত্রীর স্বীকৃতি চেয়ে সেই ছাত্রলীগ নেতাকে খুঁজছে তরুণী' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে মঙ্গলবার (৭ মে) দুপুরে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আশেকুর রহমানের আদালতে (সিআর-৫৫৮/২৪) বিজয়সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ভ্রূণ হত্যা মামলা দায়ের করেন ওই তরুণী। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়নের হোসেন আহম্মদের ছেলে সুমন মিয়া (৪৫), রুহুল আমিনের ছেলে আনোয়ার হোসেন রনি (২২), আহম্মদ করিমের ছেলে মাহমুদুল করিম তুহিন (২১) এবং মো. লিটনের ছেলে মাহাদী (২২)। এ মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ফেনী মডেল থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।  বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন শিমুল জানান, মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ফেনী মডেল থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ফেনী মডেল থানার এসআই ইমরান হোসেন বলেন, মঙ্গলবার রাতে ছাত্রলীগ নেতা বিজয়কে সোনাগাজী থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ধর্ষণ ও ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে ফেনী আদালতে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বুধবার (৮ মে) আদালতের আদেশে তাকে ফেনী কারাগারে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ এপ্রিল দুপুরের দিকে এক তরুণী তার বান্ধবীসহ ঢাকা থেকে সোনাগাজীর চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদে এসে, ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বিজয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সহযোগিতা চান। এ সময় ওই তরুণী নিজেকে অন্তঃসত্ত্বা বলে দাবি করেন। পরে তার কথামতো ইউপি চেয়ারম্যান গ্রাম পুলিশ সদস্যের সঙ্গে ওই তরুণীকে বিজয়ের বাড়িতে পাঠায়। গ্রাম পুলিশ সদস্যদের ঘরের বাইরে অপেক্ষা করতে বলে বিজয় ওই তরুণী ও তার বান্ধবীকে নিয়ে বাড়ির পেছন দিক দিয়ে পালিয়ে যায়। মামলার বাদী সাদিয়া খান আদরী ওরফে সিমরান সাদিয়া জানান, কক্সবাজারে শুটিং করতে গিয়ে আট মাস আগে বিজয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। সেখান থেকে প্রেমের সম্পর্ক এবং বিজয় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফেনীতে এসে তার বোনের বাসায় বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তার পরিবারসহ সবাই জানে বিজয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বিজয়কে বিয়ের কথা বললে কালক্ষেপণ করতে থাকে এবং সব মোবাইল নম্বর ব্লক করে দেওয়ার পর বিষয়টি সবার নজরে আনেন।
০৮ মে, ২০২৪

ভোট দেওয়ার ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করলেন ছাত্রলীগ নেতা
গোপন কক্ষে নিজের ভোট দিয়ে সেই ভিডিও এবং ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাফিউল করীম রাব্বি। বুধবার (৮ মে) সকাল ১১টার দিকে জামালপুর পৌর শহরের জরিনা মিয়ার উদ্দিন ও জগবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন তিনি। স্থানীয় এক ভোটার বলেন, ছাত্রলীগ নেতা রাব্বি দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি ইভিএম মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ দেওয়ার ভিডিও করেন। পরে সেই ভিডিও এবং ছবি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন। এ বিষয়ে রাব্বি বলেন, আইডিটা আমার এডমিন চালায়। সে ভুলবশত ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে। আমি দেখার পর ভিডিওটা সরিয়ে নিয়েছি। জরিনা মিয়ার উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, গোপন কক্ষের মধ্যে ফোন নিয়ে যাওয়া ও ছবি তোলা আইন বিরোধী কাজ। বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। খোঁজ নিয়ে দেখছি। এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ শানিয়াজ্জামান তালুকদার বলেন, ভোট কেন্দ্রের গোপন বুথে প্রকাশ্যে ভোট দেয়ার ছবি তোলা বেআইনি। এ বিষয়ে কেউ আমাদের অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
০৮ মে, ২০২৪

টেকনাফে বন্ধুর হাতে খুন ছাত্রলীগ নেতা
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের এক নেতাকে ছুরিকাঘাতে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত সোমবার বিকেলে বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই ছাত্রলীগ নেতার ভাই আহত হয়েছেন। নিহত রাকিব শাহরিয়ার মুরাদ (২১) বাহারছড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তার বাবা মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বাহারছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। এ ঘটনায় গুরুতর আহত আব্দুল্লাহ আল মামুনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মুরাদের চাচা মোহাম্মদ আরিফ বলেন, শামলাপুর এলাকার রফিক ও আদিল পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মুরাদকে বাজারে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাত ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় ভাইকে বাঁচাতে গেলে মামুনকেও কুপিয়ে আহত করা হয়। তিনি জানান, কোনো একটি বিষয় তাদের মধ্যে ঝামেলা ছিল। মীমাংসার কথা বলে মামুনকে বাজারে ডেকে নেয় তারা। সেখানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাশের একটি কর্মকারের দোকান থেকে ধারালো দা নিয়ে মুরাদকে কোপায় তারা। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন আগে রফিক দাবি করেন মুরাদের মোবাইলে তার একটি গোপন ছবি আছে। এটি নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। সোমবার বিষয়টি মীমাংসা হওয়ার কথা ছিল। এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, মুরাদ ও রফিক দুই বন্ধু। ছবি আদান-প্রদানকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। রফিকের ছুরিকাঘাতে নিহত হন মুরাদ। লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০৮ মে, ২০২৪

ছাত্র না হয়েও ছাত্রলীগ নেতা থাকেন ঢাবির হলে, করেন ইন্টারনেট ব্যবসাও
ছাত্র না হয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টারদা সূর্যসেন হলে দীর্ঘদিন ধরে থাকার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ-সম্পাদক সাব্বির আহমেদ সিফাতের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, অবৈধভাবে শুধু হলে থাকাই নয়, বরং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সাবেক এ শিক্ষার্থী হলটিতে করেন ইন্টারনেট ব্যবসাও। জানা গেছে, সাব্বির জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের আশ্রয়ে হলটিতে থাকেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা বলছেন, সাব্বির সূর্যসেন হলের ৩৪৩ নম্বর কক্ষে থাকেন। হলটির শিক্ষার্থীদের জন্য কিছুদিন আগে ‘গ্রিন অনলাইন জোন’ নামক এক কোম্পানি থেকে ইন্টারনেট কানেকশন নেন তিনি এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় উপ গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম। পরে জানা যায়, কোনো কোম্পানির থেকে নয়, বরং তৃতীয় পক্ষের কাছ থেকে এ কানেকশন নিয়েছেন তারা। তাদের দুইজনের সহায়তায়ই তৃতীয় পক্ষের রবিন ও নাভিদ সাচ্চু নামে দুই ব্যক্তি বিলের টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় গত মাসের বিল পরিশোধ না করায় প্রায় এক মাস ধরে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ রয়েছে হলটিতে। এ প্রসঙ্গে ঢাবির এক শিক্ষার্থী বলেন, সাব্বির ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের শেল্টারে দীর্ঘদিন ধরে দোর্দণ্ডপ্রতাপে থাকছেন সূর্যসেন হলে। শুধু তাই নয়, হলের ইন্টারনেটের ঠিকাদারিও তার হাতে। এ পর্যন্ত সবকিছু মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু গত একমাস ধরে শিক্ষার্থীদের থেকে টাকা নিয়েও হলে ইন্টারনেট কানেকশন দিচ্ছেন না। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস চলমান। এদিকে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কোনো শেষ নেই। হল প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরাও আবার অসহায়। তাদের আছে লাঞ্ছিত হওয়ার ভয়। ছাত্রলীগের হাত থেকে হলকে উদ্ধার করবে কে? জানতে চাইলে সাব্বির আহমেদ সিফাত অভিযোগ অস্বীকার করে কালবেলাকে বলেন, আমি সূর্যসেন হলে থাকিনা। ঢাকায় আমার বাসা আছে। আব্বু-আম্মু আছেন, আমি তাদের সঙ্গে থাকি। আর আমি ইন্টারনেটের ব্যবসাও করিনা। সার্বিক বিষয়ে বক্তব্য জানতে সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়া এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নকে বারবার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।
০৩ মে, ২০২৪

দুই তরুণীকে নিয়ে পালালেন ছাত্রলীগ নেতা
ফেনী সোনাগাজীর চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান বিজয়ের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে হাজির হয়েছেন ঢাকার এক তরুণী। ঘটনা জানাজানি হলে ছাত্রলীগ নেতা বিজয় সেই তরুণী ও তার বান্ধবীকে নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন। রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ওলামা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।  এ দিন সন্ধ্যায় সংগঠনবহির্ভূত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগ।  জানা গেছে, রোববার দুপুরের দিকে এক তরুণী বান্ধবীসহ ঢাকা থেকে সোনাগাজী চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদে এসে চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সহযোগিতা চান। ওই তরুণী নিজেকে অন্তঃসত্ত্বা বলে দাবি করেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রামপুলিশ সদস্যের সঙ্গে ওই তরুণীকে ইউনিয়নের ওলামা বাজার এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা বিজয়ের বাড়িতে পাঠায়। গ্রামপুলিশ সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা বিজয়ের বাড়িতে পৌঁছালে সে আমাদের অপেক্ষা করতে বলে তরুণী ও সঙ্গে থাকা মেয়েকে ঘরে নিয়ে যায়। ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসী ও সাংবাদিকরা বিজয়ের বাড়িতে ভিড় করে। সে ঘরের দরজা খুলে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে পরে কথা বলবে বলে জানায়। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর জানতে পারি বিজয় ওই দুই তরুণীকে নিয়ে বাড়ির পেছন দিক দিয়ে পালিয়েছে। চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন বলেন, দুপুরের দিকে এক তরুণীসহ দুজন ইউনিয়ন পরিষদে এসে ছাত্রলীগ নেতা বিজয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানায়। তখন তারা বিজয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা চান। আমি গ্রামপুলিশ সদস্যদের সঙ্গে দিয়ে তাদেরকে বিজয়ের বাড়িতে পাঠাই। গ্রাম পুলিশ সদস্যরা বাইরে অপেক্ষা করার সময় বিজয় তরুণী ও তার বান্ধবীকে নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে জানতে পারি। উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন সাইমুন বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বিষয়ে জানতে চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি বিজয়ের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।  সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদ্বীপ রায় বলেন, ঘটনাটি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তবে থানায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

গরু চোরাচালানে জড়িত ছাত্রলীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধি
পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্ত দিয়ে নিয়মিত অবৈধ পথে প্রবেশ করছে গরু। রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি এবং ব্যবসায়ীরা এসব গরু চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বলে উভিযোগ উঠেছে। আর পাহাড়ে অবস্থান করা ডাকাত দলের পাহারায় এসব গরু সীমান্ত পার করিয়ে পৌঁছে দেওয়া হয় গন্তব্যে। এতে মিলছে কাড়ি কাড়ি নগদ টাকা। ফলে চোরাচালানে যোগ দিচ্ছেন শ্রমজীবী, বেকারসহ অপরাধীরা। এসব টাকার ভাগ যাচ্ছে শৃংখলা বাহিনীর হাতেও। গরু চোরাচালানের টাকার ভাগকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি ডাকাত দলের দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে বাবা ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছে। এসব ঘটনায় পৃথক মামলা হলেও এখনো গ্রেপ্তার হয়নি কেউ। এতে একদিকে যেমন অপরাধ বাড়ছে, তেমনি সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে গরু চোরাচালান বন্ধের পাশাপাশি ডাকাত দলের সদস্যদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। নিহতরা হলেন- স্থানীয় বাসিন্দা আবু তালেব, জাফর আলম এবং তার ছেলে সেলিম। তথ্য মতে, মিয়ানমারের ওপার থেকে প্রতিদিন কয়েকশ গরু অবৈধভাবে বাংলাদেশে সরবরাহ করছে চোরাকারবারি দলের সদস্যরা। বান্দবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ফুলতলা, লেবুছড়ি, চাকঢালাসহ কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে আনা এসব গরু বুঝে দেওয়া হয় গর্জনিয়া পাহাড়ের শীর্ষ ডাকাত ও ডজন মামলার পলাতক আসামি শাহীন গ্রুপকে। শাহীনের নিজস্ব বাহিনী দিয়ে এসব গরু ফুলতলা, লেবুছড়ি হয়ে ব্যঙডেবা, থোয়াইঙ্গাকাটা, মাঝিরকাটা এবং বড়বিল হয়ে বাইশারি সীমান্ত কিংবা জোয়ারিয়ানালা পর্যন্ত গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়। আবার বাইশারী সীমান্ত দিয়ে কালিরছড়া, ঈদগাঁও পর্যন্ত পৌঁছে দিতে থোয়াইঙ্গাকাটা এলাকার শীর্ষ ডাকাত শাহীন বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড আবছার ডাকাত এবং ঈদগড়ের রুস্তম আলী ডাকাত ওরফে রুস্তম মেম্বার। পরে এসব গরু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতিটি গরুর পেছনে ৮-১০ হাজার টাকা পায় ডাকাত দল। যেখানে দিনমজুর থেকে শুরু করে শৃংখলা বাহিনীর সদস্য এবং অন্য স্তরের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, এসব গরু চোরাচালানের সঙ্গে ঢাকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি জড়িত স্থানীয় প্রভাবশালীরা। তাদের সঙ্গে জেলা থেকে নাম উঠে এসেছে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেন ও তার ভাই আব্দু শুক্কুরের।  প্রথম দিকে সাদ্দামের হয়ে মাঠে কাজ করতেন ছাত্রলীগ নেতা ইমাদ সিকদার, শাকিল আদনান, তারেক উদ্দিন মিশুক। এখন তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন সোহেল সিকদার, শাহজাহান সিরাজ শাকিল ওরফে শাকিল মেম্বার এবং ডাকাত সর্দার শাহীন। ব্যবসায়ী হিসেবে আরও যাদের নাম সামনে এসেছে তারা হলেন, কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য জসিম উদ্দিন, ১নং ওয়ার্ডের সদস্য নজরুল মেম্বার, ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য জসিম উদ্দিন, নাইক্ষ্যংছড়ি রূপনগর এলাকার বাসিন্দা ও যুবদল নেতা আনোয়ার ইসলাম রাশেল, গর্জনিয়া বাজার সমিতির সভাপতি এরশাদ উল্লাহ, ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক নেতা জহিরুল ইসলাম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াছিন আরফাত রিশাদ, মাদকের বিভিন্ন মামলার আসামি জহির উদ্দিন, মো. আলী ওরফে মাতালি, নজরুল ইসলাম (তার বিরুদ্ধে মাদক মামলাও রয়েছে)। অনুসন্ধানে আরও ওঠে আসে, সীমান্ত পারের পর পাহাড়ি যেসব পথ দিয়ে গরু পাচার করা হয় সেখানে রাত জেগে পাহারা বসিয়েছে পুলিশ। থোয়াইঙ্গাকাটা এলাকায় পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করেন কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন কৃষকদলের সভাপতি তিতারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন এবং বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম। এ ছাড়া সপ্তাহে যে দুইদিন গর্জনিয়া বাজার বসে সেদিন এসব সোর্সদের নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করেন জামায়াত নেতা বেলাল সিকদার। পুলিশের হয়ে টাকা উত্তোলন করেন সোহেল নামে আরেক যুবক। তার সঙ্গে থাকেন পুলিশ সদস্য আজমির। গেল রমজানে টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে শাহীন বাহিনীর প্রধান শাহীনের সঙ্গে তার সেকেন্ড ইন কমান্ড আবছারের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এরপর আলাদা বাহিনী গড়ে তোলে আবছার। পরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২৮ রমজান থোয়াইঙ্গাকাটা এলাকায় দুই গ্রুপের মাঝে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে আবছার বাহিনীর সদস্য আবু তালেব নিহত হন। এ ঘটনার পর আবছার ঈদগড় ও আশপাশের চিহ্নিত ডাকাতদের একত্র করে বাড়ান নিজের বাহিনীর আকার। এরপরই শাহিনী বাহিনীর ওপর প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে আবছার গ্রুপ। এরই জেরে ২১ এপ্রিল রাতে থোয়াইঙ্গাকাটা এলাকায় সশস্ত্র হামলা চালিয়ে শাহীনের বিশ্বস্ত শ্রমিক হিসেবে পরিচিত সেলিমকে কুপিয়ে হত্যা করে আবছার বাহিনী। ওই রাত ১২টার দিকে সেলিম একটি দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় মুখোশধারী ২৫-৩০ জনের গ্রুপ অতর্কিত হামলা চালিয়ে কুপিয়ে তাকে হত্যা করে। ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে পিতা জাফর আলমকে গুলি করে হত্যার পর পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। চোরাচালানে সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এসব কাজে আমি কখনো জড়িত নই। এক বছর আগে থেকে আমার নাম ব্যবহার করার বিষয়টি আমি জেনেছি। সে সময় কেউ আমার নাম ব্যবহার করে থাকলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে আগে থেকেই বলা ছিল। সে যদি আমার ভাইও হয়ে থাকে। তার দাবি, চোরাচালানে আমার অনুসারি যাদের নাম আসছে তারা স্থানীয় এমপিরও অনুসারি। কচ্চপিয়া ইউপি সদস্য শাহজাহান সিরাজ শাকিল সিকদার ওরফে শাকিল মেম্বার ও যুবলীগ নেতা নাছির উদ্দিন সোহেল সিকদার তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, হয়তো কেউ কেউ আমাদের নাম ব্যবহার করে থাকতে পারে। অথচ আমরাই অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। গরু চোরাচালানে জড়িত নয় দাবি করলেও নিজেকে গাছ ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছেন শাকিল মেম্বার। পুলিশের অভিযান শুরুর পর মোবাইল ফোন বন্ধ রাখায় শাহীন বাহিনীর প্রধান শাহীনের এবং আবছার বাহিনীর প্রধান আবছারের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এসব ঘটনার বিষয়ে জানতে গর্জনিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি সাইফুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি অভিযানে আছেন উল্লেখ করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। রামু থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ান বলেন, বাবা-ছেলে হত্যার ঘটনায় আবছার ও জাহাঙ্গীর নামে দু'জন ডাকাতের নামে উল্লেখ করে ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত দিয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহত জাফরের ছেলে রুম্মান উল্লাহ। অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলছে। পাশাপাশি চোরাচালানিদের কাছ থেকে গরু প্রতি টাকা পাওয়ার বিষয় অস্বীকার করে ওসি বলেন, পাচারকারীদের সহযোগিতার প্রশ্নই আসে না। পুলিশের নামে কেউ টাকা নেওয়ার কথা বললে তা অপপ্রচার ছাড়া কিছু নয়। কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সীমান্তে পুলিশের কোনো কাজ নেই। তারপরও পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর অপরাধীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
২৬ এপ্রিল, ২০২৪
X