রেলের ভাড়া বৃদ্ধি সম্পূর্ণ জনস্বার্থবিরোধী : জাতীয় কমিটি
রেলের ভাড়া না বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি (এনসিপিএসআরআর)। একই সঙ্গে রেলের মতো গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও জনস্বার্থবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনটির নেতারা। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে নাগরিক সংগঠনটির সভাপতি হাজি মো. শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এই আহ্বান জানিয়েছেন।  বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ে আগামী ৪ মে ট্রেনভাড়ার ওপর থেকে রেয়াত (ছাড়) প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে ওইদিন থেকে ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ট্রেনযাত্রীদের জনপ্রতি ভাড়া দূরত্বভেদে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়ে যাবে। রেল কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত মোটেও গ্রহণযোগ্য নয় বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতারা বলেন, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। অতি সম্প্রতি দেশজুড়ে অসহনীয় তাপপ্রবাহের কারণে শ্রমজীবী ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের উপার্জন কমে গেছে। একই সঙ্গে ফসলহানি ও উৎপাদন হ্রাসের কারণে নিকট ভবিষ্যতে কৃষিপণ্যের মূল্য আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় রেলের মতো গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও জনস্বার্থবিরোধী। রেলকে রাষ্ট্রীয় সেবা সংস্থা উল্লেখ করে বিবৃতিদাতারা আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার এ ধরনের সংস্থায় ভর্তুকি দিয়ে থাকে। বাংলাদেশেও দেয়া হচ্ছে এবং প্রয়োজনে  সরকার ভর্তুকির মাত্রা আরও বাড়াতে পারে। তাই বলে ভাড়া বাড়িয়ে জনভোগান্তি সৃষ্টি মোটেও যুক্তিযুক্ত নয় বলে জাতীয় কমিটির নেতারা মন্তব্য করেন।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনার দায় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না : জাতীয় কমিটি
ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের কানাইপুরে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সংগঠনের সভাপতি হাজি মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এক বিবৃতিতে এ শোক প্রকাশ করেন। মঙ্গলবার সকালে বাস ও পিকআপভ্যানের মুখোমুখি এ সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত হয়েছেন।  বিবৃতিতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়, ট্রাক-পিকআপসহ পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাসত্ত্বেও দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটি প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রায় ২৫-৩০ জন যাত্রী নিয়ে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে ঢাকায় আসছিল। নিহত সবাই পিকআপের যাত্রী ছিলেন। সুতরাং পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও নিয়ন্ত্রকসংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির দায় এড়াতে পারে না। নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতারা নিহত পরিবারগুলোকে উপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ ও চিকিৎসা শেষে পুনর্বাসনের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। এ ছাড়া বিবৃতিতে নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা, শোকসন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়। ফরিদপুরে বাস ও পিকআপভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ১৪ জনের স্বজনদের পাঁচ লাখ ও আহতদের তিন লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া মরদেহ দাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা এবং আহতদের ১০ হাজার টাকা তাৎক্ষণিকভাবে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ফরিদপুর জেলা প্রশাসক। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১১টায় কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার। তিনি বলেন, সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুর শহরতলীর কানাইপুরের দ্বীপনগর এলাকায় বাস ও পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত এবং দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন। জেলা প্রশাসক বলেন, দুর্ঘটনা নিহতদের স্বজনদের ৫ লাখ, আহতদের ৩ লাখ এবং মরদেহ দাফনের জন্য ২০ হাজার ও আহতদের ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এর আগে সকালে ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে উত্তরা ইউনিক পরিবহনের একটি বাস মাগুরা যাচ্ছিল। পথে ফরিদপুরের কানাইপুরের দ্বীপনগর এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা পিকআপভ্যানের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ হয়। এতে দুমড়েমুচড়ে যায় পিকআপভ্যানটি। ঘটনাস্থলে পিকআপভ্যানের চালকসহ ১৩ যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হন দুজন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

ঢাকা-ভাঙ্গা ট্রেনভাড়া ৪০ শতাংশ কমানোর দাবি জাতীয় কমিটির
ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল উদ্বোধনের ফলে রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি। তবে ঢাকা-ভাঙ্গা প্রস্তাবিত ট্রেনভাড়া অন্তত ৪০ শতাংশ কমানোর দাবিও জানিয়েছে নাগরিক সংগঠনটি।  মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি হাজি মো. শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এই দাবি জানান। বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা-ভাঙ্গা প্রস্তাবিত ট্রেনভাড়া বিদ্যমান বাসভাড়ার চেয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি। ফলে সাধারণ যাত্রীরা ব্যয় সংকোচনের জন্য বাসকেই প্রাধান্য দেবে এবং প্রত্যাশার তুলনায় ট্রেনযাত্রী অনেক কম হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-যশোর ১৭২ কিলোমিটার রেলপথের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করেন। ১ নভেম্বর থেকে এ পথে শুরু হবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল। রেলকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সেবা সংস্থা উল্লেখ করে জাতীয় কমিটির নেতারা বলেন, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ট্রেন সেবার মান বৃদ্ধি ও জনগণের ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য এ খাতে ভর্তুকি দিয়ে থাকে। প্রয়োজন হলে সরকার ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথেও ভর্তুকি দিয়ে কম ভাড়া নির্ধারণ করবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।   বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ের এ সংক্রান্ত কমিটি ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথের জন্য আন্তনগর ট্রেনে (নন-এসি) জনপ্রতি ৩৫০ টাকা এবং এসি চেয়ারে ৬৬৭ টাকা ভাড়া প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবটি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। তবে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত নন-এসি ও এসি বাসের ভাড়া জনপ্রতি যথাক্রমে ২৫০ টাকা ও ৫০০ টাকা।
১০ অক্টোবর, ২০২৩

যশোরে অপরিকল্পিত ৯ সেতু নির্মাণ বন্ধের দাবি
যশোর জেলার বিভিন্ন এলাকায় ভৈরব ও চিত্রাসহ ছয়টি নদীর ওপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ৯টি অপরিকল্পিত সেতু নির্মাণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি।  বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি হাজি মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে নির্মাণকাজ অবিলম্বে স্থগিত করে বিশেষজ্ঞসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মতামত নিয়ে নতুন করে প্রকল্প চূড়ান্ত করার দাবি জানান তারা।  বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) মতামত উপেক্ষা করে সেতুগুলোর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে এসব নদীর ওপর দিয়ে নৌযান চলাচল করতে পারবে না এবং নিকট ভবিষ্যতে নদীগুলো শুকিয়ে পরিত্যক্ত হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় বিবৃতিতে।  ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (ডব্লিউবিবিপি) আওতায় এলজিইডি ৯টি সেতু নির্মাণ করছে। এগুলোর মধ্যে মনিরামপুরে টেকা নদীর ওপর একটি, মুক্তেশ্বরী নদীর ওপর দেড় কিলোমিটারের ব্যবধানে দুটি, শ্রী নদীর ওপর একটি, হরিহর নদের ওপর দুটি, সদর উপজেলার ভৈরব নদের ওপর একটি এবং বাঘারপাড়ার ভৈরব ও চিত্রা নদীর ওপর দুটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে।   নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতারা অভিযোগ করেন, নদ-নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য বিআইডব্লিউটিএর ছাড়পত্র নেয়ার বিধান থাকলেও এলজিইডি তা নেয়নি। উচ্চ আদালতের রায়ে সকল নদীর আইনগত অভিভাবক হিসেবে স্বীকৃত জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের পরামর্শও নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তারা।   বিবৃতিতে বলা হয়, পানির ওপরিভাগ থেকে এসব সেতুর গার্ডারের নিচ পর্যন্ত উচ্চতা হওয়ার কথা নদীভেদে ১৬ ফুট থেকে ২৫ ফুট। কিন্তু নির্মাণাধীন সেতুগুলোর উচ্চতা সর্বনিম্ন ৪ দশমিক ৫৯ ফুট ও সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৫০ ফুট।  এলজিইডির এ ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা জনস্বার্থপরিপন্থি উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে নদীমাতৃক বাংলাদেশের সকল নদী রক্ষার জন্য সরকারকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরিবেশবান্ধব প্রধানমন্ত্রী নিজেও নদ-নদী রক্ষার ব্যাপারে আন্তরিক এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হয়েও এলজিইডি সর্বোচ্চ আদালত ও সরকারপ্রধানের আদেশ লঙ্ঘন করছে।
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X