জাবি থেকে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জিসান আহমেদ নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (৬ মে) সকাল ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন বাগান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত জিসান আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হলের হল অ্যাটেন্ডেট নজরুল ইসলামের ছেলে। তিনি শেরপুর জেলার সদর থানার বাসিন্দা। জানা গেছে, সকালে জিসানকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান পথচারীরা। পরে আশুলিয়া থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। জিসান পরিবারের সঙ্গে ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী কলাবাগান এলাকায় আনসার ক্যাম্পের পাশে বসবাস করতেন। জিসানের বড় ভাই ওয়ালীউল্লাহ কালবেলাকে বলেন, গতকাল দুপুর থেকে সারা দিন বাড়িতে ছিল না জিসান। রাতে বাড়িতে ফিরলে মা তাকে এতক্ষণ কোথায় ছিল এটা বলে রাগারাগি করে ও গরুকে পানি খাওয়ানো হয়নি কেন এসব নিয়েও বকা দেয়। তখন সে আবার রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে যায়। পরে রাত ৮টার সময় আমার কাছে ফোন দিয়ে সে ক্ষমা চায়। আমরা মনে করেছিলাম সে আবার ফিরে আসবে কিন্তু সে যে এমন করবে আমরা বুঝতে পারিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, আমি নিরাপত্তা শাখার অধীনে থাকা আনসার ক্যাম্প থেকে জানতে পারি ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় একটি ঝুলন্ত মরদেহের খোঁজ মিলেছে। পরে আমি আশুলিয়া থানা পুলিশকে জানাই। আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জি এম আসলামুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, আমরা সকালে এসে মরদেহটি উদ্ধার করেছি। নিহতের পরিবার মরদেহের ময়নাতদন্ত করতে রাজি হয়নি। এখন আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।
০৬ মে, ২০২৪

যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলায় জাবি শিক্ষক করলেন মামলা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজু সাহার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। নিজ বিভাগের সাবেক এক ছাত্রী এ অভিযোগ তুলেছেন। গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেলে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। এ ঘটনায় উল্টো ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ তুলে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) কোর্টে মামলা করেছেন সাজু সাহা। এর আগে তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলা হলে ওই শিক্ষার্থীর নামে মিরপুর মডেল থানায় তিনি সাধারণ ডায়েরিও করেন। জানা গেছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার মৃত্যুর খবর শেয়ার করে জাবিতে নিজ বিভাগের শিক্ষকের দ্বারা নিগৃহীত হওয়ার অভিযোগ তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের (৪৬তম আবর্তন) ওই শিক্ষার্থী। গত ২৩ মার্চ নিজের ফেসবুক আইডি থেকে করা এক পোস্টে তিনি মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজু সাহার দ্বারা যৌন হেনস্তা ও পরীক্ষায় নম্বর কম দেওয়ার দাবি করেন। এরপর গতকাল তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলে অভিযোগ করেন। ওই শিক্ষার্থী কালবেলাকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে তাকেই বিশ্বাস করতাম। এর পেছনে কারণও ছিল। বিভাগের শিক্ষার্থীদের দ্বারা বুলিংয়ের শিকার হলে ওই শিক্ষকই এগিয়ে এসেছিলেন। এরপর তার পরামর্শেই আমি কাউন্সেলিং করিয়েছি। কিন্তু তার দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হব, কল্পনাতেও ছিল না। তিনি জানান, ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পর তার কমেন্টের সূত্রে আমাদের প্রথম কথা হয়। এরপর তিনি ফেসবুকে যুক্ত হন এবং তখন থেকে ফ্যাশন নিয়ে আমাদের বেশ কথা হতো। তিনি আমাকে ফ্যাশনের পাশাপাশি বিদেশে উচ্চশিক্ষা বিষয়ে পরামর্শ দিতেন। রংপুরে থাকা অবস্থায় বারবার জিজ্ঞেস করতেন কবে ঢাকায় আসব, যাতে তিনি বিদেশে উচ্চশিক্ষা বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন। বিষয়টিকে আমি স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছিলাম। ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, বিদেশে উচ্চশিক্ষা বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নও করতাম। তিনি চ্যাটে সেগুলোর জবাব দিতেন এবং বেশি প্রশ্ন থাকলে দেখা করতে বলতেন। কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি সব মেসেজ মুছে দেন। জানতে চাইলে বলেন, আমার সঙ্গে তার যে চ্যাট রয়েছে, এগুলো নিয়ে অনেকে সমস্যা তৈরি করতে পারে। তিনি চান না তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নষ্ট হোক। ২০২১ সালের এপ্রিল বা মে মাসের দিকে সাজু সাহা আমাকে সরাসরি দেখা করতে বলেন। তিনি জানান, আমার সহযোগিতা তার খুব দরকার। এরপর এক বড় ভাইকে সঙ্গে নিয়ে একটি ক্যাফেতে তার সঙ্গে দেখা করি। এরপর তিনি আমাকে নিয়ে যান সদরঘাটে। সেখানে নৌকায় বসা অবস্থায় তিনি বিইউপি থেকে কেন চলে এলেন তা জানান। আমার বয়ফ্রেন্ড আছে কি না, তা-ও জানতে চান। এরপর আমি রংপুর চলে যাই। ঢাকায় ফিরলে তিনি আবার সহযোগিতা চান এবং দেখা করতে বলেন। তার পাঠানো ঠিকানায় পুরান ঢাকার একটি ক্যাফেতে দেখা করি। রিকশায় তার সঙ্গে ক্যাফের দিকে যাওয়ার সময় তিনি প্রথমবারের মতো আমাকে ‘ইন্টারকোর্স’ করার প্রস্তাব দেন এবং আমি রাজি থাকলে বিদেশে উচ্চশিক্ষাসহ সবকিছুতে আমাকে সহযোগিতা করবেন বলেও জানান। ক্যাফেতে গিয়ে তিনি আমার হাত চেপে ধরেন। শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য পা পর্যন্ত ধরতে চেয়েছিলেন। এ সময় আমি বাসায় যাব বলে উঠে পড়ি। ঢাকায় কিছুই চিনি না তখনো। যে কারণে বাসায় ফেরার জন্য তার সঙ্গেই রিকশায় উঠতে হয়। তখন তিনি জোর করে আমাকে স্পর্শ করেন। আমি কান্না শুরু করলে তিনি বলেন, আমি ভেবেছিলাম, তুমি ‘ফ্রি সেক্স’ বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে নেবে। কিন্তু আমি ভুল ছিলাম। এক পর্যায়ে তিনি কাঁটাবনে নেমে যান। এই ঘটনার পরও তিনি একাধিকবার দেখা করতে চেয়েছেন। কিন্তু আমি একা দেখা করতে পারব না বলে জানিয়ে দিয়েছি। আমি ভেঙে পড়েছিলাম, ঠিকমতো ক্লাস করতে পারিনি। ওই শিক্ষার্থী বলেন, উনার (শিক্ষকের) খুবই আত্মবিশ্বাস আমি কিছু প্রমাণ করতে পারব না। কারণ, উনি কোনো প্রমাণ রাখেননি। সব মেসেজ মুছে দিয়েছেন। তবে আমার কাছে যেটুকু তথ্য আছে, তা উনার দোষ প্রমাণে যথেষ্ট। এতকিছুর পরও তিনি অনুতপ্ত হননি। বিভাগে এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছিল, যেগুলোর বিচার হয়নি। সে কারণে অভিযোগ করতে ভয় পেয়েছিলাম। তার ওপর বিভাগের পড়াশোনার ক্ষতি হবে। পড়াশোনা শেষ করাটা জরুরি মনে হয়েছিল। এখন মনে হচ্ছে, অভিযোগটা করা দরকার। তাই যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলে অভিযোগ দিয়েছি। জাবির যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের সভাপতি অধ্যাপক জেবউননেসা কালবেলাকে বলেন, ইমেইলে একটি অভিযোগ এসেছে। কিন্তু লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগের মেরিট অনুযায়ী আমরা তদন্ত করে দেখব। অভিযুক্ত সাজু সাজার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। শুধু বলেছেন, ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে তিনি মামলা করেছেন। তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ঢালী কালবেলাকে বলেন, সাজু সাহাকে ফাঁসানো হয়েছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই এটি করা হয়েছে। নইলে ২০২২ সালের ঘটনা নিয়ে এখন কেন অভিযোগ দেওয়া হবে। তাই তিনি মানহানির মামলা করেছেন। মামলা নম্বর ১৪৩/২৪।
০২ এপ্রিল, ২০২৪

জাবি ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে মাভাবিপ্রবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগ ওঠেছে। রোববার (৩১ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে তাকে মারধর করা হয় বলে জানান ভুক্তভোগী। পরে প্রধান ফটকে (ডেইরি গেইট) এনে আরেক দফা পেটানো হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী লিটন মাহমুদ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে অভিযুক্ত আলী আক্কাস আকাশ ওরফে আকাশ তুহিন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী এবং সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী। অভিযোগপত্রে বলা হয়, আমি এবং আকাশ একসঙ্গে শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে মাল্টিমিডিয়া ডিজাইন কোর্সে প্রশিক্ষণ করছি। রোববার টি-শার্ট বিতরণ নিয়ে আকাশের সঙ্গে আমার বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে আমাকে ক্লাসের ভেতর হেনস্তা করে আকাশ। এমনকি নিজেকে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের ছোটভাই পরিচয় দিয়ে মারধর করতে উদ্যত হন। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে আসে। এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের গেইটে নিয়ে মারধর করে তারা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে (ডেইরি গেইট) এনে আরেক দফা হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া আকাশের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়। এমনকি জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লিটনের প্রভাব দেখিয়ে ভুক্তভোগীকে হলে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়।  এ সময় অভিযুক্তরা বলতে থাকেন, ‘লিটন ভাই ব্যাক করেছে, এখন দেখি আমাদেরকে কে কী করতে পারে।’ ভুক্তভোগী লিটন মাহমুদ বলেন, ‘আকাশের সঙ্গে সামান্য একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। পরে সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের বন্ধুদের নিয়ে এসে আমাকে মারধর করে। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের ক্ষমতা দেখিয়ে আমার কান ও মাথায় আঘাত করে। আমি রোজা রেখেছিলাম, তাদেরকে বারবার আমি সেটা বলেছি। তারপরও আমাকে তারা মারধর করেছে।’ তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আলী আক্কাস আকাশ ওরফে আকাশ তুহিন বলেন, ‘বাজার করে একটু দেরিতে ফেরায় লিটন আমাদের টি-শার্ট দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তাই একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। পরবর্তীতে সে আমার দিকে তেড়ে আসে। এ সময় দায়িত্বরত শিক্ষকদের উপস্থিতিতে বিষয়টি মিমাংসা হয়। তবে মারধরের মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।’ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবির বলেন, ‘ভুক্তভোগীর অভিযোগপত্র পেয়েছি। কিন্তু বিষয়টি ক্যাম্পাসের বাইরে ঘটায় আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছি না। কারণ শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় এ ঘটনা ঘটেছে।’  
০১ এপ্রিল, ২০২৪

যৌন হয়রানির অভিযোগ, ছাত্রীর বিরুদ্ধে জাবি শিক্ষকের মামলা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজু সাহার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করেছেন বিভাগের এক সাবেক নারী শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত শিক্ষক পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ৫০ লাখ টাকার মানহানির মামলা করেছেন। সোমবার (১ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল বরাবর পাঠানো এক মেইলে অভিযোগপত্রটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেলের প্রধান অধ্যাপক জেবউননেছা। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে যৌন হয়রানি অভিযোগ করে বলেন, ‘সহকারী অধ্যাপক সাজু সাহা আমাকে কাউন্সিলিং করানোর নামে যৌন হয়রানি করেছেন। তিনি আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য রেস্টুরেন্টে পা পর্যন্ত ধরতে চেয়েছিলেন। এসব অত্যাচারে কারণে আমি ঠিকমতো ক্লাস পর্যন্ত করতে পারিনি।’ অভিযোগকারী শিক্ষার্থী বলেন, সাজু সাহার জন্য আমি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করতে পারিনি। অন্যসব বিষয়ের চেয়ে ওনার বিরক্ত করা ছিল অন্যতম প্রধান কারন। স্নাতকের শেষ সেমিস্টার থেকেই আমাকে হয়রানি শুরু করে। যে কারণে শেষ সেমিস্টারে আমার ফলাফলও ভালো হয়নি। আমার কাছে সব তথ্য-প্রমাণ আছে। সময়মতো আমি সব উপস্থাপন করব। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৩ মার্চ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে  মার্কেটিং বিভাগের বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজু সাহার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনার পর দিন (২৪ মার্চ) ওই শিক্ষার্থীর নামে মিরপুর মডেল থানায় গত সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন এ শিক্ষক। একপর্যায়ে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও মানহানিকর তথ্য’ প্রচার করায় নিজে বাদী হয়ে ৫০ লাখ টাকার মানহানীর মামলা মামলা দায়ের করেন সহকারী অধ্যাপক সাজু সাহা।  এদিকে ছাত্রীর অভিযোগ অস্বীকার করে মামলার বিষয়ে সাজু সাহা বলেন, অভিযোগকারী সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য প্রচার করে আমার মানহানি করেছে। আমি তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং প্রক্টর বরাবর অভিযোগ করেছি। এর আগে থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছিলাম। কিন্তু সে আমার মানহানি করেই যাচ্ছে তাই আদালতে মামলা করেছি। প্রথমে দারুস সালাম থানায় মামলা করতে গেলে সেখান থেকে তারা আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়।  এ বিষয়ে মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফুল হক বলেন, নিপীড়নবিরোধী সেলে পাঠানো অভিযোগপত্রটি আমিও পেয়েছি। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হোক। তাকে অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হবে কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরবর্তীতে বিভাগীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
০১ এপ্রিল, ২০২৪

বাস আটকে জাবি ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি
বাস ভাড়া বেশি চাওয়ায় বাস আটকে ৩৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের কয়েক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। সোমবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি গেটে এ ঘটনা ঘটে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে বাসের টিকিট কাটতে নবীনগর গিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী সজীব মন্ডল। গাইবান্ধা রুটে চলাচলকারী আলহামরা পরিবহন সাধারণ সময়ের তুলনায় ভাড়া বেশি চাইলে প্রতিবাদ করেন তিনি। এ সময় বিষয়টি নিয়ে সেখানে বাগবিতণ্ডা হয়। এ ঘটনা সজীব বিষয়টি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের বন্ধুদের জানালে হলের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আলহামরা পরিবহনের একটি বাস আটক করে। পরে অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়ার বিষয়টি পাশ কাটিয়ে মারধরের অভিযোগ তুলে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা বাস কোম্পানির কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা চাঁদা নিয়ে বাস ছেড়ে দেন। ঘটনাস্থলে থাকা ছাত্রলীগের একটি অংশ জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মাজেদুল ইসলাম সজীব, মাহমুদ আল গাজ্জালী, মো. হাসান মাহমুদ ফরিদ ও উপ কর্মসংস্থান সম্পাদক নাহিদ ফয়সালকে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে দেখেছেন। টাকা নেওয়ার ঘটনা ঘটলে তারাই সেটি নিয়েছেন। ইংরেজি বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী সজীব মন্ডল বলেন, গাইবান্ধায় গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য ৩ এপ্রিলের বাসের টিকিট কাটতে তিনি নবীনগরের আলহামরা পরিবহনের কাউন্টারে যান। ওই কোম্পানির ৮০০, এক হাজার এবং ১২শ টাকা মানের তিন ধরনের এসি বাস ঢাকা-গাইবান্ধা রুটে চলাচল করে। এরমধ্যে সজীব এক হাজার টাকার ইকোনমি ক্লাসের বাসের টিকিট চাইলে কাউন্টার মাস্টার জানান ওই টিকিটের দাম বেড়ে দুই হাজার টাকা হয়েছে। এ সময় তিনি ভাড়ার তালিকা দেখতে চান। একপর্যায়ে তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ক্যামেরায় ঘটনা ভিডিও করতে শুরু করেন। সজীব জানান, ভিডিও শুরুর পর কাউন্টার মাস্টার ভিডিও বন্ধ করতে বলেন এবং তাকে ভেতরে গিয়ে সব দেখতে বলেন যে কোম্পানির দেওয়া টিকিটের দুই হাজার টাকা। এ নিয়ে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে আমাকে মারধর করা হয়। ঘটনাটি জানালে হল থেকে শিক্ষার্থীরা যেয়ে বাস আটক করে। কিন্তু চাঁদা নেওয়ার বিষয়টি আমি জানি না। আলহামরা পরিবহনের নবীনগর কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা জানান, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ঢাকা-গাইবান্ধা রুটের এসি বাসের টিকিট কাটতে আসেন। ওই রুটের ইকোনমি ক্লাস বাসের টিকিটের দাম স্বাভাবিক সময়ে এক হাজার টাকা থাকলেও ঈদে কোম্পানির পক্ষ থেকে তা বাড়িয়ে দুই হাজার টাকা করা হয়। বেশি ভাড়ার কথা শুনে ওই শিক্ষার্থী টিকিটের দাম কমাতে বলে। কিন্তু কোম্পানি থেকে টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া তাই দাম কমানোর সাধ্য নেই বলে জানাই। কোম্পানি যে রেট দেয় আমাকে ওই রেটে বিক্রি করতে হয়।’  পরে ওই শিক্ষার্থী চলে যান বলে জানান আলহামরা পরিবহনের নবীনগর কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা। সেখানে কোনো মারামারি বা হেনস্তার ঘটনা ঘটেনি। টিকিটের দাম কমানো নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়েছে বলে জানান তিনি। সাভার কাউন্টারের পরিবহন কর্মকর্তা মামুন বলেন, ‘আমাদের নবীনগর কাউন্টারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে টিকিটের দাম দিয়ে তর্কাতর্কি হয়। পরে সে সেখান থেকে চলে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস আটকায়। সন্ধ্যায় আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে আমার থেকে এক লাখ টাকা দাবি করা হয়, না হলে বাসে আগুন দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয়। পরে ৩৫ হাজার টাকায় সমাধান হয়। আমি টাকা পকেট থেকে বের করার পরই তা নিয়ে নেন ছাত্রলীগের নেতা নাহিদ।’ ওই নেতাকে আগে থেকে চিনতেন কি না জানতে চাইল মামুন বলেন, শুরু থেকেই তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, টাকা দাবি করেছেন। তখন তার নাম শুনেছি। যে হলের ছাত্রের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে তিনিও ওই হলের ছাত্র।’ তবে ছাত্রলীগের উপ কর্মসংস্থান সম্পাদক নাহিদ ফয়সাল টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘ইফতারের পর সোহেল ভাইসহ আমরা ডেইরি গেটে চা খাচ্ছিলাম। তখন একজন বাস আটকানো সম্পর্কে জানালে সোহেল ভাই আমার সিনিয়রদের বাস ছাড়ার বিষয়টি বললে তারা বাস ছেড়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। যদি কেউ চাঁদাবাজ প্রমাণ করতে পারে তাহলে আর রাজনীতি করব না।’ যদিও ঘটনার সময় ডেইরি গেটে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল উপস্থিত ছিলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, বাসের মালিক পক্ষ প্রথমে সভাপতির কাছে আসলে তিনি ঘটনার কোনো সুরাহা করতে পারবেন না বলে জানান এবং যারা বাস আটক করেছে তাদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। পরে টাকার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আক্তারুজ্জামান সোহেল বলেন, এখানে চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেছিল কি না জানি না। তবুও যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকে তদন্ত করে সাত দিনের মধ্যে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়টির প্রতিবাদ করা অবশ্যই যৌক্তিক। সেক্ষেত্রে বাস আটকে মালিকপক্ষকে ডেকে ভাড়া কমানোর জন্য আলোচনা বা চাপ দেওয়া যেত। কিন্তু তা না করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে বাস আটকে টাকা নেওয়া উল্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন করে। এতে ভাড়া কমবে না, বরং সব শিক্ষার্থীকে এর খেসারত দিতে হবে।
২৬ মার্চ, ২০২৪

আন্দোলনের মুখে জাবি প্রক্টরের পদত্যাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রলীগ নেতা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চলমান আন্দোলনের মুখে প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। ঘটনায় প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানের দায় আছে উল্লেখ করে তার পদত্যাগ দাবি করে আসছিল নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ। সেই আন্দোলনের মধ্যেই গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত আদেশে তার পদত্যাগের তথ্য জানানো হয়। ফিরোজ উল হাসানের স্থলে পরিসংখ্যান ও উপাত্ত বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং শহীদ তাজউদ্দীন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবীরকে সাময়িকভাবে প্রক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবরোধসহ লাগাতার আন্দোলনের এক পর্যায়ে বুধবার উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম আন্দোলনকারীদের প্রক্টরের পদত্যাগের ব্যাপারে আশ্বাস দেন। সে সময় তিনি জানান, ১৮ মার্চের মধ্যে প্রক্টর স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন অথবা উপাচার্য তার ক্ষমতাবলে তাকে অব্যাহতি দেবেন। ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে হলসংলগ্ন জঙ্গলে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে জড়িত ও সহায়তাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত, প্রক্টরের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। 
১৯ মার্চ, ২০২৪

শত বাধা পেরিয়ে জাবি বাস্কেটবল দলের অভাবনীয় সাফল্য
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) জিমনেসিয়ামে বাস্কেটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করার মতো কোর্ট নেই। তবে অনুশীলনের জন্য যে কোর্ট রয়েছে তার রঙ উঠে যাওয়ায় লাইনগুলো বোঝা যায় না। বৃষ্টি হলেই জিমনেসিয়ামের ছাদ থেকে পানি পড়ে। একমাত্র ব্যায়ামাগারেরও শোচনীয় অবস্থা। খেলোয়াড়রা পান না তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা। এসব সমস্যাও বিশ্ববিদ্যালয় বাস্কেটবল দলের সাফল্যের পথে কাঁটা হয়ে উঠতে পারেনি। বছরের পর বছর সাফল্য নিয়ে আসছে বাস্কেটবল দলটি। গত ১০-১৩ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বাস্কেটবল প্রতিযোগিতা ২০২৪ এ ব্রোঞ্জ পদক জয় করেছে জাবি বাস্কেটবল দল। এর আগে ২০১৯ সালে ‘বঙ্গবন্ধু ইন্টার-ইউনিভার্সিটি স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ’ এ স্বর্ণ জয়ের গৌরব অর্জন করে জাবি বাস্কেটবল দল। একই বছর আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বাস্কেটবল প্রতিযোগিতায় রানারআপ, ‘বঙ্গবন্ধু ইন্টার-ইউনিভার্সিটি স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২২’ এ রানারআপ হয় তারা।  জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেকারিং বাজেট হিসেবে বার্ষিক মোট ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। যার মধ্যে প্রায় ৬০ হাজার টাকা বাস্কেটবলের জন্য বরাদ্দ। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় সাফল্য পাওয়া বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটের তুলনায় যা বেশ অপ্রতুল। ফলে প্রতিযোগিতা চলাকালে খেলোয়াড়দের মানসম্মত ক্রীড়াসামগ্রী প্রদান করা সম্ভব হয় না। আবার দলের চাহিদা অনুযায়ী খেলোয়াড় কোটায় পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় না। যারা ভর্তি হন তাদেরও নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার বাধ্যবাধকতা থাকায় অনুশীলনে অতিরিক্ত সময় দিতে পারেন না। ফলে খেলোয়াড়রা অধিক সুযোগ-সুবিধার আশায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে। বাস্কেটবল দলের ফরোয়ার্ড এবং দর্শন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী শাহানুর রহমান সজিব বলেন, দলের সাফল্যের পেছনে আমাদের কোচ-ম্যানেজারের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। তবে অবকাঠামোগত দুর্বলতা থাকায় আমাদের পক্ষে নিয়মিত অনুশীলন করা সম্ভব হয় না। ব্যায়ামের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও নেই। এ ছাড়া বিভাগ থেকে খেলোয়াড়দের বিশেষ কোনো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় না। অনুশীলনের কারণে নিয়মিত ক্লাসে যেতে না পারলে উপস্থিতির নম্বর কাটা হয়। যারা ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে অনুশীলন করে তাদের উপস্থিতি নম্বর ছাড়াই পরীক্ষায় বসতে হয়। এভাবে তো পাস করাই কঠিন হয়ে যায়।’ দলের কোচ এবং শারীরিক শিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক মো. আজমল আমিন টুটুল বলেন, বাস্কেটবল দল ধারাবাহিকভাবে সাফল্য পেয়ে আসছে। তবে আমাদের কোর্টের অবস্থা বেশ শোচনীয়। বৃষ্টির পানি জমে থাকে। সেভাবে সংস্কারও করা হয়নি। এ ছাড়া বিকেএসপি কোটার শর্ত থাকায় আমরা বাইরের ভালো প্লেয়ার ভর্তি করাতে পারি না। এসব বিষয় ভালোভাবে বিবেচনা করা জরুরি। এ ছাড়া খেলাধুলার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধিতে অবদান রাখা শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুরস্কৃত করা গেলে খেলোয়াড়রা আরও বেশি অনুপ্রাণিত হবে। শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক বেগম নাছরীন বলেন, বিশ্বদ্যিালয়ের বর্তমান জিমনেসিয়াম একটি পরিত্যক্ত ভবন। আন্তঃবিভাগ প্রতিযোগিতার সময় শুধু কোর্ট রং করা হয়। আর কোনো সংস্কার করা হয় না। আর ব্যায়ামাগারের যন্ত্রপাতির বিষয়টি দ্রুতই সমাধান হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন স্পোর্টস কমপ্লেক্সের কাজ চলছে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সেটি হস্তান্তর করা হলে অবকাঠামোগত সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে। আর কোটায় খেলোয়াড় ভর্তির বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা কমিটির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সার্বিক বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
১৪ মার্চ, ২০২৪

ধর্ষণকাণ্ডে ছাত্রলীগ নেতাসহ ৭ জনকে শাস্তি দিল জাবি
গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানসহ ৭ জনের শাস্তি স্থায়ী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদের মধ্যে ৫ জনকে  স্থায়ী বহিষ্কার এবং অপর দুইজনের একাডেমিক সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রোববার (১০ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।  সোমবার (১১ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মূল অভিযুক্ত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও তার সাহায্যকারী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মুরাদ হোসেনের সনদ স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়েছে।  অন্যদিকে বাকি অভিযুক্তদের সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত করা হয়েছে। এছাড়া বহিরাগত অভিযুক্ত মামুনুর রশিদ মামুনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি বহাল থাকবে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে মীর মশাররফ হোসেন হলে স্বামীকে আটকে রেখে ওই গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে। পরদিন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিন্ডিকেটে অভিযুক্তদের শাস্তির প্রস্তাব তোলা হয়।
১১ মার্চ, ২০২৪

জাবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আলিফ, সাধারণ সম্পাদক ইমন
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংসদের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। আলিফ মাহমুদকে সভাপতি ও জাহিদুল ইসলাম ইমনকে সাধারণ সম্পাদক করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ১৭ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) নবগঠিত কমিটির দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক তানজিম আহমেদের সইকৃত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এ ছাড়াও কমিটিতে সহসভাপতি হিসেবে রয়েছেন মুক্তারুল ইসলাম অর্ক, রায়হান শরীফ প্রিন্স, কাওছার আহমেদ, সহকারী সাধারণ সম্পাদক হাসিব জামান, ইসহাক সরকার, সহকারী সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আকাশ আহাম্মেদ, কোষাধ্যক্ষ কাইমুল হক,দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক তানজিম আহমেদ, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক মাঈশা নূসরাত, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সম্পাদক সাইদুল, সদস্য সাব্বির হোসেন ও ফাতেমাতুজ্জোহরা প্রমুখ।
০৮ মার্চ, ২০২৪

আন্দোলনে উত্তপ্ত জাবি
অছাত্রদের হলছাড়া করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত ‘নিপীড়নবিরোধী মঞ্চ’র ব্যানারে অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচি চলাকালে হাসিব জামানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট বলেছিল পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে অছাত্রদের বের করে দেবে; কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। রাজনৈতিক যে রুমগুলো আছে সেখানে হল প্রশাসন যাচ্ছে না। হলের যারা প্রশাসনে আছেন তাদের অনেকেই ক্যাম্পাসের বাইরে থাকেন। এভাবে তো অরাজকতা সৃষ্টি হবেই। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের এই পাঁচ দফা দাবি যৌক্তিক। দাবি না মানলে আন্দোলন চলতেই থাকবে। প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, র্যাবের ব্রিফিং থেকে জানা গেছে— বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনের পর দিন যে পাশবিক ঘটনাগুলো ঘটছিল, তা এই অছাত্ররা করছিল। প্রশাসন এর দায় এড়াতে পারে না। ‘নিপীড়নবিরোধী মঞ্চে’র নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী কনোজ কান্তি রায় বলেন, কিছু অবৈধ শিক্ষার্থী ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের ছত্রছায়ায় থেকে হলে অবস্থান করছে। ফলে বৈধ শিক্ষার্থীরা অধিকারবঞ্চিত হচ্ছে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলী, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমেনা ইসলাম, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক নূরুল ইসলাম প্রমুখ। এদিকে, ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ নতুন কলাভবনের দেয়াল থেকে বঙ্গবন্ধুর দেয়ালচিত্র মুছে ফেলার প্রতিবাদে মাঠে নেমেছে শাখা ছাত্রলীগ। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘গণস্বাক্ষর ও গণজমায়েত’ কর্মসূচি পালন করেছেন নেতাকর্মীরা। কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সদস্য সচিব অধ্যাপক বশির আহমেদ, অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবির, অধ্যাপক আব্দুল্লাহেল কাফি, সহকারী অধ্যাপক হোসনে আরা বক্তব্য দেন।
১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X