পা দিয়ে লিখেই শাহজাহানের এসএসসি জয়
কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার চর নেওয়াজি বিএল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরিক্ষায় পা দিয়ে লিখেই বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ- ৪.৫০ পেয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহজাহান। অভাব, দারিদ্র্যতা ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে প্রতিহত করে এবং দৃঢ় মনোবল ও ইচ্ছাশক্তিকে বুকে ধারণ করে শাহজাহান স্বপ্ন দেখে উচ্চশিক্ষিত হওয়ার। কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামের দরিদ্র কাঠমিস্ত্রী মো. ফরিদুল হক ও রাশেদা বেগম দম্পত্তির ঘরে জন্ম হয় শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. শাহজাহান শেখের। ছয় ভাইয়ের মধ্যে শাহজাহান তৃতীয়। জন্মের পর শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহজাহানকে নিয়ে পরিবারে চিন্তার অন্ত ছিল না। দুটি হাত থাকলেও সেই হাতে ছিল না কোনো শক্তি। তবে ছোট থেকেই শাহজাহানের খেলাধুলা ও পড়ালেখার প্রতি ছিল খুব আগ্রহ। বড় ভাই মুদি দোকানদার আশরাফের সহযোগিতায় পড়ালেখার সুযোগ হয় শাহজাহানের। অনেক দুর্গম পথ অতিক্রম করে প্রাইমারির গণ্ডি পেড়িয়ে শাহজাহান ভর্তি হয় দুই কিলোমিটার দূরের স্কুল চরনেওয়াজী বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ে। এত দূরের স্কুলে তার পক্ষে একা চলাচল করা সম্ভব ছিল না। তার বড় ভাই আশরাফ প্রতিদিন স্কুলে রেখে আসত এবং ছুটি হলে নিয়ে আসত। শাহজাহানের বাবা মো. ফরিদুল হক বলেন, আমাদের অভাবের সংসারে ছেলেদের পড়ালেখা করানোর কথা চিন্তাই করতে পারিনি। তার ওপর শাহজাহান ছিল জন্মগতভাবেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। ওর ইচ্ছা আর ওর বড় ভাইদের প্রচেষ্টায় পড়ালেখা করানো সম্ভব হয়েছে। ওর স্যাররাও অনেক সহযোগিতা করেছে। শাহজাহানের মা রাশেদা বেগম বলেন, আমার প্রতিবন্ধী ছেলেটা ছোট থেকে অনেক কষ্টে পড়ালেখা করে ভালো রেজাল্ট করেছে। ওর বাবা কাঠ মিস্তিরির কাজ করে ওকে কীভাবে পড়ালেখা করাবে তা নিয়েই চিন্তা করেছি। এ চিন্তা শাহজাহানের মাঝেও পরিলক্ষিত হচ্ছিল।  বড় হয়ে কী হতে চায় এ প্রশ্ন করলে শাহজাহান কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থেকে উত্তর দেয়, আমি প্রতিবন্ধী। বাইরে পড়ালেখা করার সামর্থ আমার নাই। দেখি কতদূর পর্যন্ত পড়ালেখা করতে পারি। চরনেওয়াজী বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিউল আলম বলেন, দুই তিন বছর আগেও এ স্কুলে প্রতিবন্ধীদের পড়ালেখার কোনো পরিবেশ ছিল না। সেই সময়ে শাহজাহান অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করেছে। তার ভাই প্রতিদিন বাইকে করে রেখে যেত আবার স্কুল ছুটি হলে নিয়ে যেত। ছেলেটা অনেক মেধাবী। স্কুল থেকে আমরা সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা দিয়েছি। পরিবার থেকে আরেকটু সুযোগ পেলে ছেলেটা হয়তো এ প্লাস পেত।
১৫ মে, ২০২৪

উদ্ভাবন  / নিজের চিকিৎসায় ক্যান্সার জয়
মস্তিষ্কের ক্যান্সারে আক্রান্ত অস্ট্রেলিয়ার এক চিকিৎসক নতুন পদ্ধতিতে নিজের চিকিৎসা করছেন। এ ক্ষেত্রে তিনি ভালো ফলও পেয়েছেন। রিচার্ড স্কোলিয়ার নামের ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, নিজের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিয়ে এক বছরের বেশি সময় ধরে তিনি ক্যান্সারমুক্ত আছেন। খবর বিবিসির। স্কোলিয়ার যে ধরনের জটিল ক্যান্সারে আক্রান্ত, তাতে রোগীরা এক বছরের কম সময়ে মারা যান। ক্যান্সার নিয়ে তারই গবেষণার ভিত্তিতে উদ্ভাবন করা একটি পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে স্কোলিয়ারের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে। অধ্যাপক স্কোলিয়ার গ্লায়োব্লাস্টোমার নামে এক ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, আবারও এমআরআই পরীক্ষায় দেখা গেছে নতুন করে টিউমারটি ফিরে আসেনি। তিনি বলেছেন, আমি অত্যন্ত খুশি। স্কোলিয়ার একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রোগতত্ত্ববিদ। ক্যান্সারের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে চলতি বছর স্কোলিয়ার এবং তার সহকর্মী ও বন্ধু জর্জিনা লংকে অস্ট্রেলিয়ান অব দ্য ইয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। তারা দুজনই অস্ট্রেলিয়ার মেলানোমা ইনস্টিটিউটের সহ-পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। এক দশক ধরে ইমিউনোথেরাপি নিয়ে গবেষণা করছেন তারা। এ পদ্ধতিতে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা (ইমিউন সিস্টেম) ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষকে আক্রমণ করা হয়। বিশ্বজুড়ে ক্যান্সারের শেষ ধাপে থাকা রোগীদের মধ্যে এ পদ্ধতি ব্যবহার করে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাওয়া গেছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের অর্ধেক এখন নিরাময় পাচ্ছেন। আগে এ হার ১০ শতাংশের কম ছিল। স্কোলিয়ারের মস্তিষ্কের ক্যান্সার সারাতে এ পদ্ধতিই ব্যবহার করেছেন অধ্যাপক লংসহ চিকিৎসকদের একটি দল। অধ্যাপক স্কোলিয়ার হলেন মস্তিষ্কের ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রথম রোগী, যার চিকিৎসায় এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, কয়েকটি ওষুধের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে ইমিউনোথেরাপি দেওয়া হলে তা অপেক্ষাকৃত ভালো কাজ করে। টিউমার অপসারণের জন্য কোনো অস্ত্রোপচারের আগে এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হয়। গত বছর স্কোলিয়ারকে অস্ত্রোপচারের আগে এ থেরাপি দেওয়া হয়। স্কোলিয়ারের চিকিৎসায় সাফল্যে আশার সঞ্চার হচ্ছে। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় তিন লাখ মানুষ মস্তিষ্কের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এ পদ্ধতি চিকিৎসায় নতুন দ্বার উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
১৫ মে, ২০২৪

গাজায় ইসরায়েলের জয় নিয়ে সংশয়ে যুক্তরাষ্ট্র
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্য নিয়ে অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই অভিযানে নিহত হয়েছেন ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ। গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে মানবিক সংকট। তবে এর পরও হামাসকে নির্মূল বা পরাজিত কোনোটিই করতে পারেনি ইসরায়েল। আর তাই ইসরায়েল গাজায় ‘সম্পূর্ণ বিজয়’ অর্জন করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে খোদ বাইডেন প্রশাসনেই। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে গাজায় বিজয়ের তত্ত্ব কী তা বুঝতেও কার্যত সংগ্রাম করছে ওয়াশিংটন। খবর রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি উপত্যকা গাজায় হামাসকে পরাজিত করে ইসরায়েল ‘সম্পূর্ণ বিজয়’ অর্জন করবে বলে তেমন কোনো সম্ভাবনা বাইডেন প্রশাসন দেখছে না বলে মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ট ক্যাম্পবেল সোমবার জানান। যদিও মার্কিন কর্মকর্তারা ইসরায়েলকে যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা শাসনের জন্য একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা তৈরিতে সাহায্য করার আহ্বান জানিয়েছেন, তার পরও ক্যাম্পবেলের এই মন্তব্য বাইডেন প্রশাসন তথা শীর্ষস্থানীয় কোনো মার্কিন কর্মকর্তার কাছ থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে পরিষ্কার স্বীকারোক্তি যে, ইসরায়েলের বর্তমান সামরিক কৌশল এমন ফলাফল আনবে না যে লক্ষ্যে তারা লড়াই করছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে ন্যাটো ইয়ুথ সামিটে ক্যাম্পবেল বলেন, ‘কিছু ক্ষেত্রে, আমরা বিজয়ের তত্ত্ব কী, তা নিয়ে সংগ্রাম করছি। কখনো কখনো আমরা যখন ইসরায়েলি নেতাদের কাছ থেকে শুনি, তারা বেশিরভাগ সময়ই... যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যাপক বিজয়, সম্পূর্ণ বিজয়ের ধারণা সম্পর্কে কথা বলেন।’ তিনি বলেন, ‘তবে আমরা বিশ্বাস করি, তেমন কিছুর (সম্পূর্ণ বিজয় অর্জন) সম্ভাবনা আছে বা তেমন কোনো কিছু সম্ভব। এবং এটি অনেকটা সেই পরিস্থিতির মতোই দেখায় যেখানে আমরা ৯/১১-এর পরে (আফগানিস্তান এবং ইরাকে) নিজেদের পেয়েছি।’ রয়টার্স বলছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বারবার হামাসের বিরুদ্ধে ‘সম্পূর্ণ বিজয়’ অর্জনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নিরলস আক্রমণে ৩৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বর্বর ইসরায়েলি আগ্রাসনে ঘনবসতিপূর্ণ ক্ষুদ্র এই ভূখণ্ডটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া ক্যাম্পবেল এমন এক সময়ে এই মন্তব্য করলেন, যখন গাজা উপত্যকার দক্ষিণতম শহর রাফাহতে বড় ধরনের কোনো সামরিক আক্রমণ না করার জন্য ইসরায়েলকে সতর্ক করছে ওয়াশিংটন। মূলত ইসরায়েলি হামলায় এরই মধ্যে বাস্তুচ্যুত হওয়া ১০ লাখেরও বেশি মানুষ এই শহরে আশ্রয় নিয়েছেন। ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান এবং ইরাকে আক্রমণের পর যে পুনরাবৃত্তিমূলক বিদ্রোহের মুখোমুখি হয়েছিল, গাজার পরিস্থিতির সঙ্গে সেটির তুলনা করে ক্যাম্পবেল বলেন, এ ধরনের সংকটের রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, রাজনৈতিক সমাধানের প্রচেষ্টা আরও বেশি হওয়া উচিত। অনেক দেশ এমন একটি রাজনৈতিক সমাধানের দিকে অগ্রসর হতে চায়, যেখানে ফিলিস্তিনিদের অধিকারকে আরও সম্মান করা হবে।’ এর এক দিন আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও বলেন যে, রাফাহতে ইসরায়েল হামলা চালিয়ে হামাসকে পরাজিত করতে পারবে না। অনেক বিশ্লেষকও বলছেন, হামাসকে পরাজিত করা সম্ভব নয়। কারণ হামাস একটি আদর্শের নাম। আদর্শকে অস্ত্র দিয়ে দমিয়ে রাখা যায় না।
১৫ মে, ২০২৪

জয় বাংলা ম্যারাথন ৭ জুন
‘জয় বাংলা বলে আগে বাড়ো’ স্লোগানে আগামী ৭ জুন ভোর ৫টায় ঢাকার হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত হবে ‘জয় বাংলা ম্যারাথন-২০২৪’। এই হাফ ম্যারাথনের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিকস ও সাইক্লিং ক্লাব। প্রতিযোগিতায় ৪টি কাটাগরিতে মোট ৫ হাজার প্রতিযোগী অংশ নেবে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশনসহ সব আপডেট প্রকাশের লক্ষ্যে ওয়েবসাইট joybanglamarathon.com উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাথলেটিকস ও সাইক্লিং ক্লাবের সভাপতি ও পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার। তিনি বলেন, ৭ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। ‘৭ই মার্চের ভাষণ’ নামে পরিচিত এই ভাষণটি বাঙালি জনগণকে জাগিয়ে তুলতে এবং স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন জোগাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১৫ মে, ২০২৪

অদম্য / প্রতিবন্ধকতা জয় সিয়ামের
জন্ম থেকেই দুই হাত নেই সিয়ামের। পা দিয়েই সে সব কাজকর্ম করে থাকে। তার অদম্য ইচ্ছা ছিল সে পড়ালেখা করে সরকারি চাকরি করবে। তাই সে পা দিয়ে লিখে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সফলভাবেই উত্তীর্ণ হয়েছে। পেয়েছে জিপিএ ৩.৮৩। তার এ ফলে বাবা-মা ও শিক্ষকরা খুব খুশি। জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের উদনাপাড়া গ্রামের দিনমজুর জিন্নাহ মিয়ার ছেলে সিয়াম। তিন ভাইবোনের মধ্যে সিয়াম সবার ছোট। জন্ম থেকেই তার দুটি হাত নেই। কিন্তু থেমে নেই তার পড়ালেখা ও খেলাধুলা। তবে পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে প্রাথমিকের মাঝ পথে বন্ধ হয়ে যায় তার পড়ালেখা। বিদ্যালয় থেকে বেতন মওকুফ করলে ফের পড়ালেখা শুরু করে সিয়াম। ২০১৮ সালে ব্র্যাক শিশু নিকেতন স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে একই ইউনিয়নের চাপারকোনা উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয় সে। এরপর কৃতিত্বের সঙ্গে জেএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। ডোয়াইল ইউনিয়নের চাপারকোনা মহেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করে অদম্য সিয়াম। সিয়াম কালবেলাকে বলে, জন্ম থেকেই দুই হাত নেই। পা দিয়ে লিখতে লিখতে আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। পা দিয়ে লিখেই প্রাথমিক ও জেএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলাম। এবার এসএসসি পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হয়েছি। সিয়ামের মা জোসনা বেগম বলেন, ‘লেখাপড়ার জন্য সিয়ামকে কখনো বলতে হয় না। নিজের ইচ্ছায় সব সময় পড়ালেখা করে। কিছু কিছু কাজ ছাড়া সব কাজ নিজেই করতে পারে। আল্লাহর রহমতে সে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে। লেখাপড়া করতে চায় ছেলে। তবে অভাবের সংসারে সামনের দিনগুলোতে ছেলেকে কীভাবে কলেজে ভর্তি করাব, সেই চিন্তা ভর করছে মনে।’ তার ছেলের পড়ালেখার জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহায়তা চান তিনি। চাপারকোনা মহেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আলীমুর রাজি শিবলু বলেন, ‘সব সময় পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করত সিয়াম। এবার পা দিয়ে লিখে এসএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে সে। একাদশ শ্রেণিতে এই কলেজে সে ভর্তি হলে বেতন মওকুফ করে দেওয়া হবে।’
১৩ মে, ২০২৪

সুয়ারেজের গোলে পিছিয়ে পড়া মিয়ামির জয়
লিওনেল মেসির খেলা মানেই গোল করা। অন্তত আমেরিকার মেজর সকার লিগে তিনি প্রায় প্রতিটি ম্যাচে গোল করছেন। না পারলে অ্যাসিস্ট করছেন। কিন্তু গতকালের ম্যাচে নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারেনি। ৯০ মিনিটই খেললেও কোনো গোল করতে পারেননি মেসি। কোনো অ্যাসিস্টও করতে পারেননি। তবে বন্ধু লুইস সুয়ারেজের গোলে শেষ পর্যন্ত মন্ট্রিয়ালের বিপক্ষে ৩-২ গোলে জিতেছে ইন্টার মিয়ামি। মেসি গোল করতে না পারায় মন্ট্রিয়ালের বিপক্ষে এক সময় ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে মায়ামি। সেই সময় কেউ আশা করেনি ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচটি জিতবে মেসির দল। সেটাও আবার মেসির গোল ছাড়া। শেষ পর্যন্ত সুয়ারেজের গোলে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। সুয়ারেজ ছাড়াও মিয়ামির হয়ে একটি করে গোল করেছেন মাতিয়াস রোহাস ও বেঞ্জামিন ক্রিমাশ্চি। অবশ্য এবারই প্রথম পিছিয়ে পড়ে সকার লিগে জয় তুলে নেয়নি মিয়ামি। এর আগে নিউইয়র্ক রেড বুলসের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও জিতেছিল তারা। ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে ৬-২ গোলে জেতা ম্যাচে গোল করেছিলেন মেসি ও সুয়ারেজ। শুরুতে পেতে অপেক্ষা করতে হয়নি মন্ট্রিলের। ২২ মিনিটে ব্রাইস ডিউকের গোলে এগিয়ে যায় তারা। এরপর জুলস-অ্যান্টনি ভিলসেন্ট দ্বিতীয় গোল করে মায়ামির বিপক্ষে ব্যাবধান ২-০ করেন। এরপরই আক্রমণের ধার বাড়ে মায়ামির। ৪৪ মিনিটে ফ্রি-কিক মিয়ামির হয়ে প্রথম গোলটি করেন রোহাস। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে গোল করেন সুয়ারেজ। এটা মেজর লিগ সকারে তার ১১তম গোল। লিগে মেসির গোল সংখ্যা ১০।
১৩ মে, ২০২৪

বোলারদের নৈপুণ্যে টাইগারদের শ্বাসরুদ্ধকর জয়
বাংলাদেশের হোম অব ক্রিকেট হিসেবেই খ্যাত মিরপুরে শেরে বাংলা স্টেডিয়াম। সেই হোমেই দীর্ঘ সময় পর ফিরেছে বাংলাদেশ দল। নিজেদের ফেরাটা অবশ্য আরেকটু হলেই হতে যাচ্ছিল অস্বস্তির। তবে বোলাররা সেই অস্বস্তি দূর করে এনে দিল স্বস্তির এক জয়। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের চতুর্থ ম্যাচেও জয় তুলে নিল টিম টাইগার্স। অবশ্য ব্যাটারদের ব্যর্থতার পরও দারুণ এই জয়ের কৃতিত্ব পুরোপুরি বোলারদের। শুক্রবার (১০ মে) মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের দেয়া ১৪৪ রানের ছোট্ট টার্গেটে স্বাগতিক বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং ১৩৮ রানে শেষ হয়েছে সফরকারীদের ইনিংস। বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান নেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। জিম্বাবুয়ের পক্ষে জোনাথন ক্যাম্পবেলের ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৩১ রান। এই জয়ে ৫ ম্যাচের সিরিজে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। সল্প রানের টার্গেট দিয়েও জিম্বাবুয়েকে শুরুতেই চাপে ফেলে বাংলাদেশ। ৩২ রানেই সফরবারীদের ৩ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশের বোলাররাপ। ওপেনিংয়ে নামা ব্রায়ান বেনেট শূন্য রানে ফেরার পর সিকান্দার রাজা ১০ বলে ১৭ রান করে আউট হন। দুটি উইকেটই নেন তাসকিন আহমেদ। মারুমানি ১৩ বলে ১৪ রান করে সাকিবের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পা দেন। ক্লাইভ মাদানদে ১২ রান করে রিশাদ হোসেনের শিকারে পরিণত হন। তখন ৪ উইকেটে ১০ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের রান ৫৭। এরপর ক্যাম্পবেল ও বার্ল মিলে দলের হাল ধরেন। তাদের দুজনের ৩৫ রানের জুটি জিম্বাবুয়েকে প্রাপ্য এক জয়ের স্বপ্ন দেখায়। তবে একই ওভারে বার্ল ও লুক জঙ্গুইকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান আইপিএল ফেরত মোস্তাফিজুর রহমান। বার্ল ২০ বলে ১৯ ও জঙ্গুই ১ রান করেন। এরপর ফেরত এসে ক্যাম্পবেলকেও ৩১ রানে আউট করেন কাটার মাস্টার। এরপর জিম্বাবুয়ের ভাগ্য নির্ভর করছিল ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ওপর। তবে শেষ ওভারে সাকিবের অভিজ্ঞতা জিম্বাবুয়ের হাত থেকে একপ্রকার জয় ছিনিয়ে নিয়ে আসে। মাথা ঠাণ্ডা রেখে শেষ ওভারে ২ উইকেট নিয়ে দলকে জয় এনে দেন সাকিব আল হাসান। যার মধ্যে রয়েছে শেষ দুই বলে দুই উইকেট। ২৯৯ দিন পর টি-টোয়েন্টিতে ফিরে সাকিব নেন ৪ উইকেট। এর আগে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে উড়ন্ত শুরু করে বাংলাদেশের ওপেনাররা। বিনা উইকেটে ১০১ রানের পর যখন ২০০ রান টার্গেট দেওয়ার কথা সেখানেই নাটকীয় এক ধস। মাত্র ৪২ রানে শেষ ১০ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রানে থামে টাইগারদের ইনিংস। টাইগারদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫২ রান আসে ওপেনার তানজিদ তামিমের ব্যাট থেকে। জিম্বাবুয়ের পক্ষে লুক জঙ্গুয়ে নেন ৩ উইকেট।
১০ মে, ২০২৪

মন্ত্রী-এমপির ১০ স্বজনের জয়
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে তৃণমূলে যে দ্বৈরথ তৈরি হয়, তা উপজেলা নির্বাচনেও প্রভাব ফেলবে—এমন আশঙ্কায় আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী দেওয়া থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। নির্বাচন আরও গ্রহণযোগ্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাবমুক্ত রাখতে তাদের আত্মীয়স্বজনদের নির্বাচন থেকে বিরত থাকতেও নির্দেশ দেয় দলটি। কিন্তু প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করার বিষয়ে অটল থাকেন মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা। গতকাল বুধবার প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তাদের মধ্যে ১০ জন জিতে গেছেন; হেরেছেন চারজন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাক শাবাব চৌধুরী সুবর্ণচর উপজেলার চেয়ারম্যান পদে জিতেছেন। বগুড়া-১ আসনের এমপি শাহদারা মান্নানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন সজল সারিয়াকান্দি উপজেলায় এবং ভাই মিনহাদুজ্জামান লিটন সোনাতলা উপজেলা থেকে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য শ ম রেজাউল করিমের ছোট ভাই এস এম নুরে আলম সিদ্দিকী নাজিরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কিছু ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন। খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার জামাতা রামগড় উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী বিশ্ব প্রদীপ কারবারীও জয়ী হয়েছেন। মাদারীপুর সদর উপজেলায় নির্বাচনে লড়েছেন সাবেক নৌমন্ত্রী এবং মাদারীপুর-২ আসনের এমপি শাহজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমান খান। তিনিও জয়ী হয়েছেন। কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন আতাউর রহমান আতা। তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের এমপি মাহবুবউল-আলম হানিফের চাচাতো ভাই। ঠাকুরগাঁও-২ আসনের এমপি মাজহারুল ইসলাম সুজনের দুই চাচা ও এক চাচাতো ভাই বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়েন। তাদের মধ্যে জয়ী হন ছোট চাচা শফিকুল ইসলাম। অন্যদিকে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ আসনের এমপি শামসুল হক টুকুর ছোট ভাই আব্দুল বাতেন ও ভাতিজা আব্দুল কাদের দুজন একই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে হেরে গেছেন। টাঙ্গাইল-১ আসনের এমপি ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের খালাতো ভাই ধনবাড়ী উপজেলায় হারুনার রশিদ হিরা নির্বাচনে হেরে গেছেন। নরসিংদী-২ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার আশরাফ খানের শ্যালক শরীফুল হক পলাশ উপজেলায় হেরেছেন। মৌলভীবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পরিবেশমন্ত্রী সাহাব উদ্দিনের ভাগনে সোয়েব আহমেদ বড়লেখা উপজেলায় পরাজিত হয়েছেন। এর আগে হাতিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নোয়াখালী-৬ আসনের এমপি মোহাম্মদ আলীর ছেলে আশিক আলী অমি ও মুন্সীগঞ্জ-৩-এর এমপি মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লবের চাচা আনিছ উজ্জামান আনিস বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
০৯ মে, ২০২৪

হেলাফেলার সিরিজ জয়
ঘরের মাঠে দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচ হাতে রেখে হেলাফেলায় জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচে অতিথি দল কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি করতে পারেনি। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা ফিল্ডিং নিয়েছিলেন। বাংলাদেশ ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান তুলেছিল। জবাবে ৯ উইকেটে ১৫৬ রানে থামে জিম্বাবুয়ে। ফলে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ৯ রানে জিতে নেন শান্তরা। গতকালও রান পাননি ওপেনার লিটন দাস। চট্টগ্রামে গতকাল ব্লেজিং মুজারাবানি দারুণ বোলিং করেন। ৪ ওভারে ১৪ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ১২ রান করা লিটন দাসকে বোল্ড করেন মুজারাবানি। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ৬ রান করেন। তানজিদ হাসান করেন ২১ রান। এরপর তাওহীদ হৃদয় আর জাকের আলী চতুর্থ উইকেটে ৮৭ রানের জুটি গড়েন। হৃদয় ৫৭ রানে আউট হন। জাকের করেন ৪৪ রান। এই দুজনের ব্যাটে ভর করে লড়াইয়ের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে জিম্বাবুয়ে। মারুমানি ৩১ রান করেন। শেষের দিকে ফরাজ আকরাম ১৯ বলে ৩৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন। শেষ ওভারে যা একটু উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল সেটা ফরাজের জন্যই। জেতার জন্য শেষ ৩ বলে ১৩ রানের দরকার ছিল। ৩ রান নিতে পেরেছে তারা। বাংলাদেশের হয়ে সাইফউদ্দিন ৪২ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নেন। ৩৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন রিশাদ। তাসকিন, তানজিম ও মাহামুদুল্লাহ নেন একটি করে উইকেট। ম্যাচসেরা হয়েছেন তাওহীদ হৃদয়। সংক্ষিপ্ত স্কোর বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৬৫/৫ (হৃদয় ৫৭, জাকের ৪৪, তানজিদ ২১, লিটন ১২, মাহমুদউল্লাহ ৯*, রিশাদ ৬*; মুজারাবানি ৩/১৪, রাজা ১/৩৮, ফারাজ ১/৪৪)। জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৫৬/৯ (ফারাজ ৩৪*, মারুমানি ৩১, ক্যাম্পবেল ২১, মাসাকাদজা ১৩, মাদান্দে ১১; সাইফউদ্দিন ৩/৪২, রিশাদ ২/৩৮, তাসকিন ১/২১, তানজিম ১/২৬, মাহমুদউল্লাহ ১/১)। ফল: বাংলাদেশ ৯ রানে জয়ী। সিরিজ: পাঁচ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে। ম্যাচসেরা: তাওহীদ হৃদয় (বাংলাদেশ)।
০৮ মে, ২০২৪

কষ্টার্জিত জয়ে ‍সিরিজ টাইগারদের
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচের দাপুটে জয়েই সিরিজ নিশ্চিত করার দ্বারপ্রান্তে ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তৃতীয় ম্যাচও জিতে নিয়ে ঢাকায় বাকি দুই ম্যাচ খেলার আগেই বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে চেয়েছিল সিরিজ। সেই লক্ষ্যে তৃতীয় ম্যাচ জয় ভিন্ন অন্য কোনো কিছু মাথায় ছিল না বাংলাদেশের। সেই জয় টাইগাররা ঠিকই পেল তবে তা এলো কষ্টার্জিতভাবে। চট্টগ্রামে মঙ্গলবার (৭ মে) সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৯ রানের জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে নিয়েছে বাংলাদেশ। টাইগারদের দেওয়া ১৬৬ রান তাড়া করতে নেমে ৭৩ রানে ৬ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ে ক্যাম্পবেল ও ফারাজের বিধ্বংসী ইনিংসে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রানে পৌঁছে যায়। ক্যাম্পবেল ১০ বলে ২১ রান করে আউট হলেও ১৯ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত ছিলেন ফারাজ। টাইগারদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।   বাংলাদেশের দেয়া ১৬৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ভালো শুরু করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। রোডেশিয়ানদের ওপেনার জয়লর্ড গাম্বি ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিলেও থিতু হতে পারেনননি। দলীয় ১৬ রানের মাথায় মোহাম্মদ সাইফিউদ্দিনের প্রথম শিকারে পরিণত হন তিনি। এরপর গত ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করা ব্রায়ান বেনেট ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনে নেমে ৫ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। তানজিম সাকিবের বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। বেনেটের মতো দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই সাজঘরে ফিরেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার সিকান্দার রাজা ও ক্রেগ আরভিন। রিশাদ ও সাইফউদ্দিন পেয়েছেন সেই দুই উইকেট। তাতে দলীয় অর্ধশতকের আগেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে হারিয়ে ধুঁকতে থাকে সফরকারীরা। লোয়ার মিডল অর্ডারেও কেউই তেমন দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করতে পারেননি। জোনাথন ক্যাম্পবেল-ওয়েলিংটন মাসাকাদজারা থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। একসময় ৯১ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে অলআউটের শঙ্কায় পড়ে জিম্বাবুয়ে। সেখান থেকে অবশ্য ফারাজ আকরাম অবিশ্বাস্য ভাবে ম্যাচটি জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে দলকে। শেষ পর্যন্ত জয় এনে দিতে না পারলেও অন্তত পুরো ২০ ওভার খেলতে সাহায্য করেছেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। এর আগে টস হেরে আগে ব্যাটিং করে তাওহীদ হৃদয় ও জাকের আলী অনিকের ব্যাটে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান করে বাংলাদেশ। টাইগারদের পক্ষে তাওহীদ হৃদয় সর্বোচ্চ ৫৭ রান করেন। সফরকারী জিম্বাবুয়ের পক্ষে ব্লেসিং মুজরাবানি নেন ৩ উইকেট।
০৭ মে, ২০২৪
X