সিগন্যালম্যানের ভুলে গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা
গাজীপুরের জয়দেবপুর স্টেশনে মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে স্টেশনের দক্ষিণে আউটার সিগন্যালে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ৯টি বগি লাইনচ্যুত ও চারজন আহত হন। এতে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম রুটের ট্রেন চলাচল দুই ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর স্বাভাবিক হয়। সিগন্যালম্যানের ভুলের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন জয়দেবপুরের স্টেশন মাস্টার হানিফ আলী মিয়া। এ ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই আপঘুন্টি স্টেশন মাস্টার হাশেম, পয়েন্টসম্যান সাদ্দাম হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। হানিফ আলী মিয়া জানান, সিগন্যালম্যানের ভুলের কারণে টাঙ্গাইল কমিউটার ও মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে মালবাহী ট্রেনের পাঁচটি এবং যাত্রীবাহী ট্রেনের চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়। কমিউটার ট্রেনের লোকোমাস্টারসহ চারজন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনি বলেন, এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে। এ ছাড়া তিনজনকে বরখাস্তের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পরে রিলিফ ট্রেন এসে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। এ ছাড়া টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের পেছনের অংশের অক্ষত বগিগুলো বিকল্প ইঞ্জিনের মাধ্যমে দুর্ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। দুই ঘণ্টা পর অন্য রেললাইনের মাধ্যমে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুস সামাদ বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। এতে ট্রেনের চালক ও সহকারী চালকসহ চারজন আহত হয়েছেন। তাদের তিনজনকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন। সিগন্যাল ভুল, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। আহতদের অবস্থা স্থিতিশীল: দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে তিনজনকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। তারা হলেন, টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনের চালক হাবিবুর রহমান, সহকারী চালক সবুজ হাসান ও যাত্রী শরীফ মাহমুদ। এ ছাড়া অন্যজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট মোহাম্মদ খলিলুর রহমান বলেন, ভর্তি তিনজনের কেউ মাথায়, কেউ বুকে আঘাত পেয়েছেন। তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আহতদের অবস্থা স্থিতিশীল ও শঙ্কামুক্ত। নিরাপত্তা জোরদার: দুর্ঘটনার পর অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্যরা কাজ করছেন। এ ছাড়া ঘটনাস্থলে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। গাজীপুরের ৬৩ ব্যাটালিয়নের বিজিবি সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে ভাগ হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
০৪ মে, ২০২৪

ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে ‘রেলওয়ে সেফটি ডিভাইস’ উদ্ভাবন
ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে ‘রেলওয়ে সেফটি ডিভাইস’ উদ্ভাবন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন নাটোরের নলডাঙ্গার মাধনগরের আবদুল্লাহ আল কাফি (১৮)। তিনি পশ্চিম মাধনগর জোয়ানপুর গ্রামের কৃষক পিতা মো. মাহবুব আলম হোসেন ও মাতা মোছা. পল্লব কান্তি সরদারের একমাত্র ছেলে। শিক্ষার্থী কাফি পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিকস বিভাগের তৃতীয় সেমিস্টারের ছাত্র। ট্রেনে নাশকতা ও দুর্ঘটনার বিষয়টি মূল গুরুত্ব দিয়ে এ ডিভাইসটি উদ্ভাবন করেন তিনি। ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে উদ্ভাবনী চিন্তা মাথায় নিয়ে কাজ শুরু করে। কিছু দিনের মধ্যেই আসে তার উদ্ভাবনের সফলতা। ট্রেন দুর্ঘটনা পুরোপুরি রোধে তৈরি করে ফেলেন একটি পূর্ণাঙ্গ ‘রেলওয়ে সেফটি ডিভাইস’।  কাফির উদ্ভাবিত রেলওয়ে সেফটি ডিভাইসটি দেখতে শতশত নারী-পুরুষ ভিড় করছে। ডিভাইসটি আরও গবেষণা করে রেলওয়ের বিভাগের মাধ্যমে স্থাপন করা হলে, ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। তরুণ উদ্ভাবক আবদুল্লাহ আল কাফির সাফল্যে খুশি স্থানীয় এলাকাবাসী ও তার পরিবার।  রেললাইন কোথাও ভেঙে গেলে বা কাটা হলে, সিগনাল বেঁজে উঠবে ও অটোমেটিক্যালি-রেলওয়ে সেফটি ডিভাইসের মাধ্যমে স্টেশন মাস্টারের কাছে ফোন চলে যাবে। যার ফলে আর ট্রেন দুর্ঘটনার সুযোগ থাকবে না। রেলে দুর্ঘটনা রোধে মাত্র ১০ হাজার টাকা খরচ করে রেলওয়ে সেফটি ডিভাইসটি উদ্ভাবন করেন তিনি। তবে এই ডিভাইসটি আরও শক্তিশালী করার জন্য গবেষণা ও সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন মাধনগর রেলওয়ে স্টেশনের কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার। আব্দুল্লাহ আল কাফি জানান, বেশ কিছুদিন চেষ্টার পর সফল হন তিনি। প্রতিটা স্টেশনে একটি কন্ট্রোল বক্স স্থাপন ও রেললাইনের সঙ্গে ওয়ারিংয়ে খরচ পড়বে মাত্র ১০ হাজার টাকা। ওই স্টেশনের আওতায় রেললাইন কাটা পড়লে বা ফেটে গেলে সঙ্গে সঙ্গে কন্ট্রোল বক্সের অ্যালার্ম বাজবে। একই সঙ্গে অ্যালার্ম বাক্সে থাকা মোবাইল থেকে স্টেশন মাস্টারের মোবাইলে যাবে কল। কৃষক মাহবুব আলম ও মাতা মোছা. পল্লব কান্তি সরদার জানান, সন্তানের এই আবিষ্কারে গর্বিত তিনি। ছেলের আবিষ্কার দেশের ও জনগণের কাজে লাগলে সার্থক তিনি। নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়াডের মেম্বার মোস্তাফিজুর রহমান রকি জানান, এলাকাবাসী বিষয়টি জানতে পেরে ডিভাইস দেখতে ভিড় করেন। রেলযাত্রাকে নিরাপদ করতে ডিভাইসটি পরীক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি করেন তিনি। মাধনগর রেলওয়ে স্টেশনের কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার মো. মমিন উদ্দিন প্রামানিক বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এ সমস্ত খুদে বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত ডিভাইসগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
২২ জানুয়ারি, ২০২৪

বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল হাজারো যাত্রী
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে থেকে রক্ষা পেয়েছে এক হাজারের মতো যাত্রী নিয়ে চলতে থাকা ঢাকা মেইল (ওয়ান আপ) নামে একটি ট্রেন।  শনিবার (৬ জানুয়ারি) ভোরে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী মেইল ট্রেনটি কর্মরতদের ভুলের কারণে স্টেশনের বদলে অন্য লাইনে ঢুকে পড়ে। তবে চালকের বিচক্ষণতায় রেললাইন শেষ হওয়ার প্রায় ১০০ গজ দূরে ট্রেনটি থেমে গেলে যাত্রীরা দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়।  ট্রেনযাত্রী ভৈরবের সুমন মিয়া জানান, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী মেইল ট্রেনটি ভোর সাড়ে ৪টার দিকে আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন প্রবেশ করছিল। হঠাৎ ট্রেনটি স্টেশনে প্রবেশ না করে লোকোশেডের দিকে চলে যায়। চালক বিষয়টি বুঝতে পেরে ট্রেনটি থামিয়ে দেন। এর কিছু দূরেই আর কোনো রেললাইন ছিল না। যে কারণে ট্রেনটি আরেকটু সামনে গেলেই হাজার যাত্রী নিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতো। পরে ট্রেনটিকে পিছনের দিকে এনে আবার স্টেশনে নেওয়া হয়। ট্রেনটি ছাড়তে সব মিলিয়ে ঘণ্টা দেড়েক দেরি হয়। মূলত লাইন সংযোগের ভুলের কারণেই এ সমস্যা দেখা দেয়।  ট্রেনের চালক মো. আব্দুল জলিল বলেন, ‘এখন একটু অন্যরকম পরিস্থিতি। আমি চট্টগ্রাম থেকেই সাবধানে ট্রেন চালাচ্ছিলাম। কুয়াশাসহ বিভিন্ন কারণে ট্রেনের গতি কমিয়ে চলারও নির্দেশনা রয়েছে। ট্রেনটি আখাউড়ায় ঢোকার সময় গতি খুব কম ছিল। হোম সিগন্যাল পার হওয়ার কিছু সময় পর বুঝতে পারি ট্রেনটি স্টেশনে যাচ্ছে না। এ অবস্থায় ট্রেন থামিয়ে দেই। যেখানে থামানো হয় এর ১০০ গজ পর আর কোনো রেললাইন ছিল না।’ আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট মো. নুরুন্নবী বলেন, ‘উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় আমাদের এখানে হাতে সিগন্যাল দিতে হয় ও পয়েন্টস মিলাতে হয়। ঢাকা মেইল ট্রেনের পয়েন্ট মেলাতে ভুল হওয়ায় স্টেশনে না গিয়ে অন্যদিকে চলে যায়। যেদিকে ট্রেনটি যায় সেদিকে ছিল ব্লক লাইন। মানে এরপর আর যাওয়ার কোনো লাইন ছিল না। এ অবস্থায় ট্রেনটিকে পিছিয়ে স্টেশনে এনে ঢাকার উদ্দেশে পাঠানো হয়।’
০৬ জানুয়ারি, ২০২৪

গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা তিন তদন্ত কমিটি গঠন
গাজীপুরের বনখড়িয়া এলাকায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এতে এক যাত্রী নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার জেরে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে ৩টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়, রেলওয়ে ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয় ও গাজীপুর জেলা প্রশাসন থেকে পৃথক কমিটি গঠন করা হয়।  বুধবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শফিকুর রহমান কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  রেলওয়ে কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে নাশকতা উদ্দেশ্যে দুর্বৃত্তরা ঘটনাটি করেছে। তারপরও সঠিক কারণ অনুসন্ধানে বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলীকে সৌমিক শাওন কবিরকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিভাগীয় পরিবহন প্রকৌশলী, বিভাগীয় যাত্রী প্রকৌশলী, বিভাগীয় চিকিৎসকও আছেন এ কমিটিতে। অন্যদিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবিরকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করার কথা জানিয়েছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম। দুটি কমিটিকেই তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। সকাল থেকে ঘটনাস্থলে গিয়ে কমিটি কাজ শুরু করেছে।
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৩

চালক সিগন্যাল অমান্য করায় ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনা : রেলমন্ত্রী
চালক সিগন্যাল অমান্য করায় ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রেল ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।  মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে চালকের গাফিলতির বাইরে দুর্ঘটনার পেছনে কোনো নাশকতা আছে কি না, তেমনি ট্রাফিক বিভাগের ত্রুটিসহ সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’  দুর্ঘটনার পর আমরা সংশ্লিষ্ট তিনজনকে সাসপেন্ড করার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন পেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, মালবাহী ট্রেনের লোকোমাস্টারের অবহেলা বা অক্ষমতায় এ ঘটনা ঘটেছে।’ প্রাথমিক তদন্তে চালকের সিগন্যাল অমান্য করায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলেও জানান মন্ত্রী। ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনার দায় নিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্ঘটনায় নিহতদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা ও আহতদের সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় নির্বাহের ঘোষণা দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।’  মন্ত্রী বলেন, রেলের আইন সংশোধন করা হচ্ছে। আইনে রেল দুর্ঘটনায় নিহতদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ বাবদ পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করার কথা জানান তিনি।  সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এক লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। মৃত্যুর ক্ষতি কোনোভাবেই পোষানো যায় না। তবুও সামান্য আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা দায়িত্ব নিচ্ছি বলে মনে করি। মূলত রেলের দুর্বলতার জন্য দুর্ঘটনার দায় আমরা কোনোভাবেই এড়াতে পারি না।  তিনি বলেন, সিঙ্গেল লাইনের কারণে রেল লাইনে ঝুঁকি থেকেই যাবে। ডাবল লাইন হয়ে গেলে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে না। জনবল সংকট রেল দুর্ঘটনার আরেকটি বড় কারণ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এখনও রেল ২০ হাজার জনবল ঘাটতি আছে।  বেশিরভাগ ট্রেনচালকের অবসরের বয়স হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, একজন চালক তৈরি করতে ৩-১২ বছর সময় লাগে। তাই অবসর নেওয়া ২৪ জনের সঙ্গে আমরা ট্রেন চালানোর জন্য চুক্তি করেছি।     তিনি বলেন, গত ২৩ অক্টোবর এ ঘটনায় রেল মন্ত্রণালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে এই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তা ছাড়া আরো দুটি কমিটি গঠনের কথা জানান মন্ত্রী।  রেলমন্ত্রী বলেন, আমরা দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে এখানে উপস্থিত হয়েছি। আমি রেলের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবার যে দুর্ঘটনা হয় সেখানে ২১ জন নিহত হয়েছিল। দীর্ঘদিন পর আবার একটি বড় দুর্ঘটনা ঘটল। এ ঘটনায় মোট ২০ জন মারা গেছেন।  এদিকে দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩৫ জন। তাদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ১ জন, পঙ্গুতে ৬ জন, চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট হাসপাতালে ১ জন, রেল হাসপাতালে ১ জন এবং ভৈরবে ১ জনসহ মোট ১০ জন এই মুহূর্তে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। বাকি অনেকে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন। এরপর মন্ত্রী রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের দেখতে যান।  
২৬ অক্টোবর, ২০২৩

ভৈরব রেল দুর্ঘটনা / রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি
কিশোরগঞ্জে ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ জানতে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের সাত কর্মকর্তাকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪) রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. তৌফিক ইমামের সই করা এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানা যায়। অফিস আদেশে বলা হয়, সোমবার (২৩ অক্টোবর) ভৈরবে যাত্রীবাহী এগারসিন্দুর গোধূলী ও মালবাহী ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের কারণ অনুসন্ধানের জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো। আরও বলা হয়, কমিটি সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান, দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিতকরণ এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় নির্ধারণ করে প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে। অফিস আদেশ জারির ৭ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে এবং কমিটি প্রয়োজনে যেকোনো কর্মকর্তাকে সদস্য হিসেবে দলে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। এই তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (অডিট ও আইসিটি) হাসান মাহমুদ এবং সদস্য সচিব হলেন উপসচিব (প্রশাসন-৬) মো. তৌফিক ইমাম।  এ ছাড়া সদস্য হিসেবে আছেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের যুগ্ম মহাপরিচালক (অপারেশন) এ এম সালাহ উদ্দীন, যুগ্ম মহাপরিচালক (মেকানিক্যাল) তাবাসসুম বিনতে ইসলাম, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (ভূমি) মোহাম্মদ হানিফ, বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত সিসটিই (টেলিকম) ও বাংলাদেশ রেলওয়ে হাসপাতালের ডিভিশনাল মেডিকেল অফিসার।
২৪ অক্টোবর, ২০২৩

চবিতে ট্রেন দুর্ঘটনা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ২ তদন্ত কমিটি
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেনের দুর্ঘটনা ও ক্যাম্পাসজুড়ে ভাঙচুরের ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।  এর মধ্যে ট্রেন দুর্ঘটনার বিষয়ে একটি এবং উপাচার্যের বাংলো, পরিবহন ও শিক্ষক ক্লাব ভাঙচুরের ঘটনায় আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।  সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমেদ। ট্রেন দুর্ঘটনা সংক্রান্ত তদন্ত কমিটিতে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ড. মোহাম্মদ সহিদউল্লাহকে আহ্বায়ক, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক পালকে সদস্য এবং প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাককে সদস্যসচিব করা হয়েছে। এ ছাড়া ভাঙচুরের ঘটনায় তদন্ত কমিটিতে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃত বিভাগের অধ্যাপক ড. বশির আহমেদকে আহ্বায়ক, জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌতবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র অধ্যাপক ড. অঞ্জন কুমার চৌধুরী, ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন, জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজনীন নাহার ইসলামকে সদস্য এবং সহকারী প্রক্টর সৌরভ সাহা জয়কে সদস্যসচিব করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও নির্দিষ্ট কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া তদন্ত কমিটি গত ৯ সেপ্টেম্বর গঠন হওয়ার কথা উল্লেখ করা হলেও গত দুদিন ধরে তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কেউই এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেনে হেলে পড়া গাছের আঘাতে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী ও বহিরাগত আহত হন। এ সময় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ঐদিন রাত ১০টার দিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেন। এ সময় উপাচার্যের বাংলো, শিক্ষক ক্লাব এবং ৬৫টি গাড়ি ভাঙচুর করেন শিক্ষার্থীরা।  এ ঘটনায় ১৪ জনকে আসামি করে অজ্ঞাত ১ হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মামলায় না উল্লেখ করা ১৪ জনের মধ্যে ১২ জনই ছাত্রলীগের অনুসারী বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। 
১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

যশোরে আবারও ট্রেন দুর্ঘটনা
যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনায় যাত্রীবাহী খুলনাগামী আন্তঃনগর সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনের ব্রেক ব্যান (স্প্রিং) ভেঙে গেছে। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকেল ৩টার দিকে উদ্ধার কাজ শেষে খুলনার সঙ্গে পুণরায় সারাদেশে রেলযোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নওয়াপাড়া রেলক্রসিংয়ে এ ঘটনা ঘটে। এরপর খুলনার সঙ্গে সারাদেশের রেলযোগাযোগ প্রায় আড়াই ঘণ্টা বন্ধ হয়ে যায়। যশোর রেলওয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী গৌতম বিশ্বাস বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন।  তিনি বলেন, রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী আন্তঃনগর সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নওয়াপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের কিছু আগে নওয়াপাড়া রেল ক্রসিংয়ে পৌঁছালে ট্রেনের গার্ডের ব্রেক ব্যান ভেঙে যায়। এরপর আরেকটি ইঞ্জিন দিয়ে সেটি উদ্ধারকাজ করা হয়। উদ্ধার কাজ শেষে বিকেল ৩টার পর থেকে খুলনার সঙ্গে পুণরায় সারাদেশে রেলযোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে। এ ঘটনায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা খুলনা রুটে রেলযোগাযোগ বন্ধ ছিল। এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) ভোরে যশোরের বসুন্দিয়া রেলস্টেশনের নিকটে খুলনা থেকে ছেড়ে যাওয়া নাটোরগামী একটি তেলবাহী ট্রেনের কন্টেইনার উল্টে দুর্ঘটনা  ঘটে। এ ঘটনায়ও টানা ছয় ঘণ্টা খুলনা রুটে রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিল।
০১ জানুয়ারি, ১৯৭০
X