কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা
নাটোরে তরমুজ পিস হিসেবে বিক্রির নির্দেশ দিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বাজার তদারকিতে নেমে এই নির্দেশনা দেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান তানভীর। তিনি জানান, রোববার (১৭ মার্চ) থেকে কেউ কেজি হিসেবে তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন না। কেজি হিসেবে তরমুজ বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গত বছর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অভিযান চালিয়ে সব মৌসুমি ফল ব্যবসায়ীকে কেজি হিসেবে তরমুজ বিক্রি না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এবার আবারো ব্যবসায়ীরা পিস হিসেবে তরমুজ কিনে এনে কেজি হিসেবে বিক্রি শুরু করেন এবং ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করে বিক্রি শুরু করেন। ভোক্তা অধিকারের শনিবারের (১৬ মার্চ) অভিযানে ক্রেতারা সন্তোষ প্রকাশ করেন। সাংস্কৃতিক কর্মী রফিকুল ইসলাম নান্টু বলেন, ‘শুধু দামের ব্যাপারে দেখলেই হবে না। অপরিপক্ব তরমুজ নিয়ে এসে রাসায়নিকের মাধ্যমে লাল রং করে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। সাধারণ যে কেউ দেখলেই বুঝতে পারবেন এটি পাকা তরমুজ নয়। এই তরমুজ খেলে দেহের অনেক ক্ষতি হতে পারে। এ বিষয়েও তদারকি করা জরুরি।’  অন্য এক ক্রেতা ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে খেজুর বিক্রি হচ্ছে না। বাজারে সেই দাম কার্যকর হয়নি। এ বিষয়ে সাধারণ ক্রেতার কাছ থেকে শুনে অভিযান চালালে ভালো হতো।’ এদিকে তদারকি অভিযানে শহরের নিচাবাজারে সাধন ফল ঘরকে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় চার হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন বিপণিবিতানে ঘুরে ঘুরে পণ্যের সঠিক মূল্য প্রদর্শন এবং ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রির পরামর্শ দেয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
১৭ মার্চ, ২০২৪

স্থানীয় বাজারে কেন তরমুজ বিক্রি করছেন না চাষিরা
সুস্বাদু ও মিষ্টি জাতের তরমুজ উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে প্রসিদ্ধ বরগুনা। অথচ এ জেলা সদরের বাজারগুলোতে সহজে দেখা মিলেছে ফলটির। জেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে আগাম চাষ করা তরমুজ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হচ্ছে। বেশি দামের আশায় কৃষকরা এ কাজ করছেন। শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে বরগুনার পৌর ফলবাজার, ফুলঝুড়ি বাজার, গৌরিচন্না বাজারসহ আশপাশের বাজারগুলোর আড়ৎ ও খুচরা দোকানে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। বাজারগুলোতে তরমুজ কেনাবেচা নেই বললেই চলে। এর কারণ হিসেবে অসাধু পাইকারদের দোষারোপ করেছেন স্থানীয় আড়ৎদার, খুচরা ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতারা। রোজা রেখে ইফতারের জন্য পৌর ফলবাজার ও সবজিবাজার ঘুরে জুলহাস আহমেদসহ কয়েকজন ক্রেতা তরমুজ পাননি। তাদের সঙ্গে কালবেলার কথা হলে তারা জানান, দেশের যে কয়টি জেলায় তরমুজ উৎপাদন হয় তার মধ্যে বরগুনা জেলা অন্যতম। আরও ১৫ দিন আগে থেকে সদর উপজেলার মাঝের চরসহ তালতলী উপজেলার বিভিন্ন চর এলাকার উৎপাদিত তরমুজ বাজারজাত করা হচ্ছে। অথচ বরগুনার বাজারে আজকে কোনো তরমুজ নেই। তারা আরও জানান, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসে পাইকাররা ক্ষেত হিসেবে তরমুজ কিনে নিচ্ছেন। তারা অধিক মুনফার লোভে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার বাজারগুলোতে কেজি হিসেবে বিক্রি করেন এসব। এদিকে বরগুনার বাজারগুলোতে কিছু দিন আগে অল্প পরিমাণে তরমুজের দেখা মিললেও তা ৬০-৭০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি হয়। যা মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। সেলিম নামের এক খুচরা তরমুজ বিক্রেতা বলেন, ‘মুনাফালোভী কিছু পাইকার ক্ষেত থেকে তরমুজ সংগ্রহ করে অন্যান্য জেলায় মণ হিসেবে বেশি দরে বিক্রি করেন। আমাদের মণ হিসেবে কিনে কেজি দরে বিক্রি করতে বিবেকে বাঁধে। তাই তরমুজ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি।’ মাহাবুব নামের এক আড়ৎদার কালবেলাকে বলেন, ‘কিছু অসাধু পাইকারদের কারণে আমরা আড়ৎগুলোতে তরমুজ পাই না। যা পাই সেগুলো উচ্চমূল্যে কিনতে হয়। বেশি দামে যে কিনব এখন তাও পাচ্ছি না। তরমুজ পাওয়ার জন্য আমরা পাইকারদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে যাচ্ছি।’ বরগুনা রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি তারিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ‘বছরের বেশির ভাগ সময় অন্যান্য ফলের চাহিদা থাকলেও গরমে বিশেষ করে রমজান মাসে তরমুজের ব্যাপক চাহিদা থাকে। এ সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু ও অতি মুনফালোভী পাইকার বরগুনায় উৎপাদিত আগাম তরমুজ ক্ষেত হিসেবে কিনে উচ্চমূল্যে কেজি হিসেবে বিক্রি করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ ছাড়া বরগুনার বাজারগুলোতে প্রশাসনের নিয়মিত নজরদারি থাকায় এখানে উচ্চমূল্যে তরমুজ বিক্রি করতে না পারার কারণে রাজধানীসহ অন্যান্য জেলায় বিক্রি করেন তারা। স্থানীয় মানুষ বর্তমানে নিজেদের জেলায় উৎপাদিত তরমুজ কিনেও খেতে পারছে না। এটা আসলেই দুঃখজনক।’
১৭ মার্চ, ২০২৪
X