সাইকেল চুরির দায়ে স্কুলের ২ দপ্তরি কারাগারে
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা চত্বর থেকে তালা ভেঙে বাইসাইকেল চুরির অভিযোগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই দপ্তরিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৩ মে) বিকেলে গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার দুজন হলেন- উপজেলা আন্দিউড়া ইউপির মীরনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি জহিরুল ইসলাম ও একই উপজেলার কাটিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি মুজাহিদ মিয়া।  এর আগে শুক্রবার সকালে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া চুরি করা সাইকেলও জব্দ করা হয়েছে।  জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১ মে) মাধবপুর ইউএনও একেএম ফয়সাল মুছলেকা সাইকেল চুরির দায়ে দুই দপ্তরিকে ছেড়ে দেওয়ার সংবাদ প্রচার হলে উপজেলাজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে দুজনকে গ্রেপ্তারের নির্দেশনা দেওয়া হয়।  গ্রেপ্তার দপ্তরি মুজাহিদ মিয়া বলেন, আমি এ চুরিতে ছিলাম না। হঠাৎ মাধবপুর থানার পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনা নির্ভুল তদন্ত করলে দেখা যাবে আমার কোনো দায় নেই। মাধবপুর থানার ওসি (তদন্ত) আতিকুর রহমান কালবেলাকে বলেন, চুরির দায়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
০৩ মে, ২০২৪

সরকারি ল্যাপটপ বন্ধক রেখে টাকা ধার নিল দপ্তরি
সরকারি ল্যাপটপ বন্ধক রেখে টাকা ধার নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শরীয়তপুর গোসাইরহাট উপজেলার ২৭নং দাতরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরির বিরুদ্ধে। স্কুলের দপ্তরি সাকিবুল ঢালী ভোগকাঠী গ্রামের হুমায়ুন বেপারীর কাছে ল্যাপটপটি বন্ধক রাখেন বলে অভিযোগ উঠেছে।  রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) স্কুলে ল্যাপটপ না দেখতে পেয়ে এ ঘটনা জানাজানি হয়। পরে পাওনাদার হুমায়ুন বেপারীকে টাকা পরিশোধ করে ল্যাপটপ উদ্ধার করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২৭নং দাতরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনলাইনের কাজের জন্য সরকার থেকে ২টি ল্যাপটপ দেওয়া হয়েছে। কম্পিউটারের সকল কাজ দপ্তরি সাকিবুল করে তাই দুটি ল্যাপটপ তিনি তার বাসায় নিয়ে যান। তবে এর মধ্যে একটি এইচপি ব্রান্ডের ল্যাপটপ বন্ধক রেখে তিনি স্থানীয় হুমায়ুন বেপারীর কাছ থেকে টাকা ধার করেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ কেউ এ বিষয়ে অবহিত ছিলেন না। এরই মধ্যে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়। হুমায়ুন বেপারী জানান, একটি ব্যাগসহ ল্যাপটপ নিয়ে এসে আমার কাছে টাকা ধার চায় সাকিবুল। স্কুলের ল্যাপটপ দেখে প্রথমে রাজি হইনি। পরে অল্প সময়ে টাকা পরিশোধ করে দেবে বলে অনেক অনুরোধ করলে আমি সাড়ে চার হাজার টাকা সাকিবুলকে দেই। এরপর দুই মাস পর রোববার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা টাকা দিয়ে  ল্যাপটপটি আমার কাছ থেকে ছাড়িয়ে স্কুলে নিয়ে যান।  অভিযুক্ত দপ্তরি সাকিবুল বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি আমার ব্যক্তিগত ল্যাপটপ বন্ধক রেখেছি। স্কুলের ল্যাপটপ আমার বাসায় ছিল।  বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক নাসরিন সুলতানা বলেন, সব মিটমাট হয়ে গেছে। ল্যাপটপ দপ্তরি সাকিবুলের কাছেই থাকত। তার কাছ থেকে ফেরত নিয়ে স্কুলে রাখা হয়েছে। গোসাইরহাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান কালবেলাকে বলেন, দপ্তরি সাকিবুল স্কুলের আইটি কাজগুলো করে। তাই স্কুলের ল্যাপটপ সেই ব্যবহার করে। তাছাড়া ওর ব্যক্তিগত ল্যাপটপ রয়েছে। স্কুলের ল্যাপটপ স্কুলের আলমিরাতেই রক্ষিত আছে।
১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

চৌদ্দগ্রামে আট লাখ টাকার ভুয়া ঋণ নিয়ে দপ্তরি লাপাত্তা
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের খিরনশাল ইসলামিয়া ফাযিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার দপ্তরি আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও দুই শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে জনতা ব্যাংক থেকে আট লাখ টাকার ঋণ উত্তোলন করে লাপাত্তা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত দপ্তরি আবদুর রহমান একই উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের সিংরাইশ গ্রামের আবদুল কাদেরের ছেলে। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা আত্মসাৎ করারও অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দপ্তরি আব্দুর রহমান ২০১০ সনে এই মাদ্রাসায় যোগদান করেন। যোগদানের পরে তিনি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমানের কাছের লোক হয়ে উঠেন। আব্দুর রহমানকে অধ্যক্ষ মাদ্রাসায় ক্যানটিন বসিয়ে চাকরির পাশাপাশি ব্যবসার সুযোগ করে দেন। আস্থাভাজন হওয়ায় অগ্রিম স্বাক্ষর নিয়ে শিক্ষকদের বেতন উত্তোলন, মাদ্রাসার কম্পিউটার ব্যবহার, বিভিন্ন আলমিরা ব্যবহার করতেন আব্দুর রহমান।  মাদ্রাসার বেশ কয়েক শিক্ষক-শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষের অবর্তমানে আব্দুর রহমানই সর্বেসর্বা। এই সুযোগে তিনি অধ্যক্ষের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে জনতা ব্যাংক, চৌদ্দগ্রাম শাখা থেকে শিক্ষক আবদুল হান্নানের নামে চলতি বছরের ১৩ই ফেব্রুয়ারি ৪ লাখ টাকা এবং কম্পিউটার অপারেটর মাছুমের বিল্লার নামে গত বছরের ২৩ অক্টোবর ৪ লাখ টাকার ঋণ উত্তোলন করেন আব্দুর রহমান। মাদ্রাসার ইংরেজি শিক্ষক আব্দুল হান্নান জানান, গত ১৫ দিন আগে আমি ব্যাংকে গেলে জানতে পারি আমার নামে ৪ লাখ টাকার একটি ঋণ উত্তোলন করা হয়েছে, অথচ আমি কোনোভাবেই ওই ঋণ করি নাই। দপ্তরি আব্দুর রহমান কীভাবে কাগজপত্র তৈরি করে আমার নামে ঋণ নিয়েছে, তা আমার জানা নেই। ইতোমধ্যেই আমি ব্যক্তিগতভাবে থানায় যোগাযোগ করেছি। বিজ্ঞ আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।  একই অভিযোগ করেন মাদ্রাসার কম্পিউটার অপারেটর মাছুম বিল্লা। তার নামেও ৪ লাখ টাকার ভুয়া ঋণ উত্তোলন করেছে আব্দুর রহমান।  এ বিষয়ে জনতা ব্যাংক চৌদ্দগ্রাম শাখার তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক (বর্তমান কর্মস্থল- কুমিল্লা কোটবাড়ী গন্ধমতি শাখা ব্যবস্থাপক) মোমিনুল হক জানান, যথাযথ নিয়ম মেনে ঋণগ্রহীতাদের স্বাক্ষর যাচাই করে দুজনের ঋণ অনুমোদন দিয়েছি। এতে কোনো জাল-জালিয়াতি হয়নি। জনতা ব্যাংক চৌদ্দগ্রাম শাখার ব্যবস্থাপক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, গত কিছুদিন আগে খিরনশাল মাদ্রাসার মাছুম নামীয় এক কর্মচারী জানান, তার ঋণের বিষয়ে সে জানে না। একই অভিযোগ করেন মাদ্রাসার আরেক শিক্ষক আব্দুল হান্নান। মূলত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানপ্রধানের প্রত্যয়ন, এমপ্লয়ি সার্টিফিকেট, এমপিও কপি, এমপিও ২ বছর পূর্ণ হওয়াসহ সকল শর্তাবলি মেনে ঋণ প্রদান করা হয়েছে।  অভিযোগ উঠেছে, এ দুটি ঋণ উত্তোলনের সময় আব্দুর রহমান ঋণের কাগজপত্রে গ্রাহকদের স্বাক্ষর জাল করেছেন এবং এ বিষয়ে তাকে ব্যাংকের একটি চক্র সহযোগিতা করেছেন। অভিযুক্ত আব্দুর রহমানের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিক দিন একাধিকবার কল করে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার পিতা আবদুল কাদের এবং ভগ্নিপতি আবদুল বারেক বলেন, গত ২৭ অক্টোবর থেকে আব্দুর রহমানের খোঁজ নেই। এখন পর্যন্ত নিখোঁজের কোনো সাধারণ ডায়েরি করেননি বলেও জানান তার বাবা। এ বিষয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমানকে প্রতিবেদন গত ১ নভেম্বর ব্যক্তিগত মোবাইলে কল করলে তিনি অভিযুক্ত আব্দুর রহমানের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে সরাসরি দেখা করবেন বলে জানান। প্রতিবেদন কয়েক দিন অধ্যক্ষের জন্য অপেক্ষা করে গত ৬ নভেম্বর সরাসরি মাদ্রাসার অধ্যক্ষের কক্ষে গিয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কিছুটা স্বীকার করে বলেন, গত ২৬ অক্টোবর আব্দুর রহমান ছুটি নিয়ে এরপর থেকে আর মাদ্রাসায় আসে নাই। আমরা পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেও তার সন্ধ্যান পাই নাই। মাদ্রাসায় কর্মরত ১ জন শিক্ষক এবং ১ জন কর্মচারীর নামে জনতা ব্যাংক থেকে ভুয়া ঋণ নেওয়া হয়েছে। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনির হোসেন জানান, দপ্তরি আব্দুর রহমান একাধিক শিক্ষক কর্মচারীর নামে জালিয়াতি করে ব্যাংক থেকে ঋণের বিষয়ে গত মাসের শেষে কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্তের আলোকে মাদ্রাসা থেকে তাকে শোকজ করা হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একেএম মীর হোসেন জানান, স্বাক্ষর জাল করে একাধিক শিক্ষক-কর্মচারীর নামে ঋণ নেওয়ার বিষয়টি আমি অধ্যক্ষের মাধ্যমে জেনেছি। ঋণের কাগজপত্রে অধ্যক্ষের স্বাক্ষর প্রমাণের বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। অধ্যক্ষ অভিযুক্ত পিয়ন আব্দুর রহমানকে শোকজ করেছেন বলে জানিয়েছেন।
২০ নভেম্বর, ২০২৩
X