জুনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম ১০-১২ শতাংশ বাড়তে পারে
আগামী মাসে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। এ পর্যায়ে বিদ্যুতের পাইকারি ও খুচরা মূল্য ১০ থেকে ১২ শতাংশ বাড়ানো হতে পারে। যদিও বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ নিয়ে কাজ করছেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে ভর্তুকি কমাতে এমনিতেই দাম বাড়াতে হতো। হঠাৎ করে ডলারের বিপরীতে টাকার দাম এক লাফে সাত টাকা কমে যাওয়ায় বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় আগামী মাস থেকে দাম সমন্বয়ের মাধ্যমে বাড়ানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। পাশাপাশি জ্বালানি তেলের দামও বাড়ানো হবে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পিডিবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। এদিকে জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলে এখন যে মূল্যস্ফীতি আছে, তা আরও বাড়বে। প্রচণ্ড চাপে পড়বে সাধারণ মানুষ। সামগ্রিক অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সাধারণ মানুষকে না খেয়ে জীবনযাপন করতে হবে। তারা বলছেন, উৎপাদন পর্যায়ে খরচ কমানো এবং জ্বালানির সদ্ব্যবহার বাড়াতে পারলে দাম বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না। বিদ্যুৎ ও পিডিবির দুই কর্মকর্তা জানান, টাকার অবমূল্যায়নের কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে অনেকখানি। এ কারণে জাতীয় বাজেটের আগে মূল্য সমন্বয়ের মাধ্যমে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে কাজ চলছে। জানা গেছে, ডলারের বিপরীতে এক টাকা অবমূল্যায়ন হলে পিডিবির বার্ষিক ব্যয় ৪৭৪ কোটি টাকা বেড়ে যায়। এ হিসেবে সাত টাকার অবমূল্যায়নের বিপরীতে পিডিবির বার্ষিক খরচ ৩ হাজার ৩১৮ কোটি টাকা বেড়ে যাবে। এজন্য জুনে বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। খুচরা ও পাইকারি বিদ্যুতের দাম কম-বেশি ১০ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এখনো এটি চূড়ান্ত করা হয়নি। এরই মধ্যে বিদ্যুতের দাম বছরে চার-পাঁচবার সমন্বয়ের কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। গত শুক্রবার তিনি বলেন, এ খাতে ধীরে ধীরে ভর্তুকি তুলে দেওয়া হবে। পিডিবির কর্মকর্তারা জানান, বিশ্বব্যাপী ও দেশের নানামুখী সংকটে গত বছরগুলোতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত সমানভাবে বিপাকে ফেলেছে সরকার ও গ্রাহকদের। ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৯ বার। শুধু গত দেড় বছরেরও কম সময়ে এ দাম বাড়ে চারবার। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্রাহক পর্যায়ে ৩ টাকা ৭৩ পয়সায় থাকা ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম ১৪০ শতাংশ বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৮ টাকা ৯৫ পয়সা। এর পেছনে কারণ হিসেবে তারা বলছেন, আমদানিনির্ভর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত প্রায় পুরোপুরি ডলারকেন্দ্রিক। তেল, কয়লা, এলএনজি কিংবা ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি, বিদ্যুৎকেন্দ্রের দেনা, বিদেশি কোম্পানির পাওনা—সবই পরিশোধ হচ্ছে ডলারে। পাশাপাশি আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নিতে গিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত ভর্তুকিমুক্ত করাসহ নানা সংস্কারের পথে হাঁটতে হচ্ছে সরকারকে। জানা গেছে, গত বছর দেশে ৬০০ কোটি মার্কিন ডলারের জ্বালানি তেল আমদানি করা হয়েছে। আর এলএনজি আমদানি ও টার্মিনাল ভাড়া বাবদ খরচ হয়েছে সাড়ে ৩০০ কোটি ডলার। জ্বালানি খাতের ব্যয় মোট আমদানি ব্যয়ের ১৫ শতাংশ। ডলারের বিপরীতে ৭ টাকা অবমূল্যায়নের কারণে টাকার অঙ্কে খরচ বাড়বে ৬ শতাংশ। ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম কালবেলাকে বলেন, বিদ্যুৎ খাতে অযৌক্তিক ব্যয় কমাতে হবে। ট্যাক্স-ভ্যাটের মতো রাজস্ব খাত থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত মুক্ত রাখতে হবে। জ্বালানির দক্ষ ব্যবহার বাড়াতে হবে। এ ছাড়া কিছু নীতি সংস্কার করলে দাম না বাড়িয়েও ঘাটতি সমন্বয় সম্ভব। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় কমিয়ে আনলে দাম বাড়াতে হবে না। সর্বশেষ সরকার নির্বাহী আদেশে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ায়। খুচরায় দাম সাড়ে ৮ শতাংশ এবং পাইকারিতে ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়। এর আগে ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করা হয়। ওই সময় আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে শূন্য থেকে ৫০ ইউনিটের দাম ৩ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪ টাকা ৩৫ পয়সা, শূন্য থেকে ৭৫ ইউনিটের দাম ৪ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪ টাকা ৮৫ পয়সা, ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিটের দাম ৬ টাকা ১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ৬৩ পয়সা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিটের দাম ৬ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ৯৫ পয়সা, ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিটের দাম ৬ টাকা ৬৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭ টাকা ৩৪ পয়সা, ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিটের দাম ১০ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১১ টাকা ৫১ পয়সা এবং ৬০০ ইউনিটের দাম ১২ টাকা ৩ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৩ টাকা ২৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন অধ্যাদেশ-২০২২ সংশোধনের কারণে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পায় সরকার।
৪ ঘণ্টা আগে

এক লাফে কেজিতে রসুনের দাম বাড়ল ১০০ টাকা
সপ্তাহের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলিতে রসুনের দাম কেজিতে বেড়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। সরবরাহ কমে যাওয়ায় রসুনের দাম বেড়েছে বলে দাবি স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। রসুনের দাম হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বুধবার (১৫ মে) সরেজমিনে হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রসুনের দোকানগুলোতে যথেষ্ট পরিমাণ সরবরাহ রয়েছে। গত সপ্তাহে রসুন কেজি প্রতি প্রকারভেদে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে প্রকারভেদে ১৮০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি ধরনের রসুন সপ্তাহখানিক আগে বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা। বর্তমান দাম বেড়ে তা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা দরে। বড় মাপের রসুন বিক্রিয় হয়েছিল ১২০ টাকা। বর্তমানে দাম বেড়ে তা বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা দরে। হিলি বাজারে রসুন কিনতে আসা ক্রেতা ফয়সাল মাহমুদ বলেন, গত সপ্তাহে রসুনের দাম কম ছিল। আজ রসুন কিনতে এসে দেখি ১০০ টাকা কেজিপ্রতি বেশি। দাম বেশি হওয়ার কারণে এক পোয়া কিনলাম। এত দামে রসুন কিনলে আর বাজার করব কি দিয়ে। তিনি বলেন, আমরা চাই রসুনের দাম যেন কমে আসে। সবকিছুর বাড়তি দামের কারণে সংসার চালাতে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজারে কেনাকাটা করতে আসা সৈকত হোসেন নামে এক যুবক বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। প্রতিদিন ৩০০ টাকা হাজিরায় কাজ করি। দুদিনের টাকা জমিয়ে বাজারে এসেছি। ৪০০ টাকা নিয়ে বাজার করার জন্য এসে দেখি রসুনের কেজি ২০০ টাকা। এখন এক কেজি রসুন কিনলে আর চাল,ডাল ও সবজির টাকা কোথায় পাবো। দাম না কমলে অনেক সমস্যায় পড়তে হবে। হিলি বাজারের রসুন বিক্রেতা আবু তাহের কালবেলাকে বলেন, হঠাৎ করেই রসুনের সরবরাহ কমে গেছে। দেশি রসুন দিয়েই বেশ কিছুদিন ধরে ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো হচ্ছিল। সরবরাহ ভালো থাকায় রসুনের দামও কম ছিল। তবে এখন ক্ষেত থেকে যেসব রসুন উঠছে এর অধিকাংশই শুকনো রসুন। তিনি বলেন, কৃষকরা বর্তমানে রসুন বিক্রি না করে পরবর্তী সময়ে বাড়তি আয়ের আশায় সংরক্ষণ করে রাখছেন এবং মজুদ বাড়াচ্ছেন। সেই সঙ্গে মোকামগুলোয় অনেক ব্যবসায়ী রসুন মজুদ করে রাখছেন। হিলি বাজার কমিটির সভাপতি ফজলুর রহমান কালবেলাকে বলেন, রসুনের দাম বৃদ্ধির বিষয় আমার জানা ছিল না। অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
১৩ ঘণ্টা আগে

‘এক মণ ধানেও মেলে না এক কেজি মাংস’
প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে বোরো ধানের বাম্পার ফলন ঘটেছে ময়মনসিংহের ফুলপুরে। ধান কেটে ঘরে তোলার কাজ শেষের দিকে। তবে ধানের মূল্য অনেক কম। এক মণ হাইব্রিড জাতের মোটা ধান বিক্রির টাকায় এক কেজি গরুর মাংসও কেনা যাচ্ছে না বলে দাবি কৃষকদের। জানা যায়, বাজারে ৪২ কেজিতে মণ হিসাবে এক মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে। এতে উপজেলার কৃষকদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।  উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের উত্তরকান্দা গ্রামের কৃষক রশিদ মিয়া বলেন, এভাবে সংসার চালানো যায় না। এক মণ ধান বিক্রি করে এক কেজি গরুর মাংসও কেনা যায় না। ধান বিক্রি করে কামলা খরচ আর জমির মালিকদের ঋণ দিতে দিতেই টাকা শেষ। আমুয়াকান্দা বাজারে ৫০ মণ ধান বিক্রি করেন বওলা গ্রামের সোহেল শেখ। তিনি বলেন, আমি ৪২ কেজি মণে ৭৪০ টাকা দরে ধান বিক্রি করেছি। ঢলকের নামে মণপ্রতি ২ কেজি অর্থাৎ ৫০ মণ ধানে আড়াইমণ (১০০ কেজি) বেশি দিতে হয়েছে। ঢলকের নামে প্রতি মণে ২ কেজি ধান বেশি নেওয়ায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, বতর্মানে এককেজি গরুর মাংস কিনতে গেলে ৮০০ টাকা গুনতে হয়। এক মণ ধান বিক্রি করলাম ৭৪০ টাকায়। কৃষক বুলবুল মিয়া জানান, বাজারে ধান বিক্রি করতে গেলে তারা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কম বলে। মহাজনদের ঋণ পরিশোধ ও ধান কাটার খরচ মেটাতে আমাদের বর্তমানে লোকসানে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। ঢলকের নামে ২ কেজি ধান বেশি নেওয়ার প্রথারও বিলুপ্তি চান কৃষকরা। তারা বলেন, নানা শর্তের বেড়াজালে সরকার ঘোষিত নির্ধারিত মূল্যে কৃষকরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে পারেন না। তাই আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মাঠপর্যায়ে অস্থায়ী সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্র করে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি কাঁচা ধান কেনার দাবি জানান তারা। উপজেলা কৃষি অফিসার ফারুক আহমেদ বলেন, ফুলপুর উপজেলায় ধানের ভালো ফলন হয়েছে। তবে কৃষি শ্রমিকের দাম চড়া থাকায় কৃষকদের ধান গোলায় তুলতে খরচ বেশি পড়েছে। ধানের দাম কম থাকায় বর্গাচাষিরা কিছুটা বিপাকে পড়েছেন।
১৪ মে, ২০২৪

মাংস ডিম পেঁয়াজের পর বাড়ল সবজির দাম
স্বস্তি দিচ্ছে না নিত্যপণ্যের বাজার। প্রতিদিনই কোনো না কোনো পণ্যের দাম বাড়ছে। খাবারের খরচ দিন দিন বাড়তে থাকায় হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রাজধানীর বাজারগুলোতে মাংস-ডিমের পর এবার বেড়েছে সবজির দাম। ঈদের পর থেকেই অল্প অল্প করে সবজির দাম বাড়ছিল। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাড়ে সব ধরনের মাংস ও ডিমের দামও। এর আগে সবজির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে গরমে সরবরাহ ও সংরক্ষণ ব্যাহত হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। এখন বলছেন, সরবরাহ সংকট ও আড়তদারদের সিন্ডিকেটের কারণে দাম বাড়ছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, দাম বেড়ে গেলে আমাদের বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়। দাম বাড়ানো-কমানো আমাদের হাতে নেই। আমরা শুধুই কিনে এনে কিছু লাভ রেখে বিক্রি করি। অন্যদিকে ক্রেতারা সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছেন। নানা অজুহাতে বাড়ানো হচ্ছে দাম। সরকারের নানা সংস্থার নানা উদ্যোগেও কমছে না। এভাবে তো চলতে পারে না। গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, আলু ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, টমেটো ৫০ থেকে ৬০, গাজর ৮০ থেকে ১০০, লম্বা বেগুন ৮০ থেকে ৯০, সাদা গোল বেগুন ৮০ থেকে ১০০, কালো গোল বেগুন ১০০, শসা ৬০, উচ্ছে ৫০ থেকে ৬০, করলা ৫০ থেকে ৭০, কাঁকরোল ৮০ থেকে ৯০, পেঁপে ৮০ থেকে ১০০, মিষ্টিকুমড়া চার ভাগের একভাগ ৪০, ঢ্যাঁড়শ ৬০, পটোল ৬০ থেকে ১০০, চিচিঙ্গা ৬০, ধুন্দল ৮০, ঝিঙা ৮০, বরবটি ৮০ থেকে ৯০, কচুরলতি ৭০ থেকে ৮০, কচুরমুখি ১৪০ থেকে ১৬০, কাঁচামরিচ ১০০ থেকে ১২০, ধনেপাতা ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকা, প্রতি ডজন লেবু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা করে। গত মাসের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, কোনো সবজির দাম তো কমেইনি; বরং ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। অল্প দামের সবজি হিসেবে পরিচিত পেঁপে গতকাল বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজিতে। গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এদিকে কাঁচামরিচের দামও এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। গত সপ্তাহে ১০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ১২০ টাকা। দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে সবজি বিক্রেতা আল আমিন বলেন, পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছেন। আমরা বেশি দামে কিনে তো কমে বিক্রি করতে পারি না। সামান্য লাভ রেখে বিক্রি করি। বাজার করতে আসা নূরজাহান বেগম বলেন, ‘সব সবজিরই দাম বেশি। কীভাবে কিনব? আগে হাফ কেজি মরিচ কিনতাম; আজ (গতকাল) ১০০ গ্রাম কিনলাম। আমাদের অনেক হিসাব করে চলতে হয়। মাছ, মাংস, ডিমে তো হাতই দেওয়া যায় না। যে পরিমাণ দাম তাতে করে সাধারণ মানুষ কীভাবে খাবে সেটা কেউ ভাবে না।’ আরেক ক্রেতা শাহেদ বলেন, সবজির দাম যেভাবে বাড়ছে, এভাবে চলতে পারে না। এর একটা সমাধান হওয়া প্রয়োজন। এদিকে গতকাল বাজারে মানভেদে দেশি পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, রসুন ২২০ থেকে ২৪০, আদা ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। দেশি রসুনের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে। আদা, রসুন-পেঁয়াজের দাম হুট করেই কেন বাড়ছে, জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা গোলাম রব্বানী বলেন, আমরা খুচরা ব্যবসায়ীরা কোনো কিছুরই দাম বাড়াই না। আড়তদারে বাড়ায়, আমরা সামান্য লাভে বিক্রি করি। তিনি বলেন, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে রসুন-পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। সামনে আরও বাড়ার সম্ভবনা আছে। এ ছাড়া গতকাল বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা কেজি, রুই মাছ ৩৬০ থেকে ৫৫০, কাতল ৪০০ থেকে ৮০০, কালিবাউশ ৪০০, চিংড়ি ৯০০ থেকে ১ হাজার ৪০০, কাচকি ৫০০, কই ৩০০ থেকে ৫০০, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৬০০, টেংরা ৫০০ থেকে ৮০০, বেলে ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০, বোয়াল ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা, রূপচাঁদা ৮০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম আরও বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে কক, দেশি ও লেয়ার মুরগির দামও। গতকাল ব্রয়লার মুরগি ২১০ থেকে ২২৫ টাকা কেজি, কক ৩৮০, লেয়ার ৩৩৫ ও দেশি মুরগি ৬৭০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০, খাসি ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি। আর মুরগির লাল ডিম ১৫০ টাকা এবং সাদাটা ১৩৫ টাকা ডজন বিক্রি হয়েছে। ডিমের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ডজনে ২০ টাকা। মুদি দোকানের পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। গতকাল প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫৫ টাকা কেজি, খোলা পোলাওয়ের চাল মানভেদে ১১০ থেকে ১৪০, ছোট মসুরের ডাল ১৪০, মোটা মুসর ডাল ১১০, বড় মুগ ডাল ১৬০, ছোট মুগ ডাল ১৯০, খেসারি ১২০, বুটের ডাল ১১৫, ডাবলি ৮০, ছোলা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৫ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৮০০ থেকে ৮১৫, খোলা সয়াবিন তেল ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে লুজ পাম অয়েল ১২৫ থেকে ১৩৫ টাকা, সুপার পাম অয়েল ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকা। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে ভোজ্যতেলের দাম বাড়তি। এদিকে ঝাঁজ ছড়াতে শুরু করেছে মসলা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের দাম বাড়ার সঙ্গে মসলার দাম বাড়তে শুরু করেছে। নতুন আমদানি করা মসলা বাজারে ঢুকলে দাম বেড়ে যাবে। গতকাল দেশি শুকনা মরিচ ৩৫০ থেকে ৪৪০ টাকা কেজি, আমদানি করাটা ৪৪০ থেকে ৫০০ টাকা, দেশি হলুদ ৩১০ থেকে ৪০০, আমদানি করা হলুদ ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। জিরা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৮৫০ টাকা, দারুচিনি ৫০০ থেকে ৬০০, লবঙ্গ ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০, এলাচ (ছোট) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৮০০ টাকা। ধনে ২২০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি এবং তেজপাতা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়।
১৪ মে, ২০২৪

মধুমাস জ্যৈষ্ঠর আগেই আমে সয়লাব সাতক্ষীরার বাজার, দাম দ্বিগুণ
মধুমাস জ্যৈষ্ঠ আসার আগেই সাতক্ষীরার বাজারে উঠতে শুরু করেছে সুস্বাদু বিষমুক্ত গোবিন্দভোগ, গোলাপখাস, সরিখাস, গোপালভোগ ও বোম্বাইসহ দেশি জাতের নানান পাকা আম। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে প্রতি বছর আগেভাগেই সাতক্ষীরার আম বাজারে আসে। সাতক্ষীরা সুলতানপুর বড় বাজার কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রওশন আলী বলেন, ভৌগলিক অবস্থানের কারণে সাতক্ষীরার আম প্রতি বছর আগেভাগেই বাজারে আসে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা আমের জন্য সাতক্ষীরায় আসতে শুরু করেছেন। শ্রেণিভেদে ও মান হিসেবে প্রতি মণ আম বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকায়। তিনি আরও বলেন, প্রশাসনের নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার (৯ মে) থেকে জেলাব্যাপী আম ভাঙা শুরু হয়েছে। আমে কেউ যেন কোনো ধরনের কেমিক্যাল মেশাতে না পারে সেটিও তদারকি করা হচ্ছে। শনিবার থেকে গোবিন্দভোগ বাজারে এসেছে। আগামী ২১ মে হিমসাগর আম বাজারে আসবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় কয়েকটি জাতের আম দিয়ে ৯ তারিখ থেকে সাতক্ষীরায় আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ২২ মে হিমসাগর, ২৯ মে ল্যাংড়া ও ১০ জুন আম্রপালি আম সংগ্রহ হবে। মনে রাখতে হবে গাছের সব আম এক সঙ্গে পাকে না। সুতরাং আমের রং আসার আগে না পাড়ার অনুরোধ জানান তিনি।
১২ মে, ২০২৪

ডিম-মুরগির পর এবার বেড়েছে পেঁয়াজের দাম
কয়েকদিন আগেই বেড়েছিল ডিম-মুরগির দাম। এবার বাড়ল পেঁয়াজের দাম। রাজধানীর বাজারগুলোয় সাত দিনের ব্যবধানে প্রতি ডজন ডিম, ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির প্রতি কেজি দাম ২০-২৫ টাকা বেড়েছে। এর পরই পেঁয়াজের দাম বাড়ল ১০-১৫ টাকা। গতকাল শনিবার কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল বাজার, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার ও ফার্মগেট এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। খুচরা বাজারে ফার্মের মুরগির বাদামি রঙের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, যা সাত দিন আগে ছিল ১২০-১২৫ টাকা। ফার্মের মুরগির সাদা ডিমের দাম এলাকাভেদে দাঁড়িয়েছে ১৩৫-১৪০ টাকা, যা দিন সাতেক আগে ছিল ১১০-১২০ টাকা। এ ছাড়া সোনালি মুরগি কেজিপ্রতি ৩৭০-৩৮০ ও ব্রয়লার আকারভেদে ২২০-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি মুরগিতে দাম বেড়েছে ২০-৩০ টাকা। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মুরগির মাংস কিনছিলেন সাকিল শেখ। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগেও প্রতি কেজি ব্রয়লার কিনেছি ২০০ টাকায়। এখন দেখছি কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। বিক্রেতা এর কারণ হিসেবে বললেন, অতি গরমে খামারগুলোয় মুরগি মরে যাচ্ছে। এতে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে পারছেন না খামারিরা। তাই তারা দাম বাড়তি রাখছেন। আমাদেরও কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা তন্ময় বলেন, আড়তদাররা চাহিদা অনুযায়ী মুরগি দিচ্ছেন না। দামও বেশি নিচ্ছে। ফলে আমাদের বাড়তি দামে মুরগি কিনে বিক্রি করতে হচ্ছে। পাইকাররা বলেছেন, খামারিদের অনেক মুরগি মারা গেছে। তাই খামারি পর্যায়ে মুরগির দরবৃদ্ধিতে স্বাভাবিকভাবে খুচরা পর্যায়ে দাম বেড়েছে। ডিম বিক্রি করছিলেন বাবু। তিনি বলেন, সম্প্রতি তীব্র গরমে অনেক খামারে মুরগি মারা গেছে। ব্যাহত হয়েছে ডিম উৎপাদন। এতে সরবরাহ সংকট দেখা দেওয়ায় দাম তুলনামূলক বেড়েছে। এদিকে কাঁচাবাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও গতকাল প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১০-১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে মানভেদে ৬৫-৭৫ টাকায়। কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে আলু মানভেদে বিক্রি হয় ৫০-৫৫ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ১২০, লেবু প্রতি ডজন ৭০, মাঝারি আকারের লাউ প্রতি পিস ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়। এদিন খুচরা বাজারে মোটা চাল কেজিপ্রতি রকমভেদে বিক্রি হয় ৫০-৫৫, সরু চাল (নাজির/মিনিকেট) ৬৪-৭৫ টাকায়। প্রতি লিটার সয়াবিন তেল (খোলা) ১৪৫-১৫৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল বিক্রি হয় ৮১৫ টাকায় । প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম রকমভেদে ছিল ১১০-১২০ টাকা। কারওয়ান বাজারে খুচরা ব্যবসায়ী আলম বলেন, হুট করে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। পাইকাররা বলছেন, সরবরাহ কম। তাই দাম বেশি দিয়ে কিনে বাড়তি দামে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করতে হচ্ছে। তাই লোকসান এড়াতে আমরাও ক্রেতাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছি।
১২ মে, ২০২৪

আজ থেকে নতুন দামে কিনতে হবে সোনা 
দেশের বাজারে আবারও বেড়েছে সোনার দাম। বর্তমান বাজার দরে সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ১ হাজার ৮৩২ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১৭ হাজার ২৮২ টাকা। আজ রোববার (১২ মে) থেকে এই দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। এর আগে গত ৮, ৬ ও ৫ মে তিন দফায় সোনার দাম বাড়ানো হয়। ৮ মে প্রতি ভরি সোনার দাম ৪ হাজার ৫০২ টাকা এবং ৬ মে ৭৩৫ টাকা ও ৫ মে প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়ানো হয়। এখন আবার দাম বাড়ানোর ফলে চার দফায় ভরিতে সোনার দাম বাড়লো ৮ হাজার ১১৯ টাকা। আট দফা দাম কমার পর এখন চার দফায় সোনার দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে বাজুস বলছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম বেড়েছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা রোববার (১২ মে) থেকে কার্যকর হবে। শনিবার (১১ মে) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে নতুন করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৮৩২ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ২৮২ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৭৫০ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১১ হাজার ৯৫১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৫০৫ টাকা বাড়িয়ে ৯৫ হাজার ৯৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ২৪৯ টাকা বাড়িয়ে ৭৯ হাজার ৩৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অবশ্য সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের এর থেকে বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে সোনার গহনা বিক্রি করা হয়। সেই সঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে আগামীকাল থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের ১ লাখ ২৬ হাজার ৬৪৫ টাকা গুনতে হবে।  
১২ মে, ২০২৪

দেশে কোকোয়া চাষের বিপুল সম্ভাবনা, কমতে পারে চকোলেটের দাম
দক্ষিণ আমেরিকার আমাজনের বহুল উৎপাদিত ফল চকোলেট তৈরির কাঁচামাল ‘কোকোয়া’ চাষের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশেও। প্রতি বছর বিদেশ থেকে অন্তত ৫০০ কোটি টাকার ‘কোকোয়া’ আমদানি করা হয়। ফলে দেশে উৎপাদন ছড়িয়ে দিতে পারলে এ অর্থ বাঁচানো সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশে সাধারণত ভারত ও পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ ‘কোকোয়া’ আমদানি করা হয়। তবে দেশেও এর চাষের উপযোগিতা পরীক্ষার জন্য ২০১৪ সালে ভিয়েতনাম থেকে গবেষণার জন্য বাংলাদেশে বেশ কিছু ‘কোকোয়া’ ফলের চারা আনা হয়। বর্তমানে পরিণত হয়ে ফল দিচ্ছে। পরিপক্ব ফল তুলে একদিকে যেমন খাওয়া যাচ্ছে, আবার প্রক্রিয়া করে তৈরি করা হচ্ছে চারাগাছও। ঢাকার অদূরে সাভারের হর্টিকালচার সেন্টারে ‘কোকোয়া’ ফলের দুটি গাছ রোপণ করা হয়েছিল। সেগুলো পরিপক্ব হয়ে এখন ফল দিচ্ছে। হর্টিকালচার সেন্টার সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৪ সালে বাংলাদেশে এই ফলের চারা এনে রোপণ করা হয়। সাভারে দুটি গাছ রয়েছে। প্রায় ৩ থেকে ৪ বছর ধরে গাছে ফুল ও ফল ধরছে। হর্টিকালচার সেন্টারের উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা দিলীপ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘কোকোয়া ফলের ভেতরে থাকা বীজ থেকে এটির চারা উৎপাদন করা যায়। এ ছাড়া কলমের মাধ্যমেও চারা উৎপাদন করা যায়। চারা রোপণের ৫ থেকে ৬ বছর পর থেকে ফল ধরা শুরু করে। বছরে ৩ থেকে ৪ বার ফলন হয়। ফলে সারা বছরই কমবেশি ফল পাওয়া যায়। এ ফলের গাছে তেমন কোনো রোগ হয় না বললেই চলে। দেশীয় ছাত্রাপোকা (মিলিবাগ) হলেও সেটি আপনা-আপনি প্রতিরোধ করে ফেলে।’ তিনি বলেন, ‘ফুল থেকে ফল হয়ে সেটি পাকতে সময় লাগে ৩ থেকে ৪ মাস। পাকার পর কোনোটা ধূসর কোনোটা হলুদ রং ধারণ করে। ভেতরে ফল থাকে। খোসা ছাড়িয়ে ফল বের করতে হয়। পাকা ফল খাওয়া যায়। স্বাদ টক মিষ্টি। আবার ফল বের করে সেটিকে প্রক্রিয়াজাত করে চকোলেটের পাউডার তৈরির জন্য প্রস্তুত করা যায়।’ এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ফলের রং বাদামি, ৩০ সেন্টিমিটার লম্বা ও ১০ সেন্টিমিটার পুরু, বাইরের আবরণ চামড়ার মতো শক্ত। প্রতিটি ফলে ২০ থেকে ৪০টিরও বেশি বীজ থাকে। বীজগুলো প্রথমে কলাপাতায় মুড়িয়ে গাজানো হয়। পরে রোদে শুকিয়ে সেদ্ধ করে খোসা ছাড়ালেই পরিষ্কার একটি শাঁস পাওয়া যায়। এই শাঁসকে বলা হয় কোকোবিন। কোকোবিনের গুঁড়োই চকোলেট পণ্য তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়। উৎকৃষ্ট মানের চকোলেট, মাখন, আইসক্রিম, রুটি, পুডিং, প্রসাধনসামগ্রী ও পানীয় তৈরিতে কোকো ফল ব্যাপকহারে ব্যবহৃত হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘পূর্ণবয়স্ক একটি ‘কোকোয়া’ গাছ থেকে ৩৫ কেজি ফল পাওয়া যায়। প্রক্রিয়াজাত করলে সেখান থেকে ৩০ কেজি চকোলেট পাউডার পাওয়া যাবে। প্রতি কেজি চকোলেট পাউডারের দাম বর্তমানে প্রায় ৪০ ডলার। ওই হিসেবে একটি গাছ থেকে বছরে এক হাজার ডলারের বেশি আয় করা সম্ভব।’ সাভারের রাজালাখের হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যানতত্ত্ববিদ মো. জামিউল ইসলাম বলেন, ‘চারা বেড়ে ওঠার জন্য এসিডিক বা অম্লীয় মাটির প্রয়োজন হয়। সাভারের যে লাল মাটি সেটি এই গাছের চারা বেড়ে ওঠার উপযোগী। আমাদের এখানে গাছগুলো বেড়ে উঠেছে। এখন ফল দিচ্ছে। একইভাবে দেশের পাহাড়ি অঞ্চলের মাটিও উপযোগী। ছাদবাগানেও কোকো ফল চাষ করা যায়।’ তিনি বলেন, ‘দেশের পাহাড়ি অঞ্চলে অন্তত ৫ থেকে ৭ লাখ হেক্টর অনাবাদী জমি রয়েছে। যেখানে এই গাছ চাষের উপযোগী মাটি রয়েছে। ভিটামিন এ বি সি ই ও কে সমৃদ্ধ এই ফলের চকোলেট পাউডার শতভাগ বাংলাদেশকে বিদেশ থেকে আনতে হয়। দেশে এটির উৎপাদন বাড়লে আয়ের বড় পথ উন্মোচন হতে পারে।’ এই ফলের চাষ বৃদ্ধিতে সরকারি উদ্যোগ রয়েছে কি না প্রশ্নে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চারা উৎপাদন করছি। সেগুলো নামমাত্র মূল্যে ও বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। অনেকেই এটি চাষ করছেন। উৎসাহিত হচ্ছেন চাষে। এটির আরও প্রসারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রকল্প প্রস্তাব জমা দেওয়া রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সবাই আন্তরিক।’
১১ মে, ২০২৪

সম্পাদকীয় / নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছেই
তেমন কোনো কারণ ছাড়াই বাড়ছে নিত্যপন্যের দাম। গত কয়েক সপ্তাহ দেশে তীব্র তাপ প্রবাহের প্রভাব পড়েছিল নিত্যপন্যের বাজারে। এতে সপ্তাহ ব্যবধানে দাম বেড়েছিল মাছ-মাংস, সবজিসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের। এরপর স্বস্তির বৃষ্টির কারণে দেশে তাপ প্রবাহ কমলেও নিত্যপন্যের বাজারে উত্তাপ কমেনি। লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরছে না কিছুতেই; বরং দাম বাড়ছে প্রতিনিয়ত। অস্থির এ বাজার পরিস্থিতি চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া যেন আর কিছুই করার নেই! গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল কাঁচাবাজারসহ অন্যান্য বাজারে সপ্তাহ ব্যবধানে আরও দাম বেড়ে গেছে মাছ-মাংস, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, তীব্র গরমের কারণ ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন ব্যবস্থা। এতে বাজারে সরবরাহ ঘাটতি দেখা দেয়ায় দাম বাড়ছে পণ্যের। আর ক্রেতারা বলছেন, এ বছর রোজার আগে থেকেই বেড়েছে পণ্যের দাম। রোজায় সেটি আর চড়েছিল। কিন্তু ঈদের পরও সেই দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চাপ বাড়ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের সংসারে। এ বছর রোজায় কারণ ছাড়াই পণ্যের দাম বেড়েছিল। এখন গরমের অজুহাত নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন লেগে গেছে। অসহায় ক্রেতাদের এখন চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। ব্যবসায়ীরাও বুঝে গেছে, দাম বাড়ালেও পণ্য কিনবে সাধারণ মানুষ। তাই খেয়াল-খুশি মতো দাম বাড়াচ্ছে পণ্যের। বাজারে প্রতিকেজি বেগুন ৬০-৯০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পেঁপে ৮০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০ টাকা ও কহি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ধুন্দল ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, আলু ৫০-৫৫ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা ও কাঁকরোল ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম চড়েছে কাঁচা মরিচেরও। পাইকারি পর্যায়ে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি পিস লাউ ৬০ টাকা ও চালকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। আর বাজারে লালশাকের আঁটি ১৫ টাকা, পাটশাক ১৫ টাকা, পুঁইশাক ২৫ টাকা, কলমিশাক ১৫ টাকা ও পালংশাক ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারেও। প্রকারভেদে মাছের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ২০ থেকে ১০০টাকা । নিত্যপণ্যের অস্থির বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার তদারকির দাবি ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়। বিক্রেতারা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে। দেখা যায়, পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও তা বেশি দামে বিক্রি হয়। দ্রব্যমূল্যের এই অযৌক্তিক বৃদ্ধির পেছনে কাজ করে বাজার সিন্ডিকেট বা চক্র। তারা যোগসাজশের মাধ্যমে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। কখনো কখনো তারা পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। নানা অজুহাত তুলেও বাড়ানো হয় পণ্যের দাম। এ অবস্থায় বেশি দামে পণ্য ক্রয় করা ছাড়া ভোক্তাদের কোনো উপায় থাকে না। এভাবে দ্রব্যমূল্য, বিশেষত নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করা অপরাধ বটে। এজন্য সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের শাস্তি হওয়া উচিত; কিন্তু আমাদের দেশে এ ধরনের ঘটনা বিরল। ফলে কারসাজি করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের এ প্রবণতা প্রতিরোধ করার দায়িত্ব সরকারের। ব্যবসায়ীরা কায়েমি স্বার্থে ইচ্ছামতো নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবে, আর সরকার হাত গুটিয়ে বসে থাকবে, এটা চলতে পারে না। আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে বাজার নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।
১১ মে, ২০২৪

তেলের সঙ্গে কমবে-বাড়বে বিদ্যুতের দাম : প্রতিমন্ত্রী
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, তেলের দাম প্রতি মাসে কমবে বা বাড়বে। এরই ধারাবাহিকতায় বিদ্যুতের দামও বছরে চারবার কমবে-বাড়বে। প্রয়োজনে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় লোডশেডিং দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। শুক্রবার (১০ মে) রাজধানীর বারিধারায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, সামনের হিটওয়েভের জন্য প্রস্তুতি আছে। সময়মতো অর্থের জোগান দেওয়া হলে কোনো সমস্যা হবে না। প্রয়োজন হলে ঢাকা এবং আশপাশের এলাকায় লোডশেডিং দেওয়া হবে। তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, তেলের দাম প্রতি মাসে কমবে বা বাড়বে। এরই ধারাবাহিকতায় বিদ্যুতের দামও বছরে চারবার কমবে-বাড়বে। কারণ, ধীরে ধীরে বিদ্যুতের ভর্তুকি থেকে বেরিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে সরকার। ডলারের দাম বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ডলারের দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে বাড়তি চাপ তৈরি হবে। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
১০ মে, ২০২৪
X