প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে বোরো ধানের বাম্পার ফলন ঘটেছে ময়মনসিংহের ফুলপুরে। ধান কেটে ঘরে তোলার কাজ শেষের দিকে। তবে ধানের মূল্য অনেক কম। এক মণ হাইব্রিড জাতের মোটা ধান বিক্রির টাকায় এক কেজি গরুর মাংসও কেনা যাচ্ছে না বলে দাবি কৃষকদের।
জানা যায়, বাজারে ৪২ কেজিতে মণ হিসাবে এক মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে। এতে উপজেলার কৃষকদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের উত্তরকান্দা গ্রামের কৃষক রশিদ মিয়া বলেন, এভাবে সংসার চালানো যায় না। এক মণ ধান বিক্রি করে এক কেজি গরুর মাংসও কেনা যায় না। ধান বিক্রি করে কামলা খরচ আর জমির মালিকদের ঋণ দিতে দিতেই টাকা শেষ।
আমুয়াকান্দা বাজারে ৫০ মণ ধান বিক্রি করেন বওলা গ্রামের সোহেল শেখ। তিনি বলেন, আমি ৪২ কেজি মণে ৭৪০ টাকা দরে ধান বিক্রি করেছি। ঢলকের নামে মণপ্রতি ২ কেজি অর্থাৎ ৫০ মণ ধানে আড়াইমণ (১০০ কেজি) বেশি দিতে হয়েছে।
ঢলকের নামে প্রতি মণে ২ কেজি ধান বেশি নেওয়ায়ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, বতর্মানে এককেজি গরুর মাংস কিনতে গেলে ৮০০ টাকা গুনতে হয়। এক মণ ধান বিক্রি করলাম ৭৪০ টাকায়।
কৃষক বুলবুল মিয়া জানান, বাজারে ধান বিক্রি করতে গেলে তারা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কম বলে। মহাজনদের ঋণ পরিশোধ ও ধান কাটার খরচ মেটাতে আমাদের বর্তমানে লোকসানে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে।
ঢলকের নামে ২ কেজি ধান বেশি নেওয়ার প্রথারও বিলুপ্তি চান কৃষকরা। তারা বলেন, নানা শর্তের বেড়াজালে সরকার ঘোষিত নির্ধারিত মূল্যে কৃষকরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে পারেন না। তাই আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মাঠপর্যায়ে অস্থায়ী সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্র করে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি কাঁচা ধান কেনার দাবি জানান তারা।
উপজেলা কৃষি অফিসার ফারুক আহমেদ বলেন, ফুলপুর উপজেলায় ধানের ভালো ফলন হয়েছে। তবে কৃষি শ্রমিকের দাম চড়া থাকায় কৃষকদের ধান গোলায় তুলতে খরচ বেশি পড়েছে। ধানের দাম কম থাকায় বর্গাচাষিরা কিছুটা বিপাকে পড়েছেন।
মন্তব্য করুন