তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে পশ্চিমবঙ্গ তাপমাত্রা ছাড়াল ৪৫ ডিগ্রি
পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গত সোমবার দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল পশ্চিমবঙ্গে, ৪৫.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গসহ দেশটির চার রাজ্যে আগামী দু-তিন দিন চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া বিহার, ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে তাপপ্রবাহের দাপট চলবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। খবর আনন্দবাজার অনলাইনের। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বেসরকারি স্কুলগুলোর কেউ কেউ অনলাইনের মাধ্যমে পড়াশোনা চালাচ্ছে। কিছু বেসরকারি স্কুলে আবার সকাল ৭টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ক্লাস চালু রয়েছে। তবে সকাল ১১টার পর থেকেই কলকাতার রাস্তাঘাট কার্যত খাঁ খাঁ করছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। আর নিতান্তই যারা বেরোচ্ছেন, সূর্যের প্রখর তাপ থেকে বাঁচতে সারা শরীর কাপড়ে মুড়িয়ে নিচ্ছেন। বাইরে বেরোলেও তাপপ্রবাহের হাত থেকে রক্ষা পেতে সকালসকাল কাজ সেরে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন সাধারণ মানুষ। ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, পূর্ব ভারতে তাপপ্রবাহের দাপট দু-তিন দিন ধরে যেমন চলবে, আবার দক্ষিণ ভারতে এ পরিস্থিতি জারি থাকবে আগামী পাঁচ দিন। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডের কিছু অংশে আজ বুধবার পর্যন্ত, আবার কোথাও কোথাও কাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি বজায় থাকবে। অন্যদিকে কর্ণাটক, তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশে ৩ মে পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চলবে। তেলেঙ্গানা এবং সিকিমের কিছু অংশেও তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সোমবার দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল পশ্চিমবঙ্গের কলাইকুণ্ডায় (৪৫.৪ ডিগ্রি)। তার পরই ছিল অন্ধ্রপ্রদেশের নান্দিয়াল (৪৫ ডিগ্রি), তৃতীয় স্থানে ছিল ওড়িশার বারিপদা এবং পশ্চিমবঙ্গের পানাগড়। সোমবার ওই দুই জায়গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওইদিন ৪৪ ডিগ্রির ওপরে ছিল পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর, পানাগড় এবং সিউড়ি।
০১ মে, ২০২৪

১৪ লাখসহ মামলার খরচ মেটাতে হবে মমতাজকে
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া বাংলাদেশের কণ্ঠশিল্পী সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমকে ১৪ লাখ টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে। সেই সঙ্গে তাকে মামলা, আইনজীবীদের খরচ ও যাতায়াতের খরচ মেটাতে হবে বলে দাবি করেছেন মামলার বাদী শক্তিশঙ্কর বাগচী। গত ৯ আগস্ট ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুর আদালতে হাজিরা তারিখ ছিল মমতাজের। বাংলাদেশ হাই কমিশনের মাধ্যমে জানানো হয় এই মুহূর্তে একটি কনসার্টের কারণে কানাডায় অবস্থান করছেন গায়িকা। তাই আদালতে তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন না। এমন অবস্থায় আগাম নোটিশ থাকা সত্ত্বেও আদালতে গায়িকা হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। সে সময় শক্তিশঙ্কর বাগচী আদালতে এসব দাবির কথা বলেন।  প্রতারণাসহ একাধিক মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ১৫ বছর আগের এই মামলায় এ নিয়ে চতুর্থবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলো। জানা গেছে, ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য সেখানকার শক্তিশঙ্কর বাগচী নামে এক ইভেন্ট অরগানাইজারের সঙ্গে মমতাজের লিখিত চুক্তি হয়। সেইমতো ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বহরমপুরের একটি অনুষ্ঠানে প্রধান শিল্পী হিসেবে মমতাজকে প্রায় ১৪ লাখ রুপির বিনিময়ে বায়না করেছিলেন উদ্যোক্তারা। তবে টাকা নেওয়ার পরও অনুষ্ঠানে হাজির হননি গায়িকা। পরে টাকা ফেরত দিতেও অস্বীকার করেন মমতাজ। এ ঘটনায় চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ নিয়ে বহরমপুর আদালতে একাধিক ধারায় মামলা করেন শক্তিশঙ্কর। এই মামলায়, ২০০৯ সালে মমতাজের বিরুদ্ধে সমন জারি করে আদালত। পরে সমন কার্যকর না করায় তার বিরুদ্ধে জারি হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। এরই মধ্যে নিম্ন আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়ে আসেন গায়িকা। পরে নিম্ন আদালতের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শক্তিশঙ্কর বাগচী। ২০১০ সালে নিম্ন আদালতের নির্দেশ খারিজ করে মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রাখে কলকাতা হাইকোর্ট। এরপর একে একে তিনবার আগাম জামিন নেন এ গায়িকা। জানা গেছে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর মামলার যে অবস্থা তাতে দেশে ফিরলেই মমতাজ বেগমকে আসতে হবে বহরমপুরে এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে মর্যাদা দিতে হবে। একটাই মাত্র রক্ষাকবচ মমতাজের, তিনি সংসদ সদস্য। তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে ভারতীয় পুলিশকে বাংলাদেশের সংসদের স্পিকারের অনুমোদন নিতে হবে। যেহেতু এটি ফৌজদারি মামলা তাই পুলিশের ধারণা স্পিকারের অনুমতি তারা পাবে। এ বিষয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের সঙ্গে যোগাযোগের করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি দেশের বাইরে থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। শক্তিশঙ্কর বাগচী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তার সাথে আমার চুক্তি হয়েছিল। বিনিময়ে তিনি ১৪ লাখ রুপি নিয়েছিলেন আমার থেকে। এরপর তিনি শো করেননি। যার জন্য আমাকে বড়সড় আর্থিক ক্ষতি ছাড়াও হেনস্তার মুখে পড়তে হয়েছিল। আমি এ ঘটনার পর বারবার ঢাকায় যাই। তাকে অনুরোধ করি, আমার অনুষ্ঠান করে দেওয়ার জন্য। সব মিলিয়ে তাকে ৭৫ হাজারবার আমি ফোন করেছি। সমস্ত ফোন কলের ডিটেলস আমি আদালতে পেশ করেছি। এরপর আদালত তার বিরুদ্ধে সমন জারি করেছিল। কিন্তু তিনি আমাকে চেনেন না বলে সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হলে তিনি মামলায় সহযোগিতা করবেন বলে আগাম জামিনও নেন। কিন্তু তিনি কোনো প্রকার সহযোগিতা করছেন না।’
১৪ আগস্ট, ২০২৩
X