নানা আয়োজনে মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবস পালিত
মাসিক বা ঋতুস্রাব প্রজনন চক্রের সবচেয়ে প্রাকৃতিক এবং অপরিহার্য অংশগুলোর একটি হলেও এখনও এটি একটি নিষিদ্ধ বা ট্যাবু বিষয় এবং শুধুমাত্র একটি মেয়েলি সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হয়। মাসিক নিয়ে সমাজে অনেক ধরণের কুসংস্কারের জন্য দৈনন্দিন কাজে নারীদের তৎপরতা বাধাগ্রস্ত হয় এবং প্রায়ই তাদেরকে পারিবারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাঁধা দেওয়া হয়। এ বিষয়ে খোলামেলাভাবে আলোচনা করা হয় না, এবং পরিবার বা স্কুল পর্যায়ে যথাযথ নির্দেশনা দেওয়া হয় না।  মাসিকের ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে ও এ বিষয়ে নীরবতা ভাঙতে, এবং নারী ও মেয়েরা যেন সুরক্ষিতভাবে, সম্মানের সঙ্গে তাদের মাসিক স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি পরিচালনা করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে প্রতি বছর, ২৮ মে বিশ্বব্যাপী মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবস পালন করা হয়। এ বছর মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবসের প্রতিপাদ্য হল ‘আসুন, সবাই মিলে গড়ি #মাসিক-বান্ধব পৃথিবী’। মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবস দিবস উপলক্ষে বাংলদেশের মাসিক স্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যবিধি (MHM) প্ল্যাটফর্মের আয়োজিত একটি অনুষ্ঠনে বিভিন্ন খাতের ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন, যারা বাংলাদেশে নারী ও কিশোরীদের জন্য মাসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন এবং প্রচারে অবদান রেখেছেন। এ আয়োজনে পরিবর্তনের গল্প, সরকারি অঙ্গীকার এবং উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়, যা মাসিক স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধির সমস্যাগুলো অতিক্রম করতে সহায়তা করবে। রাজধানীর লেকশোর হোটেলে মঙ্গলবার (২৮ মে) অনুষ্ঠানটি পালিত হয়। অনুষ্ঠানটি শুরু হয়েছিল প্ল্যাটফর্মের চেয়ারপার্সন হাসিন জাহানের উদ্বোধনী ভাষণ দিয়ে। তার বক্তব্যে তিনি বাংলাদেশে মাসিক স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনার কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সম্মিলিত প্রয়াসের গুরুত্ব তুলে ধরেন। এই দিনে এমএইচএম প্ল্যাটফর্মের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যদের দ্বারা পরিবর্তনমূলক গল্প প্রদর্শিত হয়, যার মধ্যে রয়েছেন মুশফিকা জামান সাটিয়ার (সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজর, নেদারল্যান্ডস দূতাবাস, বাংলাদেশ) এবং অলক কুমার মজুমদার (কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর-সিমাভি)। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ শামীম আলম, যুগ্ম সচিব, পিএসবি, স্থানীয় সরকার বিভাগ; ডা. শেখ দাউদ আদনান, পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ও লাইন ডিরেক্টর, কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর; প্রফেসর ড. একিউএম শফিউল আজম, পরিচালক, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।  বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনস্থ পলিসি সাপোর্ট অধিশাখার যুগ্ম সচিব, মোহাম্মদ শামীম আলম, মাসিক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং এই অধিশাখার নেতৃত্বে তৈরি জাতীয় মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা স্ট্রাটেজি ২০২১-এর গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে পলিসি সাপোর্ট অধিশাখা এই স্ট্রাটেজির ভিত্তিতে কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে।  স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডা. শেখ দাউদ আদনান বলেন, মাসিককে ঘিরে কুসংস্কারের কারণে মেয়েরা এবং নারীরা মাসিকের সময় অস্বাস্থ্যকরভাবে তাদের মাসিক ব্যবস্থাপনা করেন যার ফলে তারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন।  মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের প্রফেসর ড. এ. কিউ. এম শফিউল আজম বলেন, প্রাথমিকভাবে ১০০০টি স্কুলে শুরু হওয়া ‘জেনারেশন ব্রেকথ্রু’ প্রোগ্রামটি ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেয়েছে, যা আমাদের কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্য ও উন্নয়নের প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের কথা বলে। পরবর্তী প্রজন্মকে মাসিক স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও ব্যবহারিক শিক্ষা প্রদানের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এখন এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগটি সারা বাংলাদেশের সমস্ত স্কুলে সম্প্রসারণের জন্য নিবেদিত। অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ পর্ব ছিল যুব ও কিশোর সম্মিলন, যা তরুণ অংশগ্রহণকারীদের মাসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে তাদের মতামত ও অভিজ্ঞতা প্রকাশ করার একটি সুযোগ করে দেয়। এই অধিবেশনটি আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং কার্যকর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তৈরির জন্য সংলাপ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াগুলিতে দেশের তরুণ সমাজকে জড়িত করার গুরুত্ব তুলে ধরে। এমএইচএম প্ল্যাটফর্মএর চলমান উদ্যোগগুলো নিয়েও এ অনুষ্ঠানে আলোচনা হয়, যার মধ্যে রয়েছে একটি ব্যাপক মোবাইল-ভিত্তিক এমএইচএম অ্যাপ্লিকেশন, এবং সফল অ্যাডভোকেসি যা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত স্যানিটারি প্যাডের উপর থেকে VAT মওকুফ করার ব্যবস্থা করতে পেরেছে। এই সাফল্যগুলো নারী ও কিশোরীদের মাসিক ব্যবস্থাপনা সহজ করতে সুলভ ও সাশ্রয়ী মেনস্ট্রুয়াল পণ্য এবং তথ্য নিশ্চিত করার কিছু উদ্যোগ। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশের নারী ও মেয়েদের স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনার চাহিদা মেটাতে অব্যাহত কার্যক্রম ও উদ্ভাবনের আহ্বান দিয়ে সমাপ্ত হয়। মাসিক হয় এমন মেয়েদের এবং নারীদের নিরাপত্তা এবং মর্যাদার সঙ্গে মাসিক ব্যবস্থাপনার জন্য নীতিগত ও পদ্ধতিগত সমাধানের পাশাপাশি মাসিকের প্রয়োজনীয় উপকরণের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০১৭ সালে মাসিক স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনা (MHM) প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়।
২৮ মে, ২০২৪

নাচ শিখতে বাধা পালিত মেয়ের হাতে মা খুন
চট্টগ্রামে নাচ শিখতে বাধা দেওয়ায় কিশোরীর বিরুদ্ধে মাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত ২০ মে নগরের পাহাড়তলী থানার দক্ষিণ কাট্টলী ছদু চৌধুরী রোডে চৌধুরী আবাসিক এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আনোয়ারা বেগমের পালিত মেয়ে ওই কিশোরী। শুক্রবার তাকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। গতকাল শনিবার নগর পুলিশের পাহাড়তলী জোনের সহকারী কমিশনার মঈনুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। তিনি জানান, আনোয়ারা বেগমের প্রথম সংসারে তিন ছেলে আছে। প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই সংসারে কোনো সন্তান না হওয়ায় মেয়েটিকে দত্তক নিয়েছিলেন। বছরখানেক আগে দ্বিতীয় স্বামীও মারা যান। লন্ডন থেকে দ্বিতীয় স্বামীর বোনের পাঠানো টাকা এবং আগের সংসারের তিন ছেলের সাহায্যে তিনি পালিত মেয়েকে নিয়ে থাকতেন।
২৬ মে, ২০২৪

নানা আয়োজনে জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী পালিত
নানা আয়োজনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়ছে। এ উপলক্ষে ছায়ানট নজরুল-উৎসবের দ্বিতীয় দিন শনিবার (২৫ মে) ছায়ানট মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৭টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়।   এতে পরিবেশিত হয় গীতিআলেখ্য, একক ও সম্মেলক গান, নৃত্য, পাঠ-আবৃত্তি। অনুষ্ঠানে ছায়ানটের শিল্পী ছাড়াও আমন্ত্রিত শিল্পী ও দল অংশ নেয়। গীতিনৃত্যালেখ্য ‘এসো হে সজল শ্যামল ঘন দেয়া’ পরিবেশন করেন সনজীদা খাতুন। সম্মেলক গান ‘চোখ গেল চোখ গেল’ পরিবেশন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ। একক সংগীত পরিবেশন করেন নাশিদ কামাল, মাকসুদুর রহমান মোহিত খান, কানিজ হুসনা আহম্মদী সিম্পী, মনীষ সরকার, শারমিন সাথী ইসলাম, ময়না জয়িতা অর্পা,  মফিজুর রহমান, বিটু কুমার শীল, লতিফুন জুলিও, সঞ্জয় কবিরাজ, নাহিয়ান দুরদানা শুচি, কল্পনা আনাম প্রমুখ। একক নৃত্য ‘এসো হে সজল শ্যামল ঘন দেয়া’ পরিবেশন করেছেন সুদেষ্ণা স্বয়ম্প্রভা তাথৈ, সৃষ্টি সুখের উল্লাসে আবৃত্তি করেছেন মাসুদুজ্জামান। পাঠ দান করেন ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডালিয়া আহমেদ। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমি জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সাংস্কৃতিক ও আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম পর্বে স্বাগত বক্তব্য দেন শিল্পকলা একাডেমির সচিব সালাহউদ্দিন আহাম্মদ, মুখ্য ছিলেন শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকউল্লাহ খান। প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।  দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শুরুতে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতিশ্রুতিশীল নৃত্যশিল্পী দল ‘সৃজন ছন্দে আনন্দে’। নৃত্য পরিচালনা করেন মেহরাজ হক তুষার এবং সহযোগিতা করেন আনন্দীতা খান ও এস কে জাহিদ। গীতি আলেখ্য পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি সংগীতদল, সংগীত পরিচালনা করেন বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী। সমবেত নৃত্য ‘আমার কৈফিয়ত’, ‘শুকনো পাতার নূপুর পায়ে’ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি নৃত্যশিল্পী ও  শিশু নৃত্যদল। নৃত্য পরিচালনা করেন জয়দেব পালিত এবং সহযোগী ছিলেন এস কে জাহিদ। সমবেত সংগীত পরিবেশন করে বাংলাদেশ নজরুল সংগীত সংস্থা ‘জয় হোক জয় হোক’ এবং ‘ও ভাই খাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি’এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি শিশু সংগীতদল ‘দাও শৌর্য দাও ধৈর্য’।   এরপর একক সংগীত পরিবেশন করেন ছন্দা চক্রবর্তী ‘কিশোরী মিলন বাঁশরী/ লাইলী তোমার এসেছে ফিরিয়া’, সালাউদ্দিন আহমেদ ‘আসলো যখন ফুলের ফাগুন/গভীর নিশিথে ঘুম ভেঙে যায়/ ব্রজগোপী খেলে...’,  সুজিত মোস্তফা ‘তোমার বীণা তারের গীতি/ কোন মধুর শরাব দিলে, ফাতেমা তুজ জোহরা ‘নাচের নেশার ঘোর লেগেছে/ কোথায় খুঁজিস তুই ভগবান, রাজিয়া মুন্নি ‘মোর ঘুম ঘোরে এলো মনোহর/প্রিয় এমন রাত যেন’,  বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী,  শারমীন সাথী ইসলাম ময়না ‘এসো বঁধু ফিরে এসো’। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন তামান্না তিথি ও মীর বরকত।
২৫ মে, ২০২৪

বিশ্বশান্তি কামনাসহ সমবেত প্রার্থনায় পালিত হলো বুদ্ধ পূর্ণিমা
দেশের অগ্রগতি, সমৃদ্ধি ও বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা, শোভাযাত্রা, হাজার প্রদীপ প্রজ্বলন, পূজাসহ নানা আয়োজনে পালিত হলো শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা। বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের প্রধান এই ধর্মীয় উৎসবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সকল বৌদ্ধ বিহারে বুধবার (২২ মে) দিনভর ভক্তদের ঢল নামে। সারা দেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা শ্রদ্ধা ও উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করেন।    বৌদ্ধ ধর্মমতে, প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে এই দিনে মহামতি গৌতম বুদ্ধ আবির্ভূত হয়েছিলেন। গৌতম বুদ্ধের শুভ জন্ম, বোধিজ্ঞান ও মহাপরিনির্বাণ লাভ এই তিন স্মৃতিবিজড়িত বিশ্বের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে বুদ্ধপূর্ণিমা নামে পরিচিত। ত্রি স্মৃতি বিজড়িত এ দিনটিকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বৈশাখ দিবস হিসেবে উদযাপন করে। বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনের ক্রিডেনশিয়াল হলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সংবর্ধনার আয়োজন করেন। এতে আট শতাধিক অতিথিসহ এক হাজারেরও বেশি ব্যক্তি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।   বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের পক্ষ থেকে রাজধানীর মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে তিন পর্বে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সকাল ৬টা এক মিনিটে শুরু হওয়া প্রথম পর্বে ছিল জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন। এরপর ভিক্ষুসংঘের প্রাতঃরাশ গ্রহণ, বুদ্ধপূজা, শীল গ্রহণ এবং অষ্ট পরিষ্কার দানসহ ভিক্ষুসংঘের পিণ্ডদান।   সন্ধ্যায় ‘বুদ্ধ পূর্ণিমার তাৎপর্য’ নিয়ে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ‘বুদ্ধ পূর্ণিমার আলোকে শান্তি, সম্প্রীতি ও মানবতা’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন মোহাম্মদ ওয়াকিল উদ্দিন এমপি, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকায় নিযুক্ত শ্রীলংকার হাইকমিশনার ধর্মপালা ভীরাক্কোডি ও ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত ন্যুয়েন মান কুঅং। অনুষ্ঠানে আশির্বাদক বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার উপ-সংঘরাজ ধর্মপ্রিয় মহাথের। সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত ধর্মমিত্র মহাথের।   রাত আটটার পর শুরু হওয়া বুদ্ধ পূর্ণিমার তৃতীয় পর্বে হাজারো শিক্ষার্থীর প্রদীপ প্রজ্বলন, সমবেত প্রার্থনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উৎসবের সমাপ্তি ঘটে। এছাড়া বাসাবো ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারেও পৃথক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন গ্রাম ও বিহারে এই দিনকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ মেলা বসে। সবচেয়ে বড় মেলা হয়েছে চট্টগ্রামের বৈদ্যপাড়া গ্রামে, যা বোধিদ্রুম মেলা নামে সমধিক পরিচিত। এ উপলক্ষে বন্ধ ছিল সরকারি প্রতিষ্ঠান।
২২ মে, ২০২৪

সিডনিতে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালিত
অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী পালন করেছে আমাদের কথা নামের একটি সংগঠন। শনিবার (১৮ মে) সিডনির ক্যাম্পবেলটাউন সিভিক হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সমবেত কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথের লেখা বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর গাওয়া হয় অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীত। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে শিশুদের কোরাস ‘আলো আমার আলো’ গান গেয়ে সাংস্কৃতিক পর্বের সূচনা করা হয়। এর পরেই ছিল নতুন প্রজন্মের গান, ছড়া ও নৃত্য পরিবেশনা। সাংস্কৃতিক পর্ব শুরুর আগে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে স্বল্প পরিসরে তথ্য পরিবেশন করেন মিলি ইসলাম।  অনুষ্ঠানটির সাংস্কৃতিক পর্বগুলোকে কয়েকটা ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়। সেগুলো হলো- পূজা পর্যায়, প্রকৃতি পর্যায় ও প্রেম পর্যায়। পূজা পর্যায়ে পরিবেশনায় ছিলেন পূরবী, ঋদ্ধ, জুঁই, তনিমা ও  পৃথিবী। প্রকৃতি পর্যায়ে পরিবেশনায় ছিলেন শাহরিল রলি ও ফারিন, প্রেরণার ডান্স গ্রুপ।  আর প্রেম পর্যায়ে মঞ্জুশ্রী, মিশা, বাঁধন, সুবর্ণা, পলি ফরহাদ, মারিয়া, শ্রেয়সী ও তার নটরাজ ড্যান্স একাডেমির পরিবেশনা। এ ছাড়াও কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিশেষ শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন আয়েশা কলি ‘বাঁধলো বাঁধলো ঝুলনিয়া’ গানটি গেয়ে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন কলামিস্ট ও লেখক অজয় দাশ গুপ্ত। এ সময় তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথের জন্ম না হলে শিল্প সাহিত্যের অনেক জায়গায়ই পূরণ হতো না। রবীন্দ্রনাথ দিয়েছেন আমাদের প্রশান্তি। গল্পে, কবিতায়, গানে ও দর্শনে কোথায় রবীন্দ্রনাথ নাই বাংলা সাহিত্যের। বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরেছিলেন সেই সময়ে এবং বাংলায় তিনিই নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। এই তো বাঙালির বিশাল অহংকার। নতুন প্রজন্মকে বাংলা সংস্কৃতিতে অবদান রাখার জন্য আমাদের কথা সার্টিফিকেট প্রদান করে। বিশেষ অতিথি ছিলেন ক্যাম্পবেলটাউন সিটি কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র ইব্রাহিম খলিল মাছুদ, কাউন্সিলর মাছুদ চৌধুরী, সিডনির কমিউনিটির বটবৃক্ষ গামা আব্দুল কাদের ও সংগঠক শফিকুল আলম। এ ছাড়াও ছিলেন নারী সংগঠকদের মধ্যে ছিলেন তিশা তানিয়া ও টুম্পা জাহরা। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে আগামীতে আরও সুন্দর অনুষ্ঠান পরিবেশনা করার আশ্বাস দিয়ে সকলকে রাতের খাবারের আমন্ত্রণ জানিয়ে আনুষ্ঠানিকতার পরিসমাপ্তি টানেন সংগঠনের কর্ণধার ও সঞ্চালক পূরবী পারমিতা বোস।  শব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিলেন আত্ত্বাবুর রহমান। অনুষ্ঠানের রাবীন্দ্রিক সাজসজ্জায় ছিলেন কানিতাজ। বিগত বছরে সিডনিতে এককভাবে রবীন্দ্রনাথের জন্মজয়ন্তী পালনের প্রথম উদ্যোগ নেয় সংগঠনটি। আয়োজনে ছিল রবীন্দ্রনাথের গান, কবিতা, গল্প ও জীবন নিয়ে।
১৯ মে, ২০২৪

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত
বর্ণাঢ্য কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগ, এর সহযোগী ও সমমনা সংগঠনগুলো এ দিনটি স্মরণ করে বিস্তারিত কর্মসূচির আয়োজন করে। এর মধ্যে ছিল আলোচনা সভা, প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘ জীবন কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, প্রার্থনা, খাবার বিতরণ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও রক্তদান। দীর্ঘ ছয় বছরের প্রবাসে নির্বাসিত জীবন শেষে ১৯৮১ সালের ১৭ মে তৎকালীন সামরিক শাসকের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে দেশ মাতৃকার টানে শেখ হাসিনা ফিরে আসেন স্বপ্নের স্বদেশে। এজন্য এই দিনটি আওয়ামী লীগের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবেই পালন করে আসছে দলটি। এদিন সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। আওয়ামী লীগ ছাড়াও সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। বিকেলে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপকমিটি অসহায়দের মধ্যে খাবার বিতরণ করে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার রাজধানীর আজিমপুর সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা, মোহাম্মদপুর সলিমুল্লাহ রোডের এতিমখানা, সোবহানবাগ মসজিদ-সংলগ্ন এতিমখানা, বাড্ডা বেরাইদ রহিম উল্লাহ এতিমখানায় অসহায়দের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়। একই সঙ্গে সিলেটে হজরত শাহজালালের (রহ.) মাজার-সংলগ্ন এতিমখানা এবং চট্টগ্রাম হজরত শাহ আমানতের (রহ.) মাজার-সংলগ্ন এতিমখানা ও গরিব উল্লাহ শাহর (রহ.) মাজার-সংলগ্ন এতিমখানায় খাবার বিতরণ করা হয়। এদিকে মন্দির, প্যাগোডা, গির্জা, উপাসনালয়ে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা কর্মসূচির অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয়ভাবে তেজগাঁও হলি রোজারিও চার্চে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়, রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনা সভার আয়োজন করে। এদিন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বিশেষ প্রার্থনার পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়েছে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ।
১৮ মে, ২০২৪

ঝিনাইদহে প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত
ঝিনাইদহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত হয়েছে।   শুক্রবার (১৭ মে) সকালে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দলটির জেলা কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে সেখান থেকে একটি র‌্যালি বের করা হয়।  র‌্যালিটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে প্রেরণা একাত্তর চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নেতাকর্মীরা।  সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সফিকুল ইসলাম অপু, সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য পারভীন জামান কল্পনাসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।  বক্তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করে উন্নত দেশ গড়তে সবাইকে আওয়ামী লীগের হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
১৭ মে, ২০২৪

নানা আয়োজনে গজারিয়া গণহত্যা দিবস পালিত
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাদের হাতে গণহত্যার শিকার শহীদদের স্মরণে সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।  বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিকেল সাড়ে ৫টায় দিবসটি উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে গজারিয়া ইউনিয়নে গণকবরে শহীদ পরিবারে সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে শহীদদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কোহিনুর আক্তার। পরে স্থানীয় মসজিদের ইমাম শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া করেন। গজারিয়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল খালেক আলো সেদিনের স্মৃতিচারণা করে বলেন, তখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের রসায়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। যুদ্ধ শুরু হলে দেশকে রক্ষার স্বপ্ন গ্রামের বাড়ি গজারিয়া সদরের গোসারচরে চলে যাই। পরে ত্রিপুরা গিয়ে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রামে ফিরে ‘আলোর দিশারী’ নামে একটি স্কুল গড়ে তুলি যেখানে ২০০ মুক্তিযোদ্ধাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর মধ্যে খোকা চৌধুরী, শামস চৌধুরী, গফুর চৌধুরী, মোজাফফর আলীসহ আরও কয়েকজন রাজাকার মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করার খবর পাকিস্তানি ক্যাম্পে পৌঁছে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ৯ মে আমাদের গ্রামে হামলা চালায় পাকিস্তানি সেনারা, খুঁজতে থাকে আমাকে। এ বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান, হামলায় গজারিয়া, নয়ানগর এবং গোসাইরচর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এই এলাকাগুলোর প্রতিটি বাড়িতেই সেদিন অন্তত একজনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই রাতে বাশগাঁও, সোনাইরকান্দি, নাগেরচর, ফুলদী, কালিয়াপুর ও বেলতলীর মতো এলাকায়ও হামলা হয়। তিনি বলেন, ওই হামলায় আমি আমার ছোট ভাই মোয়াজ্জেমকে হারিয়েছি...আমার পাঁচ চাচাতো ভাই ও চাচা সেই হামলায় মারা গেছে। এ ছাড়াও, প্রায় ১০ জন প্রতিবেশী, যারা আমাদের দূরসম্পর্কের আত্মীয় ছিল, তাদেরও হত্যা করা হয়। এ সময় আমার মা একটি কথাই বললেন, ‘তুই যুদ্ধে চলে যা। যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করতে হবে। প্রয়োজন হলে আমিও যুদ্ধে যাব’। এরপর ১১ মে আমি গ্রামের অন্যদের সঙ্গে যুদ্ধে যোগ দেই। এক সময় আমাকে গজারিয়ার মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডার করা হয়। আলো বলেন, ১৪ আগস্ট ছিল পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস, তাই চূড়ান্ত হামলার জন্য আমরা এই দিনটিকে বেছে নিয়েছিলাম। এরপর থেকে তাদের ওপর বিরতিহীন হামলা করেছে মুক্তিযোদ্ধারা। পরে ১০ ডিসেম্বর বিকেলে মেঘনা নদীর পাশে তৎকালীন গজারিয়া থানায় পরাজয় স্বীকার করে ৬০ জনেরও বেশি সেনা সদস্য আত্মসমর্পণ করে। টানা ৮ মাস যুদ্ধ করে শত্রুমুক্ত হয় গজারিয়া। তবে গজারিয়ায় যে গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তানি বাহিনী, তার ক্ষত আজও শুকায়নি। তাই প্রতিবছর ৯ মে গজারিয়াবাসী এ দিনটি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। পালন করে নানা কর্মসূচি। প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেশের যেসব অঞ্চলে গণহত্যা সংঘটিত হয়, এর মধ্যে গজারিয়া গণহত্যা অন্যতম। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, স্বাধীনতার ৫৪ বছর হতে চলল, রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ৩৮ কিলোমিটার অদূরে পাকিস্তানি বাহনীর নৃশংস গণহত্যার সাক্ষী সেই বধ্যভূমিগুলো আজও যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি। নেওয়া হয়নি তেমন কোনো সরকারি উদ্যোগও।
০৯ মে, ২০২৪

নানা আয়োজনে ‘বিশ্ব রেড ক্রস ও রেড সেন্ট দিবস’ পালিত
‘বাঁচিয়ে রাখি মানবতা’ প্রতিপাদ্যে বর্ণাঢ্য নানা আয়োজনে সারা দেশে একযোগে ‘বিশ্ব রেড ক্রস ও রেড সেন্ট দিবস’ পালন করেছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। যুদ্ধহীন মানবিক পৃথিবী প্রতিষ্ঠায় বিশ্বব্যাপী রেড ক্রস রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলনের ৭টি মূলনীতি ও মানবসেবামূলক কার্যক্রমকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ বছর দিবসটি পালিত হচ্ছে। বুধবার (৮ মে) সকালে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জাতীয় সদর দপ্তরে জাতীয় পতাকা ও রেড ক্রিসেন্ট পতাকা উত্তোলন করেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. উবায়দুল কবীর চৌধুরী। এর মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচির উদ্বোধন হয়।  অধ্যাপক ডা. মো. উবায়দুল কবীর চৌধুরী বলেছেন, দুর্যোগপ্রবন এলাকার অনেকেরই ঘরে টেলিভিশন, রেডিও, স্মার্ট ফোন নেই। প্রতিটি দুর্যোগে আমাদের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা ঘরে ঘরে সংবাদ পৌঁছে দিয়ে আর্তমানবতার সেবায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এভাবেই ৭ লাখ স্বেচ্ছাসেবক ৪ বার শান্তিতে নোবেল বিজয়ী সংগঠনটির মানবতাকে বাঁচিয়ে রাখতে আরও অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আমার বিশ্বাস। এ ছাড়াও বক্তব্য দেন সোসাইটির ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান চৌধুরী হেলাল, বোর্ড সদস্য মুন্সী কামরুজ্জামান কাজল, এ্যাড. সোহানা তাহমিনা, রাজিয়া সুলতানা লুনা, মহাসচিব কাজী শফিকুল আযম, উপ-মহাসচিব সুলতান আহমেদ। বিশেষ এই দিবস উপলক্ষে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সোসাইটির জাতীয় সদর দপ্তর থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে শেষ হয়। সোসাইটির যুব স্বেচ্ছাসেবক ও সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এতে অংশ নেয়।  দিবস উপলক্ষে রাজধানীসহ সারা দেশে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ফুল ও খাবার বিতরণ করা হয় রাজধানীর হলি ফ্যমিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের রোগীদের মাঝে। জাতীয় সদর দপ্তরের পাশাপাশি সারা দেশে রেড ক্রিসেন্টের ৬৮টি ইউনিট তাদের নিজ নিজ আয়োজনে উদযাপন করেছে দিবসটি।
০৮ মে, ২০২৪

গাজীপুরে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের ২০ম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার (৭ মে) সকাল থেকেই আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পরে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ স্মরণিকাও প্রকাশ করা হয়।  স্মরণসভায় প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের স্মৃতিচারণা করে বলেন, সেদিন নির্মমভাবে আহসান উল্লাহ মাস্টারকে হত্যা করা হলো। তখন হত্যাকারীদের বিচার হলো না! কী কারণে বিচার হলো না? হত্যাকারীদের রায় কেন হচ্ছে না? আমার বোধগম্য নয়! তবে আমাদের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ এ হত্যাকারীদের শাস্তি চায়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আহসান উল্লাহ মাস্টার বিএনপির জোট সরকারের দুঃশাসনের আমলে কখনো লড়াই সংগ্রামে পিছপা হননি। তিনি জনগণের নেতা ছিলেন। জনগণকে সাথে নিয়ে সবকিছু মোকাবিলার চেষ্টা করেছেন এবং শহীদ হয়েছেন। আহসান উল্লাহ মাস্টারের মতো ত্যাগী নেতাদের পুরো দেশজুড়ে প্রয়োজন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করতেন প্রয়াত এমপি শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার। আমরা এমন একজন মানুষকে হারিয়েছি যিনি একজন সৎ মানুষ ছিলেন সেই সাথে একজন দক্ষ রাজনীতিবিদ ছিলেন। বর্তমানে এমন আদর্শবান নেতা পাওয়া কঠিন।  স্মরণসভায় আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছেলে সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি তার বাবার খুনিদের ফাঁসির রায় কার্যকরের দাবি জানান। তিনি বলেন, এ রায় কার্যকর হলে গাজীপুরবাসী কলঙ্কমুক্ত হবে। অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের ভাত এবং ভোটের অধিকার হরণ করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু কন্যা সেদিন ভাত এবং ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য লড়াইয়ের ডাক দিলেন। আহসান উল্লাহ মাস্টার সেদিন ভাত এবং ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নিজেকে উজার করে দিলেন। দাঁড়ালেন শ্রমিক তথা এই অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষের পাশে।  বিশেষ অতিথি টঙ্গী পাইলট স্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী অনেক রাজনীতিবিদ মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রধান অঙ্গীকার সাম্য, মৈত্রী, স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার তার ব্যতিক্রম। জীবনভর শুধু মেহনতী মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায় ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে গেছেন। শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার তার কর্মের মাধ্যমেই চির জাগরূক থাকবেন মানুষের হৃদয়ে।   আয়োজনে অংশ নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও টঙ্গী পাইলট স্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজের সহকারী অধ্যাপক (ইংরেজি) মো. আব্দুল কাইয়্যূম বিপুল বলেন, শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের সততা, দেশপ্রেম বর্তমান যুব সমাজের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ। দেশের প্রতি, মানুষের প্রতি তার অকৃত্রিম দায়বদ্ধতা ও ভালোবাসা তাকে গাজীপুরের সর্বস্তরের মানুষের নেতায় পরিণত করেছিল। মানবসেবায় জীবনভর তিনি যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা থেকে তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।   স্বরণসভায় অন্যদের মধ্যে গাজীপুর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্যাহ খান, সাধারণ সম্পাদক আতাউল্যাহ মণ্ডল বক্তব্য দেন। এ সময় জেলা যুব লীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল, সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ইলিয়াছ, পূবাইল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ জাহিদ আল মামুন, স্বেচ্ছা সেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বিল্লাল হোসেন, মহানগর ছাত্রলীগ নেতা মশিউর রহমান সরকার বাবু, টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ শরিফুল হাসান খান প্রমুখসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী এবং স্থানীয় জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।    এর আগে আমন্ত্রিত অতিথিরা শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরবর্তীতে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।   
০৭ মে, ২০২৪
X