মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে ইসরায়েলের গোপন আঁতাত ফাঁস
গাজায় নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গেল সপ্তাহে ত্রাণ আসার একমাত্র পথ রাফাহ সীমান্তের ফিলিস্তিন অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। এবার খবর বেরিয়েছে, রাফা সীমান্তে প্রতিনিধি পাঠাতে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিন দেশের কর্মকর্তাদের বরাতে এমন খবর ছেপেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইসরায়েলি সরকারের গোপন আঁতাতের অভিযোগ অনেক পুরোনো। গেল অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর সেই অভিযোগের পালে নতুন করে হাওয়া লেগেছে। ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরেই চায়, গাজায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কর্তৃত্ব থাকুক। কিন্তু হামাসের কারণে তেলআবিবের সেই খায়েশ পূরণই হচ্ছে না। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গেল সপ্তাহে সোমবার রাফার সীমান্তের ফিলিস্তিনি অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর ওই সীমান্ত বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এমন অবস্থায় ইসরায়েল ও গাজার মধ্যবর্তী কেরেম শালোম ক্রসিং দিয়ে ত্রাণবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মিসর। কায়রোর দাবি, রাফা সীমান্ত থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সরে গেলেই তারা ট্রাক যেতে দেবে। ইসরায়েলের সিনিয়র কর্মকর্তারা বলছেন, তারা রাফার নিয়ন্ত্রণ ফিলিস্তিনিদের কাছে ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে হামাসঘেঁষা কাউকে ইসরায়েল চায় না বলেও জানিয়েছেন তারা। গেল সপ্তাহেই ইসরায়েলি কর্মকর্তারা প্রস্তাব দেন যে, রাফা সীমান্ত পরিচালনায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করতে হবে। তবে ওই কর্মকর্তা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সদস্যের ভূমিকায় থাকতে পারবে না বলে শর্ত দেয় ইসরায়েল। অ্যাক্সিওস জানিয়েছে, ইসরায়েলের এমন শর্তে তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও তার উপদেষ্টা। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে সাফ জানিয়েছে দিয়েছেন যে, ‘আন্ডারকভার’ হিসেবে রাফা সীমান্তে দায়িত্ব পালন করতে পারবে না ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। উল্টো ১০ দিন ধরে আটকে রাখা ফিলিস্তিনের রাজস্ব ছেড়ে দিতে ইসরায়েলে প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আব্বাস। রাজস্বের ওই অর্থের ওপর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বাজেট নির্ভর করে। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পর আব্বাস সরকারকে চাপে রাখতে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে তেল আবিব। অবশ্য ওই বাজেটের অর্থ ছেড়ে দিলেও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ তাদের কর্মকর্তাদের রাফা সীমান্তে পাঠাবে না। কারণ তাদের আশঙ্কা কর্মকর্তাদের হত্যা করতে পারে হামাস। আব্বাস সরকারও চায় রাফার নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে হস্তান্তর করা হোক। তবে সেটা তাদের পাশ কাটিয়ে ইসরায়েল ও মিসরের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে নয়। বরং তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করেই রাফার নিয়ন্ত্রণ চায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। তেমন কিছুর ব্যাপারে ইসরায়েলের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেলে রাফায় কর্মকর্তা পাঠাতে আপত্তি নেই আব্বাসের।
১৫ মে, ২০২৪

অংকে ফেল করায় গলায় ফাঁস নিল কিশোরী
এসএসসি পরীক্ষায় অংকে ফেল করায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে নোয়াখালীর এক কিশোরী। রোববার (১২ মে) দুপুর সোয়া ১টার দিকে নোয়াখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সল্যা ঘটাইয়া গ্রামের কালিতারা বাজার সংলগ্ন আলী আজম বেপারির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। একই দিন রাত সোয়া ৯টার দিকে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।   মৃত তানজিনা আক্তার ঝুমি (১৬) নোয়াখালী পৌরসভার সল্যা ঘটাইয়া গ্রামের মো. আব্দুল করিমের মেয়ে। সে স্থানীয় কালিতারা মুসলিম গার্লস একাডেমি থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। নোয়াখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফখরুদ্দিন মাহমুদ বলেন, রোববার বেলা ১১টার দিকে তানজিনার এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। সে গণিত বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় দুপুর সোয়া ১টার দিকে পরিবারের সদস্যদের অজান্তে বসতঘরের আঁড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। ওই সময় তার মা রান্নাঘরে কাজে ব্যস্ত ছিল। পরে তিনি ঘরে এসে মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন।  সুধারাম থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কোনো অভিযোগ না থাকায় গণস্বাক্ষর নিয়ে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
১২ মে, ২০২৪

ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর ইসরায়েলি নির্যাতনের ভয়ংকর তথ্য ফাঁস
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। এ অভিযানে একের পর এক ফিলিস্তিনিকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে তারা। এরপর কারাগারে আটকে তাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালাচ্ছে ইসরায়েল। কারাগারে ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়ংকর নির্যাতনের তথ্য ফাঁস করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।  শুক্রবার (১০ মে) ইসরায়েলি দুই হুইসেলব্লোয়ার এবং এক ফিলিস্তিনি বন্দির বরাতে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গাজার সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে নেগেভ মরুভূমির একটি বন্দিশালায় তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের ব্যাপক মারধরসহ বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন করা হয়।  এক ইসরায়েলি জানান, গাজার এসব জনসাধারণকে কোনো গোপন তথ্যের জন্য মারধর করা হয়নি। কেবল প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে তাদের মারধর করা হয়েছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের হামলার জন্য এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বন্দিশালায় পান থেকে চুন খসার মতো সামান্য কিছু করলেই তাদের শাস্তি দেওয়া হয়।  অপর এক ইসরায়েলি তেইমানের একটি কারাগারের ছবি সিএনএনকে দিয়েছেন। এ এলাকাটি গাজা থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ছবিতে দেখা যায়, লোহার তারের বেড়া দেওয়া একটি খাঁচায় কয়েকশ ফিলিস্তিনি রয়েছেন। তাদের সকলের পরনে ধূসর রঙের ট্রাউচার রয়েছে।  কারাগারে বন্দি থাকা এক ফিলিস্তিনি চিকিৎসক সিএনএনকে বলেন, তেইমানের বন্দিশালায় প্রায়ই ঘুমন্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর কুকুর ছেড়ে দেওয়া হতো। রাতের বেলা এভাবে নির্যাতন করা হতো।  গাজার ইন্দোনেশিয়া হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডাক্তার মোহাম্মদ আল রানকে আটক করে ইসরায়েলি সেনারা। তবে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থার ব্যাপক অবনতি দেখা দেয়।  বন্দিরা জানান, তাদের একটি অস্থায়ী হাসপাতালে রাখা হয়েছিল। সেখানে তাদের শরীরের সব জামাকাপড় খুলে নেওয়া হয়। এ সময় তাদের কেবল ডায়পার পরিয়ে রাখা হয়। এছাড়া ছোট পাইপের মাধ্যমে তাদের সেখানে খাবার সরবরাহ করা হয়। এমনকি হাসপাতালে বেডের সঙ্গে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে আটকে রাখা হয়।  বন্দিদের অনেকে তাদের হাতে হ্যান্ডকাফের কারণে সৃষ্ট ক্ষতচিহ্ন দেখিয়েছেন।  এছাড়া হ্যান্ডকাফ পরার কারণে অনেকের হাতে ঘায়ের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কয়েকজনের হাতও কেটে ফেলা হয়েছে বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। 
১০ মে, ২০২৪

বন্ধ হোক প্রশ্নপত্র ফাঁস
কয়েক বছর ধরেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে। পাবলিক পরীক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন নিয়োগ ও ভর্তি পরীক্ষায়ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর আসছে সংবাদমাধ্যমে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি দুরারোগ্য ব্যাধির মতো জেঁকে বসেছে। কোনোভাবেই এর হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারি প্রেসের কর্মী থেকে শুরু করে ছাত্র-শিক্ষক, ব্যাংক কর্মকর্তা—অনেকেই এ চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে এর আগে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সর্বশেষ পরীক্ষায় আবার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। পরীক্ষায় তিন ধাপে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। প্রথম ধাপে জালিয়াতির অভিযোগে ৭৪ এবং তৃতীয় ধাপে একই অভিযোগে ১৩ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সব মিলিয়ে আটক ৮৭ জন। গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা চলাকালে উত্তরপত্র, ডিজিটাল ডিভাইসসহ মাদারীপুরে সাতজন এবং রাজবাড়ীতে একজন পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়। মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। রাজবাড়ীতে গ্রেপ্তার পরীক্ষার্থী পরে আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এর আগে গত বছর ৮ ডিসেম্বর প্রথম ধাপের নিয়োগ পরীক্ষায়ও জালিয়াতির অভিযোগে গাইবান্ধায় ৩৭, রংপুরে ১৯ ও দিনাজপুরে ১৮ জনকে আটক করা হয়। ওই সময় তাদের কাছ থেকে ২৪টি মাস্টারকার্ড, ২০টি ব্লুটুথ, ১৭টি মোবাইল ফোনসেট, ব্যাংক চেক ও স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়। এর আগে ২০২২ সালের নিয়োগ পরীক্ষায় শুধু রাজবাড়ী জেলা থেকেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে ১৩ জনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাকরিপ্রত্যাশীদের খুঁজে বের করে তারা ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে পরীক্ষায় পাস করানোর আশ্বাস দিত। আগ্রহী পরীক্ষার্থীদের ডিজিটাল ডিভাইস দেওয়া হতো এবং তাদের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে ১-২ লাখ টাকা জামানত নেওয়া হতো। অবশিষ্ট টাকা চাকরি পাওয়ার পর পরিশোধ করা হবে বলে চুক্তি করা হতো। ২০১৯ সালের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ঢাকা, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে প্রশ্নপত্র বাইরে চলে যায়। পরে চাকরিপ্রার্থীদের ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর সরবরাহ করা হয়। পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে প্রতিবার একাধিক ব্যক্তি আটক হলেও কোনোবার পরীক্ষা বাতিল করেনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা জালিয়াতি রোধে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এরপরও ঠেকানো যাচ্ছে না প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা। প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো জঘন্য ও নিন্দনীয় একটি কাজের সঙ্গে জড়িতরা প্রকৃতপক্ষে দেশ এবং জাতির শত্রু। তাদের নীতিনৈতিকতা বলে কিছু নেই। শুধু অর্থের বিনিময়ে তারা যা খুশি তাই করতে পারে। প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তরপত্র জালিয়াতির ঘটনা আমাদের সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ জঘন্য অপরাধ প্রতিরোধের সহজ উপায় হচ্ছে অপরাধীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করা। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা প্রতিরোধে দেশে আইন আছে। জালিয়াত চক্রের সন্ধান যখন পাওয়া গেছে, তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও কঠোর হতে হবে। এ চক্রের সবাইকে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক। শিক্ষাঙ্গনে দুর্নীতির এক অভিনব পদ্ধতি প্রশ্নপত্র ফাঁস। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার ধরনটাও পাল্টে গেছে। পরীক্ষার আগে পড়াশোনা করার চেয়ে তারা বেশি ব্যস্ত ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের খোঁজে। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা বর্তমানে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে বলে নানামহলে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা এমনকি বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস হয়েছে বলে গণমাধ্যমে বারবার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ফাঁস হওয়া প্রশ্নের মধ্যে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষাসহ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নও রয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় কারণ, এর চাহিদা আছে। আর এ ফাঁসে যারা জড়িত, তারা আর্থিক দিক দিয়ে ব্যাপকভাবে লাভবান হন। ২০০১ সাল থেকে পরবর্তী ১৬ বছরে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে ১০ বার। সিআইডি সম্প্রতি ২০২০ সালের প্রশ্ন ফাঁসের একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এ ঘটনা জানতে পেরেছে। তারা ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে সাতজনই চিকিৎসক। আর এ ফাঁস করা প্রশ্ন দিয়ে দুই হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছেন। তারা পাস করে চিকিৎসকও হয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে নানারকম পদক্ষেপ নেওয়া হলেও রোধ করা যাচ্ছে না প্রশ্নপত্র ফাঁস। প্রশ্ন ফাঁস প্রশ্ন তৈরি থেকে, ছাপা পরিবহন এবং বিতরণ যে কোনো পর্যায়ে হতে পারে। তাই প্রতিটি পর্যায়ে সৎ এবং যোগ্য লোক থাকা দরকার। থাকা দরকার কঠোর মনিটরিং। শুধু সৎ হলেই চলবে না, দক্ষতাও থাকতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণাও থাকতে হবে। যেমন, কম্পিউটারে প্রশ্ন তৈরি হলো সেখান থেকে তা ডিলিট করলেই শেষ হয়ে যায় না। আসলে সেটা থেকে যায়। প্রিন্টারেও থেকে যায়। কোনো অনলাইন ডিভাইসেও থেকে যেতে পারে। তাই ওই প্রযুক্তি সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন করে কীভাবে কাজ করতে হয় তাও জানতে হবে। এ সমস্যার সমাধান করতে হলে দেখতে হবে প্রশ্নপত্র তৈরি এবং পরীক্ষার হলে পৌঁছানো পর্যন্ত এতে কারা থাকেন। প্রশ্নপত্র তৈরিতে নিয়োজিত কমিটি কতটুকু বিশ্বস্ত সেটা খতিয়ে দেখা উচিত। তাদের শিক্ষাজীবন হতে শুরু করে আদর্শ, রাজনৈতিক কার্যকলাপ এমনকি পারিবারিক ইতিহাসও ঘেঁটে দেখা দরকার। তাদের মধ্যে কেউ সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এমন করছে, এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। আবার এসব প্রশ্নপত্র যেখানে ছাপা হয়, সে প্রেসের কেউ এ কাজ করছে কি না, সেদিকেও কড়া নজর রাখতে হবে। লেখক: রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান এবং সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের উপদেষ্টা
০৭ মে, ২০২৪

স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস নিলেন আনসার সদস্য
চুয়াডাঙ্গায় স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে এক আনসার সদস্য ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। রোববার (৫ মে) রাত ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ আনসার ব্যাটালিয়নের পার্শ্ববর্তী উসমান গনির ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আরিফুল ইসলাম (৩৫) দিনাজপুর সদর উপজেলার জয়দেবপুর গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে। তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহে অবস্থিত আনসার ব্যাটালিয়নে সিপাহী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চুয়াডাঙ্গা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা কমান্ড্যান্ট সঞ্জয় চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আরিফুল ইসলাম সপরিবারে ব্যাটালিয়নের পাশেই ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। বৃহস্পতিবার ছুটিতে স্বপরিবারে দিনাজপুরে বাড়িতে যান। ছুটি শেষে রোববার একাই ভাড়া বাসায় ফেরেন তিনি। এরপর রাত ৯টা পর্যন্ত ব্যাটালিয়নে ছিলেন। রাতে বাসায় ফেরেন। এরপর বাড়িওয়ালাকে তার স্ত্রী রাতে ফোন দিয়ে জানান, ঘরের মধ্যে তার স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। বাড়িওয়ালা ঘরের দরজা ভেঙে ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। বিষয়টি থানা পুলিশ ও আমাদেরকে জানান। আমরা প্রাথমিকভাবে জেনেছি, পারিবারিকভাবে মনোমালিন্যের জেরে স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখেই তিনি গলাই ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি আরো জানান, মরদেহ সুরতহাল ও ময়না তদন্ত শেষ হয়েছে। সোমবার (৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আনসার ব্যাটালিয়নে জানাজা শেষে মরদেহ তার পরিবারের কাছে দাফনের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে।  চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে এক আনসার সদস্য আত্মহত্যা করেছেন। মরদেহ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে নিয়ে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। কারো কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ আনসার ব্যাটেলিয়নে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
০৬ মে, ২০২৪

ইসরায়েলের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার গোপন সম্পর্ক ফাঁস
অধিকাংশ মুসলিম দেশের মতো ইন্দোনেশিয়ারও ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো সম্পর্ক নেই। তবে একটি আন্তর্জাতিক তদন্তে ওঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গোপনে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছে ইন্দোনেশিয়া। ওই তদন্ত অনুযায়ী, ইসরায়েলের অন্তত ৪টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে স্পাইওয়্যার ও সাইবার নজরদারি প্রযুক্তি কিনেছে জনসংখ্যার দিক থেকে বৃহত্তম এই মুসলিম দেশটি। শুক্রবার (০৩ মে) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি ল্যাবের এক তদন্তে ইসরায়েলের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার সম্পর্কের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তারা বলছে, ৪টি ইসরায়েলি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এন-এস-ও, কান-দিরু, উইন-টেগো ও ইন্টে-লেক্সারের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার সরকারি অফিস ও সংস্থার যোগসূত্র পাওয়া গেছে। এ ছাড়া জার্মান প্রতিষ্ঠান ফিন-ফিশারের কাছ থেকেও নজরদারি প্রযুক্তি কিনেছে দ্বীপ দেশটি। এর আগে বিরোধীদের ওপর নজরদারি করতে বাহরাইন ও তুরস্ক ফিন-ফিশারের প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিল। অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন সরকারি অফিসে এ ধরনের অসংখ্য স্পাইওয়্যার আমদানি বা স্থাপন করা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ এবং জাতীয় সাইবার ও ক্রিপ্টো এজেন্সির মতো প্রতিষ্ঠানের জন্য এসব নজরদারি স্পাইওয়্যার কেনা হয়েছে। অত্যন্ত আধুনিক প্রযুক্তির এসব স্পাইওয়্যার দিয়ে কারও ওপর নজরদারি করলে সেটা যেমন ধরা যায় না, আবারও কোনো প্রমাণ পাওয়াও প্রায় অসম্ভব। তদন্তে দেখা গেছে, ইন্দোনেশিয়ার হয়ে এসব নজরদারি প্রযুক্তি কিনে দিয়েছে সিঙ্গাপুরের কয়েকটি মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে আগেও ইন্দোনেশিয়া সরকারের জন্য নজরদারি প্রযুক্তি কেনার নজির রয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার নিউজ ম্যাগাজিন টে-ম্পো, ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেতজ এবং গ্রিস ও সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সংবাদ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় কয়েক মাস ধরে এই তদন্ত চালানো হয়। ইন্দোনেশিয়ার  ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার কেনার নজির এটাই প্রথম নয়। গেল বছর টে-ম্পো এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ইন্দোনেশিয়ার সরকার আলোচিত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এন-এস-ও’র পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করেছে। ২০২১ সালে ইন্দোনেশিয়ার বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সরকারি ও সামরিক কর্মকর্তার ওপর পেগাসাস ব্যবহার করে নজরদারি চালানো হয়েছিল বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল।  সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইনসহ কয়েকটি আরব দেশ ২০২০ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের পর তখন ইন্দোনেশিয়ার নামও শোনা গিয়েছিল। এরপর মাঝে বেশি কিছু শোনা না গেলেও সম্প্রতি ইসরায়েলের একজন কর্মকর্তা টাইমস অব ইসরায়েলকে জানান, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে আলোচনা চলমান আছে। আবার দুই দেশের মধ্যে প্রতি বছর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৫০ কোটি ডলারের বাণিজ্য হয়ে থাকে জানিয়েছেন ইসরায়েল-এশিয়া সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক রেবেকা জেফেরত।
০৫ মে, ২০২৪

মাদারীপুরে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন ঢাকায় সমাধান
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত ২৯ মার্চ। এই পরীক্ষায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের (তিন পার্বত্য জেলা বাদে) ২১ জেলার ৩ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৩ পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। তবে পরীক্ষার দিনই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় বলে গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করেছে। প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি খোদ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরও অবগত ছিল। এর পরও সেই প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয় এবং গত ২১ এপ্রিল রাতে ফল প্রকাশ করা হয়। ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া এবং ফল প্রকাশ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নানা প্রশ্নের। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুরো ঘটনা নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া গেছে, পরীক্ষার দিন মাদারীপুর জেলার পাঁচটি কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। টাকার বিনিময়ে চক্রের পরীক্ষার্থী সদস্যরা পরীক্ষা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে বাইরে চক্রের সমাধানকারী গ্রুপের কাছে পাঠিয়ে দেয়। এরপর তা দ্রুত সমাধান করে টাকা নেওয়া বা চুক্তি করা শিক্ষার্থীদের কাছে ডিভাইসের মাধ্যমে কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়। এরই মধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা জ্যোতির্ময় গাইন, সুজন চন্দ্র রায়সহ অন্তত পাঁচজনকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। জ্যোতির্ময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা ভবনের ২২৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র এবং সুজন একই হলের সন্তোষচন্দ্র ভট্টাচার্য ভবনের ৯০০৮ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র। গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের উপকমিশনার মো. শহীদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার (তৃতীয় ধাপ) প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ডিএমপির রমনা থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি তারা তদন্ত করছেন। গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অন্য এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, এরই মধ্যে তারা প্রশ্নফাঁসকারী চক্রকে চিহ্নিত করতে পেরেছেন। চক্রের মূল হোতা জ্যোতির্ময় গাইন এবং তার চাচা অসীম গাইন। চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে। ঢাবির জগন্নাথ হলে সমাধান হয় প্রশ্নপত্র: তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ (তৃতীয় ধাপ) পরীক্ষায় ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র দ্রুত সমাধান করতে রীতিমতো একদল মেধাবী ছাত্রের সমন্বয়ে ‘অফিস’ খোলা হয়। এই অফিসটি ২৯ মার্চ সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরুর আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা ভবনের জ্যোতির্ময় গাইনের ২২৪ নম্বর কক্ষে খোলা হয়। তার নেতৃত্বে সেখানে সুজন চন্দ্র রায়, রনি বিশ্বাসসহ একদল মেধাবী শিক্ষার্থী প্রশ্নপত্র সমাধানের দায়িত্বে ছিল। তারা দ্রুত সমাধান করে তা অসীম গাইনের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কেন্দ্রে থাকা নির্ধারিত পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠিয়ে দেন। ডিবির সাইবার ক্রাইম বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, চক্রটি আগেই পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নগদ, ব্যাংক চেক ও সাদা চেক নিয়ে রাখে। যাদের কাছ থেকেই এই টাকা বা চেক নিয়েছে, মূলত তাদের কাছেই সমাধান করা প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়। আগেই চুক্তিতে থাকা শিক্ষার্থীদের ডিভাইস সরবরাহ করে চক্রের সদস্যরা। ওই কর্মকর্তা বলেন, চক্রের সদস্যরা কত টাকা নিয়েছে এবং প্রশ্ন ফাঁস করে তা সমাধানের পর কতজনের কাছে সরবরাহ করেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাদের গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য বেরিয়ে আসবে। মাদারীপুরের পাঁচ কেন্দ্রে ফাঁস হয় প্রশ্ন: এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূলত মাদারীপুরের পাঁচটি পরীক্ষা কেন্দ্রে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সমাধান নিয়ে পরীক্ষা দেয় একদল শিক্ষার্থী। ২৯ মার্চ কেন্দ্রে দায়িত্বরত শিক্ষকরা আট পরীক্ষার্থীকে আটক করে। পরে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের সমাধান ও ডিভাইস জব্দ করা হয়। ওই ঘটনায় মাদারীপুর সদর থানায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী রেজাউল করিম বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, মাদারীপুরে ১৮টি পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়োগ পরীক্ষার সময়ে কয়েকটি কেন্দ্রে কিছু পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতে ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসে (ব্যবহৃত মোবাইল) মেসেজ অপশনে উত্তরপত্রের লিখে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। তাদের মধ্যে মাদারীপুর সদরে কুলপদ্বী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে নোমান আহম্মেদ (২৬), মাদারীপুর সরকারি কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে সঞ্জয় রায় (৩২), সদরের আলহাজ আমিন উদ্দিন হাইস্কুল কেন্দ্র থেকে সাথী আক্তার (৩০), তৃষ্ণা বালা (২৯), শামসুন্নাহার ভূঁইয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মুক্তি বাড়ৈ (২৬), সদরের জুলিও কুরী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে দূর্গা হাওলাদার (৩২), নিপা বৈদ্য (২৭) ও শিখা কির্তনীয়াকে (৩২) আটক করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পলাতক অসীম গাইন (৪৫) ও উজ্জ্বল সরকারকে (৩২) আসামি করা হয়। এজাহারে বলা হয়, আসামিদের মাদারীপুর জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসৎ উপায়ে মোবাইল ফোনের মেসেজের মাধ্যমে পরীক্ষার উত্তর সরবরাহ করা চক্রের সঙ্গে তাদের যোগসাজশ রয়েছে। আটক পরীক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নের উত্তর মোবাইলের মেসেজের মাধ্যমে পেয়ে উত্তরপত্রে তা লিখার সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিযুক্ত কক্ষ পরিদর্শক ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের হাতে আটক হয়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের তথ্য পেয়েও কেন পরীক্ষা বাতিল করা হলো না, তা জানতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহম্মদ কালবেলাকে বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে, এমন তথ্য তাদের কাছে নেই। ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সমাধান দেখে মাদারীপুরের কয়েকটি কেন্দ্রে কয়েক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেওয়ার সময়ে আটকের বিষয়েও তিনি অবগত নন বলে জানান। ওই ঘটনায় মামলার বিষয়েও জানেন না। তিনি বলেন, জেলাগুলোতে জেলা প্রশাসকেরা (ডিসি) পরীক্ষা কমিটির সভাপতি থাকেন। মাদারীপুরের ঘটনাটি সেখান থেকে কেউ অবগত করেনি।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় স্কুলছাত্রের গলায় ফাঁস
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় বাবার সঙ্গে অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বন্ধন পাল (১৫) নামের এক স্কুলছাত্র। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে নিজ বাড়ি থেকে ওই স্কুলছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃত বন্ধন পাল রৌমারী উপজেলার কলেজপাড়া এলাকার শ্রী শুনীল চন্দ্রের ছেলে ও স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বন্ধন পালের পরিবারের লোকজন স্নান করার জন্য সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। সে বেশকিছু দিন ধরে বাবার কাছে মোটরসাইকেল কিনে নেওয়ার জন্য বায়না ধরে। বাবা মোটরসাইকেল কিনে দিতে দেরি হওয়ায় সেই অভিমানে এবং বাড়ি ফাঁকা পেয়ে নিজ ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে দড়ি আটকিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মাহত্যা করে বন্ধন। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।  নিহত স্কুলছাত্রের বাবা শুনীল চন্দ্র বলেন, আমার চার ছেলে। তার মধ্যে বন্ধন পাল সবার ছোট। সে কয়েক দিন আগ থেকে মোটরসাইকেল কেনার জন্য বায়না ধরে। আমি বলছি বাবা হাতে টাকা নাই, টাকা হলে কিনে দিব। গাড়ি কিনে দিতে দেরি হওয়ায় সে আজ গলায় ফাঁস দিয়ে নিজেকে শেষ করল। দেশবাসীর কাছে অনুরোধ জানাই এভাবে যেন আর কোনো বাবা তার সন্তান না হারায়। রৌমারী থানার ওসি আব্দুল্লাহ হিল জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

স্মার্টফোন কিনে না দেওয়ায় গলায় ফাঁস কিশোরের
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় স্মার্ট মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় অভিমানে আনাস মুসুল্লি নামের এক কিশোর গলায় ফাঁস নিয়েছে। সোমবার (১৫ এপ্রিল) মধ্যরাতে উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের পুনাইখার কান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আনাস মুসুল্লি (১৫) ওই এলাকার আব্দুল আলিম মুসুল্লির ছেলে। স্বজন ও পুলিশ জানায়, আনাস মুসুল্লি স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত। কয়েক মাস আগে পড়াশোনা বন্ধ করে দেয় সে। এরপর থেকে সে বাসায় থাকত। সোমবার রাতে মায়ের কাছে একটি স্মার্ট মোবাইল কিনে দেওয়ার বায়না ধরে আনাস। তবে তার মা তাকে মোবাইল কিনে দিতে অস্বীকৃতি জানালে রুমের দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ে সে।  পরে ভোরে নামাজের জন্য ডাকতে গেলে দরজা বন্ধ থাকায় জানালা দিয়ে আনাসের মরদেহ ঝুলতে দেখে পরিবারের লোকজন। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।  আনাসের চাচা ছাত্তার মুসল্লি বলেন, রাতে মায়ের কাছে স্মার্ট ফোন চেয়েছিল। পরিবারের লোকজন কিনে দেয়নি বলে অভিমানে গলায় ফাঁস নিয়েছে। নড়িয়া থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে ফাঁস দিলেন স্ত্রী
সাতক্ষীরায় স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে দুই সন্তানের জননী আত্মহত্যা করেছেন। রোববার (১৪ এপ্রিল) দুপুরের দিকে সাতক্ষীরা শহরের কামালনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আত্মহননকারী গৃহবধূ ইরানি আফরোজ (২৭) সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোল এলাকার হান্নান গাজীর মেয়ে। শহরের বড়বাজার এলাকায় তার একটি বিউটি পার্লার রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাসখানেক আগে স্বামী আকমল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে ইরানি কামালনগর দক্ষিণপাড়ার তৌহিদুর রহমান বাবলুর বাড়ি ভাড়া নেন। তবে বিভিন্ন বিষয়ে স্বামীর সঙ্গে প্রায়ই তার পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। একপর্যায়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে স্বামী বাসা থেকে চলে যান। রোববার দুপুরে স্বামীর সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে কথা বলা অবস্থায় নিজ ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। বাড়ির মালিক তৌহিদুর রহমান বাবলু জানান, ইরানির স্বামী আকমল হোসেন সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত কিছু জানেন না। তবে বেশ কিছুদিন হলো তিনি বাসায় আসেন না। সম্ভবত বর্তমানে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন। রোববার দুপুরে বাসায় একা থাকা অবস্থায় দরজা লাগিয়ে সিলিং ফ্যানে ইরানি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। স্থানীয়রা বুঝতে পেরে পুলিশকে খবর দেয়। পরে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তার মরদেহ উদ্ধার করে। সাতক্ষীরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।
১৫ এপ্রিল, ২০২৪
X