বিডিইউতে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও শিশু দিবস উদযাপন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটিতে (বিডিইউ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও শিশু দিবস উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে রোববার গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম। এ সময় ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ আতাউর রহমান খানসহ অন্যরা। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা এবং আলোচনার সভা হয়।
১৯ মার্চ, ২০২৪

পাইকগাছায় বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে লস্কর ইউনিয়ন অক্সিজেন ব্যাংক ও কাগজী প্রতিবন্ধী কল্যাণ ট্রাস্ট এর পক্ষ থেকে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৮ মার্চ) সকালে লস্কর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কে, এম, আরিফুজ্জামান তুহিনের আয়োজনে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প উদ্বোধন করেন খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের সংসদ সদস্য মো. রশীদুজ্জামান।  এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যান কেএম আরিফুজ্জামান তুহিন, আওয়ামী লীগ নেতা অহেদুজ্জামান, যুবলীগ নেতা শহীদুল্লাহ্ কায়সার, সালামুন হোসেন, মাসুদ আহম্মেদ প্রমুখ। পাইকগাছার ৬নং লস্কর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কে এম আরিফুজ্জামান তুহিন জানান, আমি প্রতিবন্ধীদের জন্য কাজ করার পাশাপাশি বিভিন্ন অসহায় সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষদের নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি। আজও তার ব্যতিক্রম নয়। ভালো কাজের পাশে ছিলাম আছি থাকব। আজ প্রায় ২ শত রোগীর চোখের সেবা দেওয়া হয়েছে বিনামূল্যে। চোখে অপরেশনের জন্য নামমাত্র মূল্য পরিশোধ করা লাগবে। বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথি রশীদুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে চেয়ারম্যান তুহিন যে মহতী কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন সেটা সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে। সে নীরবে অসহায় সাধারণ মানুষ ও প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। তার মতো সকল বিত্তবানদের জনকল্যাণমুখী কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।   
১৮ মার্চ, ২০২৪

ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপন
সবুজবাগের ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারে নানা আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন করা হয়। গতকাল রোববার সকালে এ উপলক্ষে বিশেষ প্রার্থনা ও ২৫০ জন অনাথ শিশুর মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধক্ষ্য ও বাংলাদেশ বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সভাপতি বুদ্ধপ্রিয় মহাথের, সহসভাপতি স্বরূপানন্দ ভিক্ষু, সহসভাপতি রণজিৎ বড়ুয়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগের পানিসম্পদ সম্পাদক রাহুল বড়ুয়া, অধ্যাপক ড. সুমন কান্তি বড়ুয়া, স্থপতি বিশ্বজিৎ বড়ুয়া, বৌদ্ধধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়া, শিক্ষক অনুপম বড়ুয়া, শরণ বিকাশ বড়ুয়া, রন্জন বড়ুয়া, স্বপন সিংহ, ড. জগন্নাথ বড়ুয়া, অমল বড়ুয়া, টিটু বড়ুয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন।
১৮ মার্চ, ২০২৪

জাতীয় প্রেস ক্লাবে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন
নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করেছে। রোবার (১৭ মার্চ) সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় নানা কর্মসূচি। বেলা সাড়ে ১১টায় ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তের নেতৃত্বে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক মো. আশরাফ আলী, কোষাধ্যক্ষ শাহেদ চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য শাহনাজ সিদ্দিকী সোমা, জুলহাস আলম, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি ওমর ফারুকসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। এ ছাড়াও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বেলা ১২টায় ক্লাব অডিটোরিয়ামে সদস্য সন্তানদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে শিশুদের উদ্দেশে সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, জাতির পিতা গোপলগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে সেই সময় জন্মগ্রহণ করেন যখন আমরা পরাধীন ছিলাম। আমাদের দেশ পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিত ছিল। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। আজ তাই তোমরা সেই স্বাধীন দেশের নাগরিক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদেরকে অনেক ভালোবাসতেন। তাই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে আমরা জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে উদযাপন করি।  চিত্রাঙ্গন প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ধ্রুব এষ। শিশু শিক্ষা বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক শাহনাজ সিদ্দীকি সোমার সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যবস্থাপনা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি হাসান হাফিজ, যুগ্ম সম্পাদক মো. আশরাফ আলী, কোষাধ্যক্ষ শাহেদ চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ফরিদ হোসেন, জুলহাস আলম ও শাহনাজ বেগম পলি প্রমুখ। বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
১৭ মার্চ, ২০২৪

রূপগঞ্জে নানা আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে রোববার (১৭ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে তারাবো পৌরসভার আয়োজনে পৌর মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন তারাবো পৌরসভার মেয়র হাসিনা গাজী। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক)। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তারাবো পৌরসভার নির্বাহী অফিসার নজরুল ইসলাম, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেল, কলামিস্ট ও গবেষক মীর আব্দুল আলিম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিমন সরকার, রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে চিত্রাঙ্কন ও কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
১৭ মার্চ, ২০২৪

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন আজবঙ্গবন্ধুর জন্মদিন আজ
সময়ের আবর্তে হারিয়ে যায় অনেক কিছুই। কিছু নাম চিরজাগরূক থাকে গণমানুষের হৃদয়ে। স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকে ইতিহাসের পাতায়। বাঙালির কাছে তো বটেই; সারা বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের কাছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নামটি তেমনই রবে চির অমলিন। যুগে যুগে যাদের হাত ধরে রচিত হয়েছে মানবতার মুক্তির সনদ, তেমনই এক ইতিহাসের কারিগর বঙ্গবন্ধু। শোষিত, নিপীড়িত ও পরাধীন জাতিকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখিয়ে শৃঙ্খলহীন বাতাসে শ্বাস নেওয়ার অধিকার দিয়েছেন সেই মহামানব, বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অনুপ্রেরণার বাতিঘর, বাঙালি জাতির মুক্তির দূত, বিশ্বমঞ্চে শোষিত-নিপীড়িত মানুষের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর বঙ্গবন্ধুর আজ ১০৪তম জন্মবার্ষিকী। সারা দেশে দিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে উদযাপিত হবে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দিবসটি উদযাপনে দেশের সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সারা দেশে সংগঠনের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৭টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। এ ছাড়া এদিন সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় নেতারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। একই সঙ্গে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং শিশু সমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন তারা। সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন করবে। এ উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠান, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, রক্তদান ও বিনামূল্যে চিকিৎসা কর্মসূচিসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এ ছাড়া মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে জোহরের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। সন্ধ্যা ৬টায় মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়, সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এবং সকাল ১১টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় প্রার্থনা সভার আয়োজন করেছে। এ ছাড়া সোমবার সকাল ১১টায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শৈশব ও কৈশোরে দেখেছেন ব্রিটিশরাজের শাসন ও শোষণ, মানুষের কষ্টে কেঁদে উঠত যার হৃদয়। সেই শোষণ থেকে মুক্তি মিললেও মেলেনি স্বাধীনতা। সেই মুক্তির লক্ষ্যে যৌবনে করেছেন প্রতিবাদ পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। মুক্তির দিশারি হয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার সম্ভ্রান্ত পরিবারের খোকা থেকে বাঙালি জাতির পিতা হয়েছেন, জিতেছেন বাঙালির হৃদয়। বঙ্গবন্ধুর বাবা শেখ লুৎফর রহমানও ছেলেকে জাতির পিতা বলতে কুণ্ঠাবোধ করেননি। পিতা শেখ লুৎফর রহমান নিজেই বলেছেন, ‘আমিও তো বাঙালি, তাই শেখ মুজিব আমার পিতা। কারণ, আমিও তো সাড়ে সাত কোটি বাঙালির একজন।’ বঙ্গবন্ধু সাত বছর বয়সে গিমাডাঙ্গা প্রাইমারি স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন। ৯ বছর বয়সে গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন। পরে তিনি স্থানীয় মিশনারি স্কুলে ভর্তি হন। ১৪ বছর বয়সে বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হলে তার একটি চোখ কলকাতায় অপারেশন করা হয় এবং চক্ষুরোগের কারণে তার লেখাপড়ার সাময়িক বিরতি ঘটে। চক্ষুরোগে চার বছর শিক্ষাজীবন ব্যাহত হওয়ার পর শেখ মুজিব ফের স্কুলে ভর্তি হন। ১৮ বছর বয়সে বঙ্গবন্ধু ও বেগম ফজিলাতুন নেছার আনুষ্ঠানিক বিয়ে সম্পন্ন হয়। তারা দুই কন্যা—শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও তিন পুত্র—শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলের জনক-জননী। অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল পরিদর্শনে এলে বঙ্গবন্ধু স্কুলের ছাদ দিয়ে পানি পড়ত তা সারাবার জন্য ও ছাত্রাবাসের দাবি স্কুলছাত্রদের পক্ষ থেকে তুলে ধরেন। শেখ মুজিব নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদান করেন এবং এক বছরের জন্য বেঙ্গল মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তাকে গোপালগঞ্জ মুসলিম ডিফেন্স কমিটির সেক্রেটারি নিযুক্ত করা হয়। ১৯৪২ সালে এসএসসি পাস করেন। কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে মানবিক বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট ক্লাসে ভর্তি হন এবং বেকার হোস্টেলে থাকার ব্যবস্থা হয়। বঙ্গবন্ধু এই বছরেই পাকিস্তান আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে পড়েন। ১৯৪৬ সালে তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে মওলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৯ সালে তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগের পূর্ব পাকিস্তান শাখার যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে তিনি পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের টিকিটে ইস্ট বেঙ্গল লেজিসলেটিভ অ্যাসেমব্লির সদস্য নির্বাচিত হন। ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আজীবন সোচ্চার এ অবিসংবাদিত নেতাকে রাজনৈতিক জীবনে বহুবার কারাবরণ করতে হয়। তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬-দফা ও পরবর্তী সময়ে ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এবং বঙ্গবন্ধু উপাধি লাভ করেন। তার সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ধাপে ধাপে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে থাকে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জিত হলেও তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বাঙালিদের ওপর নানা নির্যাতন শুরু করে। বঙ্গবন্ধু একাত্তরের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন, যা ইউনেস্কোর ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। অন্যদিকে, ২৬ মার্চ (২৫ মার্চ মধ্যরাতে) তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং তার নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালির বহু আকাঙ্ক্ষিত বিজয় ও স্বাধীনতা অর্জিত হয়। সাম্য, মৈত্রী, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিরামহীন সংগ্রামে অবদান রাখার জন্য তিনি বিশ্বশান্তি পরিষদের জুলিও কুরি পদকে ভূষিত হন। বিবিসির জরিপে তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি নির্বাচিত হন। যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু যখন বিভিন্নমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করতে শুরু করেন, ঠিক সেই মুহূর্তে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তি ও কায়েমি স্বার্থান্বেষী মহল তার বিরুদ্ধে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র শুরু করে এবং ওই ষড়যন্ত্রেরই অংশ হিসেবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি ধানমন্ডির বাসভবনে কিছু বিপথগামী সেনা কর্মকর্তার হাতে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নিহত হন। দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান।
১৭ মার্চ, ২০২৪
X