কোরবানির পশুর বর্জ্য যথাযথভাবে অপসারণে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের আহ্বান
পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় কোরবানির পশুর রক্ত ও বর্জ্য যথাযথভাবে পরিষ্কার করার এবং নির্ধারিত স্থানে ফেলার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়াও, যত্রতত্র পশু জবাই না করতে এবং কোরবানির পুরো কার্যক্রম চলাকালে ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ মে) পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন উপলক্ষে কোরবানি করা পশুর উচ্ছিষ্টাংশ সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও অপসারণের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ রোধকল্পে করণীয় বিষয়ে বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। সভায় উল্লেখ করা হয়, কোরবানি করা পশুর রক্ত, হাড়, চামড়া, নাড়িভুঁড়ি, গোবর ইত্যাদি উচ্ছিষ্টাংশের মাধ্যমে যাতে পরিবেশ দূষিত না হয় না, সেজন্য গর্তের মধ্যে পরিত্যক্ত অংশ রেখে মাটি চাপা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। কোরবানির বর্জ্য অপসারণ বা কোরবানির গোশত বিতরণে পরিবেশসম্মত ব্যাগ বা পাত্র ব্যবহার করার আহ্বান জানানো হয়েছে। ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইমানের অঙ্গ’ তাই সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করে জনগণ ধর্মীয় ও নৈতিক দায়িত্ব পালন করবে বলে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রত্যাশা। কোরবানির পশুর বর্জ্য পরিবেশসম্মতভাবে অপসারণ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে দেশব্যাপী প্রচারপত্র বিতরণ করা হচ্ছে। গণযোগাযোগ অধিদপ্তর হাটবাজার ও উন্মুক্ত এলাকায় জনসচেতনতামূলক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করছে। জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং মোবাইল ফোন অপারেটরদের মাধ্যমে খুদেবার্তা প্রেরণ করে জনগণকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করা হবে। ঈদের আগের জুমা ও ঈদের নামাজের খুৎবায় এ বিষয়টি উল্লেখ করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ইমামদের অনুরোধ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. মোশাররফ হোসেন, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) ড. ফাহমিদা খানম এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 
৫ ঘণ্টা আগে

প্লাস্টিক বর্জ্য কমাবে ইউনিলিভার ও গেইন
সবজি বাজারে নিম্নমানের প্লাস্টিক বর্জ্যের ব্যবহার কমাতে যৌথভাবে একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করেছে ইউনিলিভার বাংলাদেশ (ইউবিএল) ও গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশন (গেইন)। শহরাঞ্চলের পরিবেশগত টেকসই/স্থায়িত্ব বৃদ্ধি এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে নেওয়া প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয় ‘ফর পিপল অ্যান্ড প্ল্যানেট: রেজিলিয়েন্ট, হেলদি অ্যান্ড সাসটেইনেবল ফুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সিস্টেমস’। প্রকল্পটির কাজ হবে খাদ্যের বাজারে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের বিকল্প উদ্ভাবন এবং সরবরাহকারী ও বর্জ্য সংগ্রহকারীদের প্রশিক্ষণ সহায়তা প্রদান। লক্ষ্য অর্জনে প্রকল্পে যুক্ত করা হবে পরিচ্ছন্নতাকর্মী, বাজারের বিক্রেতা, তরুণ, প্যাকেজিং সরবরাহকারী, সরকারি কর্মকর্তা, বাজার কমিটি ও গ্রাহকদেরও। এ বিষয়ে ইউবিএলের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার বলেন, গ্লোবাল সাসটেইনেবিলিটি কৌশলের অংশ হিসেবে পরিবেশ থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য কমাতে সহায়তা করতে উদ্ভাবনী উদ্যোগ তৈরি এবং সহযোগিতায় যুক্ত হয়েছে ইউনিলিভার। এর মাধ্যমে শুধু জনস্বাস্থ্যের উন্নতিই নয়, বরং সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি ভোক্তাদের আচরণ পরিবর্তনেও অবদান রাখা সম্ভব হবে। গেইনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. রুদাবা খন্দকার বলেন, জনবান্ধব নকশা ব্যবহার করে প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাস করা আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার লক্ষ্য। উদ্যোগটি খাদ্য ও পুষ্টি সুরক্ষা এবং খাদ্য নিরাপত্তায় অবদান রাখবে এবং শহর ও কাঁচাবাজারকে ভোক্তাবান্ধব করে তুলবে।
১৩ মে, ২০২৪

বর্জ্য দেখিয়ে ‘শিক্ষা’
সড়কের একপাশ দিয়ে অনেকটা জায়গাজুড়ে স্তূপ করে রাখা হয়েছে লেপ-তোশক, সোফা, কমোড, বেসিন, টায়ারসহ বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য। সেগুলোর পেছনে পোস্টারে লেখা সচেতনতামূলক বার্তা। প্রথম দেখায় মনে হতে পারে বর্জ্যগুলো কেউ সেখানে ফেলে গেছে, কিন্তু আসলে এটি একটি প্রদর্শনী। নাগরিকদের সচেতনতা শিক্ষা দিতে ব্যতিক্রমী এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। নগরীর খাল, ড্রেন ও লেকে বাসাবাড়ির বর্জ্য না ফেলার জন্য নাগরিকদের সচেতন করতে বর্জ্য প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ডিএনসিসি। সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে লেপ-তোশক, সোফা, কমোড, বেসিন, টায়ার, রিকশার অংশবিশেষ, প্লাস্টিকের বোতল, শো-পিস টেলিভিশনসহ বাসাবাড়িতে ব্যবহার্য পরিত্যক্ত পণ্য। এসব জিনিস রাজধানীবাসী আশপাশের খালগুলোতে ফেলে দিয়েছিলেন। খাল থেকে এসব উঠিয়ে ভিন্নধর্মী এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। প্রদর্শনী চলবে ১৭ মে পর্যন্ত। গতকাল শনিবার গুলশানে ডিএনসিসির নগর ভবনের সামনে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি ঘুরে ঘুরে বর্জ্যগুলো দেখেন এবং প্রদর্শনীতে আসা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের সচেতন করেন। সরেজমিন দেখা যায়, বিভিন্ন খালের নামে পোস্টার টানানো হয়েছে। যে যে খাল থেকে বর্জ্য হিসেবে যা কিছু পাওয়া গেছে তা সেখানে রাখা হয়েছে। খাল থেকে উদ্ধার করা পরিত্যক্ত পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে পরিত্যক্ত লেপ, তোশক, সোফা, লাগেজ, খাট, কেবল, টায়ার, কমোড, ফুলের টব, রিকশার অংশবিশেষ, টেবিল-চেয়ার, বেসিন, ব্যাগ, প্লাস্টিকের বিভিন্ন পাত্রসহ নানা পরিত্যক্ত পণ্য। নগরীর বাসিন্দারা নিজ বাসার সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ব্যবহার শেষে এসব পণ্য পরিত্যক্ত হওয়ার পর তা খালে ফেলে দিয়েছিলেন। এসব কিছুর মধ্যে মোহাম্মদপুর কাদেরাবাদ হাউজিং খাল থেকে উদ্ধার করা সিরামিকের তৈরি একটি ‘ডানা ভাঙ্গা পরী’ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এটিকে নিয়েই আগত দর্শনার্থীরা আলোচনা করছিলেন। কেউ কেউ এটাকে খাল থেকে উঠে আসা ‘ডানাকাটা পরী’ বলেও সম্বোধন করেন। মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, উন্নত দেশে বাড়ির সামনের দিকে খাল থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে উল্টো চিত্র। সবাই খাল পেছনে রেখে বাড়ি বানায়। খালগুলোকে সবাই ডাস্টবিন হিসেবে ব্যবহার করে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কতটা অসচেতন হলে মানুষ খালে লেপ-তোশক, জাজিম, রিকশা, সোফা, কমোড ও টায়ার ফেলে। তিনি বলেন, এসবের কারণেই পানিপ্রবাহ নষ্ট হয়ে রাজধানীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। মূলত সবাইকে দেখানোর জন্য, সচেতনতা তৈরি করার জন্য উদ্ধার হওয়া এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। আমরা চাই এসব সবাই দেখুক, নিজেরা সচেতন হোক, আর যেন কেউ খালে, ড্রেনে এভাবে পরিত্যক্ত জিনিস না ফেলে। মেয়র বলেন, আমরা খালগুলোর প্রবাহ ঠিক করতে কাজ করছি। জনগণ যদি সচেতন না হয় তাহলে আমাদের এ কাজ করে কোনো লাভ হবে না। নগরবাসীকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন আমরা ড্রেনে, খালে বা লেকে কোনো ধরনের ময়লা না ফেলি। ছয় মাস ধরে আমরা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে যাচ্ছি। আরেক দিক থেকে ময়লা-আবর্জনা ভরাট হচ্ছে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্যই প্রদর্শনীর এ উদ্যোগ। নগরবাসী যদি এগিয়ে না আসে রাজধানী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ডিএনসিসির জন্য দুষ্কর ব্যাপার হয়ে যাচ্ছে। আতিকুল ইসলাম বলেন, ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় আনা হবে রাজধানীর অতিগুরুত্বপূর্ণ খালগুলো। তাতে ময়লা-আবর্জনা ফেললে নেওয়া যাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।
১২ মে, ২০২৪

বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ
বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মধ্য দিয়ে সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। উৎপাদনে আসার ফলে বিশ্বের তৃতীয় দেশ হিসেবে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ।  সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, প্রকল্পে প্রতিদিন সাড়ে ১১ টন বর্জ্য ব্যবহার হচ্ছে। বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে ৪০-৫০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ, ১২শ লিটার ডিস্ট্রিল্ড ওয়াটার এবং ১৫০০ কেজি অ্যাস (ছাই)। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ ধরনের প্রকল্প চালু থাকলে পরিবেশ দূষণ কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। প্রকল্পটি একটি পাইলট প্রকল্প জানিয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী তুষার মোহন সাধু খাঁ বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো প্রকল্পটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাস্তাবয়ন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সুফল পেয়েছি। দাতা সংস্থা এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্তে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তথ্য মতে, ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেয় প্রায় সাড়ে এগারো লাখ রোহিঙ্গা। তাদের জন্য ধ্বংস করা হয় প্রায় আট হাজার হেক্টর বনভূমি। বিশাল এ জনগোষ্ঠীর পয়ঃজৈব এবং রোহিঙ্গাদের ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ ও প্রতিবেশের। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও আশপাশের এলাকায় পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষা করতে জরুরি সহায়তা প্রকল্পের আওতায় সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা (ওমনি প্রসেসর) বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) সহায়তায় ২০২১ সালে ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অতিরিক্ত বর্জ্যের কারণে পরিবেশ ও প্রতিবেশ হুমকির মুখে পড়তে পারে এমন আশঙ্কায় আমি ‘ওমনি প্রসেসর’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দিয়েছি। এ প্রকল্পটি ছিল আমার স্বপ্নের প্রকল্প। এখানে ক্যালোরোফিক ভ্যালু ও আর্দ্রতার বিষয়টিও জড়িত থাকায় শুরুতে প্লান্টটির ইনপুট ম্যাটেরিয়াল সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হয়। তিনি বলেন, এই প্লান্টটি সম্পূর্ণরূপে চালু রাখতে হলে প্রতিদিন ৬ টন ফেকাল স্লাজ, ৫ টন জৈব বর্জ্য ও ৫০০ কেজি সিঙ্গেল লেয়ার প্লাস্টিক প্রয়োজন। যেহেতু রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে সেহেতু প্রকল্পটিতে মাত্র ১০-১২ ঘণ্টা কাজ করা সম্ভব হয়। ৬০-৭০ কিলোওয়ার্ট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও এখন প্রতিদিন ৪০-৫০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ, এক হাজার থেকে ১২শ লিটার পানি এবং ১২শ থেকে ১৫শ কেজি অ্যাস উৎপাদন হচ্ছে। যদি পুরোপুরি প্রকল্পটি চালু করা যায় তবে এখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাইরে সরবরাহ করার পাশাপাশি উৎপাদিত পানি বিক্রি করেই মাসিক ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব। একই সাথে পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। বর্তমানে এখানে প্রায় এক লাখ মানুষ সরাসরি সম্পৃক্ত থেকে উপকার পাবেন বলে জানান এ প্রকৌশলী। ওমনি প্রসেসর প্রকল্পের প্লান্ট ইনচার্জ মোহাম্মদ আলীউল হক বলেন, এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে মানুষের পয়ঃবর্জ্য এবং পচনশীল ও অপচনশীন ময়লা আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ, ডিসট্রিল্ড ওয়াটার এবং অ্যাশ উৎপাদন করা হয়। প্লাস্টিকের ক্ষতিকারক কার্বন ও গ্যাস পরিবেশসহ আমাদের সবার জন্য হুমকি। কিন্তু অমনি প্রসেসরের মাধ্যমে প্লাস্টিক থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব প্রক্রিয়ায়।  তিনি বলেন, সেনেগাল এবং ভারতের পর তৃতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশে স্থাপন করা হয়। এই প্লান্টটি সম্পূর্ণ অটোমেটিক হওয়ায় ম্যান পাওয়ার খুবই কম লাগে। এছাড়া এই প্লান্টটি চালাতে বাইরের কোনো বিদ্যুৎ লাগে না। উৎপাদিত বিদ্যুৎ থেকেই এটি চালানো হয়। এটিকে বাণিজ্যিকভাবেও ব্যবহার করা গেলে আয় করা সম্ভব বলে দাবি করেছেন তিনি। পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতা সায়ীদ আলমগীর বলেন, বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ব্যবহৃত প্লাস্টিক থেকে শুরু করে জৈব, অজৈব, পয়ঃবর্জ্য পরিবেশ ও প্রতিবেশে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ প্রকল্পে প্রতিদিন যে পরিমাণ বর্জ্য ব্যবহার হচ্ছে তাতে পরিবেশের ক্ষতি কিছুটা কমিয়ে আনা যাবে। তবে তাও যথেষ্ট নয়। এ ধরনের প্রকল্প আরও নেওয়া যায় কিনা তা ভাবনাচিন্তা করা উচিত। প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম মুক্তাদির বলেন, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এডিবির সহযোগিতায় জরুরি সহযোগিতা প্রকল্পের আওতায় ‘ওমনি প্রসেসর’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এটি সরাসরি পরিবেশবান্ধব প্রকল্প। অন্য প্রকল্পে যে পরিমাণ জমির প্রয়োজন হয় ‘ওমনি প্রসেসর’ প্রয়োজনের চেয়ে ৭৫-৮০ শতাংশ কম জমিতে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এখান থেকে যা নির্গত হবে তার প্রতিটি জিনিসই পরিবেশবান্ধব। সমসাময়িক যত পদ্ধতি রয়েছে এটি একটি অগ্রসর পদ্ধতি। তবে চ্যালেঞ্জ হবে প্রকল্পটি অপারেশনের জন্য দক্ষ লোকবলের। তারপরও আমরা এর ফল দেখতেছি। এর আউটপুট, ইনপুট কি হচ্ছে, কি পরিমাণ পরিবেশে প্রভাব ফেলছে তা টেস্ট করা হচ্ছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে পরবর্তী প্রকল্পের জন্য প্রস্তাব করা হবে।
১৭ এপ্রিল, ২০২৪

খামারের বিষাক্ত বর্জ্য খালের পানিতে, হুমকিতে কৃষি-মৎস্য চাষ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ-নবাবপুর ইউনিয়নে কোনো নিয়মনীতি না মেনে খালের দুই পাশে গড়ে উঠেছে কয়েকশ মুরগির খামার। এসব খামারের বিষাক্ত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে খালে। এতে দূষিত হচ্ছে খালের পানি। এ ছাড়াও পানিতে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের নাকে কাপড় দিয়ে হেঁটে যেতে হয়। খালের দূষিত পানি দিয়ে চাষাবাদ করতে পারছেন না স্থানীয় কৃষক। দূষিত পানি ছড়িয়ে পড়ছে ফসলের জমিতে। এতে করে ক্ষতি হচ্ছে ফসলের, মৎস্য চাষিরা পড়েছেন বিপাকে। ফলে এসব খামারির বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, পরিবেশদূষণ না করার জন্য খামারিদের বারবার নির্দেশনা দিলেও মানছেন না তারা। মার্চ মাসের উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় খালে বর্জ্য ফেলার কারণে পানি দূষিত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সভার সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান এ বিষয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিন। সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, নবাবপুর-আমিরাবাদ ইউনিয়নের কয়েক কিলোমিটার এলাকার খালের দুই পাশে গড়ে উঠেছে কয়েকশ মুরগির খামার। খালের দুই পাশে খালপাড় ভরাট করে গড়ে উঠেছে স্থাপনা। মুরগির বর্জ্যে ও ময়লায় খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় জোয়ারের পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে বহু আগে থেকেই। মুরগির বর্জ্যে দূষিত হয়ে পানি কালো হয়ে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। দেখা যায়, খালের পাড়ের খামারী পাইপের মাধ্যমে খামারের বর্জ্য খালে দিচ্ছে এবং খাল থেকে একটু দূরের খামারিও মাটির নিচ দিয়ে পাইপের মাধ্যমে বর্জ্য খালে দিচ্ছে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, খামারিদের মুরগির বর্জ্যে ভরাট হয়ে গেছে খালটি। কৃষকরা আগে তাদের চাষাবাদে খালের পানি ব্যবহার করতেন। এখন সেটি সম্ভব হয় না। তাদের দাবি, বর্জ্যে দূষিত হয়ে খাল-বিল ও জলাশয়কে বিষের খনিতে পরিণত করেছে। এতে কৃষকরা বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভর করেই চাষাবাদ করতে হয়। পূর্ব সফরপুর গ্রামের শিক্ষক একরাম উদ্দিন জানান, খালটির দূষণে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। দিনের বেলায় দুর্গন্ধ কিছুটা কম থাকলেও রাতে দুর্গন্ধ বাড়ে। দিনে এবং রাতে প্রচুর মশা দেখা যায়।  মহদিয়া গ্রামের কৃষক আফসার উদ্দিন বলেন, পানিদূষণের আগে খালের পানিতে নানা ধরনের দেশীয় মাছ আসত। এলাকার মানুষ সে মাছ ধরত। এখন দূষণের কারণে মাছে তো দূরের কথা, খালের পানিতে ব্যাঙ বা সাপও থাকতে পারে না। এ ছাড়া বর্ষাকালে খালের পানি উপচে ছড়িয়ে পড়ে ফসলের জমিতে। এতে ফসলের ফলন কমে যাচ্ছে দিন দিন। সাহেবের হাট এলাকার কয়েকজন মুরগির খামারি এলাকাবাসীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, খামারের বর্জ্য ও পানি সরাসরি খালে ফেলা হয় না। খালের পানিতে নিয়মিত ওষুধ ও চুন দেওয়া হয়। জৈবসার উৎপাদনের কারণে কিছু গন্ধ হয়। খামারি নুরনবী ও সবুজ জানান, আমরা কয়েকজন খামারি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট করেছি৷ সবাই যদি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট করে তাহলে খালের পানিতে এত ময়লা হবে না। যারা বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট করছে না তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য মতে সোনাগাজী উপজেলায় ৫২৩টি মুরগির খামার রয়েছে। যার মধ্যে ৮০ শতাংশ খামার আমিরাবাদ-নবাবপুর ইউনিয়নের খালের পাড়ে অবস্থিত। নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম বলেন, মুরগির খামারের বর্জ্যে খালের পানি একেবারে দূষিত হয়ে গেছে। এ ব্যপারে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় একাধিকবার বলা হলেও খামারিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বছরে এক-দুবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কয়েকজন খামারিকে জরিমানা করা হলেও আশানুরূপ কোনো ফল পাওয়া যায়নি। জরিমানার টাকা কম হওয়ায় খামারিরা ভয় পায় না। এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরে একাধিকবার জানানোর পরেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল হক হিরন বলেন, যেসব খামারি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট না করে খালে বর্জ্য ফেলছে তাদের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের নিকট লিখিতভাবে জানিয়েছি। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নেবু লাল দত্ত বলেন, খামারে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট এবং খামার বায়োসিকিউরিটির আওতায় নিয়ে আসার জন্য খামারিদের বারবার চিঠি দিয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অনেকেই নির্দেশনা মানছে না। বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট না থাকলে নিবন্ধন বাতিল করা হবে। বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট আছে কিনা জরিপ করা হচ্ছে।  সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান জানান, খামারের বর্জ্যে খালের পানির অবস্থা খুব খারাপ। পানির দুর্গন্ধে ওই এলাকার মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছে। কৃষকরাও খালের পানি জমিতে ব্যবহার করতে পারছে না। খামারগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ভূমিকা চোখে পড়েনি। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন বলেন, উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০৫ এপ্রিল, ২০২৪

দক্ষিণ সিটিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা এসেছে, দাবি মেয়রের 
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে শৃঙ্খলা আনা হয়েছে বলে দাবি করেছেন সংস্থাটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। বুধবার (২৭ মার্চ) ডিএসিসির ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডে বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি করেন। মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে দেখেছি যে, প্রায় দুর্ঘটনা ঘটত এবং কয়েকজনের প্রাণহানিও ঘটেছে। আমাদের নিয়মিত গাড়ি চালক ছিল না। যানবাহনগুলো সবই প্রায় পুরনো ও লক্কড়-ঝক্কড় ছিল। ফলে বর্জ্য সংগ্রহ ও সরবরাহ ব্যবস্থা খুবই নাজুক অবস্থায় ছিল। ময়লা-আবর্জনা উন্মুক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকত। কিন্তু সেখান থেকে আমরা অনেকটা উত্তরণ ঘটিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে ২৫টি ডাম্প ট্র্যাক কিনেছি। নতুন প্রায় ১০০ জন নিয়মিত ভারী গাড়িচালক নিয়োগ দিয়েছি। আগে যাকে তাকে দিয়েই গাড়ি চালানো হতো। সেটা এখন নেই বললেই চলে। আমরা পুরো বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সংস্কার করেছি। এখন আর রাস্তায় উন্মুক্তভাবে বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা যায় না। এভাবেই আমরা পুরো বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমকে আধুনিকায়ন করছি, শৃঙ্খলায় নিয়ে আসছি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাছিম আহমেদ, অঞ্চল-৮ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এম জে আরিফ বেগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. সফিউল্লাহ সিদ্দিক ভূঁইয়া প্রমুখ।
২৭ মার্চ, ২০২৪

সিটি করপোরেশনের বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে
দেশের ১২টি সিটি করপোরেশন এলাকায় দৈনিক ১৭ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদিত হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই বর্জ্য রিসাইক্লিনের মাধ্যমে দূষণরোধ করে সম্পদে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে বলেও জানান তিনি। গতকাল রোববার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে নোয়াখালী-২ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুকে প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রী বলেন, সিটি করপোরশনগুলোতে উৎপাদিত বর্জ্যের ৩৯ শতাংশ ঢাকার। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণে ৩ হাজার ২১৩ মেট্রিক টন এবং উত্তরে ৩৪০০-৩৬০০ মেট্রিক টন। উত্তর সিটি এলাকার বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে চায়না মেশিনারি ইনঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের অর্থায়নে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও ডব্লিউ টি ই পাওয়ার প্লান্ট নর্থ ঢাকা প্রাইভেট লিমিটেড কাজ করছে। প্রতিষ্ঠান দুটি আমিনবাজার ল্যান্ডফিলের বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ইনসিনারেশন প্লান্ট নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। আর ঢাকা দক্ষিণের বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৬টি প্রস্তাব যাচাই-বাচাই চলছে। তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় বর্জ্য দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১৩টি প্রস্তাব এরই মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর ৪টি প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব নির্বাচন করা হয়েছে। বরিশাল ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন ছাড়া বাকিগুলোর বর্জ্য হতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রস্তাব যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলছে।­
১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা দীর্ঘদিনের চ্যালেঞ্জ
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, প্লাস্টিক বর্জ্য টেকসই ব্যবস্থাপনা সরকারের দীর্ঘদিনের চ্যালেঞ্জ। বিশ্বের মতো বাংলাদেশও সরকারি পর্যায়ে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি নানা প্রকল্পের মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণ কমানোর কাজ চলছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) প্লাস্টিক ও মিউনিসিপ্যাল সলিড বর্জ্য টেকসই ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ১৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে পৃথকীকরণ প্লান্ট স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল শনিবার দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজার থানার লালমাটিয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ডে প্লান্টটির উদ্বোধন করা হয়। মন্ত্রী আরও বলেন, সরকারের একার পক্ষে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা কঠিন, তাই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সিলেট সিটিকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে লাফার্জ হোলসিমের সঙ্গে কাজ করছি। আপনারাও সচেতন হোন এবং প্লাস্টিকের ব্যবহার কমান। যেখানে-সেখানে প্লাস্টিক পণ্য ফেলে পরিবেশের ক্ষতি না করার আহ্বান জানান তিনি। সে সময় সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. এ কে আব্দুল মোমেন, সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিুবর রহমান হাবিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইব্রাহিম, সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। জানা যায়, সিসিক ও লাফার্জ হোলসিম লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে দেশের প্রথম এবং একমাত্র প্লাস্টিক বর্জ্য পৃথকীকরণ প্লান্ট চালু হল। এর মাধ্যমে ক্ষতিকর অপচনশীল প্লাস্টিক স্বয়ংক্রিয়ভাবে আলাদা করা সম্ভব হবে।
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

মাটিরাঙ্গায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নেই কোনো উদ্যোগ
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার পুরো পৌর এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকে আবর্জনা। পর্যাপ্ত ডাস্টবিন বা নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় বসতবাড়ি ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান যত্রতত্র ময়লা ফেলে। প্রতিদিন ময়লা-আবর্জনা ও দুর্গন্ধকে পাশ কাটিয়ে চলছে জনসাধারণ এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সম্পূর্ণভাবে এসব বর্জ্য পরিষ্কার না করায় পৌর এলাকায় বিভিন্ন স্থানে আবর্জনা দেখা যায়। ফলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। জনসাধারণের বাড়ছে ভোগান্তি। তাছাড়া মাটিরাঙ্গায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থাকলেও নিজ উদ্যোগে পরিষ্কারের দায়িত্ব নেয়নি কেউ।   সচেতন মহলের মতে, এভাবে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলায় পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে পৌরসভার সৌন্দর্য। বিষয়টিতে উদাসীন অনেকে। পৌর এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না রাখার দায় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারেন না বলে মন্তব্য করেন তারা। সরেজমিনে, মাটিরাঙ্গায় পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিতভাবে ময়লা আবর্জনার স্তূপ দেখা যায়। জেলা পরিষদের বিশ্রামাগারের ভেতরে আশপাশের হোটেলের বর্জ্যসহ বিভিন্ন স্থানের ময়লা ফেলা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব ময়লার ফলে বর্জ্যের একটি বিশাল স্তূপ হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে পরিবেশের দারুণ ক্ষতি হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে জনসাধারণ। তাছাড়া মাটিরাঙ্গা থানার নিছের মোড়ে পড়ে আছে ময়লার বিশাল স্তূপ। কত বছর থেকে এ স্থানে ময়লা ফেলা হচ্ছে তা ঠিক করে কেউ বলতে পারছেন না।  এদিকে চৌধুরী পাড়ায় যাওয়ার মোড়ে, ঈদগাহের সামনের রাস্তায়, হাসপাতাল পাড়ার মোড়ে, তরকারি বাজারের প্রবেশদ্বারে প্লাস্টিকের বোতল, পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, নষ্ট তরকারি, নষ্ট ফল, কাগজের প্যাকেট, কেক-মিষ্টির বক্স, ওয়ানটাইম কাপ, বাদামের খোসাসহ নানা ধরনের উচ্ছিষ্ট। তাছাড়া মাটিরাঙ্গা পৌরখাল তো ময়লাময় হয়ে আছে বেশ কয়েক যুগ আগ থেকেই। এক বছর আগে পৌরসভার মাসিক সমন্বয় সভায় পৌরসভা এলাকায় পয়োনিষ্কাশনের জন্য ৬০টি ডাস্টবিনের চাহিদা দেওয়া হয়। ফান্ড স্বল্পতার কারণে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি বলে জানা যায়। তাছাড়া গত ডিসেম্বর মাসে মাসিক সমন্বয় সভায় এক প্রকল্পের অর্থায়নে মাটিরাঙ্গা পৌরসভা বাস্তবায়নে ৩টি স্থানে স্থায়ী ডাস্টবিন স্থাপনের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ১টি মাটিরাঙ্গা বালিক উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন, অন্যটি ৫নং ওয়ার্ডের ফরিদ সেক্রেটারির বাড়ির পাশে, বাকি ডাস্টবিনটি মাটিরাঙ্গা উপজেলা পোস্ট অফিসের পাশে বাবুপাড়া রাস্তা মাথায় স্থাপন করা হলেও এসব ডাস্টবিন প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।  মাটিরাঙ্গা পৌর এলাকায় নারী-পুরুষসহ পরিচ্ছন্নতাকর্মী ১০ জন। সপ্তাহে ৬ দিন কাজ করেন তারা। তার মধ্যে ৪ দিন পৌর সদর বা বাজার এলাকায় বাকি ২ দিন হাসপাতাল, থানা ও সেনা জোন এলাকায় বর্জ্য অপসারণের কাজ করেন।   মাটিরাঙ্গা পৌরসভার পরিছন্ন পরিদর্শক মামুনুর রশিদ জানান, গত ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ভ্রাম্যমাণ ডাস্টবিন ছিল ১২০টি। ময়লা-আবর্জনা পরিবহনের জন্য দুটি পিকআপ ও দুটি ভ্যান রয়েছে। বর্তমানে ৪০টির মতো ডাস্টবিন থাকলেও বাকি ডাস্টবিনগুলো চুরি বা নষ্ট হয়ে গেছে বলে তিনি জানান। তবে সে সময়ের পর থেকে অদ্যবধি বর্জ্য অপসারণের আর কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।   মাটিরাঙ্গা বাজারের তরকারি ব্যবসায়ী লিটন বলেন, আগে অনেকগুলো ডাস্টবিন ছিল যেখানে আমরা নিয়মিত তরকারির বর্জ্য ফেলতাম এখন ডাস্টবিনগুলো পুরাতন হওয়ায় সেগুলো ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর নষ্ট হয়ে যাওয়া ডাস্টবিনগুলো রাতের আধারে কোথায় গেছে তার কোনো হদিস নেই। তাই আমাদের ময়লা ফেলতে সমস্যা হয়।   মাটিরাঙ্গা ভাতঘরের ম্যানাজার মো. হাসান বলেন, এখানে ময়লা ফেলার জন্য কোনো ডাস্টবিন না থাকায় আমরা ময়লাগুলো রাস্তার ওই পাশে (জেলা পরিষদের বিশ্রামাগার) ফেলে দেই। তাছাড়া শুধু আমি নই, অনেকেইতো এখানে ময়লা ফেলে। এখানে ডাস্টবিন থাকলে আমরা ডাস্টবিনেই ময়লা রাখতাম। বাহিরে ফেলতাম না।  মাটিরাঙ্গা পৌরসভার পেনেল মেয়র-১ মোহাম্মদ আলী বলেন, প্রতি গলির মোড়ে মোড়ে ডাস্টবিন দেওয়ার পরিকল্পনা আমাদের আছে। জনসচেতনতার অভাবে জনদুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জনগণকে। পৌরবাসী সচেতন নয়, তারা ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে রাখেন না। তাদের বারবার সতর্ক করে দেওয়া হলেও নিয়ম মানছেন না তারা।   মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজী চক্রবর্তী বলেন, মাটিরাঙ্গায় বর্জ্য অব্যবস্থাপনার দায় পৌর কর্তৃপক্ষের। এখানে উপজেলা প্রশাসনে কিছু করার নেই। তবে যথাস্থানে বর্জ্য অপসারণে পৌর মেয়রকে অনুরোধ করতে পারেন বলে তিনি জানান।
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X