পহেলা বৈশাখ অসাম্প্রদায়িকতার প্রতীক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, অসাম্প্রদায়িকতা আমাদের জাতির মূল চালিকাশক্তি আর পহেলা বৈশাখ উৎসব অসাম্প্রদায়িকতার প্রতীক। শুক্রবার (১০ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ফরেন অফিস স্পাউসেস অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বৈশাখী উৎসব ১৪৩১’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।  পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে তৎকালীন পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রব্যবস্থা ভেঙে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জন্ম। আর বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হওয়া পহেলা বৈশাখের উৎসব আজ আমাদের অসাম্প্রদায়িকতার মূর্ত প্রতীক। ড. হাছান বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা বাঙালি, আর দ্বিতীয় পরিচয় আমরা কে কোন ধর্মের। আর বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্র- ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। সে কারণেই আজ বাংলাদেশে ঈদ, পূজা, প্রবারণা পূর্ণিমা সব উৎসবে সকল ধর্মের মানুষ একাত্ম হয়ে যায়। এর আগে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।   মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ডেভিড স্লেটন মিলের নাম মনোনয়ন দিয়েছেন- এ নিয়ে প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ মনোনয়নকে স্বাগত জানান। নতুন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এ সময় সম্প্রতি হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্নোত্তর বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, আমাদের দেশে মানবাধিকার অনেক দেশের চেয়ে ভালো। বিশ্বের কোনো দেশেই মানবাধিকার আদর্শ অবস্থানে নেই।  তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে পুলিশ দমন করছে, সেটি আমরা টিভির পর্দায় দেখছি। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে নাগরিক আন্দোলনকে কীভাবে পুলিশ দমন করছে, সেটিও আমরা দেখছি। সব দেশেরই উচিত মানবাধিকার উন্নয়নে একযোগে কাজ করা, আমরাও আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে মানবাধিকার উন্নয়নে কাজ করতে চাই উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ড. এ কে আবদুল মোমেন ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শাহরিয়ার আলম, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ফরেন অফিস স্পাউসেস অ্যাসোসিয়েশনের (ফোসা) সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে ফোসা’র শিল্পীদের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করেন।
১০ মে, ২০২৪

৪ দিন পর জবিতে উদযাপিত হলো বাংলা নববর্ষ 
পহেলা বৈশাখের চারদিন পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মহাসমারোহে বর্ণিল শোভাযাত্রার মাধ্যমে উদযাপিত হলো বাংলা নববর্ষ।   বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টায় মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে নববর্ষ উদযাপন শুরু হয়। এরপর আলোচনা সভা, লোকসংগীত, যাত্রাপালার মতো ছিল বর্ণিল অনুষ্ঠান।  এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়ে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার, ভিক্টোরিয়া পার্ক ঘুরে আবার জবি ক্যাম্পাসে শেষ হয়। এতে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম।  এবারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রায় ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া রিকশাচিত্রকে মূল প্রতিপাদ্য করে এবং ‘বৈশাখে নূতন করিনু সৃজন/ মঙ্গলময় যত তনু-মন’ স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয়েছে। শোভাযাত্রায় একটি রিকশা করে নতুন বর বউয়ের যাত্রার প্রতিকৃতি তুলে ধরা হয়। রিকশাচিত্রের পাশাপাশি সংকটাপন্ন প্রাণী প্রজাতির মধ্যে কুমিরের মোটিফ তুলে ধরা হয়। এ ছাড়াও লক্ষীপেঁচা, ফুল, মৌমাছি, পাতা, বাঘের মুখোশ এবং গ্রামবাংলার লোক কারুকলার নিদর্শনসমূহ স্থান পায়। মঙ্গল শোভাযাত্রাটির আয়োজনের দায়িত্বে ছিল চারুকলা অনুষদ। মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষে সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনা সভায় বক্তৃতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া সত্ত্বেও সীমিত অবকাঠামো নিয়েও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃহৎ পরিসরে নববর্ষ উদযাপন করা হচ্ছে। সারা দিনব্যাপী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রাণ হচ্ছে শিক্ষার্থী। আর এধরনের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের দক্ষতা তুলে ধরতে পারছে। পশ্চিম বঙ্গ, পূর্ব বঙ্গ, পূর্ব পাকিস্তান তারপর বাংলাদেশ এবং এই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে জায়গা করে নিয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্য। বঙ্গবন্ধুর এই অবদান যেন আমাদের নতুন প্রজন্ম তাদের চিন্তা চেতনায় ধারণ করতে পারে। তিনি আরও বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি অসম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল বিশ্ববিদ্যালয়। এইখানে যেন সাম্প্রদায়িক চিন্তা চেতনার জায়গা না হতে পারে। আমি সেই দর্শনে বিশ্বাসী, যেটা মুক্তিযুদ্ধের চিন্তা চেতনায় বিশ্বাসী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের সংবিধানের ৪টি স্তম্ভের মাধ্যমে পথ দেখিয়ে গেছেন, সেই সংবিধানকে নিয়েই আমি এগিয়ে যেতে চাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য প্রদান করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি ও কর্মচারী সমিতির সভাপতি। এরপরই শুরু হয় গ্রামীণ যাত্রাপালা। এতে উচ্ছ্বাস দেখা যায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ, সংগীত বিভাগ, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদ, উদীচী শিল্পী-গোষ্ঠী ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যান্ড মিউজিক অ্যাসোসিয়েশন। উল্লেখ, গত ১৪ এপ্রিল সারা দেশে পালিত হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। রমনার বটমূলে দিনভর নানা আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটিকে বরণ করেন নানা পেশার মানুষ।  
১৮ এপ্রিল, ২০২৪

৪ দিন পর জবিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপন, বন্ধ থাকবে ক্লাস-পরীক্ষা 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান আগামী বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) উদযাপন করা হবে। এতে ওই দিনে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান উদ্‌যাপন উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। এ প্রেক্ষিতে আগামী ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হলো। এ ছাড়া অনুষ্ঠান সূচিতে বলা হয়, এদিন সকালে  মঙ্গল শোভাযাত্রা জবি ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার, ভিক্টোরিয়া পার্ক ঘুরে আবার জবি ক্যাম্পাসে শেষ হবে। এরপর একাত্তরের গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি ভাস্কর্য চত্বর সামনে আলোচনা সভা, সংগীত বিভাগের আয়োজনে সংগীতানুষ্ঠান এবং নাট্যকলা বিভাগের আয়োজনে যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হবে। পরে বিকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনা এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড মিউজিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রযোজনায় রাত ৮টা পর্যন্ত ব্যান্ড সংগীত পরিবেশিত হবে। এদিন বর্ষবরণের বর্ণাঢ্য এসব অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে অংশগ্রহণ করতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, এবারের পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে চারিপাশের দেয়ালে পেইন্টিং করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া রিকশাচিত্রকে উপপাদ্য করে এ চিত্রাঙ্কন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রে ফুটে উঠেছে ফুল, মাছ, নৌকা, বাঘ, ময়ূরসহ নানা ধরনের চিত্র। 
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

চীনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন
চীনের নানজিং শহরের নানজিং ইউনিভার্সিটি অব পোস্ট অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনের (এনজেইউপিটি) বাংলাদেশি কমিউনিটির আয়োজনে পহেলা বৈশাখ- ১৪৩১ উদযাপন হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, দেশীয় ঘরোয়া খেলা, কবিতা আবৃত্তি, বাংলা লোকসংগীত পরিবেশনসহ বাংলাদেশি নানা পদের খাবারের আয়োজন করা হয়। এতে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নানা পর্বে বিদেশিদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। রোববার (১৪ এপ্রিল) চীনের নানজিং শহরের নানজিং ইউনিভার্সিটি অব পোস্ট অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনের বাংলাদেশি কমিউনিটির এই আয়োজনে চীন, পাকিস্তান, ভারত, মরক্কো, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের বিদেশি শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিল। মরক্কোসহ কয়েকটি দেশের শিক্ষার্থীরা বাংলা ভাষায় গান ও নাচে অংশগ্রহণ করেন। এনজেইউপিটির পিএইচডি শিক্ষার্থী নাঈম মণ্ডল অনুষ্ঠানের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মাস্টার্স শিক্ষার্থী তাজবিদ শ্রিজন। অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ-চায়না ইয়ুথ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ বি সিদ্দিক, সাবেক সেক্রেটারি খাইরুল ইসলাম, প্রথম আলো বন্ধুসভার সভাপতি আহনাফ আনন, সেক্রেটারি আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ। অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ-চায়না ইয়ুথ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও নানজিং ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক এ বি সিদ্দিক বলেন, ‘দেশীয় সংস্কৃতি সবার মাঝে আমরা ছড়াতে চাই। আমরা যে তা করতে পারছি এর প্রমাণ হলো আজকের অনুষ্ঠানে বিদেশিদের অংশগ্রহণ।’   চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি ও লোক সংগীতে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে ‘পহেলা বৈশাখ উদযাপন’ অনুষ্ঠানে শেষ হয়।
১৫ এপ্রিল, ২০২৪

ইতালি প্রবাসীদের পহেলা বৈশাখ উদযাপন
ইতালির ভিসেনজা প্রভিন্সের থিয়েনে শহরে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান পহেলা বৈশাখ উদযাপন হয়েছে। থিয়েনে বসবাসরত তরুণরা আয়োজন করে এ উৎসবের। প্রবাসের মাটিতে বেড়ে ওঠা শিশু-কিশোরদের বাংলাদেশের নিজস্ব কৃষ্টি কালচার ও উৎসবের সঙ্গে পরিচিতি ও যুক্ত থাকার জন্যই মূলত এ উৎসবের উদ্দেশ্য। উৎসবের প্রধান আকর্ষণ পান্তা ইলিশ ও ভাবিদের নিজেদের হাতে তৈরি করা নানাবিধ ভর্তা ও পিঠা প্রদর্শন ও পরিবেশন হয় এ অনুষ্ঠানে। পরিবার-পরিজনসহ আগত প্রবাসীরা প্রবাসের মাটিতে উৎসবটিকে খুব প্রাণভরে উপভোগ করেন। এ সময় অতিথিদের মধ্যে কাজী সাত্তার, শাহাদাত হোসেন, রুহুল আমিন মান্না, সোহেল পাটোয়ারী, মশিউর রহমান সুমন, ইব্রাহিম ইবু, হাসান আহমেদ, কবির হোসেন, সাক্ষাৎকারে সবার উদ্দেশে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সুলতান সরকার, হেলাল উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মতিউর রহমান, এমদাদ বেপারী, সাদ্দাম হোসেন, হুমায়ুন কবির, রাশেদ ভূঁইয়া, রাহেল, সোহেল রানা, ইমরান শুক্কুর আলম, ইকবাল হোসেন, আব্দুল কাহার, সাকিব, আমির, মহিন প্রমুখ।
১৫ এপ্রিল, ২০২৪

শিল্পকলায় পুঁথি পাঠ ও ঢাকের তালে বর্ষবরণ 
পুঁথি পাঠ, লালন সংগীত, নৃত্য, ঢাকের তালে তালে ও লোকসাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে  নতুন বর্ষকেবরণ করে নিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।  রোববার (১৪ এপ্রিল) শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে সকাল ১১টায় জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত বর্ষবরণের আলোচনায় প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক এবং ট্রাস্টি মফিদুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব সালাহউদ্দিন আহাম্মদ।  আলোচনায় বক্তারা বলেন, ‘বাঙালির চেতনাবোধ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে এর নানামুখী আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পহেলা বৈশাখের ঐতিহ্য তুলে ধরতে হবে। বাঙালির অসাম্প্রদায়িক উৎসব পহেলা বৈশাখ নানা রঙে, নানা রূপে কল্যাণ হয়ে ফিরে আসুক সবার মাঝে।’   শুরুতেই পরিবেশিত হয় সমবেত সংগীত ‘তুমি নির্মল করো, মঙ্গল করো’, পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিশু সংগীত দল। পরিচালনায় ছিলেন মুহাম্মদ আনিসুর রহমান। এরপর সমবেত ‘নৃত্য এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ পরিবেশন করে স্পন্দন নৃত্যদল, নৃত্য পরিচালনা করেছেন অনিক বোস। একাডেমির নৃত্যশিল্পী এস কে জাহিদ এর পরিচালনায় সমবেত ঢাক নৃত্য পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রতিশ্রুতিশীল নৃত্যদল।  এরপর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির বিশেষ পরিবেশনা কালচারাল হেরিটেজ অনুষ্ঠিত হয়। পরিচালনায় ছিলেন খন্দকার ফরহানা রহমান।  বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিশু নৃত্যদল পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘আমরা সুন্দরের অতন্দ্র প্রহরী’, পরিচালনা করেন এস কে জাহিদ। সবশেষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিশু সঙ্গীত দল পরিবেশন করে সমবেত সঙ্গীত ‘এসো হে বৈশাখ এসো, এসো।’ অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন তামান্না তিথী।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

‘তাকদুম তাকদুম বাজাই’ গানে শেষ হলো বর্ষবরণের অনুষ্ঠান
শচীন দেববর্মনের সুরে করা ‘তাকদুম তাকদুম বাজাই’ গানে শেষ হলো বাংলা নতুন বছরকে বরণ করার অনুষ্ঠান। রোববার (১৪ এপ্রিল) সকাল সোয়া ৬টায় আহির ভৈরব রাগে বাঁশির সুরে শুরু হয় বর্ষবরণের এবারের অনুষ্ঠান। একে একে পরিবেশন করা হয় মোট ২৯টি পরিবেশনা।  সকাল থেকেই রাজধানীর রমনার বটমূলে নামে মানুষের ঢল। সর্বশেষ পরিবেশনাটি ছিল ‘তাকদুম তাকদুম বাজাই’ গানটি। এরপর ছিল নববর্ষ কথন। নববর্ষ কথন শোনান ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী।  এবারের কথনের শেষ অংশে বলা হয়, ‘অমানবিক এই অস্বাভাবিকতা থেকে বেরোতে হবে। নইলে বাঙালির প্রাণপ্রিয় এই নববর্ষ উদযাপনও হয়ে পড়বে কেবল একটি দিনের জন্য বাঙালি সাজবার উপলক্ষ।’ সারওয়ার আলী আরও বলেন, ‘আজ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দের প্রথম প্রভাতের সুরবাণী আঁধার রজনী পোহালো, জগত পূরিল পুলকে। নববর্ষের নবীন আলোয়, নবীন আশায়, নবজীবন লাভ করে সবাই যেন স্বাভাবিকতায় ফিরি এবং সম্প্রীতির সাধনায় নিজেদের নিমগ্ন করি—এই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা। শুভ নববর্ষ।’ বাংলা নববর্ষের দিনটি বাঙালিদের জন্য সবচেয়ে আনন্দময়, সবচেয়ে রঙিন উৎসব। এদিন বাঙালি জাতি পুরোনো বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেয় আনন্দ উৎসবের মাধ্যমে। তাইতো নববর্ষকে বরণ করতে ভোর থেকেই মানুষের ঢল নামে রমনায়। সত্তরের দশকে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রতিবাদে ১৯৬৭ সালে প্রথমবারের মতো বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান আয়োজন শুরু করে ছায়ানট। সেদিনের আয়োজনের প্রথম গানটি ছিল ‘আলোকের এই ঝরনাধারায় ধুইয়ে দাও...’।  এবারের আয়োজনে সম্মেলক গান ১১টি, একক গান ১৫টি এবং পাঠ ও আবৃত্তিও ছিল। এ আয়োজনকে ঘিরে পুরো রমনা পার্ক এলাকা নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। পার্কের ভেতরে ডিএমপি, র‌্যাবের কন্ট্রোল রুম বসানো হয়েছে।  পর্যটকদের সহায়তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের টিম, লেকে নৌপুলিশের টিম, মেডিকেল টিম, লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টার, রক্তদানের বুথ রয়েছে। এ ছাড়া, ডিএমপির পক্ষ থেকে বিনামূল্যে সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

চবিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পহেলা বৈশাখ বর্ষবরণ উৎসব উদযাপন
‘এই বৈশাখে বৈশ্বিক বৈভবে’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ‘বর্ষবরণ উৎসব পহেলা বৈশাখ’ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। রোববার (১৪ এপ্রিল) বাংলা নববর্ষকে উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে উদযাপন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গ্রামবাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে দিনব্যাপী এ বর্ষবরণ উৎসবে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। কেন্দ্রীয় উদযাপন কমিটির সদস্য হয়ে ছিলেন অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপউপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক বেনু কুমার দে ও উপউপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড.  মো. সেকান্দর চৌধুরী। দিনব্যাপী কর্মসূচি বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের শুরুতেই সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণ চত্বর থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়ে জারুলতলায় এসে শেষ হয়। পরে বেলা ১১টায় জারুলতলায় বৈশাখী মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় সংগীত, বৈশাখের গান ও নৃত্য অনুষ্ঠান। অতঃপর বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানে উপাচার্য ও উপউপাচার্যরা ‘শুভ নববর্ষ ১৪৩১’ উপলক্ষে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।  আলোচনা সভায় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবদুল হক বলেন, নববর্ষের একটাই ভাব সেটা হচ্ছে সার্বজনীনতা। একটি জাতি শিক্ষা, গবেষণা, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে যত বেশি উন্নত সেই জাতি তত বেশি এগিয়ে থাকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে যদি প্রকৃতার্থেই প্রগতিশীল করতে হয় তাহলে এই সাংস্কৃতিক ধারা বজায় রাখতে হবে।  শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, গত বছরের সব অন্যায় অবিচারকে ঝেড়ে ফেলে নতুন বছরে আবার নতুন করে শুরু করব। যাদের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয় আজ তলানিতে এসে ঠেকেছে তাদের প্রতি সজাগ দৃষ্টিপাত রাখার জন্য অনুরোধ করছি মাননীয় উপাচার্যকে। উপউপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, আজকের এই বাংলা নববর্ষ যাদের জন্যে পেয়েছি তাদের প্রাণভরে স্মরণ করছি। পুরাতনের গ্লানি মুছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ্য উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের স্যারের নেতৃত্বে এগিয়ে যাব আমরা।  উপউপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক বেনু কুমার দে বলেন, সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাব। যে যাই বলুক না কেন, এই নববর্ষকে নিয়ে যতোই ব্যাঙ্গাত্মক করুক না কেন আমরা আমাদের অনাগত ভবিষ্যতের কাছে এই সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিয়ে যাব। প্রধান অতিথির বক্তব্যে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নববর্ষ উৎসবের সূচনা করেন সাবেক উপাচার্য আবু ইউসুফ স্যার। তিন দিনব্যাপী সেই আয়োজন চলতে থাকে। অনেকেই আমাকে বলেছিলেন ঈদের পরপরই এই উৎসব কীভাবে পালন করবেন? আমি তাদের বলেছিলাম, যদি ঈদের দিনেও নববর্ষ হতো তাহলেও আমরা এই উৎসব পালন করতে দ্বিধাবোধ করতাম না। আমি কথায় বিশ্বাসী না কর্মে বিশ্বাস করি। বিশ্ববিদ্যালয়কে তার আপন গতিতে উন্নতির চূড়ান্ত শিখরে নিয়ে যাব।  আলোচনা শেষে দুপুর ১২টা থেকে ১টা ৩০ পর্যন্ত  গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী বলীখেলা (মুক্ত মঞ্চে), কাবাডি খেলা (বুদ্ধিজীবী চত্বরে) এবং বউচি খেলা (চাকসু প্রাঙ্গণে) অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাসিম হাসান, কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. আলী হোসাইন, কর্মচারী সমিতির সভাপতি সুমন মামুন, অফিসার সমিতির সভাপতি রশীদুল হায়দার জাবেদ।  সঞ্চালনায় ছিলেন ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সুকান্ত ভট্টাচার্য ও অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তন্ময়ী হাসান অয়ন।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

ধুলো পড়েছে প্রাচীন ঐতিহ্যের হালখাতায়
আজ পহেলা বৈশাখ। একসময় পহেলা বৈশাখ আর হালখাতা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিল। বাংলা বছরের প্রথম দিন রঙিন ফুল ও কাগজ দিয়ে দোকান সাজিয়ে আয়োজন চলত হালখাতার। মূলত, সারা বছরের বকেয়া ওঠানোর জন্য আয়োজন হয় হালখাতার। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এই রীতিতে ভাটা পড়লেও এখনো কিছু কিছু জায়গায় আয়োজন হয় এই অনুষ্ঠানের। সমগ্র দেশে দিন-তারিখের হিসাব ইংরেজিতে চললেও পহেলা বৈশাখ বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত। সারা বছর ইংরেজি ক্যালেন্ডারের হিসাবে চালালেও বাঙালিরা পহেলা বৈশাখের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। বাংলা বছরের প্রথম এই দিনটিতে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের মধ্যে দেনা-পাওনার হিসাব হয়। এই হিসাবকেই হালখাতা বলে। দুপক্ষের মধ্যে আন্তরকিতা বৃদ্ধির অন্যতম পন্থা এই হালখাতা। ডিজিটাল যুগের হিসাব-নিকাশ অনেক সহজ হওয়ায় প্রচলন কমেছে কাগজ-কলমের। আগে হালখাতা উপলক্ষে কাগজে-কলমে নিমন্ত্রণপত্র ছাপিয়ে উৎসবের আয়োজন করতেন ব্যবসায়ীরা। অনেক জায়গায় হালখাতা উপলক্ষে আয়োজন করা হতো গান-বাজনার। দোকানে আগত সবাইকে মিষ্টিমুখ করানোর প্রচলন ছিল।  অতীতে জমিদারকে খাজনা প্রদানের অনুষ্ঠান হিসেবে ‘পুণ্যাহ’ প্রচলিত ছিল। বছরের প্রথম দিন প্রজারা ভালো পোশাক পরে জমিদার বাড়িতে গিয়ে খাজনা পরিশোধ করতেন। তাদের মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করা হতো।  জমিদারি প্রথা ওঠে যাওয়ায় ‘পুণ্যাহ’ বিলুপ্ত হয়েছে। তবে রয়ে গেছে হালখাতা। মোঘল সম্রাট আকবরের আমল থেকে পহেলা বৈশাখের উদযাপনের প্রথা শুরু হয়। প্রথমে আকবরের পঞ্জিকার নাম ছিল ‘তারিখ-এ-এলাহী’। আর ওই পঞ্জিকায় মাসগুলো আর্বাদিন, কার্দিন, বিসুয়া, তীর এমন নামে প্রচলিত ছিল। তবে ঠিক কখন যে এই নাম পরিবর্তন হয়ে বৈশাখ, জৈষ্ঠ্য, আষাঢ়, শ্রাবণ হলো তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেনি।  ধারণা করা হয়, বাংলা ১২ মাসের নামকরণ করা হয়েছে বিভিন্ন নক্ষত্র থেকে। যেমন- বিশাখা নক্ষত্র থেকে বৈশাখ, জায়ীস্থা থেকে জৈষ্ঠ্য, শার থেকে আষাঢ়, শ্রাবণী থেকে শ্রাবণ এমন করেই বাংলায় নক্ষত্রের নামে মাসের নামকরণ হয়। পহেলা বৈশাখ উদযাপন শুরু হলে সেই সময় থেকেই দোকানে দোকানে ব্যবসার হিসাব করার জন্য শুরু হয় হালখাতার প্রথা। হাল মানে নতুন, হালখাতা অর্থাৎ নতুন খাতা। পুরোনো বছরের সব হিসাব মিটিয়ে নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই শুরু হয় নতুন খাতায় হিসাব-নিকাশ। আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্রাচীন বাংলার অনেক উৎসব আজ বন্ধের পথে। একবিংশ শতাব্দীতে বেড়ে ওঠা শিশু-কিশোররা পহেলা বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ বলতে বোঝে মঙ্গল শোভাযাত্রা, সকালে পান্তা-ইলিশ খাওয়া। তবে অনেক ক্ষেত্রে ঐতিহ্যকে ধারণ করতে হালখাতার প্রাচীন প্রথা ধরে রেখেছেন অনেকে।   
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

রমনার বটমূলে শেষ হলো বর্ষবরণ অনুষ্ঠান
রাজধানীর রমনার বটমূলে শেষ হলো বর্ষবরণের অনুষ্ঠান। রোববার (১৪ এপ্রিল) সকাল সোয়া ৬টায় এই অনুষ্ঠান শুরু হয়ে শেষ হয় সকাল ৯টায়। এতে অংশ নেন দেশের ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, ধনী নির্বিশেষে সব শ্রেণিপেশার মানুষ। ফলে পহেলা বৈশাখের এই আয়োজন এক বর্ণাঢ্য মহোৎসবে রূপ নেয়। জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। সবশেষ পরিবেশনাটি ছিল শচীন দেববর্মনের সুরে করা ‘টাকডুম টাকডুম বাজাই’ গানটি। এরপর ছিল নববর্ষ কথন। নববর্ষ কথন শোনান ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী।  তিনি বলেন, আজ ১৪৩১ বঙ্গাব্দের প্রথম প্রভাতের সুরবাণী আঁধার রজনী পোহাল, জগত পূরিল পুলকে। নববর্ষের নবীন আলোয়, নবীন আশায়, নবজীবন লাভ করে সবাই যেন স্বাভাবিকতায় ফিরি এবং সম্প্রীতির সাধনায় নিজেদের নিমগ্ন করি- এই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা। শুভ নববর্ষ। উৎসবে যোগ দেওয়া লোকজন জানান, নতুন বছর মানেই একটি নতুন সম্ভাবনা। নতুন বছরের নতুন দিনের এই আয়োজন দেশ, জাতি, সমাজ ও ব্যক্তিজীবনের সমৃদ্ধি অর্জনের প্রেরণা জুগিয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, ভোর ৬টা থেকে রমনা বটমূলে মানুষের ঢল নামে। তাদের পোশাকে লাল-সাদার প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। নারীরা লাল-সাদা শাড়ি, কাচের চুড়ি, দুল-মালায় বাঙালিয়ানায় সেজেছেন। পুরুষের গায়ে শোভা পেয়েছে একই রং-নকশার পাঞ্জাবি। তারা রমনার বটমূল ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠানের গান, কবিতা আসরে যোগ দেন। অনুষ্ঠান শেষে তারা রমনা পার্কের বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে ছবি তোলেন। প্রসঙ্গত, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রতিবাদে ১৯৬৭ সালে প্রথমবারের মতো বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান আয়োজন শুরু করে ছায়ানট। সেদিনের আয়োজনের প্রথম গানটি ছিল ‘আলোকের এই ঝরনাধারায় ধুইয়ে দাও...।’ 
১৪ এপ্রিল, ২০২৪
X