স্বাস্থ্য / বয়সজনিত চোখের রোগ
সুস্থ সুন্দর চোখ কার না কাম্য? কিন্তু এই সুস্থ সুন্দর চোখে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখের ভেতরে বেশ কিছু পরিবর্তন হয়। এ পরিবর্তনের ফলে চোখের সুস্থতা হুমকির মুখে পড়ে। চালশে রোগ: বয়স চল্লিশের পর কাছের কোনো কিছু দেখতে অসুবিধা হওয়াকে চালশে রোগ বলা হয়। খবরের কাগজ পড়ার সময় অথবা সুঁই-সুতার কাজ করার সময় সমস্যাটি ধরা পড়ে। কাছের জিনিস ঝাপসা দেখা, মাথাব্যথা করা এ রোগের লক্ষণ। বয়সজনিত কারণে চোখের লেন্সের পাওয়ার কমে যাওয়ায় এ রোগ হয়। ডাক্তারের পরামর্শে চশমা ব্যবহারের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা করা হয়। ছানি: বয়সজনিত কারণে চোখের স্বচ্ছ লেন্স অস্বচ্ছ হয়ে দৃষ্টি কমে যাওয়াকে ছানি রোগ বলা হয়। এতে সাধারণত আগে-পরে দুই চোখই আক্রান্ত হয়। দূরে এবং কাছে ঝাপসা দেখা, আলো সহ্য করতে না পারা, আলোর চতুর্দিকে রঙিন দেখা এ রোগের লক্ষণ। কোনো ওষুধে এ রোগের চিকিৎসা করা যায় না। একমাত্র অপারেশন করে ছানি অপসারণের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা সম্ভব। সবচেয়ে আশার কথা, ছানি অপসারণ করে কৃত্রিম লেন্স সংযোজনের মাধ্যমে প্রায় স্বাভাবিক দৃষ্টি ফিরে পাওয়া সম্ভব। এআরএমডি: বয়স ৫০-৬০-এর পর রেটিনার সবচেয়ে দৃষ্টি সংবেদনশীল অংশে পরিবর্তনের কারণে চোখের দৃষ্টি কমে যাওয়াকে এআরএমডি (এজ রিলেটেড ম্যাকুলার ডিজেনারেশন) বলা হয়। ধীরে ধীরে দৃষ্টি কমে যাওয়া কোনো জিনিসকে বাঁকা দেখা ইত্যাদি এ রোগের লক্ষণ। রেটিনার পরিবর্তনের কারণে চোখের ভেতর রক্তপাত হতে পারে। সাধারণত এ রোগে দুই চোখ আক্রান্ত হয়। চোখের ভেতরে ইনজেকশন প্রয়োগে অথবা লো-ভিশন চশমা ব্যবহারে রোগের চিকিৎসা করা হয়। ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি: অনিয়ন্ত্রিত এবং অনেক দিনের ডায়াবেটিক রোগের কারণে বয়স্কদের এ রোগ হয়। চোখের রেটিনার রক্তনালিতে পরিবর্তনের কারণে রেটিনায় পানি জমে যাওয়া এমনকি রক্তপাত হতে পারে। চোখের ভেতরে ইনজেকশন প্রয়োগ, লেজার ও অপারেশনের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা সম্ভব। ডায়াবেটিক রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত চোখ পরীক্ষার মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। গ্লুকোমা: চোখের স্বাভাবিক চাপ (১০-২১) মি.মি. মার্কারি। চোখের চাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে চোখের পেছনের স্নায়ু অকার্যকর হয়ে যাওয়াকে গ্লুকোমা রোগ বলা হয়। যাদের পরিবারে গ্লুকোমা রোগ আছে, যারা মাইনাস পাওয়ারের চশমা পরে, যাদের ডায়াবেটিস অথবা উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের মধ্যে পঞ্চাশ বছর বয়সের পর এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চোখে ঝাপসা দেখা, দৃষ্টি সীমানা সরু হয়ে আসা, চোখে হালকা ব্যথা হওয়া ইত্যাদি এ রোগের লক্ষণ। কিছু কিছু গ্লুকোমাতে প্রচণ্ড চোখ ও মাথাব্যথা এবং বমির ভাবও হতে পারে। বিভিন্নরকম চোখের ড্রপ প্রয়োগে এ রোগের চিকিৎসা সম্ভব। ওষুধে প্রয়োগে না হলে অপারেশনের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা সম্ভব। চোখ দিয়ে পানি পড়া: বয়সজনিত কারণে নাকের গোড়ার দুই পাশে অবস্থিত নেত্রনালি সরু হয়ে এ রোগ হয়। চোখের পানি সরু নেত্রনালি দিয়ে না সরতে পেরে চোখের কোনায় পানি জমা হয়ে থাকে এবং অনবরত পানি পড়তে থাকে। মাঝেমধ্যে নেত্রনালি ফুলে গিয়ে ব্যথা-বেদনা হতে পারে। নেত্রনালির অপারেশনের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা সম্ভব। করণীয় n নিয়মিত চক্ষু ডাক্তারের কাছে চোখ পরীক্ষা করা প্রয়োজন। n প্রতি পাঁচ বছর পরপর চোখের পাওয়ার চেক করা প্রয়োজন। n ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। n পরিমিত পুষ্টিকর খাদ্য খেয়ে চোখের বয়সজনিত রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। n নিয়মিত পরিষ্কার পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার করতে হবে। n হঠাৎ করে চোখে কম দেখলে দেরি না করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া বাঞ্ছনীয়। n চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির কারণে বেশিরভাগ বয়সজনিত চোখের রোগের সুচিকিৎসা সম্ভব। চোখের রোগ সম্পর্কে সচেতনতা এবং নিয়মিত চোখ পরীক্ষার মাধ্যমে অনেক রোগ প্রতিরোধও সম্ভব। লেখক: চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সহযোগী অধ্যাপক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ০১৭১৫২৯৯৬৯৫।
১৬ ঘণ্টা আগে

ডেঙ্গুতে এক দিনে ৩ জনের মৃত্যু
এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২১ জন। চলতি বছর এ পর্যন্ত মশাবাহিত রোগটিতে মোট মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের। বুধবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুমের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৪ জন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৭ জন রয়েছেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এক দিনে ডেঙ্গুতে মৃত ৩ জনই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট ২০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছরে মোট ২ হাজার ৩৭৭ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন।  চলতি বছরের ১৫ মে পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬৪৫ জন। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৫৩৭ জন পুরুষ এবং এক হাজার ৮ জন নারী। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত ৩ জনসহ চলতি বছর এ পর্যন্ত মশাবাহিত রোগটিতে মোট মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের। এর মধ্যে ১৪ জন পুরুষ এবং ১৮ জন নারী। প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গেল বছর দেশে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ ১০ হাজার আটজন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ২ লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন ৩ লাখ ১৮ হাজার ৭৪৯ জন। গত বছর ১ হাজার ৭০৫ জন মানুষ মশাবাহিত এই রোগে মারা গেছেন। যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এর আগে, ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময়ে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। 
১৫ মে, ২০২৪

থাইরয়েডের রোগ লক্ষণ ও চিকিৎসা
মানবশরীরের অপরিহার্য অনুষঙ্গ থাইরয়েড হরমোন। এটি কমবেশি হলে সমস্যা দেখা দেয়। নির্দিষ্ট মাত্রায় থাইরয়েড হরমোন থাকা জরুরি। শরীরের বিভিন্ন কোষে শর্করা, আমিষ ও স্নেহ জাতীয় খাবারের বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করাই থাইরয়েড হরমোনের মূল কাজ। এটি শরীরের বৃদ্ধি, স্নায়ুর গঠন, যৌনক্ষমতা, প্রজনন ইত্যাদিও নিয়ন্ত্রণ করে। বন্ধ্যত্বের অন্যতম কারণও থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতা। থাইরয়েড হরমোন নিঃসৃত হয় থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে। এই গ্রন্থি গলার সামনের উঁচু হাড়ের পেছনের দিকে ট্রাকিয়া বা শ্বাসনালিকে পেঁচিয়ে থাকে। থাইরয়েডের হরমোনজনিত সমস্যা চার ধরনের: হরমোনের কার্যকারিতাজনিত সমস্যা, থাইরয়েডের গঠনগত সমস্যা (যেমন গলগণ্ড), থাইরয়েড গ্রন্থির প্রদাহ ও গ্রন্থির ক্যান্সার। হরমোনের কার্যকারিতাবিষয়ক সমস্যা দুই রকম হয়—হাইপোথাইরয়েডিজম ও হাইপারথাইরয়েডিজম। হাইপোথাইরয়েডিজম: এ রোগে পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি ভোগে। কনজেনিটাল হাইপোথাইরয়েডিজম বা জন্মগত থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতির কারণে এটি হয়। আবার থাইরয়েড হরমোনের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি সক্রিয় হলেও এটি হয়। কারও কারও অপারেশনের কারণে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড বাদ দিতে হলে বা অন্য কারণেও থাইরয়েড নষ্ট হয়ে গেলে এটি হতে পারে। মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্রন্থি যথেষ্ট টিএসএইচ নিঃসরণ না করলেও এ সময় দেখা দেয় এবং গর্ভাবস্থায় মায়ের থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা থাকলে, রক্তে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে এটি হতে পারে। এর লক্ষণ হলো অবসাদ ও অলস ভাব, ওজন বেড়ে যাওয়া, পায়ে পানি আসা, ক্ষুধামান্দ্য, চুল পড়া, ত্বক খসখসে হওয়া, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, রক্তচাপ বৃদ্ধি, বন্ধ্যাত্ব, গর্ভপাত, শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে বাধা, শরীরে শীত শীত ভাব এবং অনিয়মিত পিরিয়ড ইত্যাদি। হাইপারথাইরয়েডিজম: রক্তে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে হাইপারথাইরয়েডিজম হয়। এর প্রধান কারণ গ্রেভস ডিজিজ, যাতে অ্যান্টিবডি অতিরিক্ত মাত্রায় থাইরয়েডকে উত্তেজিত করলে হাইপারথাইরয়েডিজমের সমস্যা দেখা দেয়। অন্যান্য কারণের মধ্যে থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের প্রদাহ, ওষুধের প্রতিক্রিয়া, টিউমার ইত্যাদি। এর লক্ষণগুলো হলো, ক্ষুধা বেড়ে গেলে ওজন কমা, শরীরে গরম অনুভব, বুক ধড়ফড় করা, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, ত্বক কালো হওয়া, রক্তচাপ বাড়া, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, পিরিয়ডের সমস্যা ও বন্ধ্যাত্ব। পরীক্ষা ও চিকিৎসা: থাইরয়েড গ্রন্থি ও হরমোনের রোগ নির্ণয়ে যে পরীক্ষাগুলো করা হয়: রক্তে হরমোনের মাত্রা, এফএনএসি, আলট্রাসনোগ্রাম ও রেডিও-অ্যাকটিভ আয়োডিন আপটেক ও স্ক্যানটেস্ট। হাইপো বা হাইপার দুই ক্ষেত্রেই ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা করা সম্ভব। তবে হাইপারথাইরয়েডিজমের ক্ষেত্রে ওষুধে কাজ না করলে সার্জারি বা রেডিও-অ্যাকটিভ আয়োডিনথেরাপি দেওয়া হয়। থাইরয়েড গ্রন্থির গঠনগত সমস্যা: থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে গেলে তাকে থাইরয়েড নডিউল বলে। অনেক সময় হরমোন নরমাল থেকেও থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে যেতে পারে। সাধারণত আয়োডিনের অভাবে গলাফোলা রোগ হয়ে থাকে। যাকে সাধারণ ভাষায় বলে ঘ্যাগ বা গলগণ্ড রোগ। আয়োডিনের অভাব: বেশিরভাগ স্কুলগামী শিশু ও অন্তসঃত্ত্বার আয়োডিনের অভাব রয়ে গেছে। এ আয়োডিন শরীরে অতি প্রয়োজনীয় থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দুঃখের বিষয়, সারা পৃথিবীতে এখনো ২০০ কোটি মানুষ আয়োডিনের অভাবে ভুগছে। জিনগত কারণেও থাইরয়েড নডিউল হতে পারে। আবার থাইরয়েড নডিউল বিনাইন বা ম্যালিগন্যান্ট (ক্যান্সার) দুই রকমই হতে পারে। চিকিৎসা: সময়মতো রোগ নির্ণয় করা গেলে এ ক্যান্সার নিরাময় করা যায়। বিনাইন নডিউলের চিকিৎসা রোগ অনুযায়ী ওষুধ দ্বারা অথবা নডিউল থেকে পানি বের করে অথবা রেডিও-অ্যাকটিভ আয়োডিন সেবনের মাধ্যমে করা হয়। ক্যান্সার হলে অপারেশন ও ওষুধ দিয়েও চিকিৎসা করা হয়। অনেকের ক্ষেত্রে রেডিও-অ্যাকটিভ আয়োডিন সেবনের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।
১২ মে, ২০২৪

ক্যান্সার শুধু চিকিৎসার নয় রোগ নির্ণয় ও সুরক্ষার বিষয়
ক্যান্সার শুধু চিকিৎসকদের বিষয় নয়, এটি ভুক্তভোগী, তাদের পরিবারের সদস্য, বন্ধু, স্বজন সবার বিষয়। ক্যান্সার শুধু চিকিৎসার বিষয় নয়, রোগ নির্ণয় ও রোগ থেকে সুরক্ষার বিষয়। যাদের ক্যান্সার নিরাময় পর্যায় পেরিয়ে গেছে, কিংবা ক্যান্সারজনিত কষ্টের তীব্রতা বেঁচে থাকাকেও অসহনীয় করে ফেলেছে, তাদের জন্য প্রশমন সেবা নিয়েও ভাবতে হবে। গতকাল কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টারের আয়োজনে ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন ও তৃতীয় সমাজভিত্তিক ক্যান্সার সম্মেলনে অতিথিরা এসব কথা বলেন। আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এনজিওবিষয়ক ব্যুরো সাইদুর রহমান, সাবেক সিনিয়র সচিব আব্দুস সামাদ, সাবেক স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল ইসলাম খান, বারডেমের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম নুরুন্নবী, প্রজনন ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. হালিদা হানুম আখতার, বিএসএমএমইউ উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, চিকিৎসা শিক্ষা সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক আমিরুল মোর্শেদ খসরু প্রমুখ।
১১ মে, ২০২৪

তৃতীয় সমাজভিত্তিক ক্যানসার সম্মেলন / ক্যানসার শুধু চিকিৎসার নয়, রোগ নির্ণয় ও রোগ থেকে সুরক্ষার বিষয়
ক্যানসার শুধু চিকিৎসকদের বিষয় নয়, ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য, বন্ধু, স্বজন- সবার বিষয়। ক্যানসার শুধু চিকিৎসার বিষয় নয়, রোগ নির্ণয় ও রোগ থেকে সুরক্ষার বিষয়। আবার, যাদের ক্যানসার নিরাময়ের পর্যায় পেরিয়ে গেছে, কিংবা ক্যানসারজনিত কষ্টের তীব্রতা থেকে বেঁচে থাকাকেও অসহনীয় করে ফেলেছে, তাদের জন্য প্রশমন সেবা নিয়েও ভাবতে হবে। শুক্রবার (১০ মে) কৃষিবিদ ইনস্টিউশনের চার তলায় থ্রি-ডি মিলনায়তনে বিকেলে কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টারের আয়োজনে ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন ও তৃতীয় সমাজভিত্তিক ক্যানসার সম্মেলন অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট বক্তারা এসব কথা বলেন। বিশিষ্টজনেরা আরও বলেন, রোগীর চিকিৎসার খরচ সামলাতে গিয়ে পুরো পরিবার পথে বসল কি না, তাও ভাবতে হবে। ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে জীবন জয় করে এনেছেন যারা, তাদের অভিজ্ঞতার কথাও জানতে হবে। সবাই মিলে অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান করে ক্যানসার থেকে বাঁচার ও বাঁচানোর উপায় বের করতে হবে। এ সম্মেলনে বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ উপস্থাপনা ছাড়াও ক্যানসারের আর্থ-সামাজিক প্রভাব, ক্যানসার জয়ীদের অভিজ্ঞতা ও সমাজভিত্তিক ক্যানসার সেবার অভিজ্ঞতা এবং সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান,  সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আব্দুস সামাদ, সাবেক স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল ইসলাম খান, বারডেম এর সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক একেএম নুরুন্নবী, প্রজনন ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. হালিদা হানুম আখতার, বিএসএমএমইউ উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, চিকিৎসা শিক্ষা সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আমিরুল মোর্শেদ খসরু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আব্দুল হামিদ, বিএসএমএমইউ গাইনি অনকোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সাবেরা খাতুন। এছাড়া বক্তব্য দেন সম্মেলন আয়োজন কমিটির সভাপতি ও কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টার ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন।
১০ মে, ২০২৪

বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে জানা জরুরি : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তস্বল্পতাজনিত দুরারোগ্য ব্যাধি। এ রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশে এই রোগের জিন বাহকের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। বাহকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। বাহকে-বাহকে বিয়ে হলে দম্পতির সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিধায় বিয়ের আগে এই রোগের জিন বাহক কি না তা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বুধবার (৮ মে) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এই আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্য খাতে ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা সক্ষম হব, ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এবং জনসাধারণকে সুলভে মানসম্মত স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার কল্যাণ (এইচএনপি) সেবা দেওয়ার মাধ্যমে একটি সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। আমরা একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করে যুগোপযোগী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন নতুন হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।  প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে হাসপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধিসহ চিকিৎসক, নার্স, সাপোর্ট স্টাফের সংখ্যাও বৃদ্ধি করেছি। গ্রামপর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারা দেশে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ফ্রি স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ ও পুষ্টি সেবা দেওয়া হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা চালু করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে গত ১৫ বছরে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ মাতৃমৃত্যু, নবজাতকের মৃত্যু ও অনূর্ধ্ব ৫ বছর বয়সী শিশুমৃত্যু হার, অপুষ্টি, খর্বতা, কম ওজন ইত্যাদি হ্রাসে ক্রমাগত উন্নতি হচ্ছে। সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এমডিজি লক্ষ্য অর্জনে অসাধারণ সফলতা দেখিয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টগুলো (এসডিজি) অর্জনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। 
০৮ মে, ২০২৪

প্রেমিককে দিনে ১০০ বার কল, অতঃপর...
আঠারো বছরের এক চীনা তরুণী দিনে ১০০ বার প্রেমিককে কল করেন। এতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পুলিশকে খবর দেন প্রেমিক। পুলিশের উপস্থিতিতে তরুণী করে বসেন আরেক কাণ্ড।  এরপর ওই তরুণীকে পুলিশের সহযোগিতায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিনি ‘প্রেম রোগে’ ভুগছেন। বিশেষজ্ঞরা এই রোগের নাম দিয়েছেন ‘লাভ ব্রেন’।  সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের বরাতে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, জিয়াওয়ু নামের ওই তরুণী অতিমাত্রায় প্রেমিকের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিনিয়ত প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চাইতেন। তার ইচ্ছেমতো যোগাযোগ করা সম্ভব না হলেই উচ্ছৃংখল আচরণ করতেন। হয়ে পড়তেন বিষণ্ন। ভাঙচুর করতেন আসবাব। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রথম বর্ষ থেকেই তার মধ্যে এ ধরনের আচরণ ছিল। কিন্তু সম্প্রতি তা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ে। তবু প্রেমিক সহ্য করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সর্বশেষ ঘটনার দিন ওই তরুণী প্রেমিককে ১০০ বার কল করেন। প্রেমিক তা রিসিভ না করায় অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ভাঙচুর শুরু করেন আসবাব। চিৎকার করে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তার পাগলের মতো আচরণে ভীত হয়ে পড়েন প্রেমিক। খবর দেন পুলিশে। পুলিশ এলে তরুণী বেলকনি দিয়ে লাফ দেওয়ার হুমকি দেন। শেষমেশ তাকে কোনো মতে ধরে হাসপাতালে নেওয়া হয়।  ওই তরুণী যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেখানকার চিকিৎসক ডু না জানান, ওই তরুণী প্রেমিকের সঙ্গ না পেলে বা কথা বলতে না পারলে মানসিক চাপ সহ্য করতে পারতেন না। ঘরের জিনিসপত্র ছুঁড়ে ফেলে দিতেন। আত্মহত্যার হুমকি দিতেন। তরুণী চাইতেন তার মেসেজের রিপ্লাই সঙ্গে সঙ্গে দেওয়া হোক। তিনি আরও বলেন, জিয়াওয়ু এক ধরনের বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত। এটি তার মানসিক স্বাস্থ্যে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে। এই ধরনের মানসিক অবস্থা তখনই তৈরি হয়, যদি শিশু বয়স থেকে কেউ ট্রমায় ভোগে। এতে মানসিক ভারসাম্যহীনতা বাড়তে পারে, যার জন্য বাড়তে পারে উদ্বেগ ও বিষণ্নতা ও বাইপোলার ডিসঅর্ডার। ডাক্তার জিয়াওয়ুর এ অবস্থার কারণ বিস্তারিত বলতে রাজি হননি। তবে বলেছেন, শিশু বয়সে মা-বাবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক না থাকা এ রোগের অন্যতম কারণ। সাধারণ অবস্থায় মানসিক ব্যবস্থাপনা কৌশল ব্যবহার করে রোগীকে সুস্থ করা সম্ভব। কিন্তু জিয়াওয়ুর মতো রোগীর ক্ষেত্রে ভারী ওষুধসহ উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।
২৪ এপ্রিল, ২০২৪

রোগ সারাবে ডিজিস মোডিফায়িং এক্সারসাইজ
ধরুন একজন রোগী রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত, যা অস্থিসন্ধিতে মাঝারি থেকে তীব্র ব্যথার জন্য দায়ী। এর চিকিৎসা দুই ধরনের। ব্যথা সারাতে দেওয়া হয় ব্যথানাশক ওষুধ, যা মূলত রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ভালো করে না। এটি শুধু সাময়িক ব্যথা কমাতে পারে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজন হয় ডিজিস মোডিফাইং ড্রাগ, যেমন স্যালাজিন। কোমর বা ঘাড় ব্যথাও আলাদা কোনো রোগ নয়, রোগের লক্ষণ মাত্র। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের মতো শুধু ব্যথার ওষুধ সেবন করে বা কিছু ব্যায়াম করে কিছু সময়ের জন্য হয়তো ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, কিন্তু কারণ নির্মূলে অবশ্যই রোগ সারানোর চিকিৎসা বা ডিজিস মোডিফাইং ট্রিটমেন্ট করাতে হবে। রোগ সারানোর চিকিৎসা শারীরিক ব্যথার কারণগুলো সুনির্দিষ্ট নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এগুলো মোডিফাই করার জন্য কোনো ওষুধ নেই। ব্যথার কারণ নির্মূলে তাই নির্ভর করতে হয় সুনির্দিষ্ট ব্যায়ামের ওপর। অনেকের মনে প্রশ্ন উঠতে পারে—ব্যায়াম তো ব্যায়ামই, এর আবার প্রকারভেদ কী! নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে যেমন নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হয়, তেমনি ব্যথার সঠিক কারণ বের করে সেই অনুযায়ী ব্যায়াম করতে হয়। যেমন কোমর ব্যথার কারণ হলো স্পন্ডাইলোলিসথেসিস বা হাড় সরে যাওয়া। এ ক্ষেত্রে যদি আপনি ব্যাক এক্সটেনশন এক্সারসাইজ করেন তাহলে তা হিতে বিপরীত হবে। আবার দীর্ঘমেয়াদি কোমর ব্যথা হয় মানসিক কারণেও। সে ক্ষেত্রে কোনো ব্যায়ামেই কাজ হবে না। আগে ঠিক করতে হবে মানসিক সমস্যা। করণীয় ব্যথা সারানোর অনেক ব্যায়াম খুব জনপ্রিয়। ইউটিউব বা ফেসবুক খুললেই নানা ধরনের ব্যায়ামের কৌশল দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু এ ধরনের ব্যায়াম বেশিরভাগ সময়ই বিপদ ডেকে আনে। ইউটিউব দেখে ব্যায়াম করে কোমরে, ঘাড়ে বা হাঁটুর ইনজুরিতে পড়া রোগীর সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এমন রোগীও কিন্তু বাড়ছে। একটা ব্যায়াম কত ভিউ পেল সেটা দেখেই অনেক রোগী মনে করেন তার সমস্যা সমাধানেও এটি কাজ করবে। এটি বিপজ্জনক ভুল ধারণা। প্রত্যেক মানুষের শরীর একেক অবস্থায় একেক আচরণ করে এবং ভিন্ন ভিন্ন চিকিৎসার প্রতি সংবেদনশীল থাকে। সারা বিশ্বে তাই পারসোনালাইজড চিকিৎসার গুরুত্ব ও জনপ্রিয়তা বেড়েছে। পারসোনালাইজ চিকিৎসার মূলমন্ত্র হলো রোগীর নিজস্ব অবস্থা বুঝে চিকিৎসা। এ চিকিৎসা রোগীর চাহিদা অনুযায়ী সুনির্দিষ্টভাবে কাজ করে এবং এর ফলাফল ভালো। লেখক: কোমর ব্যথাবিষয়ক গবেষক, লা ট্রোব ইউনিভার্সিটি, মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া। বিভাগীয় প্রধান, ফিজিওথেরাপি ও রিহ্যাব বিভাগ, উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
২২ এপ্রিল, ২০২৪

সব প্রাইভেট হাসপাতালে রোগ নির্ণয় ফি নির্ধারণ হবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, আমরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন করার উদ্যোগ নিয়েছি। এ আইনে দেশের সব প্রাইভেট হাসপাতালের রোগ নির্ণয় পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করা হবে। সেবা বৃদ্ধির বিভিন্ন বিষয় এ আইনে উল্লেখ করা হবে। গতকাল শনিবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুরের তেঁতুইবাড়িতে শেখ ফজিলান নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী হাসপাতালের বিভিন্ন ফ্লোর, অফিস কক্ষ পরিদর্শন ও হাসপাতালের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থা তদারকি করেন। পরে তিনি হাসপাতালের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। এ সময় যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর দীন মোহাম্মদ নুরুল হক, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবু ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে দুপুরে সাভারের সিআরপি নার্সিং কলেজ ভবন উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। অনুষ্ঠানে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে আগুন লাগার ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। স্বাস্থ্য খাতে কোনো চ্যালেঞ্জ রয়েছে কি না—জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, সাধারণ মানুষের কাছে চিকিৎসা ব্যবস্থা পৌঁছে দেওয়া। এজন্য উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো আরও অত্যাধুনিক করে যেন গ্রামীণ জনপদের সাধারণ মানুষ উন্নত চিকিৎসা পায়, সে ব্যবস্থা করব।
২১ এপ্রিল, ২০২৪

মার্কিন গোয়েন্দাদের দেহে রহস্যজনক রুশ রোগ
হঠাৎ করে বমিবমি ভাব, কানে ভোঁ ভোঁ শব্দ, শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া, মাথা ঝিমঝিম করা, স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার মতো অস্বাভাবিক কিছু লক্ষণ দেখা দেয় মার্কিন কর্মকর্তা ও কর্মীদের মধ্যে। এমন ঘটনা ঘটেছিল আট বছর আগে কিউবার রাজধানী হাভানার মার্কিন দূতাবাসে। আমেরিকান কর্মকর্তা ও কর্মীদের রহস্যজনক এ অসুস্থতার নেপথ্যে ছিল রাশিয়ার গোয়েন্দা বাহিনী। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্য ইনসাইডার, দের স্পিগেল এবং সিবিএস সিক্সটি মিনিটসের যৌথ অনুসন্ধানে দেখা যায় মার্কিন কর্মকর্তারা খুব সম্ভবত রাশিয়ার শব্দতরঙ্গ তথা সনিক অস্ত্রের শিকার হয়েছিলেন। রাশিয়ার গোয়েন্দা বাহিনীর ইউনিট ২৯১৫৫ এর সদস্যরা খুব সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের মস্তিষ্ক লক্ষ্য করে গোপন কোনো অস্ত্রের মাধ্যমে ‘সরাসরি শক্তি’ ছুড়েছে। এ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রুশ গোয়েন্দা ইউনিটের সদস্যরা যখন যে সময়ে বিশ্বের যে প্রান্তে দায়িত্বরত ছিল সে সময়ে ওই সব স্থানে মার্কিন কূটনীতিকরা রহস্যময় ওই অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ জন্য ২৯১৫৫ ইউনিটের কর্মীদের পুরস্কৃতও করা হয়েছে।  হাভানাতেই প্রথম এ ধরনের অসুস্থতার খবর পাওয়া যাওয়ার কারণে এর নাম ‘হাভানা সিনড্রোম’ রাখা হয়। যদিও নতুন এক প্রতিবেদন বলছে, তারও প্রায় দুই বছর আগে জার্মানিতে প্রথম এ ধরনের অসুস্থতার ঘটনা ঘটেছিল। মার্কিন যেসব কর্মকর্তার দেহে হাভানা সিনড্রোমের লক্ষণ দেখা দিয়েছিল তাদের মধ্যে হোয়াইট হাউস, সিআইএ এবং এফবিআই এর কর্মীরাও ছিলেন। জানা যায়, অন্তত এক হাজারের বেশি মার্কিন কর্মকর্তা রহস্যজনক ওই অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়েছিল।  হাভানার ওই ঘটনা নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে মস্কো। সোমবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এ ধরনের দাবিকে সমর্থন করার জন্য কোনো প্রমাণ কখনো উপস্থাপন করা হয়নি। মিডিয়াতে আসা এ অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন। ২০১৬ সালে হাভানায় মার্কিন দূতাবাস কর্মীদের শরীরে হঠাৎ করে বমিভাব, কানে ভোঁ ভোঁ শব্দ হওয়া, শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া, মাথা ঝিমঝিম করা, স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার মতো অস্বাভাবিক কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা গত বছর দেওয়া এক প্রতিবেদনে বলেছিলেন, খুব সম্ভবত এ অসুস্থতার পেছনে বিদেশি শক্তির হাত নেই।
০২ এপ্রিল, ২০২৪
X