থাইরয়েডের রোগ লক্ষণ ও চিকিৎসা
মানবশরীরের অপরিহার্য অনুষঙ্গ থাইরয়েড হরমোন। এটি কমবেশি হলে সমস্যা দেখা দেয়। নির্দিষ্ট মাত্রায় থাইরয়েড হরমোন থাকা জরুরি। শরীরের বিভিন্ন কোষে শর্করা, আমিষ ও স্নেহ জাতীয় খাবারের বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করাই থাইরয়েড হরমোনের মূল কাজ। এটি শরীরের বৃদ্ধি, স্নায়ুর গঠন, যৌনক্ষমতা, প্রজনন ইত্যাদিও নিয়ন্ত্রণ করে। বন্ধ্যত্বের অন্যতম কারণও থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতা। থাইরয়েড হরমোন নিঃসৃত হয় থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে। এই গ্রন্থি গলার সামনের উঁচু হাড়ের পেছনের দিকে ট্রাকিয়া বা শ্বাসনালিকে পেঁচিয়ে থাকে। থাইরয়েডের হরমোনজনিত সমস্যা চার ধরনের: হরমোনের কার্যকারিতাজনিত সমস্যা, থাইরয়েডের গঠনগত সমস্যা (যেমন গলগণ্ড), থাইরয়েড গ্রন্থির প্রদাহ ও গ্রন্থির ক্যান্সার। হরমোনের কার্যকারিতাবিষয়ক সমস্যা দুই রকম হয়—হাইপোথাইরয়েডিজম ও হাইপারথাইরয়েডিজম। হাইপোথাইরয়েডিজম: এ রোগে পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি ভোগে। কনজেনিটাল হাইপোথাইরয়েডিজম বা জন্মগত থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতির কারণে এটি হয়। আবার থাইরয়েড হরমোনের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি সক্রিয় হলেও এটি হয়। কারও কারও অপারেশনের কারণে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড বাদ দিতে হলে বা অন্য কারণেও থাইরয়েড নষ্ট হয়ে গেলে এটি হতে পারে। মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্রন্থি যথেষ্ট টিএসএইচ নিঃসরণ না করলেও এ সময় দেখা দেয় এবং গর্ভাবস্থায় মায়ের থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা থাকলে, রক্তে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে এটি হতে পারে। এর লক্ষণ হলো অবসাদ ও অলস ভাব, ওজন বেড়ে যাওয়া, পায়ে পানি আসা, ক্ষুধামান্দ্য, চুল পড়া, ত্বক খসখসে হওয়া, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, রক্তচাপ বৃদ্ধি, বন্ধ্যাত্ব, গর্ভপাত, শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে বাধা, শরীরে শীত শীত ভাব এবং অনিয়মিত পিরিয়ড ইত্যাদি। হাইপারথাইরয়েডিজম: রক্তে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে হাইপারথাইরয়েডিজম হয়। এর প্রধান কারণ গ্রেভস ডিজিজ, যাতে অ্যান্টিবডি অতিরিক্ত মাত্রায় থাইরয়েডকে উত্তেজিত করলে হাইপারথাইরয়েডিজমের সমস্যা দেখা দেয়। অন্যান্য কারণের মধ্যে থাইরয়েড গ্ল্যান্ডের প্রদাহ, ওষুধের প্রতিক্রিয়া, টিউমার ইত্যাদি। এর লক্ষণগুলো হলো, ক্ষুধা বেড়ে গেলে ওজন কমা, শরীরে গরম অনুভব, বুক ধড়ফড় করা, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, ত্বক কালো হওয়া, রক্তচাপ বাড়া, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, পিরিয়ডের সমস্যা ও বন্ধ্যাত্ব। পরীক্ষা ও চিকিৎসা: থাইরয়েড গ্রন্থি ও হরমোনের রোগ নির্ণয়ে যে পরীক্ষাগুলো করা হয়: রক্তে হরমোনের মাত্রা, এফএনএসি, আলট্রাসনোগ্রাম ও রেডিও-অ্যাকটিভ আয়োডিন আপটেক ও স্ক্যানটেস্ট। হাইপো বা হাইপার দুই ক্ষেত্রেই ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা করা সম্ভব। তবে হাইপারথাইরয়েডিজমের ক্ষেত্রে ওষুধে কাজ না করলে সার্জারি বা রেডিও-অ্যাকটিভ আয়োডিনথেরাপি দেওয়া হয়। থাইরয়েড গ্রন্থির গঠনগত সমস্যা: থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে গেলে তাকে থাইরয়েড নডিউল বলে। অনেক সময় হরমোন নরমাল থেকেও থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে যেতে পারে। সাধারণত আয়োডিনের অভাবে গলাফোলা রোগ হয়ে থাকে। যাকে সাধারণ ভাষায় বলে ঘ্যাগ বা গলগণ্ড রোগ। আয়োডিনের অভাব: বেশিরভাগ স্কুলগামী শিশু ও অন্তসঃত্ত্বার আয়োডিনের অভাব রয়ে গেছে। এ আয়োডিন শরীরে অতি প্রয়োজনীয় থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দুঃখের বিষয়, সারা পৃথিবীতে এখনো ২০০ কোটি মানুষ আয়োডিনের অভাবে ভুগছে। জিনগত কারণেও থাইরয়েড নডিউল হতে পারে। আবার থাইরয়েড নডিউল বিনাইন বা ম্যালিগন্যান্ট (ক্যান্সার) দুই রকমই হতে পারে। চিকিৎসা: সময়মতো রোগ নির্ণয় করা গেলে এ ক্যান্সার নিরাময় করা যায়। বিনাইন নডিউলের চিকিৎসা রোগ অনুযায়ী ওষুধ দ্বারা অথবা নডিউল থেকে পানি বের করে অথবা রেডিও-অ্যাকটিভ আয়োডিন সেবনের মাধ্যমে করা হয়। ক্যান্সার হলে অপারেশন ও ওষুধ দিয়েও চিকিৎসা করা হয়। অনেকের ক্ষেত্রে রেডিও-অ্যাকটিভ আয়োডিন সেবনের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।
১২ মে, ২০২৪

গাজা যুদ্ধ : ৬ মাস পার হলেও থামার লক্ষণ নেই
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের যুদ্ধ আজ রোববার (৭ এপ্রিল) ছয় মাস পার হয়ে সাত মাসে গড়িয়েছে। ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় গাজা মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ঘরবাড়ি ছাড়া হয়েছেন আরও লাখ লাখ মানুষ।  ইসরায়েলি বাহিনী পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে রাখায় গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এতকিছুর পরও ইসরায়েলের তরফ থেকে যুদ্ধ বন্ধের কোনো লক্ষণ নেই। বিশ্বজুড়ে যেখানে গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবি জোরালো হচ্ছে সেখানে তেল আবিবের মিত্ররা ইসরায়েলকে যুদ্ধের পক্ষে রাজনৈতিক সমর্থনের পাশাপাশি দেদার মারণাস্ত্র দিয়ে যাচ্ছে। ছয় মাস ধরে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞের ভয়াবহ চিত্র একটি প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। কত মানুষ হতাহত হলেন? গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে অন্তত ৩৩ হাজার ১৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া হামলায় ধসে পড়া ভবন ও ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। তারা সবাই মারা গেছেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। নিহতদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। সেভ দ্য চিলড্রেনের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ১৩ হাজার ৮০০ জনের বেশি শিশু নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ১৭ হাজারের মতো ফিলিস্তিনি শিশু বর্তমানে বাবা-মা ছাড়া বসবাস করছে। অন্যদিকে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭৫ হাজার ৮১৫ জন আহত হয়েছে। এর মানে হলো গাজায় প্রতি ১০০ জনের মধ্যে চারজন মানুষ আহত হয়েছেন। প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, গাজার প্রায় এক হাজার শিশু তাদের একটি বা দুটি পা হারিয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় প্রতিদিন শত শত মানুষ হতাহত হচ্ছে। মানুষ কি অনাহারে থাকছেন? গাজায় মানবিক পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য অবনতি হয়েছে। কারণ ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় ত্রাণসহায়তা প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। তারা ক্ষুধাকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবাহর করছে। বর্তমানে ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি অনাহারে ভুগছে। জাতিসংঘ বলছে, মে মাসের মধ্যে গাজার বিভিন্ন অংশে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। উত্তর গাজায় পানিশূন্যতা ও অপুষ্টির শিকার হয়ে শিশুদের মৃত্যুর খবর আসছে। এরপরও সেখানে মানবিক ত্রাণসহায়তা প্রবেশে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল। কত মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন? উত্তর গাজা থেকে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাই যুদ্ধের শুরু থেকে ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণে সরে যেতে নির্দেশ দিয়ে আসছে তারা। এরপর থেকে উত্তর গাজায় কেউ তাদের বাড়িতে ফিরতে পারেনি। কেননা গাজা উপত্যকাকে দুই ভাগে ভাগ করে মাঝখানে একটি সামরিক করিডোর স্থাপন করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে ১৯ লাখ ফিলিস্তিনি ঘরবাড়ি ছাড়া। এই সংখ্যাটা গাজার মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ। ঘরবাড়ি ছাড়া এসব মানুষের বেশিরভাগ স্কুল ও হাসপাতালের মতো জাতিসংঘের স্থাপনায় আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। এসব জায়গায় আশ্রয় নিয়েও ইসরায়েলি হামলা থেকে রক্ষা পায়নি তারা। আশ্রয়কেন্দ্রে ৪০০ জনের বেশি নিহত এবং কমপক্ষে এক হাজার ৪০০ জন আহত হয়েছে। কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে? শুরু থেকেই ইসরায়েলি হামলার প্রধান টার্গেটে পরিণত হয়েছে ছোট এই উপত্যকার বিভিন্ন স্থাপনা। ফলে গাজার বিভিন্ন জরুরি স্থাপনা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে থাকে ইসরায়েলি সেনারা। ইসরায়েলি এই ধ্বংসযজ্ঞ এতই ভয়াবহ ছিল, যুদ্ধের মাত্র চার মাসে প্রায় সাড়ে ১৮ বিলিয়ন বা এক হাজার ৮৫০ কোটি ডলারের অবকাঠামো হারিয়েছেন ফিলিস্তিনিরা। মঙ্গলবার (৩ এপ্রিল) জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য ওঠে এসেছে। প্রতিবেদন বলছে, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় চার মাসে যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা ২০২২ সালে অধিকৃত পশ্চিম তীর ও গাজার সম্মিলিত জিডিপির ৯৭ শতাংশের সমান। হাসপাতাল সচল আছে কি? আন্তর্জাতিক আইনে যুদ্ধের মাঝে হাসপাতাল সুরক্ষিত রাখার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক আইনের পরোয়া না করে শুরু থেকেই গাজার হাসপাতালে তাণ্ডব চালিয়ে আসছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গাজার সব হাসপাতাল ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। বর্তমানে ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ১০টি আংশিকভাবে সচল রয়েছে। তবে এসব হাসপাতালে রোগীদের উপচে পড়া ভিড় লেগেই থাকে। গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফা ও এর আশপাশের এলাকায় দুই সপ্তাহ থরে অবরোধ আরোপ করে রাখে নেতানিয়াহু বাহিনী। এই সময় হাসপাতালটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া অন্তত ৪০০ জন মানুষ নিহত হয়েছে এবং আরও শতাধিক গ্রেপ্তার হয়েছেন।
০৭ এপ্রিল, ২০২৪

স্বাস্থ্য / গনোরিয়া কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার
গনেরিয়া বা প্রমেহ যৌনবাহিত রোগ। নাইসেরিয়া গনোরিয়া নামের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এটি হয়। অবাধ যৌন মিলনের ফলে নারী বা পুরুষের যৌনাঙ্গে এ রোগের জীবাণু ক্ষত সৃষ্টি করে। শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমেই মূলত এটি সংক্রমিত হয়। এটি নারীর জনন নালি (জরায়ু, সারভিক্স, ফেলোপিয়ান নালি) এবং নারী ও পুরুষের ইউরেথ্রের মিউকাস ঝিল্লি, মুখ, চোখ, পায়ুপথসহ যে কোনও পথেই ছড়াতে পারে। এটি গর্ভকালীন জটিলতাসহ বন্ধ্যত্বও ডেকে আনতে পারে। এ রোগের সুপ্তিকাল ২ থেকে ১৪ দিন। পরবর্তী ৪ থেকে ৬ দিনের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পেতে শুরু করে। এ রোগে অল্প বয়সী এমনকি শিশুরাও আক্রান্ত হতে পারে। বিশেষ করে সংক্রমিত বিছানার চাদর, তোয়ালে থেকেও রোগটি ছড়ায়। ঘনবসতি ও অপরিচ্ছন্নতা থেকেও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। আবার সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর ও আক্রান্ত মাতৃদেহ থেকে সংক্রমিত হতে পারে। উপসর্গ গনোরিয়া আক্রান্ত রোগীর দেহে তেমন স্পষ্ট বাহ্যিক লক্ষণ প্রকাশ পায় না। তবে এর কিছু উপসর্গ রয়েছে। পুরুষের ক্ষেত্রে—Ñ l প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া অনুভূত হয়। l লিঙ্গের অগ্রভাগে লালচে ভাব থাকে এবং সেখান থেকে পুঁজ নিঃসৃত হবে। l স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিবার মুত্রত্যাগের ইচ্ছা হবে। l শুক্রাশয় ও অণ্ডকোষে ব্যথা হবে। l তবে এ রোগে পুরুষাঙ্গ বা গায়ে ক্ষত বা ঘা লক্ষ করা যায় না। l মূত্রনালিতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়ে প্রস্রাব বের হয়ে আসতে পারে না। এতে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। l দীর্ঘদিনের সংক্রমণের ফলে অস্থিসন্ধি প্রদাহ, মস্তিষ্কের প্রদাহ, ত্বকে ক্ষত, সেপটিসেমিয়া এমনকি হৃৎপিণ্ডের ক্ষতি হতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে l তলপেটে ব্যথা। l দুই রজঃচক্রের মধ্যবর্তী সময়ে প্রচুর রক্তপাত। l অনিয়মিত পিরিয়ড। l জ্বর ও গায়ে ফুসকুঁড়ি। l কষ্টদায়ক যৌন মিলন ও মূত্রত্যাগে ব্যথা। l যৌনাঙ্গ ফুলে যাওয়া ও যোনির ওষ্ঠে লালসহ দগদগে ঘা। l বার্থোলিন গ্রন্থির প্রদাহ। l ডিম্বনালিতে প্রদাহ। জটিলতা গনোরিয়ার জীবাণু নারীদের প্রজননতন্ত্রের মধ্যে বিচরণ করে ডিম্বনালিতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করতে পারে এবং আক্রান্তদের বন্ধ্যত্ব ঘটাতে পারে। গর্ভাবস্থায় আক্রান্ত হলে যোনি হতে বাচ্চার চোখও এ জীবাণুতে আক্রান্ত হতে পারে। তখন চিকিৎসা না করালে চোখে প্রদাহ এমনকি অন্ধত্বও হতে পারে। শুক্রনালি বন্ধ হয়ে পুরুষের বন্ধ্যত্বও ঘটাতে পারে এ রোগ। প্রতিকার ও চিকিৎসা সতর্কতা ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্বন্ধে জ্ঞান রাখলে গনোরিয়ার মতো মারাত্মক যৌনবাহিত রোগ থেকে নিজেকে ও ভবিষ্যৎ বংশধরকে নিরাপদে রাখা যায়। এর জন্য—Ñ l সঙ্গী নির্বাচনে অবশ্যই সতর্ক ও নিশ্চিত থাকতে হবে। l রোগ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত যৌন মিলন থেকে বিরত থাকতে হবে। l হোমিওপ্যাথিতেও এ রোগের চিকিৎসা করা যায়। তবে এর জন্য নিজে থেকে ওষুধ না খেয়ে আগে বিশেষজ্ঞ হোমিও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। l ওষুধ গ্রহণের দুই সপ্তাহ পর একবার ভিডিআরএল পরীক্ষা করতে হবে। আবার চার সপ্তাহ পর এ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে। লেখক: হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক, রেনেসাঁ হোমিও মেডিকেয়ার, ঢাকা
২৮ মার্চ, ২০২৪

বাত: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার
রোগের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে মানবদেহে রয়েছে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তথা ইমিউন সিস্টেম। শরীরকে পাহারা দেওয়া এর কাজ। তবে কখনো এই ইমিউন সিস্টেমই শরীরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। তখন শরীরের গিঁট, মাংসপেশিসহ অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ব্যথা হয়। অনেকের ধারণা, বাতজাতীয় রোগগুলো শুধু বৃদ্ধকালে হবে। এটা ভুল। শিশু থেকে ৬০-৭৫ বছর বয়সী মানুষের বাত হতে পারে। কারণ l এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি ঠিক কী কারণে ইমিউন সিস্টেম শরীরকে উল্টো আক্রমণ করে বসে। আবার কারা এ বাতে আক্রান্ত হবেন সেটাও আগাম বলা যায় না। তবে কিছু কারণ বের হয়েছে অনেক দিনের গবেষণায়। l ১০-২০ শতাংশ বাত বংশগত। মা-বাবা অথবা রক্তসম্পর্কীয় আত্মীয়ের থাকলে সন্তানদেরও আশঙ্কা থাকে। l বিশেষ কিছু খাবার বা বিভিন্ন রোগে বিপাকজনিত কিছু জটিলতার কারণে বাত হতে পারে। যেমন ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে গাউট বলে এক ধরনের বাত হয়। থায়াজাইড, এসপিরিন, পাইরাজিনামাইড ইত্যাদি ওষুধে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ে। রেনাল ফেইলিওর, হাইপার প্যারাথাইরয়েডিজম রোগেও ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে বাত হতে পারে। l হরমোনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, পরিবেশগত কারণ থাকতে পারে। অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ের ভঙ্গুরতা। l মধ্যবয়সী নারীদের মাসিক বন্ধ হওয়া। লক্ষণ l সাধারণ লক্ষণ হলো ব্যথা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জয়েন্ট ফুলে যায়। হাঁটু, মেরুদণ্ড ইত্যাদি বেশি আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত জয়েন্ট লালচে হতে পারে। l রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে হাতের ছোট অস্থিসন্ধিগুলো আক্রান্ত হয় বেশি। এনকাইলোজিং স্পন্ডালাইটিসে আক্রান্ত হয় মেরুদণ্ড। যার ব্যথা হয় কোমর বা ঘাড়ে। l আবার ৭০ ভাগ বাতের ব্যথা শুরু হয় পায়ের বুড়ো আঙুল থেকে। l অন্যান্য লক্ষণে আছে—জ্বর, ক্ষুধামান্দ্য, ওজন কমে যাওয়া, হাড় ও জোড়ার আকারে পরিবর্তন এমনকি পঙ্গুত্ব। কিছু রোগী রক্তশূন্যতায়ও ভুগতে পারে। পরীক্ষা রক্তের রুটিন পরীক্ষা, বিশেষ অ্যান্টিবডি ও ফ্যাক্টর, এক্স-রে, অস্থিসন্ধির সাইনোভিয়াল ফ্লুইড (রস) পরীক্ষা, রিউমাটোলজি আল্ট্রাসাউন্ড বা মাসকুলোস্কেলিটাল আল্ট্রাসনোগ্রাম। করণীয় নিয়মিত ব্যায়াম, জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায় এমন খাবার বর্জন বা কমানো, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে বা দাঁড়িয়ে না থাকা, শিরদাঁড়ায় চাপ পড়ে এমন কাজ না করা, পিঁড়ি, মোড়া বা মেঝেতে না বসা, শক্ত ও সমান বিছানায় শোয়া, বেশি ওজন বহন না করা। এ ছাড়া সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো ইত্যাদি চালিয়ে গেলে ভালো। আবার উঁচু হিলের জুতাও বাদ দিতে হবে। ফ্ল্যাট প্যানের পরিবর্তে উঁচু কমোড ব্যবহার করতেও বলেন চিকিৎসকরা। ইউরিক অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার যেমন কলিজা, মগজ, বুকের মাংস, গুর্দা, সামুদ্রিক মাছ, মাছের ডিম, হাঁসের মাংস, ডাল, ছোলা, শিম, ফুলকপি ইত্যাদিসহ উচ্চ শর্করা ও কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা। নিয়মিত দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া। আক্রান্ত স্থানে নির্দেশমতো গরম বা ঠান্ডা সেঁক দেওয়া ইত্যাদি। চিকিৎসা উপসর্গ দমাতে ব্যবহার করা হয় ব্যথানাশক ওষুধ। তবে কোন রোগে কোন ধরনের, কোন মাত্রার ব্যথার ওষুধ দেওয়া হবে, তা নির্ধারণ করবেন চিকিৎসক। এজন্য নিজে নিজে ব্যথার ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। কোনো কোনো রোগীকে সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’ জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়। এ ছাড়া কিছু দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ রয়েছে, যা রোগটিকে ভেতর থেকে বাধা দেয়। সম্প্রতি বাত রোগের বিশেষ কিছু উন্নত ওষুধ বেরিয়েছে, যাকে বলা হয় বায়োলজিকস। এগুলো কিছুটা ব্যয়বহুল হলেও এর কোনো কোনোটি এখন বাংলাদেশেই তৈরি হচ্ছে। বাতের ব্যথা সারানোর জন্য বাজারে বিভিন্ন চৌম্বকীয় পাথর বসানো চেইন বা ব্রেসলেটের ব্যবসা জমজমাট হলেও এসবের ভিত্তি নেই।
২৫ মার্চ, ২০২৪

ইফতার মাহফিলে বাধা ভালো লক্ষণ নয়
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইফতার মাহফিল নিষিদ্ধ করে নতুন প্রজন্মকে রোজা থেকে দূরে রাখার কৌশল অবলম্বন করছে সরকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরীহ ছাত্রদের ইফতার মাহফিলে ছাত্রলীগ আক্রমণ করে রক্তাক্ত করেছে। এটা ভালো লক্ষণ নয়। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ইফতারে নিরুৎসাহিত না করে দুর্নীতি বন্ধ করুন। বিদেশে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনলে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বরিশালের চরমোনাই মাদ্রাসা ময়দানে ১৫ দিনব্যাপী বিশেষ তালিম তারবিয়াতের তৃতীয় দিনের আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি ইফতার মাহফিলে হামলাকারী ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানান। এতে আরও বক্তব্য দেন নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম। চরমোনাই পীর বলেন, রমজান মাসে রোজাদারদের যারা কষ্ট দেয়, তারা প্রকৃত মানুষ নয়। বেশি মুনাফার আশায় যারা নিত্যপণ্যের বাজারে সংকট সৃষ্টি করে মানুষকে কষ্ট দেয়, তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।
১৫ মার্চ, ২০২৪

হৃদরোগে বছরে মারা যায় ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষ
বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৪০ হাজরের অধিক মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়, যার অন্যতম প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ। হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ও কিডনি রোগের জন্য দায়ী এই উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধযোগ্য। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে শক্তিশালীকরণ এবং স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। শনিবার (২ মার্চ) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত ‘ইম্প্রুভিং কার্ডিওভাসকুলার হেলথ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান), গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এবং রিজলভ টু সেভ লাইভস (আরটিএসএল)। রিজলভ টু সেভ লাইভস-এর প্রেসিডেন্ট ও সিইও এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এর প্রাক্তন পরিচালক ডা. টম ফ্রিইডেন বলেন, বাংলাদেশে প্রতি চারজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। সংক্রামক রোগজনিত মৃত্যু প্রতিরোধে বাংলাদেশ দ্রুত অগ্রগতি সাধন করেছে। হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক প্রতিরোধেও বিশ্বে অনুকরণীয় হতে পারে দেশটি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা গ্রহণকারীর সংখ্যা ২০ গুণ। চিকিৎসা সেবার মান দ্বিগুণ করতে সক্ষম হয়েছে। উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা প্রদানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা শক্তিশালী করা হলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। বাঁচানো যাবে অসংখ্য জীবন। সোডিয়ামকে (লবণ) উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম প্রধান ঝুঁকি হিসাবে উল্লেখ করে ডা. ফ্রিইডেন বলেন, সরকারের নীতি পদক্ষেপ সোডিয়ামের ব্যবহার কমাতে এবং উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করতে পারে। অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণের ফলে বিশ্বে বছরে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ মৃত্যুবরণ করে এবং প্রতি পাঁচটি মৃত্যুর চারটিই ঘটে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য বিষয়ক অলাভজনক সংস্থা রিজলভ টু সেভ লাইভসের সহযোগিতায় ২০১৮ সাল থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনসিডিসি) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ (এনএইচএফবি) যৌথভাবে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যার উদ্দেশ্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে উচ্চ রক্তচাপ সনাক্ত করা, চিকিৎসা প্রদান এবং ফলোআপ কার্যক্রম শক্তিশালী করা। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি গ্রহণের ফলে বিগত কয়েক বছরে এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এটি এখন ১৭১টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু রয়েছে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের হার বেড়ে দ্বিগুণ অর্থাৎ ২৬ শতাংশ থেকে ৫২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এটি সম্প্রসারিত হলে দেশব্যাপী আরও অধিকসংখ্যক জীবন বাঁচানো যাবে। জিএইচএআই এবং তার সহযোগী সংস্থাসমূহ বাংলাদেশে হৃদরোগ পরিস্থিতির উন্নয়নে কাজ করছে। জিএইচএআই এর বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, স্বাস্থ্য কর্মসূচি হতে হবে সমন্বিত। আমরা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ওষুধ প্রাপ্তি বৃদ্ধি এবং লবণ ব্যবহার হ্রাসে বাংলাদেশের চলমান অগ্রগতিতে অব্যাহতভাবে সহায়তা প্রদানে আগ্রহী। মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।
০২ মার্চ, ২০২৪

স্বাস্থ্য / যে লক্ষণ অবহেলা করা যাবে না
শারীরিক কিছু সমস্যা আমরা সাধারণ ভেবে প্রায়ই অবহেলা করি। যে কারণে অনেক কঠিন রোগ ধীরে ধীরে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার জন্য যথেষ্ট সময় পায়। হঠাৎ দুর্বলতা মুখ বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে হঠাৎ দুর্বলতা স্ট্রোকের ইঙ্গিত দিতে পারে। বিভ্রান্তি, কথা বলতে সমস্যা ও হাত-পা নাড়াতে না পারলেও দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ করে পরিবারে স্ট্রোকের ইতিহাস আছে যাদের, তাদের আত্মীয় ও বন্ধুদেরও এসব লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত। ঘন ঘন শ্বাসকষ্ট হৃৎপিণ্ডে যখন পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ পায় না তখন শ্বাসকষ্ট হয়। তবে বেশিরভাগ নীরব হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট ও চরম ক্লান্তিসহ বুকে ব্যথাও দেখা দেয়। ওজনে পরিবর্তন ডায়েট বা শরীরচর্চা ছাড়াই যদি ওজন কমে যেতে থাকে তবে তা ভেতরের স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, লিভারের রোগ বা ক্যান্সারের কারণে এমনটা বেশি ঘটে। ত্বকের পরিবর্তন ত্বকের যে কোনো পরিবর্তনের জন্য আপনার সতর্ক হওয়া উচিত। ঘাড়ের পেছনে বা বিশেষ স্থানে ত্বকের কালো হয়ে যাওয়া ও ত্বকের একাধিক ট্যাগ থাকা ডায়াবেটিসের লক্ষণ। একটানা পিঠব্যথা দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করলে অনেকের পিঠে ব্যথা হয়। বিশ্রাম নিলে সেই ব্যথা চলেও যায়। কিন্তু নিয়মিতই যদি ব্যথাটা হতে থাকে ও সহজে না যায় তবে তা মেরুদণ্ড বা কিডনি সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। রাতে কম দেখা ভিটামিন ‘এ’র আরেক নাম রেটিনল। এটি আমাদের ভালো দেখার কাজে সাহায্য করে। তাই আচমকা যদি রাতে কম দেখতে শুরু করেন তবে দ্রুত চোখ পরীক্ষা করানো উচিত। কারণ এ লক্ষণ অবহেলা করলে পুরোপুরি অন্ধত্ব ভর করতে পারে। জিহ্বা ও মুখের রং পরিবর্তন মুখের ভেতর মিউকাস মেমব্রেন ও জিহ্বার স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে দরকার হয় ভিটামিন ‘বি’। শরীরে ক্রমাগত এটি দরকার হয়। এর নিয়মিত ঘাটতিতে দেখা দেয় জটিল সব সমস্যা। আর তাই মুখ বা জিহ্বা ফ্যাকাশে বা রং বদলালে বুঝতে হবে শরীর ভিটামিনের ঘাটতিতে পড়েছে। হুটহাট ভুলে যাওয়া এটা সাধারণ সমস্যার মতো শোনালেও যদি ঘন ঘন এতে আক্রান্ত হতে থাকেন তবে দ্রুত নিউরো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। ছোটখাটো জিনিস ভুলে যাওয়া আলঝেইমার্স, স্ট্রোক বা মস্তিষ্কের কোনো সমস্যার লক্ষণ। ভিটামিন বি১২-এর অভাবেও এমনটা হতে পারে। মূত্রাশয়ের কার্যক্রমে পরিবর্তন কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া বা মলের আকারে দীর্ঘদিন ধরে পরিবর্তন মলাশয়ের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। অন্যদিকে প্রস্রাব করার সময় ব্যথা, রক্তপাত বা আগের তুলনায় কম বা বেশি প্রস্রাব করা ইত্যাদি প্রোস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত শরীরের কোনো ক্ষত যদি চার সপ্তাহেও ভালো না হয় বা সেরে না যায়, তবে সেটি ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে মুখের ক্ষত যদি অনেক দিনও না সারে তবে তা মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। কারণ ছাড়াই ঘাম গরম বা শরীরচর্চা করা ছাড়া যদি ঘন ঘন ঘাম হয় তবে ধরে নিতে হবে শরীরের রক্ত সঞ্চালনে কোনো সমস্যা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও দ্রুত বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানো উচিত।
২৯ জানুয়ারি, ২০২৪

স্বাস্থ্য / অ্যাপেন্ডিসাইটিস বৃত্তান্ত কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা
আমাদের বৃহদন্ত্রের তিনটি অংশের মধ্যে প্রথম অংশ হচ্ছে সিকাম। এর সঙ্গে ছোট একটি আঙুলের মতো অংশটি হলো অ্যাপেনডিক্সআর অ্যাপেন্ডিক্স। এটি বৃহদন্ত্রের কোলনের বর্ধিত অংশ। একে বৃহদান্ত্রের টনসিলও বলে। এটি সাধারণত তিন ইঞ্চির বেশি হয় না। তবে কারও ক্ষেত্রে বড়ও হয়। বৃহদন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে অ্যাপেন্ডিক্সে। কোনো কারণে এর মধ্যে পাচিত খাদ্য, মল বা কৃমি ঢুকে যায়, তখন শরীরে পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। জীবাণুর আক্রমণে অ্যাপেনডিক্সের ওই অংশে তখন কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। একেই অ্যাপেনডিসাইটিস বলে। এটি এমন এক জরুরি অবস্থা যাতে অ্যাপেন্ডিক্স উত্তপ্ত হয় এবং পেটের নিচের ডানদিকে প্রচণ্ড ব্যথা করে। ১০-৩০ বছর বয়সের ব্যক্তিদের মধ্যে অ্যাপেন্ডিসাইটিস বেশি দেখা যায়। অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে গেলে এবং সময়মতো চিকিৎসা না করা হলে এটি পেটের গহ্বরে সংক্রমণ ছড়িয়ে দেয়, যা জীবনকে সংশয়ে ফেলে দেয়। n লক্ষণ: পেটের নিচের ডানদিকে ব্যথা অ্যাপেন্ডিসাইটিসের বৈশিষ্ট্য। আগে থেকে পেট খারাপ ও কোষ্ঠকাঠিন্য থাকবে। সঙ্গে অল্পমাত্রার জ্বর, বমিভাব ও বমি হতে পারে। সেইসঙ্গে রোগীর পেটে স্ফীতি দেখা দেবে, নাভির চারপাশের ব্যথা পেটের নিচে ডানদিকে এগোতে থাকে। উপসর্গগুলো হাঁটাচলা, তলপেটে চাপ দেওয়া কিংবা কাশতে গেলে আরও খারাপ হতে পারে। n জটিলতা: পচন ধরে বা গ্যাংগ্রিন হয়ে অন্ত্র ছিদ্র হয়ে যেতে পারে। পেনডিক্স ফেটে পেরিটোনাইটিস হতে পারে। এটি হলো পেরিটোনিয়ামের ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসজনিত ইনফেকশন। এ ছাড়া, রোগী শকে চলে যেতে পারে, অ্যাপেনডিকুলার লাম্প হতে পারে এবং মৃত্যুও হতে পারে। n অ্যাপেন্ডিসাইটিস নিশ্চিত হতে এ ক্ষেত্রে একজন চিকিৎসকের নিজের হাতে করা শারীরিক পরীক্ষাই রোগ নির্ণয়ের প্রধান পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃত। তবে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পেটের সিটি স্ক্যান করানো যায়। তবে এটি ব্যয়বহুল ও এ পরীক্ষায় প্রচুর রেডিয়েশন এক্সপোজার হয়, যা ক্ষতিকর। অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে গেলেই ভয়ানক বিপত্তি। এতে থাকা তরল তখন অন্যান্য অঙ্গেরও ক্ষতি করে। কোনো কারণে অ্যাপেন্ডিক্সের মধ্যে পানি জমলে বা ভেতরে চাপ বেড়ে গেলে তা ফেটে যায়। যার ফল অত্যন্ত মারাত্মক। সিটি স্ক্যানে ধরা পড়ে অ্যাপেন্ডিক্সে পানি জমেছে কি না। ফেটে গিয়ে ভেতরে ছড়িয়ে সংক্রমণ তৈরি করলে তাকে বলে পেরিটোনাইটিস। একবার অ্যাপেন্ডিসাইটিস নিশ্চিত হলে অস্ত্রোপচারই হচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জুতসই চিকিৎসা। অবিলম্বে অস্ত্রোপচার করা হলে অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা কমে। এ অস্ত্রোপচারকে বলে অ্যাপেন্ডিক্টোমি। চিকিৎসা n ল্যাপারোস্কপিক: এতে পেটের মধ্যে ছোট কয়েকটা ছিদ্রের মাধ্যমে অ্যাপেন্ডিক্সের অবস্থান খুঁজে বার করা ও অপসারণ করার জন্য যন্ত্রপাতি ও একটি ক্যামেরাযুক্ত নমনীয় নল ব্যবহার করা হয়। n ল্যাপারোটোমি: এই অস্ত্রোপচারে অ্যাপেন্ডিক্স বাদ দিতে পেটের নিচে ডানদিকে একটি ছিদ্র করা হয়। n পেরিটোনাইটিস: পেটের গহ্বরে ভেতরের ঝিল্লি বা আবরণে সংক্রমণ থাকলে এই প্রক্রিয়া বেছে নেওয়া হয়। n অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপি: অনেক ক্ষেত্রে কোনো অস্ত্রোপচার ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে এর চিকিৎসা করা যায়। তবে এটি সাধারণত সেসব রোগীকে দেওয়া হয় যারা অস্ত্রোপচার সহ্য করার পক্ষে অত্যন্ত দুর্বল। আবার অনেক সময় অ্যাপেন্ডিক্টোমির আগেই সেফালোস্পোরিনস আইভি (ইন্ট্রাভেনাস) অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়। যদি অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে বেরোয়, তবে তা তৎক্ষণাৎ নিষ্কাশন করতে হয় এবং অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হয় যতক্ষণ না রোগীর রক্তের শ্বেতকণিকা কোষের সংখ্যা এবং গায়ের তাপ স্বাভাবিক হচ্ছে। লেখক: প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি
০৭ জানুয়ারি, ২০২৪

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা থামার লক্ষণ নেই
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বর্বরতা থামার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তিন মাস ধরে চলা এ যুদ্ধে একবার তিন দফার ৭ দিনের একটি যুদ্ধবিরতি দেখা গেলেও দুপক্ষের অনড় অবস্থানে কারণে নতুন কোনো যুদ্ধবিরতি বা যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। হামাস বলছে, যুদ্ধ না থামা পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির কোনো আলোচনায় যাবে না তারা। অন্যদিকে ইসরায়েল স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে বলেছে, হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল না করা পর্যন্ত তারা থামবে না। যদিও জিম্মিদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার প্রবল চাপ সৃষ্টি হয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর। তবে নিজ দেশের সব চাপ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান উপেক্ষা করে গাজা উপত্যকায় হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় মধ্য গাজায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ২৮৬ জন। ৭ অক্টোবরের পর থেকে নিহতের সংখ্যা প্রায় ২২ হাজার। খবর আলজাজিরার। ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা তিন মাস চালানো এই হামলায় নিহত হয়েছেন প্রায় ২২ হাজার ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি এই হামলায় ভূখণ্ডটিতে দেখা দিয়েছে মানবিক সংকট। আর এবার গাজা-মিশর সীমান্তের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কাছে নিতে চায় ইসরায়েল। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ ঘোষণা দিয়েছেন। গাজার ‘অসামরিকীকরণ’ নিশ্চিত করতেই এমন পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন তিনি। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী মধ্য ও দক্ষিণ গাজার গভীরে প্রবেশ করে লড়াই চালাচ্ছে। এমন অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শনিবার বলেন, ইসরায়েলকে অবশ্যই মিশর-গাজা উপত্যকার সীমান্ত করিডোরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে যাতে ওই অঞ্চলের ‘অসামরিকীকরণ’ নিশ্চিত করা যায়। এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার সময় নেতানিয়াহু বলেন, ‘ফিলাডেলফি করিডোর বা আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে, (গাজার) দক্ষিণের ক্লোজিং পয়েন্ট—অবশ্যই আমাদের হাতে থাকতে হবে। এটি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। এটি স্পষ্ট, অন্য কোনো ব্যবস্থা নিলে সেটি আমরা যে নিরস্ত্রীকরণ চাই তা নিশ্চিত করবে না।’
০১ জানুয়ারি, ২০২৪

স্বাস্থ্য  / ফাইব্রোমায়ালজিয়া: কারণ ও লক্ষণ
ফাইব্রোমায়ালজিয়া একটি দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা। প্রধান উপসর্গ হচ্ছে মাংসপেশি, টেন্ডন এবং অস্থিসন্ধিগুলোতে ভোঁতা ও চলমান একটি ব্যথা। এক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২ শতাংশ এ রোগে আক্রান্ত। পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে এটি হওয়ার হার সাতগুণ বেশি। কারণ ফাইব্রোমায়ালজিয়ার কারণ বের করা কঠিন। তাই রোগটিকে ঊনবিংশ শতাব্দীর দিকে মানসিক রোগও বলা হতো। পরে এর নাম হয় মাসকুলার রিউম্যাটিজম। ১৮২০ সালের দিকে স্কটল্যান্ডের একজন চিকিৎসক রোগটির জন্য দায়ী শরীরের বিভিন্ন সংবেদনশীল অংশের বর্ণনা দেন। দ্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব আর্থ্রাইটিস অ্যান্ড মাসকুলোস্কেলেটাল অ্যান্ড স্কিন ডিজিজের মতে, এর প্রধান কারণ হলো ট্রমাটিক ঘটনা, শারীরিক আঘাত বা অন্য রোগের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। গবেষকদের মতে, কিছু জিনের মিউটেশনের কারণেও রোগটি হতে পারে। যদিও কোন জিন এর জন্য দায়ী তা এখনো নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। ধারণা করা হয়, জিনগুলো শরীরের সেরাটোনিন, ডোপামিন ও ক্যাটেচোলামিন হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে। তবে বেশি স্বীকৃত কারণটি হলো রিপিটেড নার্ভ স্টিমুলেশন, যা কি না আমাদের মগজ ও স্পাইনাল কর্ডের ভেতর এক ধরনের পরিবর্তনের সংকেত পাঠাতে থাকে। যে সংকেতের কারণে শরীরে কিছু রাসায়নিকের পরিমাণে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। ওই ভারসাম্যহীনতাই ব্যথার সিগন্যাল তৈরি করে। আবার আমাদের মস্তিষ্কের পেইন রিসেপ্টর অংশটিতে ব্যথার এক ধরনের স্মৃতি জমা থাকে। সেই অংশে গড়বড় দেখা দিলে অল্পতেই তখন বেশি ব্যথার সংকেত তৈরি হতে পারে। আর ওই গড়বড়ের পেছনে জিনগত, পারিবারিক বা বড় শারীরিক ট্রমা থাকতে পারে। যদি পরিবারের কারও আগে থেকে রোগটি থাকে, তাহলে তার ফাইব্রোমায়ালজিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এর জন্য দায়ী জিনগুলো ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস) এবং বিষণ্নতার সঙ্গেও সম্পর্কিত।   লক্ষণ ছড়ানো ব্যথা : প্রথমত এ ব্যথা সুনির্দিষ্ট কোনো স্থানে বসে না থেকে ছড়িয়ে যায়। ভোঁতা ব্যথার অনুভূতিটা টানা তিন মাসও থাকতে পারে। এ ব্যথা কোমরের ওপরের অংশে বা নিচে দুদিকের পেশিতেই হতে পারে। অবসাদ : এতে আক্রান্তদের প্রথম অভিযোগ হলো রাতের দীর্ঘ ঘুমের পরও প্রচণ্ড ক্লান্তি নিয়ে সকালে বিছানা ছাড়া। এর বাইরে রেস্টলেস লেগ সিনড্রোমের কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ও অনিদ্রার শিকারও হতে পারেন। কগনিটিভ সমস্যা : চিন্তাভাবনা করার কাজেও সমস্যায় পড়েন ফাইব্রোমায়ালজিয়ায় আক্রান্তরা। একে বলে ফাইব্রো ফগ, যা কি না রোগীর মনোযোগ দেওয়া ও ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নষ্ট করে। n ফাইব্রোমায়ালজিয়ার সঙ্গে থাকতে পারে n হজমের রোগ আইবিএস n ক্রনিক ফ্যাটিগ n মাইগ্রেন বা অন্য কোনো ধরনের মাথাব্যথা n মূত্রথলির ব্যথা n জয়েন্ট ডিজঅর্ডার n দুশ্চিন্তা, বিষণ্নতা চিকিৎসা ফাইব্রোমায়ালজিয়ার পুরোপুরি সারানোর কোনো চিকিৎসা বের হয়নি। আগে এটি নির্ণয়ে ডাক্তাররা সাধারণত শরীরের ১৮টি পয়েন্টে চাপ দিয়ে ব্যথার অনুভূতির বিষয়ে জানতে চাইতেন। এখন শরীরের কয়েক ভাগে যদি ব্যথার অনুভূতি টানা তিন মাস থাকে তবে সেটাকে ফাইব্রোমায়ালজিয়া বিবেচনা করা হয়। এর পাশাপাশি বেশ কিছু টেস্ট দিয়ে থাকেন। টেস্টগুলোর মধ্যে আছে—সিবিসি, ইএসআর, রিউম্যাটয়েড ফ্যাক্টর, থাইরয়েড ফাংশন, অ্যান্টি-নিউক্লিয়ার অ্যান্টিবডি, সিলিয়াক সেরোলোজি ও ভিটামিন ডি।
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩
X