ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ‘ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিট'-এর আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  শনিবার (১১ মে) পরীক্ষা চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ইডেন মহিলা কলেজ ভর্তি কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ ছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ এবং প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার পৃথকভাবে ভর্তি পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন এবং ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল মঈন উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, সরকারি সাত কলেজে ‘ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিট’-এর মোট ৪,৮৯২টি আসনের বিপরীতে এবছর আবেদনকারীর সংখ্যা ১৬.৯৫২ জন।
৪ ঘণ্টা আগে

চুরি যাওয়া জিনিস প্রধান শিক্ষককে কিনে দিতে বললেন শিক্ষা অফিসার
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৮ মে) রাতে উপজেলার রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের ৬৭ নম্বর পাঠান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৯ মে) কামারখন্দ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। সাধারণ ডায়েরির তথ্য মতে, প্রতিদিনের মতো বুধবারে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শেষ করে তালা ঝুলিয়ে নিজ নিজ বাড়িতে চলে যান সকল শিক্ষকরা। পরেরদিন সকালে প্রধান শিক্ষক সহকর্মীদের নিয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হলে অফিস কক্ষের দরজা খোলা দেখতে পান। ভেতরে গিয়ে বিদ্যালয়ে ব্যবহৃত প্রজেক্টর, কাঁসার ঘন্টা এবং একটি রাউডার হারিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকলিমা পারভীন বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে জানালে তিনি বলেন, এটা আপনার অবহেলায় হয়েছে। যেগুলো চুরি হয়েছে আপনি সেগুলো কিনে দিবেন। আমার বিদ্যালয়ে নৈশ প্রহরী নেই। তাহলে আমি কী রাতে বিদ্যালয়ে থেকে পাহারা দেব নাকি। কামারখন্দ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ্ আলম কালবেলাকে বলেন, প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব অবহেলার কারণে এ চুরি হয়েছে। ঐখানে নৈশ প্রহরী নেই। সকল উপকরণ তিনি কীভাবে হেফাজত করবে সেটা ওনার দায়িত্ব। খোয়া যাওয়া জিনিসপত্র কীভাবে আনবে সেটা তিনি বুঝবেন।
১০ মে, ২০২৪

২৩ সালে শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে ছিল ৪১ শতাংশ শিশু-কিশোর 
বাংলাদেশ শিক্ষাক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করা সত্ত্বেও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত বছর প্রায় ৪১ শতাংশ শিশু-কিশোর-যুবরা শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে ছিল। তবে সরকার ইতোমধ্যে ১০ লাখ ঝরেপড়া শিশুদের শিক্ষায় ‘দ্বিতীয় সুযোগ’ কার্যক্রমের আওতায় ‘আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন’ প্রকল্প উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাধারায় বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু প্রকল্পভিত্তিক স্বল্পমেয়াদি এই কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা থাকে না বলে এ শিক্ষা প্রায়শ টেকসই হয় না এবং অধিকাংশ শিক্ষার্থীর তেমন কোনো কাজে আসে না। সেকারণে এটিকে প্রকল্পভিত্তিক না রেখে পিইডিপি-৫ পরিকল্পনায় মূলধারার কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিকেলে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে গণসাক্ষরতা অভিযানের উদ্যোগে ‘বিদ্যালয় বহির্ভূত শিশু-কিশোরদের শিক্ষার চ্যালেঞ্জ: সমাধান কোন পথে’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।  অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমিরেটাস অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। সভায় বক্তারা বলেন, বিদ্যালয় বহির্ভূত শিশু-কিশোরদের শিক্ষার জন্য অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দ করা, উপবৃত্তির সংখ্যা এবং পরিমাণ বাড়ানো, মিড ডে মিল সর্বজনীনভাবে চালু করা অতীব জরুরি। এছাড়াও শুধু শিক্ষাখাতে জাতীয় বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে। সেই সঙ্গে কারিগরি শিক্ষাকে আরো বেশি বাজার উপযোগী করে প্রশিক্ষিত দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে হবে।  মতবিনিময় সভায় আলোচনাপত্র উপস্থাপন করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের কার্যক্রম ব্যবস্থাপক আব্দুর রউফ। সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোছা. নূরজাহান খাতুন, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ এবং চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধূরী। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক তপন কুমার দাশ। মতবিনিময় সভায় সারাদেশ থেকে আসা শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজ, গবেষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার দেড়-শতাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করে নিজেদের সুপারিশ তুলে ধরেন।  
০৯ মে, ২০২৪

জোড়াতালির কারিগরি শিক্ষা ও স্বপ্নের চতুর্থ শিল্পবিপ্লব
অস্ট্রেলিয়ার ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর এডুকেশনাল রিসার্চ’ কর্তৃক প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে কারিগরি শিক্ষার হার যথাক্রমে জার্মানিতে ৭৩, জাপানে ৬৬, সিঙ্গাপুরে ৬৫, অস্ট্রেলিয়ায় ৬০, চীনে ৫৫ এবং কোরিয়ায় ৫০ শতাংশ। সম্প্রতি প্রকাশিত অন্যান্য জরিপে এই হার আরও বেশি। একই রিপোর্টে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষার হার মাত্র ১৪ শতাংশ! রিপোর্টটি বেশ কিছুদিন আগের, ততদিনে অবশ্য বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষার হার বেড়ে ১৪ থেকে ১৭ বা ১৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। রিপোর্টটি থেকে দেখা যাচ্ছে, কারিগরি শিক্ষায় সর্বোচ্চ অগ্রগতি সম্পন্ন দেশ জার্মানি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞের কারণে পৃথিবীর যে কয়েকটি দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, জার্মানি সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। অথচ এ জার্মানিই আজ বিশ্ব অর্থনীতির নেতৃস্থানীয় প্রথম পাঁচটি দেশের মধ্যে একটি! বলার অপেক্ষা রাখে না, জার্মানির ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে এই কারিগরি শিক্ষার সর্বজনীন বিস্তৃতি ও কার্যকর পরিচালন পদ্ধতি। ১৯৬৯ সালের দিকে শুরু হওয়া জার্মানির কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থায় একজন শিক্ষার্থী একই সঙ্গে ভোকেশনাল ট্রেনিং স্কুলে অধ্যয়নের পাশাপাশি শিক্ষাসংশ্লিষ্ট একটি কোম্পানিতে কাজ করে, যা ‘ডুয়েল ভোকেশনাল ট্রেনিং সিস্টেম’ নামে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। শুধু তাই নয়, এ ডুয়েল ভোকেশনাল ট্রেনিং চলাকালে একজন শিক্ষার্থী বাংলাদেশি টাকায় গড়ে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার বা তারও বেশি টাকা পর্যন্ত বেতন বা ভাতা পেয়ে থাকেন। বলা বাহুল্য, জার্মানি থেকেই ২০১৩ সালে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের একটি অনুষ্ঠানে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ধারণা সূচিত হয়েছিল। প্রথম শিল্পবিপ্লবের সূচনা হয়েছিল ব্রিটেন থেকে ১৭৬০ সালে বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কারের মাধ্যমে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে দ্বিতীয় শিল্পবিপ্লব ঘটেছিল ঊনবিংশ শতাব্দীতে, তৃতীয় শিল্পবিপ্লব শুরু হয়েছিল বিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে ইন্টারনেট আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে। একবিংশ শতাব্দীতে এসে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ব্যবহার, রোবটের আবিষ্কার ও ব্যবহার, মেশিন লার্নিং, অফিস-আদালত-ব্যবসা-বাণিজ্যের সর্বত্র অটোমেশন প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে শুরু হয়েছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব বাস্তবায়নের কাজ। এ সময়ে এসে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য বাংলাদেশ কতটুকু প্রস্তুত? যে কর্মমুখী কারিগরি শিক্ষাকে উপজীব্য করে উন্নত এবং উন্নয়নশীল বিশ্বের প্রায় সব দেশ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের পথে হাঁটছে, বাংলাদেশে সেই কারিগরি বা কর্মমুখী শিক্ষার অগ্রগতি কতটুকু? ২৭ এপ্রিলে প্রকাশিত দৈনিক কালবেলা পত্রিকার প্রধান সংবাদ ও এর শিরোনাম দেখে বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষার অন্দরমহলের খবর জানতে আগ্রহী হই। বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষার সূচনা হয় পঞ্চাশের দশক থেকে। ১৯৫৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী থাকাকালে দুটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। তার প্রচেষ্টায় সর্বপ্রথম পূর্ব পাকিস্তান পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট (বর্তমান ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট) প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৫ সালে প্রথম বছর ডিপ্লোমা-ইন-প্রকৌশলী কোর্সে প্রথম ব্যাচ ভর্তি হয়। একই বছর প্রতিষ্ঠিত ‘ইস্ট পাকিস্তান বোর্ড অব এক্সামিনেশন ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন’ থেকে পরবর্তীকালে ১৯৬৭ সালের ১ নম্বর সংসদীয় আইনের ক্ষমতাবলে প্রতিষ্ঠিত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বর্তমানে বিভিন্ন স্তরে শিক্ষাক্রম ভিত্তিক মোট ১০ হাজার ৬৪৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৪ লাখ ৬৩ হাজার ২৩০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের হাজারো সমস্যা আছে। অবকাঠামোগত সমস্যা আছে, শিক্ষক সংকট আছে, প্রশিক্ষণের অভাব আছে, গবেষণা ও পরিকল্পনার অভাব আছে, আছে প্রচুর পরিমাণে দুর্নীতি। সময়ের জনপ্রিয় ও সহজলভ্য সার্চ ইঞ্জিন ‘গুগল’-এ নিয়ে অনুসন্ধান করলেই অন্তত শতাধিক খবরের লিঙ্ক পাওয়া যায় কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থার বিভিন্ন বিষয়ে, বিভিন্ন পর্যায়ের সমস্যা অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে। সম্ভাবনা আর সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের সদিচ্ছা ও আন্তরিকতার কথাও আছে। সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গে কারিগরি শিক্ষার এসব সমস্যার কারণ ও সমাধানের উপায় জানতে চেয়ে আলোচনা করলে মোটাদাগে যে উত্তর পাওয়া যায় তা হলো—দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন আর শিক্ষার মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন। কারিগরি শিক্ষা যে প্রচলিত মূলধারার শিক্ষার বিকল্প শিক্ষা নয় বরং একবিংশ শতাব্দীর বিশেষ করে কভিড-১৯-পরবর্তী নতুন স্বাভাবিক বাস্তবতায় (নিউ নরমাল রিয়ালিটি) কারিগরি শিক্ষাই কর্মমুখী মূলধারার প্রধান ও একমাত্র শিক্ষা হতে পারে, এই ধারণার বিকাশ জরুরি। তা ছাড়া শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সমান সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের নীতি ও নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের কারিগরি জ্ঞান বা প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে আগ্রহী করার জন্য কার্যকর উদ্যোগ ও এর বাস্তবায়নও জরুরি। এককথায় কারিগরি ও কর্মমুখী শিক্ষাকে সর্বজনীন করার জন্য দৃশ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধানসহ সৃজনশীল ও ব্যতিক্রমী যা যা করণীয় তা ‘অগ্রাধিকারের অগ্রাধিকার’ হিসেবে করতে হবে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) ২০১৯ সালের একটি সমীক্ষা অনুসারে, প্রতি বছর দেশে প্রায় সাড়ে সাত হাজার থেকে আট হাজার নতুন প্রযুক্তিগত কর্মক্ষেত্রের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এর বিপরীতে প্রায় ২০ হাজার নতুন কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল স্নাতক বছরে চাকরির বাজারে প্রবেশ করে। অথচ তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি নিয়োগকর্তার দ্বারা নির্ধারিত নিয়োগের মান পূরণ করতে ব্যর্থ হয়। ফলে পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল না থাকার কারণে এই জায়গাগুলো দখল করে নিচ্ছে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা কারিগরি শিক্ষায় অভিজ্ঞ চাকরিপ্রার্থী বিদেশিরা। এডিবির প্রতিবেদন মতে, কারিগরি দক্ষতা, ব্যবসায়িক বিশ্লেষণ ও প্রকল্প বাস্তবায়নের মতো মধ্যস্তরের দক্ষতার জন্য দেশীয় প্রতিভা খুঁজে না পাওয়ার কারণে উৎপাদন শিল্প প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে উচ্চ মজুরিতে প্রযুক্তি দক্ষ লোক নিয়োগ করতে বাধ্য হচ্ছে। ফার্মাসিউটিক্যালস, হেলথকেয়ার, লজিস্টিকস এবং ওয়্যারহাউজিং, অটোমোটিভ এবং কিছু সেবা খাত এরই মধ্যে তাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে এআই ব্যবহার করছে। এ ছাড়া কিছু নন-ট্র্যাডিশনাল খাত যেমন—ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিকস, কনস্ট্রাকশন, প্লাস্টিক ও প্যাকেজিং, এফএমসিজি, ডিফেন্স এবং সিকিউরিটি, ফার্নিচার শিল্প এরই মধ্যে এআই সহায়ক রোবট ব্যবহার করছে। শিল্প-কলকারখানা ও অফিসে এ প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের কারণে আগামী ১০ বছর অনেক পেশা হারিয়ে যাবে এবং তৈরি হবে নতুন কর্মক্ষেত্র। স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির জন্য ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বের ৮০ কোটি শ্রমকি বর্তমান চাকরি হারাবে। এ ব্যাপক পরিবর্তনকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে চাইলে বাংলাদেশের হাতে এই মুহূর্তে কারিগরি শিক্ষার সর্বজনীন বিস্তৃতি ছাড়া আর কোনো বিকল্প অপশন আছে বলে জানা নেই। তা ছাড়া কারিগরি শিক্ষাকে সর্বজনীন করলে একই সঙ্গে শিক্ষার সাংবিধানিক অধিকার ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের গণমুখী শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হয়। যেমন সংবিধানে বলা হয়েছে—‘সমাজের প্রয়োজনের সঙ্গে শিক্ষাকে সংগতিপূর্ণ করিবার জন্য এবং সেই প্রয়োজন সিদ্ধ করিবার উদ্দেশ্য যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও সদিচ্ছা প্রণোদিত নাগরিক সৃষ্টির জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে’। অন্যদিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে যে ভাষণ দেন সেখানে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন—‘বিশ্বের সকল সম্পদ ও কারিগরি জ্ঞানের সুষ্ঠু বণ্টনের দ্বারা এমন কল্যাণের দ্বার খুলে দেওয়া যাবে, যেখানে প্রত্যেক মানুষ সুখী ও সম্মানজনক জীবনের ন্যূনতম নিশ্চয়তা লাভ করবে।’ অধিকন্তু, কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণ ও এর সর্বজনীন করার বিষয়টি বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার মিশন স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সবচেয়ে ভালো ভূমিকা রাখতে পারে। সুতরাং, সংবিধান, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধুকন্যার স্বপ্নের কারিগরি শিক্ষা আক্ষরিক অর্থেই চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের হাতিয়ার হবে, এটাই প্রত্যাশা। ১৯৭৩ সালে ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনে কারিগরি শিক্ষার প্রতি জোর তাগিদ দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন—‘কাজ করো, কঠোর পরিশ্রম করো, না হলে বাঁচতে পারবে না। শুধু বিএ, এমএ পাস করে লাভ নেই। আমি চাই কৃষি কলেজ, কৃষি স্কুল, ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল ও কলেজ, যাতে সত্যিকারের মানুষ পয়দা হয়। বুনিয়াদি শিক্ষা নিলে কাজ করে খেয়ে বাঁচতে পারবে। কেরানি পয়দা করেই একবার ইংরেজ শেষ করে গেছে দেশটা।’ দেশ ও দেশের বাইরে শিক্ষা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সরকারের তরুণ শিক্ষামন্ত্রী জোড়াতালির এ কারিগরি শিক্ষাকে জোড়া লাগিয়ে একটি শক্তিশালী শিক্ষাব্যবস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে, স্বপ্নের চতুর্থ শিল্পবিপ্লব স্বপ্নে নয়, বাস্তবে পরিণত হবে। লেখক: কারিগরি শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ
০৭ মে, ২০২৪

জনবল নিয়োগ দেবে বিকেএসপি, আবেদন করুন দ্রুত
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) ও আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, দিনাজপুর। প্রতিষ্ঠানটি পৃথক চার পদে মোট ০৭ জনবল নিয়োগ দেবে। আগ্রহী প্রার্থীরা সরাসরি ডাকযোগে বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আগামী ২৩ মে পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। প্রতিষ্ঠানের নাম : বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) পদ ও জনবল : ০৪টি ও ০৭ জন চাকরির ধরন : স্থায়ী প্রার্থীর ধরন : নারী-পুরুষ (উভয়) কর্মস্থল : বিকেএসপি ও আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, দিনাজপুর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ : ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ আবেদনের শেষ তারিখ : ২৩ মে, ২০২৪  ১. উপপরিচালক (ক্রীড়াবিজ্ঞান), ঢাকা বিকেএসপি  পদসংখ্যা : ০১টি বয়স : অনূর্ধ্ব ৫০ বেতন স্কেল : ৪৩০০০-৬৯৮৫০/- (৫ম গ্রেড) প্রয়োজনীয় যোগ্যতা : (১) ক্রীড়াবিজ্ঞান (এমবিবিএস/এমপিএড/সাইকোলজি, পদার্থ/ফলিত পদার্থবিজ্ঞান/ বায়োমেকানিক্স/স্পোর্টস মেডিসিন) বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রিধারীসহ সংশ্লিষ্ট ক্রীড়াবিজ্ঞান বিষয়ে ২য় শ্রেণির ডিপ্লোমা; অথবা (২) ক্রীড়াবিজ্ঞান (এমবিবিএস/এমপিএড/সাইকোলজি, পদার্থ/ফলিত পদার্থবিজ্ঞান/বায়োমেকানিক্স/স্পোর্টস মেডিসিন) বিষয়ে ১ম শ্রেণির মাস্টার্স/২য় শ্রেণির সম্মান, ২য় শ্রেণির মাস্টার্সসহ ন্যূনতম ১০ বছরের অভিজ্ঞতা। ২. সহকারী প্রোগ্রামার, ঢাকা বিকেএসপি  বয়স : অনূর্ধ্ব-৩০ পদ : ১টি বেতন স্কেল : ২২০০০-৫৩০৬০/- (৯ম গ্রেড) প্রয়োজনীয় যোগ্যতা : (ক) যে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে কম্পিউটার সায়েন্স/কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং/ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং/ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি; এবং (খ) পাবলিক সার্ভিস কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত নিয়োগ পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক গৃহীত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। ৩. লাইব্রেরি সহকারী, ঢাকা বিকেএসপি  পদসংখ্যা : ০১টি বয়স : অনূর্ধ্ব-৩০ বেতন স্কেল : ৯৩০০-২২৪৯০/- (১৬তম গ্রেড) প্রয়োজনীয় যোগ্যতা : (ক) কোনো স্বীকৃত বোর্ড হইতে অন্যূন উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ; এবং (খ) কোনো স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হইতে গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান বিষয়ে ডিপ্লোমা । (গ) কম্পিউটার চালনায় অভিজ্ঞ প্রার্থীগণকে অগ্রাধিকার প্রদান করা হইবে । ৪. অফিস সহায়ক আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, দিনাজপুর (রাজস্ব, স্থায়ী) পদসংখ্যা : ০১টি বয়স : অনূর্ধ্ব-৩০ বেতন স্কেল : ৮২৫০-২০০১০/- (২০তম গ্রেড) প্রয়োজনীয় যোগ্যতা : কোনো স্বীকৃত বোর্ড হইতে অন্যূন মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। আবেদনপত্র সংগ্রহ : বিকেএসপির এই ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে। আবেদনের ঠিকানা : মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি), জিরানী, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা। আবেদন ফি : ১-২নং পদের জন্য ৬০০ টাকা, ৩নং পদের জন্য ২০০ টাকা, ৪নং পদের জন্য ১০০ টাকা উত্তরা ব্যাংক লিমিটেডের যে কোনো শাখায় মহাপরিচালক, বিকেএসপির অনুকূলে ব্যাংক ড্রাফট করতে হবে।
০৬ মে, ২০২৪

অবৈতনিক শিক্ষা হচ্ছে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত
দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে নিম্ন মাধ্যমিক পর্যন্ত (অষ্টম শ্রেণি) পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার বাস্তবায়নে অবৈতনিক শিক্ষা প্রাথমিক থেকে নিম্ন মাধ্যমিক স্তরে উত্তরণের এই উদ্যোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করবে। গতকাল রোববার দুই মন্ত্রণালয়ের যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বর্তমানে প্রাথমিক থেকে নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি ও নানান আর্থ-সামাজিক কারণ এবং প্রক্রিয়াগত কারণে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার ঠেকাতে নিম্ন মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক বা নামমাত্র ব্যয়ে করার ব্যবস্থা করার বিষয়ে শিক্ষানীতি ২০১০-এ বর্ণিত অঙ্গীকার বাস্তবায়নে রোববার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সম্মত হয়েছে দুই মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের অবৈতনিক শিক্ষা তথা পাঠদান কার্যক্রম ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিস্তৃত করবে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা ব্যয় কমিয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে কাজ করবে। শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী, শিক্ষাবিদ এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হালিম, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
০৬ মে, ২০২৪

শিক্ষা অধিকার নিশ্চিতে একসঙ্গে কাজ করবে দুই মন্ত্রণালয়
মৌলিক ন্যূনতম শিক্ষা অধিকারের ধাপ প্রাথমিক থেকে নিম্নমাধ্যমিক স্তরে উত্তরণের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করবে।  রোববার (৫ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক যৌথ সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।  সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার বাস্তবায়নে মৌলিক ন্যূনতম শিক্ষা অধিকারের ধাপ প্রাথমিক থেকে নিম্ন-মাধ্যমিক স্তরে উত্তরণের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করবে। আরও জানা গেছে, বর্তমানে প্রাথমিক থেকে নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি ও নানা আর্থ-সামাজিক কারণ ও প্রক্রিয়াগত কারণে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার রোধ করতে নিম্ন মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক বা নামমাত্র ব্যয়ে করার ব্যবস্থা করার বিষয়ে শিক্ষানীতি ২০১০-এ বর্ণিত অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আজ এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সম্মত হয়েছে দুই মন্ত্রণালয়। এই লক্ষ্যে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের অবৈতনিক শিক্ষা তথা পাঠদান কার্যক্রম ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত বিস্তৃত করবে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা ব্যয় কমিয়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে কাজ করবে।   শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হালিম, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, প্রাথমিক ও গণশক্ষিা মন্ত্রণায়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
০৫ মে, ২০২৪

মানবিক গুণাবলি অর্জন ছাড়া শিক্ষা মূল্যহীন
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, মানবিক গুণাবলি অর্জন ছাড়া শিক্ষার কোনো মূল্য নেই। শনিবার আশুলিয়া ক্যাম্পাসে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কালচারাল ক্লাবের উদ্যোগে বৈশাখী উৎসব ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মেখলা সরকার, হাসুমণির পাঠশালার সভাপতি মারুফা আক্তার পপি এবং বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সদস্য ইসরাত জাহান নাসরিন।
০৫ মে, ২০২৪

সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় চান আমলারা
সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে চান আমলারা। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রথম দিবসে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের মুক্ত আলোচনায় এই প্রস্তাব দেন কর্মকর্তারা।  ওই প্রস্তাবনায় বলা হয়, সিভিল সার্ভিস অফিসারদের জন্য মাস্টার্স এবং উচ্চতর ডিগ্রি ও প্রশিক্ষণ এবং তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য আলাদা সিভিল সার্ভিস বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। এ সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব উপস্থিত ছিলেন। মুক্ত আলোচনায় জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা প্রধানমন্ত্রীর সামনে ২৪টি প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে, বৈদেশিক শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের জন্য পদ সৃজন এবং পদায়নের ব্যবস্থা করা। উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের দীর্ঘদিনের ব্যবহৃত গাড়ি পরিবর্তন করে নতুন গাড়ি সরবরাহ করা। মোবাইল কোর্ট সম্পর্কিত আপিল মামলাটি সরকার পক্ষে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রয়োজনে মোবাইল কোর্টকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। এ ছাড়া ভারতের সঙ্গে তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে বাস যোগাযোগ চালু করা, পাথরঘাটা উপজেলায় জেলেদের স্বার্থ রক্ষায় একটি কোল্ড স্টোরেজ বা মৎস্য সংরক্ষণাগার স্থাপন করা প্রয়োজন। গাইবান্ধা জেলায় নারী ও শিশুদের জন্য একটি সেইফ হোম স্থাপন করা যেতে পারে। প্রস্তাবনায় বলা হয়, পদ্মা নদীর প্রবেশমুখে (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) এবং রাজশাহী জেলায় নদীটির কিছু অংশ ড্রেজিং করে বড় জাহাজ চলাচলের উপযোগী নদীর চ্যানেল সৃষ্টির মাধ্যমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী ও রূপপুর হয়ে দক্ষিণ অঞ্চল পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন নৌপথ তৈরি করা হলে রাজশাহী অঞ্চলের সঙ্গে দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের নৌপথ চালু হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় আম প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। এতে বলা হয়, ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়ের প্রত্নতত্ত্বগুলোর সংরক্ষণ ও সুরক্ষা এবং এর প্রসারে মহাস্থানগড়ের প্রত্নতত্ত্ব এলাকাভুক্ত ব্যক্তি মালিকানা জমি অধিগ্রহণ করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণপূর্বক পর্যটক ও গবেষকদের জন্য আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা প্রয়োজন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে আগাছানাশক তথা ঘাস মারার যে কোনো ধরনের রাসায়নিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আগাছা দমনের বিকল্প জৈবিক উপায়ের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলা স্যার জেসি বোশের নামে গবেষণাধর্মী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা যেতে পারে। সারা দেশে অবস্থিত সরকারি এবং এমপিওভুক্ত কলেজে ব্যাপকভাবে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স চালুকরণ বন্ধ করে বিদ্যমান অনার্স ও মাস্টার্স লেভেলে প্রতি বছর নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্তকরণ নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। বান্দরবান জেলায় ফল প্রসেসিং কারখানা স্থাপন করা যেতে পারে। ময়মনসিংহ শহরের যানজট নিরসনে বর্তমান রেললাইনটি স্থানান্তর করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহরের বাইপাস মোড় হয়ে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পিছনে সরিয়ে নিলে এবং পুরাতন রেললাইনের স্থলে ৩০০ ফুট প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ করা হলে ময়মনসিংহ শহরের তীব্র যানজট ও জনভোগান্তি কমে যাবে। প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয় স্থাপন প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের জন্য বরাদ্দকৃত আরও ৭২০ কোটি টাকা ছাড় করার জন্য অর্থবিভাগকে নির্দেশনা প্রদান করা হলে ওই প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। উপজেলা পর্যায়ে ডাক্তার নার্সদের জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক মানসম্মত ও আধুনিক আবাসন ব্যবস্থা নির্মাণ করা যেতে পারে। জেলার হাসপাতালগুলোতে রোগীদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থের একটি অংশ যদি স্থানীয়ভাবে খরচ করার সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে হাসপাতালগুলোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মান উন্নত হবে এবং বিপুল পরিমাণ যন্ত্রপাতি নিয়মিত মেইনটেন্যান্স করা সম্ভব হবে। এতে আরও বলা হয়, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পূর্ণরূপে চালুকরণ, গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী বা রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় একটি নির্দিষ্টকৃত কারিগরি ও বৃত্তিমূলক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। খুলনা অঞ্চলে সুপেয় পানির পুকুর সংরক্ষণ করা যেতে পারে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকার জন্য পৃথক/বিশেষ থানা গঠন করা যেতে পারে অথবা বিদ্যমান থানা ২টির আনুপাতিক জনবল ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা যেতে পারে এবং রোহিঙ্গাদের দ্বারা সংগঠিত অপরাধের বিচারার্থে স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল গঠন করা যেতে পারে। রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক সম্বলিত ডেটাবেজে সরকারি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রবেশাধিকার থাকা প্রয়োজন বলেও মনে করেন আমলারা।
০৩ মে, ২০২৪
X