অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শতভাগ শিক্ষার্থী চায় সরকার : শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, এসডিজি অনুসারে মাধ্যমিক পর্যন্ত সম্পূর্ণ অবৈতনিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ। অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ তো আছেই, পরীক্ষার নামে কোচিং, প্রাইভেট, টিউশন, গাইড বইয়ের চাপের কারণে যে শিক্ষার্থীরা বিচ্যুত হয়ে যাচ্ছে, ঝরে পড়ছে, তার ওপর অতিরিক্ত বেতন-ভাতার চ্যালেঞ্জ আমাদের নিরসন করতে হবে। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সাংবাদিকদের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে শিক্ষামন্ত্রী একথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রাথমিক একটি বৈঠক হয়েছে। দুই মন্ত্রণালয়ের ৩টি বিভাগের কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আমরা দেখছি শিক্ষার্থী সংখ্যা যত ওপরে ওঠে তত কমতে থাকে। এর পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বেতনকে। শহরাঞ্চলে অনেক প্রতিষ্ঠান ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণিতে অনেক বেশি বেতন নেয়। এটাকে কত কমিয়ে আনা যায় সেটিই চেষ্টা করা হচ্ছে। বিনা বেতনে একই ধাপে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কলেবর বৃদ্ধি করা যাবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী কর্মসূচি হলো প্রাথমিককে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিস্তৃত করা। আমরা তাদের সঙ্গে একমত হয়েছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ওই পর্যায়ে যেসব প্রতিষ্ঠান মাত্রাতিরিক্ত বেতন নিচ্ছে, সেগুলো নামমাত্র বা কম আরও নেওয়ার জন্য জরিপ করে সেটি আমরা কমাব। যাতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিকের ধাপ উত্তীর্ণ হওয়া শতভাগ শিক্ষার্থী পাই। এটি আমাদের রাজনৈতিক লক্ষ্য। তিনি বলেন, এর প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। কর্মসূচির মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এটি অন্তর্ভুক্ত করবেন। তাদের ৬৫ হাজার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কমপক্ষে ২০ হাজার প্রতিষ্ঠানকে যদি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নেওয়া যায়, নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩০ হাজার প্রতিষ্ঠানের চাপও কমবে। সরকারের সরাসরি অর্থায়নে পরিচালিত হলে বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী সেখানে অংশ নিতে পারবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত কমে আসবে। এর মাধ্যমে মানসম্পন্ন নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষা আমরা দিতে পারব। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সরকার সরাসরি পরিচালনা করছে না, এমপিও দিয়ে সহযোগিতা করছে। স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে আমরা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় নিয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ণ করব। যদি এমপিও সরকারের থেকে পেয়ে থাকে, সেখানে শিক্ষার্থীদের থেকে অতি মাত্রায় ফি কেন নেওয়া হয়, তার যুক্তিগুলো কী আমরা সেটি অবশ্যই দেখব। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে সেটি যথেষ্ট নয় বলে সেটি কিভাবে কমানো যায়। যেখানে যুক্তিযুক্ত নয়, সেখানে কিভাবে অবৈতনিক করা যায় সেটি আমরা দেখব। কারণ একই প্রতিষ্ঠান তো দুই জায়গা থেকে আয় করতে পারে না।  সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমানে যারা প্রাথমিকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছে তারা ১০ মাস মেয়াদী প্রশিক্ষণ পায়। তাই অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রশিক্ষিত শিক্ষকের অভাব হবে বলে আমাদের মনে হচ্ছে না। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকরা পিরিয়ডলিকালি রুটিন প্রশিক্ষণ পাচ্ছে। সবার বিএড নেই। বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান যাদের আছে, এনটিআরসিএ এর মাধ্যমে এখন নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে আমরা বিশেষ প্রশিক্ষণ কিন্তু দিচ্ছি না। সেটা যদি চলতে পারে, আমাদের তো যথেষ্ট পরিমাণ শিক্ষক আছে। অবকাঠামোও তারা পরিকল্পনার মধ্যে নিচ্ছেন। কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো যাতে বাড়ানো যায়। অনেক প্রতিষ্ঠানেই সেটি সম্ভব। একশর বেশি প্রতিষ্ঠানে এখনই সম্ভব- আমাদের এমনটিই বলা হচ্ছে। আমরা দেখেছি, শহরাঞ্চলে যেসব মডেল প্রাথমিক করা হয়েছে, সেগুলোতে শিক্ষার্থী পরিপূর্ণ। অর্থ্যাৎ চাহিদা আছে। সরকারের দেওয়া শিক্ষার মানের প্রতি আস্থা আছে। প্রাথমিকে শতভাগ এনরোলমেন্ট নিশ্চিত করা প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগের ফলেই সম্ভব হয়েছে। নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ে শতভাগ শিক্ষার্থী যদি আমরা পাই সেটি হবে আরেকটি অর্জন। মাধ্যমিকে শতভাগ করতে পারলে এসডিজির লক্ষ্য মাধ্যমিক পর্যন্ত শতভাগ শিক্ষার্থীকে শিক্ষা দেওয়া অনুযায়ী এগোচ্ছি। পিইডিপি-৫ প্রকল্পে যাতে সেটি সংযুক্ত হয়। পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেখান স্বল্প খরচে শিক্ষার্থীরা পড়ছে। তবে আমরা এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষভাবে দেখতে চাই সেখানে এমপিও নেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় ফি নেওয়া হচ্ছে কি না। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে কিনা। নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবার নতুন করে ফি না দেওয়া লাগে সেটি যদি সুনির্দিষ্টভাবে আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে শিক্ষার্থীদের জন্য অবৈতনিকভাবে পরিচালনা করার সুযোগ থাকবে।
১৮ ঘণ্টা আগে

স্মরণশক্তিকে ‘মেধা’ বলে চালানো যাবে না: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, গতানুগতিক শিক্ষার ধারণা থেকে বর্তমান শিক্ষাক্রমের শিখন পদ্ধতি ভিন্ন। এটা অভিজ্ঞতানির্ভর। মুখস্থনির্ভর শিক্ষা এবং স্মরণশক্তিকে মেধা বলে চালিয়ে দেওয়ার যে মানসিকতা, সেখান থেকে বের হয়ে না আসতে পারলে আমরা স্মার্ট প্রজন্ম গড়ে তুলতে পারব না। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন প্রজেক্টে’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট প্রজন্ম গড়তে শিক্ষায় যে রূপান্তরের কাজ চলছে, তার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ১৬ বছর পর্যন্ত কম খরচে দেশের সব শিশুর শিক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। বর্তমান শিক্ষাক্রমের মূলনীতি নিয়ে মন্ত্রী বলেন, জ্ঞান, মান এবং দক্ষতা—এই তিনটির সমন্বয়ে হবে আমাদের শিক্ষা। সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, সমতা, জাতীয়তাবোধ, কর্মমুখী শিক্ষা ও দক্ষতা প্রভৃতি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। প্রক্রিয়াগত কারণে অথবা অর্থের অভাবে যেন কোনো শিক্ষার্থী ঝরে না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। সম্মানিত অতিথি ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর অ্যাবদুলেই সিক।
১৫ মে, ২০২৪

চাকরির বয়সসীমা নিয়ে আমার করা সুপারিশের কার্যকারিতা নেই : শিক্ষামন্ত্রী
সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার বিষয়ে সুপারিশ করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী জাতীয় সংসদে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়টি স্পষ্ট করায় সেই সুপারিশের আর কার্যকারিতা নেই বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। রোববার (১২ মে) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রকাশিত ফলের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, কিছু চাকরিপ্রার্থী বিষয়টি নিয়ে অনুরোধ করেছিলেন। আমি কিছু কিছু বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনাকালে মনে হয়েছিল, এ বিষয়ে একটা সুপারিশ করা যেতে পারে। তিনি বলেন, এরই মধ্যে এ বিষয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী সংসদে পরিষ্কার করে বলেছেন, সরকারের বা রাষ্ট্রের নীতিগত সিদ্ধান্ত কী। এ বয়সসীমা বৃদ্ধির বিষয়ে এই মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্ত নেই, সেটি তিনি বলে দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, কিন্তু সেই সুপারিশপত্রকে পুঁজি করে একটি পক্ষ সংঘাতমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। সেখানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। আমি তাদের বলব, তারা একটি খারাপ কাজ করার চেষ্টা করছেন। এখানেই বিষয়টির সমাপ্তি ঘটেছে। মন্ত্রী বলেন, আমার সুপারিশপত্রের কার্যকারিতা এখন আর নেই। এটি নিয়ে জলঘোলা করে নানা জায়গায় দাঁড়িয়ে আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা কখনোই কাম্য না। আমি আলোচনা করে জানতে পেরেছি, মাত্র এক শতাংশ শিক্ষার্থী ৩০ বছর বয়সে চাকরি পাচ্ছেন। যেখানে এক শতাংশ মাত্র, সেখানে ৩৫ করলে আর কতই-বা বাড়বে? সেটি পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে।
১২ মে, ২০২৪

প্রযুক্তির ব্যবহারকারী না হয়ে উদ্ভাবক হওয়ার আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর
শুধু প্রযুক্তির ব্যবহারকারী না হয়ে প্রযুক্তির উদ্ভাবক হওয়ার জন্য স্নাতকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।  শনিবার (১১ মে) রাজধানীর পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা সেন্টারে সিটি ইউনিভার্সিটির ৪র্থ সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। শিক্ষামন্ত্রী গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশে বলেন, অতিমাত্রায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সময় না কাটিয়ে, গেমিং না করে, গেইমের উদ্ভাবক হতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্ব কর্ম জগতে এখন একাডেমিক সার্টিফিকেটের চেয়ে অভিজ্ঞতাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। সমগ্র পৃথিবীতে এখন এপ্রেন্টিশিপ, আর্টিকেলশিপ ও ওয়ার্ক এক্সপেরিন্স এই বিষয়গুলোর ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। কারণ এর মাধ্যমে মানুষের মাঝে প্রায়োগিক দক্ষতা তৈরি হয়। তিনি শিক্ষার্থীদের বিশ্ব নাগরিক হওয়ার জন্য অসাম্প্রদায়িকতা ও নারী পুরুষ সমতা প্রভৃতি মূল্যবোধগু নিজেদের মাঝে প্রতিপালনেরও আহ্বান জানান। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যায় এখন ব্যাপক তারতম্য নেই। দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়কেই গবেষণার সুযোগ দিতে হবে। জ্ঞান সৃষ্টিতে গবেষণা খুবই জরুরি। কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখন আন্তর্জাতিক মান অর্জন করেছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের উচিত যে সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সক্ষমতা অর্জন করেছে তাদের গবেষণার সুযোগ দেওয়া। অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, ইউজিসি’র সম্মানিত চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিটি ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার প্রফেসর লুৎফুর রহমান। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা আগামী দিনের বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে। শ্রম ও উদ্ভাবনী চিন্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে তিনি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান। কর্মসংস্থান সরকারের প্রধানতম ম্যানিফেস্টো। আত্মকর্মসংস্থানে নিয়োজিত থেকে নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন তিনি। 
১১ মে, ২০২৪

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন শিক্ষামন্ত্রী
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) আসছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। বৃহত্তর বরিশালের ইতিহাস ও ঐতিহ্যবিষয়ক সম্মেলন ‘আঞ্চলিক ইতিহাস সম্মেলন-২০২৪’ এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি উপস্থিত থাকবেন। বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জীবনানন্দ দাশ কনফারেন্স হলে এ অনুষ্ঠান শুরু হবে। বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতি ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের আয়োজনে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি থাকবেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত)। বিশেষ অতিথি থাকবেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া। এ ছাড়া মুখ্য বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের আশুতোষ অধ্যাপক ড. অমিত দে।  বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সুরমা জাকারিয়া চৌধুরী। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল বাতেন চৌধুরী।
০৭ মে, ২০২৪

শিক্ষকের মর্যাদা-বেতন বাড়ানো নিয়ে কাজ চলছে : শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষকের মর্যাদা ও বেতনের বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। শনিবার (৪ মে) সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর বরাতে ওই পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পার করেছে, তারা যেন মাধ্যমিক পরীক্ষা পর্যন্ত আসতে পারে এবং তারা যেন ঝরে না পড়ে, সেটা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। আর শিক্ষকের মর্যাদা ও বেতনের বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। পোস্টে শিক্ষক ও অভিভাবকরা ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুই ধরনের মন্তব্যই করেছেন। আসাদুজ্জামান আসাদ নামে এক শিক্ষক মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, দয়া করে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন ভাতা নিয়ে একটু কাজ করুন। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পরিবার খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছে। আমজাদ হোসেন ভুইয়া নামে একজন শিক্ষক লিখেছেন, প্রশংসনীয় উদ্যোগ, তবে শিক্ষকদের বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাবাদী অতি দ্রুত বৃদ্ধি করার জোর দাবি জানাচ্ছি। শরিফুল ইসলাম নামে একজন শিক্ষক লিখেছেন, শিক্ষকদের নিয়ে আগে ভাবতে হবে, তবেই শিক্ষার মান আপনা আপনি ভালোর দিকে চলে যাবে, শিক্ষার্থীর ঝরে পড়ার হার কমবে। বিজয় রহমান নামে এক অভিভাবক মন্তব্য করেছেন, পঞ্চম শ্রেণির পরে কেউ ঝরে পড়ে না, ঝরে পড়ে স্কুল থেকে কলেজে ওঠার সময়। আর কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময়। মো. মুশফিকুর রহমান নামে একজন লিখেছেন, শিক্ষকদের মর্যাদা এবং বেতনের বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী মহোদয় এবং মন্ত্রণালয় কাজ করছেন। আশা করা যায়, এ কাজ অনন্ত কালব্যাপী চলতে থাকবে। মো. মশিউর রহমান নামে একজন লিখেছেন, শিক্ষকের মর্যাদা ও বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে আর কত গবেষণা করতে হবে মন্ত্রণালয়কে?
০৪ মে, ২০২৪

শুক্রবারও ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত আসতে পারে : শিক্ষামন্ত্রী
সাপ্তাহিক বন্ধের দিন শুক্রবারও ক্লাস-পরীক্ষা চালু রাখার সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।  শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের একেক অঞ্চলের তাপমাত্রা একেক রকম। এখন উত্তরপূর্বাঞ্চল ও হাওর এলাকার তাপমাত্রা কম। তবে অতি বৃষ্টিতে কয়েকদিনের মধ্যেই সেখানে বন্যার কারণে পাঠদান বন্ধ রাখতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ বিভিন্ন ছুটির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন শুক্রবারেও ক্লাস-পরীক্ষা চালু রাখার সিদ্ধান্ত আসতে পারে। আগামী বৃহস্পতিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা না বন্ধ থাকবে সেই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আদেশের কপি পেয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে আদেশ জানানো হবে। তবে আমরা আদালতের আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, আর এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। তিনি বলেন, নির্বাহী বিভাগ বিভিন্ন এলাকার পাঠদান বিষয়ে আবহাওয়া দপ্তর এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে নির্দেশনা দিয়ে আসছে। তবে স্বতঃপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত এলে আমাদের কাজের ব্যাঘাত ঘটে। আমরা আদালতের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রসঙ্গত, গত ২৬ মার্চ দেশের সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছুটি শুরু হয়। এর এক দিন আগে ২৫ মার্চ কলেজগুলো ছুটিতে বন্ধ হয়েছিল। আর প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় ছুটি শুরু হয়েছিল ২২ মার্চ। পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতর ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশ শেষে গত ২১ এপ্রিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ছিল। তবে দেশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় দীর্ঘ ছুটি শেষেও খোলা হয়নি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ সময় অভিভাবকদের পক্ষ থেকেও চলমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকলে স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার দাবি ছিল। পরে দফায় দফায় হিট অ্যালার্টের মধ্যে গত রোববার (২৮ এপ্রিল) সারা দেশের স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয়। এ অবস্থায় শ্রেণিকক্ষে অসুস্থ হয়ে পড়ে অনেক শিক্ষার্থী। বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) এক আদেশে দেশের সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ২ মে (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। 
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাবেন শিক্ষামন্ত্রী
গরমের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা নিয়ে হাইকোর্টের এমন আদেশের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে এক ধরনের মানসিকতা তৈরি হচ্ছে। সবকিছুতেই কেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর আদালতের নিদের্শনা নিয়ে আসতে হবে? হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাবেন বলেও জানান তিনি। সোমবার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিজ্ঞান কমপ্লেক্সে এক অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সাংবিধানিকভাবে যার যা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা পালন করাই বাঞ্ছনীয় বলেও মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী। যেসব শিক্ষক-শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছেন তাদের বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, যারা অসুস্থ হয়েছেন, তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নাকি অন্যত্র ছিলেন, তাও দেখার বিষয়। মন্ত্রী বলেন, স্কুল গরমের জন্য বিপজ্জনক, আর মাঠ-ঘাট নয়? যেসব জেলায় তাপমাত্রা কম সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার তো কোনো কারণ নেই। এরআগে, সোমবার দুপুরে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তাপপ্রবাহের মধ্যে প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসার ক্লাস বৃহস্পতিবার (২ মে) পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। আদেশে বলা হয়- তবে সেসব স্কুলে এসির ব্যবস্থা আছে, পরীক্ষা চলমান আছে, ও লেভেল, এ লেভেল পরীক্ষা ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না। আদালতে চলমান তাপপ্রবাহে ১৮ জনের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী মনির উদ্দিন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. সাইফুজ্জামান, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল রেহেনা সুলতানা, মো. সামিউল সরকার ও আশিক রুবায়েত। এদিকে দেশে চলমান তীব্র দাবদাহের কারণে ঢাকাসহ দেশের ২৭টি জেলার সব মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামীকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল খায়ের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের সব জেলা অর্থাৎ ১৮টি জেলা। ঢাকা বিভাগের ৬টি (ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ) জেলা, রংপুর বিভাগের দুটি (কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর) এবং বরিশালের একটি (পটুয়াখালী) জেলা রয়েছে।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

তাপপ্রবাহে শিক্ষার্থীরা মাঠে-ঘাটে ঘোরার চেয়ে ক্লাস নিরাপদ: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, শিক্ষার্থীরা তাপপ্রবাহে বাইরে মাঠে-ঘাটে ঘুরে বেড়ানোর চেয়ে বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রমে থাকাটা অনেক বেশি নিরাপদ। রোববার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ও নতুন কারিকুলাম’ বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠক করে বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে যে তাপমাত্রা, এটা বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নয়। সুতরাং এবার কেন এত আলোচনা হচ্ছে বিদ্যালয় বন্ধ রাখার জন্য, সেটা আমাদের ভাবতে হবে। বিদ্যালয় বন্ধ রেখে আসলে কী অর্জন করতে পারি? বিদ্যালয় বন্ধ, তার মানে এ শিক্ষার্থীরা কি ঘরে থাকবে? তিনি বলেন, এ মুহূর্তে আবহাওয়া অধিদপ্তরের যে পূর্বাভাস, তাতে রাজধানী ঢাকার যে তাপমাত্রা সেটার সঙ্গে তো আমি সারাদেশের তাপমাত্রা মেলাতে পারি না। এ মুহূর্তে ৪০ (ডিগ্রি) পর্যন্ত ওঠার সম্ভাবনা আছে পাঁচ জেলায়। আমাদের ৬৪ জেলার মধ্যে মাত্র পাঁচ জেলায় সেখানে পূর্বাভাস হচ্ছে ৪০ ডিগ্রিতে পৌঁছানোর। সেক্ষেত্রে সব বিদ্যালয় বন্ধ করে রাখাটা তো যুক্তিযুক্ত নয়। সেটা হচ্ছে আমাদের অবস্থান। তিনি আরও বলেন, নির্দিষ্ট কোনো জেলাতে যদি অতিমাত্রায় তাপপ্রবাহ হয়, সেখানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয় থেকে সেখানে নির্দেশনা দেওয়া আছে শিশুদের ক্ষেত্রে যাতে তাদের কষ্ট না হয়, সেটাও বলা আছে। এখন সবকিছুতেই বিদ্যালয়, আলিয়া মাদরাসা বন্ধ করে দেওয়ার প্রবণতা কিন্তু আসলে সঠিক নয়। আর রাজধানীকে কেন্দ্র করে আমরা যাতে সারাদেশকে বিচার না করি, সেটা আমি অনুরোধ রাখব। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। এতে কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, শিক্ষক নেতা, অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

আরও প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা নিয়ে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেছেন, আমরা চিন্তা করছি কত বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানকে এমপিও কাঠামোর মধ্যে আনা যায়। আবার এই কাঠামোর মধ্যে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে যেমন- বাড়ি ভাড়া, উৎসব ভাতা, চিকিৎসা ভাতা কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়।  তিনি বলেন, প্রায় ৩০ লাখের মতো শিক্ষার্থী জাতীয় শিক্ষাক্রমের বাইরে গিয়ে এমন একটি শিক্ষাপদ্ধতিতে তারা আছে, সেখানে দক্ষতারও কোনো আলোচনা নেই, জ্ঞানেরও কোনো আলোচনা নেই, শিক্ষা সমাপ্ত করে কোন কর্মসংস্থানে যাবে তারও কোনো আলোচনা নাই। রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে জাতীয় শিক্ষানীতি ও নতুন কারিকুলাম বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস)। মন্ত্রী বলেন, সেই (অতিরক্ষণশীল) জনগোষ্ঠী জাতীয় শিক্ষাক্রম নিয়ে যখন অভিযোগ করছে, সেই অভিযোগের সাথে আমরা নিজেরাও যখন সমবেত হয়ে যাচ্ছি, তখন তো দ্বিচারিতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। একটা পক্ষ যারা বাংলাদেশকে অন্ধকারের দিকে পিছিয়ে নিয়ে যেতে চায়, তারা যে শিক্ষাপদ্ধতি চাচ্ছে তাতে বিজ্ঞানের প্রতিটা অধ্যায়ের আগে থাকতে হবে ধর্মীয় বক্তব্য। সেটা তো কোনো শিক্ষা পদ্ধতির মধ্যেই পড়ে না। কিন্তু সে ধরণের আলোচনা তারা করছেন। তারা বলছেন, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে শিক্ষাকে দেখতে হবে। তিনি বলেন, যারা আমাদের স্বীকৃত ধর্মতত্ত্ববিদ, আলিয়া মাদ্রাসার প্রক্রিয়া থেকে জ্ঞান অর্জন করে বড় আলেম-ওলামা হয়েছেন, তারা কিন্তু এটি বলছেন না। তারা কিন্তু আমাদের শিক্ষাক্রমকে যথাযথভাবে মেনে নিচ্ছেন এবং সহযোগিতা করছেন। কিন্তু ওই শক্তি তো আমাদের বই-ই পড়ায় না। এমন একটি গোষ্ঠী আমাদের বই নিয়ে প্রতিবার মতামত দিচ্ছেন। আরেকটা রাজনৈতিক শক্তি এবং অন্যরা যারা আমরা সমালোচনা করছি তারা মিলে সেটিকে আবার অন্যভাবে শক্তিশালী করছি। মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, আমরা চিন্তা করছি কত বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানকে এমপিও কাঠামোর মধ্যে আনা যায়। আবার এই কাঠামোর মধ্যে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে যেমন- বাড়ি ভাড়া, উৎসব ভাতা, চিকিৎসা ভাতা কিভাবে বৃদ্ধি করা যায়। আমরা মনে করি না যে, বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে দক্ষতা-যোগ্যতার এত ঘাটতি রয়েছে যে, সরকারি শিক্ষকদের চেয়ে তারা এত কম (অনেক কম) বেতন দিব। তাদের মর্যাদার ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কাছাকাছি আনতে না পারলে তা শিক্ষার্থীদের জন্য যথাযথ হবে না। এতে শিক্ষার মান বাড়বে না, শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও এটি বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। নওফেল বলেন, সরকারের অঙ্গীকার হলো- প্রস্তুতির জন্য যে প্রশিক্ষণ, গবেষণার প্রয়োজনীয়তা সেই চ্যালেঞ্জ আমাদের সবসময় ছিল। এখনও আছে, আগামীতেও থাকবে। কিন্তু তাই বলে শতভাগ প্রস্তুত হয়ে একটি প্রক্রিয়া শুরু করতে পারব বা সেটি করার জন্য যে সময় ব্যয় হবে এর মধ্যে প্রজন্ম কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হবে সেটির কথাও ভাবতে হবে। যে কারণে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে। ২০১৭ সাল থেকে এর পাইলটিং শুরু হয়েছে। এই শিক্ষাক্রমেও জ্ঞানের ওপর অবশ্যই জোর দেওয়া হয়েছে। আমরা জ্ঞাননির্ভরতা থেকে কখনোই বেরিয়ে আসতে পারব না। আমরা চেয়েছি শিক্ষাক্রমে জ্ঞানের প্রয়োগিক বিষয়কে গুরুত্ব দিতে। দক্ষতা ও মূল্যবোধ দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষা খাতে বাজেট বাড়ানোর চেয়ে যথাযথভাবে বাজেট খরচ করার বিষয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। শুধু বাজেট বাড়ালেই হবে না, কোন ক্ষেত্রে বাজেট বাড়াতে হবে সেটিও আলোচনা করা উচিত। বৈঠকে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং শিক্ষাবিদ মনজুর আহমদ বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম দিয়ে সবকিছুর সমাধান করে ফেলব, এমন ভাবনা সঠিক নয়। সামগ্রিক পরিস্থিতিতে এই শিক্ষাক্রম অনেকাংশেই বাস্তবসম্মত নয়। এটি বাস্তবায়নে যে শিক্ষক দরকার, শিক্ষকের প্রস্তুতি দরকার, অবকাঠামো, উপকরণের দরকার, সেটি আমাদের নেই। তাছাড়া, এটির (শিক্ষাক্রম) বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও কিছুটা প্রশ্নবোধক। তিনি বলেন, বাস্তবতার নিরিখে আমাদের চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। না-হলে আমরা মহাবিপদে পড়ব। ১০ বছরের জন্য আগামী প্রজন্ম শিক্ষা সংকটে ভুগবে। ১০ বছর পরে নতুন করে কি আবার শিক্ষাক্রম নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করব? কিন্তু এই সময়গুলো আমরা হারিয়ে যেতে দিতে পারি না। তাই আমাদের করণীয় খুঁজতে হবে। শিক্ষার জন্য একটি সমন্বিত একক নেতৃত্ব দরকার। একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশনও প্রয়োজন। এরপর দশশালা পরিকল্পনা নিয়ে শিক্ষকদের কিভাবে দক্ষ ও নৈতিকতাসম্পন্ন করা যায় তার জন্য কি করণীয় তা ভাবতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে বাকবিশিস’র কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, শিক্ষায় যখনই কোন বড় পরিবর্তনের চেষ্টা করা হয় তখনই তার বড় ধকলটা আসে শিক্ষকদের উপর। কারণ নতুন কোন বিষয়ে পড়াতে হলে এবং ঐ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কিভাবে মূল্যায়ন করতে হবে তা শিক্ষকদের নতুন করে আয়ত্ব করতে হয়। এজন্য শিক্ষক প্রস্তুতি নেয়ার সময় পান না এবং এজন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা তেমন একটা নেই। সাত দিনের প্রশিক্ষণে কিছু হয় না এবং প্রশিক্ষকরাও সেজন্য তৈরি নয়। তিনি বলেন, ২০১২ সালে শিক্ষাক্রমে নতুন পাঠ্যবই চালু করা হয়েছিল। তা কোন কাজে আসে নি। কারণ নতুন কোন ব্যবস্থা চালু করতে যে প্রশিক্ষণ দরকার তার কোন ব্যবস্থা করা হয় নি। অপরদিকে শিক্ষকদের আর্থিক দুরাবস্থা এবং তাদের মানমর্যাদা কোন কিছুই বিবেচনায় নেয়া হয় নি। এছাড়া শিক্ষার যে কোন পরিবর্তনে শিক্ষকরা বড় অংশী হলেও বিভিন্ন কমিটি গঠনে তাদের সম্পৃক্ত করার পরিবর্তে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান শিক্ষাক্রমে শিক্ষকদের দায়-দায়িত্ব ও কাজের পরিধি অনেক বৃদ্ধি করা হলেও শিক্ষকদের বেতন, ভাতা, সম্মানী বৃদ্ধির কোন সুপারিশ আছে কিনা জানা নেই। শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দলবাজি, স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক লেনদেন মুক্ত করা এবং নিয়মিত শিক্ষক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করাও জরুরি।  বাকবিশিস’র সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীরের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ব শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি ও শিক্ষাবিদ মাহফুজা খানম, বাকবিশিস’র প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. এম তারিক আহসান, বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) সভাপতি অধ্যক্ষ বজলুর রহমান মিয়া প্রমুখ।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪
X