শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১
কলহের জেরেই মিটফোর্ডে শিশু চুরি
দীর্ঘদিন সন্তান না হওয়ায় নিঃসন্তান স্বামী-স্ত্রীর কলহের সুরাহা করতে রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে শিশু চুরি করেছিলেন অভিযুক্ত ময়না বেগম। এ তথ্য জানিয়েছেন লালবাগ উপপুলিশ কমিশনার মো. জাফর হোসেন। তবে ওই নারী কোনো অপহরণ চক্রের সদস্য কি না, তার দেওয়া বক্তব্যের সত্যতা যাচাই শেষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় লালবাগ উপপুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান। উপকমিশনার জাফর হোসেন বলেন, জুনাইদ আহম্মেদের তিন মাসের শিশুকন্যা জুবায়েদা আক্তারকে তার স্ত্রী ও শাশুড়ি গত ১৯ নভেম্বর সকালে কিছু পরীক্ষার জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অজ্ঞাতপরিচয় এক নারী (বোরকা পরিহিত এবং মুখে মাস্ক লাগানো) অন্যদের সহায়তায় জুবায়েদাকে চুরি করে পালিয়ে যান। মামলা হওয়ার পর শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য কোতোয়ালি থানা পুলিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন পত্রিকায় জুবায়েদার ছবি প্রচার করে। চুরির প্রক্রিয়া তুলে ধরে জাফর হোসেন জানান, আসামি ময়না বেগম (৩৭) হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাম কক্ষের পাশে ওয়েটিং রুমে রিপোর্ট সংগ্রহের জন্য বসে ছিলেন। ওই সময় শিশুটিকে তার নানি বিউটি বেগম কোলে নিয়ে পাশেই বসে ছিলেন। ময়না নিঃসন্তান হওয়ায় কৌশলে নানির কোল থেকে শিশুটিকে কোলে নেন। শিশুটির নানি পানি কেনার জন্য দোকানে গেলে ময়না তার পেছনে হাঁটতে থাকেন। একসময় শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যান। পরে নৌকায় বুড়িগঙ্গা পার হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া গ্রামে তার স্বামীর বাসায় যান। এরপর ওইদিন তার বাবার বাসা খিলগাঁওয়ের ত্রিমোহনী এলাকায় অবস্থান করা শুরু করেন। অপহরণকারী নিঃসন্তান হওয়ায় তার কোলে বাচ্চা দেখে স্থানীয়রা কানাঘুষা শুরু করলে সে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। তখন নিজেকে বাঁচানোর জন্য তার ভাইয়ের মাধ্যমে পুলিশকে জানান। পরে কোতোয়ালি থানা পুলিশ জুবায়েদাকে উদ্ধার এবং ময়নাকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আসামির বিবাহিত জীবন প্রায় ১৩ বছরের। এখনো নিঃসন্তান থাকায় স্বামীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব লেগেই থাকত। সবশেষ স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করেই সেদিন মিটফোর্ডে নিজের আল্ট্রাসনোগ্রাফি টেস্ট রিপোর্ট নিতে যান।
২৬ নভেম্বর, ২০২৩
X