দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড যশোর ও চুয়াডাঙ্গায়
চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নিয়ে যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার মধ্যে যেন প্রতিযোগিতা চলছে। বুধবার (১ মে) যশোরে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যশোর বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ বিমান ঘাঁটি আবহাওয়া অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। অন্যদিকে চুয়াডাঙ্গায় আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এদিন এই জেলাতেও তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ১২ শতাংশ। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) যশোরে চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৮ রেকর্ড করা হয়েছিল। এদিন চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রার পারদ উঠেছিল ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার (২৯ এপ্রিল) যশোরে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৪২ দশমিক ৮, সেদিন চুয়াডাঙ্গায় ছিল সর্বোচ্চ ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ মো. জামিনুর জানান, মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের ৩৫ বছরের ইতিহাসে এটি ছিল সর্বোচ্চ। আরও দুএকদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। এদিকে গত কয়েকদিন ধরে চলা তীব্র তাপপ্রবাহে নাকাল হয়ে পড়েছে যশোরের সাধারণ মানুষের জনজীবন। শহরে দিনে লোকজনের উপস্থিতি কমে গেছে। তবে তিন চাকার চালকরা রয়েছেন চরম ভোগান্তিতে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মুজিব সড়ক, দড়াটানা মোড় থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন সড়কে তীব্র দাবদাহে প্রায় জনশূন্য দেখা গেছে। মানুষের উপস্থিতি যেমন কম তেমনি যানবাহনের উপস্থিতিও কম। কিছু ইজিবাইক, রিকশা দেখা গেলেও যাত্রীর অপেক্ষায় মোড়ে মোড়ে বসে থাকতে দেখা গেছে চালকদের।  শহরের সিভিল কোর্ট মোড়ে ইজিবাইক রেখে যাত্রীর অপেক্ষায় বসে ছিলেন চালক রফিকুল মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘সকালে ৭টার দিকে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। ৯টা পর্যন্ত মোটামুটি ভাড়া টেনেছি, তারপর থেকে আর যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। রাস্তায় লোকজনই নেই বললেই চলে।’ শহরের বকুলতলায় বসেছিলেন রিকশাচালক হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহর ফাঁকা হয়ে গেছে। এত গরমে মানুষ বের হবে কী করে? আমরা পেটের দায়ে বের হয়ে যাত্রী পাচ্ছি না। ভাড়ার রিকশা চালাই, মহাজনকে দেওয়ার মতো টাকাও এখনো হয়নি।’ গত দুসপ্তাহ ধরে যশোরসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে এ বিভাগের যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। সেই সঙ্গে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। টানা প্রায় ২০ দিন চুয়াডাঙ্গা জেলা তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন অস্থির হয়ে উঠেছে। তীব্র রোদ আর রোদে আগুনের ফুলকির মতো তেজ যেন মরুভূমির তাপমাত্রা। অতি তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষ ও প্রাণীজগত।
০১ মে, ২০২৪

২৫ বছরের ইতিহাসে খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড
গত ২৫ বছরের ইতিহাসে খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সোমবার (২৯ এপ্রিল)। এদিন খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গত ২৫ এপ্রিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এর আগে ২০২৩ সালের এপ্রিলে ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। শুধু খুলনায় নয়, গোটা বিভাগে তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী। দিন দিন বাড়ছে তাপমাত্রা। দাবদাহে পুড়ছে পুরো বিভাগ। সোমবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়। আর যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, গত ২৫ বছরের মধ্যে সোমবার খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন, বৃষ্টিপাত কমে যাওয়া, জলাশয় ভরাট করা ও গাছপালা কেটে স্থাপনা গড়ে তোলাই প্রধানত তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী। এ ছাড়া লবণাক্ততা বৃদ্ধিতে বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। তিনি আরও জানান, সোমবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বিরাজ করছে, যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আর যশোরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া খুলনায় ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, সাতক্ষীরায় ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, মোংলায় ৪১ দশমিক ১ ডিগ্রি এবং কয়রায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৫ ডিগ্রি এবং রাজশাহীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে গত ১৩ এপ্রিল থেকে অর্থাৎ ১৬ দিন ধরে দেশে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। তীব্র দাবদাহে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অসহ্য গরমে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম অস্বস্তি। বৃষ্টির দেখা নেই, ফলে বিপাকে পড়েছে মানুষ ও প্রাণীকুল। তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে খুলনায় দফায় দফায় বৃষ্টির কামনায় ইসতিসকার নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। নাভিশ্বাস উঠেছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের। অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউই বের হচ্ছেন না। গরমে শিশু ও বৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিশেষ করে ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। এ ছাড়া গরমে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে নলকূপ ও পাম্পে ঠিকমতো পানি উঠছে না। অসহ্য গরমে পানি, শরবত ও ফল নিয়ে পথচারী, যানবাহন চালক ও খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে খুলনার বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠন ও তরুণ সমাজ। নগরীর খালিশপুর বঙ্গবাসী এলাকার বাসিন্দা সোহাগ আসিফ বলেন, এমন গরম কখনও পড়েনি। এ বছর গরমের মাত্রা অনেক বেশি। পানি খেয়েও তৃষ্ণা মিটছে না। স্যালাইন ও শরবত পান করছি। বাতাসও যেন উত্তাপ ছড়াচ্ছে। বাড়িতে চুলার পাশে বসলে যেমন তাপ, ঘরে ও বাইরে তেমন তাপ অনুভূত হচ্ছে। রিকশাচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, বেশিক্ষণ রোদের তাপ সহ্য করা যাচ্ছে না। ছায়ায় দাঁড়ালেও বাতাসের সঙ্গে মনে হচ্ছে আগুনের তাপ আসছে। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। তিনি যেন দ্রুত বৃষ্টি দেন। বৃষ্টি না হলে গরম কমবে না। এদিকে প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে না যেতে খুলনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মানুষকে সতর্ক করে চলছে মাইকিং। এ ছাড়া গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, গরমের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে। এখন প্রতিদিন রোগী বাড়ছে। ৫০০ শয্যার হাসপাতাল হলেও তিনগুণ রোগী চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। ফলে চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে এখানকার চিকিৎসক ও নার্সদের।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙার আশঙ্কা যে ৬ জেলায় 
চলতি মাসে গত ৭৬ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে তাপপ্রবাহ ছিল বাংলাদেশে। আগামী ২ দিন অর্থাৎ ২৮ ও ২৯ এপ্রিল বাংলাদেশের ৬ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙার আশঙ্কা করেছেন আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ। শনিবার (২৭ এপ্রিল) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার (৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস) রেকর্ড ভাঙার আশঙ্কা খুবই বেশি আগামী ২৮ ও ২৯ এপ্রিলের যে কোনো দিন। সম্ভাব্য জেলা- চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, যশোর, পাবনা, রাজশাহী, ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ। খুবই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সকাল ১১টার পর থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে ঘরের বাইরে বের হওয়ার থেকে বিরত থাকুন। শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের এই সময়ে ঘরের বাইরে বের হয়ে খোলা আকাশের নিয়ে অবস্থান করা জীবনের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোনো সময় হিটস্ট্রোক হয়ে যেতে পারে। এর আগে গতকাল শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, চলতি এপ্রিল মাসে টানা যতদিন তাপপ্রবাহ হয়েছে, তা গত ৭৬ বছরেও হয়নি। হিটস্ট্রোক ও গরমজনিত রোগে এবার অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যুর যে রেকর্ড হয়েছে, তা-ও অতীতে কোনোকালে হয়নি। মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙেছে চুয়াডাঙ্গা। পশ্চিমের এ জেলায় ২৭ দিন ধরে ‘মরুভূমির লু হাওয়ার’ মতো পরিস্থিতি। চলতি মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১১ শতাংশ। সেখানে ‘অনুভূত’ তাপমাত্রা ছিল ৪৬ ডিগ্রি। এর আগে গত শনিবার মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল যশোরে। ওই দিন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ১৯৪৮ সাল থেকে তাদের কাছে বিভিন্ন স্টেশনের আবহাওয়ার তথ্য-উপাত্ত আছে। তবে সব বছরে সব স্টেশনের উপাত্ত নেই। উপাত্তগুলো একেবারে সুনির্দিষ্টভাবে আছে ১৯৮১ সাল থেকে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ১৯৪৮ থেকে চলতি বছর পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি তাপপ্রবাহ হয়েছে এবারের এপ্রিল মাসে। এর আগে ২০১০ সালে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ ২০ দিন তাপপ্রবাহ ছিল, তবে তা টানা ছিল না। কিন্তু এবার টানা ২৭ দিন তাপপ্রবাহ হলো। আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, ১৯৪৮ সালের পর এই ভূখণ্ডে এটাই সর্বোচ্চ টানা তাপপ্রবাহ। তবে এই ২৭ দিনের পুরো সময়ে সারা দেশের সর্বত্রই সমান হারে তাপপ্রবাহ বয়ে যায়নি। ৩১ মার্চ থেকে শুরু করে ১১ এপ্রিলের পর্যন্ত দেশের নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। সে সময় তা খুব বেশি এলাকায় ছড়িয়ে যায়নি। এরপর ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত আরও কয়েকটি অঞ্চলে তাপপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়ে। ১৬ এপ্রিল থেকে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হয়, যা দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে টানা চলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতীতে ব্যাপ্তিকাল কম থাকায় তাপপ্রবাহ বড় সমস্যার কারণ হয়ে ওঠেনি। আগামী বছরগুলোতে ক্রমান্বয়ে তাপপ্রবাহের ব্যাপ্তিকাল ও প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত ৪৩ বছরের মধ্যে যশোরে তাপপ্রবাহ সবচেয়ে বেশি দিন ঘটেছে। এর পরই আছে ঢাকা ও চুয়াডাঙ্গা। আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, এবারের তাপপ্রবাহ দেশের ৭৫ ভাগেরও বেশি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে, যা নজিরবিহীন। ২০১৯ সালে চুয়াডাঙ্গায় এপ্রিল মাসে টানা ২৩ দিন তাপপ্রবাহ ছিল। গত বছর এপ্রিলে টানা ১৬ দিন তাপপ্রবাহ ছিল। তখন তাপপ্রবাহ এত ব্যাপক পরিসরেও ছিল না। ১৯৬৪ সালে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস যশোরে। আর ১৯৮৯ সালে বগুড়ার তাপমাত্রা হয়েছিল ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে ৪৩ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে কালবৈশাখী। এই দাবদাহে ৪৩ বছরের মধ্যে চলতি মাসে দেশে সবচেয়ে কম কালবৈশাখী হয়েছে। এই তাপপ্রবাহের মাসে বজ্রঝড় বা কালবৈশাখীর সংখ্যা গেছে কমে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক আবহাওয়া ও জলবায়ু নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি ১৯৮১ থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাসের উপাত্ত তুলে ধরেছেন তার গবেষণায়। এই ৪৩ বছরে এপ্রিল মাসে ৩৬৫টি বড় বজ্রঝড় হয়। সবচেয়ে বেশি ঝড় হয়েছিল ১৯৯৭ সালের এপ্রিল মাসে, ১৪টি। আর ১৯৯৯ ও ২০০৯ সালে সবচেয়ে কম ৪টি করে ঝড় হয় এপ্রিলে। গত বছরের এপ্রিলে বজ্রঝড় হয়েছিল ৭টি। ২০২২-২১ সালে হয় যথাক্রমে ৯টি ও ৮টি। আর এ বছর মাত্র একটি। দেশে সবচেয়ে বেশি বজ্রঝড় হয় মে মাসে। এর পর আছে জুন, সেপ্টেম্বর ও এপ্রিল মাস। কিন্তু এবার এই ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে মাত্র একটি বজ্রঝড় বা কালবৈশাখি হয়েছে। তাও হয়েছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে। সেটিও অস্বাভাবিক। এপ্রিল মাসে ঝড় কমে যাওয়ায় অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহকেই কারণ মনে করেন বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল ইসলাম। তিনি জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত আন্তঃসরকার প্যানেলের (আইপিসিসি) সঙ্গে যুক্ত। তিনি বলেন, তাপমাত্রা বৈশ্বিকভাবে ১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। এ বছরের এপ্রিল ভারতে ১২২ বছরের মধ্যে ছিল সবচেয়ে বেশি উষ্ণ। আমাদের যে বায়ুপ্রবাহ তার সঙ্গে সীমান্তসংলগ্ন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও উডিষ্যার সম্পর্ক আছে। এ সময় এসব অঞ্চলে সাগর থেকে আসা জলীয় বাষ্প বজ্র মেঘের সৃষ্টি করে। কিন্তু এবার ভারতের ওই সব অঞ্চলেও প্রচণ্ড গরম পড়েছে। আর্দ্রতাপূর্ণ জলীয় বাষ্প জড়ো হয়ে বজ্র মেঘ সৃষ্টি করেনি। তাতেই এ বিড়ম্বনা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এ অবস্থা দেখছি আমরা।    
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড
চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শুক্রবার বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৪ শতাংশ ও দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৬ শতাংশ।  তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।  এদিকে তীব্র রোদের কারণে শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালকরা ঠিকঠাক কাজ করতে পারছে না। একটু প্রশান্তির খোঁজে গাছের ছায়া ও ঠান্ডা পরিবেশে স্বস্তি খুঁজছে স্বল্প আয়ের মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তাঘাটে লোকজনের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ছে। আবার অনেকে জরুরি প্রয়োাজন ও জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে কাজে বের হচ্ছেন।
২৬ এপ্রিল, ২০২৪

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ২৭ শতাংশ। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় এ তাপমাত্রা রেকর্ড করে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস।  এদিকে এপ্রিল মাসে এ তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা আবহাওয়া অফিস। এর আগে দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৯টায় ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৪৩ শতাংশ। তীব্র তাপপ্রবাহে চুয়াডাঙ্গার জনজীবন ওষ্ঠাগত। তাপ প্রবাহের প্রভাব পড়েছে সাধারণ মানুষের ওপর। ঈদের পর তাপপ্রবাহে খেটে খাওয়া কর্মজীবী মানুষ তাদের কর্মে ঠিকমতো ফিরতে পারছে না। এ সময় রোদ যেন আগুনের ফুলকি হয়ে ঝরছে। আগুন ঝরা রোদের তেজে বাইরে বের হওয়া মুশকিল হয়ে পড়ছে। এ অবস্থা বিরাজ করে সূর্য একেবারে পাটে পড়ার আগ পর্যন্ত। চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, গত কয়েক দিন ধরে ৩৭/৩৮ ডিগ্রির তাপমাত্রা বিরাজ করছিল। মঙ্গলবার জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মওসুমের সর্বোচ্চ। তীব্র তাপদাহ শুরু হয়েছে। দু’তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। ফলে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। তিনি আরও জানান, এপ্রিল মাসজুড়ে তাপপ্রবাহের সঙ্গে সঙ্গে এ আবহাওয়া বিরাজ করার সম্ভবনা রয়েছে। গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫০ শতাংশ। এদিন দুপুর ১২টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫১ শতাংশ। বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সে সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৩৩ শতাংশ। প্রতিদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাপমাত্রাও পারদও বেড়ে যাচ্ছে।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪
X