চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নিয়ে যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার মধ্যে যেন প্রতিযোগিতা চলছে। বুধবার (১ মে) যশোরে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যশোর বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ বিমান ঘাঁটি আবহাওয়া অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। অন্যদিকে চুয়াডাঙ্গায় আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এদিন এই জেলাতেও তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ১২ শতাংশ।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) যশোরে চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৮ রেকর্ড করা হয়েছিল। এদিন চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রার পারদ উঠেছিল ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) যশোরে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৪২ দশমিক ৮, সেদিন চুয়াডাঙ্গায় ছিল সর্বোচ্চ ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ মো. জামিনুর জানান, মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের ৩৫ বছরের ইতিহাসে এটি ছিল সর্বোচ্চ। আরও দুএকদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে চলা তীব্র তাপপ্রবাহে নাকাল হয়ে পড়েছে যশোরের সাধারণ মানুষের জনজীবন। শহরে দিনে লোকজনের উপস্থিতি কমে গেছে। তবে তিন চাকার চালকরা রয়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
শহরের গুরুত্বপূর্ণ মুজিব সড়ক, দড়াটানা মোড় থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন সড়কে তীব্র দাবদাহে প্রায় জনশূন্য দেখা গেছে। মানুষের উপস্থিতি যেমন কম তেমনি যানবাহনের উপস্থিতিও কম। কিছু ইজিবাইক, রিকশা দেখা গেলেও যাত্রীর অপেক্ষায় মোড়ে মোড়ে বসে থাকতে দেখা গেছে চালকদের।
শহরের সিভিল কোর্ট মোড়ে ইজিবাইক রেখে যাত্রীর অপেক্ষায় বসে ছিলেন চালক রফিকুল মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘সকালে ৭টার দিকে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। ৯টা পর্যন্ত মোটামুটি ভাড়া টেনেছি, তারপর থেকে আর যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। রাস্তায় লোকজনই নেই বললেই চলে।’
শহরের বকুলতলায় বসেছিলেন রিকশাচালক হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহর ফাঁকা হয়ে গেছে। এত গরমে মানুষ বের হবে কী করে? আমরা পেটের দায়ে বের হয়ে যাত্রী পাচ্ছি না। ভাড়ার রিকশা চালাই, মহাজনকে দেওয়ার মতো টাকাও এখনো হয়নি।’
গত দুসপ্তাহ ধরে যশোরসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে এ বিভাগের যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। সেই সঙ্গে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন।
টানা প্রায় ২০ দিন চুয়াডাঙ্গা জেলা তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন অস্থির হয়ে উঠেছে। তীব্র রোদ আর রোদে আগুনের ফুলকির মতো তেজ যেন মরুভূমির তাপমাত্রা। অতি তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষ ও প্রাণীজগত।
মন্তব্য করুন