সাংবাদিককে হুমকি দেওয়া এসিল্যান্ড প্রত্যাহার
লালমনিরহাটে কর্মরত পাঁচ সাংবাদিককে নিজ কার্যালয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগের পর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ-আল-নোমান সরকারকে বদলি করা হয়েছে। তাকে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে এসিল্যান্ড হিসেবে যোগদান করতে বলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান এ আদেশ দেন। গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি এম এ মমিন। বৃহস্পতিবার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ে পাঁচ সাংবাদিককে অফিসে আটকে রাখেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ-আল-নোমান সরকার। প্রায় ৪০ মিনিট পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক টি এম মমিন তাদের মুক্ত করেন। সাংবাদিকরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের তিনজন অফিস সহকারী ভূমি-সংক্রান্ত শুনানি করছিলেন। সেখানে মাই টিভি ও ডেইলি অবজারভারের সাংবাদিক মাহফুজ সাজু এ শুনানির ভিডিও ধারণ করেন। এতে অফিসের স্টাফরা ক্ষুব্ধ হয়ে সহকারী কমিশনার আবদুল্লাহ-আল-নোমানকে ডেকে তার নির্দেশে সাংবাদিক মাহফজু সাজুকে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে প্রেস ক্লাব সদস্য সচিব লিয়াকত আলী, এশিয়ান টিভির নিয়ন দুলাল, কালবেলার এস কে সাহেদ, আমার বার্তার কাউসার মাহমুদসহ চার সাংবাদিক ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরও আটকে রাখা হয়। সাংবাদিক মাহফুজ সাজু বলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর অনুপস্থিতে দলিলের শুনানি নেওয়া এবং সেবা নিতে আসা লোকজনের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হচ্ছে—এমন সংবাদের তথ্য সংগ্রহ করতে যাই। এ সময় এসিল্যান্ড সাংবাদিকদের জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল্লাহ-আল-নোমান সরকার কোনো উত্তর দেননি। তবে কাগজপত্র দেখাতে না পারায় এক মোটরসাইকেল আরোহীর ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন বলে জানান। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, পুরো বিষয়টি অবগত হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
১৬ মার্চ, ২০২৪

জবির হলে নির্যাতনে ছাত্রী অজ্ঞান, সাংবাদিককে হুমকি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে এক ছাত্রীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। মারধর করা শিক্ষার্থী তাসমিম সানজানা সৃষ্টির মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিককে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সৃষ্টির ছেলেবন্ধু। হুমকিদাতা ওই শিক্ষার্থী মার্কেটিং বিভাগের ২০১৬-১৭ ব্যাচের ফাহিম ইশতিয়াক।  বুধবার (৬ মার্চ) রাতে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে জবি ছাত্রী হলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইতি খাতুনকে রান্নাঘরে তুচ্ছ ঘটনায় মারধর করে সংগীত বিভাগের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাসমিম সানজানা সৃষ্টি। এ ঘটনায় ছাত্রী হলের হাউস টিউটর ও প্রোভোস্টের নিকট লিখিত অভিযোগও দেন আহত শিক্ষার্থী ইতি। এ বিষয়ে মারধরে ভুক্তভোগী ছাত্রী ইতি খাতুন বলেন, আমি রান্না করছিলাম। পরে চুলা ফাঁকা থাকায় সৃষ্টি আপু ডিম ভাজতে চাইলে ছেড়ে দিই। কিন্তু রান্না শেষ করতে দেরি হওয়ায় ও আমার ক্লাসের সময় হওয়ায় দ্রুত রান্না শেষ করতে বলি। কিন্তু আমি জুনিয়র বলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেয়। আমরা মরা বাপ তুলেও গালি দেয়। আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে চড়-থাপ্পড়, কিলঘুষি মারে। আমার পরের ঘটনা মনে নেই অজ্ঞান হয়ে যায়। মারধর করা অভিযুক্ত তাসমিম সানজানা সৃষ্টি বলেন, জুনিয়র হয়ে ইতি বেয়াদবি করে। আমার সামনে তেড়ে আসে। এ জন্য আমি কি বসে থাকব? আমিও মাইর খাইছি, আমিও অভিযোগ দিয়েছি।  হল প্রভোস্ট দীপিকা রানী বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। হলের শৃঙ্খলা কমিটিতে এটা তোলা হবে। অভিযোগ সূত্রে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইতির বক্তব্য নেওয়ার পর অভিযুক্ত সৃষ্টির কাছে ফোন দেন সাংবাদিকরা। এর জেরে সৃষ্টির ছেলেবন্ধু ফাহিম ইশতিয়াক এক সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। নিউজ করলে মামলার হুমকি দেয়।  হুমকির ঘটনায় কল রেকর্ডে শোনা যায়, ফাহিম ওই সাংবাদিককে মোবাইল ফোনে বলেন, এই নিউজ যদি হয়, তুই যদি জড়িত থাকিস তোর খবর আছে। তোর নামে মামলা হবে। তোর লাইফ কীভাবে হেল করতে আমি দেখব...। তোর খবর আছে।  হুমকিদাতা ফাহিম ইশতিয়াক বলেন, ওই সাংবাদিক আমার বান্ধবীকে কল দেয়। বান্ধবী কান্নাকাটি করে আমাকে সমস্যা সমাধান করতে বলে। তাই আমি ওই সাংবাদিককে কল দিয়ে কথা বলি। উত্তেজিত হয়ে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে ফেলেছি। হুমকিদাতা ফাহিম নিজেকে ছাত্রলীগের পরিচয় দেয়। ফেসবুকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির সঙ্গে ছবি আছে। তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি বলেন, এই ছেলে ছাত্রলীগের কোনো রাজনীতিই করে না। তাকে আমি চিনিই না।   বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন  বলেন, এটি একটি নিন্দনীয় কাজ। সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত কাজ করবে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০৭ মার্চ, ২০২৪

কালবেলার সাংবাদিককে হুমকি দেওয়া সেই আনোয়ার ক্ষমা চাইলেন
রাজশাহীতে দৈনিক কালবেলা পত্রিকার দুর্গাপুর প্রতিনিধি রাজু আহমেদকে লাঞ্ছিত ও হুমকি দেওয়ার ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন আনোয়ার হোসেন। তিনি দুর্গাপুরের জয়নগর ইউনিয়নের পারিলা গ্রামের মৃত একরাম হোসেনের ছেলে।  বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুর্গাপুর থানার গোল ঘরে থানা পুলিশ এবং নবযাত্রা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে হুমকিদাতা আনোয়ার ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটাবে না মর্মে সাংবাদিক রাজুর হাত ধরে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।  এ সময় উপস্থিত ছিলেন নবযাত্রা প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া, সিনিয়র সহসভাপতি খোরশেদ আলম, রাজু আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, কমিটির সদস্য আল আমিন প্রমুখ।  প্রসঙ্গত, পূর্বশত্রুতার জের ধরে সংবাদ সংগ্রহের সময় শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে অভিযুক্ত আনোয়ার বাজারের মধ্যে মাটি বহনকারী ট্রাক্টর থামিয়ে চাঁদা আদায় করছিলেন। এ সময় সাংবাদিকের উপস্থিতিতে উগ্র আচরণ শুরু করেন তিনি। জাতীয় দৈনিক কালবেলা পত্রিকাকে উদ্দেশ্য করে কুরুচিপূর্ণ কথা বলতে থাকেন। এর একপর্যায়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করেন এবং সে সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এ সময় মারধরের চেষ্টাও করেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিক রাজু আহমেদ বলেন, যেহেতু তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন তাই বিষয়টি আমিও বড় করে দেখিনি। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানাই। 
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

সাংবাদিককে হুমকি দিলেন বন্দুকধারী সেই জলিল মিয়াজী
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমরের পাশে বন্দুক নিয়ে চেয়ারে বসে থাকা বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা আব্দুল জলিল মিয়াজী এবার সাংবাদিককে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। বন্দুক হাতে তার ছবি পত্রিকা, টেলিভিশন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় গত ৪ ডিসেম্বর শাহজাহান ওমরকে শোকজ করে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি। এ ঘটনার পর জলিল মিয়াজীকে বিএনপির সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ‘মিয়াজী বার্তা’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে এক সাংবাদিককে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে এই নামে ফেসবুক ব্যবহার করে আসছেন জলিল মিয়াজী। মিয়াজী বার্তার ওই পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘আগামী ৭ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনের পর সব মিথ্যাচার ও নোংরামির দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। হলুদ সাংবাদিক অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করছে। সবার আমলনামা আমার হাতে জমা আছে। বিজয় মিছিলের পর উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে। যারা বেশি লাফালাফিতে ব্যস্ত তারা সামলাইতে পারবা তো?’ এই ফেসবুক আইডিতে ২ অক্টোবর লেখা হয়েছিল, ‘এই অক্টোবর মাসেই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হবে। কিছুদিনের মধ্যে এই সরকারের পতন হবে।’ এ প্রসঙ্গে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা আব্দুল জলিল মিয়াজী বলেন, ‘আমি ঢালাওভাবে সব সাংবাদিকদের উদ্দেশে লিখিনি। আমি নির্ধারিত একজনের উদ্দেশে লিখেছি।’  এ বিষয়ে বরিশাল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন বলেন, ‘একজন রাজনীতিবিদ হয়ে জলিল মিয়াজী সাংবাদিকদের সম্পর্কে ফেসবুকে যা লিখেছেন, তা যথেষ্ট কুরুচিপূর্ণ এবং আপত্তিকর। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।’ বরিশাল রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল বিশ্বাস বলেন, ‘বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে ফেসবুকে হুমকি দেওয়া অবুঝদারের শামিল। একজন ব্যক্তি, সে যে দলেরই হোক তার বিরুদ্ধে অসত্য সংবাদ প্রকাশ হলে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে হুমকি দেওয়া দুঃখজনক।’ বরিশাল জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান হিরা বলেন, অসত্য সংবাদ প্রকাশ হলে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ আছে। সেখানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জলিল মিয়াজীর স্ট্যাটাস নিঃসন্দেহে আপত্তিকর। তিনি বিজয় মিছিলের ঘোষণাও দিয়েছেন, যা আইনসিদ্ধ নয়।’
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৩
X