‘দ্য ভেনচারার’ পত্রিকায় রবীন্দ্রনাথের সাক্ষাৎকার
লন্ডন থেকে গিলবার্ট থমাসের সম্পাদনায় ‘দ্য ভেনচারার’ ছোটকাগজের ১৯২১ সালের একটি সংখ্যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতিদীর্ঘ সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছিল। এতে তৎকালীন ভারতের অসহযোগ আন্দোলন, মহাত্মা গান্ধী, প্রাচ্য-পাশ্চাত্য এবং শান্তিনিকেতন নিয়ে রবীন্দ্রনাথের চিন্তার বেশ কিছু দিক উঠে এসেছে। ‘দ্য ভেনচারার’-এর সেই প্রকাশনাটিতে সাক্ষাৎকারটি কে নিয়েছেন তার উল্লেখ নেই। যুক্তরাষ্ট্র থেকে পত্রিকাটি সংগ্রহ করে বাংলা ভাষায় রবীন্দ্রনাথের এ সাক্ষাৎকারটি প্রথমবারের মতো অনুবাদ করেছেন তুহিন দাস এখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনেক পোর্ট্রেট, যার সব তার মতোই! সম্ভবত তিনিই সেই মানুষ যিনি নিজের ক্যানভাসগুলো থেকে আপনাকে অভিবাদন জানাতে নেমে আসেন। তিনি তার লেখার মাধ্যমে পশ্চিমকে যে বার্তা ও গান দিয়েছেন সে কথা আমি ভাবছিলাম—‘গীতাঞ্জলি’র সুবাস, ‘ডাকঘর’-এর সাধারণ অনুভূতিমালা আমার মনে জেগে উঠেছিল, কিন্তু যখন তিনি ঘরে প্রবেশ করলেন, মানুষটির ব্যক্তিত্ব নিজেই তার কাজের প্রতিটি স্মৃতিকে ডুবিয়ে দিলেন যেন। ভারতে চলমান আন্দোলন সম্পর্কে আমি তার মতামত জানতে চাইলাম। খানিকটা উচ্চৈঃস্বরে কিন্তু ক্লান্ত কণ্ঠে, খুব সামান্য বাঁক নিয়ে ও খুব কমই বিরতি দিয়ে তিনি একটানা তার বাণী ঢেলে গেলেন। কণ্ঠস্বরটি প্রতিকূল পরিবেশের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা কোনো মানুষের অবসাদকে যেন অগ্রাহ্য করে; যা তার ভারকে উপেক্ষা করার জন্য খুব সংবেদনশীল, আবার সমর্পণের জন্য খুব শক্তিশালী। কিন্তু প্রায় সময়ে উদ্দীপনা, হাস্যরস, এমনকি লুকোনো এক নিন্দাবাদ তার অতিশয় দয়ালু চোখের গভীর জুড়ে জ্বলজ্বল করে। “আজকের দিনের এই আন্দোলন? এটা বিস্ময়কর। আমি এর নামটিকে পছন্দ করি না। আমি এর সমস্ত প্রবণতার সঙ্গে একমত নই। অসহযোগের অর্থ হলো—অন্তত কিছু—বিচ্ছিন্নতার আকাঙ্ক্ষা, শুধু ভারতে ব্রিটিশ সরকারের অন্যায় থেকে নয়, বরং পশ্চিমের সমগ্র সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আকাঙ্ক্ষা এবং এটি অগ্রগতির সম্ভাবনার জন্য ক্ষতিকর হবে। যদিও নিঃসন্দেহে এমন কিছু লোক আছে যারা পশ্চিমা বস্তুবাদের অশ্লীল অসারতা নিয়ে বিরক্ত এবং পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের বিশ্বাসঘাতকতায় মোহভঙ্গ হয়ে আমাদের মধ্য থেকে আধুনিক বিশ্বের প্রতিটি বৈশিষ্ট্যের মূলোৎপাটন করতে চাইবে। এই সংস্কারবিরোধীরা কেবলমাত্র পশ্চিমের কাছ থেকে আমরা যে গুরুতর মন্দ পেয়েছি তাকেই চিহ্নিত করে, কিন্তু ভারতীয় চেতনার ব্যাপক সহনশীলতা ও গ্রহণযোগ্যতার বৈশিষ্ট্য বিশেষায়িত করে না। আমরা পশ্চিমা সংস্কৃতি ছাড়া উন্নতি করতে পারি না, পশ্চিমও অবশ্যই আমাদের ছাড়া অগ্রসর হতে পারে না। জাতীয় আন্দোলন, যাকে ভুল করে বলা হচ্ছে ‘অসহযোগিতা’, আসলে তা নয়, এটি জাতীয় জীবনের একটি মহান পুনর্গঠন এবং এর পেছনে সমস্ত শ্রেণির জনগণ রয়েছে; কেবলমাত্র কিছু স্পর্শকাতর ব্যক্তি আর যারা বিজাতীয়কৃত শিক্ষার শিকার, তারা পাশে সরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।” “আমার কাছে যা খুব চমৎকার, যা খুব স্পর্শকাতরভাবে সুন্দর ও আমাদের মানুষের মৌলিক আধ্যাত্মিকতার জন্য তাৎপর্যপূর্ণ তা হলো, গান্ধীর প্রতি তাদের ভক্তি। সমস্ত বুদ্ধিবৃত্তিক সূক্ষ্মতা, অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষিত বাগ্মীতা, যা একজন সফল আধুনিক রাজনীতিবিদের থাকে সেসব তাদের কাছে বৃথা। তারা গান্ধীকে দৃঢ়ভাবে অনুসরণ করে কেবল একটিমাত্র কারণে যে, তারা তাকে একজন সন্ত বা পবিত্র ব্যক্তি বলে বিশ্বাস করে। একজন সাধুকে অনুসরণ করার জন্য নানান সম্প্রদায়, মেজাজ ও আদর্শের একটি পুরো দেশকে হাত মেলাতে দেখা একটি আধুনিক অলৌকিক ঘটনা এবং এটা শুধু ভারতেই সম্ভব। আমি অনেক বিষয়ে গান্ধীর সঙ্গে একমত নই, কিন্তু আমি তাকে পরম শ্রদ্ধা ও প্রশংসা করি। তিনি শুধু ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষই নন, তিনি আজ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। আন্দোলনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফলগুলোর মধ্যে একটি হলো এটি কার্যত মদপান ব্যবসাকে ধ্বংস করেছে। এটা জানতে পারা অসাধারণ যে, যারা মদপানের অভ্যাসের জন্য প্ররোচিত ও প্রলুব্ধ হয়েছে তারা কীভাবে শুধুমাত্র গান্ধীর কথায় তা ছেড়ে দিয়েছে। বদ্ধ মাতালরা গান্ধীর প্রতি তাদের ভক্তির মাধ্যমে যে কোনো প্রকারে মদকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করার শক্তি খুঁজে পায়। তারা সাদামাটাভাবে বলে যে, ‘মহাত্মা গান্ধী এটা নিষেধ করেছেন’ এবং সারা জীবনের মন্দ শেকলগুলো ভেঙে যায়। রাজস্বের একটি ফলপ্রসূ উৎসের এই পাইকারি দমনে সরকার অত্যন্ত বিরক্ত, ভান করছে যে, কিছু রাষ্ট্রদ্রোহী প্রভাব রয়েছে এবং অনেককে নির্যাতন করছে। কিন্তু জনগণ কিছু মনে করবে না, গান্ধীর জন্য ও ভারতের মুক্তির জন্য তারা উল্লাস করে কারাগারে যাবে।” আমি রবীন্দ্রনাথকে তার নিজের কাজ সম্পর্কে কিছু বলতে বলেছিলাম এবং তিনি তার কথা চালিয়ে গেলেন: “বর্তমানে, আমি শান্তিনিকেতন বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন নিয়ে সম্পূর্ণভাবে ব্যস্ত। আপনি জানেন, আমি বিশ বছর আগে একটি ছোট্ট বিদ্যালয় হিসেবে একে প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। বছরের পর বছর ধরে ভবন ও সরঞ্জামাদি যোগ করা হয়েছে, এখন এর খ্যাতি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এর রক্ষণাবেক্ষণ কোনো একক ব্যক্তি বা সম্প্রদায়ের সামর্থ্যের বেশ বাইরে।” “সমতার শর্তে সহযোগিতা হলো চলমান যুগের মহান বার্তা। সকল মানুষের যৌথতা ভবিষ্যতের সভ্যতার মূল মন্ত্র।” “যে দেশগুলো অহংকার বা লোভের বশবর্তী হয়ে যুগের মন্ত্রকে স্বীকার করতে অস্বীকার করে তারা পদযাত্রা থেকে ছিটকে পড়বে এবং মরুতে নিঃশেষিত হবে। এখন আমাদের সম্মুখে সংকটটি হলো একটি একক দেশের—যেটি নিজেই একটি বিশ্ব, যেখানে সম্প্রদায়গুলোকে এককভাবে নিজেদের আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা খুঁজে পেতে হবে এবং সংঘের বন্ধনেও একত্রিত হতে হবে। এই লক্ষ্যে, প্রত্যেককে অবশ্যই অন্য সকলের উপহার ও সামর্থ্যের প্রশংসা করতে হবে। প্রাচ্যকে পাশ্চাত্য সংস্কৃতিকে উপলব্ধি করতে শিখতে হবে, পশ্চিমকেও পূর্বকে বুঝতে শিখতে হবে। পশ্চিমাদের দ্বারা পূর্বের দেশগুলোর নির্মম বাণিজ্যিক ও সামরিক শোষণের কারণে এ পর্যন্ত প্রাচ্য পাশ্চাত্য থেকে নৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন ছিল। এই বিচ্ছেদ উভয়ের জন্য গভীর আঘাতের। যদি না আমরা যে যুদ্ধ থেকে সবেমাত্র বেঁচে গেছি তার চেয়েও ভয়ানক এবং ব্যাপক একটি বিশ্ব বিপর্যয়ে অসীমভাবে ধ্বংস হয়ে যাই। কিছু সংশোধনের উপায় কিছু সহযোগিতার উপায় প্রদান করা আবশ্যক। এটি অর্জন করতে পূর্ব ও পশ্চিম মানবতার মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া প্রচারের অন্যতম সেরা উপায় হিসেবে কলকাতা থেকে প্রায় নব্বই মাইল দূরে শান্তিনিকেতনে আমি একটি দুর্দান্ত আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের গোড়াপত্তন শুরু করেছি। এটা আমার পরিকল্পনা যে, সেখানে বিশ্বের সমস্ত প্রান্ত থেকে ছাত্রদের আমাদের দর্শন, শিল্প, সংগীত ও বিজ্ঞানের পদ্ধতিগুলো তাদের শ্রেণিগত পরিবেশে অধ্যয়ন করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে এবং বিভিন্ন বিষয়ে নিযুক্ত অধ্যাপকদের অধীনে গবেষণার কাজ চালিয়ে যাবে। ইংল্যান্ডে, আমেরিকায়, জার্মানিতে এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রয়েছে যারা প্রতিটি জাতির বিশেষ সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখা সংরক্ষণ করে ও তাদের মাধ্যমে পাশ্চাত্যের মননের ও অর্জনগুলোর বিভিন্ন দিকগুলো বিশ্বের কাছে উন্মোচিত হয়। আমাদের নিজস্ব অমূল্য ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করতে ও সব মানুষের লাভের জন্য দায়বদ্ধ ভারতে এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন। আমার অভিপ্রায় হলো তহবিল বৃদ্ধি করে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ততটুকু সম্প্রসারিত করা যতক্ষণ না এটি প্রাচ্যের সংস্কৃতির সম্পূর্ণ পরিসর—আর্য, মঙ্গোলিয়ান, সেমেটিক ও অন্যান্যকে ধরতে পারে।” “আমার আকাঙ্ক্ষা শান্তিনিকেতন এমন একটি ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপনে সহায়ক হবে যেখানে প্রাচ্য ও পশ্চিমের সেরা মননরা একটি নতুন বিশ্বসভ্যতা গড়ে তুলতে যৌথভাবে কাজ করবে এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বশিক্ষা ও ফেলোশিপের কেন্দ্রে পরিণত করতে আমাকে সাহায্য করবে। আমি সেই আহ্বানে সাড়া দেওয়া পশ্চিমা কমরেডদের সহযোগিতাকে স্বাগত জানাই।”
০৩ মে, ২০২৪

বিচিত্র / ৫৫ ঘণ্টায় ৯০ নারীর সাক্ষাৎকার নিয়ে রেকর্ড
৫৫ ঘণ্টা ২৪ সেকেন্ডে ৯০ নারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তিনি। দীর্ঘতম সাক্ষাৎকার ম্যারাথনের জন্য ইতোমধ্যে তিনি বিশ্বরেকর্ড করেছেন। এ সাক্ষাৎকারগ্রহীতার নাম ক্লারা চিজোবা ক্রোনবার্গ। নাইজেরিয়ার এ নারী ‘ওমেনস ওয়ার্ল্ড শো’ নামের ইউটিউবের একটি অনুষ্ঠানের জন্য তাদের সাক্ষাৎকার নেন। চিজোবা টানা ৫৫ ঘণ্টার সাক্ষাৎকার নিয়ে ২০২২ সালে করা রব ওলিভারের টানা ৩৭ ঘণ্টা ৪৪ মিনিটের সাক্ষাৎকার নেওয়ার রেকর্ডটি ভেঙেছেন। এর মাধ্যমে তিনি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অর্জন করেন। চিজোবা মূলত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, কন্টেন্ট ক্রিয়েটরসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনের নেপথ্য কারণ নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি গিনেস কর্তৃপক্ষকে বলেন, ‘এ রেকর্ড প্রচেষ্টাটি ছিল বিভিন্ন ব্যক্তিদের একত্রিত করা, তাদের অনুপ্রেরণামূলক গল্প সবার সঙ্গে শেয়ার করা এবং বিশ্বব্যাপী তাৎপর্যপূর্ণ সংযোগ তৈরি করা।’ চিজোবা বলেন, কঠোর পরিশ্রম করা নারীদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরতে আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যে গল্পগুলো একইরকম চ্যালেঞ্জের মুখে থাকা মানুষকে উৎসাহিত করে। নাইজেরিয়ার এই নারী স্পেনের মারবেলায় একটি প্রমোদতরীতে বসে এসব সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। সূত্র: ইউপিআই
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

হোয়াইট বোর্ডকে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার
আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ‘হোয়াইট বোর্ড’ ম্যাগাজিনের সর্বশেষ সংখ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে চারবার রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতা, দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ এবং বিভিন্ন নীতি নির্ধারণী বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। ইংরেজিতে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারটি বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করা হল কালবেলা পাঠকের জন্য।  হোয়াইট বোর্ড: আপনার বেড়ে ওঠার সময়গুলো সম্পর্কে বলুন? সরকার এবং রাজনীতির বিষয়ে আপনার শৈশবের ভাবনাগুলো কেমন ছিল? শেখ হাসিনা: সত্যি কথা বলতে কি, আমি কখনই ভাবিনি যে আমি প্রধানমন্ত্রী হতে পারব! আমি ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম, কিন্তু সারাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়টি আমার মাথায় আসেনি। কীভাবে একটি দেশের উন্নয়ন করা যায় বা কীভাবে মানুষের জীবন উন্নত করা যায় সেগুলো সম্পর্কে আমি সত্যিই সচেতনভাবে চিন্তা করিনি। কিন্তু আমি এখন বুঝতে পারি যে আমার বাবার আশেপাশে থাকা মানে, অবচেতনভাবে ছোটবেলা থেকেই আমার মনে (রাজনীতি ও দেশ ভাবনার) একটি ব্লুপ্রিন্ট তৈরি হয়েছিল। রাজনীতি তার জীবনের একটি সর্বাঙ্গীন অংশ ছিল এবং এটি এমন কিছু যার মধ্য দিয়ে আমরা বড় হয়েছি। আমরা দিনের সংবাদপত্র নিয়ে তার চারপাশে জড়ো হতাম এবং সারা বিশ্বে এবং আমাদের নিজেদের আঙ্গিনায় কী ঘটছে সে সম্পর্কে তার কথা শুনতাম। অনেক প্রশ্ন, অনেক দীর্ঘ আলোচনা! এভাবেই আমাদের দিন শুরু হতো। আমরা গ্রামে অনেক সময় কাটিয়েছি। তিনি আমাদের কাছে তুলে ধরতেন যে লোকেরা কীভাবে ভোগান্তির শিকার হয়। কারণ তাদের জীবনে খাদ্য, বস্ত্র, চাকরি, বাসস্থান এবং স্বাস্থ্যসেবা, মর্যাদাপূর্ণ জীবনের মতো মৌলিক অধিকার ছিল না।। তিনি সর্বদা কীভাবে জিনিসগুলো পরিবর্তন করতে হবে সে সম্পর্কে কথা বলতেন। তার চিন্তাভাবনা এবং ধারণাগুলো আমাকে আজও পরিচালিত করে। হোয়াইট বোর্ড: দেশে ফেরার সময় প্রধান চ্যালেঞ্জ কী ছিল? শেখ হাসিনা: আমি যখন আওয়ামী লীগের নেতা নির্বাচিত হয়ে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসি, তখন এটা স্পষ্ট যে রাষ্ট্র আর জনগণের সেবা করছে না। ১৯৭৫ সাল থেকে, দেশটি গোপনে বা গোপনে সামরিক শাসনের অধীনে ছিল। রাষ্ট্রযন্ত্র অভিজাতদের দখলে ছিল, একটি ছোট গোষ্ঠীর সুবিধার জন্য নীতি তৈরি করেছিল। জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহিতা ছিল না। জনগণেরও কথা বলার জায়গা ছিল না। এসব জিনিসগুলো পরিবর্তন করতে হয়েছিল। হোয়াইট বোর্ড: সংকটে থাকা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব যখন আপনি নিলেন, বাংলাদেশের বয়স এক দশকও হয়নি। সে সময় থেকে পরবর্তী দিনগুলো জন্য আপনি কীভাবে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন? শেখ হাসিনা: আশির দশকের গোড়ার দিকে যখন আমি একটি প্রগতিশীল জোটের নেতৃত্ব দিতে শুরু করি তখন আমি একজন তরুণ রাজনীতিবিদ ছিলাম। আমি বাংলাদেশের ভেতর এবং বাহির জানার বিষয়ে আরও আগ্রহী ছিলাম। নিজের জন্য দেশটি দেখতে চেয়েছিলাম। আমাদের নীতির অগ্রাধিকার নির্ধারণের জন্য আমি আমার দলের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসেছি। মানুষের চাহিদা বোঝার জন্য আমাকে তাদের কাছে যেতে হয়েছে, তাদের সংগ্রাম দেখতে হয়েছে। সর্বোপরি, আমি কীভাবে কল্যাণমূলক নীতিগুলো তৈরি করব যদি আমি না জানি যে সেগুলো কাদের জন্য? আমি আরামে বসে বসে সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। আওয়ামী লীগ বরাবরই একটি তৃণমূল দল, যার সর্বত্র সদস্য রয়েছে। আমি দেশের প্রতিটি কোণায় যেতে শুরু করি, যদিও বেশিরভাগ জায়গায় রাস্তা ছিল না। আমি হেঁটেছি, ছোট ছোট নৌকা নিয়েছি, রিকশা-ভ্যানের পিঠে চড়েছি, মূলত দুর্গম স্থানে পৌঁছানোর জন্য যা যা দরকার তাই করেছি। দেশের প্রতিটি জেলায় ঘুরেছি। আমি আমাদের জনগণের কষ্টগুলো সরাসরি গিয়ে দেখেছি । এটি আমাকে অন্তর্দৃষ্টি দিয়েছে, যা আমি অন্য কোথাও পাইনি। হোয়াইট বোর্ড: বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিপথের দিকে তাকালে, কোনটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে বলে আপনি মনে করেন? শেখ হাসিনা: রাজনীতির সঙ্গে নীতিকে যুক্ত করতে হবে। আমার রাজনৈতিক সংগ্রামের কারণে আমি একজন নীতিনির্ধারক। দেশের অগ্রগতির পথে সবচেয়ে বড় বাধা ছিল ১৯৭০-এর ও ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকের সামরিক স্বৈরশাসকরা। সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ ছাড়া আপনি ভালো নীতি গড়ে তুলতে পারবেন না। বিষয়টি হচ্ছে, জনগণের সঠিক প্রতিনিধিত্ব ছাড়া, একটি দেশ কেবল উন্নয়ন করতে পারে না। নীতিতে জনগণের দাবিকে প্রতিফলিত করতে হবে। এটি আমাদের দেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। আমি মৌলিক সাংবিধানিক অধিকার, বিশেষ করে ভোট প্রদানের জন্য আমার প্রচেষ্টাকে উৎসর্গ করেছি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ছিল আমাদের অন্যতম বড় অর্জন। হোয়াইট বোর্ড: একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, আপনার প্রথম দিকের নীতিগত অগ্রাধিকারগুলোর একটি কি ছিল? শেখ হাসিনা: কিছু অর্জন করতে হলে একজন সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীকে নীতিগত অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমার অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে একটি ছিল গৃহহীনতা নির্মূল করা। গৃহহীনতার অনেক কারণ রয়েছে: জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, স্বামী পরিত্যক্তা এবং দারিদ্র্য এমন সব বিষয়। আমার প্রশাসন জনসাধারণকে সরকারি তহবিল থেকে বাড়ি দেওয়ার একটি সহজ নীতির মাধ্যমে এই সমস্যার মোকাবিলা করেছে। অন্য কথায়, আমরা গৃহহীনদের বিনামূল্যে বাড়ি দিয়েছি। আমরা তিন দশক ধরে এই নীতি বাস্তবায়ন করেছি এবং আমাদের কাজ অব্যাহত রয়েছে। যখন কারও নিজস্ব ঠিকানা থাকে, তখন তা তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে। হোয়াইট বোর্ড: আপনার নাম প্রায়শই 'উন্নয়নের রাজনীতি' শব্দটির সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। এই শব্দটির ব্যাখ্যা কী আপনার কাছে? শেখ হাসিনা: আমি আপনাকে একটি সহজ উত্তর দিই। ভালো রাজনীতি ছাড়া ভালো নীতি হতে পারে না। ভালো রাজনীতির জন্য পাকা রাজনীতিবিদ প্রয়োজন। তৃণমূল রাজনীতিবিদরা দেশকে অন্যভাবে বোঝেন, তাদের বাস্তবতা সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা রয়েছে। নীতির দিক দিয়ে উন্নয়ন প্রায়শই শুধুমাত্র অর্থনৈতিক পরিভাষায় বোঝা যায়। কিন্তু আমরা যারা রাজনীতি করি, আমরা দেশকে নিয়ে ভাবি আরও স্বজ্ঞাতভাবে। রাজনীতি ব্যক্তিগত লাভ এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্য হওয়া উচিত নয়, যা আপনি একজন সামরিক স্বৈরশাসক বা বিচ্ছিন্ন অভিজাতদের মধ্যে দেখতে পাবেন। এটি একটি দেশের উন্নয়ন এজেন্ডাকে লাইনচ্যুত করতে পারে। বাংলাদেশে, আপনি পার্থক্য দেখতে পাচ্ছেন। কারণ দেশটি উভয় পদ্ধতির সরকারই দেখেছে। শেখ হাসিনা: ফিরে যাওয়া যাক ১৯৭২ সালে। বাংলাদেশের প্রথম বছর। এটি একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ ছিল। মাথাপিছু আয় ছিল ১০০ ডলারের নিচে। আওয়ামী লীগ ছিল দেশব্যাপী তৃণমূল মানুষের সাথে গভীর যোগাযোগ স্থাপন করা একটি রাজনৈতিক দল। একজন তৃণমূল রাজনীতিবিদ শেখ মুজিবুর রহমান তখন সরকারের দায়িত্ব নেন। তার প্রশাসনকে প্রথম থেকেই শুরু করতে হয়েছিল। তাদের মূলত একটি সার্বভৌম দেশ গড়ে তুলতে হয়েছিল, যা ছিল পূর্বে পাকিস্তানের একটি অবহেলিত প্রদেশ। সমস্ত অবকাঠামো পুনর্গঠন, নতুন প্রতিষ্ঠান গঠন এবং লক্ষ লক্ষ বাস্তুচ্যুত লোককে পুনরায় একত্রিত করার মতো কাজ ছিল তাদের দীর্ঘ করণীয় কর্ম তালিকায়। এখানেই রাজনীতির বিকাশ ঘটেছে। একজন সত্যিকারের জনপ্রতিনিধিই পারে এমন অসম্ভব চ্যালেঞ্জ নিতে। মুজিবের মতো একজন রাজনীতিবিদ যখন এ ধরনের দায়িত্ব পান, তিনি তা ভালোভাবে করতে পারেন। আওয়ামী লীগের মতো নেটওয়ার্ক থাকায় তিনি দ্রুত জনগণের চাহিদা মূল্যায়ন করতে পারতেন। ১৯৭৫ সালে মাত্র তিন বছরের মধ্যে তিনি জনগণের মাথাপিছু আয় ২৫০ ডলারের ওপরে উন্নীত করতে সক্ষম হন। ১৯৭৫ সালে তাঁকে হত্যার পর, পরবর্তী সংবিধান বহির্ভূত সামরিক জান্তা জনগণের জীবনে প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়নি - কারণ এতে তৃণমূল বা সমাজকল্যাণের আদর্শের অন্তর্দৃষ্টি ছিল না। ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত জনগণের আয় মূলত স্থবির ছিল। জনগণের একজন সত্যিকারের প্রতিনিধির একটি দেশের উন্নয়নের অন্তর্দৃষ্টি রয়েছে, যা একজন অভিজাত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী করতে অক্ষম। উন্নয়ন একটি রাজনৈতিক এজেন্ডা। উন্নয়নকে রাজনীতি থেকে আলাদা করা যাবে। হোয়াইট বোর্ড: আমি নিশ্চিত যে আপনি শব্দটি যেভাবে ব্যাখ্যা করেছেন তা নিয়ে সমালোচনা থাকবে—  শেখ হাসিনা: অন্যরা কীভাবে এটি ব্যাখ্যা করেছে তা আমি সত্যিই নিশ্চিত নই। তবে আমি জানতে আগ্রহী। হোয়াইট বোর্ড: আপনি একটি বাজারমুখী নীতি গ্রহণ করেছেন, আবার সমাজতন্ত্রকেও নীতি হিসেবে রেখেছেন, যা আপনার পিতা মুজিব গ্রহণ করেছিলেন। একই সঙ্গে এই দুটি নীতির মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব আছে কি? যদি না থাকে তাহলে আপনি কিভাবে একটি ভারসাম্য অর্জন করতে সক্ষম হলেন? শেখ হাসিনা: মুজিব একজন সামাজিক গণতন্ত্রী ছিলেন, যিনি বাংলাদেশকে সমাজকল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে কল্পনা করেছিলেন। তিনি সমাজতন্ত্রের মাধ্যমে খাদ্য ও বাসস্থানের মতো মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোকে উন্নত করার ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন। তিনি 'কাউকে পিছিয়ে না রাখো' ব্যবস্থায় বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি আরও স্পষ্ট করেছিলেন যে বাংলাদেশ অন্য কোথাও থেকে কোনো ‘মতবাদ’ আমদানি করবে না। অন্য কথায়, আমাদের নিজস্ব মতবাদ অনুসারে সবকিছু পরিচালিত হবে। এই সূক্ষ্ম বিষয়গুলো বোঝার জন্য আপনাকে আমাদের ইতিহাস নিয়ে অনুসন্ধান করতে হবে। ১৯৭২ সালে স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের শিল্পভিত্তি ছিল ধ্বংসস্তূপ। প্রায় সব শিল্পের মালিকানা ছিল পাকিস্তানি শাসক শ্রেণীর, যারা তাদের কার্যক্রম এ দেশ থেকে গুটিয়ে নিয়েছিল। মুজিব প্রশাসন সমস্ত শিল্পকে জাতীয়করণ করে, কারণ সরকার ছিল একমাত্র নিয়ন্ত্রক। এতে দেশে উৎপাদন শুরু হয়েছে এবং অসংখ্য মানুষ চাকরির সংস্থান হয়েছে। এরপরে প্রশাসনও শিল্পগুলোকে বিদেশীকরণ শুরু করে। এই বিষয়টি সমালোচকরা প্রায়শই উপেক্ষা করে। মূলত, সরকারি এবং বেসরকারি উভয় খাতই অর্থনীতিকে চালিত করেছিল। এই পাবলিক-প্রাইভেট ইন্টারপ্লে বাংলাদেশের সংবিধানে নিহিত ছিল, যা তিনটি ধারার অধীনে অর্থনৈতিক মালিকানা নির্ধারণ করে: সরকারি, বেসরকারি এবং সমবায়। এই ট্রাইফেক্টা ফর্মুলাটি দেশের সেই শুরুর দিনগুলোতেই প্রণয়ন করা হয়েছিল। আমার কাছে জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণই ছিল আমার ‘সমাজতন্ত্র’-এর সংস্করণ। জনগণের সেবা করার জন্য দলকে সময় ও বৈশ্বিক বাস্তবতার সঙ্গে পরিবর্তন করতে হয়েছে। এটা করে, আমি বিশ্বাস করি আমি আমার বাবার নির্দেশ অনুসরণ করেছি; আমি কোন দ্বন্দ্ব দেখি না। হোয়াইট বোর্ড: চিন্তাধারার পরিবর্তন কীভাবে এল? শেখ হাসিনা: আসলে, আমরা বিশ্বের বাকি অংশে যা ঘটছে তা উপেক্ষা করতে পারি না। আমি সোশ্যালিস্ট ইন্টারন্যাশনালের ফোরামের এক আলোচনায় যোগ দিয়েছিলাম। এটি বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম এবং সেখানে মিশ্র-অর্থনীতির মডেলের যোগ্যতা নিয়ে অনেক আলোচনা হতো। কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বেসরকারি খাতের ভূমিকা নিয়ে উত্তপ্ত বিতর্ক হয়েছিল এখানে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটি গৃহীত হয়েছিল এবং মনে করা হতো বিষয়টি একটি বড় ভূমিকা পালন করবে। সোশ্যালিস্ট ইন্টারন্যাশনালও আনুষ্ঠানিকভাবে এই অবস্থানকে সমর্থন করেছে। সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ইউরোপের আয়রন কার্টেনও হ্রাস পেতে শুরু করে। এদিকে বাংলাদেশে অর্থনীতি উন্মুক্ত করার বিষয়ে বিতর্ক ছিল। আমরা তখন বিরোধী দলে ছিলাম। আমার মনে আছে যুক্তরাজ্যে আমার এক সফরের সময় সেই সময়ের লেবার পার্টির নেতা নিল কিনকের সাথে এই প্যারাডাইম পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা হাউস অফ কমন্সে ছিলাম এবং সাবেক লেবার পার্টির নেতা এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড উইলসনও আমাদের সাথে যোগ দিয়েছিলেন। হ্যারল্ডের দৃষ্টিভঙ্গি খুব স্পষ্ট ছিল যে, 'এই ৪০ বছরের পুরনো অর্থনৈতিক চিন্তা আর কাজ করবে না।' একই সময়ে, আমি নীতি সংস্কারের পুনর্বিবেচনার জন্য একটি অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কমিটি গঠন করি। এটি আওয়ামী লীগের মধ্যে নীতিগত পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিয়েছে। এজেন্ডা ছিল নতুন যুগের জন্য একটি প্রগতিশীল রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠন করা। এটা সহজ ছিল না, আমাদের অনেক বিতর্ক ছিল। কিন্তু আমরা অবশেষে একটি মিশ্র অর্থনীতি নীতির দিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৯২ সালে একটি উন্মুক্ত অর্থনীতির পদ্ধতি গ্রহণ করি। এ নিয়ে বিতর্ক চলার মধ্যে ৯০ দশকের মাঝামাঝি আমি প্রধানমন্ত্রী হই। এই সময় খুব যথাযথ ছিল। আমরা এরপর দ্রুত আমাদের কিছু ধারণা সরকারি নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছি। হোয়াইট বোর্ড: দলের এই অর্থনৈতিক মূল্যবোধের পুনর্বিন্যাস করার সময় আপনি কি কোনো প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হয়েছেন? শেখ হাসিনা: আমার দলের মধ্যে কিছু মতাদর্শী একটি মিশ্র অর্থনীতি মডেলের তীব্র আপত্তি জানিয়েছিলেন। এটি একটি ধীর প্রক্রিয়া ছিল, মাঝে মাঝে খুব কঠিন। আমাদের অনেক উত্তপ্ত বিতর্ক এবং অভ্যন্তরীণ দলীয় আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু আমি আমার দলের মধ্যে থেকে আমার সংস্কার এজেন্ডার পক্ষে সমর্থন আদায় করতে পেরেছিলাম। জনগণের আয় এবং জীবনযাত্রার মান বাড়াতে আমাদের সর্বোত্তম নীতির প্রয়োজন ছিল। বাংলাদেশ একটি প্রাচীন পদ্ধতিকে কঠোরভাবে আঁকড়ে থাকার মতো অবস্থায় নেই। রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে দূরদর্শী নীতি গ্রহণ করতে হয়। হোয়াইট বোর্ড: অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশ কী শিখতে পারে? শেখ হাসিনা: এটা একটি মজার প্রশ্ন। আপনি বাংলাদেশের ইতিহাস জানলে দেখবেন যে এই দেশের মডেল গড়ে উঠেছে নির্দিষ্ট দেশীয় মূল্যবোধ এবং নীতি ধারাবাহিকতার ওপর ভিত্তি করে। দেশের প্রতিষ্ঠাতা মুজিব একবার বলেছিলেন, ‘আমাদের দেশের শাসন চলবে শুধু আমাদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে।’ অন্য কথায়, বাংলাদেশ অন্য দেশের উন্নয়ন ফর্মুলা আমদানি করতে পারে না। আমাদের নীতি-নির্ধারকদের আমাদের কৌশলগত অবস্থান, আমাদের ভূপ্রকৃতি, আমাদের জনগণের চাহিদা, আমাদের ইতিহাস, আমাদের পরিবেশ এবং আমাদের সম্পদের মতো বিষয়গুলো বুঝতে হবে। উন্নয়নের জন্য বিদেশি পরামর্শ এখানে কখনই কাজ করে না। এর মানে এই নয় যে, আমরা সারা বিশ্বের উন্নয়নে চোখ বন্ধ করে রাখি। বিভিন্ন দেশের ভালো চর্চাগুলো আমাদের প্রয়োজনের জন্য শিখতে হবে। হোয়াইট বোর্ড: আপনারা কোন বিদেশি নীতি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন? শেখ হাসিনা: স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতে দারুণ সামাজিক কল্যাণ ব্যবস্থা রয়েছে। তারা তাদের জনগণের অর্থনৈতিক অধিকার রক্ষার একটি বড় উদাহরণ। পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর দুর্দান্ত পরিবহন অবকাঠামো রয়েছে, যা তারা মেধাসম্পন্ন নীতির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করেছে। স্বাস্থ্যখাতের একটি উদাহরণ দিই। আশির দশকে যখন আমি প্রায়শই যুক্তরাজ্যে যেতাম, আমি লক্ষ্য করেছি যে তাদের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রতিটি পাড়ায় পৌঁছেছে। বাড়ির কাছাকাছি, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে একই ধরনের স্বাস্থ্য নেটওয়ার্ক বিদ্যমান। এই সর্বজনীনভাবে অর্থায়ন করা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সর্বোত্তম প্রাথমিক সেবা প্রদান করে। এগুলোর স্থানীয় চাহিদার জন্যও খুব প্রাসঙ্গিক। তাই, আমি কমিউনিটি ক্লিনিক নীতি গ্রহণ করে বাংলাদেশের জন্য তাদের সিস্টেমগুলোকে গ্রহণ করেছি। মূল ধারণা ছিল সবার কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া। এটিকে টেকসই করার জন্য, স্থানীয়দের মালিকানা প্রদানের মাধ্যমে এই ব্যবস্থাকে একটি পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারিত্ব হিসাবে দাঁড় করানো হয়েছে। স্থানীয়রা জমি দেবে, ফার্মা কোম্পানিগুলি ওষুধ সরবরাহ করবে এবং সরকার পরিষেবাগুলো সহজতর করবে। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলি তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবার একটি নতুন স্তর যুক্ত করেছে, যা সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বোঝা কমিয়েছে। হোয়াইট বোর্ড: বিদেশী অংশীদাররা দুটি প্রধান হাতিয়ার ব্যবহার করে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করেছে: সাহায্য এবং নীতির ব্যবস্থাপত্র। দেশ কি এই নির্ভরতা কাটিয়ে উঠছে? শেখ হাসিনা: বিদেশী নির্ভরতা হ্রাস পেয়েছে এবং এটি আমার প্রশাসনের একটি প্রচেষ্টার কারণেই হয়েছে। এই নির্ভরতার শেকড় অনেক গভীরে ছিল। এই সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে আমাদের প্রথমে মানসিকতার পরিবর্তন করতে হয়েছে। এই প্রচেষ্টায় আপনার নিজেকে সমান হিসাবে দেখা শুরু করতে হবে। এই সমস্যাগুলো যথাযথ সমাধান করা প্রয়োজন। রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং অর্থ এখানে একটি বড় ভূমিকা পালন করে। যখন অন্যান্য সরকার উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বাজেট প্রণয়ন করত, তখন সিংহভাগই বিদেশি অর্থায়ন থেকে আসতো। তাদের আর্থিক নীতি ছিল মূলত 'দাতা-নির্ভর’। সর্বোপরি, জনসাধারণের ব্যয়ের ক্ষমতা ছিল নগণ্য। আমি বিদেশি ধার করা অর্থ প্রত্যাখ্যান করে এই নীতিটি উল্টে দিয়েছি। আমার প্রশাসন আমাদের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ ত্বরান্বিত করেছে। অন্তত টাকা আমাদের নিজেদের সীমানার মধ্যে সঞ্চালিত হবে। দীর্ঘমেয়াদী এই নীতির ফল এসেছে। এখন আপনি দেখতে পাবেন যে আমাদের সরকারি ব্যয়ের সিংহভাগ আসে আমাদের নিজস্ব দেশীয় সম্পদ থেকে। হোয়াইট বোর্ড: উন্নয়ন সহযোগীদের দ্বারা নির্ধারিত নীতি এবং প্রকল্প সম্পর্কে কী বলবেন? শেখ হাসিনা: যখন আন্তর্জাতিক পরামর্শদাতারা আমাদের কাছে বড় প্রকল্প নিয়ে আসে, তখন মূলত অর্থই আমরা তাদেরকে দেই। অনেক বাংলাদেশি নীতি-নির্ধারক কঠিন প্রশ্ন উত্থাপন না করেই তারা যা বিক্রি করছেন তা দ্রুত কিনতে চায়। কনসালটেন্সি ফি কেমন? প্রকল্পের বিনিয়োগের আয় কি? এতে কার উপকার হবে? এসব বিষয় ভাবতে হবে। আমাদের বেপরোয়াভাবে ধার করা এবং করের বোঝা বাড়ানো উচিত নয়। তবে কিছু বিদেশি আমাদের এটি করতে বলেছে। বড় বড় প্রকল্প প্রত্যাখ্যান করার জন্য আমি সুপরিচিত! উপযুক্ত মনে করলে নীতি-নির্ধারকদের অর্থ ব্যবহার করা উচিত। আপনার প্রয়োজন না হলে ঋণ নেবেন না। আপনি যদি অলাভজনক প্রকল্পের জন্য অর্থ নেন তবে এটি কেবল ঋণের বোঝা তৈরি করবে। আমাদের এখন নীতি-নির্ধারকরা আর সহজে বিদেশিদের প্রণীত প্রকল্পে প্রভাবিত হন না। এই আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে সময় এবং প্রচেষ্টা লাগে। এখন বাংলাদেশিরা বিশেষ করে সরকারি সহায়তায়, সারা বিশ্ব থেকে সেরা প্রশিক্ষণ পাচ্ছে। অনেকেই সেরা জায়গা থেকে পিএইচডি করছেন। এটি বাংলাদেশের মধ্যে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য আমাদের সুচিন্তিত নীতির প্রভাব। আমরা আমাদের দেশের মধ্যে একটি দক্ষ জনবল তৈরি করব। তাহলে নীতি বা প্রকল্প প্রণয়নের জন্য আমাদের আর বিদেশে যেতে হবে না। নীতি প্রণয়ন চিরকাল বিদেশি পরামর্শকদের ওপর নির্ভরশীল হতে পারে না। বাংলাদেশের নিজস্ব নীতি প্রণয়নের ক্ষমতা আছে। এটা আমার সহজ কথা, আমাদের দেশ আমাদের নীতি। হোয়াইট বোর্ড: বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নীতিনির্ধারকদের আপনি কী পরামর্শ দেবেন? শেখ হাসিনা: তাদের জন্য, আমি আমার প্রশাসনের নীতির নকশা শেয়ার করতে পারি। শুরুতে, আমরা প্রয়োজন বিশ্লেষণ করি; তারপর, আমরা তিনটি টাইমলাইনে নীতিগুলি তৈরি করি: বর্তমান, মধ্য-মেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী৷ ২০০৭ সালে যখন সামরিক নিয়ন্ত্রিত সরকার আমাকে গ্রেফতার করেছিল, তখন আমি বাংলাদেশের পরবর্তী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য কারাগারের সময়কে কাজে লাগাই। আমি সাক্ষরতা, পুষ্টি, আয় এবং স্বাস্থ্যসেবার মতো সূচকগুলোতে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার কাঠামো আমার কারাবাসের সময় তৈরি করা হয়। ২০০৯ সালে যখন আমার প্রশাসন দায়িত্ব নেয়, তখন আমরা বিভিন্ন সময়ের জন্য পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছিলাম। ১২ বছরের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাকে আমরা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বলে থাকি। এটি স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনার জন্য একটি ভবিষ্যৎ-বাউন্ড রেফারেন্স টুল হিসাবে কাজ করে। এই নীতির নকশা কৌশল পরীক্ষা করা হয়েছিল কারণ আমার প্রশাসন ১২ বছর ক্ষমতায় ছিল। ২০২১ সালের মধ্যে এই নীতি নকশা বাংলাদেশের জন্য সফল ফলাফল এনেছিল। ওই বার প্রথমবারের মতো, একটি দীর্ঘমেয়াদী এজেন্ডা দেশে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হয়েছিল। হোয়াইট বোর্ড: আপনি কি মনে করেন যে ভবিষ্যতের নীতি-নির্ধারকদের আপনার দীর্ঘমেয়াদী নীতি অনুসরণ করা উচিত? শেখ হাসিনা: আসলে তা না। কিন্তু তাদের বোঝা উচিত কৌশলগত নীতি নির্ধারণের ফলে বাংলাদেশ এগিয়েছে। এর অগ্রগতি কোন অলৌকিক ঘটনা নয়। নীতি গবেষণা দ্বারা তৈরি একটি সূত্র রয়েছে যা স্থানীয় জ্ঞান, নমনীয়তা, একটি প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাকে একত্রিত করে। ভবিষ্যৎ নীতি-নির্ধারকরা যদি সূত্রটি বোঝেন এবং নতুন বাস্তবতার জন্য পরিকল্পনাগুলোকে নতুন করে সাজান তাহলে তারা বাংলাদেশকে একটি উন্নত অর্থনীতিতে পরিণত করতে পারবেন। আমি তাদের কঠোর না হওয়ার পরামর্শ দেব। হোয়াইট বোর্ড: আগামী ৫০ বছরে বাংলাদেশের প্রধান নীতিনির্ধারণী ও আদর্শিক চ্যালেঞ্জগুলো কোথায় দেখছেন? শেখ হাসিনা: পরিবর্তনই একমাত্র জিনিস যা অনুমানযোগ্য। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, দর্শন - সবকিছু বদলে যায়। আমি সত্যিই সংঘাতের পূর্বাভাস দিতে পারি না তবে আমি জানি যে সংকট অবশ্যই আসবে। আমাদের দূরদর্শিতা দিয়েই আমরা নীতি প্রণয়ন করতে পারি। কোভিড-১৯ মহামারী এবং ইউক্রেন যুদ্ধের নিষেধাজ্ঞার আমার মেয়াদে অপ্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জের বড় উদাহরণ। আদর্শগত কারণে এটি আসতে পারে তবে প্রভাব পরিমাপ করা কঠিন। চরমপন্থী কট্টরপন্থী এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করতে পারে। এছাড়াও, যাদের কোনো সুনির্দিষ্ট আদর্শ নেই, তারা ক্ষমতায় এলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে। এটা আমাকে মাঝে মাঝে উদ্বিগ্ন করে। উদারপন্থী মতাদর্শের লোকেরা যদি বাংলাদেশকে শাসন করে, তবে তারা অবশ্যই দেশের অগ্রগতি ফিরিয়ে দেবে। এটা অনেক দেশেই হয়েছে। হোয়াইট বোর্ড: বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে, আপনি কি আগামী বছরগুলোতে সরকারের ভূমিকা সঙ্কুচিত বা সম্প্রসারিত হতে দেখছেন? শেখ হাসিনা: আমি দেখছি সরকারের ভূমিকা শক্তিশালী। এটা সঙ্কুচিত হবে না। আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিশ্বাস করি, কিন্তু আমি এটাও বিশ্বাস করি যে সরকারের এখনও সব সেক্টরে প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে। সাক্ষাৎকারটি বাংলায় অনুবাদ করেছে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন- সিআরআই 
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

ব্যাংকের এমডিদের সাক্ষাৎকার নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৪ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগ ও পুনঃনিয়োগের পূর্বে যোগ্যতা ও উপযুক্ততা মূল্যায়নের জন্য একটি কমিটি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই কমিটির সদস্য সংখ্যা হবে চারজন। কমিটির সভাপতি ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি গভর্নর, সদস্য ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক, ডিপার্টমেন্ট অব অফসাইট সুপারভিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক এবং সদস্য সচিব হিসেবে থাকবেন ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ, ডিভিশন-২ এর পরিচালক। রোববার (৩ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ব্যাংকের সার্বিক অবস্থা ও বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণপূর্বক ঋণ শৃঙ্খলা, উন্নতি, উৎকর্ষতা, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন সর্বোপরি আমানতকারীদের আস্থা এবং গ্রাহক সেবা বৃদ্ধিতে তার কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অবহিত হওয়া আবশ্যক। তাই ব্যাংকের এমডি হিসেবে মনোনীত ব্যক্তির যোগ্যতা, উপযুক্ততা, দায়িত্বের প্রতি অঙ্গীকার, অভিজ্ঞতা, বয়স ও নেতৃত্বের গুণাবলির বিষয়াদি যাচাইয়ের লক্ষ্যে ৪ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির কর্ম পরিধি- ব্যাংকের এমডি হিসেবে মনোনীত ব্যক্তির সাক্ষাৎকার গ্রহণের লক্ষ্যে কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ, সময় ও স্থানে তাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ব্যাংকের চেয়ারম্যান বরাবর পত্র প্রেরণ। প্রার্থীর দায়িত্বের প্রতি অঙ্গীকার, অভিজ্ঞতা, কর্মদক্ষতা, বয়স ও নেতৃত্বের গুণাবলির বিষয়াদি যাচাই। মনোনীত ব্যক্তি/ব্যক্তিগণ পূর্বে কোনো ব্যবস্থাপনা পরিচালক/প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে অধিষ্ঠিত থাকলে তার সে সময়ের কর্মদক্ষতা মূল্যায়ন। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সার্বিক অবস্থা ও বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণপূর্বক ঋণ শৃঙ্খলা, উন্নতি, উৎকর্ষতা, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন সর্বোপরি আমানতকারীদের আস্থা এবং গ্রাহক সেবা বৃদ্ধিতে মনোনীত ব্যক্তি কীভাবে অবদান রাখবেন সে সম্পর্কে তার নিজের স্বাক্ষরিত কর্মপরিকল্পনার মূল্যায়ন। ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগের বিষয়ে উক্ত কমিটির ইতিবাচক সুপারিশের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক তার নিযুক্তি বা পুনঃনিযুক্তির অনুমোদন প্রদান করবে। মনোনীত ব্যক্তির যোগ্যতা, উপযুক্ততা, দায়িত্বের প্রতি অঙ্গীকার, অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বের গুণাবলির বিষয় কমিটির নিকট ইতিবাচক ও গ্রহণযোগ্য মর্মে বিবেচিত না হলে নিয়োগের অনুমোদন না দেওয়ার কারণ লিপিবদ্ধ করে পত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হবে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অবগতি ও প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণার্থে এ প্রজ্ঞাপন জারির অব্যবহিত পরবর্তী পরিচালনা পর্ষদের সভায় প্রজ্ঞাপনের বিষয়বস্তু নিয়ে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কার্যপত্র উপস্থাপন করতে হবে। ওই সার্কুলারটি ব্যাংকের সকল কর্মকর্তার নজরে আনয়নের ব্যবস্থা করতে হবে।  
০৩ মার্চ, ২০২৪

সাক্ষাৎকার বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া
আজ মঙ্গলবার বিশ্ব বেতার দিবস। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘শতাব্দী জুড়ে তথ্য, বিনোদন ও শিক্ষা বিস্তারে বেতার’ প্রতিপাদ্যে দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে কালবেলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ বেতারের অতীত ঐতিহ্য, বর্তমান কর্মকাণ্ড ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন দেশের প্রাচীনতম এই গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রীতা ভৌমিক কালবেলা: বেতার বাংলাদেশের একটি সুপ্রাচীন গণমাধ্যম। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বেতারের কর্মপদ্ধতি ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাই। রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া: বাংলাদেশ বেতার দেশের সর্ববৃহৎ একটি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। তিনটি মৌলিক উদ্দেশ্য নিয়ে বেতারের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এক. জনগণকে তথ্য সেবা প্রদান ও উপযুক্ত তথ্য সরবরাহ করা, দুই. শিক্ষা বিস্তারের ভূমিকা এবং তিন. বিনোদনমূলক। বাংলাদেশ বেতার যেভাবে অনুষ্ঠান পরিকল্পনা করে, এর মৌলিকত্ব হলো প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষকে যাতে এই সেবাগুলো দেওয়া যায়। এ ছাড়া চলতি সময়ের তথ্য, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি বিষয়—যা সরকার গুরুত্ব দেয়, এসডিজি, প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগ, মেগা প্রকল্প ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্য তুলে ধরা। এসব তথ্য সাধারণ মানুষের কাছে থাকে না। সবার দৈনিক পত্রিকা কিনে পড়া, টেলিভিশন দেখা সম্ভব হয়ে ওঠে না। সবার পক্ষে ফেসবুক দেখা সম্ভব নয়। কিন্তু একটি নিখুঁত সত্য তথ্যবিবরণী মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সর্বাত্মক মাধ্যম হচ্ছে বেতার। এ কাজটি বাংলাদেশ বেতার গুরুত্ব সহকারে করছে। কালবেলা: একসময় রেডিও যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল। এখন যোগাযোগের অনেক মাধ্যম এসেছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয় কী? রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া: একটা সময় বেতার ছিল যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। এটি ছাড়া মানুষের যোগাযোগের দ্বিতীয় কোনো মাধ্যম ছিল না। সময়ের বিবর্তনে পত্রিকা এসেছে। সেটা প্রিন্ট ও অনলাইন দুই ভার্সনেই এসেছে। এক সময় শুধু বাংলাদেশ টেলিভিশন ছিল। এখন অনেক বেসরকারি টেলিভিশন চলে এসেছে। একসময় ইউটিউব ছিল না। এখন ইউটিউব এসেছে। ফেসবুক ছিল না, ফেসবুক চলে এসেছে। এই যে, মাল্টি ডাইমেনশনাল প্ল্যাটফর্মগুলো যুক্ত হওয়ায় অডিও প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রতি মানুষের আগ্রহ কতটা থাকছে। আমরা মনে করি, এটাও একটা চ্যালেঞ্জ। কারণ প্রযুক্তি যেভাবে বিকশিত ও বিবর্তিত হচ্ছে, বেতার যদি সেই নিউ টেকনোলজি, নিউ মিডিয়ার সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে না পারে, খুব স্বাভাবিকভাবেই সেটার গ্রহণযোগ্যতা কমে আসবে। আমরা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কিছু নিউ মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছি। যেমন বাংলাদেশ বেতারের ফেসবুক পেজ, ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। এর বাইরে ব্রডকাস্টিংয়ের জন্য একটি পরিকল্পনা নিয়েছি। ব্রডকাস্টিংয়ের যে মৌলিক ধরনগুলো রয়েছে, ব্রডকাস্ট মানে ব্যাটে বল লাগলে শ্রোতা শুনতে পারলেন। কোনো কারণে সেটা মিস করে গেলে পরবর্তীকালে এটা আর শোনার সুযোগ থাকে না। ব্রডকাস্টিং করা হলে যে কোনো সময় বাংলাদেশ বেতার সার্চ করে পুরো বিষয় খুঁজে বের করা যাবে। কালবেলা: কবে নাগাদ এর বাস্তবায়ন হতে পারে? রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া: মাত্র দু মাস হলো এখানে যোগদান করেছি। এখন আমরা প্রোগ্রামগুলো ডিজাইন করছি। একটু হয়তো সময় লাগবে। এতে পুরো টেকনোজিক্যাল পরিবর্তন হবে। তবে আমরা দ্রুত শুরু করতে যাচ্ছি। আর্কাইভিংয়ের একটি বিষয় রয়েছে। সেটাও আমরা শুরু করতে যাচ্ছি। আরেকটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছি, জনগণের চাহিদাকে বিশ্লেষণ করে প্রোগ্রাম তৈরি করা। শ্রোতা কোন ধরনের অনুষ্ঠান চায়, তা জানা দরকার। এই চাহিদাগুলো জানার জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দিয়েছি। ফিডব্যাক পাওয়ার পর আমাদের অনুষ্ঠানগুলো সে অনুযায়ী সাজানো হবে। কালবেলা: বাংলাদেশ বেতারের জনপ্রিয়তা ফিরিয়ে আনতে আর কী ধরনের পদক্ষেপের কথা ভাবছেন? রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া: বেতারকে যদি আরেকটু জনগণের কাছাকাছি যেতে হয়, সেক্ষেত্রে প্রথম যে কাজটি করা দরকার, তা হলো বেতারকে যেতে হবে জনগণের কাছে। এখন বেতার ব্রডকাস্ট করছে। শ্রোতার শোনার হলে শুনবে নইলে আর শোনার উপায় নেই। আমরা যাচ্ছি, বেতার যেন জনগণের কাছে বহিরাঙ্গন কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষকে সম্পৃক্ত করে। যেমন কৃষিবিষয়ক অনুষ্ঠানটি মাঠে কৃষকের সামনে গিয়ে করা যায়। স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠানগুলো হাসপাতালে গিয়ে রোগী, চিকিৎসক যারা সেবা দিচ্ছেন তাদের কথাগুলো সরাসরি চলে আসা। শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানগুলো যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে করা যায়। সেখানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক থাকবে। তখন জনগণের মনে একটা ওনারশিপ ডেভেলপমেন্ট করবে। এ মাধ্যমটি আমার কথা শোনার জন্য এসেছে। এই দিক থেকে আমরা এখন বটম অ্যাপ্রোচ নিয়ে বেতারকে সাজাতে চাচ্ছি। এ ছাড়া বেতারের ক্ষেত্রে এফএম হচ্ছে বিশ্বে সবচেয়ে কার্যকর উপায়। আমরা এফএম নেটওয়ার্ক বাড়ানোর চেষ্টা করছি। সেটা করা গেলে বেতারের জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা ও প্রবেশগম্যতা—তিনটিই বাড়বে। কালবেলা: বাংলাদেশ কৃষিভিত্তিক দেশ। অতীতে বেতারের মাধ্যমে কৃষকরা অনেক তথ্য পেতেন। বর্তমানে তারা নানা মাধ্যম থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য পাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে বেতার কীভাবে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে? রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া : একটি জুতসই প্রশ্ন করেছেন। আমি কৃষি মন্ত্রণালয়ে থাকাকালে সম্প্রসারণ উইং দেখতাম। দেশজুড়ে এর নেটওয়ার্ক রয়েছে। বেতারে এখন যে প্রক্রিয়ায় কৃষিবিষয়ক অনুষ্ঠানগুলো হচ্ছে, বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এসে কিছু বিষয়বস্তুর ওপর তাদের রেকর্ড করা বক্তব্যগুলো প্রচার করা হচ্ছে। আমরা একটি পরিকল্পনা করেছি, বেতার যদি সরাসরি মাঠে যায়, সেক্ষেত্রে ধরা যেতে পারে, মাঠের এক অংশে একটি পেঁয়াজের ক্ষেত রয়েছে, কিছু অংশে মরিচ আছে, কিছু অংশে আলু আছে, কিছু অংশে আবার বোরো ধান রয়েছে। আমরা এক বা একাধিক বিশেষজ্ঞকে সেখানে নিয়ে যাবো। বহুমাত্রিক কৃষির চাহিদা যেমন, মরিচগাছের পাতা কুঁকড়ে গেলে করণীয় কী কিংবা পেঁয়াজের আকার বড় করার জন্য কী ধরনের জৈব সার ব্যবহার করা দরকার— আমরা তখন এমন অনেক প্রশ্নের সমাধান দিতে পারব। স্টুডিওতে না রেখে বিশেষজ্ঞকে যদি সরাসরি মাঠে নিয়ে যাওয়া যায় তাহলে কৃষক তার পছন্দমতো সেবাটা তাৎক্ষণিক পাবেন। আবার কৃষক ধরে নেবেন, বেতার এখন আমার। কারণ বেতার আমার কাছেই আসছে। আরেকটা কাজও আমরা করছি, বেতারের জন্য একটা শর্ট কোড নিতে চাই। যেমন অনেক প্রতিষ্ঠানে ৩৩৩, ৯৯৯ রয়েছে। বেতারের শর্ট কোড ব্যবহার করে সরাসরি ফোনে যোগাযোগ করতে পারবেন শ্রোতারা। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ বিভিন্ন বিষয়ে লাইভে শ্রোতারা বিশেষজ্ঞদের মতামতগুলো পাবেন। এটাও আমরা পরিকল্পনায় নিয়েছি। কালবেলা: বিশ্ব বেতার দিবস ঘিরে আপনাদের কী ধরনের উদ্যোগ রয়েছে? রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া: বিশ্ব বেতার দিবস ২০২৪-এ ইউনেস্কোর এবারের প্রতিপাদ্য ‘শতাব্দী জুড়ে তথ্য, বিনোদন ও শিক্ষা বিস্তারে বেতার’। এখানে তারা তিনটি মৌলিক শব্দ ব্যবহার করেছে, দ্রুত ও বস্তুনিষ্ঠভাবে তথ্য তুলে ধরে মানুষকে শিক্ষা ও বিনোদন দেওয়া। এই দিবস উপলক্ষে আমরা সারা বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক হাজার শ্রোতাকে ঢাকা নিয়ে আসব। বেতার কর্মীদের সঙ্গে শিল্পী-কলাকুশলী, কর্মকর্তাদের সঙ্গে শ্রোতাদের একটি সম্মেলন ঘটিয়ে দেওয়া। মেলবন্ধন তৈরি করা। এটি একটি বড় মাইলস্টোন হিসেবে কাজ করবে। এ ছাড়া এদিন মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকবে। বাংলাদেশ বেতারের যে ১৪টি আঞ্চলিক কেন্দ্র থেকে কিছু ভালো মানের শিল্পীদের ঢাকায় পারফর্ম করার জন্য নিয়ে আসব। তারাও জানবেন বেতার তাদের মূল্যায়ন করছে।
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

সংরক্ষিত আসনের জন্য সাক্ষাৎকার নেবে আ.লীগ, তারিখ ঘোষণা
জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের জন্য সাক্ষাৎকার নেবে আওয়ামী লীগ। আগামী বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) গণভবনে এ সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করে আওয়ামী লীগ। ওইদিন সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফরম বিক্রি শুরু হয়। সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন চেয়ে দলীয় ফরম কিনেছেন এক হাজার ৫৪৯ জন নারী। মোট সাত কোটি ৭৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে দলটি।
১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

যে কারণে মার্কিন সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দেন পুতিন
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাধারণত কোনো মার্কিন সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দেন না। কিন্তু সম্প্রতি টাকার কার্লসন নামে এক মার্কিন সাংবাদিককে তিনি একটি সাক্ষাৎকার দেন, যা নিয়ে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় পুতিনের সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়। সাক্ষাৎকারটি বৃহস্পতিবার টাকারকার্লসন ডটকমে প্রচারিত হয়। খবর বিবিসির। প্রায় দুই বছর আগে ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর এই প্রথম কোনো মার্কিন সাংবাদিককে পুতিন সাক্ষাৎকার দিলেন। দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সাক্ষাৎকারে পুতিন রুশ ভাষায় কথা বলেন। তার বক্তব্য ইংরেজিতে ভাষান্তর করে দেওয়া হয়। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পুতিন এ কারণে কার্লসনকে সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হয়েছেন যে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে অনেক পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের একপেশে প্রতিবেদন থেকে ফক্স নিউজের সাবেক এই উপস্থাপকের (হোস্ট) দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন। কার্লসনের সঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে বলে মনে করা হয়। আগামী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প। অন্যদিকে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করছে। সাক্ষাৎকারে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, পোল্যান্ড বা লাটভিয়া আক্রমণে রাশিয়ার কোনো আগ্রহ নেই। রাশিয়া তার স্বার্থের জন্য লড়াই করবে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধকে পোল্যান্ড ও লাটভিয়ার মতো অন্য দেশে টেনে নেওয়ার কোনো আগ্রহ রাশিয়ার নেই। পুতিনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য পোল্যান্ডে রুশ সেনা পাঠানোর মতো কোনো দৃশ্য তিনি কল্পনা করতে পারেন কি না। জবাবে পুতিন বলেন, শুধু একটি ক্ষেত্রেই তেমনটা হতে পারে, যদি পোল্যান্ড রাশিয়া আক্রমণ করে। পোল্যান্ড, লাটভিয়া বা অন্য কোথাও রাশিয়ার কোনো আগ্রহ নেই। পুতিন বলেন, ‘কেন আমাদের তা (আক্রমণ) করতে হবে? আমাদের কোনো আগ্রহ নেই।’ ইউক্রেন, পোল্যান্ডসহ অন্য দেশের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক নিয়ে দীর্ঘ মন্তব্য দিয়ে পুতিন তার সাক্ষাৎকার শুরু করেন।
১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে ডিপ্লোম্যাটে আলী রীয়াজের সাক্ষাৎকার
বাংলাদেশে সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচন ও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে ড. আলী রীয়াজের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে দ্য ডিপ্লোম্যাট। আলী রীয়াজ যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর, আটলান্টিক কাউন্সিলের অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো এবং আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট। ড. রিয়াজ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত। তার গবেষণা ও প্রকাশনার ক্ষেত্র হচ্ছে গণতন্ত্র, সহিংস উগ্রবাদ, ধর্ম ও রাজনীতি এবং দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে দ্য ডিপ্লোম্যাটে প্রকাশিত তার সাক্ষাৎকারটি ভাষান্তর করে কালবেলায় তুলে ধরা হলো -   বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধান বিরোধীদলসহ তাদের সমমনা দলগুলোর নির্বাচন বয়কটের মধ্যেই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আবারও ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে টানা চতুর্থবারের মেয়াদে ক্ষমতায় বসেছে দলটি। নির্বাচনের আগে থেকেই বিরোধীদলের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার রাখা হয়েছে। নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি ছিল খুবই কম যা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। অনেক বিশ্লেষকের দৃষ্টিতে বাংলাদেশ একদলীয় শাসনের দিকে এগিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে বাংলাদেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ কোন দিকে যাচ্ছে?  আমি মনে করি বাংলাদেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ লেখা হয়ে যায়নি। বরং তা এখনও লেখা হচ্ছে : বিরোধীরা যদি বুঝতে পারে, দেশ একদলীয় শাসনের যুগে প্রবেশ করছে, তাহলে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এর মোকাবিলা করার চেষ্টা করতে পারে। তারা ভাবতে পারে, রাজনীতির বর্তমান গতিপথই তাদের নিয়তি নয়।  জনসাধারণের কথা বলার এবং প্রতিক্রিয়া জানানোর সুযোগ অনেকাংশে কমিয়ে ফেলা হয়েছে। যদিও ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় নাগরিকরা অসন্তোষ ও হতাশা প্রকাশ করছে, তবুও এখন পর্যন্ত কোনো জনরোষ দেখা যায়নি। বিরোধীদলের অংশগ্রহণবিহীন এবং কম ভোটার উপস্থিতির নির্বাচনের পরেও জনগণের কাছ থেকে শক্তিশালী কোনো প্রতিক্রিয়া না আসার জন্য মোটামুটি ৩টি কারণকে দায়ী করা যেতে পারে।  প্রথমত, নির্বাচন এমন হবে সেটি অপ্রত্যাশিত ছিল না। ২৮ অক্টোবর থেকে, ঘটনার প্রবাহ জনসাধারণের কাছে স্পষ্ট ধারণা দিয়েছে, নির্বাচন এমনই হবে। আর একারণে মানুষ নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। দ্বিতীয়ত, নির্যাতিত হওয়ার ভয়। ভয়ের সংস্কৃতি সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে এবং আমরা নিপীড়নের প্রকৃতি প্রত্যক্ষও করেছি। এসবই একটি স্পষ্ট বার্তা পাঠিয়েছে। তৃতীয়ত, বিরোধীদলগুলোর মধ্যে ঐক্যের অনুপস্থিতি। ১৬টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করলেও তারা একক মঞ্চে আসতে ব্যর্থ হয়েছে। একইভাবে, জনসাধারণ মনে করেন- এমন একজন ক্যারিশম্যাটিক নেতা নেই যিনি সবাইকে একত্রিত করতে পারেন। ভারত, চীন এবং রাশিয়ারর প্রতিক্রিয়া আগে থেকেই অনুমানযোগ্য ছিল। তারা শেখ হাসিনার বিজয়কে স্বাগত জানান। এদের মধ্যে, চীনের বিবৃতি ছিল সবচেয়ে জোরাল। তারা ‘চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারত্বকে’ একটি নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।  পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া মৃদু সমালোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ তাদের মধ্যে যারা সবচেয়ে জোরাল মনোভাব প্রকাশ করেছে, তারা নির্বাচনকে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নয়’ বলে বিবৃতি দিয়েছে। তবে তার বিবৃতিতে একটি অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে কাজ করার প্রতিশ্রুতির কথাও বলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।  যুক্তরাজ্য জোর দিয়ে বলেছে, এই নির্বাচন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মৌলিক উপাদানগুলো পূরণ করেনি। নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য, উন্মুক্ত এবং ন্যায্য প্রতিযোগিতার ছিল না। কানাডা হতাশা প্রকাশ করে বলেছে, এই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় গণতন্ত্রের নীতির ঘাটতি হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের কাছ থেকে তীব্র নিন্দা এসেছে, তিনি বিরোধীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা, প্রচারণার সময় এবং নির্বাচনের দিনে আইন লঙ্ঘন ও অনিয়মের ঘটনাগুলো স্বাধীন ও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়াও ‘সব বাংলাদেশির ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।  চীনের বিবৃতিটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। বিবৃতিটি কেবল অভিনন্দন বাক্য বা একটি সাধারণ অভিনন্দন বার্তা ছিল না। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় এবং বহিরাগত হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করতে চীন বাংলাদেশকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করবে।’ বিবৃতিটি চীনের পূর্বের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করে। অবশ্য বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের অবক্ষয়ের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশগুলোর মনোযোগও স্পষ্ট। তবে পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশগুলো আবারও গণতন্ত্রের চেয়ে আঞ্চলিক স্বার্থের কথা চিন্তা করছে বলে মনে হচ্ছে যা চীনের আরও উত্থানকে সহজতর করবে।  আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোর কার্যত কোনো ভূমিকা ছিল না। বিগত নির্বাচনে এই দলগুলোর জনপ্রিয়তা কেমন ছিল সেই হিসেবে দেখলে এবারের নির্বাচনে তাদের ভূমিকা কেমন হবে সেটা আগে থেকেই অনুমানযোগ্য ছিল। নির্বাচনে ছিল ৪টি নতুন দল যারা আগে কখনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। নির্বাচনে অংশ নেওয়া ২০ টি দল ২০১৮ সালের নির্বাচনে ১ শতাংশেরও কম ভোট পেয়েছিল।  এই দলগুলো সরকারের কাছে আসন ভাগ করার জন্য অনুরোধ করেছিল। পূর্বের নির্বাচনগুলোতে আসন ভাগের ভিত্তিতে তাদের মধ্যে অনেকেই সংসদ সদস্য হয়েছিল। সরকার এই দলগুলোকে নির্বাচনে যোগদানের জন্য প্ররোচিত করেছিল। একবার এই দলগুলো মনোনয়ন জমা দিলে তারা শাসনের জন্য অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। এখন এসব দল ও তাদের নেতাদের কেউ কেউ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করে কান্নাকাটি করছে।  নিঃসন্দেহে আগামী দিনে বিএনপি কঠিন সময়ের মুখোমুখি হবে। কিন্তু তারা সংসদের বাইরে থাকবে বলে নয়; দলটি ২০১৪ সালের পর সংসদের বাইরে ছিল এবং গত সংসদে তাদের মাত্র সাতজন সদস্য ছিল। বিএনপির ভবিষ্যৎ কঠিন হতে চলেছে, একারণেও নয় যে তাদের জনসমর্থন নেই। প্রকৃতপক্ষে ২০২২ সালের গ্রীষ্ম থেকে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশগুলোতে ব্যাপক সংখ্যক মানুষ অংশগ্রহণ করেছে এবং এই জনসমর্থন ক্রমবর্ধমান বলে দেখা গিয়েছিল। বিএনপিকে ভাঙার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও দলটি ঐক্যবদ্ধ ছিল। অন্যান্য বিরোধীদলগুলোর সঙ্গে বিএনপির ঐক্যবদ্ধ আহ্বান জনগণের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। এসব ক্ষেত্রে বিএনপির অবস্থান প্রমাণিত হয়েছে।  কিন্তু দলের নেতাকর্মীদের দুর্দশা আরও বাড়বে কারণ তারা শাসকদের কঠোর পদক্ষেপের সম্মুখীন হতে পারে। কোন তথ্য প্রমাণ ছাড়াই ‘অদৃশ্য মামলা’, কয়েক বছরের পুরোনো অভিযোগসংক্রান্ত হয়রানি চলতেই থাকবে। অনেককে দোষী সাব্যস্ত করা হবে যেমনটা আমরা নির্বাচনের আগে দেখেছি।   এক অর্থে বিএনপির ভবিষ্যৎ দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটের সঙ্গে অন্তর্নিহিতভাবে জড়িত। নিপীড়নের মাধ্যমে দলটিকে নিষিদ্ধ বা আন্ডারগ্রাউন্ডে ঠেলে দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। তবে নির্বাচনই বাংলাদেশের রাজনীতির শেষ নয়। বিরোধীরা যদি উপলব্ধি করতে পারে, দেশ একদলীয় শাসনের যুগে প্রবেশ করছে, তাহলে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এর মোকাবিলা করার চেষ্টা করতে পারে। তারা ভাবতে পারে, রাজনীতির বর্তমান গতিপথই তাদের নিয়তি নয়। সব প্রতিকূলতা ও ত্রুটি-বিচ্যুতি সত্ত্বেও সেই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আপাতদৃষ্টিতে বিএনপিই সবচেয়ে শক্তিশালী দল।  আলী রীয়াজ : যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর, আটলান্টিক কাউন্সিলের অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো এবং আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট 
০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

সাক্ষাৎকার ভাইরাল হওয়ায় বিপাকে কৃতি
বলিউড অভিনেত্রী কৃতি শ্যানন। অনলাইনে অর্থ লেনদেনে জড়িত প্রতিষ্ঠানের প্রচার করেছেন এমন কয়েকটি সংবাদ প্রকাশ পাওয়ার পর চটেছেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি সাক্ষাৎকার কয়েক দিন ধরেই ভাইরাল হয়েছে তার। তাকে নিয়ে নাকি ছাপা হয়েছে বেশ কিছু ‘ভুয়া খবর’ এমনটাই দাবি কৃতির। এমনকি সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন এমনটা জানিয়েছেন এ অভিনেত্রী। আনন্দবাজার অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, গত কয়েক দিন ধরেই কানাঘোষা শোনা যাচ্ছিল, ‘কফি উইথ করণ’-এর চলতি তথা অষ্টম সিজনে এসে নাকি একাধিক ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মের প্রচার করেছেন কৃতি। এমন খবর প্রচার হওয়ার পরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাতায় নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে সব প্রশ্নের উত্তর দেন অভিনেত্রী। কৃতি লিখেন- ‘আমার বিষয়ে একাধিক জায়গায় খবর ছাপা হয়েছে যে, আমি নাকি ‘কফি উইথ করণ’-এ গিয়ে ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মের প্রচার করেছি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা খবর। এ খবরগুলো ছাপার পেছনে কোনো অসৎ উদ্দেশ্যই কাজ করছে। আমি এমন কোনো কাজ করিনি। আমি সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটগুলোকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছি এবং উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ধরনের ভুয়া খবর থেকে সামলে থাকুন।’ ‘কফি উইথ করণ’-এর চলতি সিজনের বলিউড অভিনেত্রী জাহ্নবী কাপুরের সঙ্গে অতিথি হিসেবে আসার কথা কৃতির। যদিও ওই পর্ব নিয়ে ইতোমধ্যেই এত জলঘোলা হওয়ায় এ নিয়ে এখনো পর্যন্ত মুখ খোলেননি কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরে সেরা অভিনেত্রী হিসেবে ‘মিমি’ ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন কৃতি। তার মুকুটে জুড়েছে নতুন পালক। শুধু জাতীয় পুরস্কার জয়েই থেমে থাকেননি তিনি। চলতি বছরে অভিনয় থেকে এক পা এগিয়ে প্রযোজনার বৃত্তেও পা রেখেছেন। ইতোমধ্যে তার প্রযোজনা সংস্থার তত্ত্বাবধানে প্রথম প্রজেক্টের কাজও শুরু হয়ে গেছে।
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩
X