সুনামগঞ্জ পুলিশের ঘুষিতে আসামির মৃত্যুর অভিযোগ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে পুলিশের কিল-ঘুষিতে রমিজ মিয়া (৬০) নামের এক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত রমিজ মিয়া উপজেলা উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বুরুঙ্গাছড়া গ্রামের মৃত হারাবুল্লার ছেলে। তাহিরপুর থানাধীন ট্যাকেরঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই জিয়া উদ্দিনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করছেন নিহত রমিজ মিয়ার স্ত্রী ও তার পরিবারের লোকজন। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টায় উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন বুরুঙ্গাছড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের স্ত্রী জোসনা বেগমসহ স্বজনরা জানায়, ঘটনার সময় রমিজ মিয়া বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে দোকানে ছিল। এমন সময় মোটরসাইকেলে করে দুজন লোক দোকানের সামনে আসে। সেখান থেকে এএসআই জিয়া উদ্দিন ও তার সঙ্গীয় পুলিশ রমিজকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় রমিজ মিয়া পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। একপর্যায়ে তার নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। বয়স্ক ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ায় পুলিশের মারধর সহ্য করতে না পেরে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। পরে পুলিশ লাশ ফেলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এ বিষয়ে তাহিরপুর থানার এএসআই জিয়া উদ্দিন বলেন, তিনি ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরতে গেলে ঘটনাস্থল থেকে রমিজ মিয়া পালিয়ে যায়। তাকে না পেয়ে থানায় চলে আসি। তাহিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, রমিজ মিয়া নামে এক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৭ এপ্রিল, ২০২৪

ইতালিতে সুনামগঞ্জ প্রবাসী সমাজকল্যাণ পরিষদের ইফতার
ইতালির ভিচেন্সায় সুনামগঞ্জ প্রবাসী সমাজকল্যাণ পরিষদের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১ এপ্রিল) এই ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ইফতার ও দোয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আব্দুল ওয়াহাব। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লেবাছ মিয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুর রহমান শামীমের সঞ্চালনায় পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন শিহাব আহমদ বাবলু। এ সময় প্রধান অতিথি ছিলেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা হিমাংশু মিত্র হিরু। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবক মান্না, সরদার, বাবর আহমদ, এনাম মিয়া, জয়নাল মিয়া, হাবিব আহমেদ, কামরান আহমদ, কাদির মিয়া, জমিরুল হক, সিকদার মাহম্মদ কায়েস, মাহমুদুর রহমান, ইমরান মিয়া, মামুন মিয়া, মাসুক মিয়া, শাহিন মিয়া, জাকির, রাজু মিয়া, মাওলানা সাইদুর, বদরুল আহমদ, সুহেল মিয়া, ইকবাল মিয়া ও মঞ্জু মিয়া। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ প্রবাসী সমাজ কল্যাণ পরিষদের সহ সভাপতি এনামু হক, সিপন মিয়া, ফরিদ আহমদ, বাচিত মিয়া, জুবায়ের মিয়া, আজিজ মিয়া, সহ সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আলম, জুবায়ের হুসেন, আমিন মিয়া, নাজমুল কোষাধক্ষ্য ফয়েজ মিয়া, তানিম মিয়া, ওদুদ মিয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নবিন মিয়া, সাইদুর মিয়া, কাওসার মিয়া, আব্দুল আজিজ, আলি আহমেদ, সোহেল মিয়া, আলি, ক্রীড়া সম্পাদক রাহেল মিয়া সহ আরও অনেকে।
০২ এপ্রিল, ২০২৪

সুনামগঞ্জ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব গ্রেপ্তার
সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম ও সদস্য সচিব তারেক মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় শহরের শহীদ হোসেন রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে পরিত্যক্ত একটি দু’তলা বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানায়, হরতাল-অবরোধের নামে শহর এবং শহরতলির বিভিন্ন স্থানে যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে  মামলা হয়। মঙ্গলবার সকালে তাদের নেতৃত্বে দুটি স্থানে চোরাগোপ্তা হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশ খবর পায় শান্তিবাগ এলাকায় এই দুজনসহ কয়েকজন ছাত্রদল নেতা নাশকতার পরিকল্পনা করছে। পরে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। এ সময় একটি প্রাইভেট কার জব্দ করে পুলিশ। সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি খালেদ চৌধুরী জানান, নাশকতার পরিকল্পনা করার সময় পুলিশ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে শহরের শহীদ আবুল হোসেন রোড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। অন্যদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।  এর আগে সকালে সুনামগঞ্জে পুলিশ সদস্যদের বহনকারী একটি লেগুনাসহ দুইটি স্থানে চোরাগোপ্তা হামলা হয়েছে। এ সময় চারটি যানবাহন ভাঙচুর করেছে হরতাল সমর্থক বিএনপি কর্মীরা। মঙ্গলবার সকাল দশটা থেকে সাড়ে দশটার মধ্যে শহরের রায়পাড়া ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সামনে এই দুটি হামলার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল দশটায় শহরের রায়পাড়ার গলির মুখে ৮-১০ জন বিএনপি কর্মী ঝটিকা হামলা চালিয়ে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা এবং একটি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করে। এর কয়েক মিনিট পর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সামনে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে ৮-১০ জন বিএনপি কর্মী ঝটিকা হামলা চালায়। এ সময় তারা একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা ভাংচুর করে। এই সময়ে এএসআই কামরুল ইসলামসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য বহনকারী একটি লেগুনা এই পথ দিয়ে যাচ্ছিল, হামলাকারীরা এই গাড়িতেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে দ্রুত আদালতের পাশের গলি দিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ বহনকারী লেগুনা চালক দুলাল মিয়া বলেন, সুনামগঞ্জ সদর থানা থেকে পুলিশ সদস্যদের তুলে মল্লিকপুর পাম্পে গিয়ে গ্যাস নেওয়া হয়। ফেরার সময় জেলা শিক্ষা অফিসের সামনে আসতেই কয়েকজন যুবক গাড়ি লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়ে। পুলিশ সদস্যরা গাড়ি থেকে নামতে নামতেই এরা আদালত এলাকার সীমানা দেওয়ালের পাশের গলি দিয়ে পালায়।
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৩

পুলিশ সদস্য হত্যা : সুনামগঞ্জ জেলা যুবদল সভাপতি গ্রেপ্তার
গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মহাসমাবেশ চলাকালে পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম হত্যা মামলায় আনসার উদ্দিন নামে এক যুবদলের নেতাকে গ্রেপ্তার করছে র‍্যাব-৯। পুলিশ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি গ্রেপ্তার আনসার উদ্দিন সুনামগঞ্জ জেলা যুবদলের সভাপতি। শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকালে সিলেট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৯। দুপুরে এ তথ্য জানান র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারের সহকারী পরিচালক সিনিয়র এএসপি আ ন ম ইমরান খান। আ ন ম ইমরান খান বলেন, ‘আনসার উদ্দিন সুনামগঞ্জ জেলা যুবদল সভাপতি। আনসার উদ্দিন পুলিশ হত্যা মামলার ৮৫ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি।’  
০৩ নভেম্বর, ২০২৩

সুনামগঞ্জ ভার্সিটি স্থাপনে হাওরের বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান
হাওর এলাকার বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন রেখে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণ এবং জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামো নির্মাণের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের লক্ষ্যে সমীক্ষা প্রকল্প প্রস্তাবনার ওপর অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা সভায় ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর এ আহ্বান জানান। গতকাল সোমবার ইউজিসিতে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। অধ্যাপক আলমগীর বলেন, পরিবেশ ধ্বংস করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো উন্নয়ন প্রকল্প করা যাবে না। অপরিকল্পিত অবকাঠামো হাওর ও উপকূলে বন্যা ও জলাবদ্ধতা বাড়াচ্ছে। কাজেই হাওর এলাকায় জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে পরিবেশ ও প্রকৃতির গতি-প্রকৃতিকে মাথায় রাখতে হবে। তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জলাধার ভরাট না করে উন্নয়ন কাজের পরিকল্পনা নিতে হবে। সভায় সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু নঈম শেখ, রেজিস্ট্রার জিএম শহিদুল আলম, ইউজিসির উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া, অতিরিক্ত পরিচালক শাহ মোহাম্মদ আমিনুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে ৪৭তম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বিল সংসদে পাস হয়। বিশ্বের সঙ্গে উচ্চশিক্ষায় সংগতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং জাতীয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষা, গবেষণার ক্ষেত্রে বিশেষ করে আধুনিক জ্ঞানচর্চা, পঠন-পাঠনের সুযোগ সৃষ্টি ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এটি স্থাপন করা হয়।
১৮ জুলাই, ২০২৩

বন্যার শঙ্কা সুনামগঞ্জ সিলেট নেত্রকোনায়
সিলেট, নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। আজ সোমবার পর্যন্ত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও উজানে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তা পার্থপ্রতীম বড়ুয়া বলেন, ‘দেশের পূর্বাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। গতকাল রোববার সকাল ৯টায় নেত্রকোনা ও সকাল ১১টায় সুনামগঞ্জ এলাকায় নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও আশপাশের এলাকায় উজানে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। বৃষ্টি বাড়তে থাকায় পুরাতন সুরমা, যাদুকাটাসহ কিছু নদীতে পানির সমতল দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলের তিস্তা অববাহিকার জন্য সতর্কতা রয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে নিম্নাঞ্চলে চলে আসতে পারে এবং ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধিও অব্যাহত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা করছি আমরা, বড় কোনো বন্যা হবে বলে মনে হচ্ছে না।’ এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি বন্যা দেখা দিতে পারে। অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, জুলাই মাসে মৌসুমি ভারি বৃষ্টিপাতজনিত কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, উত্তর-মধ্যাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলের কিছু স্থানে স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। অন্যদিকে দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অববাহিকার কিছু স্থানে স্বল্পমেয়াদি আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। সিলেট ব্যুরো জানায়, প্রবল বর্ষণের কারণে এবারও বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গতকাল সিলেটে এ মৌসুমে ৩ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসেন জানান, সিলেটে ৩ ঘণ্টায় এটিই চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। আগামী ৪৮ ঘণ্টা এবং সামনের ৫ দিন সিলেটে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি। পাউবো সিলেট সূত্রে জানা গেছে, সিলেটে সুরমা নদীর পানি নদীর সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে। সুনামগঞ্জে সুরমার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর দুটি পয়েন্টে পানি বেড়েছে। শেওলা পয়েন্টে বিপৎসীমা ১৩ দশমিক শূন্য ৫ সেন্টিমিটার। সে পয়েন্টে শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় ছিল ১০ দশমিক ৬৭ সেন্টিমিটার। গতকাল বিকেল ৩টায় সে পয়েন্টে পানি ১০ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় সে পয়েন্টে পানি ৯ দশমিক ১৪ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছিল। বিকেল ৩টায় নদীর সে পয়েন্টে পানি ১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। ধলাই নদের ইসলামপুর পয়েন্টে পানি গত শনিবার সন্ধ্যা ৬টার তুলনায় বেড়েছে। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় ৯ দশমিক ৮৪ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হলেও রোববার বিকেল ৩টায় সে পয়েন্টে পানি ১০ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছিল। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর নদনদীর পানিপ্রবাহের উচ্চতা বেড়েছে। সুরমা নদীর কাইনাঘাট পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। সেখানে শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় ছিল ১২ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার। রোববার বিকেল ৩টায় সে পয়েন্টে কিছুটা কমে ১১ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, সিলেটে এক সপ্তাহ ধরে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সিলেটের পার্শ্ববর্তী ভারতের মেঘালয় ও আসাম দুটি রাজ্যের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে সিলেটের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর অব্যহত ভারি বর্ষণে নেত্রকোনার প্রধান প্রধান নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে এরই মধ্যে জেলার বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান জানান, পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে উব্দাখালী নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, জেলার ছয়টি স্টেশনে সবগুলোতেই পানি বেড়েছে। জেলার ছাতক স্টেশনে সুরমা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে। এ ছাড়া শহরের কাজীরপয়েন্ট দিয়ে সুরমার পানি ঢুকছে শহরের নিচু এলাকায়। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভারি বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে জেলার ছাতক পয়েন্টে পানি বেড়েছে শূন্য দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার। বর্তমানে বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৮২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে অর্থাৎ ৮ দশমিক ৯৩ সেন্টিমিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে সুরমার পানি। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, রোববার পাহাড়ি ঢল ছিল না। বৃষ্টির পানিতে কিছুটা পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু রাস্তাঘাট তলিয়েছে। তবে এখনো বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-১ মামুন হাওলাদার জানান, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জ এবং উজানে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমাদের নদনদীর পানি আরও বৃদ্ধি পাবে। সুনামগঞ্জের হাওরগুলোতে এখনো পানি প্রবেশ করলেও হাওরের ধারণক্ষমতা কমে আসছে। সেজন্য সুনামগঞ্জের নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বিপৎসীমা ক্রস করতে পারে। বর্তমানে শুধু সুনামগঞ্জের ছাতক পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮২ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হতে পারে। তবে তবে সুনামগঞ্জে ২০২২ সালের মতো বড় ধরনের কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই। এটা মৌসুমের স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত। জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কোথাও আংশিক আবার কোথাও বেশিরভাগ বাড়িতে পানি উঠেছে। এসব গ্রামের বাসিন্দারা জানান, এরই মধ্যে গ্রামগুলোর শত শত বাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে। রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় অনেক জায়গায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। প্রতিদিনই এক-দুই ইঞ্চি করে পানি বাড়ছে। হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি জানান, উজানের ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি কখনো বাড়ছে আবার কখনো কমছে। এতে করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে তিস্তাপাড়ের মানুষজনের মধ্যে। এদিকে পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি জল কপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। রোববার বিকেল ৩টায় দেশের সর্ববৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে রোববার সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি কমা-বাড়া করছে। পানি উন্নায়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিন থেকে উজানের ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি কখনো বাড়ছে, আবার কখনো কমছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি জল কপাট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া তিস্তা পাড়ের মানুষদের সর্বপরি খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আফসাউদ্দৌলা বলেন, গত কয়েক দিন থেকে তিস্তা নদীর পানি কখনো বাড়ছে আবার কখনো কমছে। বর্তমানে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, সামান্য পানি বৃদ্ধি পেলে আমার ইউনিয়নের মানুষজন পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তাই তাদের সাহায্য করা প্রয়োজন। হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজির হোসেন বলেন, আমরা সবসময় নদীপাড়ের লোকজনদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। তাদের জন্য ত্রাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে আরও বরাদ্দ দেওয়া হবে।
০৩ জুলাই, ২০২৩
X