ঈদ আনন্দে পর্যটকমুখর সোনারগাঁ
পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে প্রাচীন বাংলার রাজধানী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের দর্শনীয় স্থানগুলোতে ছিল বিনোদনপ্রেমী দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। সোনারগাঁয়ে অবস্থিত লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, বাংলার তাজমহল ও পিরামিড, ঐতিহাসিক পানাম নগরী, বারদীতে জ্যোতিবসুর জাদুঘর, বৈদ্যেরবাজার মেঘনা নদীর ঘাট, কাইকারটেক ব্রিজ , অলিপুরা ব্রিজ, হরিহরদি ব্রিজ, দ্বিতীয় মেঘনা সেতুর এলাকাসহ কয়েকটি দর্শনীয় স্থানে দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে মিলনমেলায় পরিণত হয়। লোককারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বর, বাংলার তাজমহল ও পিরামিডের ভেতরের সাজসজ্জা ছিল এবারের ঈদে পর্যটকদের বাড়তি আকর্ষণ। রাজধানী ঢাকার সন্নিকটে হওয়ায় সোনারগাঁ ভ্রমণে এসে মনোরম পরিবেশে আনন্দ উপভোগ করেছেন দর্শনার্থীরা। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ ও ছোট ছোট ছেলে মেয়ে বিশেষ করে উঠতি বয়সী যুবক-যুবতিদের পদচারণায় উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এ ছাড়া মেঘনা নদীর ভাটিবন্দর থেকে কান্দারগাঁও পর্যন্ত নদীর পাড়, অলিপুরা ব্রিজ এলাকায় নদী-গাছপালা ইত্যাদি প্রাকৃতিক মনোরম দৃশ্য দেখতেও ভিড় ছিল লক্ষণীয়। এসব দর্শনীয় স্থানে পসরা সাজিয়ে বসেছিল ছোট ছোট বাচ্চাদের খেলাধুলা ও সাজসজ্জার ভ্রাম্যমাণ দোকান। দর্শনার্থীরা ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি তাদের পরিবার-পরিজনদের নিয়ে নেচে গেয়ে উপভোগ করেছেন রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকার বিনোদনপ্রেমীরা। এবার বিদেশি পর্যটকদের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো।  বাংলার তাজমহলের প্রতিষ্ঠাতা ও চিত্র পরিচালক আহসান উল্যাহ মনির সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বাংলার তাজমহলে ও পিরামিডে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় ছিল।  পানাম নগরীর দায়িত্বে থাকা বুকিং সহকারী মঞ্জুর হোসেন জানান, এবারে আশানুরূপ দর্শনার্থীদের সমাগম হয়েছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ কয়েক হাজার দর্শনার্থী প্রতিদিন পানাম নগরীর আদিরূপ উপভোগ কর‍তে ভিড় জমাচ্ছে। রীতিমতো হিমশিম পোহাতে হচ্ছেও বলেও জানান তিনি।   বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের (সোনারগাঁও জাদুঘর) পরিচালক ড. আমিনুর রহমান সুলতান কালবেলাকে বলেন, এবার পর্যটকদের একটু ভিন্ন আয়োজন করা হয়েছে। জাদুঘর চত্বরে এবার ১৫ দিনব্যাপী  বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। পর্যটকরা যেন ঈদের ছুটিতে ঘুরতে এসে বৈশাখী মেলাও উপভোগ করতে পারে। সেই সঙ্গে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।   তিনি আরও জানান, গত রোববার দুপুরে এ মেলার উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান। মেলায় গ্রামবাংলার কারুশিল্পী প্রদর্শনীতে রাজশাহীর শখের হাঁড়ি শিল্পী সুশান্ত পাল, রিকশা ও রিকশা চিত্রশিল্পী এস এ মালেক, জামদানি শিল্পী ইব্রাহিম, দারুশিল্পী আব্দুল আওয়াল মোল্লা, বীরেন্দ্র সূত্রধর, শোলাশিল্পী নিখিল মালাকার, নকশিকাঁথা শিল্পী পারভীন আক্তার, হোসনে আরা বেগম, ঝিনুকশিল্পী মো. নূরুল ইসলাম, বাঁশ-বেত কারুশিল্পী পরেশ চন্দ্র দাস, হাতপাখা কারুশিল্পী বাসন্তী সূত্রধর, শতরঞ্জি শিল্পী আনোয়ার হোসেন এবং উদ্যোক্তাসহ ৩২টি স্টলে ৬৪ জন প্রথিতযশা কারুশিল্পী তাদের কারুপণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। অপরদিকে, প্রায় ১০ বছর পর বৈশাখ উপলক্ষে উপজেলা মঙ্গলেরগাঁও বটতলা মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রায় শত বছরের আদি বটবৃক্ষকে কেন্দ্র করে উপজেলার ভট্টপুর জয়রামপুর গ্রামে অনুষ্ঠিত হয় বউ মেলা। যা হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে বটবৃক্ষটি সিদ্ধেশ্বরী দেবতা নামে সুপরিচিত। বটতলার পদতলে (সনাতন) হিন্দু সম্প্রাদায়ের শত শত নর-নারী পহেলা বৈশাখের এ পূজায় অংশগ্রহণ করেন। পূজা-অর্চনা একদিনের হলেও মেলা জমে তিন দিন। বিশেষ করে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীরা সারা বছর অপেক্ষায় থাকে সিদ্ধেশ্বরী কালী তলার এ বউ মেলার জন্য। বউ মেলার পাশাপাশি দেবতার সন্তুষ্টির জন্য কবুতর উড়ানো ও পাঁঠা বলি দেওয়া হয় বৃক্ষ দেবতার পদতলে স্বামী সংসারের বাঁধন যেন অটুট থাকে, সারা বছর সুখ শান্তিতে যেন কাটে দাম্পত্য জীবন- এই কামনাতেই পূজার আয়োজন করে হিন্দু নারীরা। বউ মেলা আয়োজক কমিটির কর্মকর্তা নীলোৎপল রায় বলেন, প্রতিবছর বর্ষবরণ উৎসবে সিদ্ধেশ্বরী কলীপূজার আয়োজন করা হয়। এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন সার্বজনীনভাবে এ মেলার আয়োজন করেন। এ পূজায় দেশবাসী ও এলাকার মানুষের শান্তি ও মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করা হয়।  পূজা অর্চনা ছাড়াও বউ মেলায় বাঙালি সংস্কৃতির প্রাচীন ঐতিহ্য খুঁজে পাওয়া যায়। এ বউ মেলায় দারু ও মৃৎ শিল্পীদের তৈরি নানা রঙের নানা বর্ণের টেপা পুতুল, হাতি, ঘোড়া, ময়না, টিয়া, বাঘ-ভাল্লুক, হাড়ি পাতিল থেকে শুরু করে মন্ডা-মিঠাইয়ের দোকান বসে। বিভিন্ন মনোহারি জিনিসপত্রের পসরা নিয়ে বসে মেলায়। মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প, কাঠ ও বাঁশের তৈরি লোক পণ্য ছাড়াও মেলায় পাওয়া যায় বাহারী মিষ্টান্ন সামগ্রী। সোনারগাঁয়ের বউমেলা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ জানান, সোনারগাঁয়ে বেশকিছু পর্যটনকেন্দ্র তৈরি হওয়ায় পর্যটক বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে সোনারগাঁয়ের দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে কর্তৃপক্ষের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি থানা পুলিশের মাধ্যমে অতিরিক্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

সোনারগাঁ জাদুঘরে ১৫ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরু
বাঙালির প্রাণের উৎসব ১লা বৈশাখ। এ দিনটি ঘিরে রবিবার থেকে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন (সোনারগাঁ জাদুঘর)-এর উদ্যোগে ১৫ দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে মেলাটি দেশীয় সাংস্কৃতির সঙ্গে আবহমানকাল থেকেই নিবিড়ভাবে সংশ্লিষ্ট হয়ে আছে।  রোববার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে ১৫ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান।  বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ডক্টর আমিনুর রহমান সুলতানের সভাপতিত্বে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘পহেলা বৈশাখ সবার উৎসব’ শীর্ষক সেমিনারে প্রবন্ধ পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডক্টর মুহম্মদ সামাদ। এসময় সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইয়াসহ অঙ্গ-সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে পহেলা বৈশাখ আনন্দোৎসবের প্রভাতী আয়োজনে ছিল মঙ্গল শোভাযাত্রা, সেমিনার, গ্রাম-বাংলা ও বৈশাখী উৎসব শীর্ষক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, গ্রামীণ খেলা ও জাতীয় খেলা হা-ডু-ডু। মেলার বিশেষ আকর্ষণ ফাউন্ডেশনের লোক ও কারুশিল্প চর্চা চত্বরে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মাস্টার ক্রাফটসম্যানদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এবারের মেলায় গ্রাম-বাংলার কারুশিল্পী প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছে রাজশাহীর শখের হাঁড়িশিল্পী সুশান্ত পাল, রিকশা ও রিকশাচিত্রশিল্পী এস এ মালেক, জামদানি শিল্পী ইব্রাহিম, দারুশিল্পী আব্দুল আওয়াল মোল্লা, বীরেন্দ্র সূত্রধর, শোলাশিল্পী শ্রী নিখিল মালাকার, নকশিকাঁথা শিল্পী পারভীন আক্তার, হোসনে আরা বেগম, ঝিনুক শিল্পী মো. নূরুল ইসলাম, বাঁশ-বেত কারুশিল্পী পরেশ চন্দ্র দাস, হাতপাখা কারুশিল্পী বাসন্তী সূত্রধর, শতরঞ্জি শিল্পী আনোয়ার হোসেন এবং উদ্যোক্তাসহ ৩২টি স্টলে ৬৪ জন প্রথিতযশা কারুশিল্পী। এ ছাড়াও থাকছে পক্ষকালব্যাপী বৈশাখী আনন্দযজ্ঞ সেমিনার, পালাগান, মালজোড়া গান, কবিগান, বাউলগান, পালকির গান, কিচ্ছা গান, ভাটিয়ালি গান, মাইজভাণ্ডারী গান, লালন, হাছন রাজা এবং জারি-সারি গানের সুরের মূর্ছনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মন্ত্রী মেলায় ফাউন্ডেশন চত্বর পরিদর্শন শেষে লোক ও কারুশিল্প চত্বর উদ্বোধন ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার সার্ফিকেটসহ পুরস্কার বিতরণ করেন।  সোনারগাঁ জাদুঘর চত্বরে আয়োজিত ১৫ দিনব্যপী এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ। মেলা উপলক্ষে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় সোনারগাঁ জাদুঘর চত্বরে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানায় কর্তৃপক্ষ।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

সোনারগাঁ জাদুঘরে শুরু হচ্ছে ১৫ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা
বাঙ্গালির প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখনোরা। এ দিনটি ঘিরে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের (সোনারগাঁও জাদুঘর) উদ্যোগে ১৫ দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বৈশাখীমেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হতে যাচ্ছে। এ মেলা বর্ণাঢ্য উৎসবের মাধ্যমে জাঁকজমকপূর্ণভাবে দেশীয় সাংস্কৃতির সঙ্গে আবহমানকাল থেকেই নিবিড়ভাবে সংশ্লিষ্ট হয়ে আছে।  বোরবার (১৪ এপ্রিল) এ বৈশাখীমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান। এতে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আমিনুর রহমান সুলতান। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘পহেলা বৈশাখ সকলের উৎসব’ শীর্ষক সেমিনারে প্রবন্ধ পাঠ করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহম্মদ সামাদ। জানা গেছে, পহেলা বৈশাখ আনন্দোৎসবের প্রভাতী আয়োজন শুরু হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা, সেমিনার, গ্রাম-বাংলা ও বৈশাখী উৎসব শীর্ষক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, গ্রামীণখেলা, জাতীয়খেলা হা-ডু-ডু প্রদর্শনের মধ্যদিয়ে। মেলার বিশেষ আকর্ষণ ফাউন্ডেশনের লোক ও কারুশিল্প চর্চা চত্বরে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মাস্টার ক্রাফটসম্যানদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।   মেলায় গ্রাম-বাংলার কারুশিল্পী প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করবেন রাজশাহীর শখের হাঁড়িশিল্পী সুশান্ত পাল, রিকশা ও রিকশাচিত্রশিল্পী এস.এ মালেক, জামদানি শিল্পী ইব্রাহিম, দারুশিল্পী আব্দুল আওয়াল মোল্লা, বীরেন্দ্র সূত্রধর; শোলাশিল্পী শ্রী নিখিল মালাকার, নকশিকাঁথা শিল্পী পারভীন আক্তার, হোসনে আরা বেগম, ঝিনুকশিল্পী মো. নূরুল ইসলাম, বাঁশ-বেত কারুশিল্পী পরেশ চন্দ্র দাস, হাতপাখা কারুশিল্পী বাসন্তী সূত্রধর, শতরঞ্জি শিল্পী আনোয়ার হোসেন এবং উদ্যোক্তাসহ ৩২টি স্টলে ৬৪ জন প্রথিতযশা কারুশিল্পী। এ ছাড়াও থাকবে পক্ষকালব্যাপী বৈশাখী আনন্দযজ্ঞ সেমিনার, পালাগান, মালজোড়া গান, কবিগান, বাউলগান, পালকির গান, কিচ্ছা গান, ভাটিয়ালি গান, মাইজভাণ্ডারী গান, লালন, হাছন রাজা এবং জারি-সারিগানের সুরের মূর্ছনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমালা।  সোনারগাঁও জাদুঘর চত্ত্বরে আয়োজিত এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত চলবে পুরো সপ্তাহজুড়ে চলবে বলে জানিয়েছে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ।  
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন সোনারগাঁ
ইতিহাস, ঐতিহ্য আর প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি সোনারগাঁ। ইতিহাস ছাড়াও লোকশিল্প ও কারুশিল্পসহ সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঈশা খাঁর স্বপ্নের এই নগরী। ঐতিহ্যে ভরপুর এই নগরীর প্রাচীন নাম ছিল সুবর্ণবীথি বা সুবর্ণগ্রাম। বর্তমানে এই নগরী বিশ্বের ভ্রমণপিপাসুদের প্রধান আকর্ষণ। ইতিহাসবিদ ও গবেষকদের বিভিন্ন লেখা থেকে জানা যায়, সুবর্ণগ্রাম থেকেই মুসলিম আমলে সোনারগাঁ নামের উদ্ভব ঘটে। আবার কেউ কেউ বলেন, বার ভূঁইয়া প্রধান ঈসা খাঁর স্ত্রী সোনাবিবির নামানুসারে এর নাম হয়েছে সোনারগাঁ। ধারণা করা হয় ঐতিহ্যের ধারক-বাহক সোনারগাঁয়ের উদ্ভব প্রাক-মুসলিম যুগ থেকেই। পূর্ববঙ্গের রাজধানীখ্যাত সোনারগাঁয়ে সুলতানি আমল ও মোঘল আমলের অসংখ্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে। এ অঞ্চলের চারু ও কারুশিল্প এবং বস্ত্রশিল্প সারা ভারতীয় উপমহাদেশে বিখ্যাত ছিল। সোনারগাঁ অঞ্চলের মসলিন কাপড় মিশরীয় ও রোমান সাম্রাজ্যের অভিজাতদের মধ্যে ছিল খুব জনপ্রিয়। ১৩৩৮ খ্রিষ্টাব্দে ফখরুদ্দিন মোবারক শাহের আমলে সোনারগাঁ স্বাধীন বাংলার রাজধানীতে পরিণত হয়। পরে গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ্, শেরশাহ, ঈশা খাঁ পর্যায়ক্রমে সোনারগাঁয়ে রাজত্ব করেন। ইতিহাসের আবহমান ধারায় অনেক চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে সোনারগাঁ আজ এমন একটি নামে পরিণত হয়েছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও লোকজ সংস্কৃতি একযোগে প্রকাশিত হয়। সোনারগাঁ ছিল বাংলার মুসলিম শাসকদের অধীনে পূর্ববঙ্গের একটি প্রশাসনিক কেন্দ্র। এর আয়তন ১১৭.৬৬ বর্গ কিলোমিটার।  এটি বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ জেলার একটি উপজেলা। এর অবস্থান ঢাকা থেকে ২৭ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে।  এটি আগে মেঘনা, পশ্চিমে শীতলক্ষ্যা, দক্ষিণে ধলেশ্বরী ও উত্তরে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বেষ্টিত একটি বিস্তৃত জনপদ ছিল। সোনারগাঁ ছিল ব্যবসায়, শিক্ষা-দীক্ষায়, কৃষি, সাহিত্য-সংস্কৃতি, শিল্প ও কারুকার্যে বিশ্বসেরা। জানা গেছে, ১৫ শতকে সোনারগাঁয়ের পূর্বে মেঘনা আর পশ্চিমে শীতলক্ষ্যা নদীপথে বিলেত  থেকে আসত থান কাপড় আর দেশ থেকে যেত মসলিন।  প্রায় ওই সময়ই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে ইউরোপীয় অনুপ্রেরণায় নতুন ঔপনিবেশিক স্থাপত্যরীতিতে গড়ে ওঠে পানাম নগরী। পরে ইংরেজরা দখল করে এখানে বসিয়েছিলেন নীলের বাণিজ্যকেন্দ্র। আর এই পানাম নগরী বর্তমানে বহির্বিশ্বে সোনারগাঁকে একটি পর্যটন নগরী হিসেবে তুলে ধরেছে।    ঔপনিবেশিক স্থাপত্যের নিদর্শন হিসেবে পানাম নগরীতে টিকে থাকা বাড়িগুলোর মধ্যে ৫২টি বাড়িই উল্লেখযোগ্য। পানাম সড়কের উত্তর পাশে ৩১টি ও দক্ষিণ পাশে ২১টি বাড়ি রয়েছে। প্রতিটি বাড়ির মেঝেতে রয়েছে লাল, সাদা, কালো মোজাইকের কারুকাজ। এর সঙ্গে আছে সিরামিক টাইলসের রূপায়ণ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১০-১৫ বছর ইজারা দেওয়া হলেও পরবর্তীতে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে ২০০৯ সালে পানাম নগরীকে সম্পূর্ণভাবে দখলমুক্ত করা হয়। সরকারিভাবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে নেওয়া হয় পানাম নগরীর (সোনারগাঁ) প্রাচীন স্থাপত্য। যা দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে প্রতিদিন ছুটে যায় ভ্রমণপিপাসুরা।   এ ছাড়া আবহমান গ্রাম বাংলার লোক সাংস্কৃতিকে বিকশিত করার উদ্যোগে ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের উদ্যোগে সরকার সোনারগাঁয়ের ঐতিহাসিক পানাম নগরীর একটি পুরোনো বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। পরবর্তীতে ১৯৮১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন বড় সরদার বাড়িতে স্থানান্তরিত হয়। প্রায় ৬শ বছরের পুরোনো সোনারগাঁয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক ঐতিহাসিক বড় সরদার বাড়ি। ২৭ হাজার ৪০০ বর্গফুট আয়তনের এ ভবনটির নিচতলায় ৪৭টি ও দ্বিতীয় তলায় ৩৮টি কক্ষ রয়েছে। প্রায় ১৬ হেক্টর জায়গাজুড়ে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন বিস্তৃত। এই ফাউন্ডেশনে আছে গোপীনাথ সাহা সরদার বাড়ি, জয়নুল আবেদিনের ঐতিহাসিক সংগ্রাম ভাস্কর্য, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের আবক্ষ ভাস্কর্য, জয়নুল আবেদিনের ভাস্কর্য, জয়নুল আবেদিন স্মৃতি জাদুঘর, লোকজ মঞ্চ, সেমিনার রুম, কারুশিল্প গ্রাম এবং সবুজে মোড়া সুবিশাল উদ্যান। সংরক্ষিত রয়েছে ৪ হাজার ৫০০-এর অধিক প্রাচীন নিদর্শন। গ্রাম বাংলার প্রাচীন শিল্পীদের সুনিপুণ হাতের তৈরি বিভিন্ন শৈল্পিক ও দৈনন্দিন ব্যবহার্য নানা পণ্যসামগ্রী। এ ছাড়া জাদুঘরের বিভিন্ন গ্যালারিগুলোতে দেখা মিলবে কাঠে খোদাই করা বিভিন্ন কারুশিল্প, পটচিত্র, মুখোশ, আদিম জীবনভিত্তিক নিদর্শন, লোকজ বাদ্যযন্ত্র, পোড়ামাটির ফলক, লোহা তামা-কাসা পিতলের তৈজসপত্র, লোকজ অলংকারসহ বৈচিত্র্যপূর্ণ অনেক প্রাচীন নিদর্শন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রাচীন বাংলার এ রাজধানীকে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ওয়ার্ল্ড কমিউনিকেটরস কাউন্সিল (ডাব্লিউসিসি) বিশ্ব কারুশিল্প শহরের মর্যাদা প্রদান করেন। ঐতিহাসিক এই পর্যটন নগরী সোনারগাঁ দেখতে যেভাবে যেতে পারেন—ঢাকার গুলিস্তানে অবস্থিত মওলানা ভাষানী স্টেডিয়াম থেকে বোরাক এসি, দোয়েল কিংবা স্বদেশ এই তিনটি বাসযোগে সরাসরি মোগরাপাড়া চৌরাস্তা নেমে সিএনজি, রিকশা কিংবা মিশুক দিয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে আসতে পারবেন। এখান থেকে অল্পকিছু দূরেই পানাম নগরী, পোদ্দার বাড়ি, টাঁকশাল বাড়ি এবং প্রাচীন বিদ্যাপিঠ সোনারগাঁ জি আর ইনস্টিটিউশন অবস্থিত। এরপর রিকশাযোগে গোয়ালদী শাহি মসজিদ। অন্যদিকে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা নেমে ফুটওভার ব্রিজ পার হয়ে পায়ে হেঁটে কিংবা রিকশাযোগে মোগরাপাড়া বাজারে গেলেই পাবেন হজরত শাহ্, মুন্না শাহ্ ও শরফউদ্দিন আবু তাওয়ামার মাজার এবং ৭০০ পুরোনো উপমহাদেশের প্রথম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্বংসাবশেষ। এরপর ভাগলপুরে অবস্থিত সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহ্ ও পাঁচপীরের মাজার অবস্থিত।  
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৩

সোনারগাঁ ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গত সোমবার রাতে এ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটি অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। কমিটিতে রাশেদুল ইসলাম রাসেলকে সভাপতি ও শফিকুল ইসলাম সাগরকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী এক বছরের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সোনারগাঁ শাখার কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
০২ আগস্ট, ২০২৩

কমিটি প্রত্যাখ্যান সোনারগাঁ আ.লীগের
নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ অনুমোদিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ। জেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত ওই কমিটিতে স্থান পাওয়া একাধিক নেতার বিরুদ্ধে রাতারাতি পদ বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে এই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার। জানা গেছে, প্রায় ২৫ বছর পরে গত বছরের সেপ্টেম্বরে বেশ ঘটা করে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়। সেই সম্মেলনের আট মাস পর উপজেলা আ’লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করেছে জেলা আ.লীগ। এতে প্রস্তাবিত কমিটি থেকে ১৯ জনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল স্বাক্ষরিত ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সহসভাপতি ও সেক্রেটারির প্রস্তাবিত কমিটির ১৯ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে প্রস্তাবিত কমিটির পরিচিতি সভা নিয়েও ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশের পর থেকেই স্থানীয় তৃণমূল আ.লীগ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলা কমিটির বিরুদ্ধে। সোনারগাঁ আ.লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, জেলা কমিটির পক্ষ থেকে এভাবে উপজেলা কমিটি অনুমোদন দেওয়া ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। আমরা এ কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছি। এজন্য যা কিছু প্রয়োজন তাই করা হবে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সদ্যঘোষিত এ কমিটির সমালোচনা করে সোনারগাঁ আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার কালবেলাকে বলেন, জেলা আ.লীগের দেওয়া কমিটি আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের পরামর্শ না করেই জেলা আ.লীগ এ কমিটির অনুমোদন দিয়েছে। যাদের কেউ চিনে না এবং জাতীয় পার্টির লোককে এ কমিটিতে রাখা হয়েছে। কেন্দ্রে সোনারগাঁকে বিতর্কিত করতে এবং সাংগঠনিকভাবে দুর্বলতার পরিচয় দিতে জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ কমিটি দিয়েছে। জেলা আ.লীগের সভাপতি আব্দুল হাই জানান, আমরা যে কমিটি অনুমোদন দিয়েছি তা সঠিক মনে করে দিয়েছি। সোনারগাঁ উপজেলা আ.লীগ এ কমিটিকে না মানলে আমাদের কিছু করার নেই। যারা যোগ্য তাদেরই পদ দেওয়া হয়েছে।
০৮ জুলাই, ২০২৩

সোনারগাঁ আ.লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়াকে সভাপতি ও সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতকে সাধারণ সম্পাদক এবং ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমকে সিনিয়র সহসভাপতি করে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর হাই বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আগামী দিনে এ কমিটির মাধ্যমে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও বেগবান হবে আশা করছি।
০৬ জুলাই, ২০২৩
X