কোদালের আঘাতে স্কুল শিক্ষক নিহত
নাটোরের নলডাঙ্গায় জমি নিয়ে বিরোধে আপন চাচাতো ভাইয়ের কোদালের আঘাতে গুরুতর আহত আরেক ভাই জিল্লুর রহমান নামের স্কুল শিক্ষক মারা গেছেন। শনিবার (৩০ মার্চ) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত জিল্লুর রহমান (৫০) উপজেলার খাজুরার চাঁদপুর গ্রামের মোজাহার আলীর ছেলে ও নওগাঁর আত্রাই উপজেলার থল ওলমা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। আটককৃত আহাদ আলী ওই গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে। নলডাঙ্গা থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার দুপুরে নলডাঙ্গা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামে আপন চাচাতো ভাইদের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। আহতদের নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করালেও স্কুল শিক্ষক জিল্লুর রহমানের মাথায় চাচাতো ভাইয়ের কোদালের আঘাতে গুরুতর জখম হয়। নাটোর সদর হাসপাতালে অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।শনিবার সকালে স্কুল শিক্ষক জিল্লুর রহমানের মাথায় অতিরিক্ত রক্তক্ষননে মৃত্যু হয়। নলডাঙ্গা থানার ওসি মনোরুজ্জামান বলেন, খাজুরা ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের রেজাউল রহিদুল ও জিল্লুর রহমানের সঙ্গে আপন চাচাতো ভাই আবেদ আলী, হামেদ ও সামাদের দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে জিল্লুর রহমান গুরুতর আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করান স্বজনরা।শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই খোরশেদ হোসেন বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামী করে নলডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় একজনকে আটক করে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
৩০ মার্চ, ২০২৪

স্কুল শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় মাদ্রাসার প্রশ্নপত্র
রাজশাহীতে অষ্টম শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় এক কেন্দ্রে স্কুল পর্যায়ের পরীক্ষার্থীদের মাদ্রাসার প্রশ্ন সরবরাহ করার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাজশাহী নগরীর কোর্ট একাডেমি কেন্দ্রে এ ঘটনায় ঘটে। নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে কিছুক্ষণ পর আসল প্রশ্ন সরবরাহ করে কর্তৃপক্ষ। তবে এ নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় পরীক্ষার্থীদের।  খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় রাজশাহী কোর্ট একাডেমি কেন্দ্রের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় জেনারেল প্রশ্নের পরিবর্তে মাদ্রাসার প্রশ্ন দেওয়া হয়। ভুল বুঝতে পেরে পরীক্ষা শুরুর প্রায় ১৫ মিনিট পরে আসল প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। আগের ভুল প্রশ্নের সেট পূরণ করায় আসল প্রশ্নের সেট মেলাতে গিয়ে এক প্রশ্নে কয়েকজন মিলেও পরীক্ষা দিতে হয়েছে। অনেকটা গ্রুপ আকারে পরীক্ষা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। সজিবুল ইসলাম নামের ওই কেন্দ্রের এক পরীক্ষার্থী বলেন, রাজশাহী কোর্ট একাডেমি কেন্দ্রের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় ভুল করে স্কুল পর্যায়ের পরিবর্তে স্কুল পর্যায়-২ (মাদ্রাসা) এর প্রশ্ন দিয়েছিল। ভুল প্রশ্ন দিয়েই উত্তরপত্রের প্রশ্ন কোড পূরণ করে উত্তর দাগানোও শুরু হয়েছে অনেকের। প্রায় ১৫ মিনিট পরে আসল প্রশ্ন নিয়ে আসেন স্যাররা। তড়িঘড়ি করে প্রশ্ন চেঞ্জ করে আসল প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। সেক্ষেত্রে আগের পূরণ করা প্রশ্নের সেট নিয়ে অনেকে বিড়ম্বনার শিকার হন। তখন রুমের দায়িত্বে থাকা স্যাররা যার যে সেট পূরণ করা ছিল তাকে সেই সেট অনুযায়ী প্রশ্ন মিলিয়ে দেন। শেষে এক প্রশ্নে কয়েকজন মিলে গ্রুপ করেও পরীক্ষা দিতে দেখা গেছে। আর সময়ের ক্ষতিপূরণ হিসেবে পুরো কেন্দ্রে অতিরিক্ত ২০ মিনিট বাড়তি সময় দেওয়া হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, এটা তো কোনো পরীক্ষার সিস্টেম হতে পারে না। কয়েকজনের গাফিলতির কারণে কেন আমাদের এই ভোগান্তি পোহাতে হবে। যাদের গাফিলতির কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত বলেও মনে করেন এই চাকরি প্রত্যাশী। এ বিষয়ে রাজশাহী কোর্ট একাডেমির প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র প্রধান সফিকুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগযোগ করা হলে তিনি ‘এখন ব্যস্ত আছি এখন কথা বলা যাবে না’ বলে ফোনটি কেটে দেন। এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, আজকের কোথাও কোনো ভুল প্রশ্ন বিতরণের তথ্য আমার কাছে নেই। আমার কাছে কেউ অভিযোগও করেননি। তবে যদি এমনটি হয় বা কেউ অভিযোগ করে তবে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১৫ মার্চ, ২০২৪

‘ভূতুড়ে’ বিদ্যুৎ বিলের কবলে লক্ষ্মীপুরের স্কুল শিক্ষক
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের স্কুল শিক্ষক মো. মুজাহিদ গাজী। শিক্ষকতার পাশাপাশি কৃষি কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তিনি। তার ক্ষেতের সেচ মিটার গত তিন মাস ধরে বন্ধ। অথচ তাকে অক্টোবর মাসে বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে ৯ হাজার ৩৩১ টাকা। গত দুই বছর ধরে এমন অত্যাচার সহ্য করে চলেছেন তিনি। বিদ্যুৎ অফিসে গেলে সমন্বয় করার কথা বললেও তা আর  করছেন না।  বেসরকারি হাসপাতালের চাকরিজীবী ও শহরের টিএনটি সড়কের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন। তিনি ৭২ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছেন। অথচ গত দুই মাসে একসঙ্গে ২১৬ ইউনিটের বিল করা হয়েছে তার মিটারে। অর্থাৎ সেখানেও ব্যবহারের পরিমাণ ৭২ ইউনিট করেই। এরপরও এতটা হেরফের কেনো- এমন প্রশ্ন মুজাহিদ ও জসিমের। জসিম নামের ওই বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, ‘ছোট একটি চাকরির পাশাপাশি একজন সংবাদকর্মীও তিনি। নানা কারণে সব সময় সংকট। এই পরিস্থিতিতে আমি নিজে কীভাবে আছি সেটাতো আমি নিজে ছাড়া আর কেউ জানে না। আমি তো সাহায্য চাচ্ছি না। কিন্তু সরকার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে যে সুবিবেচনা দরকার, তাও করা হচ্ছে না।’  বিদ্যুৎ বিভাগের এই অবস্থা শুধু লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় নয়, সদর ও রামগঞ্জ উপজেলাতেও ঘটেছে। গ্রাহকদের মাঝে ক্ষোভ। শুধু মুজাহিদ ও জসিম উদ্দিনই নন, গত দুই মাসের বাড়তি বিলের এই ধকল পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক, সাংবাদিক, পুলিশসহ অনেককেই। যারা বিত্তবান, তাদের সংকট না হলেও বিপাকে পড়েছেন জসিমের মতো আর্থিক টানাপড়েনে থাকা মানুষরা। জসিম উদ্দিনের মতো তাদের কাছেও যে প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দেয়, মানুষের কি টাকা বেশি হয়েছে, ২ থেকে ৩ মাস পর পর অতিরিক্ত বিল ধরিয়ে দিচ্ছে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি। একদিকে দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতি অন্যদিকে ভূতুরে বিল। অনেকে চাকরি থেকে ঠিকঠাক বেতনও পাচ্ছেন না। কিন্তু এরমধ্যেই এই ‘অসঙ্গত’ তৎপরতা ‍শুরু করেছে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি। অতিরিক্ত বিল আদায় করা হচ্ছে। সেটি এক মাসের নয়, দুই-তিন মাস পর চলছে এমন নৈরাজ্য আর গাফিলতি। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে বিল ঠিক করে নিতে বলেছেন। এ ধরনের অতিরিক্ত বিলের বিষয়ে জেলা বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ দিলেও পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে এই অতিরিক্ত বিল করেছেন, তাদের বিষয়ে কোনোা পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং দায়-দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ায় তারাও বাড়তি বিল আদায় করেই চলেছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভুল করবেন যিনি, ঠিক করবেন তিনি। কিন্তু এক্ষেত্রে ভুল যদি বিদ্যুৎ অফিস করে তাহলে এই বিল ঠিক করতে কেন গ্রাহককে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে। আর এসব অন্যায় যাদের দেখার কথা সেই এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন যেন মুখে কুলুপ এঁটেছে। এর মধ্যে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এসব অভিযোগ করলেও তারা যেন কিছুতেই পাত্তা দিচ্ছেন না।  বিদ্যুৎ বিলের ভোগান্তি তুলে ধরে উদমারা গ্রামের বাসিন্দা ও শহরের মুদি ব্যাবসায়ী মো. রাজু অভিযোগ করেন, তিনি বিকাশে বিল দিয়ে থাকেন। অক্টোবর মাসে ডাবল বিল আসছেন। ‘লুটেপুটে খাওয়ার আরেক উৎসের নাম বিদ্যুৎ বিল। একই কথা বলেন, রায়পুর এলএম পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ও থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা। প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান ও পুলিশ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তারা বাসায় ছোট পরিবার নিয়ে থাকেন। ফলে বিদ্যুতের ব্যবহারও কম হয়। গিজারও নেই, প্রেসার কুকারও নেই। গত দুই মাসের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ বিল এসেছে এই অক্টোবর মাসে। একই অভিযোগ করেন শহরের সুমাইয়া ইলেকট্রিকের ম্যানেজার ইউনুস। তিনি বলেন, সেপ্টেম্বর মাসে বিল আসে ৯০০ টাকা আর অক্টোবর মাসে আসছে ২৫৫০ টাকা। এ নিয়ে স্থানীয় অফিসে কথা বলেছি। তারা এখন বিল দিয়ে দিতে বলেছেন, পরে অ্যাডজাস্ট করবে। কিন্তু এভাবে যদি সবার কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা বিল আদায় করা হয়, এতে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে। সবাই কি আসলেই এই অতিরিক্ত বিল দিতে পারবে, এসব বিষয় বিবেচনা করা দরকার। দ্রুত সমাধান করা উচিত। এইভাবে গ্রাহকদের হয়রানি করার কোনো মানে নাই।’ একই ধরনের অভিযোগ করছেন শহরের মীরগঞ্জ সড়কে বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন হাওলাদার। তিনি জানান, সেপ্টেম্বরে তার বিল আসে ৬০০ টাকা আর অক্টোবরে আসছে ১৩০০ টাকা। মিয়া রুবেল রহমান বলেন, তাকে ও বিল দেওয়া হয় ১০৬০ টাকা।  তারা বলেন, ‘প্রত্যেকের একটা বাজেট আছে। দ্বিগুণ বিদ্যুৎ বিল বললেই তো দিয়ে দেওয়া যায় না। আবার ঘোষণা দিয়েছে ষথাসময়ে সব বিল পরিশোধ করতে হবে। এত বাড়তি বিল আমরা কেনো দেব। এই স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ হওয়া দরকার।’ এদিকে আবার অনেকে অভিযোগ করেছেন, বিকাশে বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার পরও পরের মাসে বকেয়া বিলসহ যুক্ত করে বিল এসেছে। এখন এইসব সমস্যার সমাধান হবে কীভাবে সেটাই প্রশ্ন। গ্রাহকদের এমন অভিযোগের পর বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছেন না তারা। এ বিষয়ে রায়পুর পল্লী বিদ্যুতের ডিপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘মিটার রিডিং না দেখেই মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। কিছু ভুল তো হবেই। কারও যদি কোনো বিলের অভিযোগ থাকে অফিসে জানাতে পারেন। ভুল থাকলে ঠিক করে দেওয়া হবে। কোনো অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গেই তার সমাধান করার চেষ্টা করছি।’ উল্লেখ্য, রায়পুর, পানপাড়া, রাখালিয়া ও হায়দরগঞ্জ জোনাল অফিসের মাধ্যমে ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভাসহ ৯৫ হাজার ৮৫৬ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া হয়। এক হাজার ৩১৮ কিলোমিটারে আবাসিক ৭৯ হাজার ৯২২ এবং বাণিজ্যিক গ্রাহক সাত হাজার ৬৩৯ জন। রায়পুর সোনাপুর ইউপির রাখালিয়া, চরআবাবিল ইউপির হায়দরগঞ্জ ও চরবংশি ইউপির আখনবাজারে স্থাপিত চারটি অভিযোগ কেন্দ্রের মাধ্যমে গ্রাহকসেবা চলছে। গত আগস্ট থেকে কয়েকটি নিয়মের কারণে গ্রাহকদের মাঝে মিটার সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
১৫ নভেম্বর, ২০২৩
X