বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের চলমান আন্দোলনে আমাদের সকল ধরনের কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। দেশের এই সংকটকালে জামায়াতে ইসলামীর সব নেতাকর্মী ও সদস্যদের রাজপথে আরও কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা রেখতে হবে। জনতার মুক্তির আন্দোলনকে গন্তব্যে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তার মধ্যে দিয়ে সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের বংশাল ও খিলগাঁও জোনের ভার্চুয়াল রুকন সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত নেতা বলেন, দেশের জনগণ একটি সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় জামায়াতে ইসলামীর দিকে চেয়ে আছে। দেশের যে কোনো দুর্যোগে, আন্দোলন-সংগ্রামে আমরা ময়দানে একনিষ্ঠভাবে কাজ করেছি যা সব মহলের কাছে প্রমাণিত। মহান আল্লাহর পক্ষ হতে বিশেষ প্রাপ্তি যে, দেশের যে কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির সবচেয়ে অগ্রগামী এবং পরীক্ষিত সংগঠন। দেশের চলমান সংকট উত্তরণে আমাদের আবারও ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করতে হবে।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেশের মানুষ আজ তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ ইসলামী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবেও মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। সরকার দেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি ও জামায়াত ইসলামীকে নির্বাচন থেকে দূরে রেখে নামসর্বস্ব গুটি কয়েক আজ্ঞাবহ দল নিয়ে ২০১৪ ও ২০১৮ এর মতো আরও একটি প্রহসনের নির্বাচন করতে চায়। জামায়াত নির্দলীয় নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে কেয়ারটেকার সরকারের দাবি আদায় করে দেশে একটি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের বাক-স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, জামায়াত শত জুলুম নির্যাতনের মধ্যেও ময়দানে আন্দোলন সংগ্রামে যে ভূমিকা রেখেছে তা দেশবাসী অবগত আছে। গত ১৯ নভেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে করা আপিল খারিজ করে ন্যায়ভ্রষ্ট রায় প্রদান করে জামায়াতের প্রতি অন্যায় ও জুলুম করেছে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জনগণের প্রতি যে পরিমাণ অন্যায় অবিচার করেছে, দুর্নীতি ও লুটপাট করেছে তা তাদের আতংকিত করে তুলেছে। তারা খুব ভালো করেই জানে যে, ক্ষমতা হারালে তাদের পরিণাম কি হবে। সরকার এত গুম, খুন, হত্যা ও নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দেওয়া সত্ত্বেও জামায়াতের জনপ্রিয়তা কোনো অংশেই কমাতে পারেনি। পশ্চিমা বিশ্বের কাছেও জামায়াত গণতান্ত্রিক ও মডারেট ইসলামী দল হিসেবে স্বীকৃত। সামনের দিনগুলোতে আন্দোলন সংগ্রামে আরও নতুন মাত্রা যোগ হবে। ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন রুখে দিয়ে এ দেশের মাটিতে আওয়ামী অপশক্তিকে আর কোনো ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না।
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সংগ্রামে আমরা জীবন বাজি রেখে লড়াই করে যাচ্ছি। বর্তমান সরকার দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার হরণ করেছে। দেশকে গভীর সংকটে নিমজ্জিত করেছে। এ অবস্থা আর চলতে দেওয়া যায় না। একদফা আন্দোলনের মাধ্যমে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
মন্তব্য করুন