‘প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসক দলে’ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি
দেশের চক্ষু হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের মতো টিকিট কেটে চিকিৎসা নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত সপ্তাহে ছুটির দিনেও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে (এনআইও) চিকিৎসা নিয়েছেন সরকারপ্রধান। প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা কার্যক্রম নিরাপত্তাজনিত কারণে এমনিতেই স্পর্শকাতর। অথচ তাকে চিকিৎসাসেবা দানকারী এই চিকিৎসক দলে রয়েছেন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ডা. আক্তারুজ্জামান লিকু। প্রতিনিধিদলে তার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সমালোচনার তীর হাসপাতালের পরিচালক ডা. গোলাম মোস্তফার দিকে। একই চিকিৎসক দলে বিএনপির পেশাজীবী সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) চিকিৎসকদের অন্তর্ভুক্তিতে হাসপাতালের চিকিৎসকসহ বিভিন্ন মহল থেকে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় ত্রুটি হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছে। এনআইওতে চিকিৎসক এবং এর সঙ্গে সেবাদানকারীদের মধ্যে বিএনপি-জামায়াতপন্থিদের মদদদাতা হিসেবে হাসপাতালের পরিচালকের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা। পরিচালক গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে রয়েছে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগও। অদৃশ্য ক্ষমতাবলে চতুর্থবারের মতো পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। আর এই ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন হাসপাতালের সর্বক্ষেত্রে। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী চোখের নিয়মিত পরীক্ষা করতে হাসপাতালটিতে আসেন গত ৩ মে। এ উপলক্ষে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যদের সমন্বয়ে ১১ জনের একটি দল গঠন করা হয়। এই দলে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক, ড. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, এনআইও হাসপাতালের পরিচালক গোলাম মোস্তফা, ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী, ডা. গোলাম রসুল, ডা. শহিদুল ইসলাম,ডা. আক্তারুজ্জামান লিকু ও ডা. মাহবুবুল হক সজল। হাসপাতালের পরিচালক এই তালিকা লিখিত আকারে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিতদের কাছে হস্তান্তর করেন। পরিচালকের ‘অপত্য স্নেহের’ ফলে এই তালিকায় ঢুকে পড়েন ডা. আক্তারুজ্জামান লিকু। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লিকু হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (উপপরিচালকের চলতি দায়িত্ব) হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি পড়ালেখা শেষ করেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে। সেখানে তিনি ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হন। যদিও লিকু দাবি করেছেন, তিনি ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না। তবে তার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও সে সময়ের অগ্রজ-সহপাঠী-অনুজদের অন্তত ১০ জন নিশ্চিত করেছেন, ওসমানী মেডিকেল কলেজে তিনি ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। তারা বলছেন, রাজনৈতিক কারণে লিকু এমবিবিএস পাস করলেও নিজ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ইন্টার্ন শেষ করেননি। দুই ব্যাচ পরের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ইন্টার্ন সমাপ্ত করেন। প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা দলে থাকার বিষয়ে স্বীকার করে আক্তারুজ্জামান লিকু কালবেলাকে বলেন, ‘ছুটির দিনে বাড়তি দায়িত্ব পালন করেছি। পরিচালক চেয়েছেন বলেই আমি সেই দলে অন্তর্ভুক্ত হই। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা দলের কাছে আমাদের তালিকাও দেওয়া হয়।’ তবে ওসমানী মেডিকেল কলেজে ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন না বলে দাবি করেন তিনি। লিকু বলেন, ‘সে সময় হলে থাকতে হয়েছে বলে যতটুকু রাজনীতি করার প্রয়োজন ততটুকু করেছি। এখন আর এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে ইচ্ছে হয় না, বিষয়টা দুঃখজনক।’ সে সময়ের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি অনিমেষ মিত্র কালবেলাকে বলেন, ‘২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আমাদের মেডিকেলে ছাত্রদলের তিনজনের একটি কমিটি গঠিত হয়। সেই কমিটিতে সভাপতি ছিলেন ৪২তম ব্যাচের আক্তারুজ্জামান লিকু। ৪৩তম ব্যাচের আবু সালেহ রানা ছিলেন সাধারণ সম্পাদক এবং ৪৪তম ব্যাচের সানীকে মনোনীত করা হয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে।’ একই মতামত ব্যক্ত করেছেন তৎকালীন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কল্লোল দে। তিনি বলেন, ‘সে সময় তো আর ফেসবুক এতটা জনপ্রিয় ছিল না, কিন্তু আমরা যারা ক্যাম্পাসে রাজনীতি করতাম, তারা সবাই জানি কারা ছাত্রদল করতেন। লিকু সভাপতি ছিলেন এটা নিশ্চিত।’ এদিকে এনআইওর একজন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক কালবেলাকে বলেছেন, এখানে মূলত বিএনপি-জামায়াতপন্থিদের রাজত্ব চলছে। এর পেছনে রয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র, যার নেতৃত্বে রয়েছেন বর্তমান পরিচালক। তিনি ছাড়া যেন দেশে কোনো চক্ষু বিশেষজ্ঞ নেই। একজনই বারবার পরিচালক নিযুক্ত হচ্ছেন। অথচ চাকরি থেকে তার অবসরের বয়স ৭-৮ বছর আগেই পেরিয়ে গেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই দলে একজন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক রয়েছেন, যার বিরুদ্ধে ড্যাব থেকে পেশাজীবী সংগঠনের নির্বাচনের অভিযোগ রয়েছে। অন্য একজন ড্যাবের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন এবং তিনি বিএনপি সরকারের সময় থেকেই এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করে যাচ্ছেন। অন্য একজনের বিরুদ্ধে ছাত্রজীবনে শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতাও ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি টানা চতুর্থ মেয়াদে এনআইওতে পরিচালক পদে নিয়োগ পান ডা. গোলাম মোস্তফা। দুই বছরের জন্য তাকে আবারও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল দুই বছরের জন্য চুক্তিতে হাসপাতালটির পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। এরপর তিনবারই তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে হাসপাতালের পরিচালক গোলাম মোস্তফা কালবেলাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় বিন্দুমাত্র আশঙ্কা থাকলে আমি তাদের চিকিৎসা দলে রাখতাম না। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষতি হোক—এমন কিছু তো আমি চাইব না। যারা কাজ পারেন না তারা প্রফেশনাল জেলাসি থেকে এসব অভিযোগ করেন।’ ছাত্রদলের সভাপতি, ছাত্রশিবির ও ড্যাবের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এসব প্রসঙ্গে কিছু জানি না। এসব সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকলে তারা কীভাবে পদন্নোতি পায়, রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা কী করে?’ বারবার পরিচালকের পদে নিয়োগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কোনো অদৃশ্য ক্ষমতা নেই। কাজ ভালো পারি, তাই আমাকে এখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনো তদবির করার দরকার পড়েনি।’
১৮ মে, ২০২৪

নিজের উদ্ভাবিত চিকিৎসায় ক্যানসার থেকে বেঁচে ফিরলেন চিকিৎসক
নিজের উদ্ভাবিত নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করে ক্যানসার মুক্ত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এক চিকিৎসক। তিনি মস্তিষ্কের জটিল ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন, যাতে রোগীরা এক বছরের কম সময়ের মধ্যে মারা যান। তবে নিজের উদ্ভাবিত নতুন চিকিৎসাপদ্ধতি ব্যবহার করে ওই চিকিৎসক এক বছরের বেশি সময় ধরে ক্যানসারমুক্ত আছেন।    রিচার্ড স্কোলিয়ার নামের ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, চিকিৎসার এক বছর পরও মরণঘাতি রোগটি নতুন করে আর তার শরীরে বাসা বাধেনি। খবর বিবিসির।  অধ্যাপক স্কোলিয়ার গ্লায়োব্লাস্টোমার নামে ক্যানসারের একটি জটিল ধরনে আক্রান্ত হয়েছিলেন যা খুব মারাত্মক। পরে তার নিজেরই গবেষণার ভিত্তিতে উদ্ভাবন করা একটি পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে তার শরীরে প্রয়োগ করা হয়।  গত বছর পোল্যান্ডে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন রিচার্ড স্কোলায়ার। এরপর জানা যায় তিনি গ্রেড-৪ ক্যানসারে আক্রান্ত। এই ক্যানসারটি গ্লিওব্লাসতোমা নামে পরিচিত। এটি এতটাই মারাত্মক যে, যে ব্যক্তি এই ক্যানসারে আক্রান্ত হন তিনি খুব বেশি হলে এক বছর বা ১২ মাস বাঁচতে পারেন। ৫৭ বছর বয়সী এই চিকিৎসক মেলানোমা নিয়ে গবেষণা করেন। এটি এমন ক্যানসার যেটি শরীরের চামড়ার মাধ্যমে শুরু হয়। এ নিয়ে গবেষণা করে ক্যানসার চিকিৎসার একটি নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন তিনি। গতকাল সোমবার (১৩ মে) রিচার্ড স্কোলায়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি জানান, সর্বশেষ এমআরআইয়ে দেখা গেছে, ক্যানসার তার ব্রেনে ফিরে আসেনি। তিনি বলেছেন, ‘আমি খুবই খুশি।’ প্রফেসর স্কোলায়ার এ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করেছেন তার সহকর্মী প্রফেসর জর্জিনা লংয়ের সঙ্গে। তারা দুজনই অস্ট্রেলিয়ার মেলানোমা ইনস্টিটিউটের সহ-পরিচালক হিসেব কাজ করছেন। তারা ইমিউনথেরাপির ওপর ভিত্তি করে উদ্ধাবিত পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। এরমাধ্যমে শরীরের ইমিউনকে (রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা) ক্যানসারের কোষকে হামলা করার জন্য শিক্ষা দেওয়া হয়। মেলানোমার ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে অস্ত্রোপচারের আগে ক্যানসারের কোষে বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করলে ইমিউনথেরাপি ভালো কাজ করে। প্রফেসর স্কোলায়ার বিশ্বের একমাত্র ব্রেন ক্যানসার আক্রান্ত হিসেবে অস্ত্রোপচারের আগে ইমিউনথেরাপির চিকিৎসা নিয়েছেন। বিশ্বব্যাপী প্রায় তিন লাখ মানুষ গ্লিওব্লাসতোমাতে আক্রান্ত বলে ধারণা করা হয়। প্রফেসর স্কোলায়ারের এই পদ্ধতির মাধ্যমে তার আয়ু বাড়বে সঙ্গে চিকিৎসার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।  
৩০ নভেম্বর, ০০০১

নিজের উদ্ভাবিত চিকিৎসায় ক্যানসার থেকে বেঁচে ফিরলেন চিকিৎসক
নিজের উদ্ভাবিত নতুন চিকিৎসাপদ্ধতি প্রয়োগ করে ক্যানসারমুক্ত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এক চিকিৎসক। তিনি মস্তিষ্কের জটিল ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন, যাতে রোগীরা এক বছরের কম সময়ের মধ্যে মারা যান। তবে নিজের উদ্ভাবিত নতুন চিকিৎসাপদ্ধতি ব্যবহার করে ওই চিকিৎসক এক বছরের বেশি সময় ধরে ক্যানসারমুক্ত আছেন।    রিচার্ড স্কোলিয়ার নামের ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, চিকিৎসার এক বছর পরও মরণঘাতী রোগটি নতুন করে তার শরীর আক্রান্ত করতে পারেনি। খবর বিবিসির।  অধ্যাপক স্কোলিয়ার গ্লায়োব্লাস্টোমার নামে ক্যানসারের একটি জটিল ধরনে আক্রান্ত হয়েছিলেন যা খুব মারাত্মক। পরে তার নিজেরই গবেষণার ভিত্তিতে উদ্ভাবন করা একটি পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে তার শরীরে প্রয়োগ করা হয়।  গত বছর পোল্যান্ডে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন রিচার্ড স্কোলায়ার। এরপর জানা যায় তিনি গ্রেড-৪ ক্যানসারে আক্রান্ত। এই ক্যানসারটি গ্লিওব্লাসতোমা নামে পরিচিত। এটি এতটাই মারাত্মক, যে ব্যক্তি এই ক্যানসারে আক্রান্ত হন তিনি খুব বেশি হলে এক বছর বা ১২ মাস বাঁচতে পারেন। ৫৭ বছর বয়সী এই চিকিৎসক মেলানোমা নিয়ে গবেষণা করেন। এটি এমন ক্যানসার যেটি শরীরের চামড়ার মাধ্যমে শুরু হয়। এ নিয়ে গবেষণা করে ক্যানসার চিকিৎসার একটি নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেন তিনি। গতকাল সোমবার (১৩ মে) রিচার্ড স্কোলায়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি জানান, সর্বশেষ এমআরআইয়ে দেখা গেছে, ক্যানসার তার ব্রেনে ফিরে আসেনি। তিনি বলেছেন, ‘আমি খুবই খুশি।’ প্রফেসর স্কোলায়ার এ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করেছেন তার সহকর্মী প্রফেসর জর্জিনা লংয়ের সঙ্গে। তারা দুজনই অস্ট্রেলিয়ার মেলানোমা ইনস্টিটিউটের সহপরিচালক হিসেব কাজ করছেন। তারা ইমিউনথেরাপির ওপর ভিত্তি করে উদ্ধাবিত পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। এরমাধ্যমে শরীরের ইমিউনকে (রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা) ক্যানসারের কোষকে হামলা করার জন্য শিক্ষা দেওয়া হয়। মেলানোমার ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে অস্ত্রোপচারের আগে ক্যানসারের কোষে বিভিন্ন ওষুধ প্রয়োগ করলে ইমিউনথেরাপি ভালো কাজ করে। প্রফেসর স্কোলায়ার বিশ্বের একমাত্র ব্রেন ক্যানসার আক্রান্ত হিসেবে অস্ত্রোপচারের আগে ইমিউনথেরাপির চিকিৎসা নিয়েছেন। বিশ্বব্যাপী প্রায় তিন লাখ মানুষ গ্লিওব্লাসতোমাতে আক্রান্ত বলে ধারণা করা হয়। প্রফেসর স্কোলায়ারের এই পদ্ধতির মাধ্যমে তার আয়ু বাড়বে সঙ্গে চিকিৎসার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।  
১৪ মে, ২০২৪

৫৭ বছরে এসএসসি পাস, চিকিৎসক হতে চান পুলিশ সদস্য
৫৭ বছর বয়সী ট্রাফিক কনস্টেবল আব্দুস সামাদ এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। চাকরি জীবন শেষে অবসরে গিয়ে হোমিও চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতে চেয়েছেন তিনি। সোমবার (১৩ মে) দুপুরে তার কার্যালয়ে মিষ্টিমুখ করানোর পাশাপাশি ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পুলিশ সুপার বলেন, ‘৫৭ বছর বয়সে এসে এসএসসি পরীক্ষায় এমন ফলাফল করা সত্যিই প্রশংসার। ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল আব্দুস সামাদের এই ফলাফল জীবনযুদ্ধে পিছিয়ে পড়াদের অনন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। তিনি নিজেই শুধু এই পরীক্ষায় বিজয়ী হননি, বরং জেলা পুলিশের আনন্দের একটি উৎস হয়ে উঠেছেন। সারা দিন কঠোর পরিশ্রমের পরও তিনি দমে না গিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য লড়াই করেছেন। তার এই লড়াইকে আমরা সম্মান জানাই।’ আব্দুস সামাদ বগুড়ায় ট্রাফিক পুলিশে চাকরি করেন। আর মাত্র তিন বছর পরই তিনি চাকরিজীবন থেকে অবসরে যাবেন। সেই ইচ্ছা থেকেই এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন আব্দুস সামাদ। তার এই কৃতিত্বে পরিবারের সদস্যরা যেমন খুশি, তেমনি আনন্দে ভাসছে বগুড়া জেলা পুলিশ বিভাগ। এমন ফলাফল জানার পর জেলা পুলিশ সুপার তাকে ডেকে নিয়ে সংবর্ধিত করেছেন। আব্দুস সামাদ নাটোরের মহরকয়া নতুনপাড়া কারিগরি ইনস্টিটিউট থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৪ দশমিক ২৫ পেয়ে উর্ত্তীণ হন তিনি। চাকরিজীবন শেষে অবসরে গিয়ে যেন তিনি হোমিও চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতে পারেন এ জন্যই এই বয়সে লেখাপড়া শিখা। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আশরাফপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সামাদ ১৯৮৭ সালে ৮ম শ্রেণি পাস করে পুলিশের কনস্টেবল পদে যোগ দেন। ব্যক্তিজীবনে দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক তিনি। বড় মেয়েকে লেখাপড়া শেষে বিয়ে দিয়েছেন। বড় ছেলে এইচএসসি পাস করে ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন; আর ছোট ছেলে পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী। আব্দুস সামাদ জানান, চাকরিজীবন প্রায় শেষ দিকে। মেয়ের বিয়ে হয়েছে, এক ছেলে চাকরিতে, অন্যজন লেখাপড়া করছে। চাকরি থেকে অবসরে গিয়ে তিনি কী করবেন ভাবনায় পরেন। তখন সময় কাটানোর জন্যও কিছু করা দরকার, আর সেটিও যেন হয় মানুষের জন্যই ভালো কাজ। সেই ভাবনা থেকেই হোমিও চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছা জাগে। খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন এসএসসি পাস করে হোমিও কলেজে ভর্তি হয়ে ডিএইচএমএস কোর্স সম্পন্ন করতে হয়। অথচ তিনি এসএসসি পাসই করেননি। ফলে হোমিও কোর্স করা নিয়েও পড়েন দোটানায়। পরে কয়েকজন সহকর্মী এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে ২০২২ সালে পুনরায় নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। নাটোর মহরকয়া নতুনপাড়া কারিগরি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়ে সেখান থেকেই এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। সামাদ বলেন, ‘চাকরি করে যেটুকু সময় পেতাম, সেই সময়ে পরিবারের কাজ শেষ করে লেখাপড়া করতে হতো। পরীক্ষা দেওয়ার পর মনে হয়েছে পাশ করব। ফলাফল যা হয়েছে এতেই আমি খুশি। আর আমার পরিবারের সদস্যরাও পাশের খবরে খুব খুশি হয়েছে। আমি পাস করেছি শুনে স্যারেরা (পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা) আনন্দে মিষ্টি এনে আমাকে খাইয়েছেন, ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আমি পাস না করলে বুঝতেই পারতাম না তারা আমাকে এত পছন্দ করেন, ভালোবাসেন।’
১৩ মে, ২০২৪

সহযোগী অধ্যাপক হলেন ৯০ চিকিৎসক
সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৯০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের পারসোনেল-১ শাখার উপসচিব সারমিন সুলতানার সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের পদোন্নতি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৯০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হলো। ৩০ এপ্রিল থেকে পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বর্ণিত কর্মস্থলে বদলি/পদায়ন করা হলো।’ এর মধ্যে ইউরোলজি বিভাগের আটজন, গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগের ১৮ জন, সার্জারি বিভাগের ৬৩ জন ও পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের একজন চিকিৎসক রয়েছেন।
০৮ মে, ২০২৪

চিকিৎসক ছেলের বিরুদ্ধে ইউএনওর কাছে মায়ের অভিযোগ
ছেলেকে ডাক্তার বানাতে গিয়ে সহায় সম্বল সব হারিয়েছেন বাবা-মা। সরকারি চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছেলে সুজাউদৌল্লা এখন গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার। নিজের রক্ত পানি করে চিকিৎসক বানানো সেই ছেলের কাছেই জায়গা হচ্ছে না বৃদ্ধ পিতা-মাতার। ভরণপোষণ না দিয়ে উল্টো পিতা-মাতাকে বাড়ি থেকে বিতারিত করতে চালাচ্ছেন নির্যাতন। অবশেষে ভরণপোষণের দাবি জানিয়ে সোমবার (৬ মে) সকালে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মনিরা বেগম নামে এক মা। অভিযুক্ত চিকিৎসক সুজাউদৌল্লা বর্তমানে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত। তিনি প্রায় দেড় বছর ধরে এ দায়িত্ব পালন করছেন। সুজাউদৌল্লা পৌর সদরের আনন্দনগর মহল্লার খাইরুল ইসলামের ছেলে। বৃদ্ধা মা মনিরা বেগম কালবেলাকে বলেন, উপজেলা পৌর সদরের আনন্দ নগর মহল্লার মো. খাইরুল ইসলামের স্ত্রী মনিরা বেগম। ছেলে সুজাউদ্দৌলাকে ডাক্তারি পড়াতে সবটুকু জমি বিক্রি করে দেন এ দম্পতি। ছেলেকে ডাক্তার বানাতে অনেক কষ্ট করেছেন তারা। কখনো কষ্টের তাপ বুঝতে দেননি ছেলেকে। ছেলেকে ডাক্তারি পড়াতে গিয়ে সহায় সম্বল সব হারিয়ে তারা এখন নিঃস্ব। একমাত্র ছেলে হওয়ায় মাথাগোঁজার ঠাঁইটুকুও লিখে দিয়েছেন ছেলের নামেই। তিনি বলেন, ছেলে চিকিৎসক হলেও তাদের ভরণপোষণ দেন না। পেটের তাগিদে অসুস্থ শরীর নিয়ে ভ্যান চালান তার স্বামী খাইরুল ইসলাম। যা আয় হয় তাতেই কোনোমতে দিনাতিপাত করেন তারা। এখন বাড়ি থেকে তাদের বের করে দিতে চিকিৎসক ছেলে নিয়মিত শারীরিক মানসিক নির্যাতন শুরু করেছেন। স্বামীকে নিয়ে কোথায় যাবেন এর প্রতিকার চেয়ে তিনি ইউএনও অফিসে অভিযোগ দিয়েছেন। খাইরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, আমার সহধর্মিণী অসুস্থ। অসুস্থ মাকে প্রায়ই গালাগাল করেন ছেলে। তিনি সেটা দেখে না দেখার ভান করতেন, বুঝতে দিতেন না কাউকে। অথচ যে মা কখনো নিজে না খেয়ে যাকে খাওয়াতে আজ আমার সেই সন্তান বড় ডাক্তার হয়ে মাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করছেন। গায়ে হাত তুলছেন। তাই ছেলের নামে লিখে দেওয়া ভিটেমাটিও ফেরত চান তিনি। অভিযুক্ত চিকিৎসক সুজাউদ্দৌলা বলেন, পিতামাতা তাকে ডাক্তারি পড়ার খরচ দেননি। তাছাড়া বাবা-মা হওয়ার যোগ্যতাও হারিয়ে ফেলেছেন খাইরুল-মনিরা দম্পতি। তারপরও তিনি ভরণপোষণ দিতে চাইলে তারা কাছে আসেন না। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, পিতামাতার বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার চিকিৎসক সুজাউদৌল্লাকে সতর্ক করেছেন তিনি। কিন্তু তিনি কোনো কথাই শুনছেন না। চিকিৎসক সুজাউদৌল্লার বিরুদ্ধে মায়ের দায়ের করা অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার কালবেলাকে মোবাইল ফোনে বলেন, এরইমধ্যে চিকিৎসক সুজাউদৌল্লাকে হাজির হতে বলা হয়েছে। খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০৭ মে, ২০২৪

চিকিৎসক রকিবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এমসিএইচ ইউনিটের চিকিৎসক মো. রকিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিয়মিত অফিস না করা, জোর করে অধস্তন কোয়ার্টারে থাকা, অধস্তন সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, নিয়মিত রোগী না দেখা, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ না মানাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। যদিও তার দাবি, এসব অভিযোগ সত্য নয়। জেলা পরিবার পরিকল্পনার উপপরিচালক জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগের আলোকে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দিয়েছি। সরেজমিন একাধিক দিন গিয়ে দেখা যায়, গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এমসিএইচ ইউনিটের চিকিৎসক রকিবুল ইসলামের কক্ষটিতে তালা ঝুলছে। তিনি কখন আসেন সে ব্যাপারে দায়িত্বরত কর্মচারীরও কিছু জানা নেই। ফাহিমা বেগম নামে এক নারী তার শিশুকে টিকা দেওয়ার জন্য এমসিএইচ ইউনিটে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দা সবুজ মিয়া বলেন, গত ৩ বছরে নানা কারণে বহুবার এ হাসপাতালে আসা-যাওয়া করেছি। রকিবুল ইসলাম নামে যে একজন ডাক্তার এখানে আছে, তা আপনাদের কাছে শুনলাম। জেলা পরিষদের সদস্য আব্রাহাম লিংকন কালবেলাকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরিব, দুঃখী, অসহায় মানুষের চিকিৎসার জন্য দুর্গম চরের মধ্যে কোটি টাকা খরচ করে ১০ শয্যা বিশিষ্ট আব্দুর রাজ্জাক মা ও শিশু হাসপাতাল নির্মাণ করেছেন। ডাক্তার ও নার্সের অভাবে সেটি তালাবদ্ধ থাকে। তাই চরের এই অসহায় পরিবারগুলোকে চিকিৎসার জন্য মানুষের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে উপজেলা সদর ও জেলা সদরে ছুটতে হয়। এখানে ডাক্তার রকিবুল ইসলাম নামে একজন চিকিৎসককে সপ্তাহে দুই দিন রোগী দেখার জন্য অর্ডার থাকলেও তিনি এখানে আসেনও না, রোগীও দেখেন না। আমি বিষয়টি জেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাসুদ মামুনের সঙ্গে কথা বলি। তিনি আমাকে জানান, ডাক্তার রকিবুল ইসলামকে সপ্তাহে দুদিন সেখানে রোগী দেখার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ডাক্তার রকিবুল ইসলাম এখানে আসেন না। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসের এক কর্মচারী কালবেলাকে বলেন, ডা. মো. রকিবুল ইসলাম গোসাইরহাট উপজেলায় গত বছরের ৯ এপ্রিল যোগদানের পর থেকে এ পর্যন্ত ১০ জন রোগী দেখেছেন কি না সন্দেহ। তিনি তার অধস্তন কর্মচারীদের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন। তার ভয়ে সবাই ভীত। এ বিষয়ে জানতে ডা. রকিবুল ইসলামের গোসাইরহাট (এমসিএইচ) ইউনিটের চেম্বারে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার কক্ষটি তালাবদ্ধ ছিল। মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ কো হলে তিনি কালবেলাকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। তবে আমি বেশিরভাগ সময় পরিদর্শনের কাজে ব্যস্ত থাকি। শরীয়তপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনার উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মাসুদ মামুন কালবেলাকে বলেন, ডা. রকিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের আলোকে আমি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। প্রয়োজন হলে আবারও দেব। আমি তাকে ফোন দিলে তিনি বলেন, আমি এখন মিটিংয়ে আছি। ভিজিটে আছি। ক্যাম্পিং করছি। আমার কাছেও তার গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হয়।
০৬ মে, ২০২৪

সাংবাদিক পরিচয়ে ব্ল্যাকমেইল-চাঁদাবাজি
মেহেরপুরে স্থানীয় একটি পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি ও ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ উঠেছে কথিত দুই সাংবাদিক মো. আব্দুর রউফ ও মো. মহসিন আলীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ওবায়দুল্লাহ বিষয়টি নিয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগের পাশাপাশি ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ হস্তান্তর করেছেন। মেহেরপুর সদর থানার ডিউটি অফিসার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। মেহেরপুর সদর উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী মো. ওবায়দুল্লাহর (৪৮) দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা গেছে, মো. আব্দুর রউফ (৫৮) ও মো. মহসিন আলী (৬০) নিজেদের স্থানীয় দৈনিক আমাদের সূর্যোদয় পত্রিকার প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার ওবায়দুল্লাহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান। এ সময় তারা তাকে সুদি ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে বলেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে তার অপকর্মের সকল প্রমাণ রয়েছে। এ সময় তারা তাকে ভয়ভীতি দেখান এবং মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন।  এ সময় বলেন, তাদের টাকা দিলে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হবে। একইসঙ্গে তারা হুমকি দেন যে, টাকা না দিলে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তাকে নিয়ে খবর প্রকাশ করা হবে। পরে তারা ব্যবসায়ী ওবায়দুল্লাহর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে স্থান ত্যাগ করেন এবং পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরও ১ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য আলটিমেটাম দেন। এরপর বুধবার ২৪ এপ্রিল বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটে আব্দুর রউফ ০১৭১৬১৩৪৮৩০ নম্বর থেকে ওবায়দুল্লাহকে কল দিয়ে আবারো ১ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে হুমকিধমকি দিলে তিনি থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ সময় তিনি তার প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি ক্যমেরায় ধারণকৃত পূর্বে চাঁদা প্রদানের ভিডিওটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। উল্লেখ্য, নব্য সাংবাদিক সাজা আব্দুর রউফ ইতোপূর্বে আইনবহির্ভূতভাবে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দেওয়া এবং চিকিৎসাসেবা দেওয়ার অপরাধে একাধিকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত দ্বারা দণ্ডিত হয়েছেন। বিগত তিন চার দিন যাবৎ তিনি আবার নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে বেড়াচ্ছেন।  মেহেরপুর জেলা তথ্য অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন এ বিষয়ে কালবেলাকে বলেন, এ ধরনের ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজির ঘটনা প্রকৃত সাংবাদিকদের মান ক্ষুণ্ণ করে। এদের বিরুদ্ধে জেলার সকল সাংবাদিকদের সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। ভুক্তভোগীকে অনুরোধ করব পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিতে। জেলা প্রশাসক একটি কমিটি গঠন করে দিলে সেই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশের ভিত্তিতে আমরা অভিযুক্ত কথিত সাংবাদিকদের কালো তালিকাভুক্ত করব। যাতে তারা পরবর্তীতে নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা না নিতে পারে। কথিত সাংবাদিক আব্দুর রউফ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৪ সালে গাংনী উপজেলার বামন্দী ইউনিয়নের চেরাগী পাড়ার ফর্মান আলী নামের এক ব‍্যক্তির মাধ্যমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ডোমকল থেকে বাংলাদেশে আসেন আব্দুর রউফ। সেই সময় তার ঠোঁটের ওপর কাটা দাগ ছিল, যা আঞ্চলিক ভাষায় গর্ণা কাটা বলে পরিচিত। তিনি সেই সময় এলাকায় ঠান্ডা জ্বর নিয়ে চিকিৎসাসেবা দিতে শুরু করলে এলাকায় পরিচিতি লাভ করেন ভারতীয় গর্ণা কাটা ডাক্তার হিসেবে। ২০০৭ সালের দিকে বামন্দী আলহেরা ফার্মেসিতে অস্থায়ী চেম্বার খুলে রোগী দেখা শুরু করেন। একপর্যায়ে আব্দুর রউফ তার ঠোঁট অপারেশন করে গর্ণাকাটা সারিয়ে ফেলেন। সেই সময় গাংনী র‍্যাব ক‍্যাম্প বামন্দীর আলহেরা ফার্মেসিতে অভিযান পরিচালনা করে ভুয়া ডাক্তার হিসেবে আব্দুর রউফকে অর্থদণ্ড প্রদান করে এবং রোগী দেখার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপর আব্দুর রউফ মেহেরপুরে চলে আসেন এবং শহরের পুরাতন বাসস্ট‍্যান্ড এলাকায় একটি ফার্মেসিতে আবার চেম্বার খুলে বসেন। অতঃপর মেহেরপুরের এক নারীকে বিয়ে করে মেহেরপুরের স্থানীয় হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।  অভিযুক্ত অপর সাংবাদিক মো. মহাসিন আলী বেশ কয়েক বছর আগে মেহেরপুর শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের একটি ফাঁকা জায়গায় চায়ের দোকান পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তার চায়ের দোকানে জেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সংবাদকর্মীরা চা খেতে যেতেন। সেই সুবাদে প্রথমে তিনি পত্রিকার হকারি ব্যবসা শুরু করেন। পরে মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ার বিভিন্ন স্থানীয় পত্রিকাতে ছড়া-টিপ্পনী লিখতেন। বর্তমানে মেহেরপুরের গাংনী থেকে প্রকাশিত ডিএফপি বহির্ভূত পত্রিকা আমাদের সূর্যোদয়ের সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত।  মেহেরপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলক কুমার দাস কালবেলাকে বলেন, মাত্র কিছুদিন পূর্বে নিয়মবহির্ভূতভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার অপরাধে আমরা আব্দুর রউফকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছি। চিকিৎসা সেবা সম্পর্কিত তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নাই। বাংলাদেশের চিকিৎসা করার জন্য বিএমডিসির ছাড়পত্র বা অনুমোদন তার নাই। কিন্তু সে নিজের নামের পূর্বে ডাক্তার লিখে পরিচয় দিয়ে বেড়ায়। হঠাৎ করে দুই তিন দিন যাবৎ শুনছি আব্দুর রউফ একজন সাংবাদিক। হয়তো নিজের অপকর্ম ধামাচাপা দিতেই এখন এই রূপ ধারণ করেছে। অভিযুক্ত সাংবাদিক মো. মহাসিন আলীকে ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ওবায়দুল্লাহ একজন সুদ ব্যবসায়ী। আমার কাছে সব রেকর্ড আছে। নিউজ তৈরি হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজে টাকা নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান। আবারো বলেন, আমার কাছে সব রেকর্ড আছে আমি নিউজ লিখছি। ডিএফপির স্বীকৃতির অপেক্ষায় থাকা স্থানীয় দৈনিক আমাদের সূর্যোদয়ের প্রকাশক ও সম্পাদক আবুল কাশেম অনুরাগী কালবেলাকে বলেন, মাত্র একদিন আগে আব্দুর রউফকে আমি আমার প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড দিয়েছি। তবে মহসিন আলী দীর্ঘদিন ধরে আমার পত্রিকায় কাজ করছে। কখনো তার বিরুদ্ধে আমি এ ধরনের অভিযোগ শুনিনি। আপনি যদি কোনো তথ্য প্রমাণ পান আমাকে জানাবেন। আমি নিজেই ব্যবস্থা গ্রহণ করব। কোনো ব্যক্তির অপকর্মের দ্বায় আমার প্রতিষ্ঠান ও আমি নেবো না। মেহেরপুর সদর থানার ওসি সেখ কনি মিয়া চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে কালবেলাকে বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধান চলছে। পরবর্তীতে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেটা আমি জেনে আপনাকে নিশ্চিত করব।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

হাসপাতালে শিশুর মৃত্যু, স্বজনদের হামলায় চিকিৎসক আইসিইউতে
চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসককে মারধর করেছেন স্বজনরা। রোববার নগরের ওআর নিজাম রোডের মেডিকেল সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতালটির ব্যবস্থাপক ইয়াসিন আরাফাত জানান, আহত চিকিৎসক রিয়াজ উদ্দিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন। তিনি হাসপাতালটিতে এনআইসিইউর কনসালট্যান্ট হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। ইয়াসিন আরাফাত বলেন, শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে এক বছর বয়সী একটি শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাচ্চাটি শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। রাতে পিআইসিইউতে রাখার পর সকালে তাকে এনআইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। রোববার সকাল ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়। ইয়াসিন জানান, এরপর সকাল ১১টার দিকে শিশুটির বাবা লোকজন জড়ো করে এনে এনআইসিইউর সামনে চিকিৎসক রিয়াজকে মারধর শুরু করেন। পরে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে শনিবার সকাল ১১টায় হাসপাতালের সিসিটিভির কিছু ফুটেজ কালবেলার হাতে এসেছে। তাতে দেখা গেছে, প্রথমে শিশুটির কয়েকজন স্বজন কেভিনের ভেতরে ঢুকে ওই চিকিৎসকের ওপর চড়াও হন। এরপর একে একে অনেকেই ওই চিকিৎসকের ওপর হামলা শুরু করেন। এলোপাতাড়ি কিল-ঘুসি মারা হয় তাকে। হামলা থেকে বাঁচতে তিনি বারবার কেবিনে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ১৮ থেকে ২০ জন তার ওপর হামলা চালানোয় তিনি জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়েন। মাটিতে পড়ে যাওয়ার পরও তাকে সারা শরীরে লাথি মারতে থাকেন সবাই। হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে শিশুটির ঠিকানা লেখা হয়েছে সীতাকুণ্ড উপজেলার বিএম ডিপো এলাকা। তার বাবার নাম সুমন। চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় রোববার রাতে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করা হয়েছে মেডিকেল সেন্টারের পক্ষ থেকে। এতে শিশুটির বাবা এবং অজ্ঞাত আরও ১৮ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদিকে চিকিৎসক পেটানোর অভিযোগে করা মামলায় প্রধান সন্দেহভাজনসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। গত রাতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের ধরা হয় বলে জানিয়েছেন পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

খতনার সময় লিঙ্গ কর্তন, ১৫ দিনেও রক্ত বন্ধ হয়নি
মহেশখালীর মাতারবাড়িতে খতনা করার সময় আলভী ফারাভী নামে এক শিশুর লিঙ্গ কেটে ফেলেছেন আব্দুল ওয়াদুদ নামে এক পল্লী চিকিৎসক। রোববার (১৪ এপ্রিল) সকালে শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. রাজিব। ভুক্তভোগী শিশু আলভী ফারাভী উপজেলার সাইরার ডেইল এলাকার আব্দুল কাদেরের ছেলে।  এর আগে শনিবার (৩০ মার্চ) উপজেলার সাইরার ডেইল এলাকায় খতনা করতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে,  গত ৩০ মার্চ শিশু ফারাভীকে খতনা করতে আসেন পল্লী চিকিৎসক আব্দুল ওয়াদুদ। পল্লী চিকিৎসক আব্দুল ওয়াদুদ জোর করে খতনা করতে চাইলে শিশুটি পালিয়ে বাথরুমে চলে যায়। সেখান থেকে জোর করে এনে খতনা করেন তিনি। পরে সেলাই করে দিয়ে চলে গেলেও শিশুটির রক্ত পড়া বন্ধ হয়নি। পরে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে অবস্থার অবনতি ঘটলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবার। এখন পর্যন্ত শিশুটি রক্ত পড়া বন্ধ হয়নি। লিঙ্গ হারিয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে শিশুটি। আলভীর বাবা আবদুল কাদের বলেন, খতনার নামে পল্লী চিকিৎসক আব্দুল ওয়াদুদ আমার ছেলের লিঙ্গ কেটে ফেলেছে। সে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের পাশাপাশি তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই। এ বিষয়ে জানতে পল্লী চিকিৎসক আব্দুল ওয়াদুদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় জানার পর ফোন বিছিন্ন করে দেন তিনি। মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহাফুজুল হক কালবেলা বলেন, পল্লী চিকিৎসকের খতনা করার অনুমোদন নেই। তারা এ ধরনের চিকিৎসা করতে পারে না। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে পল্লী চিকিৎসককে দায় নিতে হবে।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪
X