দাম বাড়ল জ্বালানি তেল ও গ্যাসের
চার ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও শিল্পের ক্যাপটিভ পাওয়ারে সরবরাহকৃত গ্যাসের দামও বেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। পুনর্নির্ধারিত এ মূল্য গতকাল রাত ১২টার পর থেকেই কার্যকর হয়েছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ভোক্তা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১ টাকা বেড়ে হয়েছে ১০৭ টাকা। আড়াই টাকা বেড়ে পেট্রোল হয়েছে লিটারে ১২৪ টাকা ৫০ পয়সা, আগে ছিল ১২২ টাকা। আড়াই টাকা বেড়েছে অকটেনেও। বর্তমান দাম ১২৮ টাকা ৫০ পয়সা। এর আগে গত ৩১ মার্চ বিশ্ব বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশে বহুল ব্যবহৃত ডিজেল ও কেরোসিনের দাম কমানো হয়েছিল। ওই সময় এই দুটি জ্বালানি পণ্যের দাম লিটারপ্রতি কমানো হয়েছিল ২ টাকা ২৫ পয়সা। লিটারপ্রতি ডিজেল ও কোরোসিনের দাম ১০৮ টাকা ২৫ পয়সা থেকে কমে হয়েছিল ১০৬ টাকা। আর প্রতি লিটার পেট্রোল আগের মতোই ১২২ টাকা এবং প্রতি লিটার অকটেন ১২৬ টাকায় রাখায় হয়। তবে পেট্রোল ও অকটেনের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল। গ্যাসের দাম বৃদ্ধি-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, শুধু বিদ্যুৎ ও ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ শ্রেণিতে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। এতে ঘনমিটারে ৭৫ পয়সা বৃদ্ধি করে বিদ্যুৎ শ্রেণিতে ১৫ টাকা ৫০ পয়সা ও ক্যাপটিভ বিদ্যুতে ৩১ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যান্য শ্রেণিতে গ্যাসের মূল্য অপরিবর্তিত থাকবে।
০১ মে, ২০২৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে জ্বালানি তেল
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের সরকারি বিধি-নিষেধকে তোয়াক্কা না করেই খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে জ্বালানি তেল। উপজেলার নবীনগর পৌর শহরসহ বিভিন্ন ইউপির হাট-বাজারে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই যত্রতত্র পেট্রোল, ডিজেল ও অকটেনের মতো দাহ্য পদার্থ বিক্রি করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। এতে যে কোনো সময়ে ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। সরেজমিন দেখা যায়, পৌর শহরের তিতাস এন্টারপ্রাইজ, মোখলেছ এন্টারপ্রাইজ, দুদুমিয়া অ্যান্ড সন্স এ তিনটি দোকানের জ্বালানি তেল বিক্রির বৈধ লাইসেন্সের অনুমোদন রয়েছে। অথচ সব নিয়মনীতি উপেক্ষা করে শুধু পৌরশহরেই প্রায় ১০টি জ্বালানি তেল বা পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ বিক্রির দোকান গড়ে উঠেছে। এসব দোকান যেমন অবৈধ, তেমনি এদের তেল সংগ্রহ পদ্ধতিও অবৈধ। এ ছাড়াও ইউনিয়নগুলোতে রয়েছে অসংখ্য অবৈধ দোকান। আর এসব দোকান থেকে নাশকতাকারীরা জ্বালানি তেল ক্রয় করে বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালাতে পারবে খুব সহজেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পেট্রোলিয়ামসংক্রান্ত আইন অনুসারে বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়া কোনো দোকানে জ্বালানি তেল বিক্রি করা যাবে না। জ্বালানি তেল বিক্রির জন্য আধাপাকা ঘর, অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার, মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্র এবং ট্রেড লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব লাইসেন্সের তোয়াক্কা না করে শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে জ্বালানি তেলের ব্যবসা পরিচালনা করছেন। নবীনগরের সর্বত্র ছোটবড় বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে দাহ্য পদার্থ। আর এভাবে জ্বালানি তেল বিক্রিতে সাধারণ মানুষ থাকে প্রতিটি মুহূর্তে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায়। রাসায়নিক সারের দোকান, এলপিজি’র দোকানে ও চলছে অকটেন, ডিজেল, পেট্রোল ও কেরোসিন বিক্রি। বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প থেকে সংগৃহীত এবং চোরাইপথে আসা গ্যাস কনডেনসেট বা তলানিসহ অন্যান্য নিম্নমানের পদার্থ মিশিয়ে তেল বিক্রি করা হয়। মাপে কম দেওয়াও অবৈধ তেল ব্যবসায়ীদের আরেকটি প্রবণতা। ভুক্তভোগীরা জানান, এসব নিম্নমানের ভেজাল তেল ব্যবহার করায় গাড়ির ইঞ্জিনের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। পাশাপাশি এর কালো ধোঁয়ায় পরিবেশও দূষিত হচ্ছে। এ তেলে যাত্রীদের চোখ জ্বলে এবং ইঞ্জিন থেকেও বেশি শব্দ হয়। এসব ভেজাল চোরাই তেলে গাড়ির মাইলেজ কমে যায়। শহরের তিতাস এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী দুলাল সাকী বলেন, অবৈধভাবে অনেকে জ্বালানি তেল বিক্রি করছেন। যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ তাদের কারো কাছেই বিস্ফোরক লাইসেন্স ও অগ্নি নির্বাপক অক্সিজেন সিলিন্ডার নেই।   মোখলেস এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোখলেছ জানান, অবৈধভাবে অনেকেই জ্বালানি তেলের ব্যবসা করছে। কিন্তু তারা আমাদের কাছ থেকেই এ তেলগুলো নিচ্ছে। আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হবে। তাই তাদের বিরুদ্ধে আমরা প্রশাসনে কোনো অভিযোগ করি না। নবীনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, খুব দ্রুতই অবৈধ জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

জ্বালানি তেল কেনাবেচা শুরু করতে পারেনি বিপিসি
সারা দেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে জ্বালানি তেল কেনাবেচা করতে সরকারি নীতিমালা প্রকাশের ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো কাজই শুরু করতে পারেনি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরশেন (বিপিসি)। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, অনলাইন বা ডিজিটাল পদ্ধতিতে জ্বালানি তেল বিক্রি করার আগে এ-সংক্রান্ত সফটওয়্যার তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি এ পদ্ধতিতে তেল কেনাবেচায় প্রয়োজন প্রশিক্ষিত জনবল। তাই অনলাইনে কেনাবেচা শুরু করতে সময় লাগবে। তবে কত সময় লাগবে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে জানতে বিপিসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে কোম্পানিটির পরিচালক (অপারেশন্স ও পরিকল্পনা) ও অতিরিক্ত সচিব খালিদ আহম্মেদ এ প্রসঙ্গে কালবেলাকে বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে জ্বালানি বিক্রির নীতিমালার গেজেট প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো কাজ শুরু করতে পারিনি। কবে নাগাদ শুরু হতে পারে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা এখনই বলা সম্ভব নয়। প্রক্রিয়া শুরু করতে আমাদের বেশকিছু প্রস্তুতি নিতে হবে। গত ৩ জানুয়ারি প্রকাশিত নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো ক্রেতা ডিজিটাল পদ্ধতি বা অনলাইনে জ্বালানি তেল কিনতে হলে তাকে বিপিসি অনুমোদিত কোম্পানির অ্যাপস বা ওয়েবলিঙ্কে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির নাম, এনআইডি নম্বর, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন নম্বর (প্রযোজ্যক্ষেত্রে), মোবাইল নম্বর, ডেলিভারি লোকেশনের বিবরণ দিতে হবে। ব্যাংক, মোবাইল ব্যাংকিং ও ডিজিটাল গেটওয়ের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করতে হবে। কর্মকর্তাদের মতে, এই পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে হলে বিপিসির একটি শক্তিশালী ও নিরাপদ ইন্ট্রিগ্রেটেড সফটওয়্যার তৈরি করতে হবে। যেখানে বিপিসির অধীন সব বিক্রয় কোম্পানি থাকবে। পাশাপাশি বিক্রির যাবতীয় তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে দেখা যাবে—এমন ব্যবস্থাও থাকতে হবে। এগুলো সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। অনলাইনে জ্বালানি বিক্রির উদ্যোগের কারণ সম্পর্কে কর্মকর্তারা জানান, প্রথমত সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চায়। এজন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে জ্বালানি বিক্রিতে অনিয়ম কমে আসবে। পাশাপাশি তেল বিপণনের ক্ষেত্রে পরিবহনে যে সমস্যা হয়, তা হবে না। কারণ, নির্দিষ্ট সার্ভিস চার্জের বিনিময়ে চাহিদার জ্বালানি তেল গ্রাহকের কাছে কোম্পানিগুলোই পৌঁছে দেবে। তেল পরিবহনের সঙ্গে জড়িতদের হুটহাট ধর্মঘট করার সুযোগ কমে আসবে। এ ছাড়া জ্বালানি কিনতে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষার ঝামেলাও এড়াতে পারবে প্রধান শহরগুলোর বাসিন্দারা। দিন দিন শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও আবাসিক ভবনে জ্বালানি তেলের ব্যবহার বাড়ছে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়িও বাড়ছে। যানবাহনের মালিকরা সময়ের অভাবে অনেক সময় সরাসরি নিজেরা কিনতে পারে না। আবার যাদের দিয়ে তেল সংগ্রহ করে, তাদেরও বিশ্বাস করতে পারে না। তেল কম বা চুরির অভিযোগ তো আছেই। এ ছাড়া নাশকতা বা অপব্যবহারের আশঙ্কা থেকে প্রায়ই পাম্প হতে খোলা তেল বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়ে থাকে। সব ধরনের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখেই এ পদ্ধতিতে বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল পদ্ধতি চালু হলে এ সমস্যাগুলো থাকবে না। এই পদ্ধতি চালু হলে স্বচ্ছ নজরদারি নিশ্চিত হবে এবং ঝুঁকিও কমবে। অনলাইনে জ্বালানি বিপণন পদ্ধতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে। পাশের দেশ ভারতে ‘ডোর টু ডোর ডেলিভারি অব ডিজেল’ শীর্ষক নীতিমালা রয়েছে।
১৪ জানুয়ারি, ২০২৪

১৫ হাজার কোটি টাকার জ্বালানি তেল কিনবে সরকার
আসছে বছরে (২০২৪ সাল) প্রথম ছয় মাসে ১৫ হাজার ৮২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার জ্বালানি তেল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান জানিয়েছেন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে জিটুজি ভিত্তিতে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন সময়ের জন্য ১৮ লাখ ৫০ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে খরচ হবে ১৫ হাজার ৮২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এ ছাড়াও জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের আরেক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে পেট্রোবাংলার মাধ্যমে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) আইন-২০২১’-এর আওতায় ইউএসএর এক্সলারেট এনার্জি এলপির কাছে থেকে (২০২৪ সালের দ্বিতীয়) ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যেখানে ব্যয় হবে ৫৪২ কোটি ২৬ লাখ ৯৭ হাজার ২৮০ টাকা। 
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৩

চলতি মাস থেকেই কার্যকর / বিশ্ববাজারের সঙ্গে মূল্য সমন্বয় করে বিক্রি হবে জ্বালানি তেল
আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মূল্য সমন্বয় করে দেশের বাজারে জ্বালানি তেল বিক্রি করা হবে। পরিকল্পনার শুরুতে তিন মাস অন্তর অন্তর বিশ্ববাজারের সঙ্গে মূল্য সমন্বয়ের চিন্তা করা হলেও এখন তা করা হবে প্রতি মাসেই। এটি কার্যকর করা হচ্ছে চলতি মাস থেকেই। আগামী সপ্তাহে জ্বালানি বিভাগের এক বৈঠকের পরই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে যে শর্তগুলো দিয়েছিল, তার একটি ছিল স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ। গত ৩০ জুন বাংলাদেশে সফরে যাওয়া আইএমএফ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে ১ সেপ্টেম্বর থেকে মূল্য সমন্বয়ের বিষয়টি কার্যকর করার কথা বলা হলেও প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে না পারায় দেরি হচ্ছে বলে জ্বালানি বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান। ওই কর্মকর্তা জানান, অক্টোবরে আইএমএফের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসবে। এর আগেই বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণের ঘোষণা দেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, চলতি মাসে মূল্য সমন্বয় কার্যকরের নির্দেশনা দিয়েছি। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে। এখন ডিজেলে লিটারপ্রতি ১৩ থেকে ১৪ টাকা লোকসান হচ্ছে। ফলে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, গত মাসে মূল্য সমন্বয়ের ফর্মুলা চূড়ান্ত করে জ্বালানি বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এখন জ্বালানি বিভাগ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। প্রতি মাসে দাম সমন্বয় করার কথা বলা হয়েছে। জ্বালানি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, বিপিসি থেকে পাঠানো মূল্য সমন্বয়ের প্রস্তাবটি নিয়ে একাধিক সভা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি সভা হবে। সেখানে বিশ্ব বাজারের সঙ্গে দেশের বাজারের জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয়ের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। তার পরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। জানা গেছে, বিশ্ব বাজারের সঙ্গে মূল্য সমন্বয়ের প্রক্রিয়াতে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ভোক্তা পর্যন্ত জ্বালানি তেল পৌঁছাতে বিভিন্ন ধাপের খরচ হিসাব করা হবে। এর সঙ্গে যুক্ত হবে মূল্য সংযোজন কর, আমদানি ভ্যাট, উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যয় এবং বিপিসির মুনাফা। এসব যোগ করে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করা হবে। এর ফলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে দেশেও বাড়বে। আর কমলে দেশে স্বয়ংক্রিয় ভাবে কমে যাবে। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে দাম নির্ধারণ করা হলে এ খাতে সরকারের কোনো লোকসান বা ভর্তুকি থাকবে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বয়ংক্রিয় ফর্মুলা বাস্তবায়ন হলে বিশ্ববাজারে ঘন ঘন জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধি দেশের বাজেটের ওপর চাপ ফেলবে না। তখন এ খাতে ভর্তুকি দিতে হবে না। বিপিসির লোকসান বলে কিছু থাকবে না। এতদিন মূল্য নির্ধারণে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকায় বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করতে হয়েছিল। নতুন পদ্ধতি বাস্তবায়ন হলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমার সুবিধা সরাসরি ক্রেতারা পাবেন। আর বৃদ্ধি পেলে তাও ভোক্তাদের দিতে হবে। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি নির্ধারণ করা হলে সবার জন্যই ভালো। ২০১৯-২০ সালে জ্বালানি তেলের দাম রেকর্ড কমলেও দেশের বাজারে দাম খুব একটা কমেনি। জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে, সরকার একটা পর্যায়ে ডিজেল পেট্রোলের দামও বাড়িয়ে দিত; কিন্তু জ্বালানি তেলের দাম কমলেও সেভাবে কমানো হয়নি। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে যদি দাম নির্ধারণ করা হয়, আমার মতে তাতে সবচেয়ে লাভবান হবেন ক্রেতারা। সরকারের হিসেব বলছে, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ২০২১-২২ অর্থবছরে বিপিসি প্রায় ২ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা লোকসান করেছে। একই কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরেও লোকসানের আশঙ্কা করছে বিপিসি। গত বছরের ৬ আগস্ট লোকসান কমাতে হুট করেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়। এদিন ডিজেল ও কেরোসিন লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ৮০ থেকে ১১৪ টাকা, অকটেন লিটারে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ৮৯ থেকে ১৩৫ টাকা, পেট্রোল লিটারে ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ৮৬ থেকে ১৩০ টাকা করা হয়। প্রতিবেশী দেশ ভারতে বহুদিন ধরেই ডায়নামিক ডেইলি প্রাইসিং মেথড অবলম্বন করা হচ্ছে। সেখানে মাসিক হিসাবে নয়, প্রতিদিন বেন্ট ক্রুড অয়েল বা অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বিবেচনায় দেশের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হয়। আবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ঘণ্টায় তেলের দাম নির্ধারণ হয়ে থাকে। যুক্তরাজ্যে প্রতিদিনই জ্বালানি তেলের দাম ওঠানামা করে; কিন্তু সেখানে সরকারি কোনো সংস্থা সেটা নির্ধারণ করে না। ক্রুড অয়েলের দাম, সরকারি কর, ভ্যাট ইত্যাদির সঙ্গে নিজেদের মুনাফা মিলিয়ে পাম্প মালিকরাই প্রতিদিন সেটা ঠিক করেন। ফলে একই দিন একেক এলাকায় তেলের দাম একেক রকমও হতে পারে।
০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডাকল জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা
জ্বালানি বিক্রয়ের ওপর কমিশন বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবি পূরণের বেঁধে দেওয়া সময় পার হওয়ায় ‌সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জ্বালানি ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দিয়েছেন জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা।   কেন্দ্রীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে খুলনার খালিশপুরস্থ ট্যাংকলরি ভবনে বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি, খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়ন এবং পদ্মা মেঘনা ও যমুনা ট্যাংকলরি শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সমন্বয়ে এক সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়।   জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের তিন দফা দাবি হচ্ছে, জ্বালানি তেল পরিবহনকারী ট্যাংকলরির অর্থনৈতিক জীবনকাল ৫০ বছর করা, জ্বালানি তেল বিক্রয়ের ওপর প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট বিধায় প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সুস্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করা। সভায় সভাপতিত্ব করেন জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির খুলনা বিভাগীয় সভাপতি আব্দুল গফফার বিশ্বাস। সভায় বক্তব্য রাখেন জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির খুলনা বিভাগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এম মোড়ল আব্দুস সোবহান, সাধারণ সম্পাদক শেখ মুরাদ হোসেন, বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি এম মাহবুব আলম, খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মীর মোকছেদ আলী, সাধারণ সম্পাদক মো. আলী আজিম, পদ্মা মেঘনা যমুনা ট্যাংকলরি শ্রমিক কল্যাণ সাধারণ সম্পাদক সভাপতি আবুল কালাম কালু, পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির নেতা মো. মুরাদুজ্জামান মুরাদ, রেজাউল করিম রেজা, আবুল মান্নান খান, রুহুল আমিন ফারাজি, শেখ জামিরুল ইসলাম, কাজী রফিকুল ইসলাম নন্টু, শেখ আশিকুজ্জামান, মিজানুর রহমান মিজু প্রমুখ। মালিক সমিতির নেতারা বলেন, জ্বালানি তেল বিক্রির ওপর কমিশন বৃদ্ধিসহ ৩ দফা দাবি পূরণে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে সরকার দাবি পূরণ না করায় ৩ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ থাকবে। ৪ বছর ধরে একই এবং যৌক্তিক দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। সংশ্লিষ্টজন ৪ বছর ধরে কয়েক বার আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, প্রতিবারই সময় নিয়েছেন কিন্তু বাস্তবায়ন করেননি। ফলে বাধ্য হয়ে আমাদের তেল উত্তোলন পরিবহন বন্ধের কর্মসূচি ঘোষণা করতে হয়েছে এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। সভায় শ্রমিক নেতারা তাদের বক্তব্য বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে এবং শ্রমিকরা এ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণাসহ মালিকদের সঙ্গে আন্দোলনে সব সময় যুক্ত থাকবে। উল্লেখ্য, ২৩ আগস্ট  খুলনার নিউ মার্কেট এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় জ্বালানি তেল বিক্রয়ের ওপর কমিশন বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবি পূরণে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা।  
৩১ আগস্ট, ২০২৩

জ্বালানি তেল উত্তোলন বন্ধের ঘোষণা
দাবি বাস্তবায়িত না হলে ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতি এবং বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দষ্টিকালের জ্বালানি তেল উত্তোলন এবং পরিবহন থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটি।  রোববার (২৭ আগস্ট) দুপুরে ধানমণ্ডির সীমান্ত স্কয়ারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ পেট্রল পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদুল করিম কাবুল। তারা বলেন, আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন ও সেই সঙ্গে গেজেট প্রকাশ না করা হলে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দষ্টিকালের জন্য সারা দেশের সব জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা জ্বালানি তেল উত্তোলন ও পরিবহন থেকে বিরত থাকবে। তিন দফা দাবি হলো- ১. জ্বালানি তেল বিক্রয় কমিশন ৭.৫০ শতাংশ নির্ধারণ করা। ২. পেট্রল পাম্পের ব্যবসায়ীরা যে কমিশন এজেন্ট, তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা।  ৩. (ক) ট্যাংকলরি ভাড়ার ওপর ভ্যাট সংযুক্ত নয়, এ বিষয়ে সুস্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করতে হবে। (খ) ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে ট্যাংকলরির ইকোনমিক লাইফের জন্য আলাদাভাবে সুস্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করতে হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান রতন, বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব শেখ ফরহাদ হোসেন, বাংলাদেশ পেট্রল পাম্প মালিক সমিতির রাজশাহী বিভাগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল, রাজশাহী বিভাগের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল আউয়াল জ্যোতি এবং খুলনা বিভাগের সভাপতি আবদুল গাফফার বিশ্বাস ও কুমিল্লা জেলার সভাপতি মো. কামাল চৌধুরীসহ বিভিন্ন বিভাগ ও জেলার নেতারা।
২৭ আগস্ট, ২০২৩

১ আগস্ট থেকে জ্বালানি তেল পরিবহন বন্ধের আলটিমেটাম
১ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে ট্যাঙ্কলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন খুলনা বিভাগীয় কমিটি। গতকাল রোববার খুলনা ট্যাঙ্কলরি ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতাদের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়। সংগঠনের নেতারা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তেল বিক্রির ওপর ব্যবসায়ীদের প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ও জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট হিসেবে গেজেট প্রকাশসহ তিন দফা দাবি ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে মেনে নিতে হবে। যদি দাবি মানা না হয়, তবে ১ আগস্ট থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রাখা হবে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ট্যাঙ্কলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব শেখ ফরহাদ হোসেন। এ সময় বিভাগীয় কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি এম মাহাবুব আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মিরাউল ইসলাম, জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির সভাপতি শেখ আব্দুল গফফার বিশ্বাস, সহসভাপতি মোড়ল আব্দুস সোবহান, সাধারণ সম্পাদক শেখ মুরাদ হোসেন, আব্দুল মান্নন খান, শেখ জামিরুল ইসলাম, শেখ জাহাঙ্গীর হোসন, শেখ রফিকুল ইসলাম মন্টু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
১০ জুলাই, ২০২৩

পাইপলাইনেই ৮২ হাজার টন জ্বালানি তেল খালাস শুরু
সাগরের তলদেশে এই প্রথম পাইপলাইনের মাধ্যমে তেলবাহী ট্যাঙ্কার থেকে জ্বালানি তেল খালাস শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে ইতিহাস সৃষ্টি হলো বিপিসির তেল সরবরাহ ব্যবস্থাপনায়। সৌদি আরব থেকে ৮২ হাজার টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল নিয়ে আসা ‘এমটি হোরাই’ ট্যাঙ্কার থেকে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় পরীক্ষামূলক এই কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে বিকেল ৪টায় বঙ্গোপসাগরের বহির্নোঙ্গরে স্থাপিত সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ের সঙ্গে জাহাজটির পাইপলাইনের সংযোগ স্থাপন করা হয়। জানা গেছে, জাহাজটি সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ে (ভাসমান জেটি) নোঙর করে। সেখান থেকে সাগরের তলদেশ দিয়ে ১১৬ কিলোমিটার লম্বা পাইপলাইনের মাধ্যমে মহেশখালী ও আনোয়ারা হয়ে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় জ্বালানি তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারিতে নেওয়া হবে এই তেল। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের জিটুজি ভিত্তিতে ৭ হাজার ১২৫ কোটি টাকায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড। ১২ দিন আগে জাহাজটি নোঙর করলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে তেল খালাস সম্ভব হয়নি। অবশেষে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাস শুরু হবে। কর্ণফুলী নদীতে তেল খালাসের বিশেষায়িত জেটিতে বড় ট্যাঙ্কার ভিড়তে না পারায় জ্বালানি তেল নিয়ে আসা বড় ট্যাঙ্কারগুলো সনাতন পদ্ধতিতে প্রথমে সাগরে নোঙর করে রাখা হতো। এরপর ছোট ট্যাঙ্কারের মাধ্যমে তেল স্থানান্তর করে জেটিতে এনে পাইপের মাধ্যমে খালাস করা হতো। এতে এক লাখ টন তেলবাহী একটি ট্যাঙ্কার থেকে তেল খালাসে ১০ দিন বা তারও বেশি সময় লাগত। এতে তেল খালাসে খরচ ও সময় বেশি লাগায় ২০১৫ সালে ‘সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং’ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। নতুন প্রকল্পের আওতায় পাইপলাইনের মাধ্যমে মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় প্রায় এক লাখ টন জ্বালানি তেল খালাস সম্ভব। জ্বালানি তেল খালাসের জন্য ভাসমান জেটিতে ট্যাঙ্কার ভেড়ানো, টাগবোটসহ যাবতীয় সহায়তা দিচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)। চবকের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল কালবেলাকে বলেন, প্রকল্পটির আওতায় ১১৬ কিলোমিটার লম্বা দুটি সমান্তরাল পাইপলাইন বসানো হয়েছে। একটি পাইপলাইন দিয়ে অপরিশোধিত তেল খালাস শুরু করা হলো আজ। অন্য পাইপলাইন দিয়ে শিগগির পরিশোধিত ডিজেল খালাস শুরু হবে। এর মাধ্যমে ৮২ হাজার টনের বিশাল এ তেলের চালান মাত্র দুই দিনেই খালাশ করা সম্ভব বলে জানান তিনি। যা আগে লাইটারেজ জাহাজের মাধ্যসে খালাস করতে সময় লাগত ১২-১৪ দিন। এতে বছরে প্রায় হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। মহেশখালীর কালারমারছড়া ইউনিয়নে উপকূল থেকে ছয় কিলোমিটার পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান জেটি বা সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং স্থাপন করা হয়েছে। এই ভাসমান জেটি থেকে ৩৬ ইঞ্চি ব্যসের দুটি আলাদা পাইপলাইনের মাধ্যমে জাহাজ থেকে প্রথমে তেল নিয়ে আসা হবে কালারমারছড়ায় পাম্প স্টেশন ও ট্যাঙ্ক ফার্মে। সেখানে দুই লাখ টন ধারণক্ষমতার ছয়টি ট্যাঙ্ক রয়েছে। সেখান থেকে ৭৪ কিলোমিটার লম্বা পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল আনা হবে আনোয়ারার সমুদ্র উপকূলে। সেখান থেকে ৩৮ কিলোমিটার পাইপলাইন পাড়ি দিয়ে তেল নেওয়া হবে পতেঙ্গায় ইস্টার্ন রিফাইনারিতে।
০৩ জুলাই, ২০২৩

আধুনিক পদ্ধতিতে জ্বালানি তেল খালাস শুরু ২৫ জুন
উন্নত দেশের মতো দেশে আধুনিক পদ্ধতিতে জ্বালানি তেল খালাসের কার্যক্রম ২৫ জুন শুরু হচ্ছে। আমদানি করা পরিশোধিত ও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল জাহাজ থেকে গভীর সমুদ্রে খালাস করে পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবহন করতে নির্মিত হয়েছে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং। এখন কমিশনিংয়ের জন্য অপেক্ষায় আছে পাইপলাইনটি। শুরুতে ৮২ হাজার টন অপরিশোধিত তেল পরিবহনের মধ্য দিয়ে পাইপলাইনটির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে। ‘ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপ লাইন’ একটি বিশেষায়িত প্রকল্প। পেট্রোলিয়াম তেল পরিবহনের ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তিসমৃদ্ধ এ ধরনের প্রকল্প বাংলাদেশে এটিই প্রথম। এরই মধ্যে কমিশনিং কার্যক্রম ঠিকমতো সম্পন্ন করতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) পরিচালক (অপারেশন্স ও পরিকল্পনা) খালিদ আহম্মেদকে প্রধান করে আট সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ বলেন, সব ঠিক থাকলে ২৫ জুন পাইপলাইনের কমিশনিং করব। তিনি জানান, এর ফলে জ্বালানি তেল পরিবহনের অনেক টাকা সাশ্রয় হবে। সময়ও কম লাগবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, এসপিএম প্রকল্পটি কমিশনিংয়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে ৭ জুন জ্বালানি সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে সভা হয়। ওই সভায় প্রকল্পটির ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের চাহিদার বিষয়ে আলোচনা হয়। চাহিদার মধ্যে রয়েছে ৮৫ হাজার টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল, তেলবাহী জাহাজ টেনে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং বয়াতে সংযোগ করতে তিনটি টাগবোট, একটি স্পিডবোট এবং তেল ছড়িয়ে পড়া রোধে অয়েল বুম। এ চাহিদার বিপরীতে এরই মধ্যে সৌদি আরবের কোম্পানি সৌদি আরামকো থেকে ৮২ হাজার টন অপরিশোধিত তেল সরবরাহসহ বাকি বিষয়গুলো নিশ্চিত করা হয়েছে। ৯০ একরের কাছাকাছি জায়গা অধিগ্রহণ করে প্রকল্পের জন্য ছয়টি স্টোরেজ ট্যাঙ্ক নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে তিনটি পরিশোধিত তেলের জন্য ও তিনটি অপরিশোধিত তেলের জন্য। প্রতিটি পরিশোধিত স্টোরেজ ট্যাঙ্কারের ধারণক্ষমতা ৫০ হাজার ঘনমিটার। অপরিশোধিত স্টোরেজ ট্যাঙ্কারের ধারণক্ষমতা ৩০ হাজার ঘনমিটার। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে বিশেষ আইনে। শুরুতে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৪ হাজার ৯৩৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। তৃতীয়বারের সংশোধনে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৭ হাজার ১২৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বছরে ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এরই মধ্যে অফশোর পাইপলাইনের ১৩৫ কিলোমিটারসহ মোট ১৭২ দশমিক ৫ কিলোমিটার পাইলাইন স্থাপন করা হয়েছে।
১৬ জুন, ২০২৩
X