মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
অবৈধ সম্পদ অর্জনে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
৬২ লাখ ৯ হাজার ৩০ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজশাহীতে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (২০ মে) দুদকের সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং নকল স্ট্যাম্প দুদকে জমা দিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের নাম মেহেদী হাসান। নাটোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে কর্মরত একজন কনস্টেবল। তার গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার চকবিজলী গ্রামে।  মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মেহেদী হাসান তার এসব অবৈধ সম্পদ বৈধ দেখাতে ৪৮টি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের মাধ্যমে জমি বন্ধক রেখে ১৮ লাখ ও ৩৩ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ দেখান। তবে দুদক অনুসন্ধান করে দেখেছে, জমি বন্ধক ও ঋণচুক্তির স্ট্যাম্পগুলো নকল। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পেলে মেহেদী হাসানকে তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য বলা হয়। তখন মেহেদী হাসান ৪৮টি স্ট্যাম্পে লিখিত ও স্বাক্ষরিত চুক্তি সংবলিত রেকর্ডপত্র দাখিল করেন। এসব স্ট্যাম্পে আটজনের সঙ্গে জমি বন্ধক রাখা বাবদ ১৮ লাখ টাকা এবং আরও আটজনের কাছ থেকে ৩৩ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ দেখান। এই স্ট্যাম্পগুলো ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর জয়পুরহাটের স্ট্যাম্প ভেন্ডার সাইদুল ইসলাম বিক্রি করেছেন বলে সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে। তবে দুদক জয়পুরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাচাই করে দেখেছে, ট্রেজারি শাখা থেকে এসব স্ট্যাম্পের মধ্যে ৪২টি ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ও ৬ সেপ্টেম্বর ভেন্ডার সানোয়ার হোসেন দেলু এবং ৬টি ২০১৭ মালের ২২ জুন শহীদুল ইসলাম নামের এক ভেন্ডারের কাছে সরবরাহ করা হয়। সানোয়ার হোসেন দেলুর বক্তব্য ও তার বিক্রয় রেজিস্টার যাচাই করে মেহেদী হাসানের দাখিল করা স্ট্যাম্পগুলোর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। মেহেদী হাসান অসৎ উদ্দেশ্যে তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে এ ধরনের নকল স্ট্যাম্পে চুক্তিপত্র ও বন্ধকীসংক্রান্ত মিথ্যা তথ্য দিয়ে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন জানান, মেহেদী হাসানের নামে মোট ৯১ লাখ ২৪ হাজার ২৫৪ টাকার অস্থাবর ও স্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়। তার ঋণের পরিমাণ ৯ লাখ ৩০ হাজার ৮৭০ টাকা। ঋণ বাদে অর্জিত সম্পদের নিটমূল্য ৮১ লাখ ৯৩ হাজার ৩৮৪ টাকা। এ ছাড়া মেহেদীর বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি ১৩ লাখ ৭৭ হাজার ৩২৩ টাকা পারিবারিক কাজে ব্যয় করেছেন। ঋণের কিস্তির সুদ পরিশোধ করেছেন ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৮৭ টাকা। ফলে তার মোট সম্পদ পাওয়া যায় ৯৬ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪ টাকার। আর তার গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ ৩৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৪ টাকা। ফলে তিনি অসৎ উপায়ে আয়বহির্ভূত ৬২ লাখ ৯ হাজার ৩০ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন। অবৈধ এ সম্পদ অর্জন ও ভোগদখল করে তিনি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। নকল স্ট্যাম্পে মিথ্যা বন্ধকীপত্র দাখিল করে এবং আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদের মালিকানা অর্জন করার অপরাধে কনস্টেবল মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪-এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারায় মামলা করা হয়েছে। পরে আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য মামলার এজাহার রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান দুদকের এই সহকারী পরিচালক। মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মেহেদী হাসান বলেন, মামলার বিষয়ে আমি এখনো জানি না, সুতরাং আমি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
৭ ঘণ্টা আগে

অবৈধ সম্পদ অর্জন, কারাগারে সাবেক এমপি
অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।  রোববার (১২ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের  আবেদন করেন গিয়াস উদ্দিন। আদালত তার আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।  আদালতের আদেশের সত্যতা নিশ্চিত করে দুদকের প্রসিকিউশন শাখার সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আজ তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। তবে আদালত তার আবেদ নামঞ্জুর করেছেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০২০ সালের ২ নভেম্বর গিয়াস উদ্দিনকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেয় দুদক। একই বছরের ২৩ ডিসেম্বর দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন গিয়াস উদ্দিন। তখন অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র ও দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাই করে তার নামে ১৫ কোটি ৭ লাখ ১৫ হাজার ৭৭৯ টাকার স্থাবর এবং ৫ কোটি ৮৮ লাখ ৭০ হাজার ৩১৮ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ২০ কোটি ৯৫ লাখ ৮৬ হাজার ৯৭ টাকার সম্পদের তথ্য মেলে।  ২০০৮-০৯ করবর্ষ থেকে ২০২১-২২ করবর্ষে পারিবারিক ও অন্যান্য খাতে গিয়াস উদ্দিনের ১৭ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার ৪৩ টাকা ব্যয়ের তথ্য পায় দুদক। এসব ব্যয়ের বিপরীতে বিভিন্ন সময়ে সঞ্চয় হিসাবে ৬ কোটি ৮১ লাখ ২২ হাজার ৮৫৬ টাকা, গৃহ সম্পত্তি থেকে আয়ের ২ কোটি ১৮ লাখ ৬৯ হাজার ৪৫০ টাকা, পিতার কাছ থেকে হেবা মূল্যে প্রাপ্ত ১১ শতাংশ জমিসহ ৭ কোটি টাকার দালান, ৪ লাখ ৩২ হাজার টাকার মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ মোট ১৭ কোটি ৬৮ লাখ ৮৪ হাজার ৭৩৭ টাকার বৈধ ও  গ্রহণযোগ্য উৎস পায় দুদক।  তবে গিয়াস উদ্দিনের আয়কর নথি অনুযায়ী, সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে কাসসাফ শপিং সেন্টার-১ নির্মাণ ব্যয় প্রদর্শনকালে ২০২১-২২ করবর্ষে মার্কেটের ৮০২ বর্গমিটার নির্মাণে ১ কোটি ৪১ লাখ ৮৬ হাজার ৯৩১ টাকা বিনিয়োগের কোনো বৈধ উৎস পায়নি দুদক। যা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বলে দুদকের অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে। তাই ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদক উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধ মামলা করেন।
১২ মে, ২০২৪

সিভিল এভিয়েশন কর্মকর্তা স্বামীর টাকায় স্ত্রীর অবৈধ সম্পদ
অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে সিভিল এভিয়েশনের সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মাসুদা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আল আমিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, মাসুদা ইসলাম তার স্বামীর অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদকে বৈধতা দানের উদ্দেশ্যে নিজ নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৪৯ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩২ টাকার সম্পদ নিজ দখলে রেখেছেন। একই সঙ্গে দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ১৮ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন, যা দুর্নীতি দমন আইন ও দণ্ডবিধিতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। মামলা সূত্রে জানা যায়, অনুসন্ধানে দুদক মাসুদা ইসলামের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক সত্যতা পায়। দুদকের আদেশে মাসুদা ইসলাম তার সম্পদ বিবরণী কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে দাখিল করেন। এতে তার নামে ১ কোটি ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৫৯০ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ২০ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ১ কোটি ২৩ লাখ ৭৮ হাজার ৫৯০ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রদর্শন করেন। কিন্তু দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে মাসুদা ইসলামের নামে স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে ১ কোটি ৪১ লাখ ৯৩ হাজার ২৬৪ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে মাসুদা ইসলাম তার সম্পদ বিবরণীতে ১৮ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। এ ছাড়া দায়দেনা বাদে তার অর্জিত মোট সম্পদ পাওয়া যায় ১ কোটি ১০ লাখ ৬০ হাজার ৩৪৩ টাকার। যাচাইকালে আরও দেখা যায়, মাসুদা ইসলাম একজন গৃহিণী। তার নামে আলাদা আয়কর নথি থাকলেও তিনি স্বামীর আয়ের ওপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ মাসুদা ইসলাম তার স্বামী নজরুল ইসলামের সহায়তায় অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদকে বৈধতাদানের অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ নিজের দখলে রেখেছেন।
২৫ মার্চ, ২০২৪

এমপিদের অবৈধ সম্পদ ভূমিহীনদের বিতরণের আহ্বান টিআইবির
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সদস্যদের কারও অবৈধ সম্পদ থাকলে তা যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় বাজেয়াপ্ত করার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে আইনি সীমার বাইরে মোট বাড়তি ৮০০ একরের বেশি বিধি-বহির্ভূত মালিকানাধীন জমি ভূমিহীনদের মাঝে বিতরণের দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে টিআইবির পক্ষ থেকে এমন আহ্বান জানানো হয়। টিআইবি বলছে, দ্বাদশ সংসদের সদস্যদের নির্বাচনী হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে প্রায় ৮৫ শতাংশই কোটিপতি (অস্থাবর সম্পদমূল্যের ভিত্তিতে)। একশ কোটি টাকার বেশি সম্পদ রয়েছে এমন সংসদ সদস্য সংখ্যা ১৫। সংসদের সদস্যদের অস্থাবর সম্পদের সম্মিলিত মূল্য প্রায় ২২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বেশি। সর্বশেষ ৪টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের গড় অস্থাবর সম্পদের তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে দশম সংসদের তুলনায় একাদশ সংসদের সম্পদ বেড়েছে ৭৫ শতাংশের বেশি। এ ছাড়া এবারের সংসদে ১১২ জন সংসদ সদস্য রয়েছেন যারা বছরে এক কোটি বা তার বেশি টাকা আয় করেন, যা পুরো সংসদের প্রায় ৩৮ শতাংশ। এ বিষয়ে টিআইবি আরও বলছে, দেশের আইন (ল্যান্ড রিফর্ম অ্যাক্ট, ২০২৩) একজন ব্যক্তির ভূমির মালিকানার সর্বোচ্চসীমা (কৃষি জমির ক্ষেত্রে ৬০ বিঘা এবং অকৃষি জমিসহ যা ১০০ বিঘা পর্যন্ত যেতে পারে) বেঁধে দিলেও আইনিসীমার বাইরে জমি আছে ১৩ জন সংসদ সদস্যের কাছে। সম্মিলিতভাবে এই ১৩ জন সংসদ সদস্যের আইনিসীমার বাইরে বাড়তি জমি রয়েছে ৮০০ একর (৩ বিঘায় ১ একর বিবেচনায়)। সংসদ সদস্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জমির মালিক, হলফনামায় তার প্রদর্শিত জমির পরিমাণ ৩৮০ দশমিক ৭৫ একর। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে সংসদ সদস্যদের অবৈধ আয় ও সম্পদ থাকলে তা যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় বাজেয়াপ্ত করাসহ দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। বিশেষ করে, আইনিসীমার বাইরে মোট বাড়তি ৮০০ একরের বেশি জমি বিধিবহির্ভূতভাবে সংসদ সদস্যদের অনেকের মালিকানাধীন রয়েছে। এসব জমি বাজেয়াপ্ত করে ভূমিহীনদের মাঝে বিতরণের আহ্বান জানাই।
১১ জানুয়ারি, ২০২৪

সাহেদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলার রায় ২১ আগস্ট
রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলার রায়ের জন্য আগামী ২১ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত।  বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক প্রদীপ কুমার রায়ের আদালত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের এ দিন ধার্য করেন। এদিন কারাগার থেকে আসামি সাহেদকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। শুনানিতে দুদক তার সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেন। অন্যদিকে সাহেদের আইনজীবী তাকে নির্দোষ দাবি করে খালাস দেওয়ার দাবি জানান।  মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর নির্ধারিত ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদের হিসাব জমা দিতে সাহেদকে নোটিশ দেয় দুদক। এ সময়ে তিনি সম্পদের হিসাব জমা না দেওয়ায় আরও ১৫ কার্যদিবস সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে বর্ধিত সময়ের মধ্যেও সম্পদ বিবরণী জমা না দেওয়ায় অনুসন্ধানে নামে দুদক। অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া যায়। এ অভিযোগে ২০২১ সালের ১ মার্চ সাহেদের বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা দায়ের করা হয়। পরে ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল মামলায় অভিযোগ গঠন করে সাহেদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেন আদালত। এ মামলায় মোট দশজন সাক্ষী বিভিন্ন সময়ে সাক্ষ্য দেন।   
১০ আগস্ট, ২০২৩

পুলিশ কর্মকর্তার ১৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ
প্রায় ১৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্ত্রী ও শাশুড়িসহ পুলিশ পরিদর্শক সৈয়দ আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজ মামলাটি করেন। দুদক পিরোজপুর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক শেখ গোলাম মাওলা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন পিরোজপুরে মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসি সৈয়দ আব্দুল্লাহ, তার স্ত্রী ফারহানা আক্তার ও শাশুড়ি কারিমা খাতুন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা বর্তমানে ফেনী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ক্রাইম শাখায় কর্মরত। মামলার এজাহারে বলা হয়, সৈয়দ আবদুল্লাহ প্রতারণার উদ্দেশ্যে স্ত্রী ফারহানা আক্তারের নামে দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি করেন। যেগুলো ব্যবহার করে তিনি এক কোটি টাকা মূল্যের সঞ্চয়পত্র কেনেন। তার শাশুড়ি কারিমা খাতুনের নামে রাজধানীর গুলশানের নাভানা এসিলমন প্যালেসের ১২ তলায় একটি ৩ হাজার ৯০৯ বর্গফুটের ফ্ল্যাট রয়েছে। ফ্ল্যাটটি ৮ কোটি ৮৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকায় কেনা। সৈয়দ আবদুল্লাহর স্ত্রী ফারহানা আক্তারের নামে রাজধানীর কাকরাইলে বাণিজ্যিক ভবন গ্রিন সিটি রিজেন্সির তৃতীয় তলায় ২ হাজার ১২০ বর্গফুট বাণিজ্যিক স্পেস, ২৬৬ বর্গফুটের গাড়ি পার্কিংসহ মোট ২ হাজার ৩৮৬ বর্গফুট জায়গা রয়েছে, যার মূল্য ২ কোটি ৭০ লাখ ২০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ফারহানা আক্তারের নামে রাজধানীর বড় মগবাজারে নির্মিত দ্য ওয়েসিস কমপ্লেক্স টাওয়ারের ১০ম তলায় ২ হাজার ১৫০ বর্গফুটের রয়েল টাইপের ২ কোটি ৭৩ লাখ ৪ হাজার ২৩২ টাকার অ্যাপার্টমেন্ট, খিলগাঁও পুলিশ প্রজেক্ট সাউদার্ন পার্ক-১, ব্লক-এম পশ্চিম নন্দিপাড়ায় ২ হাজার বর্গফুটের ৪ লাখ টাকার ফ্ল্যাট রয়েছে। সৈয়দ আবদুল্লাহর নিজ নামে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় আনন্দ পুলিশ হাউজিং সোসাইটিতে ছয় কাঠা করে দুটি প্লট রয়েছে। তিনি ২টি প্লটের জন্য এ পর্যন্ত ৪০ লাখ ৪২ হাজার ২০০ টাকা পরিশোধ করেছেন। ফারহানা আক্তারের ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা পরিশোধ করে তার মা কারিমা খাতুনের নামে আবাসিক ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে। সব মিলিয়ে আসামিরা অবৈধভাবে ১৮ কোটি ১৫ লাখ ৬০ হাজার ২৮৬ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, সৈয়দ আবদুল্লাহ সরকারি কর্মচারী হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত থাকা অবস্থায় তার পদমর্যাদার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অসাধু উপায়ে অর্জিত টাকা নিজের নামে, স্ত্রী ফারহানা আক্তার ও শাশুড়ি কারিমা খাতুনের নামে করেছেন। দুদক উপপরিচালক শেখ গোলাম মাওলা আরও জানান, সৈয়দ আবদুল্লাহ ১৯৯১ সালে উপপরিদর্শক হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি ২০০৭ সালে পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পান। তিনি ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ থেকে ২০২০ সালের ২৪ মার্চ পর্যন্ত মঠবাড়িয়া থানার ওসি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের একটি অভিযোগে ওই সময় (২০২০ সালে) অনুসন্ধানের জন্য দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে বরিশালে পাঠানো হয়। পরে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় পিরোজপুরের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজ অনুসন্ধান শুরু করেন। অনুসন্ধানে সৈয়দ আবদুল্লাহ ও তার স্ত্রী-শাশুড়ির নামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য পায় দুদক। দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় পিরোজপুরের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজ জানান, অনুসন্ধানে সৈয়দ আবদুল্লাহ ও তার স্ত্রী-শাশুড়ির বিরুদ্ধে ১৮ কোটি সাড়ে ১৫ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৮ মে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের আদেশে সৈয়দ আবদুল্লাহর অপরাধলব্ধ আয়ের মাধ্যমে অর্জিত স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সৈয়দ আবদুল্লাহ ও তার স্ত্রী ফারহানা আক্তারের ট্যাক্স ফাইল জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা সৈয়দ আবদুল্লাহর মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
১৬ জুন, ২০২৩
X