সাক্ষাৎকারে কর্নেল (অব.) অলি আহমদ / আওয়ামী লীগ বিএনপি ও জামায়াতের ঐক্য প্রয়োজন
‘বর্তমান জামায়াত আর একাত্তরের জামায়াত এক নয়’ দাবি করে দেশকে এগিয়ে নিতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ সবার ঐক্য প্রয়োজন বলে মনে করেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম। একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন, সরকার যে তালিকা দিয়েছিল, ভোটের দিন ডিসিরা সেই তালিকাই প্রকাশ করেছে। কালবেলা: সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবিতে এক বছরের বেশি সময় ধরে আপনারা বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করছেন; কিন্তু আপনাদের দাবি পূরণ ছাড়াই নির্বাচন হয়ে গেল? এ অবস্থায় আপনাদের আগামীতে করণীয় কী? অলি আহমদ: নির্বাচনের পর সংসদ বাতিল এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবিতে আমরা আন্দোলনে রয়েছি। শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। নির্বাচনে বিদেশি যারা বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তাদের বুঝতে হবে—এই নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণ গ্রহণ করেনি, তারা সবাই মিলে রাস্তায় নেমেছে, শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। তাদের অনুরোধ করব, বাংলাদেশের কোনো বিশেষ দল কিংবা কোনো বিশেষ ব্যক্তিকে সমর্থন না করে তারা যেন বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়ায়। কালবেলা: আগামীতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রে আপনারা কোন বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন? অলি আহমদ: বিষয় একটাই, সেটা হলো নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন—যেখানে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেওয়াসহ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা জনগণের পক্ষ হয়ে কাজ করবে, কোনো সরকারের পক্ষে দালালি করবে না। সেই লক্ষ্যে আমরা জনগণকে ফের উজ্জীবিত-সচেতন করার জন্য নিয়মতান্ত্রিক-শান্তিপূর্ণ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছি, মাঠে থাকব। কালবেলা: অনেক দেশ এরই মধ্যে বাংলাদেশের নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের মনোভাবও এখন নমনীয় মনে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলের এমন অবস্থানকে আপনি কীভাবে দেখছেন? অলি আহমদ: আল্লাহ রাব্বুল আলামিন হলো সব কিছুর মালিক। তিনি আমাদের নির্বাচনটা কীভাবে গ্রহণ করেছেন, সেটাই মূল বিবেচ্য। এখানে কোন দেশ কী বলল, সেটা আমার কাছে কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। অনেক দেশ আছে, যাদের পয়সা দিলে তারা একটা স্টেটমেন্ট করে। নির্বাচনের সময় আমেরিকা-কানাডা থেকে কিছু লোক ভাড়া করে আনা হয়েছিল। তারা সোনারগাঁও হোটেলে ছিলেন এবং তারা কোথাও না গিয়ে দু-একটা ভোটকেন্দ্রে প্রমোদ ভ্রমণের মতো করে ঘুরে একটা প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে বলে দিলেন—অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। তারা বোঝেননি যে, এখানে সুষ্ঠু নির্বাচনের ‘স’-ও ছিল না। কোনো কেন্দ্রে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। তারা বরং নিজেকে এবং তাদের নিজের দেশকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। কালবেলা: বিএনপি ও যুগপতের শরিকদের আন্দোলনের মধ্যেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন এবং পরবর্তী সময়ে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। এই সংসদ ও সরকার সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী? অলি আহমদ: গায়ের জোরে তারা সবকিছু করেছে। দেশি-বিদেশি সবাই দেখেছে নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ এবং সবার অংশগ্রহণে হয়নি। ইনক্লুসিভ হয়নি, বাট এক্সক্লুসিভ হয়েছে। অর্থাৎ সরকার বিভিন্ন জেলায় ডিসি ও এসপিকে যে তালিকা দিয়েছিল, তারা ভোটের দিন সেই তালিকাই প্রকাশ করেছে। এখানে জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। এই সংসদ একটা অবৈধ সংসদ এবং যারা সংসদে নির্বাচিত হয়েছেন, তারাও হলফ করে বলতে পারবেন না যে, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছেন। যারা দুর্নীতিগ্রস্ত লোক, যারা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন, পাশের গোপন কক্ষে ব্যালট পেপারের ওপর সিল মেরে যারা নির্বাচিত হয়েছেন; জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই এবং এদের দিয়ে যে মন্ত্রিসভা হয়েছে, জনগণের কাছে তাদের কোনো সম্মান নেই। এমপিদেরও কোনো সম্মান নেই, মন্ত্রিদেরও কোনো সম্মান নেই। কারণ, তারা জনগণের প্রতিনিধি নয়, তারা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি। কালবেলা: আপনারা তো আগের দুটি সংসদকেও অবৈধ আখ্যা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সংসদ ও সরকার পুরো মেয়াদ বহাল থেকেছে। এবার ভিন্ন কিছু হবে বলে আশা করেন কি? অলি আহমদ: অতীতের চেয়ে এবার আমরা জনগণের কাছে অধিকতর গ্রহণযোগ্য হয়েছি। জনগণ আমাদের গ্রহণ করেছে এবং আমাদের মধ্যে একটা সুদৃঢ় ঐক্য হয়েছে। যারা বেইমান, মোনাফেক, দালাল তারাও আমাদের মধ্যে নেই। ফলে এখন যারাই আছে তারা সময়ের পরীক্ষিত সৈনিক, রাজনীতিবিদ। সুতরাং আশা করি, তাদের মাধ্যমে আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এই সরকারকে কনভিন্স করতে সক্ষম হবো যে, এই নির্বাচন সঠিক হয়নি, আরেকটি সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচন করতে হবে, যেখানে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করতে পারবে। সবকিছু মিলিয়ে আমরা বিশ্বাস করি, এই সরকার ও সংসদ পুরো মেয়াদে থাকতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ। কারণ, তাদের ভিত্তিটা ঠিক নেই। কেউ যদি বাঁশ দিয়ে দশতলা বিল্ডিংয়ের ফাউন্ডেশন দেয়, ওই বিল্ডিং টেকে না। তাদের এই নির্বাচনে কোনো ফাউন্ডেশন নেই, এই মন্ত্রিসভারও কোনো ভিত্তি নেই। এরা হলো বিনা ভোটে, চোরা ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী। সুতরাং আল্লাহর কাছেও তারা পরিষ্কার নয়। তারা যে কাজ করেছে, ধর্মীয়ভাবে সেটা ঘৃণ্য কাজ। কালবেলা: সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন বেগবান করতে শিগগির যুগপতের সম্প্রসারণ হবে কি না? অলি আহমদ: যুগপৎ আন্দোলনের সম্প্রসারণ বিষয়ে স্পষ্টভাবে কিছু বলতে পারব না। কারণ, এ ব্যাপারে বিএনপিই সবার সঙ্গে যোগাযোগ করে—কারা থাকবে, কারা থাকবে না, সেটা বিএনপিই ঠিক করে। আমরা আমাদের পক্ষে মতামত দিয়েছি। সবার মতামতের ভিত্তিতে আমরা নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক কর্মসূচি গ্রহণ এবং শান্তিপূর্ণভাবে তা পালনের চেষ্টা করব। কালবেলা: এক সময় আপনাকে জামায়াতে ইসলামী ইস্যুতে কঠিন বিরোধিতা করতে দেখা গেছে। কিন্তু ইদানিং এ বিষয়ে আপনার অবস্থান নমনীয় বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা আছে। বিষয়টি কি আদর্শিক নাকি কৌশলগত? অলি আহমদ: এটা আদর্শিকও নয়, কৌশলগতও নয়। যখন জামায়াতের বিরোধিতা করেছিলাম, তখন তাদের মধ্যে যুদ্ধাপরাধীরা ছিল। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যখন দেখি—যে লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলাম, সেই লোক আমার সঙ্গে সংসদে কিংবা মন্ত্রিসভায় বসে আছে, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাদের বিরুদ্ধে স্বাভাবিকভাবেই আমার মনে ক্ষোভ থাকতেই পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার তাদের ন্যায়ভাবে হোক কিংবা অন্যায়ভাবে হোক, বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধের শক্তি ছিল না। কিন্তু তারা পাইকারি হারে জামায়াতকে ধ্বংস করতে একটা পরিকল্পনা করেছিল এবং সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সবাইকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলানো হয়েছে। বর্তমানে যারা জামায়াতে ইসলামীতে আছে, তাদের বয়স যুদ্ধের সময় পাঁচ বছর, চার বছর কিংবা দুই-তিন বছর ছিল। অনেকে তখন জন্মগ্রহণও করেনি। তারা বাংলাদেশি নাগরিক। তাদেরও আমাদের মতো সমান অধিকার রয়েছে রাজনীতি করার, সমাজে বসবাস করার। তাদের আমি ঘৃণা করব, তাদের বিরুদ্ধাচরণ করব—এটা মনুষ্যত্বের বিরুদ্ধাচরণ করা হয়। কেননা, বর্তমান জামায়াত আর একাত্তরের জামায়াত এক নয়। একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ হিসেবে এটাই বলব, আমাদের মধ্যে যদি এই ধরনের ঘৃণা কাজ করে, দেশকে ঐক্যবদ্ধ করা কঠিন হবে। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত, সম্মিলিতভাবে সবাইকে নিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়া। দেশের অনেক সমস্যা আছে। রাজনৈতিক সমস্যা, সামাজিক সমস্যা, বিচার ব্যবস্থায় সমস্যা, প্রশাসনিক সমস্যা। প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্নীতিগ্রস্ত, সর্বস্তরে দুর্নীতি চলছে। শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আজ ধ্বংস। এ অবস্থা থেকে দেশকে বের করে আনার জন্য সবার ঐক্য প্রয়োজন। এখানে আওয়ামী লীগ হোক, বিএনপি হোক, জামায়াতে ইসলামী হোক, এলডিপি হোক সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে ভূমিকা পালন করতে হবে। সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এটা তখনই সম্ভব হবে, যখন একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। তখন কেউ কারও প্রতি ঘৃণা পোষণ করবে না। কালবেলা: সরকারবিরোধী আন্দোলনে জামায়াত ইস্যুতে যুগপতের শরিকদের মধ্যে দুই ধরনের মত রয়েছে। সাংগঠনিক শক্তি বিবেচনায় আগামীর আন্দোলনে জামায়াতের অন্তর্ভুক্তিতে আপনি কোনো সমস্যা দেখছেন কি না? অলি আহমদ: সরকারবিরোধী আন্দোলনে জামায়াতের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আমি কোনো সমস্যা দেখি না। কারণ, যে বা যারা এই সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে চায়, তাদের ঐক্য হওয়া উচিত। যারা এই ঐক্যে বাধা দেবে, তারা প্রকারান্তরে সরকারকে সহযোগিতা করবে। এই বিষয়টা আমাদের চিন্তা করতে হবে। কালবেলা: আওয়ামী লীগের বাইরে যেসব দল, প্রার্থী নির্বাচনে গিয়েছিল তাদের অনেকে সরকারের সমালোচনা করছে। তাদের বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন কী? আপনাদের চলমান আন্দোলনে আগামীতে তাদের পাশে চান কি না? অলি আহমদ: এই ধরনের বেইমান, দালালদের বিশ্বাস করা ঠিক হবে না। কারণ, যারা পয়সার বিনিময়ে গরু-ছাগলের মতো বিক্রি হয়, তাদের কখনো বিশ্বাস করা উচিত নয়। একবার যদি কেউ বেইমানি-মোনাফেকি করে, সে বারবার তা করতে পারে। এরা মীরজাফর, বেইমান হিসেবে বাংলাদেশের ইতিহাসে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। সম্মান কেউ যদি একবার হারিয়ে ফেলে, তা আর কখনো ফিরে পায় না। এমপিত্ব যদি একবার চলে যায়, আবার পেতে পারে। মন্ত্রী যদি একবার না হয়, পরে হতে পারবে। কিন্তু কেউ আত্মসম্মান যখন হারিয়ে ফেলে, তার আর কিছুই বাকি থাকে না, সে মনুষ্যত্বও হারিয়ে ফেলে। কালবেলা: এলডিপির সাংগঠনিক অবস্থা কী? আগামীতে দলের শক্তি আরও বাড়াতে কোনো ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছেন? অলি আহমদ: আমরা অনেক সমস্যার মধ্যে পড়েছি। গত তিন বছর ধরে প্রায়ই আন্দোলনে রাস্তায় ছিলাম। সংগঠনের কাজে যেভাবে মনোযোগ দেওয়ার দরকার ছিল, সেভাবে দিতে পারিনি। আর অর্থনৈতিক সমস্যা তো আছেই। আমাদের সীমাবদ্ধতাও অনেক। তা ছাড়া আমাদের দলের মহাসচিবকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ না দিয়েই একটি মিথ্যা মামলায় তিন বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে, যে মামলার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। এর মধ্য দিয়ে তাকে নির্বাচনে অযোগ্য করে দেওয়া হয়েছে। এগুলো অতিক্রম করে সংগঠনকে এগিয়ে নেওয়া খুবই কঠিন। তারপরও আমরা বসে নেই। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে প্রায় প্রতি মাসে নতুন নতুন নেতা আমাদের দলে যোগদান করছেন। আমরা সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। কালবেলা: আপনাকে ধন্যবাদ। অলি আহমদ: আপনাকে ও কালবেলার পাঠককেও ধন্যবাদ।
০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে ছাত্রলীগকর্মী নিহত 
মিরসরাইয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক ছাত্রলীগকর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার আজমপুর বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।  জানা গেছে, আগামী ৫ অক্টোবর বিএনপির ১৫ দিনের কর্মসূচির মধ্যে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখে রোডমার্চ উপলক্ষে মিরসরাইয়ে একটি পথসভা করার কথা রয়েছে। তারই প্রস্তুতি হিসেবে শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান উপজেলার ৫ নম্বর ওচমানপুর ইউনিয়ন এলাকায় একটি সভার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের লোকজন তাদের ওপর হামলা করে বলে বিএনপির তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে। এতে তাদের ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হওয়ারও দাবি করে বিএনপি। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের দাবি শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে স্থানীয় ওচমানপুর ইউনিয়ন এলাকার আজমপুর বাজারে বিএনপির লোকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় ওচমানপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ হাসান, মিরাজ, আরেফিন ও রাফিসহ ৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শাহিনুল ইসলাম স্বপন দাবি করেন, আগামী ৫ অক্টোবর তারিখের কর্মসূচির প্রস্তুতি হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তরজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে। এ সময় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন।  অপরদিকে ওচমানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহ্ আলম বলেন, বিএনপি নেতা নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের অনুসারীরা স্থানীয় আজমপুর বাজারে আমাদের ছাত্রলীগ নেতা হাসান ও তার কয়েকজন সহযোদ্ধার ওপর হামলা চালায়। এতে ৫ জন আহত হয়।  বিএনপির অভিযোগ সম্পর্কে শাহ্ আলম বলেন, এটা ডাহা মিথ্যা। তারা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মাসুদ করিম রানা বলেন, আজমপুর বাজারে বিএনপির লোকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় ওচমানপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ হাসান, মিরাজ, আরেফিন ও রাফিসহ ৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এ ছাড়াও জাহেদ হোসেন রুমন (১৬) নামে এক ছাত্রলীগের কর্মী মারা গেছে।  জোরারগঞ্জ থানার ওসি মো. জাহিদ হোসেন সন্ধ্যায় জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ গেছে। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানাতে পারব।
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X