শুল্ক ব্যবস্থার কাঠামোগত পরিবর্তন চায় ইআরএফ
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের অংশ হিসেবে আমদানি শুল্ক ব্যবস্থাপনার কাঠামোগত পরিবর্তন চেয়েছে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ব্যক্তির করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করাসহ ২৬টি প্রস্তাব দিয়েছে সাংবাদিকদের এই সংগঠন। গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব ভবনে (এনবিআর) অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন ইআরএফ সদস্য দৌলত আক্তার মালা। প্রস্তাবনা অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে গড় শুল্কের হার এলডিসিভুক্ত অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশি। কয়েক বছর ধরে শুল্কহার কমানোর কথা বলা হলেও এতে বড় ধরনের অগ্রগতি দেখা যায়নি। এরই মধ্যে ভর্তুকি হ্রাসের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক নগদ সহায়তা কমানোর কার্যক্রম শুরু করেছে। সংগঠনটি বলছে, এনবিআরেরও উচিত বিভিন্ন ধরনের শুল্কহার কমানোর কাজ এই বাজেট থেকেই শুরু করা। অন্যথায় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করার সময় হঠাৎ শুল্ক কমানোর ধাক্কা সামলানো কঠিন হবে। কর ছাড় দেওয়ার ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা ও জবাবদিহি প্রয়োজন। এ ছাড়া প্রতি করছাড়ের আদেশের সঙ্গে রাজস্ব ক্ষতির একটা প্রাক্কলন দেওয়া প্রয়োজন। জেলা ও সিটি করপোরেশনে এখন বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। সেখানে এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) মতো মিডিয়াম করদাতা ইউনিট (এমটিইউ) খোলা যেতে পারে। নির্ধারিত সময়ে রিটার্ন জমা দিতে ব্যর্থ হলে আয়কর আইনের সংশ্লিষ্ট ধারার কারণে অনেকেই এ কাজে নিরুৎসাহিত হতে পারেন। এসব ধারা পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি। ইআরএফের অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে, বাড়তি দেওয়া কর এমএফএসের মাধ্যমে ফেরতের ব্যবস্থা করা। করযোগ্য আয় নেই এমন ব্যক্তিদের ব্যাংক সুদের ওপর কর্তিত টাকা ফেরত দেওয়া, নিত্যপণ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসা উপকরণে করহার ৫ শতাংশে সীমিত রাখা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিকাশে পৃথক রাজস্ব নীতি প্রণয়ন, বাজেটে স্বল্প মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব পরিকল্পনা এবং এজন্য বরাদ্দ রাখা। এ ছাড়া বেসরকারি প্রভিডেন্ট ফান্ডকে করমুক্ত রাখা, করপোরেট কোম্পানিগুলোর রিটার্ন দেওয়ার হার এত কম হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে এনবিআর-ইআরএফ যৌথ জরিপ চালু, ব্যক্তি করদাতাদের সর্বোচ্চ করহার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ, ভ্যাটের হার ৭ শতাংশ করা। এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম প্রস্তাবগুলো বিবেচনার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, আমরা করজাল বাড়ানোর চেষ্টা করছি। আমি আপনাদের উৎসাহ চাই। টিআইএনধারী ও রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে আমরা কাজ করছি। প্রান্তিক মানুষকে কর জালের আওতায় আনতে আয়কর রিটার্ন প্রস্তুতকারী (টিআরপি) নিয়োগ দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রাম-গঞ্জে এখন অনেক কোটিপতি। তারা আয়কর দেন না বলে অনেকেই অভিযোগ করেন। তাদের করজালের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। টিআরপি প্রোগ্রামটা যেভাবেই হোক আমরা সফল করব।
০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X