শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পোলিং এজেন্টসহ তিনজনের কারাদণ্ড
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে জালভোট দেওয়া ও ভোটাদের প্ররোচিত করার দায়ে দুই পোলিং এজেন্টসহ তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার (৮ মে) দুপুরে উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কাটানিসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ অভিযান পরিচালিত হয়। কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- শাকিব মিয়া, হৃদয় মিয়া ও রাকিব হোসেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সেলিম শেখ কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কাটানিসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে অবৈধভাবে গোপন কক্ষে গিয়ে অন্যের ব্যালট পেপারে সিল মারার সময় পোলিং এজেন্ট শাকিব মিয়াকে আটক করে ১৫ দিন এবং ভোটারদের প্ররোচিত করার দায়ে পোলিং এজেন্ট হৃদয় মিয়াকে ১০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।  তিনি বলেন, এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজ দূরে ভোটারদের অন্যায়ভাবে প্ররোচিত করার সময় রাকিব হোসেন নামে এক যুবককে ৭ দিনের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। প্রথম ধাপে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল ও নাসিরনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
০৮ মে, ২০২৪

আর জরিমানা নয় কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে ট্রাম্পকে
পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিচারক হুয়ান মারচান। স্থানীয় সময় সোমবার মামলাটির শুনানি চলাকালে জুরিবোর্ডের সদস্য ও সাক্ষীদের সমালোচনা করার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় ট্রাম্পকে এমনভাবে সতর্ক করেন বিচারক। খবর রয়টার্সের। এরই মধ্যে মামলার সাক্ষীদের সমালোচনা করার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় ট্রাম্পকে ৯ বারে ৯ হাজার ডলার জরিমানা করেছেন নিউইয়র্কের একটি আদালত। সোমবারও একই ধরনের জরিমানা করা হয় তার। বিচারক মারচান বলেন, আমি ট্রাম্পকে কারাদণ্ড দিতে চাই না এবং এই দণ্ড দেওয়া এড়াতে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি; কিন্তু তিনি বারবার নিয়ম ভঙ্গ করছেন। তাই এরপর আর জরিমানা নয়, ট্রাম্পকে কারাদণ্ড দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। জরিমানা আরোপ করার পর বিচারক আরও বলেন, ট্রাম্পকে কারাদণ্ড দেওয়াটা আসলে ‘শেষ অবলম্বন’। কারণ এটি এ মামলার বিচারকে ব্যাহত করবে, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে ও আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন জটিল করে তুলবে। এদিকে ট্রাম্প বলেছেন, আমি আদালতের কোনো নিয়ম ভঙ্গ করিনি। আদালত যে জুরিবোর্ড গঠন করেছেন, তার ৯৫ শতাংশ সদস্যই ডেমোক্র্যাটপন্থি। আর বিচারক ইচ্ছা করে আমার কথা বলার সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিয়েছেন। আদালতের এমন আচরণ সত্যিই বিস্ময়কর ও এর আগে কখনো এমন ঘটনা দেখা যায়নি। উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়ে ওঠে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে মুখ না খুলতে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে স্টর্মিকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই তথ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে গোপন করেন ট্রাম্প। ওই বছর প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে অবৈধ উপায় বেছে নিয়েছিলেন ট্রাম্প। তথ্য গোপন রেখে ও বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করে ভুক্তভোগীকে চুপ করিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। ট্রাম্প ও তার আইনজীবীরা রাষ্ট্রপক্ষের এ অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের দাবি, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
০৮ মে, ২০২৪

জয়পুরহাটে হত্যা মামলায় স্বামী-স্ত্রীসহ ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
জয়পুরহাটে পরকীয়ার জেরে হত্যা মামলায় স্বামী-স্ত্রীসহ পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রোববার (৫ মে) দুপুরে জয়পুরহাট অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার পর পুলিশ পাহারায় তাদের জয়পুরহাট কারাগারে নেওয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল (পিপি) ও এপিপি গকুল চন্দ্র মন্ডল রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার বড়াইল শেখপাড়া গ্রামের মরিয়ম বেগম ওরফে রেখা ও তার স্বামী সাহাদুল ইসলাম, মৃত ইনারী সর্দারের পুত্র আ. রাজ্জাক, মৃত রইচ উদ্দীনের পুত্র মোজাহার আলী এবং মৃত সামছুদ্দীনের পুত্র রেজাউল ইসলাম। আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার বড়াইল গ্রামের আলতাব মন্ডলের ছেলে নুরুন্নবী ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরবর্তীতে নুরুন্নবীর শ্বশুরবাড়িসহ বিভিন্ন জায়গার খোঁজখবর নিয়েও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। ওই বছরের ২০ নভেম্বর ক্ষেতলাল উপজেলার দক্ষিণ হাটশহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের কবরস্থানের পুরাতন একটি কবরে নুরুন্নবীর মৃতদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ক্ষেতলাল থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য নুরুন্নবীর লাশ জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায়  নুরুন্নবীর পিতা আলতাব মন্ডল অজ্ঞাত আসামি করে ক্ষেতলাল থানায় হত্যা মামলা করেন। থানা পুলিশের পর তদন্তে নামে জয়পুরহাট গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান তদন্ত করে ২০০৭ সালের ৩০ জুন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে ৫ জন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি নৃপেন্দ্রনাথ বলেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামি মরিয়ম বেগম ওরফে রেখার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন নুরুন্নবী। এ কারণে আসামিরা তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ পুরাতন কবরে লুকিয়ে রাখে।
০৫ মে, ২০২৪

নারী ক্রেতাকে শ্লীলতাহানি চেষ্টার অভিযোগে ব্যবসায়ীর কারাদণ্ড
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে এক ফার্নিচার ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে নারী ক্রেতাকে শ্লীলতাহানি চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। পরে ব্যবসায়ীকে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শুক্রবার (৩ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আজমিরীগঞ্জ পৌরশহরের লঞ্চঘাট রোডে অবস্থিত অপর্ণা ট্রেডার্স নামের ফার্নিচারের দোকানে এ ঘটনা ঘটে। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত উজ্জল আহমেদ পৌরশহরের আজিমনগরের (লম্বাহাটী) বাসিন্দা। ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এক নারী ড্রেসিং টেবিল কিনতে পৌরশহরের লঞ্চঘাট রোডের অপর্ণা ট্রেডার্সে আসেন। এ সময় তিনি একা থাকায় উজ্জল আহমেদ ড্রেসিং টেবিল দেখানোর ছলে ওই নারীকে জড়িয়ে ধরে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। সঙ্গে সঙ্গে ভুক্তভোগী নারী বিষয়টি পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনকে জানান।  খবর পেয়ে দুপুরে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শফিকুল ইসলাম অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে একপর্যায়ে তিনি দোষ স্বীকার করে নেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে উজ্জল আহমদকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও এক মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে আজমিরীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক জয়ন্ত তালুকদারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেন।
০৩ মে, ২০২৪

প্রেমিকাকে হত্যায় প্রেমিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নরসিংদীর মাধবদীতে প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে প্রেমিক দ্বীন ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেছে নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত। অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।  মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শামীমা পারভীন এ রায় প্রদান করেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, নিহত খাদিজা বেগম মাধবদীর একটি কারখানার শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি মাধবদী এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। কাজের সুবাদে দ্বীন ইসলাম নামে এক শ্রমিকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে খাদিজার বাসায় যাতায়াত শুরু করেন দ্বীন ইসলাম। এরই মধ্যে খাদিজা বিয়ের জন্য দ্বীন ইসলাম চাপ দিলে সে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয়। ২০১৮ সালের ১৩ মে খাদিজার বাসায় তার লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহতের মা আলিমুন্নেছা মাধবদী থানা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত ও মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের সূত্র ধরে প্রেমিক দ্বীন ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর দ্বীন ইসলাম হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতে বিচারক অভিযুক্ত প্রেমিক দ্বীন ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এপিপি অ্যাডভোকেট এমএএন অলিউল্লাহ। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সুইটি রায়। 
০১ মে, ২০২৪

গাজীপুরে স্কুলছাত্রকে হত্যার দায়ে ৭ জনের যাবজ্জীবন
অপহরণের পর মুক্তিপণ না পেয়ে স্কুলছাত্রকে হত্যার দায়ে সাতজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৯ এপ্রিল) গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. বাহাউদ্দিন কাজী এ রায় প্রদান করেন। রায়ে প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সেলিম (২২), আব্দুল্লাহ আল মামুন (১৯), শাহ আলম (২৯), মো. রিপন মিয়া (৩০), মো. মিলন খন্দকার (২৪), মো. তানজিল (২৪) ও শফিকুল ইসলাম (২২)। রায় প্রদানের সময় আব্দুল্লাহ আল মামুন, সেলিম, রিপন খন্দকার ও মো. তানজিল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। শাহ আলম ও মিলন খন্দকার জামিন নিয়ে পলাতক এবং শফিকুল ইসলাম মামলার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৮ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র মো. সোহেল পার্শ্ববর্তী চায়ের দোকানে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর সে আর ফিরে আসেনি। পরদিন সোহেলের পিতার মোবাইলে ফোন দিয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তি সোহেলের সন্ধান লাভের জন্য ১ লাখ টাকা দাবি করে। ওই বছরের ১০ ডিসেম্বর সকালে জয়দেবপুর থানার লুটিয়ারচালা গ্রামের মিনারদাগ নামক স্থানে গজারি বনের ভেতরে ছেলের লাশ পড়ে থাকার খবর পান। খবর পেয়ে জয়দেবপুর থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। পরে এ ঘটনায় নিহতের বাবা ফজলুল হক বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, অজ্ঞাতনামা খুনিরা অজ্ঞাত কারণে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার ছেলে মো. সোহেলকে বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী দোকানে যাওয়ার পথে কৌশলে ডেকে নিয়ে মারধর করে। পরে গলায় প্লাস্টিকের সুতলী প্যাঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। বিষয়টি গোপন করার জন্য লাশটি লুটিয়ারচালা এলাকার মিনারদাগ গজারি বনের ভেতরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা। মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মোহাম্মদ হাসান তদন্তের পর ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি ওই সাতজনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেন। দীর্ঘ শুনানির পর আদালত সাত আসামিকে ওই সাজা প্রদান করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) মাহবুব আলম মামুন। আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট লাবিব সিদ্দিকী।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

মানব পাচারের দায়ে একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
মেহেরপুরে মানবপাচার মামলায় জাহিদুল হক নামের একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে মেহেরপুরের মানবপাচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. তহিদুল ইসলাম (জেলা ও দায়রা জজ) এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জাহিদুল হক চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার উজিলপুর গ্রামের মাহাতাব উদ্দিনের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক ছিলেন এবং মামলায় তিনি কোনো আইনজীবীও নিয়োগ করেননি। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে মেহেরপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জতনের মেয়ে রেবা খাতুন ঢাকার একটি গার্মেন্টেসে চাকরি করতো। চাকরির সুবাদে আদম ব্যবসায়ী জাহিদুল হকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ভালো বেতনে চাকরি নামে তাকে জর্ডানে পাঠানোর প্রস্তাব দেয়। এক পর্যায়ে রেবা খাতুনের সঙ্গে আসামি মেহেরপুরে যান এবং তার ভাবীর কাছে থেকে ৫০ হাজার টাকা নেন। পরে রেবা খাতুন জর্ডানের পাঠানোর উদ্দেশ্যে রেবাকে নিয়ে ঢাকায় ফিরে যান। কয়েকদিন ধরে রেবার খোঁজ না পেয়ে জাহিদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে আরও টাকা দাবি করে নানারকম ভয়ভীতি দেখায়। এক পর্যায়ে রেবা খাতুনের ভাবী গাজু খাতুন ২০১৪ সালের ২৭ অক্টোবর মেহেরপুর মানবপাচার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে সদর থানাকে এফআইআরের নির্দেশ দেয় আদালত। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই দুলু মিয়া ও এস আই ফারুক হোসেন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার দীর্ঘ শুনানি ও নথিপত্র পর্যালোচনা করে আদালত আসামি জাহিদুলকে যাবজ্জীবন জেল ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই বছরের সাজা দেন।  মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর এ কে এম আসাদুজ্জামান আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

অনৈতিক সম্পর্কের মামলায় শিক্ষকের কারাদণ্ড
অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে করা মামলায় নাজমুল হাসান (৪০) নামে এক শিক্ষককে কারাদণ্ড দিয়েছেন চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত।  মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এ কারাদণ্ড দেন।  জেলার শাহরাস্তি উপজেলার আনন্দপুর গ্রামের কবির আহম্মেদ ২০২৩ সালের ৮ মে চাঁদপুরের বিচারিক শাহরাস্তি আমলী আদালতে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। তার স্ত্রী একটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক। স্ত্রী এক সন্তানের জননী হওয়া সত্ত্বেও আসামি একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নাজমুল হাসানের সঙ্গে চাকরির সুবাদে অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মামলার তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, প্রথম ঘটনা ২০২৩ সালের ২৮ এপ্রিলের। ওই দিন বিকেলে শাহরাস্তি উপজেলার স্বামীর বাড়িতে স্ত্রী ও স্ত্রীর সহকর্মীর অনৈতিক সম্পর্কের কথা বাদী জানতে পারেন। দ্বিতীয় ঘটনা একই বছরের। সেদিন চাঁদপুর খাঁন সড়কে ভাড়া বাসায় তারা অবস্থান করে এবং শারীরিক সম্পর্কে জড়ায়। এসব তথ্যপ্রমাণে আইনগতভাবে প্রমাণ হওয়ায় চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত দণ্ডবিধির ৪৯৭ ও ৪৯৮ ধারা অনুযায়ী অনৈতিক সম্পর্কের ঘটনায় বিচারিক সহজাত ক্ষমতাবলে ১ম আসামি নাজমুল হাসানকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও নগদ ৫০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত থাকায় তাকে আটক করে জেলে পাঠানো হয়। মামলার বাদী স্বামী কবির আহম্মেদ বলেন, আমার স্ত্রী তার প্রতিষ্ঠানের কৃষি শিক্ষার শিক্ষক নাজমুল হাসানের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি টের পেয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় ঘটনার সময় তাদের একসঙ্গে দেখা যায়। আমার স্ত্রী পরিবারের কাউকে কোনো কর্ণপাত করে না। আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে নগদ লাখ লাখ টাকা ও কয়েক ভরি স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নেয়। তবে মামলার দ্বিতীয় আসামি ও অভিযোগকারীর স্ত্রী বলেন, আমার সঙ্গে ওই শিক্ষকের ভালো সম্পর্ক ছিল। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

হাতি দিয়ে জোরপূর্বক চাঁদাবাজি করায় দুই মাহুতকে কারাদণ্ড
দিনাজপুরের খানসামায় হাতি দিয়ে জোরপূর্বক চাঁদাবাজি করায় দুই মাহুতকে ভ্রাম্যমাণ আদালত কারাদণ্ড দিয়েছে। বেশ কিছু দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় হাতি ব্যবহার করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চাঁদাবাজির ঘটনায় তাদের আটক করা হয়। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা প্রশাসন, খানসামা থানা ও খানসামা ফায়ার সার্ভিস এবং বন বিভাগ। এসময় দুই মাহুতকে গ্রেপ্তার করে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার হুবালা মণ্ডলপাড়া এলাকার সুবহান আলীর ছেলে মো. ইয়াছিন ইসলাম (২০) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কাজলা এলাকার সাগর ইসলামের ছেলে মো. আজিজুল হক (২১)। খানসামা থানার ওসি মোজাহারুল ইসলাম কালবেলাকে জানান, তাদের বুধবার (১৭ এপ্রিল) দিনাজপুর কারাগারে পাঠানো হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউএনও মো. তাজউদ্দিন কালবেলাকে বলেন, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এর আওতায় আসামি দুজনকে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

জেল থেকে বের হয়ে জানলেন মারা গেছেন পরিবারের ২৫ জন
দীর্ঘ ২৪ বছর কারাভোগের পর জেল থেকে মুক্ত হয়েছেন রেখা খাতুন। এতদিন পর মুক্ত হয়ে তার চোখে মুখে মুক্তির আনন্দের জায়গায় ভর করেছে বিষাদের ছায়া। দীর্ঘ এ সময়ে তিনি হারিয়েছেন বাবা-মাসহ পরিবারের ২৫ সদস্যকে। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও নেই তার। জানা গেছে, শিশু ধর্ষণ মামলায় রেখা খাতুন ২০০০ সালের ৫ নভেম্বর গ্রেপ্তার হয়ে লালমনিরহাট জেলা কারাগারে ছিলেন। ওই মামলায় তাকে ধর্ষণে সহযোগিতা করার অপরাধে আসামি করা হয়েছিল। মামলায় আরও দুজন আসামি ছিল। ২০০৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় রেখা খাতুনসহ অন্য আসামিদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। প্রত্যেকের এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে তিন বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। রেয়াতের ৬ বছর ১ মাস ১ দিন অনুযায়ী রেখা খাতুনের কারাভোগের মেয়াদ শেষ হয় গত বছর ৩ ডিসেম্বর। কিন্তু তিনি জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তিন বছরের জন্য কারা ভোগ করছিলেন।  তবে রেখা খাতুনের দাবি, শিশু ধর্ষণের ঘটনাটি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। তার স্বামীর বড় ভাইয়ের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে এই মামলায় আসামি করা হয়। এই মামলার অপর দুই আসামিকেও সে চিনতেন না। পরে জানতে পারেন তার স্বামীর সঙ্গে তাদের পরিচয় ছিল। তিনি ২০০০ সালের ৫ নভেম্বর কারাগারে প্রবেশ করে আর কারাগার থেকে বের হন ২০২৪ সালের ৯ এপ্রিল। জরিমানার টাকা পরিশোধ করার ব্যবস্থা না হলে আরও ৩ বছর কারাভোগ করতে হতো তাকে। রেখা খাতুন বলেন, তার জন্য কেউ কোনোদিন আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করেননি। তার পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে কথা বলেননি। তিনি কারাগারে যাওয়ার তিন বছর পর তার স্বামী কোরবান আলী আরেকজনকে বিয়ে করে নিরুদ্দেশ হয়েছেন। তিনি কোথায় আছেন তাও তিনি জানেন না। আমার বাবা-মা ও স্বজনরা মারা গেলেও আমাকে জানানো হয়নি। নদীভাঙনে আমাদের কোনো জমিই আর অবশিষ্ট নেই। জানা যায়, ১৪ বছর বয়সে রেখা খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয় ৩৪ বছর বয়সী কোরবান আলীর। দারিদ্র্যের কারণে রেখা খাতুনের বাবা-মা এ বিয়েতে রাজি হয়েছিলেন। স্বামীর বয়স বেশি হওয়ায় রেখা ২-৩ বছর স্বামীর বাড়িতে যায়নি। ১৯৯৮ সাল থেকে স্বামীর সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। রেখা ও তার স্বামী কোরবান আলী লালমনিরহাট শহরের খোঁচাবাড়ি এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। তার স্বামী পেশায় একজন দিনমজুর ছিলেন।  পরে ধর্ষণে সহযোগিতার দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হন রেখা। এ সময় তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানাও করেন আদালত। জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় যাবজ্জীবন কারাভোগকালীন গত বছরের ৪ ডিসেম্বর থেকে আরও তিন বছরের জন্য কারাভোগ শুরু হয় রেখার।  তবে বেসরকারি কারা পরিদর্শক টিমের সদস্য কবি ও সমাজসেবী ফেরদৌসী বেগম বিউটির সহযোগিতায় জরিমানার এক লাখ পরিশোধ করা হলে ৯ এপ্রিল ছাড়া পান রেখা খাতুন। রেখার ছোট বোন টুম্পা বেগম জানান, সামর্থ্য না থাকায় রেখা আপার জামিন করাতে পারিনি। বাবা-মা, ভাইবোনসহ আপনজনদের মৃত্যুর খবরও তাকে দেওয়া হয়নি। কবি ও সমাজকর্মী ফেরদৌসী বেগম বিউটি জানান, আমি রেখা খাতুনের জীবনগল্প শুনে তাকে কারাগার থেকে মুক্ত করার ব্যবস্থা করেছি। তাকে কীভাবে পুনর্বাসন করা যায় সে বিষয়ে পরিকল্পনা করছি। লালমনিরহাট জেলা কারাগারের জেল সুপার ওমর ফারুক জানান, কারাগারে রেখা খাতুনকে হস্তশিল্পের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তিনি হস্তশিল্পের কাজ করে উপার্জন করতে পারবেন। রেখা লালমনিরহাট কারাগারে ২৩ বছর ৪ মাস ৫ দিন ছিলেন। জরিমানার টাকা পরিশোধ করায় ৯ এপ্রিল তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।  লালমনিরহাট-৩ (লালমনিরহাট সদর) আসনের এমপি অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান জানান, রেখা খাতুনের বিষয়ে বিস্তারিত শুনেছি। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে তার পুনর্বাসনের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
১৫ এপ্রিল, ২০২৪
X