রং ছড়াচ্ছে আগুনঝরা রক্তিম কৃষ্ণচূড়া
কাঠফাটা রৌদ্রের তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করেই বসন্তের রক্তিম রেশ ধরে রেখেছে গ্রীষ্মের চোখধাঁধানো লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়া। দূর থেকে মনে হবে কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে লালের অরণ্য। খররোদে তপ্ত দিনে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় প্রকৃতি যেন, কৃষ্ণচূড়ার ডালি সাজিয়ে রেখেছে। গাছে গাছে ফুটেছে রক্তিম আলো। যার মোহনীয় রূপে সেজেছে উপজেলার পথ-প্রান্তর। কৃষ্ণচূড়া যে মানুষের মনে নতুনের দোলা দেয়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। পথঘাটে কৃষ্ণচূড়া এনেছে ভিন্ন আমেজ। গ্রাম বাংলার মেঠো পথের ধারে এখন শোভা পাচ্ছে লাল এই ফুল। গ্রীষ্মের ঘামঝরা দুপুরে কৃষ্ণচূড়ার ছায়া যেন প্রশান্তি এনে দেয় ক্লান্ত পথিকদের। তীব্র দাবদাহে দিশেহারা পথচারীরা পুলকিত নয়নে, অবাক বিস্ময়ে উপভোগ করেন এই সৌন্দর্য। কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিখ রেজিয়া। এটি ফাবাসিয়ি পরিবারের অন্তর্গত একটি বৃক্ষ। ‘গুলমোহর’ নামেও এর পরিচিতি রয়েছে। কৃষ্ণচূড়া ফুলগুলো গাঢ় লাল রঙের হয়। ফুলের ভেতরের অংশ হালকা হলুদ ও রক্তিম হয়। শনিবার (৪ মে) উপজেলার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, সরকারি দপ্তর, এমনকি বাড়ির উঠানেও অনন্য রূপ ধারণ করে ফুটেছে রক্তিম কৃষ্ণচূড়া। গাছে রক্তিম আভা নিয়ে জেগে থাকা কৃষ্ণচূড়া দৃষ্টি কাড়ছে ফুলপ্রেমীদের। প্রকৃতিপ্রেমীরাও ছুটে আসছে কৃষ্ণচূড়ার এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে। প্রকৃতির এই অপরূপ দৃশ্যের ছবি তুলছেন অনেকেই। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের দুই লাইন মনোমুগ্ধকর গানে উপলব্ধি সৌন্দর্য। ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে, আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে’। ‘রেশমি চুড়ির তালে কৃষ্ণচূড়ার ডালে/পিউ কাঁহা পিউ কাঁহা ডেকে ওঠে পাপিয়া।’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানেও কৃষ্ণচূড়ার দর্শন পাওয়া যায়। তিনি লিখেছিলেন, ‘গন্ধে উদাস হাওয়ার মতো উড়ে তোমার উত্তরী/কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরী।’ জানা গেছে, সাধারণত বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ এ দুই মাস নিয়েই গ্রীষ্মকাল। আর গ্রীষ্মের ফুলের কথা বলতেই সবার চোখের সামনে ভেসে ওঠে কৃষ্ণচূড়ার কথা। সুমিষ্ট রসাল ফলের জন্য গ্রীষ্মকাল এগিয়ে রয়েছে, তবে ফুলের দিক থেকেও অন্য সব ঋতুর তুলনায় এগিয়ে। তাই ফুল উৎসবের ঋতু বলা যায় গ্রীষ্মকালকেই। এ মৌসুমে কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙের যে উম্মাদনা, তা এতই আবেদনময়ী যে চোখ ফেরানো অসম্ভব। প্রকৃতিপ্রেমী রহিমা খাতুন কালবেলাকে বলেন, রক্তিম আলো শুধু সূর্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। যে আলো ছড়িয়ে পড়েছে কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে। যখন কৃষ্ণচূড়া ফোটে তখন গাছের লাল-সবুজ রঙে যেন মুখর হয়ে উঠে। আর এ সময়টা আমার কাছে অন্যরকম ভালো লাগে। এ অনুভূতির কথা মুখে বলে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আরেক প্রকৃতিপ্রেমী সোহেল আরমান কালবেলাকে বলেন, উপজেলায় হাজারো কৃষ্ণচূড়ার গাছ আছে। গাছে গাছে এ রক্তিম ফুল দেখে আমরা বিমোহিত। বৈশাখ মানেই ভিন্ন সাজে বাংলার প্রকৃতির ইতিহাস। আকাশে গনগনে সূর্য। কাঠফাটা রোদ্দুরে তপ্ত বাতাস। গ্রীষ্মের এই রুক্ষতা ছাপিয়ে প্রকৃতিতে কৃষ্ণচূড়া নিজেকে মেলে ধরে আপন মহিমায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তাজ উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, ‘আমাদের এ উপজেলার প্রায় সব জায়গায় কৃষ্ণচূড়া গাছ রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ সেসব গাছ তদারকি করে। সৌন্দর্যবর্ধক এই গাছ রক্ষায় আমাদের সকলকে কাজ করতে হবে।’
০৪ মে, ২০২৪

সৌন্দর্যের ডালি সাজিয়েছে লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়া
‘এই সেই কৃষ্ণচূড়া, যার তলে দাঁড়িয়ে হাতে হাত, চোখে চোখ, কথা যেত হারিয়ে.../ কৃষ্ণচূড়া লাল হয়েছে ফুলে ফুলে, তুমি আসবে বলে।’ উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী কিশোর কুমারের বিখ্যাত গানে আমরা উপলব্ধি করি কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের গানেও কৃষ্ণচূড়ার দর্শন পাওয়া যায়। তিনি লিখেছিলেন ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে, আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে’। ‘রেশমি চুড়ির তালে কৃষ্ণচূড়ার ডালে/পিউ কাঁহা পিউ কাঁহা ডেকে ওঠে পাপিয়া। প্রকৃতিতে এখন গ্রীষ্মকাল। কাঠফাটা রৌদ্রের তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করেই বসন্তের সেই রক্তিম রেশ ধরে রেখেছে গ্রীষ্মের চোখধাঁধানো লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়া। প্রকৃতি যখন পুড়ছে তাপপ্রবাহে, ঠিক তখনই চারপাশের সবকিছুকে রাঙিয়ে দিতে আগমন কৃষ্ণচূড়ার। রুক্ষতাকে হার মানিয়ে প্রকৃতি যেন হেসে উঠলো নতুন করে।  কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙেই ভেসে ওঠে গ্রীষ্মের প্রকৃত সৌন্দর্য। রোদ ঝলমলে দিনে, নীল আকাশের নিচে এ ফুল দিগন্তকে যেন সাজিয়ে তোলে মোহনীয় রূপে। কৃষ্ণচূড়ার রাঙা ফুলের বাড়তি এ সৌন্দর্যে সেজেছে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার প্রকৃতি। উপজেলার পুরোনো বিদ্যাপীঠ ভগবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশে, দীর্ঘভূমি বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ে, থানা কমপ্লেক্সসহ উপজেলার গ্রামীণ সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে নজরকাড়া কৃষ্ণচূড়া গাছ। গাছে লাল হাসিতে ফোটে আছে কৃষ্ণচূড়া ফুল। কৃষ্ণচূড়ার এ নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে বিমোহিত হচ্ছেন নানা বয়সী মানুষ। কেউ কেউ কৃষ্ণচূড়ার প্রেমে পড়ে রাঙা ফুল তুলে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়ি।  স্থানীয় বাসিন্দা সাইদুল হক কালবেলাকে বলেন, এক সময় এ জনপদে অনেক কৃষ্ণচূড়া গাছ দেখা যেত। গ্রীষ্মের দিকে রঙিন ফুলের কারণে এ গাছ যত্রতত্র চোখে পড়ত। তবে দিন দিন এর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। কৃষ্ণচূড়া গাছে কাঠ হয় না বলে নতুন করে কেউ আর এ গাছ রোপণ করে না। এ তপ্ত প্রকৃতিতে কৃষ্ণচূড়া ফুলে দৃষ্টি পড়লে মন শীতল হয়ে ওঠে।   উপজেলার শিদলাই ইউনিয়নের লাড়ুচৌ এলাকার বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, গ্রীষ্মের এই সময়ে প্রকৃতিকে সুশোভিত করে তুলেছে চিকন চিকন সবুজ পাতার ফাঁকে ফোটে থাকা মনোমুগ্ধকর কৃষ্ণচূড়া ফুল। আসা যাওয়ার পথে এ ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন অনেকেই। ছোট বেলায় আমরা ঝরা কৃষ্ণচূড়া ফুল কুড়িয়ে এনে বইয়ের পৃষ্ঠার ভাঁজে লুকিয়ে রাখতাম। সে সময় এটা করে আনন্দ পেতাম। আর এর জন্য সমবয়সীদের মধ্যে এক দারুণ প্রতিযোগিতা ছিল। আমির হোসেন জোবেদা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ‘প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ধনে কৃষ্ণচূড়ার ভূমিকা অপরিসীম। এ ফুল গ্রীষ্মের শুরুর দিক থেকে ফুটতে শুরু করে। প্রকৃতির সবুজ পেছনে ফেলে বেরিয়ে আসতে থাকে লাল রঙের কৃষ্ণচূড়া ফুল। এতে মানুষের দৃষ্টিগোচর হতে থাকে মনোহর সৌন্দর্য। গ্রীষ্মে প্রকৃতিকে অপরূপ সাজে সাজিয়ে তোলে কৃষ্ণচূড়া। তবে দিন দিন এ গাছের সংখ্যা কমে আসছে। আমাদের সকলের দায়িত্ব সৌন্দর্য বিলানো গাছটিকে টিকিয়ে রাখতে এর চারা রোপণ করা। কৃষ্ণচূড়ার মূল আবাস মাদাগাস্কার হলেও ক্যারাবিয়ান অঞ্চল, আফ্রিকা, হংকং, তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন, ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশে এটি হয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণচূড়া শুধু দক্ষিণ ফ্লোরিডা, দক্ষিণ পশ্চিম ফ্লোরিডা, টেক্সাসের রিও গ্রান্ড উপত্যকায় পাওয়া যায়। এ ছাড়া কোস্টারিকা, পানামাসহ মধ্যম তাপমাত্রার দেশেও এর উপস্থিতি দেখা যায়। ভারত বর্ষে সাধারণত এপ্রিল-জুন মাসে কৃষ্ণচূড়া ফুল ফোটে। তবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কৃষ্ণচূড়ার ফুল ফোটার সময় ভিন্ন ভিন্ন সময়। কৃষ্ণচূড়া একটি বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ যার বৈজ্ঞানিক নাম -ডেলোনিক্স রেজিয়া। যা ফ্যাবেসি পরিবারের অন্তর্গত। ইংরেজিতে এটি পরিচিত ফ্লেম ট্রি হিসেবে পরিচিত। পাকিস্তান ও ভারতের বিভিন্ন জায়গায় কৃষ্ণচূড়া পরিচিত ‘গুলমোহর’ নামে।
০৪ মে, ২০২৪

রং ছড়াচ্ছে আগুনঝরা রক্তিম কৃষ্ণচূড়া
‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে, আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে’। ‘রেশমি চুড়ির তালে কৃষ্ণচূড়ার ডালে/পিউ কাঁহা পিউ কাঁহা ডেকে ওঠে পাপিয়া।’ কবি কাজী নজরুল ইসলামের এ দুই মনোমুগ্ধকর গানে আমরা উপলব্ধি করি কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানেও কৃষ্ণচূড়ার দর্শন পাওয়া যায়। তিনি লিখেছিলেন, ‘গন্ধে উদাস হাওয়ার মতো উড়ে তোমার উত্তরী/কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরী।’  শিমুল-পলাশ ফোটা ঋতুরাজ বসন্তের দিন পেরিয়ে গ্রীষ্মের পুষ্প উৎসবে ডানা মেলেছে আগুনঝরা কৃষ্ণচূড়া। গ্রীষ্মের এ পুষ্প উৎসবে প্রকৃতির ভাঁজে ভাঁজে ডানা মেলেছে মনোহর জারুল, স্বর্ণাভ সোনালু, মধুমঞ্জরী ও কাঠগোলাপের মতো পরিচিত-অপরিচিত অনেক ফুল। তবে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম উদ্ভাসের কাছে ম্লান হয়ে গেছে সব রঙের ফুল। কৃষ্ণচূড়ায় রুপের ছোঁয়া পড়েছে প্রকৃতির পথে-প্রান্তরে। রোদের দাপটে পুড়া প্রকৃতিতে যেন আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে এ ফুল। এমন রোদে কৃষ্ণচূড়ার আবির নিয়ে প্রকৃতি সেজেছে বর্ণিল রূপে। যেন প্রকৃতিতে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম বর্ণের উৎসব চলছে। মাথার ওপর লাল সবুজের চাদোয়া, পায়ের নিচে ঝরা ফুলের বিছানা। যখন কৃষ্ণচূড়া ফোটে তখন এর রূপে মুগ্ধ হয়ে পথচারীরাও চলার পথে ক্ষণিক থমকে তাকান। এ গ্রীষ্মে নানা রঙের ফুলের সাজে সেজেছে নাটোরের প্রকৃতি। তবে সবকিছু ছাপিয়ে পথিকের মন কেড়ে নেয় পথে-প্রান্তরের ফুটে থাকা আগুনঝরা কৃষ্ণচূড়ার সমাহার। এ যেন চমৎকার রূপ, যেন কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে আগুন লেগেছে। কৃষ্ণচূড়ার যখন ফুটে এই প্রকৃতির বুকে, তখন সব বাঙালির হৃদয়ে দোলা দেয়। প্রখর রোদে যেন এক প্রশান্তি এনে দেয় কৃষ্ণচূড়া। বৈশাখ মাস কৃষ্ণচূড়া ফোটার সময়। এ সময় বাংলাদেশের সব জায়গায় কৃষ্ণচূড়া ফোটে। এ সময়ে দেশের গ্রাম কিংবা শহরে কৃষ্ণচূড়া ফুটতে দেখা যায়। অনেক দেশেই কৃষ্ণচূড়ার দেখা মেলে। তবে ফুল ফোটার সময়কাল এক নয়, দেশ ভেদে এটি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ফুটে। কৃষ্ণচূড়ার মূল আবাস মাদাগাস্কার হলেও ক্যারাবিয়ান অঞ্চল, আফ্রিকা, হংকং, তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন, ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশে এটি হয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণচূড়া শুধু দক্ষিণ ফ্লোরিডা, দক্ষিণ পশ্চিম ফ্লোরিডা, টেক্সাসের রিও গ্রান্ড উপত্যকায় পাওয়া যায়। এ ছাড়া কোস্টারিকা, পানামাসহ মধ্যম তাপমাত্রার দেশেও এর উপস্থিতি দেখা যায়। ভারত বর্ষে সাধারণত এপ্রিল-জুন মাসে কৃষ্ণচূড়া ফুল ফোটে। তবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কৃষ্ণচূড়ার ফুল ফোটার সময় ভিন্ন ভিন্ন সময়। কৃষ্ণচূড়া একটি বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ যার বৈজ্ঞানিক নাম -ডেলোনিক্স রেজিয়া। যা ফ্যাবেসি পরিবারের অন্তর্গত। ইংরেজিতে এটি পরিচিত ফ্লেম ট্রি হিসেবে পরিচিত। পাকিস্তান ও ভারতের বিভিন্ন জায়গায় কৃষ্ণচূড়া পরিচিত 'গুলমোহর' নামে।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪

পথ-প্রান্তর রাঙিয়ে তুলেছে রক্তরাঙা কৃষ্ণচূড়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার পথ-প্রান্তর রাঙিয়ে তুলেছে রক্তরাঙা ফুল কৃষ্ণচূড়া। চোখ ধাঁধানো টুকটুকে লাল কৃষ্ণচূড়া ফুলে সেজেছে গ্রীষ্মের প্রকৃতি। এই সময়টায় পথে-প্রান্তরে এখন ফুটছে কৃষ্ণচূড়া। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, বৈশাখের রৌদ্দুরের সবটুকু উত্তাপ গায়ে মেখে নিয়েছে রক্তিম পুষ্পরাজি; সবুজ চিরল পাতার মাঝে যেন আগুন জ্বলছে। গ্রীষ্মের ঘামঝরা দুপুরে কৃষ্ণচূড়ার ছায়া যেন প্রশান্তি এনে দেয় অবসন্ন পথিকের মনে। তাপদাহে ওষ্ঠাগত পথচারীরা পুলকিত নয়নে অবাক বিস্ময়ে উপভোগ করেন এই সৌন্দর্য। চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য যেন হার মানায় ঋতুরাজকেও। তাই তো কৃষ্ণচূড়া গ্রীষ্মকে দিয়েছে অন্য এক সৌন্দর্য।  কসবার বিভিন্ন এলাকায় প্রকৃতিতে এখন কৃষ্ণচূড়ার বর্ণিল হাওয়া দোলা দিচ্ছে। সুবাতাস ছুঁয়ে যাচ্ছে ফুল ও প্রকৃতিপ্রেমি মানুষের হৃদয়। পাখির ডানায়, হাওয়ায়-হাওয়ায় উড়ছে তার লাবণ্য। এ যেন গ্রীষ্মের কাঠফাঁটা রোদ্দুরকে সহনীয় করতে কৃষ্ণচূড়ার বর্ণিল রূপে সেজে উঠেছে প্রকৃতি। দেখলেই মনে হয় কৃষ্ণচূড়ার রঙের আগুন জ্বলছে শাখায় শাখায়। গাছে গাছে রক্তিম আভা নিয়ে জেগে থাকা কৃষ্ণচূড়া দৃষ্টি কাড়ছে সেইসব ফুলপ্রেমী মানুষদের, যারা শত ব্যস্ততার মধ্যেও ফুলের জন্য অপেক্ষা করে আর কৃষ্ণচূড়ার জন্য প্রহর সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রহর গোনে। এখানকার বেশ কয়েকজন ফুল ও প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যারা ফুলপ্রেমী মানুষ, তাদের কাছে কৃষ্ণচূড়া একটি জনপ্রিয় ফুল। নানা বৈশিষ্ট্যে দৃষ্টিনন্দন এ ফুলের কদর রয়েছে সব মহলেই। বিশেষ করে বাংলা কাব্য, সাহিত্য, সংগীত ও বিভিন্ন উপমায় কৃষ্ণচূড়া ফুলের কথা ব্যাপকভাবে উঠে এসেছে। ফুলটির রং এত তীব্র যে অনেক দূর থেকেই চোখে পড়ে। হঠাৎ দূর থেকে দেখলে মনে হবে, কৃষ্ণচুড়া গাছে যেন রঙের আগুন লেগেছে।   সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার গ্রামগুলোতে না কোথাও  না কোথাও দেখা মিলছে কৃষ্ণচূড়ার। এলাকার বেশকিছু পাড়া-মহল্লায়ও ফুলটি সগর্বে জেগে রয়েছে। সাধারণত বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ এ দুই মাস নিয়েই গ্রীষ্মকাল। আর গ্রীষ্মের ফুলের কথা বলতেই সবার চোখের সামনে ভেসে ওঠে কৃষ্ণচূড়ার কথা। সুমিষ্ট রসাল ফলের জন্য গ্রীষ্মকাল এগিয়ে রয়েছে, তবে ফুলের দিক থেকেও অন্যসব ঋতুর তুলনায় এগিয়ে রয়েছে গ্রীষ্মকাল।  তাই ফুল উৎসবের ঋতু বলা যায় গ্রীষ্মকালকেই। এ মৌসুমে কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙের যে উন্মাদনা, তা এতই আবেদনময়ী যে চোখ ফেরানো অসম্ভব।  গ্রীষ্মের শুরু থেকেই কৃষ্ণচূড়া ফুলটি প্রকৃতিতে নেমে আসতে শুরু করে। দূর থেকে কৃষ্ণচূড়া দেখলে শুধু মানুষের নয়, পাখিদেরও যেন মন ভরে ওঠে।  তাই নানা জাতের পাখির আনাগোনাও থাকে গাছটিকে ঘিরে। বিশেষ করে জাতীয় পাখি দোয়েল, টুনটুনি, চড়ুই, বুলবুল পাখির সরব উপস্থিতি থাকে সারা বেলা। শরীরে রক্তিম আভা মেখে কৃষ্ণচূড়া যেন সারাক্ষণ সবুজ বনভূমি, তৃণভূমিকে আলোকিত করে রেখেছে। রঙে, রূপে, উজ্জ্বলতা ও কমনীয়তায় কোনো  কিছুই যেন কৃষ্ণচূড়ার সমকক্ষ নয়। কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্যে একবারের জন্য হলেও দৃষ্টি আটকে যায় না কিংবা থমকে দাঁড়ায় না। বসন্তের শেষ দিকে সাধারণত কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে পড়তে শুরু করে। ধীরে ধীরে পত্রহীন বাঁকানো ডালগুলোতে দেখা যায় কলির আভাস।   অন্যান্য ফুল গাছে যখন নতুন পাতা আসে কিন্তু ফুল আসে না, ঠিক তখনই কৃষ্ণচূড়ার সব পাতা ঝরে গিয়ে ফুলের কলি দেখা দেয়। আর গ্রীষ্মের শুরুতেই দেখা যায় লালের আভাস। তারপর লালে লালে উজ্জ্বল হয়ে প্রতৃতিতে যেন আগুন লাগিয়ে দেয় কৃষ্ণচূড়া। ফুলপ্রেমীরা জানান, যখন কৃষ্ণচূড়া ফোটে তখন গাছে গাছে লাল-সবুজ রঙে যেন ভরে ওঠে। আর এ সময়টা খুবই ভালো লাগে। সেটা এক  অন্যরকম ভালোবাসা।
২৩ এপ্রিল, ২০২৪
X