নারী কয়েদির সঙ্গে কারারক্ষীর অনৈতিক সম্পর্ক, দেখে ফেলায় নির্যাতন
গাইবান্ধা জেলা কারাগারের ভেতরে কারারক্ষীর সঙ্গে এক নারী কয়েদির অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় এক নারী হাজতিকে নির্যাতন ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই হাজতির মায়ের অভিযোগ, তার মেয়েকে শারীরিক নির্যাতন, শ্লীলতাহানি এবং নারী ইউনিটে পুরুষ ঢুকে মারধর করেছে। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীর মা মোছা. করিমন নেছা। বুধবার (১৭ এপ্রিল) জেলা কারাগারের এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা জানাজানি হলে জেলার সর্বত্র এ বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।  অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী পাঁচ বছর যাবৎ গাইবান্ধা জেলা কারাগারে হাজতি হিসেবে রয়েছেন। ভুক্তভোগী ওই হাজতির মা লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, জেলা কারাগারে কর্মরত প্রধান কারারক্ষী মো. আশরাফুল ইসলাম এবং নারী কয়েদি (রাইটার) মোছা. মেঘলা খাতুনের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তাদের অনৈতিক কার্যকলাপ আমার মেয়ে দেখে ফেলায় তার প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ও রাইটার মেঘলা তার ওপর ক্ষিপ্ত হন। এ কথা কাউকে বললে মেয়েকে মেরে ফেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে চালিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন।  লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, আশরাফুল ইসলাম তার মেয়েকে বিভিন্ন সময় কারাগারের ভেতরে শ্লীলতাহানিসহ কুপ্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করতেন। বিভিন্ন সময় তার পোশাক ধরে টানাটানি করেছেন। মেয়েকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করার চেষ্টাও করেছেন।  এ নিয়ে জেল সুপারের কাছে বিচার দেওয়ার কথা বললে আশরাফুল প্রকাশ্যে ভুক্তভোগীকে বলেন, জেলার সাহেব তার লোক। তিনি নিজের টাকা খরচ করে জেলারকে বদলি করে নিয়ে এসেছেন। জেলার তার কোনো বিচার করতে পারবেন না।  চলতি বছরের ২০ মার্চ দুপুরে আশরাফুলের নেতৃত্বে কয়েদি মেঘলা খাতুন, রেহেনা, আলেফা এবং কারারক্ষী তহমিনা, শাবানা গং কারাগারের নারী ইউনিটের বারান্দায় ভুক্তভোগীকে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারেন। একপর্যায়ে আশরাফুল, সিআইডি কর্মকর্তা আনিছ এবং হাবিলদার মোস্তফা কারাগারের নারী ইউনিটে প্রবেশ করে মেয়েকে টেনেহিঁচড়ে সেলের ভেতর নিয়ে যান। মেয়ের হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে, রশি দিয়ে দুই পা বেঁধে লাঠি দিয়ে ঊরু ও পায়ের পাতায় বেদম মারধর করেন। কাপড় টেনে ছিঁড়ে ফেলে বিবস্ত্র করেন। এ ঘটনা বাইরে প্রকাশ করলে হত্যার হুমকি দেওয়া হয় তাকে।  অভিযুক্ত আশরাফুল ইসলামের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দিলে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। কারারক্ষী মো. আশরাফুল ইসলামের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা জেল সুপার মো. জাবেদ মেহেদী বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না।  কারাগারের ভেতরে সব অবৈধ কার্যকলাপ, কয়েদিদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আপনি জেনেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না- এমন প্রশ্নে জেল সুপার বলেন, ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল বলেন, মঙ্গলবার কারাগারে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মশিউর রহমানকে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন। তদন্ত শেষে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১৭ এপ্রিল, ২০২৪

গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতিসহ দুজন রিমান্ডে
রাজধানীর শাহজাহান পুর থানায় নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় গাইবান্ধা জেলা বিএনপি সভাপতি অধ্যাপক ড. সৈয়দ ময়দানে ময়নুল হাসান সাদিকসহ দুজনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।  আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশেকে ইমামের আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে যাওয়া অপর আসামি হলেন- সৈয়দ হাসিবুর রহমান জ্যাকি।  এদিন দুই আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর আসামি সাদিকের ১০ দিন ও আসামি হাবিবুরের তিন দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক মো. নুরুল ইসলাম। শুনানি শেষে আদালত আসামি সাদিকের পাঁচ দিন ও আসামি হাবিবুরের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।  এর আগে গত ২৯ অক্টোবর রাজধানীর শাহজাহান পুর থানায় উপপরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মির্জা আব্বাসকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন। মামলা ৪৯ জনের নাম উল্লেখসহ ৭০০/৮০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। এ মামলায় মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। গত ১ নভেম্বর এ মামলায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।  মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে নয়াপল্টনে সমাবেশ শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদ ওরফে আব্বা আছে নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় আসামিরা বেআইনি জনতাবদ্ধে মারাত্মক দেশীয় অস্ত্র সদ্যে সজ্জিত হয়ে বিরোধী স্লোগান দেয়। তারা জনমনে আতঙ্ক ও ভীতি সৃষ্টি করে শাহজাহান পুর থানাধীন এলাকায় বিভিন্ন প্রকার নাশকতামূলক ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম পরিচালনা এবং হত্যার উদ্দেশ্যে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। ককটেল বিস্ফোরণ ও পুলিশের সরকারি কাজে বাধা প্রদান করে তারা। এ সময় আসামিরা অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
১৬ নভেম্বর, ২০২৩
X