গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে বাড়িছাড়া বিএনপির নেতাকর্মীরা
জয়পুরহাট জেলা বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কেউ জেলহাজতে আবার কেউ নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বাড়ি ছাড়া। আবার অনেকেই নতুন মামলায় জড়িয়ে না পড়তে চলাফেরা করছেন সতর্কতার সাথে।  গ্রেপ্তার, মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মিলে জেলার বিএনপির রাজনীতি এখন নিষ্ক্রিয়। জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ছোট পরিসরে জেলা বার ভবন চত্বরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করে। দীর্ঘ আড়াই মাসের অধিক সময় ধরে জয়পুরহাট জেলা বিএনপির কার্যালয়ে তালা ঝুলছে। কার্যালয়ের বারান্দা এখন স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বাই-সাইকেল ও মোটর সাইকেল রাখার নিরাপদ গ্যারেজ। জেলা বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাবেশে যোগ দিতে যান জয়পুরহাটের সহাস্রাধিক নেতাকর্মী। সেখানে সমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর, বাড়ি ফেরার পথে কেউ গ্রেপ্তার হন । আবার বাড়ি ফিরে আসার পর গ্রেপ্তার হতে থাকেন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ২৮ অক্টোবর থেকে ৭ জানুয়ারি ভোটের আগ পর্যন্ত  চলে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান। ফলে গা-ঢাকা দেন শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। বিএনপির ডাকা অবরোধে দুর্বত্তরা জয়পুরহাটে ট্রেনে এবং ট্রাকে বোমা ছুড়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটায়। জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি, তারা এখন বিএনপি কার্যালয় খুলতে ভয় পাচ্ছেন পুলিশের। যদি মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায়। বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, আবার ব্যবসাও করেন অনেক নেতাকর্মী। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আর জেলহাজতে থাকায় তাদের অনেকের ব্যবসায় স্থবিরতা নেমে এসেছে। রাজনীতির কারণে ভেতরে ভেতরে চরম অশান্তি চলছে এ সব পরিবারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এমনই অশান্তি আর অর্থনৈতিক কষ্টের কথা বললেন ভুক্তভোগী পরিবারের তিন সদস্য। তাদের এখন দুঃসময় চলছে বলেও মন্তব্য করেন। ব্যবসার ক্ষতির সঙ্গে সঙ্গে তারা সময় পার করছেন দুশ্চিন্তায়। জয়পুরহাট শহর (পৗর বিএনপি) বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এটিএম মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশ থেকে জয়পুরহাটের উদ্দেশ্যে আসার পথে বাস তল্লাশি করে এবং অভিযান চালিয়ে দেড় শতাধিক বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে নাশকতার হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ রকম ৮-১০টি নাশকতার মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসব মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী এখনও ঘরছাড়া। নেতাকর্মী পুলিশের ভয়ে আত্মগোপনে থাকায় এবং গ্রেপ্তার এড়াতে তারা এখনো বিএনপি কার্যালয় খুলতে পারছেন না। জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হারুণুর রশিদ বলেন, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে যেসব নেতাকর্মী নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে ছিলেন বা এখনো আছেন, তাদের অনেকেই উচ্চ আদালত এবং জেলা জজ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। বাকিদের আইনি লড়াইয়ে জামিন করার প্রক্রিয়া চলছে। জয়পুরহাট সদর থানার ওসি হুমায়ন কবীর বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগে তাদের নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। অহেতুক হয়রানি করার জন্য কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে না। বিএনপি কার্যালয় খোলা রাখা ও বন্ধ রাখা এটা তাদের বিষয়।
১৬ জানুয়ারি, ২০২৪

গাড়িচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী হত্যা / সোমালিয়ার প্রেসিডেন্টের ছেলের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিল
গাড়িচাপায় এক মোটরসাইকেল আরোহীকে হত্যার অভিযোগে পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ার প্রেসিডেন্টের ছেলের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিল করেছে তুরস্ক। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানি বাতিল করে রায় দিয়েছেন তুর্কি আদালত। খবর রয়টার্সের। গত ৩০ নভেম্বর অভিযুক্ত মোহাম্মদ হাসান শেখ মাহমুদ তুর্কি শহর ইস্তাম্বুলে প্রকাশ্য দিবালোকে এক মোটরসাইকেল আরোহীকে চাপা দেন। গাড়িচাপার কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান তিনি। দুর্ঘটনার সময় মোহাম্মদ হাসান যে গাড়ি চালাচ্ছিলেন সেটি তুরস্কের সোমালি কনস্যুলেটের। এ ঘটনায় পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের পর ২ ডিসেম্বর তুরস্ক ছেড়ে চলে যান মোহাম্মদ হাসান। এরপর ৬ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তুরস্ক। গত মাসে তুরস্কের বিচারমন্ত্রী ইলমাজ টুঙ্ক বলেছেন, মোহাম্মদ হাসান আদালতের শুনানি অংশ নিতে তুরস্কে ফিরে আসবেন বলেই তার প্রত্যাশা। এরপর তিনি ইস্তাম্বুলে আসেন এবং শুক্রবার বিকেলে আদালতে হাজির হন। আদালতে তিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করে দুর্ঘটনার জন্য মোটরসাইকেল চালককে দায়ী করেন। শুনানি শেষে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করে নেন আদালত। একই সঙ্গে এই মামলার ভবিষ্যৎ শুনানি থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তুরস্ক ও সোমালিয়ার মধ্যে বেশ উষ্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। দেশটির অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ ছাড়াও সোমালিদের সামরিক প্রশিক্ষণ ও মানবিক সহায়তা দিয়ে থাকে আঙ্কারা।
১২ জানুয়ারি, ২০২৪

মমতাজের বিরুদ্ধে আবারও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নারী সংসদ সদস্য, দুই বাংলার জনপ্রিয় গায়িকা মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে আবারও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে ভারতে। চুক্তিভঙ্গ এবং প্রতারণার অভিযোগে করা মামলায় এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বহরমপুর আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক অলকেশ দাস। এ মামলায় মমতাজের বিরুদ্ধে এর আগেও তিনবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল। এর পর তিনি মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায় বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার মমতাজ বেগমকে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে। মমতাজের আইনজীবী দেবাংশু সেনগুপ্ত জানিয়েছিলেন, তার মক্কেল আদালতের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন। আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৯ আগস্ট মুর্শিদাবাদের মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল মমতাজের। ৮ আগস্ট বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মমতাজের মামলার চার্জ গঠন করা হবে। সেই দিন মমতাজ উপস্থিত না হলে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে। এর পরেই মমতাজ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে একটি আবেদনপত্র আদালতে দাখিল করেন। আবেদনে মমতাজ জানান, আদালতের নির্ধারিত তারিখে তিনি কানাডায় একটি অনুষ্ঠানে থাকবেন। ফলে তার পক্ষে আদালতে হাজিরা দেওয়া সম্ভব হবে না। মুর্শিদাবাদের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ওই আবেদন খারিজ করে দিয়ে মমতাজের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেন।  প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মুর্শিদাবাদে ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনের জন্য আয়োজক সংস্থার কর্মকর্তা শক্তিশঙ্কর বাগচীর সঙ্গে মমতাজের লিখিত চুক্তি হয়। সেই চুক্তি মোতাবেক শক্তিশঙ্করের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মমতাজ নিয়মিত অংশ নিতেন। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ১৪ লাখ টাকায় মুর্শিদাবাদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল শিল্পীর। তিনি অগ্রিম টাকাও নেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি মমতাজ। এর পরেই শক্তিশঙ্কর চুক্তিভঙ্গ ও প্রতারণার অভিযোগ তুলে মুর্শিদাবাদের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মমতাজের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তার ভিত্তিতে আদালতপরবর্তী সময়ে সমন জারি করে।  এদিকে এ বিষয়ে এর আগে সামাজিক মাধ্যমে মমতাজ এক দীর্ঘ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন। সেখানে জানিয়েছিলেন, মামলাটি মিথ্যা ও বানোয়াট। দাবি করেছিলেন, ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেই মামলাটি করা হয়েছে। এর আগেও তামিলনাড়ুর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠে মমতাজের বিরুদ্ধে। সেই মামলা এখনো তামিলনাড়ুর আদালতে বিচারাধীন।
০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X