যুগ্ম জেলা জজ আহসান হাবীবের মৃত্যু
ঢাকার স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা জজ) আহসান হাবীব শাহীন মারা গেছেন। গতকাল শনিবার সকাল সোয়া ১১টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)। বিচার বিভাগে সবার কাছে প্রিয়মুখ ছিলেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৪০ বছর। আহসান হাবীব স্যালিভারি গ্লান্ড ক্যান্সারে ভুগছিলেন। গত বছর ক্যান্সার ধরা পড়ার পর থেকে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। সিঙ্গাপুর, ভারতেও চলেছে চিকিৎসা। সর্বশেষ গত ১৫ সেপ্টেম্বর মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত কারণে অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ম্যাজিস্ট্রেট আহসান হাবীবের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং আইন ও বিচার বিভাগের সচিব গোলাম সারওয়ার। বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকেও শোক প্রকাশ করা হয়েছে। বিচারক আহসান হাবীব বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের চতুর্থ ব্যাচের কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ২০১০ সালের ১৭ জানুয়ারি রাজশাহী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সহকারী জজ হিসেবে যোগ দেন। সর্বশেষ স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ঢাকায় পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ডে দায়িত্ব পালনকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। আহসান হাবীব রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি (অনার্স) ২০০০-০১ সেশনের (২৪ ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, মা-বাবাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায়। সেখানেই তাকে দাফন করা হবে।
১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

কক্সবাজারের জেলা জজকে হাইকোর্ট / ‘আপনি ভুল করেননি, অপরাধ করেছেন’
কক্সবাজারের জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলকে উদ্দেশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, আপনি একজন সিনিয়র জেলা জজ। দীর্ঘদিন বিচারকাজ করেছেন। আপনি আদালতের আদেশ টেম্পারিং (ঘষামাঝা) করেছেন। এতে আপনার বুক কাঁপল না? টেম্পারিং করে আপনি ভুল করেননি। জেনে বুঝে আপনি ক্রাইম (অপরাধ) করেছেন। একটি অন্যায় ঢাকতে গিয়ে তিনি আরও কয়েকটি অন্যায় করেছেন।  বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। আসামিদের আইনের বিধান না মেনে জামিন দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা করতে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজকে গত ২১ জুন তলব করেন হাইকোর্ট। ১৭ জুলাই স্বশরীরে হাইকোর্টে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য বলা হয়। সে অনুযায়ী গত বুধবার জেলা জজ হাজির হন। প্রথম দিনের শুনানিতেও হাইকোর্ট ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সম্মানজনক বিদায় চাইলে এমন কাজ করতে পারতেন না। মোহাম্মদ ইসমাইলের লিখিত বক্তব্যসহ নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়টি গত বুধবার হলফনামা আকারে হাইকোর্টে দাখিল করেছিলেন তার আইনজীবী। কিন্তু যথাযথ না হওয়ায় তা নতুন করে দাখিলের জন্য সময় চেয়ে তার আইনজীবী হাইকোর্টে আরজি জানান। পরে আদালত শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন রাখেন। সে অনুযায়ী আজ সকালে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে নতুন করে একটি আবেদন হাইকোর্টে দাখিল করেন মোহাম্মদ ইসমাইলের আইনজীবী। এ সময় আগের দিনের মতো আজও হাইকোর্টে হাজির হন মোহাম্মদ ইসমাইল।  শুনানিতে জেলা জজের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, আমরা কনটেস্ট করতে চাই না। আমরা আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি। আমরা খুবই অনুতপ্ত। মোহাম্মদ ইসমাইলকে অব্যাহতি দেওয়ার আরজি জানান তিনি। শুনানির একপর্যায়ে হাইকোর্ট মোহাম্মদ ইসমাইলের দেওয়া আদেশের অংশবিশেষ আইনজীবীদের দেখতে বলেন। হাইকোর্ট বলেন, আদেশে কিছু পরিবর্তন করতে হলে সব পক্ষকে ডেকেই করতে হয়। হাইকোর্টে আসার আগেই তিনি তার আদেশ কেটেছেন।  এ সময় মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘আদেশে দুটি শব্দ ভুল হয়েছে। এ জন্য মাফ চাই। দুঃখিত।’  হাইকোর্ট বলেন, ‘আপনি খণ্ডন (আদেশ) করতে চাচ্ছেন? আপনার মনে অনুতাপ দেখি না। আপনি বাধ্য হয়ে বলছেন। অন্তর থেকে আসেনি। অন্তর থেকে আসতে হবে।’ শুনানি চলাকালে আদালতে দাঁড়িয়ে ছিলেন মোহাম্মদ ইসমাইল। একপর্যায়ে তিনি বলেন, তার খারাপ লাগছে। আদালত তাকে বসতে বলেন। পরে তাকে কপালে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে বসে থাকতে দেখা যায়। শুনানির একপর্যায়ে মোহাম্মদ ইসমাইলের অপর আইনজীবী আদালতে সাত দিনের সময়ের আবেদন জানান। আদালত ২৭ জুলাই শুনানির পরবর্তী তারিখ রাখেন। আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, জমির দখল নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে মিঠাছড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ ভুট্টোসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে খোদেস্তা বেগম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী দ্রুত বিচার আদালতে নালিশি মামলা করেন। এই মামলায় আসামিরা হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ এপ্রিল হাইকোর্ট তাদের ছয় সপ্তাহের মধ্যে কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতে গত ২১ মে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। সেদিন চিফ চুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৯ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর বিরুদ্ধে একই দিন আসামিরা কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আদালত ৯ আসামির জামিন মঞ্জুর করেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে খোদেস্তা হাইকোর্টে আবেদন (ফৌজদারি রিভিশন) করেন। আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন বলেন, ২১ মে দুপুর ১২টার দিকে ৯ আসামি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন। এর আগেই চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আদেশের কপি পাননি উল্লেখ করে সকাল ১০টার দিকে আদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা জামিনের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হলফনামাসহ আবেদন করেন। এক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জামিন নামঞ্জুরের আদেশসহ অন্য কাগজপত্রের প্রত্যায়িত অনুলিপি বা প্রত্যায়িত অনুলিপির ফটোকপি দাখিল করা হয়নি। আসামির হাজতবাসের মেয়াদসহ সার্বিক বিবেচনায় তাদের জামিন মঞ্জুর করা হয়— আদেশে উল্লেখ করেছেন জেলা জজ। অথচ ৯ আসামি এক মুহূর্তও হাজতে ছিলেন না। শুনানিতে বিষয়গুলো তুলে ধরা হলে জেলা ও দায়রা জজ আসামিদের কীভাবে জামিন দিলেন—এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মামলার যাবতীয় নথি নিয়ে আসতে বলেন আদালত। মামলার কোনো সার্টিফাইড কপি ছাড়াই একই দিনে জেলা ও দায়রা জজ কোন আইনে, কীভাবে জামিন দিয়েছেন, সেই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন।
২০ জুলাই, ২০২৩

কক্সবাজারের জেলা জজ বিচার বিভাগের জন্য বিব্রতকর- হাইকোর্ট
কক্সবাজারের জেলা জজ পুরো বিচার বিভাগের জন্য বিব্রতকর বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আইন ভঙ্গ করে জামিন দেওয়ার পর জামিন আদেশে মিথ্যা তথ্য উল্লেখ করায় তলব আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার আদালতে হাজির হন বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল। শুরুতে নিজের পক্ষে সাফাই গেয়ে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। তার লিখিত বক্তব্য সন্তুষ্ট করতে পারেননি আদালতকে। পরে জেলা জজ হাত জোড় করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন আদালতের কাছে। রিটকারী আইনজীবী আদালতকে বলেন, এ ধরনের বিচারক পুরো বিচার বিভাগের জন্য অনিরাপদ। এ সময় হাইকোর্ট বলেন, সম্মানজনক বিদায় চাইলে এমন কাজ করতে পারতেন না। পরে আদালত আজ বৃহস্পতিবার আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন। গতকাল বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ শুনানি হয়। পরে জেলা জজের পক্ষের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, আমরা নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার একটি আবেদন জমা দিয়েছি। সেটা রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার উনার আচরণের (কনডাক্টের) ওপর আরও একটি আবেদন দেব। তাতে শুধুই নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আবেদন জানানো হবে। এদিকে হাইকোর্ট থেকে বের হওয়ার পর সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে জেলা জজ ইসমাঈল হোসেন খারাপ আচরণ করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মজা নিয়েন না।’ আসামিদেরকে আইনের বিধান না মেনে জামিন দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা করতে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজকে গত ২১ জুন তলব করেন হাইকোর্ট। সে অনুযায়ী বুধবার জেলা জজ হাজির হন। আদালতে জেলা জজের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা, অ্যাডভোকেট আব্দুন নূর দুলাল। অন্যপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন, অ্যাডভোকেট এস এম আমজাদুল হক, অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ। আইনজীবী সূত্রে জানা যায়, জমির দখল নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে মিঠাছড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ ভুট্টোসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে খোদেস্তা বেগম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী দ্রুত বিচার আদালতে নালিশি মামলা করেন। এই মামলায় আসামিরা হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ এপ্রিল হাইকোর্ট তাদের ছয় সপ্তাহের মধ্যে কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতে গত ২১ মে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। সেদিন চিফ চুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৯ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর বিরুদ্ধে একই দিন আসামিরা কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আদালত ৯ আসামির জামিন মঞ্জুর করেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে খোদেস্তা হাইকোর্টে আবেদন (ফৌজদারি রিভিশন) করেন। আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন বলেন, ২১ মে দুপুর ১২টার দিকে ৯ আসামি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন। এর আগেই চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আদেশের কপি পাননি উল্লেখ করে সকাল ১০টার দিকে আদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা জামিনের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হলফনামাসহ আবেদন করেন। এ ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জামিন নামঞ্জুরের আদেশসহ অন্য কাগজপত্রের প্রত্যায়িত অনুলিপি বা প্রত্যায়িত অনুলিপির ফটোকপি দাখিল করা হয়নি। আসামির হাজতবাসের মেয়াদসহ সার্বিক বিবেচনায় তাদের জামিন মঞ্জুর করা হয়—আদেশে উল্লেখ করেছেন জেলা জজ। অথচ ৯ আসামি এক মুহূর্তও হাজতে ছিলেন না। শুনানিতে বিষয়গুলো তুলে ধরা হলে জেলা ও দায়রা জজ আসামিদের কীভাবে জামিন দিলেন—এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মামলার যাবতীয় নথি নিয়ে আসতে বলেন আদালত। মামলার কোনো সার্টিফাইড কপি ছাড়াই একই দিনে জেলা ও দায়রা জজ কোন আইনে, কীভাবে জামিন দিয়েছেন—সেই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন।
২০ জুলাই, ২০২৩

ভূমি জরিপ আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক হবেন জেলা জজ
ভূমি নিয়ে বিরোধ মীমাংসায় ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক হবেন জেলা জজরা। এ ছাড়া প্রয়োজনে সিনিয়র সহকারী জজ বা সহকারী জজদেরও সরকার ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তির জন্য বিচারক হিসেবে নিয়োগ করতে পারবে। এমন বিধান যুক্ত করে ১৯৫০ সালের স্টেট একুইজেশন অ্যান্ড ট্যানেন্সি অ্যাক্ট (রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন) সংশোধন করা হচ্ছে। ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে এ-সংক্রান্ত সংশোধনী বিল তুলেছেন। পরে বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। নতুন এই সংশোধনী পাস হলে ভূমি জরিপ সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রতা কাটবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিদ্যমান আইনে বলা আছে, ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালের বিচারক হবেন যুগ্ম জেলা জজরা। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে আলোচনা করে সরকার এই বিচারক নিয়োগ দেবে। এ বিধানের সঙ্গে নতুন ধারা যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এভাবে বিচারক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সরকার যুগ্ম জেলা জজদের ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজের ক্ষমতা দিতে পারবে। এ ছাড়া ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনাল থেকে স্থানান্তর করা মামলা নিষ্পত্তির জন্য এক বা একাধিক সিনিয়র সহকারী জজ বা সহকারী জজকে ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে সরকার নিয়োগ দিতে পারবে। এত দিন আইনে বলা ছিল, ভূমি জরিপ আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক হবেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক অথবা সাবেক বিচারক। কিন্তু দীর্ঘদিনেও এ আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়নি। আইনের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ২০০৪ সালে আইন সংশোধন করে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল ও ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধান করা হয়। ওই বিধানে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শক্রমে জেলার যুগ্ম জেলা জজদের মধ্য থেকে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবং সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক অথবা সাবেক বিচারকদের মধ্য থেকে ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনালে বিচারক নিয়োগের বিধান করা হয়। পরবর্তী সময়ে মামলার সংখ্যার তুলনায় ট্রাইব্যুনাল কম হওয়ায় মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক নিয়োগে সমস্যার কারণে ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন না হওয়ায় জনগণের বিচার প্রাপ্তি বিঘ্নিত হয়। মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা দূরীকরণ এবং যথাসময়ে জনগণের বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত নিয়ে আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পারিবারিক আদালত আইন : পারিবারিক আদালত আইনের অধীনে বিচারিক আদালতে হওয়া মামলার রায়ের বিরুদ্ধে জেলা জজ মর্যাদার অন্যান্য আদালতেও আপিল করা যাবে। এ ছাড়া পারিবারিক আদালতের মামলার কোর্ট ফি ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০ টাকার প্রস্তাব করে সংসদে একটি বিল উঠেছে। ‘পারিবারিক আদালত বিল, ২০২৩’ শিরোনামে বিলটি উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। গত বছরের ৩ জুলাই বিলটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পায়। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল হওয়ায় ফ্যামিলি কোর্টস অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৫ বাতিল করে বাংলায় নতুন আইন করতে বিলটি আনা হয়েছে। আগের আইনে বিচারিক আদালতে হওয়া এ-সংক্রান্ত মামলার আপিল শুধু জেলা জজের আদালতে করার সুযোগ ছিল। এতে জেলা জজের ওপর মামলা শুনানির চাপ বাড়ছিল। মামলার চাপ কমাতেই আইনে এ সংশোধনী আনা হয়েছে।
০৮ জুন, ২০২৩
X